You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.03.17 | ১৭ মার্চ বুধবার ১৯৭১ দিনপঞ্জি - সংগ্রামের নোটবুক

১৭ মার্চ বুধবার ১৯৭১

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫২তম জন্মদিন। ভাের থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সমাজের সর্বস্তরের মানুষ মিছিল করে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রােডস্থ বাসভবনে গিয়ে তাদের প্রাণপ্রিয় নেতাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। সেই সাথে তার প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সমর্থনের কথা ঘােষণা করেন। | বঙ্গবন্ধু ঘােষিত বাংলার অসহযােগ আন্দোলনের ষষ্ঠদশ দিবস। সকাল ১০টায় বাংলাদেশের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে মিলিত হন। কড়া সামরিক প্রহরার মধ্যে রমনার প্রেসিডেন্ট ভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী হয়। এই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে তৃতীয় কেউ উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে বেরিয়ে এলে প্রধান ফটকের সামনে অপেক্ষমাণ দেশি-বিদেশি সাংবাদিকরা বাঙালির প্রতিনিধিত্বকারী নেতাকে ঘিরে ধরেন। এ সময় স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ককে বেশ গম্ভীর দেখাচ্ছিল।  বঙ্গবন্ধু এখানে সাংবাদিকদের সাথে সংক্ষিপ্ত আলাপকালে বলেন, আলােচনা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। তবে আলােচনার পরবর্তী সময়ও ঠিক হয়নি। আলােচনা চলছে। লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনও চলবে। এর বেশি আর কিছু আমার বলার নেই। সাংবাদিকদের সাথে আলােচনা শেষে বঙ্গবন্ধু সরাসরি তাঁর বাসভবনে ফিরে যান। নেতার গাড়ি বাসভবনের দিকে যাওয়ার সময় রাস্তার দুপাশে অপেক্ষমাণ জনতা ও পথচারীরা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ধ্বনি দিতে থাকেন। সাংবাদিকরাও বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করে তার বাসভবনে গিয়ে পৌঁছান।  বাসভবনে পৌছানাের পর দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের অনুরােধে বঙ্গবন্ধু তাদের সঙ্গে এক ঘরােয়া আলােচনায় মিলিত হন। এ সময় জনৈক বিদেশি সাংবাদিক বাংলাদেশের নেতাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে জানতে চান, আজ ৫২তম জন্মদিনে আপনার সবচেয়ে বড় কামনা কি? বঙ্গবন্ধু বলেন, জনগণের সার্বিক মুক্তি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি জন্মদিন পালন করি না। আমার জন্মদিনে মােমবাতি জ্বালাই না, কেকও কাটি না।

বঙ্গবন্ধু বলেন, আমি জনগণেরই একজন। আমার জন্মদিনই কি, আর মৃত্যুদিনই কি! আমার জনগণের জন্যই আমার জীবন ও মৃত্যু। আপনারা আমাদের জনগণের অবস্থা জানেন। অন্যের খেয়ালে যে-কোনাে মুহূর্তে তাদের মৃত্যু হতে পারে।  প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আজকের বৈঠক প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বলেন, আলােচনা চলবে। বৈঠকে তার চার দফা পূর্বশর্ত নিয়ে আলােচনা হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, আমি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলােচনা করছি। আমি যখন আলােচনা করি অবশ্যই আমার দাবির কথাও বলি। আলােচনা ফলপ্রসূ হচ্ছে কি না প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, আলােচনা ফলপ্রসূ হচ্ছে, না নিরর্থক হচ্ছে জানি না। কেবল এটুকু বলতে পারি, আলােচনা চলছে।  জনৈক বিদেশি সাংবাদিক আজকের বৈঠক এত সংক্ষিপ্ত হলাে কেন জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু নিরুত্তর থেকে মৃদুহেসে এ প্রশ্নের নীরব জবাব দেন। তখন প্রশ্নকর্তা পাল্টা প্রশ্ন করেন, আমরা কি এই হাসি থেকে কিছু অনুমান করে নিতে পারি? বঙ্গবন্ধু হাসতে হাসতেই বলেন, আপনার মুখেওতাে মৃদুহাসির রেখা দেখা যাচ্ছে। আমি জাহান্নামে বসেও হাসতে পারি।  দু-একদিনের মধ্যে তার তরফ থেকে কোনাে ঘােষণা আশা করা যায় কি—জানতে চাওয়া হলে বঙ্গবন্ধু প্রত্যয়দীপ্তকণ্ঠে বলেন, সময় এলে সব বলব। আমার কাছে কোনাে গােপন কারবার নেই । 

