You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরনাম তারিখ
৩১। যুদ্ধ পরিস্থিতি রিপোর্ট ৮ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১৯৭১

ট্রান্সলেটেড বাই: Razibul Bari Palash

<১১, ৩১, ৪৫৫- ৪৫৬>

ক্রমিক নং

 

সূত্র নম্বর   তারিখ

 

তথ্য অন্তর্ভুক্তির তারিখ ঘটনা

জি ০৩৪৫

১৪০৯৪০

১৫-৯-৭১

১৩ সেপ্টেম্বর মুক্তিবাহিনী হরিনগরে পাক গানবোটে আক্রমণ করে। এতে ১ টি গানবোট ও ৩ টি লঞ্চ ডুবে যায়। ৭ পাকসেনা নিহত হয়। ৫ ঘণ্টা যুদ্ধ চলে।

 

জি ০৩৫৬

২৭১৬০০

২৭-৯-৭১ নিয়মিত বাহিনী উসাকায় এস কিউ  ৮৮৬৮ এম /এস ৭৯ এফ/৩ সেপ্টেম্বর ২৬২৩০০ ও ২৭০৫৩০ টায় আক্রমণ করে। এতে হতাহত হয় ২০ জন। ৩ টি চিনা রাইফেল উদ্ধার হয়।

জি ০৩৫৯

০১২০১৫

২-১০-৭১ শত্রুদের একটি ব্যাটালিয়ন কালিগণজ  এস কিউ  ৯০৭১ এম /এস  ৭৯ এফ/৩  ও বসন্তপুর  এস কিউ৮৭৭২   ১৬০০ টায় রি ইনফোর্সমেন্ট করেন।

জি ০৩৬৪

০৪০৮০০

৪-১০-৭১

২৮ সেপ্টেম্বর কালীগঞ্জ এস কিউ ৯০৭১  এম /এস ৭৯ এফ/৩  ও উসাকা এস কিউ ৮৮৬৮  এম /এস ৭৯ এফ/৩  মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ৮১ জন পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয়।

 

 

জি ০৩৭০

১০-১০-৭১

১১-১০-৭১ দুদলই তে এস কিউ  ৬৪৯৯৩২ এম /এস ৭৯ এফ/৩  তারিখ ০৯১০৩০ অক্টোবর মুক্তিবাহিনীর অ্যামবুশে ১২ জন পাকসেনা নিহত হয়। শ্যাম নগরে ১ প্লাটুন বালুচ রেজিমেন্ট ও ১৫০ জন এর অবস্থান নির্নয় করা হয়েছে।

জি ০৩৮০

২২-১০-৭১

২২-১০-৭১ ২২ অক্টোবর নুর নগরে পাকসেনা ও ৪ পি আই রাজাকার আমাদের অবস্থানের কাছে আসলে অ্যামবুশে ৩ জন নিহত ও ১৫ রাজাকার আহত হয়।

জি ০৩৮৩

২৫-১০-৭১

২৬-১০-৭১ বাতসালা তে এস কিউ  ৮৯৩০ এম /এস ৭৯ বি / ১৪   তারিখ ২৫০৪০০ অক্টোবর মুক্তিবাহিনীর সাথে যুদ্ধে হতাহত যানা যায়নি।

জি ০৩৮২

২৫-১০-৭১

২৬-১০-৭১ সুন্দরবন কয়ড়া নদীতে ১৮০৫৫৫ অক্টোবর পি এন এস লালশীরা ও  শত্রুদের ২ টি বার্জ মুক্তিবাহিনী আক্রমণ করে। এতে লালসিরা ও ১ টি বার্জ ডুবে যায়। ১ টি বার্জ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

জি ০৩৯০

২৬-১০-৭১

২৭-১০-৭১ ৪ অক্টোবর মাদারীপুরের  ভেদেরগঞ্জ এস কিউ  ৫৭৬২ এম /এস ৭৯ / শি  মুক্তিবাহিনীর  সাথে যুদ্ধে ১৭০ পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয়। আমাদের ১ জন নিহত হয়। ২০০ টি চিনা রাইফেল, ২ টি এল এম জি ৩০৩ রাইফেল ১১ টি বাংলাদেশের ভেতরে রেখে দেয়া হয়।
১০

জি ০৩৯১

২৬-১০-৭১

২৭-১০-৭১ সাঙ্খ্যরা তে এস কিউ  ৮৩৯১ এম /এস ৭৯ বি/১৪   তারিখ ২৬১৬১০ অক্টোবর  মুক্তিবাহিনীর  সাথে ৪ ঘণ্টা ব্যাপী প্রচুর গুলি বিনিময়ে ৮ জন নিহত হয়। আমাদের ১ জন নিহত হয়।
১১

জি ০৩৯৫

২৯-১০-৭১

২৮-১০-৭১ ২৭ অক্টোবর নিয়মিত বাহিনী রতনপুরে অ্যামবুশ করে। ২ জন শত্রু নিহত হয়। ১ রাজাকার রাইফেল সহ আটক হয়।
১২

জি ০৩৯৬

২৯-১০-৭১

২৯-১০-৭১

নিয়মিত বাহিনী শ্যামনগর থানা এস কিউ  ৯৯৫৮ এম /এস ৭৯ এফ/৩  অক্টোবর ২৬২৩০০ টায় আক্রমণ করে। এতে ৪ জন পাকসেনা ও ১৩ রাজাকার নিহত হয়। ১ টি রাইফেল জব্দ হয়।

 

শিরনাম তারিখ
৩২। যুদ্ধ পরিস্থিতি রিপোর্ট  টাইগার কোম্পানি ৮ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১৯৭১

 

ট্রান্সলেটেড বাই: Razibul Bari Palash

<১১, ৩২, ৪৫৭ ৪৫৮>

ক্রমিক নং

 

সূত্র নম্বর   তারিখ

 

তথ্য অন্তর্ভুক্তির তারিখ

 

ঘটনা

1

1

14-1030

141039

এস কিউ  ৪৪৪ এম /এস ৭৯ এ/১৬  স্থানে ডি টি জি ১৩২২০০ থেকে ১৪০৩০০ টা পর্যন্ত অ্যামবুশ করা হয়। কোন শত্রু হতাহত হয়নি।

 

২১৫১১০০

 

১৫-১১-৭১

জি আর ৮৭০৭৪০  ও ৮৫৫৭০৫  ৭৯ এ/ ১৫ তে   ১৫০২০০ থেকে ১৫০৩০০ টায় মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে কাল্ভার্ট ধ্বংস করা হয়।

 

নং – নাই

২২-৫-৭১

২২-৫-৭১

২২০২০০ টায় গৌর পারা ব্রিজ জি আর এস ৪৯৫২৭    এম /এস ৭৯এ/১৬ মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে উড়িয়ে দেয়া হয়। ২২০৪০০ টায় বাহাদুর পীর জি আর ৭৯২৫০  এম /এস ৭৯ এ/১৬ ব্রিজ মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে উড়িয়ে দেয়া হয়।

 

 

নং নাই

০৪০৭০০

৫-৬-৭১

মাস্লিয়াতে এস কিউ  ৮৫৬৬ এম /এস ৭৯  এ/১৬  শত্রু পজিশনে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ৮ থকে ১০ জন শত্রু হতাহত হয়। আমাদের ১ জন আহত – লে ক্যাপ্টেন শরিফ ডান হাতের  মধ্যমায়  গুলিতে সামান্য আহত হন।

 

নং – নাই

০৫১৪০০

৫-৬-৭১

৪/৫ তারিখ রাতে ২১৩০ মিনিটে পুখিয়াতে জি আর ৮৪৯৫৮৩ এম /এস ৭৯  এ/১৬ তে মুক্তিবাহিনী ব্রিজ ধ্বংস করে।

 

নং – নাই

১২-৬-৭১

১২-৬-৭১

১৫০০

১৪৩০ থেকে বর্ডারে ৩ ইঞ্চি এম এম জি মর্টার ও ৪ ইঞ্চি মর্টার দিয়ে মুক্তিবাহিনীর  সাথে শত্রুদের যুদ্ধ চলে।

