You dont have javascript enabled! Please enable it! মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী প্রতিক্রিয়া - মুক্তিযুদ্ধে জাতিসংঘ এর ভূমিকা - মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন রাষ্ট্রের ভূমিকা ১২ - বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সূত্র তারিখ
মার্কীন যুক্তরাস্ট্রের প্রতিনিধি জর্জ বুশ এর বিবৃতি জাতিসংঘ ডকুমেন্টস ৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১

আমি প্রথমেই চাইব ভারতের রাষ্ট্রদূত এর করা উক্তি সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত মন্তব্য করতে।আমি তার উদৃতি করা নির্দিষ্ট রচনাংশের যে কলাম বাদ দিয়েছেন তার প্রশংসা করছি।আন্তরিকতার সাথে,আমি বলছি যে তার তরফ থেকে এটি ছিল সবচেয়ে বিবেচিত এবং ভদ্রোচিত।কিন্তু আমি মনে করি একটি সংক্ষিপ্ত উত্তর ক্রমানুসারে দেয়া উচিত।
সে জোর করে কিছু নির্বাচিত কলাম অথবা সম্পাদকীয় মুদ্রিত এখান সেখান থেকে উদ্বৃতি দিয়ে  অজর ফন্দি দিয়ে উপ মহাদেশের আগুন সম্পর্কে নিরাপত্তা পরিষদের মনোযগ বদল করতে চাচ্ছেন যা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নীতির সাথে অনুমোদনহীন।আমাদের জনগণ, আমাদের নীতি, সমর্থন করেছিল মহাসচিবের শরনার্থীদের জন্য সাহায্যের আহব্বান এর জন্য,তার পর্যবেক্ষনে আহব্বান এর জন্য।    কোথায় আমাদের মহাসচিবের নিরপেক্ষ চেষ্টাগুলো ছিল না? আমরা মনে করি সেগুলো ছিল। আমাদের জনগণ সহায়তা দিয়েছিল পাকিস্তানে বড় ধরনের ত্রান সহায়তার জন্য এবং বড় ধরনের ত্রান সহায়তার চেষ্টা ছিল ভারতের জন্য।.আমাদের জনগণ সমর্থন করেছিল সবল ব্যাক্তিগত কূটনীতি যেটিতে আমাদের রাষ্ট্রপতি জড়িত থেকে চেষ্টা করছেন দুই শক্তিকেই পিছনে টানতে। এবং আমাদের জনগণ সমর্থন করেছিল গর্ব এবং আনন্দের সাথে,সম্প্রতি আমাদের মাটিতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর পরিদর্শনকে। আমি আমার সহকর্মীদেরকেও নিশ্চিত করতে পারি যে আমেরিকান জনগন শক্তভাবে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া সিদ্ধান্তকে যেটি অভূতপূর্ব ভোটের মাধ্যমে নিরাপত্তা পরিষদে গৃহিত হয়েছিল,একটি সিদ্ধান্ত হত্যকান্ড থামাতে,একটি সিধান্ত যুদ্ধবিরতীর জন্য এবং বন্ধের জন্য,সিদ্ধান্ত- এবং আমাকে সংক্ষেপে কিছু উদ্বৃতি করতে দিনঃ

আমাদের জনগণ সমর্থন করে এভাবে যে,তারা  একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মহাসচিবের শান্তির জন্য মধ্যস্থতার প্রস্তাবটি কে।এটি হয় সেটি যা আমরা সমর্থন করি,তথাপি দেশের প্রতি কিছু নির্বাচিত কলামও।
এটি এক পাক্ষিক রাজনীতি না।আমি আশা করি এটি একটি দয়াশীল রাজনীতি,একটি দয়াশীল রাজনীতি একটি মহাদেশকে আলোক শিখার দিকে নিয়ে যায়।আমি চাই যে খসরা সিদ্ধান্ত যে অভিভূতকারী ভোট পেয়েছিল তার চেয়েও এটি আরো বেশী ভোট পাক।আমি চাই, এটি বিশ্ব সম্প্রদায়ের আকুন্ট সমর্থন পাবে।

সংক্ষেপে,আমারা এই দেশে  আমাদের নীতির ভিন্নমত পোষণকারীদের খুজতে পারি,আমরা সম্পাদকীয় প্রবন্ধও খুজতে পারি।কিন্তু আমি চাই না এই কাউন্সিলকে এই জাতীয় মাধ্যম ব্যাবহার করে কিছু অসন্তোষজনক আভ্যন্তরীণ উৎসের  উক্তির দ্বারা সরকারের দৃষ্টি পরিবর্তন করতে।এটা কোন বিষয় না আর্টিকাল গুলো কোথা থেকে এসেছে, তারা পৃথিবীর দৃষ্টি এই বৃহৎ যুদ্ধে থেকে সরাতে পারবে না যেটিতে উপমহাদেশ বর্তমানে অবতীর্ন হয়েছে। এবং যখন যুদ্ধটি চলছে,তখন দোষারোপ করাটা গুরুত্বপূর্ন কিন্তু ইতিহাসের এই সংকটময় মুহুর্তে,দোষারোপ করাটা গুরুত্বপূর্ন নয়।হত্যা বন্ধ করা,আক্রমন বন্ধ করা,একরকম মনে হয় আমাদের জনগনের জন্য প্রচন্ডভাবে গুরুত্বপূর্ন।গত রাতে আমাদের মিটিং এ।আমি লক্ষ করেছিলাম যে কাউন্সিল প্রনোদিত হয়েছিল কারন এটি  বিশ্ব শান্তির জন্য একটি চলমান ও পরিস্কার হুমকির মুখোমুখি হয়েছিল, কারন যুদ্ধের এলাকা এবং আয়তন বিস্তৃত হচ্ছে ও তীব্রতর হচ্ছে, এবং কারন যেহেতু এই কাউন্সিলের সনদ অনুযায়ী সদস্য রাষ্ট্রের অখন্ডতা এবং  যুদ্ধ বন্ধের দায়িত্ব আছে। এই কাউন্সিলের ১১ জন সদস্যের পরিষ্কার সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে দুইটি আলাদা ঘটনা জ্ঞাপন করতে তাদের ইচ্ছা সনদ অনুযায়ী নিরাপত্তা পরিষদের দায়িত্ব চর্চা করা। দুইটি খসড়া সিদ্ধান্তের পক্ষে নেয়া ভোট যেটিতে একসময় বলা হয়েছিল ভারত এবং পাকিস্তান সরকারকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতী নিশ্চিত করতে এবং তাদের সশস্ত্র বাহিনীকে তাদের অন্যের সীমান্ত এলাকা থেকে প্রত্যাহার করতে। তাদের স্বীকৃতি দিয়ে প্রবল চেষ্টার প্রয়োজন যত দ্রুত সম্ভব সনদের মূল শর্ত অনুযায়ী পশ্চিম পাকিস্তানের স্বরনার্থীদের স্বেচ্ছায় তাদের মাত্রভুমিতে ফিরিয়ে নিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তার জন্য।
কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত যেভাবে আমাদের আর্জেন্টিনার কলিগ উল্ল্যেখ করলেন এবং আমরা গত রাতের মিটিং এ লক্ষ করলাম এই কাউন্সিলের একজন স্থায়ী সদস্য আইনের আওতায় এই উদ্যেগ এবং কৌশল খাটানোকে ঐ দুই খসড়া সিদ্ধানের উপরে ভেটো দিলেন। এই গুরতর অবস্থার মধ্যে, ঐ সদস্যের পদক্ষেপ এই ধারনা প্রদান করবে এই পরিষদ দক্ষিন এশিয়ার শান্তি এবং নিরাপত্তা বজায় রাখতে অক্ষম, এবং এমনকি আমরা  সক্ষম না এই সংকটজনক মুহুর্তে   যুদ্ধ স্থগিতের একটি আহবানের জন্য ও নিজেদের বর্ডার এলাকা থেকে তাদের সৈন্য ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এমত অবস্থায়, আমরা এই জাতীয় সম্ভাবনার মুখোমুখি হব যে বিশ্ব এই সিদ্ধান্তে উপনীত হবে যে জাতিসংঘ তার সনদের চুক্তি বজায় রেখে বিশ্ব শান্তি এবং নিরাপত্তা যেখানে হুমকির মুখে তা পুনুরুদ্ধারে অক্ষম।
এই কাউন্সিল অবশ্যই তার সামার্থ্য দ্বারা নিশ্চিত করবে যে এটা হচ্ছে না।এটি অবশ্যই ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য সম্ভব্য সকল রাস্তা খুজবে। এবং,আমাদের শেষ মিটিং এ অধিকাংশ সদস্যের বক্তব্যের বিচারে, এটাও পরিস্কার যে বৃহৎ অংশ একমত আমরা বিষয়টিকে এটা যেথায় আছে সেভাবে ফেলে রাখতে পারি না,অবস্থাটি স্থিতিভাবে রাখে অসহনীয়।শান্তির প্রতি হুমকি এতটাই বাস্তবিক এবং শরনার্থীদের সংকটাপন্ন অবস্থা ও সাধারন জনগণ এর অধিকাংশ এর জন্য আমাদের নিযুক্ত হওয়া অধিক জরুরী যাতে পরবর্তীতে এই কাউন্সিল তার সনদের দায়িত্ব যথাযথভাবে প্রদর্শন করতে ব্যার্থ না হয়।সৌভাগ্যক্রমে,সেখানে কিছু অতিরিক্ত পদক্ষেপ রয়েছে যেটা আমরা নিতে পারি জাতিসংঘের পুর্নাংগ সদস্য হিসেবে অনুমদোন দানের ক্ষেত্রে এমন জরুরী অবস্থার প্রেক্ষিতে এবং এর প্রভাব আনতে পারি দক্ষিন এশিয়ার শান্তি পুনোরুদ্ধারের ক্ষেত্রে।
শান্তির জন্য এক হওয়া খসড়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী
যদি নিরাপত্ত পরিষদ,স্থায়ী সদস্যদের ঐক্যমতের অভাবের কারনে,আন্তর্জাতিক শান্তি এবং নিরাপত্তা রক্ষা করতে তাদের প্রাথমিক দায়িত্ব পালনে ব্যার্থ হয়,কোন কারনে কোথায় তারা শান্তির প্রতি হুমকি দেখে,শান্তি ভংগ কিংবা আক্রমনাত্মক আচারন,সাধারন পরিষদ এই বিষয়টি নিয়ে জরুরীভাবে যথাযথ সিদ্ধান্তের সুপারিশ করবে…।
মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের সোমালিয়ার যুগ্ম প্রতিনিধি,আর্জেন্টিনা,বুরুন্দি এবং আশাকরি আরো অনেকেই এই খসড়া সিদ্ধান্ত সমর্থন করছেন, যেটি সাধারন পরিষদের জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নের রেফালের জন্য ২৬ তম অধিবেশনের জরুরী সিদ্ধান্তের জন্য দেয়া হয়েছে।
আমরা এখন তীব্রভাবে আশা করি যে পরিষদ নিজেকে নিরপেক্ষ প্রমান করবে এই কারনে যে জাতিসংঘ যাতে চুক্তির দায়িত্ব যথাযথভাবে পুরন করতে পারে।

.

