জা রুবেজম | ১৬ জুলাই ১৯৭১ | ভারতীয় অর্থনীতির জন্য ভারী বোঝা
পাকিস্তানে ঘটতে থাকা বিয়োগান্তক ঘটনার এখন প্রায় চার মাস হতে চলল। ঘরবাড়ি ছেড়ে পূর্ব পাকিস্তানের লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিবেশী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও বিহারের রাজ্যগুলোতে আশ্রয় চাচ্ছে।
শরণার্থীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।সরকারী হিসেব মতে মে মাসে ছিল সাড়ে তিন মিলিয়ন যা এখন ৬ মিলিয়নের বেশী। বর্ডার পাড় হবার পরে এরা খড়ের কুঁড়েঘর বা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। খুব সামান্য কিছু লোক ব্যারাক ও সরকারি ভবনগুলোতে আছে।
বিশাল পরিমাণ লোক একসাথে অবস্থানের কারণে মহামারির সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ইতোমধ্যে প্রবেশ করা ৫ মিলিয়ন শরনার্থিদের অনেকে কলেরায় ভুগছেন। তবে আনন্দের বিষয় প্রথম মহামারি নিয়ন্ত্রণ করা গেছে।
উদ্বাস্তুদের অন্তঃপ্রবাহ ভারতীয় অর্থনীতির জন্য বিশাল বোঝা। ভারত সরকার মনে করে যে, পূর্ব পাকিস্তানের শরণার্থীদের জন্য আগামী ছয় মাসে তিন বিলিয়ন রুপি প্রয়োজন এবং তার জন্য জাতীয় বাজেটে চাপ পড়বে।
অনেকে উস্কানি দিচ্ছিল পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধে জড়ানোর ব্যাপারে যাতে করে শরনার্থিরা ফিরে যেতে পারে। ইন্দিরা গান্ধী উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানের জন্য সাহায্য চাইলেন।
সোভিয়েত সরকার এই অনুরোধের প্রতি সাড়া দিল এবং ইতিমধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের শরণার্থীদের জন্য ভারত ৫০০০০ টন চাল পেয়েছে।
এখন দক্ষিণ এশিয়ার ব্যাপারে অনেক দেশের উদ্বেগ ও সহানুভূতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং তারা আশা করছে খুব দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে যাতে শরণার্থীদের বাড়ী ফিরে যাবার স্বাভাবিক পরিবেশ তৈরি হয়।
* একটি রাশিয়ান সাপ্তাহিক