জি ০৩৬৮

১৫-১১-৭১

১৬-১১-৭১ ১৫১০০৫ নভেম্বর শত্রুরা আমাদের অবস্থানে আক্রমণ করে। আমাদের ১ জন আহত হয়।

জি ০৩৭১

১৭-১১-৭১

১৮-১১-৭১

পিরাডাঙ্গাতে এস কিউ  8683এম /এস ৭৯   বি/১৪  তারিখ ১৭১১৩০ নভেম্বর আমাদের অবস্থানে শত্রুরা ৩ ইঞ্চি মর্টার দিয়ে আক্রমণ করে। কোন হতাহত হয়নি। ১৪২৩০০ নভেম্বের মুক্তিবাহিনী একজন কুখ্যাত দালালের বাড়ি উড়িয়ে দেয়। ৩৮ রাজাকার ও ২ পাকসেনা ভর্তি একটি বেসরকারি বাসে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ৩৮ জন নিহত ও ২ জন আহত হয়।

 

জি ০৩৭৩

১৯১১৭১

২০১১৭১ ১৬১১৩০ নভেম্বর ভোমরাতে মুক্তিবাহিনী ৩ ইঞ্চি মর্টার দিয়ে আক্রমণ করে। এতে  ৫ জন শত্রুসেনা নিহত হয়।
১০

জি ০৩৭৫

১৯-১১-৭১

২০-১১-৭১

১৪ নভেম্বর সাতানিতে এস কিউ ৮৬৬০৮২ এম/এস ৭৯ বি/১৩ পাকসেনারা ২ জন সাধারণ লোককে হত্যা করে। ৮ নভেম্বর ১০ বছরের একটি ছেলেকে জীবন্ত কবর দেয়। বাইছানা তে  ১৪৯৩০ এম /এস ৭৯বি/১৪    তারিখ ৮ নভেম্বর পাকসেনারা একজন ডাক্তারকে হত্যা করে। ৫ তারিখ পাকসেনারা ১২ জন স্থানীয় নাগরিককে জবাই করে ও বাইছানাতে কবর দেয় ৮৪৫৯৩৪ এম / এস ৭৯ বি / ৪  । তারা অনেক বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়।

 

১১

জি ০৩৭৯

২১-১১-৭১

২২-১১-৭১

ভোমরা তে ৮৪১৯৭৪  এম /এস ৭৯  বি/১৩  তারিখ ২১১৬০০ নিয়মিত বাহিনী ৩ ইঞ্চি মর্টার ব্যাবহার করে ১৩ জনকে নিহত করে। তারা ভোমরা দখল করে। প্রচুর অস্ত্র জব্দ করে। যেমন- ৭,৬২ এমও (চাইনিজ) ২৬৬৬ রাউন্ড , ৭,৬২ এমও চাইনিজ এম এম জি ৫৩০ রাউন্ড প্লাস্টিক এ পি মাইন ২৪ টি , টি এন টি স্লাব ১৪ টি , আর আর শেল ৬ টি, চাইনিজ রকেট বোম ৫ টি, টেলিফোন তার ৫ কিলোমিটার।

 

১২

জি ০৩৮৩

২৩-১১-৭১

২৩-১১-৭১

২৩১০০০ টায় শত্রুরা ভোমরাতে ৮৪৮৯৭৫ এম /এস ৭৯ বি/১৪   আমাদের অবস্থানে আক্রমণ করে। এতে আমাদের ১ জন  আহত হয়।

 

১৩

জি ০৩৮৬

২৩-১১-৭১

২৪-১১-৭১ ২২/২৩ নভেম্বর রাতে গণ বাহিনী সাতক্ষিরা ও মোহাম্মাদপুরে ২ টি ব্রিজ ধ্বংস করে। ২১/২২ নভেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনী সাতক্ষিরা যশোর রোডে শত্রুদের জিপে আক্রমণ করে। কোন হতাহত জানা যায়নি।
১৪

জি ৩৯৩

২৫-১১-৭১

২৬-১১-৭১

মুক্তবাহিনি শ্রীরামপুরে এস কিউ  ৮৬৯৪ এম /এস ৭৯ বি/ ৪   ২৫১৫৩০ নভেম্বর শত্রুদের উপর আক্রমণ করে। আমাদের বাহিনী কুলিয়া এস কিউ ৮৬৯৩  এম /এস ৭৯  বি /৪  শত্রুদের উপর চাপ সৃষ্টি করে। হতাহত জানা যায়নি।

 

 

১৫

জি ০৩৯১

২৫-১১-৭১

২৬-১১-৭১ ৮৮৯৯৯২ এম/এস ৭৯ এফ/ ২  ব্রিজটি  ২৪০০০৫ তারিখে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে উড়িয়ে দেয়া হয়।
১৬

জি ০৩৯৪

২৬-১১-৭১

২৭-১১-৭১ আলিপুরে ৯০৯৯ এম/এস ৭৯ এফ/২ মুক্তিবাহিনী ৩ ইঞ্চি মর্টার দিয়ে  ২৬১৪১০৩ নভেম্বর আক্রমণ করে। কোন হতাহত জানা যায়নি। মোহাম্মাদপুরে ৮৭৯৮ এম/ এস ৭৯ বি/১৪ ও গাংনি ৬১৩৫ এম/ এস ৭৯ এ / ১৪ ২৬০০৩০ তারিখে মুক্তিবাহিনী শত্রু পজিশনে হামলা করে। তারাও ২৫ পাউন্ডার দিয়ে জবাব দেয়। কোন হতাহত জানা যায়নি। নাবাতকাটি ৮৫৯৭ এম/এস ৭৯ বি/ ১৪ ২৬০০৩০ নভেম্বর আমাদের বাহিনী শত্রুদের আক্রমণ করে। হতাহতের পরিমাণ  জানা যায়নি ।
১৭

জি ০৩৯৬

৩০-১১-৭১

৩০-১১-৭১ নবতকাটি ৮৫৯৭ এম/এস ৭৯ এ/১৪ ৩০০৬৩০ নভেম্বর শত্রুরা আক্রমণ করে। তাদের কোন হতাহতের খবর জানা যায়নি। আমাদের ৩ জন নিহত ও ২ জন আহত হয়।
১৮

জি ০৪১৪

১০-১২-৭১

১৩-১২-৭১ ০৯১৮০০ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনীর একটি দল কাঁপিলনিয়ারিতে কিউ – ২২৩৯৩ আক্রমণ করে ৯৩ জন রাজাকার হত্যা করে। তারা সংক্ষুব্ধ ছিল কিন্তু পরে আত্মসমর্পনের অনুরোধ করে।

শিরনাম তারিখ
৩৩। যুদ্ধ পরিস্থিতি রিপোর্ট ৮ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১৯৭১

ট্রান্সলেটেড বাই: Razibul Bari Palash

<১১, ৩৩, ৪৫৯৪৬০>

ক্রমিক নং

 

সূত্র নম্বর   তারিখ

 

তথ্য অন্তর্ভুক্তির তারিখ

 

ঘটনা

1

G-0028 dt 060800 hrs

 

6-6-71 ০৫২০৩০ টা ও ০৬০৫০০ টায় গবিন্দকান্দি ও ঝাউডাঙ্গা আমাদের বাহিনী আসে। ৪ জন কুখ্যাত পাকসেনাদের দোসরকে হত্যা করা হয়। তাদের নাম মুক্তার শেখ, আনিসুদ্দিন, বারিক সেক ও সিরাজ। বাড়ি গোবিন্দকান্দি। তাদের সহায়তায় পাকসেনারা ১৫০ জন শরনার্থিকে ভারত যাবার পথে নির্মম্ভাবে হত্যা করে।

No. Nil dt 071900

 

৮-৬-৭১

০৭৩০

সাতক্ষিরার হজরত আলি, শাহ পুড়ের করিম বক্স ও বোয়ালিয়ার ডাঃ ওয়াজেদ আলি সহ ৯ শান্তি কমিটির মেম্বার কে বোয়ালিয়া গ্রামে জি আর ৮৫৬১৯২ এম/এস ৭৯বি/১৩ এস কিউ ৮৭২০ এম/এস ৭৯বি/১৩ হত্যা করা হয়। দুইজন ছাত্র এই ঘটনা ঘটায়। তারিখ ছিল  ০১১৫৬ জুন ৭১। শত্রুদের একটি দল ৬-৬-৭১ তারিখে একটি গ্রামে শিশু মহিলা সহ ১০১ জনকে এস কিউ ৮৪২৪ এম/এস ৭৯ বি/১৩ হত্যা করে।

G-0008 dt 110730

 

১১-৬-৭১

১৩০০

বাঁকারি বি ও পি তে এস কিউ ৭৯০৭ এম/এস ৭৯ বি/১৪ এক কয় শত্রু  নিয়োগ করা হয়। আমাদের এক সেকশন সৈন্য ১১০১০৩ টায় বি ও পি আক্রমণ করে। শত্রুদের ৬০ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়। আমাদের হতাহত নাই। এটা জানায় সাধারণ জনগণ। পরে আমরা নিশ্চিত জানি ৬০ জনের বদলে ১৬ জন নিহত হয়েছে।

G-0033 dt 110700 hrs.