13.306.960-962

                 শিরোনাম                        সূত্র                       তারিখ
পাকিস্তানী প্রতিনিধি মিঃ আগাশাহীর বিবৃতি           জাতিসংঘ ডকুমেন্টস             ৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১

                                                          পাকিস্তানী প্রতিনিধি মিঃ আগশাহীর বিবৃতি

                                                                              ৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১

 অভিপ্রায় ছিল না আবার বক্তব্য দেয়ার, কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন রাষ্ট্রদূত আমাকে উদ্দেশ্য করে একটা প্রশ্ন করেছেন যা ডকুমেন্ট S/10428 এ খসড়া সমাধানের বাইরে থেকে উত্থাপিত হয়েছে। প্রশ্নটি ছিল, আপনারা কেন পূর্ব পাকিস্তানি জনগণের অভিপ্রায় প্রকাশের ব্যাপারে ভীত। আমি বিশ্বাস করি তিনি একটা জবাব পাওয়ার অধিকার রাখেন এবং তাকে আমি একট যথাযথ দেব। কিন্তু তার পূর্বে, আমি তার বর্ণিত খসড়া সমাধান পরিকল্পনার দুটি বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই।

আমি প্রথমে এই বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই যে, যখন সোভিয়েত পরিকল্পনাকে পন্ঞ্চশক্তি খসড়া সমাধানের ডকুমেন্ট S/10425 এর প্রস্তাবসমূহের সাথে মেলানোর চেষ্টা চলছে, এটা পূর্বেকার খসড়া সমাধানকে পরিবর্তন করে দিয়েছে।উদাহরণস্বরূপ, পন্ঞ্চশক্তির দেয়া খসড়া সমাধানের প্রথম প্যারার সাথে সোভিয়েত প্রস্তাবের প্রথম প্যারার তুলনা করা যায়। পন্ঞ্চশক্তি দেয়া খসড়া অনুযায়ী, ‘সকল সম্পর্কিত সরকারকে অবিলম্বে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে যুদ্ধবিরতি দেয়া’। অন্যদিকে সোভিয়েত প্রস্তাবে আছে সকল সম্পর্কিত দলের অবিলম্বে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অস্ত্রবিরতি দেয়া এবং সকল যুদ্ধবিগ্রহের অবসান’। এটি একটি মৌলিক পরিবর্তন কারণ একটি প্রস্তাবনা সম্পর্কিত সরকারসমূহ নিয়ে কিন্তু অপরটিতে রাজনৈতিক দলগুলোর কথা বলা হয়েছিল। যেহেতু আমরা জানি যে, ভারতীয় আক্রমণকারী বাহিনী বিচ্ছিন্নতাবাদী দলকে সঙ্গ দিচ্ছে, সোভিয়েত খসড়ায় তাদের প্রথমে একটা দল হিসেবে ধরা হবে এবং তাদের সাথে মীমাংসায় যেতে বাধ্য করা হবে।অন্যকথায় এটা স্বীকারোক্তির পথ পরিষ।কার করবে। দলসমূহের একটি হিসেবে এটি আমাদের জন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রস্তাবিত সবচেয়ে মৌলিক পরিবর্তন।

আমি এখন রাষ্ট্রদূত মালিকের করা খসড়াটি চালিয়ে যেতে দেব এবং এটিই গ্রহণযোগ্য। সোভিয়েত সমাধান পরিকল্পনায়য় একটি অন্তর্নিহিত অসঙ্গতি আছে। কার্যকরী প্যারা ১ সহায়ক বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিসমূহ এবং তাদের সাথে ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে একত্রে একটি দল ঘোষনা করার ম্যধ্যমে তাদের মর্যাদা ও স্বীকৃতি প্রদান করে। সোভিয়েত খসড়ার কার্যকরী প্যারা ২ একটি রাজনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানায় – ‘১৯৭০ সালের নির্বাচনে প্রকাশিত পূর্ব পাকিস্তানী জনগণের ইচ্ছার তড়িৎ স্বীকৃতি প্রদান। বাস্তব তথ্য হলো, ভারতীয় বাহিনী এবং সহায়ক বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি ভোটারদের হুকুমকে অস্বীকার করছে। তারা একটি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র স্থাপন করতে চায় যেটি ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জনগণের প্রতিফলিত ইচ্ছা নয়। এখান বর্তমান চাওয়ার সাথে একটু গুণগত পার্থক্য আছে। অতএব, সোভিয়েত খসড়া একদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন দান করে যারা স্বাধীনতাকামী এবং নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের দেয়া আদেশকে লঙ্ঘন করেছে এবং অন্যদিকে বলছে যে তারা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ইচ্ছাকে সমর্থন করবে। এই খসড়া অনুযায়ী সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী দলকে একটি নিষ্পত্তির ডাক দেয়া হবে। আমি এই অভ্যন্তরীণ অসঙ্গতিটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

আমি পূর্বেই সোভিয়েত সংশোধনীর ব্যাপারে মত প্রকাশ করেছি, অস্ত্রবিরতিমূলক নিষ্পত্তির সথে যুক্ত যে বিষয়গুলোর সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলাম সেগুলোও এখন সংশোধনীর অংশ। রাষ্ট্রদূত মালিক ব্যাখ্যা করলেন যে এদের মধ্যে একটা সুসম্বন্ধ সম্পর্ক আছে। আর সেটা হল, যতক্ষণ পর্যন্ত না নিষ্পত্তি হবে, শত্রুতা অবশ্যই থাকবে এবং যুদ্ধ চলবে।

এখন পাকিস্তান সরকারের আক্রমণকারী ভারতীয় বাহিনীর হুমকিজনক উপস্থিতির কারণে রাজনৈতিক নিষ্পত্তিতে আসতে হচ্ছে। এমন সব পরিস্থিতিতে ফেলে আমাদের নিষ্পত্তির জন্য ডাকা হয়েছে যা নিরাপত্তা পরিষদ এবং জাতিসংঘেও নতুন।

জনমতের মুখপাত্র, কলামলেখক ও বুদ্ধিজীবীরা অনেককিছুই বলতে পারে। তাদের অনেকেই জাতিসংঘ সম্পর্কে উঁচু ধারণা পোষণ করে না-য়দিও অনেক বুদ্ধিজীবী আছেন যারা রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট নন। কিন্তু আমরা এখানে জাতিসংঘ সনদের নিয়ম-নীতির কাঠামোর মধ্যে থেকেই কাজ করছি এবং আমাদের এই মূলনীতি মেনেই কাজ করতে হবে।বুদ্ধিজীবী এবং সংবাদপত্রেরর কলামলেখক ও সম্পাদকরা নিজেদের শ্রেয় ভাবে এবং জনমত গঠনে জাতিসংঘের আইনকে অগ্রাহ্য করে। কিন্তু আামাদের অবশ্যই সনদ অনুযায়ী চলতে হবে।

অতএব, এমন একটি নীতি যে যখন কোন দেশ বহিরাক্রান্ত ও দখলকৃত অবস্থায় থাকে তখন সেখানকার কোন সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান দেয়া যাবে না। আমরা দুঃখপ্রকাশ করছি এটা দেখতে পেয়ে যে এই নীতিটি একটি জাতিসংঘের নীতি যেটিকে সোভিয়েত খসড়া প্রস্তাবে অবজ্ঞা করা হয়েছে।

এছাড়াও আমি আরও দেখাতে চাই সব খসড়া সমাধানেই আছে যেটা জাতিসংঘ বিবেচনা করেছে, এটা একটি অলঙ্ঘনীয় tractice যুদ্ধবিরতির সাথে অপসারণ সংযুক্ত করা। আমরা এতক্ষণ পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের নীতিগত অবস্থানের প্রশংসা করছি কারণ তারা সবসময় অপসারণ ও যুদ্ধবিরতির মধ্যকার সাংগঠনিক যে সম্পর্ক তা বজায় রেখেছে।কিন্তু, দুঃখজনকভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা তাদের কাছ থেকে সামঞ্জস্যপূর্ণ অগ্রগতি পাই নি।

আমি যেমনটা বলেছি যে, পূর্ব পাকিস্তান পাকিস্তানের একটি স্বীকৃত অংশ সদস্যদেশসমূহ দ্বারাও। ২১ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া সামরিক হামলা ও আক্রমণ সমন্বিত পাকিস্তানের উপর সম্মিলিত সামরিক হামলা।

সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিনিধি অভিযোগ এনেছেন পাকিস্তানই এটি শুরু করেছিল ৩ ডিসেম্বর এর হামলার মাধ্যমে। কিন্তু আমাদের একটু পূর্বে ফিরে যেতে হবে। আমি এটাই বলতে চাই যে হামলাটি শুরু হয়েছিল ২১ নভেম্বর, যা হয়েছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যেটি একটি একক রাষ্ট্র।