বঙ্গবন্ধুর এই কথার পর আর একজন বিদেশি সাংবাদিক অনুযােগের সুরে বলেন, আপনি তাে কিছুই বললেন না? বঙ্গবন্ধুর তাৎক্ষণিক পাল্টা প্রশ্ন, সত্যিই কি কিছুই বলিনি? আমি কি আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি? বঙ্গবন্ধু স্বভাবসুলভ জলদগম্ভীর কণ্ঠে বলেন, আমাদের আন্দোলন চলছে। মূল লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলােচনায় আপনি কি হতাশ? তিনি বলেন, হতাশা বা নিরুৎসাহের প্রশ্ন ওঠে না। আমাদের আন্দোলন চলছে। আমাদের জনসাধারণ যে-কোনাে ত্যাগের বিনিময়ে নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য দৃঢ়ভাবে সংকল্পবদ্ধ । আমি নিশ্চিত, ত্যাগের মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ গণশক্তির অবশ্যম্ভাবী বিজয়কে কেউই রুখতে পারবে না। বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করা হয়, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলােচনায় আপনি সুখী, না অসুখী? আজীবন সংগ্রামী নেতার জবাব, আমি তাে বলেছি জাহান্নামে বসেও আমার চিত্তে সুখের অভাব ঘটবে না। আমার চেয়ে বড় সুখী আর কে আছে? সাত কোটি মানুষ আমার পেছনে। পাহাড়ের মতাে অটল তাদের মনােবল। আমার জনগণ আমাকে যা দিয়েছে তার কোনাে তুলনা নেই। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া আমার দেশবাসীর ভালােবাসা। এ সময় বঙ্গবন্ধুর কন্ঠ আবেগে আপ্লুত হয়ে ওঠে। প্রেসিডেন্ট আপনার বাসভবনে আসার পরিবর্তে আপনি আলােচনার জন্য প্রেসিডেন্ট ভবনে গেলেন কেন? জনৈক বিদেশি সাংবাদিকের এই প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, প্রেসিডেন্ট ভবনটি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতেই অবস্থিত। আর বাংলাদেশের সব ঘরই আমার ঘর। প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান কি তার জেনারেলদের সঙ্গে আলােচনার জন্য সময় নিচ্ছেন? বঙ্গবন্ধুকে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রশ্নকর্তা সাংবাদিককে বলেন, এ প্রশ্ন প্রেসিডেন্টকে করুন।  ঘােষিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য তিনি বিদেশি সাহায্যের প্রত্যাশী কি—জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, না, আমার কোনাে বৈদেশিক সাহায্যের দরকার নেই।  দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের সাথে আলােচনাকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বেশ উৎফুল্ল দেখাচ্ছিল। বঙ্গবন্ধু এ সময় বিদেশি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের কি নেই? সবকিছু আছে আমাদের। অবারিত ফসলের ক্ষেত, উদার আকাশ, উর্বর পলির নদী, সােনালি ফসল পাট, আখ, তামাক, চা, পানির মাছ, বিরাট জনশক্তি—সব আছে আমাদের। আমরা চাই শুধু ঔপনিবেশিক শাসন ও শােষণের অবসান। আমরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে জীবনযাপন করতে চাই। 

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর ৫১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষে সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিলের আয়ােজন করা হয়। বায়তুল মােকাররম মসজিদে। বাদ আছর মিলাদ শেষে নেতার দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মােনাজাত করা হয় । বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে অত্যন্ত অনাড়ম্বর পরিবেশে তাঁর জন্মদিন পালন করা হয়। এ উপলক্ষে রাত পর্যন্ত দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বঙ্গবন্ধুর সাথে শুভেচ্ছা সাক্ষাৎকারে মিলিত হন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা নেতাকে বিপুলভাবে মাল্যভূষিত করেন। শিশু ও মহিলাসহ বঙ্গবন্ধুর সর্বস্তরের শুভার্থীরা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে চলমান আন্দোলনে তাঁর সর্বাঙ্গীণ সাফল্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন। রাতে ন্যাপ প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী চট্টগ্রাম। থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতার কাছে একটি তারবার্তা পাঠান। তারবার্তায় মওলানা ভাসানী চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর গণহত্যা সম্পর্কে সরেজমিনে অবহিত হওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকে তার পক্ষ থেকে প্রতিনিধি পাঠানাের পরামর্শ দেন। | সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মওলানা ভাসানী বলেন, পূর্ব বাংলা এখন স্বাধীন, সাড়ে সাত কোটি বাঙালি এখন স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ।  বয়ােবৃদ্ধ মজলুম জননেতা বলেন, আমার ৮৯ বছরে অতীতের সবকটি আন্দোলনের সাথে আমি জড়িত ছিলাম। কিন্তু একটি সার্বজনীন দাবিতে জনগণের মধ্যে বর্তমান সময়ের মতাে একতা ও সহযােগিতা আমি এর আগে আর কখনাে দেখিনি।  মওলানা ভাসানী সাংবাদিকদের কাছে বলেন, পাকিস্তানের সম্পদ ও দায়ের হিসাব এবং জনসংখ্যার ভিত্তিতে দেশের দুই অংশের মধ্যে এই সম্পদ ভাগবাটোয়ারার উদ্দেশ্যে কেন্দ্রে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য প্রেসিডেন্টের উচিত সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে আহ্বান জানানাে।