 

১১-৬-৭১ ১০১৯০০ টায় আমাদের বাহিনী বালাডাঙ্গায় ৩ জনকে নিহত করে যারা মিলিশিয়া নেতা ছিল। আরেকটি দল ১০২১০০ টায় কাকডাঙ্গা ত্যাগ করে। তারা টেলিফোনের লাইন ধ্বংস করে ও ৩০০ গজ তার নিয়ে আসে। আরেকটি দলকে ১০১৯০০ টায় কুশখালি পাঠানো হয়। তারা বি ও পি ও একটি স্কুল ধ্বংস করে। একই দিনে আরেকটি দল চানদুনিয়া যায়। সেখানে তেমন কিছু হয়নি। আমাদের বাহিনী নিরাপদে ফিরে আসে।

G-0034 dt 140700

 

১৪-৬-৭১ আমাদের একটি দল অটো আর্মস ও এমও নিয়ে হিজলদি বি ও পি  যায়। সেখানে শত্রুদের বাঙ্কার ধ্বংস করে। ১১০২৩০ টায় হিজলদি বি ও পির ১২ জন শত্রু নিহত হয়।

G-0035

 

১৪-৬-৭১ শত্রু অবস্থান – একটি  হিজলদি, একটি মান্দ্রা, ও একটি কাকডাঙ্গা বি ও পি তে তাদের অবস্থান। তাদের কাছে অটো আর্মস ও এমও আছে। তাদের ৩ ইঞ্চি মর্টার, এম এম জি , এইচ এম জি আছে। মুক্তিবাহিনীর ৩ টি প্লাটুন হিজলদি , কাকডাঙ্গা ও মান্দ্রা পাঠানো হয়। সময় ১২২৩৩০ টা। মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে শত্রুদের ৮ জন নিহত ও ৫ জন আহত হয়। ১৩-৬-৭১ ১৩০০ টায় কাকডাঙ্গায় আরও শত্রুবাহিনী আসে। তারা এ পি মাইন ও বিস্ফোরক পুঁতে রাখে কাকডাঙ্গা এলাকায়।

G-0036 dt 140945

 

১৫-৬-৭১ পর্যাপ্ত সেনা নিয়ে ২ টি বাহিনী হিজলদি যায়। একটি দল বি ও পি এলাকায় পাঠানো হয় ১৩২১৩০ টায়। তাদের কাছে অটো অস্ত্র ছিল। ২ ঘণ্টা যুদ্ধ চলে। শত্রুরা ৩ ইঞ্চি মর্টার দিয়ে জবাব দেয়। তাদের হতাহত জানা যায়নি।

G-0037 dt 150800 hrs.

 

১৬-৬-৭১ মুক্তিবাহিনীর একটি দল কাকডাঙ্গায় অটো অস্ত্র দিয়ে পাঠানো হয় – সাথে ৩ ইঞ্চি মর্টার ও এইচ এম জি ছিল। ১৪২০০৩ টা থেকে ১৫০৪০০ টা পর্যন্ত একটি রেকি বাহিনীকে কাকডাঙ্গায় পাঠানো হয়। তারা শত্রুদের কিছু বাঙ্কার চিনহিত করে। কোন দিকে কোন হতাহত নাই।

G-0040 dt 160600

 

১৬-৬-৭১ মানদা ও হিজলদির মাঝে ২ সেকশন পাকসেনা ও একটি আর্টিলারি গান চিনহিত করা হয়। ১৫৭১০০ টা থেকে ১৬০৩০০ টা পর্যন্ত আমাদের একটি দল পাঠানো হয়। শত্রুদের সাথে কোন সঙ্ঘর্ষ হয়নি।
১০

G-0042 dt 170600

 

১৭-৬-৭১ কাকডাঙ্গায় ভারী অস্ত্র সহ একটি দল যায়। ১৬৭৯০০ থেকে ১৬১৯০০ পর্যন্ত রেকি বাহিনী কাজ চালায়। শত্রুদের সাথে কোন সঙ্ঘর্ষ হয়নি।

শিরনাম তারিখ
৩৪। যুদ্ধ পরিস্থিতি রিপোর্ট  বানপুর সাব সেক্টর ৮ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১৯৭১

ট্রান্সলেটেড বাই: Razibul Bari Palash

<১১, ৩৪ , ৪৬১৪৬৫>

ক্রমিক নং

 

সূত্র নম্বর   তারিখ

 

তথ্য অন্তর্ভুক্তির তারিখ

ঘটনা

 

জি ৩০২৭

৩১-১০-৭১

২-১১-৭১

নিয়মিত বাহিনী সুন্দরপুরে এস কিউ  ০২২৫ এম/এস ৭৮/ডি/২১ ২৮/২৯ অক্টোবর রাতে শত্রুদের উপর আক্রমণ করে। ১ জন রাজাকার নিহত। ৩০ অক্টোবর ০৭৩০ টায় জামাত ই ইসলাম মুক্ত গ্রাম চর বাগডাঙ্গা আক্রমণ করে এস কিউ ০৩২৪ এম/এস ৭৮/ডি/২ । ২ জন জামাতি নিহত ও ১ জন আহত হয়।

 

 

জি ৩০৩৫

৫-১১-৭১

৬-১১-৭১ ২৯/৩০ অক্টোবর রাতে নিয়মিত ও গন বাহিনী শত্রুদের ২ টি যান ধ্বংস করে। হতাহতের পরিমাণ জানা যায়নি। আমাদের কোন হতাহত নাই।

জি ৩০৩৭

৬-১১-৭১

৮-১১-৭১

আমাদের বাহিনী দেবিনগর এস কিউ ০৮২১ এম/এস ৭৮/ডি/৬  ৫/৬ নভেম্বর রাতে রাজাকার দের অবস্থানে আক্রমণ করে। ২ রাজাকার নিহত হয়। ৬ টি ৩০৩ রাইফেল আটক করা হয়।

 

জি ৩০৩৯

৭-১১-৭১

৮-১১-৭১

ইসলামপুরে এস কিউ ০৮২৪  এম/এস ৭৮/ডি/১ ও জয়ন্দিপুরে এস কিউ ৯৮৩০  এম/এস ৭৮/ডি/২ আমাদের ২ টি বাহিনী আক্রমণ করে। ফলাফল যানা যায়নি। ৬/৭ নভেম্বর রাতে কসবায় অ্যামবুশ করে। একটি উইলি জীপ পুড়িয়ে দেয়া হয়। ৫ জন আলবদর নিহত। ২ টি ৩০৩ রাইফেল ও ৩০৩ এমন ৯৬ টি দখল।

 

জি ৩০৪০

৮-১১-৭১

১৪-১১-৭১

০৭ নভেম্বর ১৫ জন পশ্চিম পাকিস্তানী মিলিশিয়া জহুরপুর এস কিউ ৯৫২৪  এম/এস ৭৮/ডি/ ৩ গ্রামে লুট করার জন্য আসে। আমাদের বাহিনী তাদের অ্যামবুশ করে। ৫ জন নিহত হয় তাদের। ১ টি লাশ বেইজে এনে কবর দেয়া হয়। ১ টি ৩০৩ রাইফেল ও ৩০৩ বল এমও ৫০ টি উদ্ধার করা হয়। ইসলামপুরে এস কিউ  ০৮২৪ এম/এস ৭৮/ডি/১ ও জয়ন্দিপুরে এস কিউ ৯৮৩০  এম/এস ৭৮/ডি/২ রাজাকারদের অবস্থানে আক্রমণ করা হয়। সময়টা ছিল ৬/৭ নভেম্বর রাতে। পাকসেনা ও রাজাকার মিলে ৮ জন নিহত হয়।

 

 

 