এরপর আসি আমার মন্তব্যের ব্যাপারে, আমাদের অভ্যন্তরীণ সঙ্কট সম্পর্কে যা বলেছি তা আমাকে স্পষ্ট করতে দিন। আমাদের একটি অভ্যন্তরীণ সঙ্কট আছে, যেটি একটি রাজনৈতিক সঙ্কট। এই রাজনৈতিক সমস্যাটি আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আন্তজার্তিক দৃষ্টিকোণ এই সঙ্কটটি হচ্ছেঃ প্রথমত মানবিক দৃষ্টিকোণ-প্রকৃত মানবিকণ দৃষ্টিকোণ-এবং আরেকটি আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ আছে যা ভারতের ধ্বংসলীলা থেকে উদ্ভুত, পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সশস্ত্র বিদ্রোহে উৎসাহ দান এবং অপসারণ, এবং পরিশেষে পূর্ব পাকিস্তানের আক্রমণ। আমি একবারই সকলের জন্য স্পষ্ট করছি কোন কোন জিনিস গুলো আমাদের অভ্যন্তরীণ এবং কোনগুলো আন্তর্জাতিক, তাহলে এখানে কোন ভুল ধারণা থাকবে না।

এখন এই প্রশ্নে আসছি যে আমরা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ইচ্ছার প্রকাশে ভীত কিনা, উত্তর হলো না। এটি একটি শোকাবহ বিষয় যে জাতীয় সংসদে এই ইচ্ছার রাজনৈতিক প্রতিফলন ঘটে নি, যেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতবিভেদ দূর হতে পারত। কিন্তু স্বল্প সময়ের মুলতবিঅবস্থা জারিকরণের ফলে পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বিদ্রোহ শুরু করে সরকারকে ট্যাক্স দেয়া অস্বীকার করার মাধ্যমে, সরকারের কর্তৃত্বের প্রকাশ্য অবাধ্যতা করে, ১৮,০০০ অপরাধীর জেলমুক্তির মাধ্যমে, যারা ছিল সশস্ত্র এবং নির্বিচারে গণহত্যা সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।

এটাই আসল সত্য, যদি কারও প্রমাণ দরকার হয় তাহলে তার শুধু সঙ্কটকালীন-জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসএবং ২৫ শে মার্চ সময়কার পূর্ব পাকিস্থানে প্রকাশিত সংবাদপত্র গুলো পর্যালোচনা করে দেখলেই হবে। এটি একটি সর্বজনবিদিত বিষয়, যেটি শুধু জাতিসংঘের সদস্যরাই জানেন না। সশস্ত্র অপরাধী গোষ্ঠীর হাজার হাজার জনকে অস্ত্রে সজ্জিত করে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল গণহত্যা চালানোর জন্য; এবং অনুশোচনার বিষয় এই যে কিছু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিও এই অপরাধকর্মের সাথে জড়িত ছিলেন। সংসদের কোনও সদস্যকেই তার রাজনৈতিক বিরোধিতা বা রাজনৈতিক মতাদর্শের জন্য অযোগ্য ঘোষিত হন নি।

আমি বিস্তারিতে যেতে চাচ্ছি না, কিন্তু কসাইখানা গঠনের প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং যারা দায়ী তাদের সামনে এসে অভিযোগের দায় খন্ডন করতে বলা হয়েছে। এখন এই অবস্থায়, যখন রাজনৈতিক অপরাধীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষিত হয়েছে তখন আন্তর্জাতিক মহল এই ক্ষমা যারা হত্যাকান্ডে অংশ নিয়েছিল তাদের জন্যও দিতে চায়?

সুতরাং সোভিয়েত খসড়া পরিকল্পনা সম্পর্কে আমি এটিই বলতে চাই  যে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীরা যদি একটি দলের মাধ্যমে সংসদে নির্দেশনা দান এবং পদক্ষেপ নিত কেবল তখনই সেখানে পূর্ব পাকিস্থানের জনগণের ইচ্ছার স্বীকৃতি দানের ব্যাপারটি থাকত। যদি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী তাদের বিচ্ছিন্নতামূলক মনোভাব পরিহার করত এবং নির্বাচনে প্রতিফলিত পূর্ব পাকিস্থানের জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী চলত, তাহলে হয়ত আমরা এই কালো রাত এবং চারপাশ ঘিরে রাখা তিমির থেকে মুক্তি পেতে পারতাম। এটি একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন যেটি নিরাপত্তা পরিষদের প্রত্যেক সদস্যের সোভিয়েত খসড়ার পক্ষে তাদের ভোটটি দেয়ার পূর্বে অবশ্যই নিজেকে জিজ্ঞাসা করে নেয়া উচিত।

.

13.307.963

                  শিরোনাম                      সূত্র                  তারিখ
ভারতীয় প্রতিনিধি মি.সমর  সেনের বিবৃতি          জাতিসংঘ ডকুমেন্টস             ৬ ডিসেম্বর,  ১৯৭১

                                             ১.ভারতীয় প্রতিনিধি মি.সমর সেনের বিবৃতি

                                                              ডিসেম্বর,  ১৯৭১

আমি কেবল দুই মিনিটের জন্য কথা বলতে চাচ্ছিলাম পাকিস্তানের প্রতিনিধি কর্তৃক আলোকপাতকৃত কিছু বাস্তবিক বিষয়ের উপর কোনো প্রভাব না ফেলার নিমিত্তে। এই প্রভাব তৈরি  হয়েছে ভুল ধারণার ভিত্তিতে, এবং আমি ভেবেছি আমি এটি অতি দ্রুত সংশোধন করব। আমি বিশ্বাস করিনা যে এটি আমাদের আলোচনায় সহায়তা করতো অথবা  পরিষদকে লাভবান করতো যদি আমি আবারো বিশদভাবে সেই বহুসংখ্যক অভিযোগের প্রত্যুত্তর দিতাম যেগুলো তিনি বিভিন্ন সময়ে উল্লেখ করেন, যেসব অভিযোগের বিশদ প্রত্যুত্তর আমি পূর্ববর্তী সময়গুলোতে দিয়েছি। এই সবগুলো অভিযোগই হল অবিবেচনাপূর্ণ, যেমনটা আমি এর আগে বলেছি, যার বিন্দুমাত্রও কোনো প্রমাণ নেই অথবা কণামাত্রও সত্যতা নেই। তা সত্ত্বেও, তিনি তিনটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন যার সাথে জাতিসংঘ কোনো না কোনো ভাবে জড়িত এবং আমি মনে করি পরিষদকে সঠিক অবস্থানটি সম্পর্কে অবহিত করাটা আমার কর্তব্য।

প্রথমত,  তিনি বাংলাদেশের এই দুঃখজনক বিষয়টি জাতিসংঘে উত্থাপিত হওয়ার ব্যাপারে কথা বলেছেন। নিঃসন্দেহে, নিরাপত্তা পরিষদ হল সেই বহুসংখ্যক ফোরামগুলোর একটি যেখানে এই বিষয়গুলো আলোচিত হতে পারে। তিনি ব্যাখ্যা করেননি কেন অন্য অঙ্গ-সংগঠন গুলোও এক্ষেত্রে  বিবেচিত হতে পারেনি।

তারপরও, দুটি বাস্তবিক বিষয়।  তিনি বলেছেন যে আমাদের স্মারকলিপি, যা এস/১০৪১০ দলিলের অন্তর্ভুক্ত,  সেটি সঠিক নয় এবং সেটি একটি ভুল বিবৃতি ধারণ করছে। তিনি বলছেন পশ্চিম-পাকিস্তানি সূত্রগুলো বিবৃতি প্রদান করেছে যে ভারত পাকিস্তানের উপর আক্রমণ চালিয়েছে। আমি উল্লেখ করছি যে, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। যদি এই ব্যাপারে  কোনো সন্দেহ থাকে,  অন্তত কিছুটা সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেই প্রতিবেদনটির দ্বারা যা এস/১০৪১২ দলিলের অন্তর্ভুক্ত,  যার অনুচ্ছেদ ৪ (a) তে বলা হয়েছে:

“ ৩ ডিসেম্বর শ্রীনগর বিমানঘাঁটিতে ১৭৪৫  ঘণ্টায় বোমাবর্ষিত হয়েছে।”

 এখন, শ্রীনগর আমাদের সীমান্তের ভেতর অবস্থিত, এবং তাই, এখানে শুধুমাত্র পাকিস্তানি বিমান কর্তৃকই বোমা নিক্ষিপ্ত হতে পারে। আমরা ধারণা করছি যে এই বোমাবর্ষণ সংঘটিত হয়েছিল ১৭৩০ ঘণ্টায় ; জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক বিবৃত করেছেন যে এখানে বোমাবর্ষিত হয়েছিল ১৭৪৫ ঘণ্টায়।

দ্বিতীয় বিষয়টি হল এই যে, তিনি বলেছিলেন ঢাকা থেকে রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি সংক্রান্ত সৈন্যদল এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তাবৃন্দের উদ্বাসনকে প্রতিরোধ করে আমরা জঘন্য অপরাধ করেছি। যদি সত্যিটার প্রতি কারো কোনো বিবেচনা থাকে এবং আমি মনে করি সেক্রেটারিয়েট আমাকে এ ব্যাপারে নিশ্চিত করতে পারবে, কিন্তু আমি তাদের এটা করতে বলব না কেননা এটি তাদের জন্য অত্যন্ত  বিব্রতকর বিষয়  হবে, কেননা সবকিছুর আয়োজন করা হয়েছিল, প্লেনটি  এসেছিল ব্যাংকক থেকে এবং এটি ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। এখানে একটি টেলিগ্রাম আছে যা বিবৃত করছে যে আসলে কি ঘটেছিল:

“ আয়োজনমাফিক কানাডিয়ান C-13 বিমান আজ সকালে ব্যাংকক থেকে ঢাকা এসেছে।  কিন্তু, ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর সময় ঢাকা কন্ট্রোল টাওয়ার বিমানটিকে গ্রহণ করেনি এবং এটিকে তারা ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। আমাদের কলকাতা বিমান কন্ট্রোল এই কথোপকথন পর্যবেক্ষণ করে এবং বিমানচালককে কলকাতা অভিমুখী হওয়ার আমন্ত্রন জানায়। বিমানচালক এই প্রস্তাবটি কৃতজ্ঞতাসহকারে গ্রহণ করেন, কিন্তু তিনি বলেন তিনি ব্যাংকক ফিরে যাচ্ছেন। বিমানবাহিনী কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেন যে ১০-৩০ থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত নিরাপদ সময়কালের যে প্রতিশ্রুতি আমরা দিয়েছিলাম তার প্রতি পূর্ণ সম্মান প্রদর্শিত হয়েছে। আমাদের বিমানবাহিনী এই সময়কালের অনেক আগেই ঢাকা বিমানঘাঁটিতে  বৈমানিক কার্যক্রম বন্ধ করেছে।”

এটিই হল সত্য।

.

