You dont have javascript enabled! Please enable it!

১৬ জুন বুধবার ১৯৭১

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী চট্টগ্রাম সেক্টরের চাঁদগাজীতে মুক্তিবাহিনীর প্রতিরক্ষা ব্যুহের ওপর আক্রমণ চালায়। মুক্তিবাহিনী কুমিল্লার কসবা, যশােরের বেনাপোেল ও রংপুরের ভুরুঙ্গামারীতে পাকবাহিনীর চৌকির ওপর হামলা চালায়। পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হামিদুল হক চৌধুরী রাওয়ালপিন্ডিতে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী রাজ্যসভায় বলেন, আমরা অবশ্যই বাংলাদেশ প্রশ্নে রাজনৈতিক মীমাংসা চাই, তবে বাংলাদেশকে কবর রচনার হাত থেকে রক্ষা কিংবা গণতন্ত্র ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যারা লড়াই করছে তাদের তা থেকে নিক্রিয় করার কোনাে অধিকার আমাদের নেই। ভারত সে ধরনের মীমাংসার আশাও করে না। আমরা শরণার্থীদের সীমান্তের ওপারে বর্বরতার মুখে ঠেলে দিতে পারি না, যেখান থেকে প্রাণভয়ে তারা সীমান্ত অতিক্রম করে আমাদের দেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। কানাডার অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী মিচেল শার্প তার দেশের কমন্সসভায় বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের উদ্ভূত পরিস্থিতির রাজনৈতিক মীমাংসা ছাড়া শরণার্থীদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ সৃষ্টির সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। আর এই রাজনৈতিক মীমাংসার একমাত্র উপায় হচ্ছে পাকিস্তান বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তানের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।  বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম মুজিবনগরে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যদের সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘােষণার পর আমরা সবাই আজ এই প্রথম এক সঙ্গে মিলিত হবার সুযােগ পেয়েছি। আমরা আজ যখন এই পরিষদ কক্ষে তখন আমাদের মুক্তিফৌজের বীর নওজোয়ানরা অপূর্ব বীরত্বের সাথে শত্রুর মােকাবিলা করছে। মাননীয় সদস্যবৃন্দ, আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘদিনের সহচর আমরা এবং আমাদের মহান নেতার জীবনব্যাপী আদর্শ আর সংগ্রামের আমরা ধারক ও বাহক।

সূত্র : দিনপঞ্জি একাত্তর – মাহমুদ হাসান

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!