জি ৩০৪৮

১০-১১-৭১

১৪-১১-৭১

কলিকাতা গ্রাম এস কিউ ০৮২৩ এম/এস ৭৮/ডি/২ শত্রুরা পুড়িয়ে দেয়। এটি ৯ নভেম্বরের ঘটনা। এর পরে তারা দেবিনগরের দিকে আগায়। আমাদের বাহিনি ৩ ইঞ্চি মর্টার দিয়ে আক্রমণ করে। শত্রুরা ইসলামপুর এস কিউ ০৮২৪ এম/এস ৭৮/ডি/২ ফিরে যায়।

 

 

জি ৩০৫২

১১-১১-৭১

১৪-১১-৭১ ৯/১০ নভেম্বর রাতে ৩ ইঞ্চি মর্টার দিয়ে আমাদের বাহিনী সারদা পি টি সি তে আক্রমণ করে। ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। দালান সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১০ নভেম্বর সারদা আইয়ুব ক্যাডেট কলেজ আক্রমণ করা হয়। ১ পাকসেনা, ১ রাজাকার ও ১ এজেন্ট নিহত হয়। ১ টি ৩০৩ রাইফেল উদ্ধার করা হয়।

জি ৩০৫১

১১-১১-৭১

১৪-১১-৭১

নরেন্দ্রপুর এস কিউ ০২২০ এম/এস ৭৮/ডি/৩ অবস্থানে শত্রুরা ৩ ইঞ্চি মর্টার দিয়ে ১১ নভেম্বর আক্রমণ করে। হতাহত যানা যায়নি।

 

জি ৩০৫৪

১২-১১-৭১

১৪-১১-৭১

জয়ন্দিপুরে এস কিউ ৯৭২৭  এম/এস ৭৮/ডি/২ ১১ নভেম্বর নিয়মিত বাহিনী আক্রমণ করে। আমাদের ১ জন আহত। বারা রাশিনা এস কিউ ০৩২৪ এম/এস ৭৮/ডি/২ ১১ নভেম্বর আক্রমণ করা হয়। ৩ রাজাকার আটক ও  ২ রাজাকার নিহত হয়। ১ জন শান্তি কমটির চেয়ারম্যান ভীতি প্রদর্শন করে। ৫ টি ৩০৩ রাইফেল জব্দ করা হয়। ১০ নভেম্বর শত্রুদের ইসলামপুর অবস্থানে আক্রমণ করা হয়। হতাহত জানা যায়নি । আমাদের ২ জন আহত হয়েছে।

 

 

১০

জি ৩০৪৪

৯-১১-৭১

১৪-১১-৭১

৬ অক্টোবর তাবুনিয়ায় একটি বিদ্যুৎ পাইলন উড়িয়ে দেয়া হয়। জি আর ১১৪৬৪১ এম/এস ৭৮ এইচ/৪ ১০ অক্টোবর। দুব্লিয়াতে জি আর ২৯০৫৫০  এম/এস ৭৯/ই/ এস রাজাকার অবস্থানে আক্রমণ করে ১৪ জনকে হত্যা করা হয়। ১৪ টি রাইফেল উদ্ধার। ১৪ অক্টোবর দুব্লিয়া থানা- সুজানগর আক্রমণ করে ৬ রাজাকার হত্যা করা হয়। ৬ টি ৩০৩ রাইফেল উদ্ধার হয়। কলদিতে জি আর ২৭১৫৫৬  এম/এস ৭৯ ই/৫  ১৭ অক্টোবর – ০৩ নভেম্বর ব্রিজ  উড়িয়ে দেয়া হয়। নন্দগাছিতে জি আর ৬৮১৯৬৩ ৭৮ ডি/১১ রেলওয়ে ব্রিজ উড়িয়ে দেয়া হয় । ৬/৭ নভেম্বর রাতে সাহাপুর জি আর ৫৫৪৯৯৬ এম/এস ৭৮ ডি/১১ আক্রমণ করা হয়। ৩ রাজাকার আটক। ৪ টি রাইফেল আটক করা হয়।

 

 

১১

জি ৩০৫৮

১৩-১১-৭১

১৪-১১-৭১ শেকারদারি থানা আটঘরিয়াতে ১৮ অক্টোবর ১ জন পাক আর্মি এজেন্ট কে হত্যা করা হয়। ২৯ অক্টোবর আটঘরিয়াতে এস কিউ ১৬০৭১৭  এম/এস ৭৮ এইচ/৪ শত্রুদের অবস্থান আক্রমণে ৯ রাজাকার নিহত হয়। ৪ টি ৩০৩ রাইফেল জব্দ করা হয়। ৩০ অক্টোবর মাজপুরে জি আর ১১৮৭৪৮ এম/এস ৭৯ এইচ/৪ আক্রমণ করা হয়। ৩ রাজাকার ও ২ জন শান্তি কমিটির সদস্য নিহত হয়। আমাদের হতাহত নাই। ০৩ নভেম্বর ফুলজান জি আর ২১৬৭১৫ এম/এস ৭৮ এইচ/৮ শত্রুদের অবস্থানে আক্রমণ করা হয়। ১ জন রাজাকার নিহত হয়। খিদারপুরে ১০৩৬১৯ এম/এস ৭৮ এইচ/৮ ৬ নভেম্বর আক্রমণ করে ১ জন ক্যাপ্টেন সহ ১৩ পাকসেনা আহত করা হয়। আমাদের গণবাহিনীর ৩ জন ও স্থানীয় ট্রেনিং প্রাপ্ত ৪ জন নিহত হয়। অস্ত্র ক্ষয়ক্ষতি নিম্নরূপ- এস এল আর – ৪ টি, ৩০৩ রাইফেল ৬ টি, এস এম জি ১ টি ৩০৩ বল এমও ১০০০। ৭-৬২ মি মি বল ৮০০। ৯ মি মি বল ২০০ টি।

১২

 

জি ৩০৫৭

13-11-7১

১৫-১১-৭১ বারা রাশিয়া গ্রামে  ১২১৪৩০ নভেম্বর এস কিউ ০৫২৪  এম/এস ৭৮/ডি/২  ও বাগডাঙ্গা এস কিউ ০৩২৪ এম/এস ৭৮/ডি /২ শত্রুরা আগুন দেয়।
১৩

জি ৩০৬৩

১৫-১১-৭১

১৫-১১-৭১ রায়পারা এম বাগান ০১২২০০ নভেম্বর এস কিউ  ৪০১০৪৪ এম/এস ৭৮/ডি/১১ রাজাকার অবস্থানে আক্রমণ করে ৫ রাজাকার হত্যা করা হয়। আমাদের কোন হতাহত নাই। ৫ টি ৩০৩ রাইফেল উদ্ধার করা হয়। রাজাকাররা গুলি করার সময় একটি পাক আর্মি দল  সেখানে আসে। কিন্তু তারা রাজাকারদের মুক্তিফৌজ মনে করে গুলি করে। এতে ৪১ রাজাকার নিহত হয়। পাকসেনাদের হতাহতের পরিমাণ জানা যায়নি। ০৩২০৩০ নভেম্বর  গোদাগারীতে একটি বিবাহ অনুষ্ঠানে আক্রমণ করে ২ জন মিলিশিয়া, ১ বিহারি পুলিশ এ  এস আই , ১ জন কনস্টেবল হত্যা করা হয়। ১ টি ৩০৩ রাইফেল, ১ টি পিস্তল আটক করা হয়। ০৪১৯০০ নভেম্বর ললিতনগর ২৬২৮ এম/এস ৩ রাজাকার নিহত হয়। ৩ টি ৩০৩ রাইফেল আটক করা হয়। ০৬১৪০০ নভেম্বর ১২ বোর বন্দুক ২ টি বিলাসী গ্রামের শান্তি কমিটির সদস্যের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ০৭১৩০০ নভেম্বর বাবুপুরে রাজাকার অবস্থানে আক্রমণে ৬ রাজাকার নিহত, ৬ টি ৩০৩ রাইফেল উদ্ধার হয়। ১০ নভেম্বর শাকনা ও মহানপুরে ৫০২৩ এম/এস ৭৮ ডি/১০ আক্রমণ করে রাজাকার ও অবাঙ্গালী সহ ৩০ জন হতাহত হয়। ২ টি ৩০৩ রাইফেল , ১২ বোর বন্দুক ২৮ টি ও এম এম জি ১ টি আটক করা হয়।
১৪