13.308.964-966

শিরোনাম সূত্র তারিখ
ভারতীয় প্রতিনিধি মিঃ সমর সেনের বিবৃতি জাতিসংঘ ডকুমেন্টস ৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১

২. ভারতীয় প্রতিনিধি, মিঃ সমর সেনের বিবৃতি, ৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১

মিঃ প্রেসিডেন্ট, আমরা বিতর্কের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি, এবং আমি আপনার কাছে এবং এই কাউন্সিলের কাছে কিছু মন্তব্য করার সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞ ।

এই বিতর্ক দেখিয়েছে যে নির্বাচনশীলতা হচ্ছে দিনের কার্যশীলতার আলোচ্য বিষয়। এখন, বিভিন্ন প্রতিনিধির দ্বারা একাধিক নীতি উদ্ধৃত হয়েছে, যেমনঃ সার্বভৌমত্ব, প্রাদেশিক অখন্ডতা, অন্যান্য মানুষের বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি, এবং ইত্যাদি। কিন্তু আমি ভাবছি, কেন আমরা মানবাধিকার বিষয়ে কথা বলতে লজ্জিত হচ্ছি? গণহত্যা বিষয়ে কনভেনশনে কি ঘটেছে? স্বয়ং-সংকল্প নীতি কোথায় গেল? অন্যান্য যেসব সামাজিক অধিকার এবং কনভেনশনের শপথ আপনারা গ্রহণ করেছিলেন, সেগুলোর কি হয়েছে? আমরা কি, তবে, আমাদের এই যুগ-শান্তির নীতিবাক্য – শান্তি, সমৃদ্ধি ও ন্যায়বিচার- এ কিছু বাছাইকৃত দায়িত্বপালন করবো? ন্যায়বিচার এর অংশে কি ঘটেছে?

আমরা গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত গুরুতর এই ব্যপারে বাচ-বিছার করে অগ্রসর হতে পারবো না। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা জোরদারকরণ সংক্রান্ত ঘোষণা উদ্ধৃত হয়েছে। ঘোষণার আর্টিকেল ২২ – এ কি বলা হয়েছে? অন্যান্য আর্টিকেলের ক্ষেত্রে কি ঘটেছে? আপনার দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, আপনি যেটি ইচ্ছা সেটিই বাছাই করতে পারেন, কিন্তু যখন আমি একটি নির্দিষ্ট আর্টিকেল বেছে নিই, তখন সেটিই হয়ে যায় বাছাইকৃত।

আমার ভেবে নেয়া উচিত ছিল যে, সাধারণ, সভ্য পন্থায় বিতর্ক হবে যেখানে প্রতিটি স্পিকার তার বক্তব্যের পক্ষে উপলব্ধ সেরা প্রমাণ দাখিল করে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করবেন; এবং যদি এটি একটি অপরাধ হয়ে থাকে তাহলে আমাকে আবার শুরু থেকে গণতন্ত্রের সকল শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ তাদের সরকারকে সমর্থন করে শুনে আমিও খুশি হয়েছিলাম। আমি চিন্তা করা উচিত ছিল যে একটি নির্বাচিত সরকার – যেটি অন্তত চার বছরের জন্যে নির্বাচিত হয়েছে- সেখানে এটি একটি স্বতঃসিদ্ধ সত্য। কিন্তু এই সত্যতার নিশ্চিত প্রমাণ পেয়ে আমি আনন্দিত।

তারপর, আমাকে বলা হয়েছিল যে আমরা এখানে দোষারোপ না করে বরং ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাওয়া এই আগুনকে ঠান্ডা করার ব্যপারে কিছু করার জন্যে।  আমার মনে পড়ে ভারতের অদূরেই কিছু অঞ্চলের কথা যেখানে বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধ-বিগ্রহ চলছেই। আমি বিচার করার দায়ভার ইতিহাসের ওপরই ছেড়ে দেব কিভাবে এবং কি গতিতে মানুষের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে এবং সংঘর্ষের আগুন নেভানো হয়েছে। আমরা কি তখন তারপরে ন্যায় বিচার এবং নিন্দা জ্ঞাপন প্রশ্নে ভেবে দেখি নি? আমি এটাকে এ অবস্থায় রেখে গেলাম।

এখন, আমরা যখন এই বিতর্ক শুরু করেছিলাম তখন আমি আমাকে এবং আমার কিছু বন্ধুদেরকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম কাউন্সিল আসলে ঠিক কি অর্জন করতে চায়। অনেক বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও- যখন আমি এই গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কে অংশগ্রহণের জন্যে এখানে এসেছিলাম, -প্রধানত যেসব কারনে যা আমি সংক্ষেপে এক মিনিটের মধ্যেই ব্যাখ্যা করবো- আমি আশা করেছিলাম যে কাউন্সিল শান্তি, অগ্রগতি এবং ন্যায় বিচার – এই তিনটি নীতিবাক্যকে আদর্শ ধরে এগিয়ে যাবে।

এ প্রসঙ্গে আমি শক্ত-কন্ঠে বলতে চাইঃ যারা শান্তি, অগ্রগতি এবং ন্যায় বিচার প্রত্যাশী, তাদের অবশ্যই উপলব্ধি করা উচিত যে এসব নীতি সব এলাকাতেই প্রযোজ্য- নিছক ভারত এবং পাকিস্তানের জন্যে নয়, নিছক এই এলাকা বা ঐ এলাকার জন্যে নয়, কিন্তু সব এলাকার জন্যে প্রযোজ্য।

আমরা সবাই তাদের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং আমরা নিছকই এসব ধারণা আলাদা করতে পারবো না যে নয় মাস ঘুমিয়ে থেকে হঠাৎ এ ব্যপারে কারও মনে হল তার দ্রুত কিছু করা উচিত।

দ্বিতীয় যে প্রশ্নটি আমি নিজেকে করেছিলামঃ আমরা কি এটি অর্জন করতে পারবো? আমার মনে হয় আমরা এটি অর্জন করতে পারবো। নিরাপত্তা পরিষদের যথেষ্ট ক্ষমতা আছে এটি অর্জন করার, কিন্তু আমি বরং সন্দিহান এটি তার ক্ষমতার প্রয়োগ করবে কিনা। যে ক্ষমতা অনেক, অনেক কাল আগে প্রয়োগ করা সম্ভব হত। আমরা অভ্যন্তরীণ বিচারব্যবস্থা নিয়ে কাদা-জলের মধ্যে আছি এবং এভাবেই চলছে এবং অবিচ্ছিন্ন এ সমস্যার দিকে ও উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্যে আজকের দিনের এখন পর্যন্ত কোন রকম চেষ্টা করা হয় নি। না, আমরা খুবই ব্যস্ত যেনতেনভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে।

তারপর আমি নিজেকে প্রশ্ন করলামঃ কিভাবে আমরা এটা অর্জন করতে পারি? এখন, এখানে আমার খটকা, সন্দেহ এবং বিক্ষোভ চলে এসেছে। আমার চিন্তা করা উচিত ছিল, আমি আবারও বলছি যে যুদ্ধবিরতির প্রশ্ন বিবেচনার জন্যে যে দল যুদ্ধ করছে , তাদের প্রয়োজন। আমি বিশ্বাস করি কাউন্সিলের এটা ইচ্ছা নয় যে পাকিস্তানি সেনা এবং পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যেকার লড়াই বন্ধ করা উচিত হবে না, এবং সমস্ত এলাকায় যে ভয়াবহ গণহত্যা শুরু হয়েছে, এবং যারা এসব গণহত্যা প্রতিহত করছে তাদের ওপরই এর দোষ চাপানো।

আমার ভেবেছিলাম যে সব লোকের সদিচ্ছাতেই সকল যুদ্ধবিগ্রহের অবসান হবে। এবং আমরা এই মাত্রই বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন সম্পর্কে যুক্তি শুনলাম- আমি বারংবার এই সমস্যা সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছি, এবং আমাদের এই বিষয় নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না- যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী অসহায় নারী, শিশু এবং মানুষের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে, কিন্তু তারা এর কোনো প্রতিবাদ করতে পারবে না কারন সেটা অনৈতিক।

এই কারনে আমরা এখানে বাংলাদেশের মানুষকে আসতে এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করতে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা ঘটেনি। এরকম বিচ্ছিন্ন ব্যবস্থায়, কাউন্সিল কি সত্যিই কোনো বিচক্ষণ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার আশা রাখে?

