৩ এপ্রিল শনিবার ১৯৭১
সিলেটের সমশের নগরে মুক্তিবাহিনী বীরত্বের সাথে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করে। ঠাকুরগাঁওয়ে মুক্তিযােদ্ধারা দুর্ভেদ্য প্রতিরােধ গড়ে তােলে। পাবনা, সিলেট, নরসিংদী রাজশাহী, লাকসাম, কক্সবাজার, চুয়াডাঙ্গা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সাতক্ষীরা, বগুড়া, রংপুর, নােয়াখালী, সিরাজগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ অধিকাংশ থানা ও মহকুমা শহর বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণে বেসামরিক প্রশাসন চালু থাকে। সােভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট নিকোলাই পদগনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়ার কাছে পাঠানাে এক চিঠিতে বলেন, ঢাকায় অনুষ্ঠিত আলােচনা ভেঙে গেছে এবং সামরিক কর্তৃপক্ষ ঢাকার ওপর চরম ব্যবস্থা গ্রহণকেই সম্ভাব্য পথ ভেবেছেন ও পূর্বপাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীকে ব্যবহার করছেন—এ সংবাদে সােভিয়েত ইউনিয়নে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা যারা সাম্প্রতিক সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিপুল সমর্থন লাভ করেছিলেন, তাদের প্রতি জুলুম ও গ্রেফতারের ঘটনায় সােভিয়েত ইউনিয়নের উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। চিঠিতে মি, পদগনি বলেন, জনাব প্রেসিডেন্ট, আমরা এখনও বিশ্বাস করি, সম্প্রতি পাকিস্তানে যে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, শক্তি প্রয়ােগ না করে রাজনৈতিকভাবে তার সমাধান করা যেতে পারে এবং তা অবশ্যই করতে হবে। আমি মনে করি, অব্যাহতভাবে পূর্ব পাকিস্তানে রক্তপাত ও দমননীতি চালিয়ে গেলে নিঃসন্দেহে সমস্যার সমাধানের পথে আরও সমস্যার সৃষ্টি করবে। তাই অবিলম্বে পূর্ব পাকিস্তানে রক্তপাত ও দমননীতি বন্ধ করে শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক পন্থায় সমস্যার সমাধানের জন্য আপনার কাছে বিশেষভাবে আবেদন জানাচ্ছি।