জি ৩০৬৭

১৭-১১-৭১

১৯-১১-৭১

১৬/১৭ নভেম্বর রাতে আলাইপুরের এস কিউ  ৬৩৪৮৩২ এম/এস ৭৮/ডি/১৬ ৩ জন কুখ্যাত দালাল আটক করা হয় ও হত্যা করা হয়।

 

১৫

জি ৩০৮৩

২০-১১-৭১

২৪-১১-৭১ পাড়াগ্রাম ০৯৭২৪৭ এম/এস ৭৮ ডি/১ এ শত্রুরা গুলি করে ইসলামপুরের দিকে এস কিউ  ০৮২৪ এম/এস ৭৮/ডি/১ , হারমা এস কিউ ১০১৮  এম/এস ৭৮/ডি/৭ ২০০৪০০ নভেম্বর আগাতে থাকে। আমাদের বাহিনী তাদের জবাব দেয়। হতাহতের পরিমাণ জানা যায়নি। ইসলামপুরে এস কিউ ০৮২৪ এম/এস ৭৮/ডি পেট্রল ডিউটির সময় আমাদের ২ জন আহত হয়। রাজারাম্পুরে এস কিউ ০৯২৮  এম/এস ৭৮/ডি/৬ ৩ ইঞ্চি মর্টার দিয়ে ২১০৪৩০ নভেম্বর আক্রমণ করা হয়। ৯ পাকসেনা নিহত – ১ জন অফিসার সহ ৬০ জন রাজাকার  ও সি এ এফ নিহত হয়। ৩০ জন আহত হয়। আমাদের নিয়মিত বাহিনীর ৪ জন আহত ৩ জন নিহত হয়। গন বাহিনীর ২ জন নিখোঁজ হয়। ১২ রাজাকার ১৪ টি রাইফেল সহ আটক হয়। অস্ত্রের ক্ষতি – ৩০৩ রাইফেল ৬০ টি, এল এম জি ১ টি, ২ ইঞ্চি মর্টার ১ টি, এস এল আর ম্যাগাজিন ৮ টি, এল এম জি ম্যাগাজিন ৩ টি।
১৬

জি ৩০৮৮

২৫-১১-৭১

২৭-১১-৭১ ১৫ নভেম্বর দুবলি ব্রিজ ৪৫১৪ এম/এস ৭৮ ডি/১১ উড়িয়ে দেয়া হয়। ১৫ নভেম্বর বাঘের খালিতে এস কিউ ৪৩১৭ এম/এস ৭৮/ডি/১২ তে অ্যামবুশ করা হয়। শত্রুদের ৬ জন নিহত। আমাদের গন বাহিনীর ২ জন নিহত হয়।
১৭

জি ৩০৯১

২৫-১১-৭১

২৭-১১-৭১

১৬/১৭ নভেম্বর রাতে মিসেরপুরে এস কিউ ৬২৮৬৪৭ এম/এস ৭৮/ডি/৬ শত্রু অবস্থানে আক্রমণ করে  ১২ জন হতাহত করা হয়। মহেশ কুন্ডিতে এস কিউ  ৬১১৬৮৭ এম/এস ৭৮/ডি/১৬ ১৬/১৭ তারিখ রাতে অ্যামবুশ করা হয়। শত্রুদের ৪ জন নিহত হয়। চরকাত্রায় এস কিউ  ০৬৮০৫৩ এম/এস ৭৮/ডি/৪ আমাদের একটি প্লাটুন শত্রুরা ঘিরে ফেলে। শত্রুদের ৩ জন নিহত হয়। আমাদের ২ জন নিহত ও ১ জন আহত হয়। ১ টি এস এল আর ও ৩ টি ম্যাগাজিন নষ্ট হয়। বাঘের খালিতে এস কিউ ৯৬১৬৮৮ এম/এস ৭৮/ডি /১৪ শত্রুদের  ১ জন নিহত হয়। ১০ নভেম্বর ৪ জন রাজাকার নিহত ও ৪ টি রাইফেল জব্দ করা হয়। একই রাতে ঈশ্বরদীতে টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ৯৬০৩৭৫ এম/এস ৭৮ এইচ/৪ ধ্বংস করা হয়। এছাড়া সেখানে ভি আই পি হাউজে আক্রমণ করে ৩ জন এজেন্ট কে হত্যা করা হয়। ঈশ্বরদী তে ৯৬৫৭৪৫ এম/এস ৭৮এইচ/৪ বিহারি কলন ধ্বংস করা হয়। সেখানে ৫০ জন বিহারি নিহত হয়। আমাদের কেউ আহত হয়নি। ১৮ নভেম্বর বাঘেরখালির কাছে ১১ মিটার রেইলয়ে লাইন বিচ্যুত করা হয় ৯৬২৭১৫ এম/এস ৭৮ এম/৪।

 

১৮

জি ৩০৯৬

২৮-১১-৭১

২৯-১১-৭১ চারঘাট ৬১১৯২৬ এম/এস ৭৮/ডি/১১ একজন কুখ্যাত দালালের বাড়িতে আগুন দেয়া হয়। ২ রাজাকার আটক হয়। ২৫/২৬ নভেম্বর রাতে চারঘাট সারদা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের টেলিফোন লাইন ধ্বংস করা হয়।
১৯

জি ৩০৯৪

২৭-১১-৭১

১-১২-৭১ মধুমালায় এস কিউ  ৩২৩২ এম/এস ৭৮/ডি/৬ ৯ নভেম্বর আক্রমণে ১ রাজাকার নিহত হয়। রাজাকার ক্যাম্প, পোস্ট অফিস ও থানা তহসিল অফিস পুড়িয়ে দেয়া হয়। ১২ তারিখ রাতে চকিরঘাটে রাজাকার ক্যাম্পে আক্রমণ করা হয় (ম্যাপে নির্দেশিত নাই) । ৪ রাজাকার নিহত হয়। ২ টি রাইফেল জব্দ করা হয়। ১৪ নভেম্বর মইন গ্রামে রাজাকাররা আমাদের আক্রমণ করে (ম্যাপে নাই), থানা – গোদাগারী ৭৪৪৬। ৮ রাজকার নিহত হয়। ৪ টি রাইফেল জব্দ করা হয়।
২০

জি ৩০৯৯

৩০-১১-৭১

১-১২-৭১ ২৮ নভেম্বর রাজাকাররা ৩ ইঞ্চি মর্টার নিয়ে নরেন্দ্রপুর কিউ এল ৬১৪৯ ষাঁড় নিতে আসে। আমাদের বাহিনী তাদের আক্রমণ করলে ষাঁড়গুলো রেখে তারা পালিয়ে যায়। ৬ রাজাকার নিহত হয়। আমাদের কোন হতাহত নাই।
২১

জি ৪০০১

১-১২-৭১

৩-১২-৭১ মুক্তিবাহিনী হরমা এলাকায় ৩০ নভেম্বর এস কিউ  ১০১৮ এম/এস ৭৮/ডি/৭ শত্রুদের আক্রমণ প্রতিহত করে। তাদের হতাহতের পরিমাণ যানা যায়নি। ২৩ নভেম্বর লালপুরে মুক্তিবাহিনী এস কিউ ৩৭১৪ একজন শত্রুদের এজেন্ট আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেইজে রাখা হয়। আরও ২ রাজাকার আটক ও নিহত হয়। রামগড়িতে এস কিউ  ৯৪৯৪ এম/এস ৭৮এইচ/৩  পাক সেনা ও রাজাকারদের উপর ২৮ নভেম্বর মুক্তিবাহিনী আক্রমণ করে। ৮ রাজাকার নিহত ও ৫ পাকসেনা আহত হয়। আমাদের ২ জন গনবাহিনীর সদস্য মারা যায়। সিঙরা থানা কিউ আর ০৬১৮ মুক্তি ফৌজের নিয়ন্ত্রণে আছে।
২২