এখন, খুব সংক্ষেপে এসব কিছু বাস্তবতা ব্যাখ্যা করা যাক। শরণার্থীরা একটি বাস্তব ঘটনা। এটি কেবলমাত্র একটি অর্থনৈতিক ভারের প্রশ্ন নয়। আমি সেটা বারবার ব্যাখ্যা করেছি, সুতরাং আমি সে প্রসঙ্গে আর যাবো না। কিন্তু যাই হোক, শরণার্থীরা বাস্তব। জনগণ, তাদের নিজস্ব জীবন-তাদের ইচ্ছেমত পালনের জন্যে যে সুতীব্র আকাঙক্ষা- সেটি একটি অপ্রতিরোধ্য বাস্তবতা। এসব জীবন নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তানের কোনরূপ আশা নেই। সরকারের সবগুলো প্রশাসনের সম্পূর্ণ পতন একটি বাস্তবতা। বিভিন্ন ধরণের সশস্ত্র সংঘাত বাস্তব। ২৫শে মার্চের পর থেকে পাকিস্তানের বিভিন্ন ধরণের প্ররোচনা এবং আগ্রাসন একটি বাস্তব সত্য। ফলস্বরূপ, আত্মরক্ষার অধিকার খাটাতে গিয়ে প্রতিরোধ শুরু হয়েছে, এবং আমরা সাবধান করে দিয়েছি যে আমরা কোনোরকম দ্বিধা ছাড়াই এই অধিকার প্রয়োগ করবো। ভারত কর্তৃক বাংলাদেশের স্বীকৃতি একটি বাস্তবতা। বাংলাদেশ নিজেই একটি বাস্তবতা। এসব বাস্তব ঘটনার ভিত্তিতে গড়া এসব বাস্তব সত্যকে যারা গ্রহণ করেন না, তাদের অধিকারে তারা সেটা করতেই পারেন। আমরা এখানে কাউকে যুক্তি দিয়ে বুঝাতে আসি নি যাদের যুক্তি শোনারই ইচ্ছা নেই। যাদের প্রকৃত ঘটনা দেখারই ইচ্ছা নেই, কেউই তাদেরকে জোর করে ঘটনা দেখাতে পারবে না। উক্তি আছে, ঐ ব্যক্তির মত অন্ধ আর কেউ নেই যে দেখতেই রাজি নয়।

আমরা যদি এই বাস্তবতার বিরুদ্ধে যাই, আমি আশংকা করছি যে শুধু ভারতই কিন্তু না, বরং পুরো জাতিসংঘ ধারণাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নকে ধন্যবাদ দিতে চাই, ভারত-সোভিয়েত চুক্তির জন্যে নয়, বরং এটি সেইসব দেশ, যারা এসব বাস্তবতার স্বরূপ মেনে নিয়েছে।

এসব বাস্তবতা বিভিন্নভাবে আলোর দেখা পেয়েছে, কিন্তু খুব বেশিই ধীরে। নয় মাস পর, আমরা এখনও বাস্তবতার ধারেকাছেও যেতে পারি নি।

ভারত-সোভিয়েত চুক্তি সম্পর্কে বেশি কিছু বলা হয় নি, যে এটি একটি দাসত্বের বন্ধন। এখন, যারা বিশ্বাস করে যে দেশ হিসেবে ভারতকে অন্য কোন শক্তি আজকে নিয়ন্ত্রণ এবং শাসন করতে পারবে, তা যতই শক্তিশালী হোক না কেন, বিদ্যায় তারা একেবারেই অল্প। তাদের বিদ্যার প্রয়োজন নেই, কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে তাদের মনোযোগ প্রয়োজন। পাকিস্তান একই ঘটনা বর্ণনা করেই যাচ্ছে যে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির কারনে জোরপূর্বক নির্বাচন এবং পরবর্তীতে তাদের রায় বাতিল ছিল অবশ্যম্ভাবী। আবার, আমি এটা এ অবস্থাতেই ছেড়ে দেব কারন আমরা সত্য সম্পর্কে একটু বেশিই জানি……। এই পর্যায়ে আমি সুস্পষ্টভাবে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে চাই। আমরা ইতিপূর্বেও পরিষ্কারভাবে বলেছি, কিন্তু আমি আবারও আনুষ্ঠানিকভাবে একটি সংক্ষিপ্ত অনুচ্ছেদে আমাদের অবস্থান সম্পর্কে পড়ছিঃ

“আমরা আমাদের অবস্থান পুরোপুরি স্পষ্ট করেছি এবং আমরা তা দৃঢ়ভাবে মেনে চলবো, যে সংকটাপন্ন অবস্থায় আমরা পড়েছি- অন্যান্যদের জন্যে বুঝতে যদিও এটা কঠিন হতে পারে- সেটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, আমাদের সমগ্র সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো এবং ৫০০ মিলিয়নেরও বেশি ভারতবর্ষের মানুষের ও আরও অনেকের জন্যে কঠিন জীবন। আমরা একটি প্রতিবেশী দেশ থেকে চারবার আক্রমণের শিকার হয়েছি, এবং আবারও আমরা হুমকির সম্মুখীন। বিভিন্ন দেশের আয়তন এখানে সামান্যই প্রাসঙ্গিক, ছোট ক্ষমতার জন্যে শক্তিশালী মিত্র, ব্যয়বহুল এবং দক্ষ সামরিক যন্ত্রপাতি, এবং অদ্ভুত উচ্চাভিলাষ থাকতে পারে। এর সাথে যোগ করুন আমরা আমাদের দোরগোড়ায় ৭৫ মিলিয়ন মানুষের ধবংসের ভয়াবহ ঝুঁকির সম্মুখীন। আমরা এটা কোনভাবেই অস্বীকার করতে পারবো না এবং আমরা এটা সহ্য করবো না। ”

.

13.309.967-968

শিরোনাম সুত্র তারিখ
সোভিয়েত প্রতিনিধি মিঃ জ্যাকব মালিকের বিবৃতি জাতিসংঘ ডকুমেন্টস ৬ ডিসেম্বর,১৯৭১

         সোভিয়েত প্রতিনিধি মিঃ জ্যাকব মালিকের বিবৃতি

সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিনিধিগন সাধারন পরিষদের নিকট প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়া কে সঠিক বলে মনে করে না।বিষয়টি মুলত সমস্যার সমাধানের এবং হিন্দুস্তান পেনিসুলার মূল যুদ্ধ নিরসনের ইঙ্গিত।এটি মূলত তাদের জন্যই প্রয়োজন যারা পূর্বের মতই সেসব দেশের বিরুদ্ধে মিত্থ্যাচার ও পরোক্ষ সমালোচনা করতে চাইছে যাদের সাথে থাকতে তারা রাজি নয়।তবে এটি পরিষ্কার যে তাদের মূল উদ্দ্যেশ্য যুদ্ধের মূল সমস্যা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়া, জল ঘোলা করা ,ইউনাইটেড নেশন্স কে বিহ্বল করা এবং সমস্যার সমাধান বের করাকে প্রতিহত করা।

যারা খসড়া সমাধান কে সমর্থন করেন তারা সাধারন পরিষদের সমাধান ও সুপারিশ সম্পর্কে জানেন যেখানে নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশ বাধ্যতামূলক সিদ্ধান্ত যা দলিলের অধীনে ইউনাইটেড নেশনের সদস্য দ্বারা বাস্তবায়ন করতে হবে এবং বিষয়টির উপযুক্ত সমাধান পাওয়া না জাওয়ায় সেসব দল এখন সাধারন পরিষদের নিকট প্রশ্ন ছুঁড়ছে।তাদের তা করতে দেয়া হোক।যারা এ পথ বেছে নিতে চায় তারা নিতেই পারে।তারা সমস্যা থেকে পিছু হটুক।সোভিইয়েত প্রতিনিধিগন মনে করেন খসড়া সমাধানে সোভিয়েত ইউনিয়নের দেয়া সমাধানের নির্দেশনাই কেবল হিন্দুস্তানের পেনিসুলার সমাধান করতে পারে।

সভাপতি আপনি যেমন বলেছেন সোভিয়েত প্রতিনিধিদল বর্তমানে খসড়া সমাধানের জন্য কোন ভোট চাচ্ছে না।সাধারন পরিষদ বিষয়টি সমাধান করতে পারুক আর না পারুক আমরা অন্যান্য প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করতে চাই।আমরা কাজ অব্যাহত রাখব এবং আমরা সঠিক কারণকে এবং আমাদের অবস্থানকে সমর্থন করে যাবো।

আমি আমার পুরনো বন্ধু,সৌদি আরবের প্রতিনিধি মিঃ ব্রুডি এর করা কিছু মন্তব্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কিছু কথা বলতে চাই।তিনি পরিষদকে জানিয়েছেন তাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাল্টিক স্টেটের প্রতিনিধিগন আমন্ত্রন জানিয়েছেন।বিশ্বাস করবেন না মিঃ বারুডি।তারা বাল্টিক প্রজাতন্ত্রের প্রতিনিধি নয়,তারা সেসব রাষ্ট্রের জন্য প্রতারক।তারা হিটলারের জন্য কাজ করেছে,এখন যারা তাদের অধিক অর্থ দিচ্ছে তাদের জন্য কাজ করছে।তারা গোপন সংস্থার জন্য কাজ করছে।তাদের দিয়ে সোভিয়েত ইউনিইয়ন এবং বাল্টিক প্রজাতন্ত্রের জনয় জঘন্য কাজ করিয়ে নেয়া হয়েছে।তাই তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক ছিন্ন করুন মিঃ বারুডি।

আপনি যদি খাঁটি মানুষদের সঙ্গ গ্রহন করতে চান,বাল্টিক প্রজাতন্ত্রের প্রতিনিধি হিসেবে আমি আপনাকে সহায়তা করতে পারি।সাধারন পরিষদের ছাব্বিশতম সেশনে সোভিয়েত প্রতিনিধিদলের মিশনে লিথুনিয়ান জনগনের একজন প্রতিনিধি রয়েছেন যার সাথে আমি আগামিকাল আপনাকে পরিচয় করিয়ে দিতে পারি।আমি আজ আপনাকে তার কার্ড ও দিতে পারি।তিনি লাতভিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ডেপুটি মিনিস্টার এবং আমি আপনাদের একসাথে এনে পরিচয় করিয়ে দিতে পেরে খুবি আনন্দিত হব।

.