ঢাকা সফররত ওয়ালী ন্যাপের প্রধান খান আবদুল ওয়ালী খান বিকেলে প্রেসিডেন্ট ভবনে জেনারেল ইয়াহিয়ার সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন। আলােচনা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান শাসনতান্ত্রিক সংকট নিরসনের জন্য জাতীয় পরিষদই যােগ্য স্থান। তিনি জানান, জাতীয় পরিষদে যােগদানের বিষয়ে। তিনি আয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের ৪ দফা পূর্বশর্তকে পূর্ণভাবে সমর্থন করেন। | প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টোকে ঢাকা আসার আমন্ত্রণ জানান। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হামুদুর রহমানকেও ঢাকায় ডেকে পাঠান। প্রেসিডেন্ট সাবেক আইনমন্ত্রী বিচারপতি এ. আর, কর্নেলিয়াসের সাথেও বৈঠক করেন।  সামরিক কর্তৃপক্ষ মার্চের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশে কি পরিস্থিতিতে বেসামরিক প্রশাসনের সাহায্যার্থে সেনাবাহিনী তলব করা হয়েছিল সে সম্পর্কে তদন্তের জন্য ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিশন গঠনের কথা ঘােষণা করেন। অহিংস অসহযােগ আন্দোলনের ষষ্ঠদশ দিবসে রাজধানীতে বিভিন্ন । প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সভা ও শশাভাযাত্রা বের করা হয়। হাজার হাজার মানুষ শহীদ মিনারে গিয়ে বঙ্গবন্ধু ঘােষিত স্বাধীনতা সংগ্রামকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য শপথ নেন। স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ছাত্রছাত্রীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ময়দানসহ বিভিন্ন এলাকায় কুচকাওয়াজ ও রাইফেল চালনার প্রশিক্ষণ শুরু করেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বিভিন্ন অফিস-আদালত-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য ও প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা মিছিলসহ বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়ে নেতার সাথে দেখা করে তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা এবং তার প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সমর্থনের কথা ঘােষণা করেন। 

বিকেলে মােহাম্মদপুরে এক জনসভায় ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে শরীক হওয়ার জন্য স্থানীয় অবাঙালি নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা বাংলার মাটি ও মানুষের সাথে একাত্ম হয়ে যান। | স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আগামী ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসকে ‘প্রতিরােধ দিবস’ হিসেবে পালনের কর্মসূচি ঘােষণা করে। এ উপলক্ষে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ ২৩ মার্চ সকাল ৬টায় সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সকল প্রকার যানবাহনে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন, প্রভাতফেরি, শহীদানের কবর জিয়ারত, শহীদ মিনারে পুস্পমাল্য অর্পণ, ‘জয় বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজ এবং বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বটতলায় ছাত্র-জনসভার কর্মসূচি ঘােষণা করেন। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আগামী ২৪ মার্চ আউটার স্টেডিয়ামে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সমাবেশ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্তের কথা ঘােষণা করে। লাহােরে পশ্চিম পাকিস্তানি রাজনীতিকবৃন্দ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে জনাব ভুট্টোর দুই অংশের দুটি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব প্রসঙ্গে বলেন, সাধারণ নির্বাচন গােটা দেশের জন্য হয়েছে। দুই অংশের জন্য পৃথক পৃথকভাবে নির্বাচন হয়নি। কাজেই জাতীয় পরিষদে একটি মাত্র মেজরিটি পার্টি থাকবে। ভুট্টোর প্রস্তাব পাকিস্তানকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়। ভুট্টো দেশের বিচ্ছিন্নতা চান, তাই তিনি দুই অংশের মেজরিটি দলের কাছে। ক্ষমতা দেওয়ার দাবি তুলেছেন। সরকার গঠনের জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে পিপি প্রধান জেড. ভুট্টোকে নয়, মেজরিটি পার্টির নেতা আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানকে আমন্ত্রণ জানাতে হবে। 

সূত্র : দিনপঞ্জি একাত্তর – মাহমুদ হাসান