জি ৪০০৮

৪-১২-৭১

৫-১২-৭১ ১/২ ডিসেম্বর রাতে পদ্মা নদী পাড় হবার সময় ৫৫৪৯৮৫ এম/এস ৭৮ ডি/১১ শত্রুরা আক্রমণ করে। ২৫ নভেম্বর পাকশি ও ভেরামারায় একটি ফেরী ডুবিয়ে দেয়া হয় ৯৩৪৬৬২ এম/এস ৭৮ এম/৪। ২ জন পাকসেনাদের চর নিহত ৯৯৮৭২০ এম/এস ৭৮ এম/৪ জয়নগরে ৯৯২৭১২ এম/এস ৭৮ এম/৪ ২৬ নভেম্বর গন বাহিনী এম্বুশ করে। ৭ পাকসেনা নিহত হয়। ৪ রাজাকার আটক ও নিহত হয়। একটি চাইনিজ রাইফেল ও ৭ টি ৩০৩ রাইফেল জব্দ করা হয়। আমাদের কোন হতাহত নাই। ২৬ নভেম্বর মুক্তিবাহিনীর  মাইনে ফেরিঘাট ধ্বংস হয় ৯৪৩৬৬৫ এম/এস ৭৮ এইচ/৪। শত্রুদের ১ অফিসার সহ ৮ জন নিহত ও ৩ জন আহত হয়। ২৭ নভেম্বর ভালানপারা ব্রিজ ৯৯০৭১৩ এম/এস ৭৮ এইচ/৪ ধ্বংস করা হয়। রাজারামপুর ০৭২৮ এম/এস ৭৮ ডি/৬ ০৩১২৩০ ডিসেম্বর পাক প্রেসিডেন্টের ঘোষণার পর শত্রুরা আক্রমণ করে।

শিরনাম তারিখ
৩৫। যুদ্ধ সংক্রান্ত গোয়েন্দা রিপোর্ট ৮ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১৯৭১

ট্রান্সলেটেড বাই: Razibul Bari Palash

<১১, ৩৫, ৪৬৬ – ৪৭৭>

ক্রমিক নং

 

তারিখ

 

তথ্য অন্তর্ভুক্তির তারিখ

সূত্র নম্বর

ঘটনা
৬-১০-৭১

ডি কয় বয়ড়া

জী ০১৫৬

৬-১০-৭১

লাশ সনাক্ত করন – ৩৮ এফ এফ বর্নি ডিফেন্স, এডিশনাল কমান্ডো সুবেদার মোঃ আসগার (হাবিলদার মোঃ ইয়াকুব, সেপাই মোঃ সাফি ৩৮ এফ এফ ও সেপাই মোঃ আসগার এস্কাপ মৃত) গ্রেডিং ইনফো – এ – ১
১-১০-৭১

ফিন হেড কোয়ার্টার সি

১৩৬১/১৯/জি/ইনফ

৩০ সেপ্টেম্বর ৭১

 

বাংলাদেশের ভিতরের সকল মুজাহিদকে খাকি ইউনিফর্ম দেয়া হয়েছে সাথে বাঘের মাথা চিনহ হিসাবে দেয়া আছে। উপরোক্ত রিপোর্টটি চেক করুন ও মন্তব্য করুন। জি আই – এ ৩ (রিমার্ক – তথ্যটি সকল কয় কে জানানো নিশ্চিত করুন। কনফার্ম করে রিপোর্ট জমা দিন সি সেকশনে। তারিখ ১৪ অক্টোবর । নং – জে এস / এল-সি/ এক্স এক্স / জি)
৮-১০-৭১

বি কয় বানপুর

জি ০৭১৬

০৭ অক্টোবর ৭১

পাকসেনারা জালুস্ক এস কিউ ৭৪০৮ এম/এস ৭৯ এ/১৪ ও ফুলবাড়ি এস কিউ ৭৬০৬ এম/এস ৭৯ এ/১৪ স্থানে অবস্থান নিচ্ছে। জি আই – এ ১ (রিমার্ক – প্রতিবেদন জমা দেয়া হল)
১০-১০-৭১ এফ কয় শিকারপুর সূত্রে যানা যায় ভাটপারায় এস কিউ এম/এস ৭৯এ/৯ শত্রুরা সমবেত হচ্ছে। ফ্লাইং বার্ড চিনহিত একটি যান ঐ এলাকায় আসে। আরেকটিতে বাঘের মাথার চিনহ আছে। জি – আই – বি – ২
১০-১০-৭১ বি কয় বানপুর ইনফো রিপোর্ট

১ – ক) দৌলতগঞ্জ, জীবননগর, ইসলামপুর, গোপাল নগর, নারায়নপুর গ্রামে শত্রুরা সমবেত হচ্ছে। জি – আই – বি – ১

খ) বাঘের মাথা চিনহিত কিছু মুজাহিদ ও প্রায় ২০০ পাক পুলিশ ডিউটি করছে ঐ এলাকায়। জি আই – বি – ২

গ) ১৫ ডিভিশনের চিনহ দেয়া কিছু জিনিস দেখা যায়। জি – আই – বি -১

আর্টিলারি

ঘ) দৌলতগঞ্জ জীবন নগরে কিছু বন্দুক আছে। জি আই – বি – ১

 

২। ক) আর্টিলারিসহ হাসাদায় ১ ব্যাটালিয়ন পাক সেনা জমা হয়েছে। জি ১ – বি-১

খ) কাপাসডাঙ্গা ও নাতোদাহে পাকসেনারা প্রায় ১০০ বিহারি রাজাকার কে সরিয়ে নেয় যারা ডিউটিতে ছিল। জিয়াই – বি-২ নং – ৩ সাব সেক

১৩-১০-৭১ সোর্স রিপোর্ট

১। ৭ অক্টোবর জেনেরাল নিয়াজি হেলিকপ্টারে রাজশাহী পরিদর্শন করেন। তিনি স্থানীয়দের আশ্বস্ত করেন খুব অল্প সময়ে কলকাতা গারেরমাতে পৌছাবেন এবং সেখানে ঈদ উল ফিতরের নামাজ পড়বেন। জি আই – বি – ১

২। পাক সরকার সকল পাকসেনাদের আদেশ দেন অতি সত্বর মুক্তিযোদ্ধাদের দখলকৃত সকল মুক্ত এলাকা আবার দখলে নিতে। জি আই – বি-১

৩। পাকসেনারা রাজশাহীর মুক্ত এলাকা দখলে নেবার চেষ্টা করছে ৪ নং সাব সেকশন অনুযায়ী। তারা মহানন্দা নদী পার হয়েছে – সাথে হেভি আর্টিলারি আছে। তারা নিম্নক্তভাবে আগাচ্ছে –

ক) প্রথম স্তর হিসাবে স্থানীয় এলাকাবাসীদের জোর করে তাদের হাতে লাঠি, বল্লম ধরিয়ে দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সাথে করে।

খ) রাইফেল সহ রাজাকার দের দ্বিতীয় স্তর হসাবে নিচ্ছে।

গ) পিছনে পাকসেনারা তৃতীয় স্তর হিসাবে আগাচ্ছে। জি আই – বি – ১

 

১৩-১০-৭১ ডি কয় বয়রা কার্যক্রম – পাকসেনারা পুরাতন ছুটিপুর ডিফেন্স পজিশন খালি করে দিয়ে সেখান থেকে ৫০০ গজ দক্ষিণে নতুন অবস্থান গড়ে। জিয়াই – এ-১
১৩-১০-৭১

এফ কয়

শিকারপুর

কার্যক্রম – গণবাহিনী পির তলায় এস কিউ ৬৪৫১, সেহাইয়া এস কিউ ৬৮৫৪ , গোয়াল্গ্রাম এস কিউ ৬৯৫১ ও বোয়ালিয়ায় এস কিউ ৭১৫৩ এম/এস ৭৯এ/১৩ আক্রমণ করে ১০/১১ অক্টোবর রাতে। পরে শিকারপুর বেইজে ফিরে আসে। শত্রুরা রাস্তা আটকে দেবার চেষ্টা করে। জি আই – এ ১-
১৩-১০-৭১ সোর্স রিপোর্ট

প্রাইভেট আর্মি –

ক) শ্রীপুরে কমান্ডার আকবর হোসেন সি ইউ সি র নেতৃত্বে ১৩০ জনের একটি দল পাকসেনাদের বিরুদ্ধে লড়ছে। তাদের ৫০ টি রাইফেল, ২ টি এল এম জি আছে। জি আই – বি-১

খ) প্রতি দলে ৪০/৫০ জনের ৬ টি দল নগরকান্দায় পাকসেনাদের বিরুদ্ধে  লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ১৫০ টি রাইফেল, ৪ টি এল এম জি, ৬ টি স্টেন আছে। আজিজ মোল্লা তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জি আই – বি-১