13.310.969-976

শিরোনাম সূত্র তারিখ
সাধারণ পরিষদে বিতর্কের সংক্ষিপ্ত সার বাংলাদেশ ডকুমেন্টস ৭ ডিসেম্বর, ১৯৭১

                       বিতর্কের সংক্ষিপ্ত সার

ডিসেম্বর ৭, ১৯৭১ এ অনুষ্ঠিত সাধারণ পরিষদ, সৈন্য প্রত্যাহার এবং অতিসত্বর যুদ্ধবিরতির আহবান জানিয়ে প্রস্তাবনা গ্রহণ করেছিল।  পক্ষে ভোট ছিল ১০৪, বিপক্ষে ১১ এবং  ১০টি ভোট ছিল নিবৃত্ত।

ডিসেম্বর ৭, ১৯৭১ তারিখে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বারা গৃহীত সমাধানের জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা বাস্তব পরিস্থিতিকে অস্বীকার করার এবং এর সাথে জড়িত মূল বিষয়গুলোকে আমলে না নেয়ার চেয়ে যুদ্ধবিরতি এবং সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য একটি মানসম্পন্ন নিয়মের প্রতি গ্রহণযোগ্যতা ছিল। সাধারণ পরিষদে বিতর্কের সময় বিভিন্ন প্রতিনিধিদলের বক্তব্যের মাধ্যমে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো পরিষ্কার হয়েছে। ভারত এবং পাকিস্তান ছাড়া, শুধুমাত্র ৫৮টি প্রতিনিধিদল বিতর্কের সময় বক্তব্য দিয়েছিল।

১। দেশসমুহ যারা পুর্ব পাকিস্তানের নিপীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করেছিলঃ-

১। বুলগেরিয়াঃ

২। সাইপ্রাসঃ পুর্ব পাকিস্তানে ধারাবাহিক দুঃখজনক ঘটনা এবং ঐ দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রেক্ষিতে ভারত বিশাল উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে অবস্থান করছে।

৩। চেকোস্লোভাকিয়াঃ পাকিস্তান এমন কোন পদক্ষেপ নেয়নি যেটি পুর্ব পাকিস্তানে পরিস্থিতির প্রতিকার করতে পারত এবং রাজনৈতিক সমঝোতা আনতে পারত।

৪। গ্রিসঃ পাকিস্তানের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য কার্যকরী কার্যকলাপের  অনুপস্থিতি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মৌনভাবকেও যোগ করা যেতে পারে যেটি কোন শান্তিপুর্ন সমঝোতাকে উৎসাহ দেয়নি।

৫। হাঙ্গেরিঃ

৬। মঙ্গোলিয়াঃ

৭। পোল্যান্ডঃ

৮। ইউ এস এস আরঃ

৯। যুগোস্লাভিয়াঃ

২। দেশসমুহ যারা পুর্ব পাকিস্তানে রাজনৈতিক সমঝোতার ব্যাপারে কথা বলেছিল এবং ইঙ্গিত দিয়েছিল যে এই সংকটময় পরিস্থিতি ততক্ষন শেষ হবে না যতক্ষণ এই দ্বন্দ্বের মূল বিষয়গুলো দূর হবে এবং রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌছবেঃ

১। আর্জেন্টিনাঃ

২। ভুটানঃ

৩। বুলগেরিয়াঃ

৪। কানাডাঃ নিরাপত্তা পরিষদের এমন একটি অবস্থায় থাকা উচিত যাতে তারা অন্তর্নিহিত রাজনৈতিক বিষয়ে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারে।

৫। সিলনঃ পাকিস্তানকে আহবান করেছিল পুর্ব বাংলার নেতাদের সাথে আলোচনা করতে, জোর দিয়েছিল যে পুর্ব বাংলার নেতাদের সকল বিচ্ছিন্ন দাবীকে অস্বীকার করার জন্য অবশ্যই রাজি থাকতে হবে। আরও বলেছিল যে জাতিসংঘকে যদি বলা হয় হস্তক্ষেপের জন্য এবং যদি তাকে প্রকৃতপক্ষে করতে হয়, তাহলে পুরো সমস্যাকে সামগ্রিকভাবে বিবেচনা করতে হবে। তারা মত দিয়েছিল যে বাংলাদেশের সংগ্রাম “ নিশ্চিতই সর্বোত্তমভাবে স্বাধীনতা আন্দোলন নয় এবং সার্বজনীনভাবে উপলব্ধ পরিভাষার চেতনা। যদি আমরা বিষয়টিকে সেভাবে বিবেচনা করি তবে আমাদের একটি সাংঘাতিক উদাহরণ তৈরি করতে হবে।

৬। সাইপ্রাসঃ অভিবাসীদের অন্তঃপ্রবাহ থেকে উদ্ভুত সমস্যা একটি রাজনৈতিক সমাধান দ্বারা রোধ করা উচিত এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে মিলিত কার্যাবলির দ্বারা করা উচিত। এই লিক্ষ্যে কিছুই করা হয়নি।

৭। চেকোস্লোভাকিয়াঃ

৮। ফ্রান্সঃ ফরাসি সরকারের আচরণ শান্তি পুনরস্থাপন নিশ্চিত করার উদ্বেগ দ্বারা চালিত হচ্ছে, একটি রাজনৈতিক সমাধানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, যেটি সংশ্লিষ্ট লোকদের সম্মতি দ্বারা শান্তি বজায় রাখারএকমাত্র নিশ্চয়তা হতে পারত এবং পারে।

৯। গ্যাবনঃ ইউএসএসআর এর খসড়া প্রস্তাবনা যদিও পুরোপুরি স্বীকার্য নয়, অনেক বেশী কাম্য মনে হয় যেহেতু এটি সংশ্লিষ্ট মানুষদের ইচ্ছার সাথে একটি রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছানোর প্রয়োজনীয়তাকে বিবেচনা করে।

১০। ঘানাঃ

১১। গ্রিসঃ প্রস্তাবনার সমালোচনা করেছিল যেহেতু শরনার্থীদের স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়ার শর্তসমুহ  গুরুত্ত্বপুর্ন অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি যেভাবে সমস্যার রাজনৈতিক সমঝোতার মুখবন্ধ অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে।

১২. হাঙ্গেরি:

১৩. ইরান:

১৪. ইতালি:

১৫: লেবানন: উদ্বাস্তুদের সমস্যাগুলোর মানবিক সমাধানের আহ্বান করেছিলো।

১৬. মেক্সিকো: সংঘাতময় এলাকায় স্বাভাবিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য এবং উদ্বাস্তুদের বাড়িতে প্রত্যাবর্তনের জন্য খসড়া বিশ্লেষণের সাথে আশু রাজনৈতিক সমাধান বিশেষভাবে সংযুক্ত করেছিলো।

১৭. মঙ্গোলিয়া:

১৮. নেদারল্যান্ড:

১৯. পেরু: “বাস্তবতার সাথে মানিয়ে নেওয়া এবং কারণসমূহ উপেক্ষা করা হলো কাজ সম্পদানের অপর্যাপ্ত উপায়” এবং আমাদের বেশি দূর নিবে না। প্রয়োজনীয় ” সংঘাতের মূল বোধশক্তির সীমারেখা রাখা এবং জাতিসংঘের দলিলের নীতির উপর ভিত্তি করে এটি অপসারণ করা” দরকার।

২০. সুইডেন: সমাধানের জন্য ভোট গ্রহণ করেছিলো “এই প্রত্যয়ে যে জাতিসংঘের এই দুঃখজনক সংঘাত সমাধানের প্রত্যেক প্রচেষ্টা গ্রহণের গম্ভীর দায়িত্ব রয়েছে”, “একটি যুদ্ধবিরতি প্রকৃতিগতভাবে অন্তর্নিহিত সমস্যাগুলো সমাধান করবে না যদিও এটি সমাধানের পূর্বশর্ত। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ব্যক্ত ইচ্ছার উপর একটি সমাধান অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে”।

২১. ইউ.কে: যেকোনো একটা সমস্যার উত্তরণ নিষ্পত্তিতে অবদান রাখবে না-তা গণনা করা হয়েছে।

২২. ইউ.এস.এস.আর: যদি না ভারতীয় উপমহাদেশের প্রকৃত অবস্থা বিবেচনা করা হয়, পূর্ব পাকিস্তানে যুদ্ধবিগ্রহ সমাপ্তির জন্য এবং অবস্থা স্বাভাবিক করতে, অথবা রাজনৈতিক মীমাংসার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ জাতিসংঘের জন্য অসম্ভব।

Brezhnev উদ্ধৃত করেছেন,” সঙ্কটটি বর্তমানে পূর্ব পাকিস্তানের সীমানা অতিক্রম করেছে এবং একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা হয়ে গিয়েছে।”

২৩. যুগোশ্লাভিয়া: এই সঙ্কটের বাস্তব কারণ নির্ণয় এবং খসড়া বিশ্লেষণের উন্নতির জন্য জোর দেওয়া, যা একটি অধিকতর সুষম পদ্ধতি আশু রাজনৈতিক সমাধানের জন্য প্রয়োজন।

রাষ্ট্রসমূহ যারা যুদ্ধবিগ্রহ অবসান এবং প্রত্যাহার প্রভৃতির মাধ্যমে রাজনৈতিক সমঝোতা বিশেষভাবে পছন্দ করেছিল।

১. ভুটান:

২. বুলগেরিয়া:

৩. চিলি: যুদ্ধবিরতি, প্রত্যাহার, মানবাধিকার রক্ষা, এলাকায় রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য তাৎক্ষনিক উপায় গ্রহণ, হস্তক্ষেপ না করা, প্রাদেশিক অখণ্ডতা, জাতিসংঘের সক্রিয় উপস্থিতি এসব নীতির উপর খসড়া সমাধান ভিত্তি করে ঐক্যের ভিত্তিতে চূড়ান্ত খসড়া সমাধান হবে।