গ) ৬০/৭০ জনের আরেকটি দল শৈলকূপায় পাকসেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। উইং অফিসার কামরুজ্জামান  তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। (এক্স পি এ এফ)। তাদের ৩৪ টি রাইফেল ও ২ টি স্টেন আছে। জি আই বি-১ , পাক নৌ কার্যক্রম।

১০ ১৫-১০-৭১ সে সেক্টর হেডকোয়ার্টার থেকে

১। তথ্য আসে যে পাকসেনারা পেট্রোল ক্রাফট ও গান বোট নিয়ে বরিশাল, নারায়ণগঞ্জ, হারতা, চালনা, নীলকমল, হিজলা দ্বীপ ও ভাগ্যকুলে টহল দিচ্ছে।

২। মংলা, চালনা, খুলনাতে গুরুত্তপূর্ন জাহাজ পাহারায় চলছে।

৩। সুর্যাস্তের পর জেলেদের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে চট্টগ্রামে। পাক নেভি সেগুলো চেক করছে।

১১ ১৫-১০-৭১ সোর্স রিপোর্ট

১। দসাতিনাতে এস কিউ ৯৩৫৪ এম/এস ৭৯ই/৪ ১২ অক্টোবর ২ টি ৮১ মিঃ মিঃ মর্টার নিযুক্ত করা আছে।

২। ৩৮ এফ এফ এর ৭ জন মাস্লিয়া তে এস কিউ ৮৬৬৬ এম/এস ৭৯এ/১৬ তে অবস্থান করছিল । জি আই এ-১

৩। হেডকোয়ারটারের ১ ব্যাটালিয়ন হান্সাদহ এস কিউ ৭৩৮৬ এম/এস ৭৯ এ/১৫ (সম্ভবত ২৭ ব্যাটালিয়ন) অবস্থান করছিল। জি আই এ-১

৪। ঝিকরগাছায় এস কিউ ৯৮৩০ এম/এস ৭৯ ই/৪ ও কাবদাখ নদীতে পাকসেনারা অবস্থান নিয়েছে। জি আই – এ-১

৫। ২ ট্রাক ভর্তি রাজাকার ১১১২৩০ অক্টোবর চৌগাছা থেকে আনা হয় স্কুল বিল্ডিং থেকে জিনিসপত্র নিকটবর্তি কোন স্থানে নেবার জন্য । জি আই বি – ১

১২ ১৮-১০-৭১ সি কয় বেতাই

শত্রু অবস্থান –

ক) কামদেবপুরে জি আর ৪৫৪৩৪৫ এম/এস ৭৯এ/৯ পাকসেনা, রাজাকার, ১০০ বাঙ্গালী, মুজাহিদ বাহিনী – ৫০। জি আই – এ -১

খ) কালাচাদপুর জি আর ৪৬৩৩৪৩ এম/এস ৭৯এ/৯ পাকসেনা – ৫০ সাথে হেড কোয়ার্টার কয়, রাজাকার – ১৫, জি আই এ-১

গ) নাতুদুহ জি আর ৫১৮১৫৭ এম/এস ৭৯এ/১০। পাকসেনা – ৬২, রাজাকার ০ মিজাহিদ – ১০০। জি আই এ-১

ঘ) মেহেরপুর কলেজে প্রচুর শত্রু সমাবেশ হয়েছে। জি আই – এ -২

১৩ ১৮-১০-৭১ সোর্স রিপোর্ট বয়রা

বয়রা –

ক) চৌগাছায় স্পেশাল ইউনিট এস কিউ ৯০৬৯ এম/এস ৭৯ই/৩ ১৫ অক্টোবর আছে। সেখানে সাধারণ জনগণের উপর হেভি শেলিং করা হয়। ক্ষয়ক্ষতির জন্য জনসাধারণের ক্ষোভ ভারত ও মুক্তি বাহিনীর উপর পরে। জি আই এ-১।

খ) সিনহাঝুলি এস কিউ ৯৪৬৭ এম/এস ৭৯ই/৪ তে শত্রুরা বাংকার খনন করছিল। দস্তানিয়া এস কিউ ৯৩৫৩ এম/এস ৭৯ই/৪ তে নতুন ফোর্স আসছিল। জি আই – এ-১

১৪ ২০-১০-৭১ ডি কয় বয়রা শত্রুরা চৌগাছার পরিবর্তে ফুলছারায় এস কিউ ৯৭৬৫ এম/এস ৭৯ই/৪ ও গোবিন্দপুরে এস কিউ ৯৯৫৯ এম/এস ৭৯ই/৪ শত্রুরা নতুন অবস্থান তৈরি করে। জি আই – এ-১
১৫ ২১-১০-৭১ ডি কয় বয়রা চৌগাছা এস কিউ ৯০৬৯ এম/এস ৭৯ই/৩ ঢেকিপোতা রাস্তা এস কিউ ৬৭৬৫ এম/এস ৭৯/এ/১৬ স্থানীয় লোক দিয়ে উন্নতি সাধন করা হয়। মাস্লিয়াতে মাইন পোতা হয়। জি আই এ-১
১৬ ২১-১০-৭১ ই কয় হাকিমপুর

১। প্রায় ২০০ রাজাকার চট্টগ্রাম যাবার জন্য খুলনা ছাড়ে। ৪ টি ট্রাকে পাহারা দিয়ে পাকসেনারা তাদের নিয়ে যায়। জি আই বি-২

২। বাসাতপুরে এস কিউ ৮৩৩২ এম/এস ৭৯বি/১৩ ২৩ অক্টোবর শত্রুরা সমবেত হতে থাকে। আমাদের আক্রমণ পথ বন্ধ করা তাদের উদ্যেশ্য।

৩। কলারোয়া থানায় স্থানীয় পাক দালালরা গোপন মিটিং করেছে। আত্তসমর্পনের নামে রাজাকাররা মুক্তিফৌজকে অ্যামবুশ করার চক্রান্ত করছে। জি আই এ-১

১৭ ২৫-১০-৭১ সোর্স রিপোর্ট

ক) দোউলতগঞ্জে প্রায় ২ কয় সৈন্য এস কিউ ৪৭৮৮ এম/এস ৭৯ এ/১৫ জমা হয়েছে। জি আই বি – ১

খ) ২ প্লাটুন সৈন্য ও ৭০ রাজাকার হাসাদাহ ৪৩৯৮৭১ এম/এস ৭৯এ/১৫ ও ৭০ জন রাজাকার আচল বাড়িয়াতে ৭৭৪৯৫৯ এম/এস ৭৯এ/১৫ এবং উথালি এস কিউ ৭১৯৭ এম/এস ৭৯এ/১৫ তে দেখা গেছে।

গ) ভোমরাতে ভারী যানবাহন চলাচল দেখা যায় ২৪/২৫ অক্টোবর রাতে। জি আই বি – ১

 

১৮ ২৭-১০-৭১ সোর্স রিপোর্ট

ক) সোর্স জানায় দর্শনায় ২৫ অক্টোবর ১৮ পঞ্জাবের বদলে ১২ পাঞ্জাব দায়িত্ব নিয়েছে। জি আই – বি-১

খ) একটি পাক হেলিকপ্টার ২৫ অক্টোবর দর্শনার উপর দিয়ে উড়ে যায়। জি আই বি – ১

১৯ ২৮-১০-৭১ সোর্স রিপোর্ট লে জেনারেল নিয়াজি জি ও সি ইস্ট কমান্ড হান্সাদহ এস কিউ ৭৩৮৭ এম/এস ৭৯এ/১৫ ২৪ অক্টোবর পরিদর্শন করেন ১০০০ টায়। জি আই এ-১
২০ ২৯-১০-৭১

ডি কয় বয়রা

কিউ ০০৪৭

গন বাহিনীর হাফিজ কিছু টাকা ও ১ কেজি ২৫০ গ্রাম সোনা আজ বোয়ালমারী ব্যাংকে জমা করেছেন।
২১ ২৯-১০-৭১ সোর্স রীপোর্ট

১। সোর্স জানায় যে পাকবাহিনী এখানে নিম্নোক্ত ব্যাবস্থা গ্রহণ করেছে –

ক) বদর বাহিনী – এই বাহিনীর পাঞ্জাবি, বিহারি ও বাঙ্গালী নিয়ে গঠিত। এদের সবাই শিক্ষিত ও ট্রেনিং প্রাপ্ত। এদের বেশীর ভাগ রাজাকার ও মুজাহিদ দের থেকে বাছাই করা। তাদের পোশাক মিলিশিয়া. তাদের মাসিক বেতন ১৫০ রুপি। এই বাহিনীকে খুলনা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া ও যশোরের  স্থানীয় রাজাকারদের সাথে নিয়োজিত রাখা হয়েছে। (জি আই – এ ১ )