৪. সাইপ্রাস: সমাধান পর্যাপ্ত সুষম হবে না যদি এটি রাজনৈতিক সমাধান এবং স্বাভাবিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা না  করে।

৫. চেকোশ্লোভিয়া:

৬. ডেনমার্ক: সমাধানটি এমন একটি পদ্ধতিতে মৌলিক রাজনৈতিক সমাধানের মোকাবিলা করে না যা সমস্যাগুলোর জটিলতা বিবেচনা করবে।

৭. গ্যাবন: প্রথম চূড়ান্ত সমাধান (A/L647/Rev.1) Marlling যুদ্ধবিরতি এবং সেনা প্রত্যাহার, রাজনৈতিক কাঠামোর জন্য বাতাবরণ পুনঃপ্রতিষ্ঠায় যথেষ্ট জোর প্রয়োগ ব্যতীত উদ্বাস্তুদের তাদের ঘরে ফিরে যেতে উৎসাহ দিবে না, এবং কারণসমূহ মোকাবেলা না করে শুধুমাত্র ফলাফল দূর করতে প্রবণ হয়।

৮. হাঙ্গেরি:

৯. মাদাগাস্কার: “আমরা সবাই ভালোমতো অবগত রয়েছি যে সদস্য রাষ্ট্রের:hut অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমরা হস্তক্ষেপ করবো না, একই সময়ে, আমরা ভাবছি যে ফিরিয়ে দেওয়া জরুরি ও প্রয়োজনীয়, রাজনৈতিক মীমাংসার দ্বারা, বাংলায় শান্তি ও নিরাপত্তার স্বাভাবিক অবস্থা, এবং এই উদ্দেশ্যের জন্য আমাদের মেনে নিতে হবে যে আত্মনিয়ন্ত্রণের নীতিকে, এই বিশেষ ক্ষেত্রে এবং বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে শুধুমাত্র একটি অনুভূতি রয়েছে যা এর সম্পর্কিত মানুষদের দ্বারা অবাধে দেওয়া হয়।

১০. নেপাল

১১. নিউজিল্যাণ্ড: “একবার যুদ্ধ লেগে গেলে জাতিসংঘের প্রথম এবং অতীব জরুরী দায়িত্ব হয় এর মীমাংসা করা।

“একই সময়ে এটি স্বীকার করতে হবে যে যতক্ষণ না পর্যন্ত এই সমস্যা যা সংঘাতের সৃষ্টি করেছে তা মীমাংসা না হয় ততক্ষণ উপমহাদেশে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি থাকবে না।”

১২। পেরুঃ প্রথম যুদ্ধ বিরতি এবং সেই প্রশ্নের সাথে মোকাবেলা করার জন্য পরবর্তী পদক্ষেপের উপায় গ্রহণ যা এই যুদ্ধের আরম্ভ করেছে। খসড়া প্রস্তাবনা পরবর্তী বিষয়ে অপর্যাপ্ত।

১৩। পোল্যান্ডঃ

১৪। ইউ কেঃ  আমাদের এই দুঃসময় কাটিয়ে উঠার জন্য সম্ভাবনা খোঁজার চেষ্টা করতে হবে, যুদ্ধ স্থগিত করা উচিত এবং সমাধান খোজা উচিত প্রচন্ড জটিল বিষয় গুলোর জন্য যেগুলো যুদ্ধের সূচনাতে ভূমিকা রেখেছে।

১৫। ইউ এস এস আরঃ এখানে একই সঙ্গে যুদ্ধ বিরতি করা উচিত, রক্তপাত এবং যুদ্ধ বন্ধ করা উচিত এবং পুর্ব পাকিস্তানে সমস্যার রাজনৈতিক সমঝোতা শুরু করা উচিত যেটির ভিত্তি হবে এটির জনগনের আইনি অধিকার ও স্বার্থ।

১৬। যুগোস্লাভিয়াঃ একই সাথে রাজনৈতিক সমস্যার সমধান আহবান ছাড়াও ব্যক্ত করেছে যে এটি প্রাথমিকভাবে নির্ভর করছে পাকিস্তান সরকারের উপর।

৪। দেশসমুহ যারা বিশেষভাবে ব্যক্ত করেছে যে এটি সমস্যার মূল কারণে যাওয়ার সময় নয়ঃ

১। আলজেরিয়াঃ প্রথমে যুদ্ধবিরতি এবং সৈন্য প্রত্যাহারের আহবান করেছে এবং তারপর অন্যান্য সমস্যার সমাধানের কথা বলেছে।

২। ব্রাজিলঃ জাতিসংঘের সামনে এই প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়েছে এই বর্তমান বিষয়ের বাস্তব সমাধানের জন্য। বর্তমান পরিস্থিতির দুরবর্তী কারণ নিয়ে আলোচনা শুরু করা একটি ব্যর্থ বিষয়।

৩। কানাডাঃ মুখবন্ধ অনুচ্ছেদের উপর বিশেষ নজর দিয়েছিল যেটি পরবর্তী পদক্ষেপ সঠিকভাবে মোকাবেলা করার প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকার করে, সেই বিষয়গুলোর সাথে যেটি এই যুদ্ধের সুচনা করেছে।

৪। সিলনঃ দ্বন্দ্বের কারণ অনুসন্ধান করার জন্য অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।

৫। ইকুয়েডরঃ

৬। ফিজিঃ যুদ্ধবিরতি প্রথমে অর্জিত হওয়া উচিত। একটি রাজনৈতিক সমঝোতার বিস্তারিত নিয়ে  তখন কাজ করা যাবে।

৭. ইতালিঃ                      উভয়দিকই স্বীকার করে, কিন্তু যুদ্ধবিরতি ইত্যাদি হলো ‘অবিলম্বে করনীয়

                                কাজ’ এবং জাতি সংঘের বিষয়টির অন্য দিক গুলো আবার বিবেচনা করা

                                প্রয়োজন।

৮. জাপানঃ                     অত্যাবশ্যকীয় উপাদানগুলো খসড়া প্রস্তাবে উল্লেখ করা আছে যা ঠিক এই সময়ের

                                চাহিদাকে নির্দেশ করে, পুর্ব পাকিস্তানের সমস্যা পাকিস্তানেরই সমাধান করা

উচিত।

৯. জর্ডান

১০. মালয়শিয়াঃ                 আরো আশা করে “ভবিষতে এর সকল বিবাদের চুড়ান্ত ও শান্তিপুর্ণ মীমাংসা

হোক”।

১১. নেদারল্যান্ডঃ                সাধারন সম্মেলনের মাধ্যমে তাৎক্ষনিক প্রাথমিক পদক্ষেপ (যুদ্ধ বিরতি এবং

প্রত্যাহার) নেওয়া উচিত।

১২. উরুগুয়েঃ                   রেজল্যুশনটি বিভিন্ন পক্ষের উত্থাপিত প্রশ্নের কোন পুর্ব পরীক্ষার ভিত্তিতে

                                করা নয়… এমনকি এটা দীর্ঘ মেয়াদী সমাধানের অনুসন্ধানও নয়।

ঙ. যেসকল দেশ পাকিস্তানের প্রাদেশিক অখন্ডতার উপর জোর দিয়েছেঃ

১. আলজেরিয়াঃ

২. আর্জেন্টিনাঃ

৩. চিলিঃ

৪. লেবাননঃ

৫. নেপালঃ                      অন্য প্রদেশের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ এবং বল প্রয়োগের হুমকি না দেওয়ার

                                মুলনীতিও উল্লেখ করে।

৬. তানজানিয়াঃ

৭. যুগোসলাভিয়াঃ                       বল প্রয়োগ পরিত্যাগের মুলনীতিও উল্লেখ করে।

চ. যে সকল দেশ সুনির্দিষ্টভাবে বলেছে যে, তারা চায় পাকিস্তানে প্রাদেশিক অখন্ডতা ও ঐক্য বজায় থাকুকঃ

১. আলবেনিয়াঃ

২. সিংহলঃ

৩. চাদঃ

৪. ঘানাঃ

৫. ইন্দোনেশিয়াঃ

৬. ইরানঃ

৭. জর্ডানঃ জাতিসংঘকে পাকিস্তানের প্রাদেশিক অখন্ডতা রক্ষা করতে বলেছে।

৮. কুয়েতঃ

৯. মরিতানিয়াঃ

১০. সুদানঃ

১১. টোগোঃ

১২. তুর্কিঃ

ছ. যে সকল দেশ একটি দেশের অভ্যন্তরিন বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে জোর দিয়েছেঃ

১. আলবেনিয়াঃ                 সার্বভৌম রাষ্ট্র ও জনগনের অভ্যন্তরিন বিষয়ে সাম্রাজ্যবাদী হস্তক্ষেপ থেকে

বিরত আছে।

২. আলজেরিয়াঃ

৩. আর্জেন্টিনাঃ

৪. বুরুন্ডিঃ      যেহেতু শান্তিপুর্ণ আলোচনা সম্ভব এবং সমগ্র জাতির স্বাধীনতা ভোগের মৌলিক মানবাধিকারের জন্য দীর্ঘ সময় যুদ্ধ না চালিয়ে যাওয়ার নীতি সুপারিশ করে।

৫. চাদঃ

৬. চিলিঃ

৭. চীনঃ

৮. ঘানাঃ

৯. ইন্দোনেশিয়াঃ

১০. ইরানঃ

১১. কুয়েতঃ

১২. লেবাননঃ

১৩. মরিতানিয়াঃ

১৪. নেপালঃ

১৫. সুদানঃ

১৬. টোগোঃ

১৭. তুর্কিঃ

১৮. যুগোসলাভিয়াঃ             এছাড়াও মানবাধিকারের প্রতি সন্মান দেখানোর নীতির কথা উল্লেখ করে।

জ. যে সকল দেশ ইন্দো-পাকিস্তান সংকট মোকাবেলায় জাতিসংঘ মহাসচিবের অথবা কোনো তৃতীয় পক্ষের

ভাল পদক্ষেপের ভুমিকার ওপর জোর দিয়েছেঃ

১. আর্জেন্টিনাঃ                  যুদ্ধবিরতি ও প্রত্যাহার তত্ত্বাবধানের জন্য মহাসচিবের ভাল কার্যপরিচালনা

এবং পর্যবেক্ষকের প্রয়োজন।

২. বুরুন্ডিঃ                      মহাসচিবের ভাল কার্যপরিচালনা।

৩. কানডীঃ                     জাতিসংঘের সুনির্দিষ্ট তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা যুদ্ধবিরতির অনুষঙ্গী হওয়া উচিত।

৪. সিংহলঃ                      মহাসচিবের ভাল কার্যপরিচালনা।

৫. চিলিঃ

৬. ইরানঃ                      প্রত্যাহার তত্ত্বাবধানের জন্য জতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের প্রেরনের দাবি

জানায়।

৭. নিকারাগুয়াঃ                 আশা প্রকাশ করে যে ভারত এবং পাকিস্তান জাতিসংঘের শান্তিপুর্ণ মধ্যস্থতা

মেনে নেবে।

৮. যুক্তরাষ্ট্রঃ                    মহাসচিবের ভাল কার্যপরিচালনাকে স্বাগত না জানানোর জন্য ভারতকে

দোষারোপও করে, ইত্যাদি।

        যাইহোক, যেহেতু রেজল্যুশন পুর্ব পাকিস্তানের জনগণের আশানুযায়ী সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের প্রয়োজনকে উপেক্ষা করে এবং অবাধ ও বিনা উস্কানিতে পাকিস্তানি আগ্রাসনের কথা উল্লেখ করতে ব্যর্থ হয়, ভারত এর বিরোধিতা করে। রেজল্যুশনটি বৈশিষ্টগত ভাবে সুপারিশমূলক ছিল এবং বাস্তবায়িত হয়নি কারন এটি রাজনৈতিকভাবে অবাস্তব ছিল।

.

13.311.977

শিরোনাম সূত্র তারিখ
নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনার সংক্ষিপ্ত সার বাংলাদেশ ডকুমেন্টস

নিরাপত্তা কাউন্সিলে আলোচনার উপর একটি সংক্ষিপ্ত মন্তব্য

১২ থেকে ২১ ডিসেম্বর, ১৯৭১

১৯৭১ সালের ১২ থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদ পুনরায় ভারতীয় উপমহাদেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে। ১৩ ডিসেম্বর অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও সেনা প্রত্যাহারের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা পেশকৃত একটি খসড়ার উপর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেটো দেয়। এদিকে, ঢাকা এবং ভারতের একতরফা একটি অস্ত্রবিরতির ঘোষণার ফলে উপমহাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়ে পরে এবং এর ফলে জাতিসংঘে ভারতের অবস্থান আরো সুদৃঢ় হয়। ভারত কর্তৃক গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বীকৃতি এবং পশ্চিম সেক্টরে একতরফা অস্ত্রবিরতির ঘোষণাটি ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করার জন্য বাধ্য করে। ভারত এটাও নিশ্চিত করে যে, পাকিস্তানের কোন স্থানীয় প্রাদেশিক নকশা ছিল না। এরপর পাকিস্তান এই পুরো বিষয়টি সাধারণ পরিষদে ফেরত নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ১০৪টি দেশের মধ্যে মাত্র ২৩টি দেশ এই বিষয়টিতে স্বাক্ষর করে। ফলশ্রুতিতে, পাকিস্তানের সকল চেষ্টা ব্যার্থতায় পর্যবসিত হয়। এ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, বাংলাদেশের তৎকালীন পরিস্থিতি সম্পর্কে জাতিসংঘের সদস্যদের পরিষ্কার ধারনা ছিল।

অবশেষে, ১৭ ডিসেম্বর ভারত পশ্চিম সেক্টরে একতরফা অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেয় এবং এতে পাকিস্তানেরও স্বীকৃতি ছিল। ফলে, ২১ ডিসেম্বর নিরাপত্তা পরিষদ একটি সমাধান দিতে সক্ষম হয় এবং এতে বলা ছিল যে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী সকল বিরোধপূর্ণ এলাকায় একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ঘোষণা কঠোরভাবে পালন করা হবে এবং যতদিন এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হবে, ততদিন পর্যন্ত এর প্রভাব কার্যকরী থাকবে। এইসময় তারা জম্মু ও কাশ্মীর এলাকায় তাদের নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী তাদের নিজ নিজ অঞ্চলে রাখবে এবং এই ব্যাপারটি ভারত ও পাকিস্তানে অবস্থিত জাতিসংঘ সামরিক পর্যবেক্ষক গ্রুপের দ্বারা তত্ত্বাবধান করা হবে। এই রায়ে ১৩টি দেশ এর পক্ষে ভোট দেয় এবং কেউ এর বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি। অবশ্য ২টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল।

.

13.312.978-979

শিরোনাম সূত্র তারিখ
বাংলাদেশে জাতিসংঘ তৎপরতার সংক্ষিপ্ত চিত্র দি ইউনাইটেড নেশনস ইন বাংলাদেশঃ টমাস অলিভার ১ এপ্রিল থেকে ২৭ ডিসেম্বর, ১৯৭১

১৯৭১,

১ই এপ্রিল, জেনারেল সেক্রেটারি পাকিস্তান সরকারকে UN এর মানবিক সহায়তার প্রস্তাব করে।

২২ই এপ্রিল,  জেনারেল সেক্রেটারি, আনুষ্ঠানিকভাবে পুর্ব পাকিস্তানের ভোগান্তি পরিত্রাণের জন্য UN এর মানবিক সহায়তার প্রস্তাব তোলেন।

২৯ই এপ্রিল,  পূর্ব পাকিস্তানের শরণার্থীদের প্রতি UN সহায়তার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে জেনারেল সেক্রেটারি UNHCR মনোনীত করেন।

২২এ মে,  জেনারেল সেক্রেটারির মানবিক সহায়তার প্রস্তাব পাকিস্তান গ্রহণ করে।

৩ই জুন,  ত্রাণ কার্যক্রমের প্রস্তুতির জন্য সহ: সাধারণ সম্পাদক Kittani পাকিস্তান পরিদর্শন করেন।

৭ই জুন,  জরুরী ভিত্তিতে সহায়তার ব্যবস্থা নিতে জেনারেল সেক্রেটারির প্রতিনিধি এবং অল্প কয়েকজন মাঠ কর্মী পূর্ব পাকিস্তান পৌঁছে।

১৬ই জুন,   সাধারণ সম্পাদক পূর্ব পাকিস্তানে সহায়তার জন্য অবদান রাখতে আবেদন করেন।

২১এ জুন,  পূর্ব পাকিস্তানে UN এর মানবিক সহায়তার জন্য  S, Tripp কে হেডকোয়ার্টাসে কোর্ডিনেটর হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

১৬ই জুলাই,  জেনারেল সেক্রেটারি কর্তৃক গৃহীত কার্যকলাপকে UCOSOC অনুমোদন করে।

২০ই জুলাই,  উপমহাদেশের অবস্থার উপর নিরাপত্তা কাউন্সিলে জেনারেল সেক্রেটারি, প্রেসিডেন্টকে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

১৩ই আগষ্ট,  জেনারেল সেক্রেটারি,  সম্ভাব্য দাতা দেশগুলোর সভা আহবান করেন।

২৩ই আগষ্ট,  প্রধান কার্যালয়ে (UNEPRO) Poul- Mare Henry পূর্ব পাকিস্তানের ত্রাণ কার্যক্রমের ভারপ্রাপ্ত সহ সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নিযুক্ত হন।

(সেপ্টেম্বর – আক্টোবর), প্রথম ১০০ ট্র্যাক চাঁদা সুদ্ধ প্রদান করা শুরু।

২২ই অক্টোবর,   জেনারেল সেক্রেটারি,  ইন্ডিয়া এবং পাকিস্তান সরকারের মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব করেন।

(১৫-১৬) নভেম্বর,  অপারেশন পরিচালনার উপর পাকিস্তান সরকার এবং UN এর মধ্যে চুক্তি হয়।

পেজ: ৯৭৯

১৮ই নভেম্বর,  অপারেশনের উপর Paul- Mare Henry সাধারণ সভায় তৃতীয় কমিটিকে প্রতিবেদন দেয়।

২৪ই  নভেম্বর,  কর্মীদের আন্দোলন পূর্ব পাকিস্তানে সরবরাহ সাময়িক বন্ধ করে দেয়, সরবরাহ সিংগাপুরে সরিয়ে নেওয়া হয়।

(৪-৬)ই ডিসেম্বর,  নিরাপত্তা পরিষদ উপমহাদেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় নেয়।

৬ই ডিসেম্বর,  সাধারণ পরিষদ রেজ্যুলেশন 2790 ( XXVI)  গ্রহণ করে, জেনারেল সেক্রেটারির UNEPRO প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টাকে অনুমোদন দেয়।

৭ই ডিসেম্বর,  সাধারণ পরিষদ রেজ্যুলেশন 2793 (XXVI) গ্রহণ করে, আগুন থামানোর আহবান করে।

(১২- ২১) ডিসেম্বর,  সাধারণ পরিষদ পুনরায় পরিস্থিতি বিবেচনায় নেয়, এবং রেজ্যুলেশন 307(1971) গ্রহণ করে।

২১ই ডিসেম্বর,  জেনারেল সেক্রেটারি UNROD প্রতিষ্ঠার কথা সাধারণ সভা এবং নিরাপত্তা পরিষদকে অবহিত করেন।

২২ই ডিসেম্বর,  কর্মীদের উদ্ভাসন সম্পন্ন হয়, ঢাকায় ছোট নিউক্লিয়াস ছোড়ে।

২৭ই ডিসেম্বর,   Toni Hagen UNROD এর ভারপ্রাপ্ত অফিসার হিসেবে ঢাকায় পৌঁছে।