খ) আলফাতাহ বাহিনী – এটি মাদ্রাসা ও মৌলভিশিক্ষার ছাত্রদের নিয়ে গঠিত। তাদের পোশাক সিভিল ( সাদা পাজামা – পাঞ্জাবি)। এই বাহিনী গোপালগঞ্জ সাব- ডিভিশনে ও খুলনা জেলায় নিয়জিত। জি – আই – এ-১

২। সোর্স পারসন জানায় রাজাকারদের কয়েক জনকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে জাহাজে করে পশ্চিম পাকিস্তান পাঠানোর জন্য।

জি আই – এ-২

৩। জানা যায় ৮৭ কোটি রুপি খুলনা স্টেট ব্যাংক থেকে এবং ১১ কোটি রুপি কুষ্টিয়া ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

জি – আই – এ ২

২২ ৩০-১০-৭১

বি কয় বানপুর জি ০৭১১

৩০-১০-৭১

১। শত্রু চলাচল – ২৬ অক্টোবর বিকালে চুয়াডাঙ্গা থেকে যশোরে ৩ ট্রাক পাকসেনা নেয়া হয়। সম্ভবত ১৮ পাঞ্জাবের বদলে ১২ পাঞ্জাব কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জি আই – এ-১

 

২। খবর আসে যে, ন্যাশনাল ব্যাংকের যশোর ও চুয়াডাঙ্গা শাখা থেকে সকল টাকা ১০ দিন আগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জি আই – এ-২

২৩ ১-১১-৭১

এইচ কয়

বনগাঁও

সোর্স রীপোর্ট

১। সোর্স জানায় শত্রুদের ১০ বাই ১০ ফিট চওড়া একটি ট্যাঙ্ক আটকে ছিল। জি আর ৮১২৪৩৮ এম/এস ৭৯এ/১৬ জি আই এ-১

২। স্থানীয়দের দিয়ে কাকমারি এস কিউ ৭৯৫৪৩৩ এম/এস ৭৯এ/১৬ থেকে এস কিউ ৮০৩৬ এম/এস ৭৯এ/১৬ পর্যন্ত রাস্তা উন্নয়ন করে পাকসেনারা। তাছাড়া বাঘাছারা জি আর ৮৫৮৩৩৩ এম/এস ৭৯বি/১৩ থেকে গোগা জি আর ৭৬৫৩১৯   এম/এস ৭৯বি/১৩ উন্নয়ন করে। গোগা জি আর ৭৬৫৩১৯ এম/এস ৭৯বি/১৩। জিয়াই এ-১

৩। সোর্স জানায় শুত্রুদের বন্দুক ১ আর্টিলারি এর অবস্থান নিম্নরূপ –

দুটি আর্টিলারি গান ৮০৮৪৩৭ এম/এস ৭৯এ/১৬ এবং ৮৩৩৪৩৭ এম/এস ৭৯এ/১৬। একটি আর আর – এস কিউ ৮২৪৩ এম/এস ৭৯এ/১৬ ও ৪ টি এম জি। এলং রুট এস কিউ ৮২৮৩  এম/এস ৭৯এ/১৬। জি-১, সি২-

২৪ ২-১১-৭১

বি কয়

বানপুর

শত্রুরা এন্টি ট্যাংক ডিচ তৈরি করছে আখদাবারিয়া এস কিউ ৬৮৯৮ এম/এস ৭৯এ/১৪ থেকে উথালি এস কিউ ৭০৭৯ এম/এস ৭৯এ/১৪ পর্যন্ত। ডিচ গুলো ১৫-২০ ফুট লম্বা ৮-১০ ফুট চওড়া। জি আই এ-১
২৫ ৫-১১-৭১ সোর্স রীপোর্ট

১। যশোর ও খুলনা শহরে অনেক ইসুজু ট্রাক দেখা যায়। জি আই – বি-১

২। খুলনা জে টি নং ৭ এ জনসাধারণের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। কারণ এই জে টি দিয়ে সকল মিলিটারি সাপ্লাই আসে। জি আই বি-১

৩। সমুদ্রগামী একটি ইউ এন জাহাজ প্রচুর বস্তা ও কাঠের প্যাকেজ নিয়ে ভৈরব নদীতে দেখা যায়। খুলনা। জি আই – বি-১

৪। প্রতি সাব ডিভিশনে ও জেলায় পাক সরকার একটি কম্পোজিশন অফিস খুলেছে। সরকার সবাইকে দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা সঙ্ঘটিত ক্ষয়ক্ষতির একটি তালিকা ও মূল্য নির্ধারন করে জমা দিতে বলেছে। জি আই সি-২

২৬ ৫-১১-৭১ ডি কয় বয়রা ১। ৩ টি লাশ উদ্ধার। নং – ২৮৮৬৭০২ সেপাই নাযুর হোসেন ৩৮ এফ এফ। ২৬৯১১৭ সেপাই সুলতান আলুইনেদ ও সেপাই মাহবুব হোসেন ই পি সি এ এফ। মাছলিয়া থেকে ডকুমেন্ট উদ্ধার। সি ও ডি কয় ৩৮ এফ এফ রেজিমেন্ট। এলিমেন্ট ১৫ উইং ২ পাই ই পি সি এ এফ মাস্লিয়া। সাঞ্চাডাঙ্গা ও বামী। শত্রু অবস্থান। জি আই ডি -১
২৭ বি কয় বানপুর জানা যায় ২ জন পাক আর্মি মেজর দর্শনায় আছে। মেজর রাণা ও মেজর আজম খান। জি আই সি ২
২৮ সোর্স রিপোর্ট চুয়াডাঙ্গা থেকে মুন্সিগঞ্জ এস কিউ ৭৭২৪ এম/এস ৭৯এ/১৪ পর্যন্ত পাকসেনারা কারফিউ দেয়। জি ১ বি-২
২৯ এফ কয় শিকারপুর ধর্মদাহ এস কিউ ৬২৫৫   এম/এস ৭৯এ/১৩ থেকে ০৫১৯০০ নভেম্বর ৪ জন রাজাকার আটক হয়। সাথে ২ টি এ পি মাইন ছিল। জি আই এ-১
৩০ সোর্স রিপোর্ট ছুটিপুরে শত্রুরা নভেম্বরে প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধি করে। জি আই এ-১
৩১ ১৩-১১-৭১ এফ কয় শিকারপুর ধর্মদাহ লাশ থেকে দরকারি কাগজ উদ্ধার। ২১ পাঞ্জাব সি কয় ৭ পাই অবস্থান সনাক্ত হয়েছে প্রাগপুরে। জি আই ডি-১
৩২ ১৪-১১-৭১ সাব সেকশন ৪ লালগোলা

ক) জয়ন্দিপুরে এস কিউ ৯৮৩০ এম/এস ৭৮ ডি/২ শত্রু চিনহিত সাথে পশ্চিম পাকিস্তানী মিলিশিয়া দেখা যায়। জি আই – এ-১

খ) ইসলামপুরে এস কিউ ০৮২৪ এম/এস ৭৯ডি/১ শত্রু কয় সনাক্ত সাথে ৩ ইঞ্চি মর্টার কিছু মিলিশিয়া দেখা যায়। জি আই এ-১

গ) বারো রাশিয়া এস কিউ ০৫২৪ এম/এস তে কিছু রাজাকার মিলিশিয়া সমবেত হয়েছে। জি আই এ-১

ঘ) একটি পাঞ্জাব রেজিমেন্টের প্রোগ্রাম হবে ০৮২৫ এম/এস ৭৮ ডি/৬ সাথে ৮১ ৩০ ব্রাওনিং জি আই এ-১

৩৩ ১৬-১১-৭১ ডি কয় বয়রা

১১। আগে ৫/৬ নভেম্বর ৪০ টি ট্যাংক যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে চলে যায়। জি আই সি-২

২।

ক) ২২ এফ এফ এর একটি কয় নাভারন আছে।  কিউ টি ৮৮৪৪ জি আই এ-১

খ) সি কয় এর ২২ এফ এফ রেজিমেন্ট ছুটিপুরে আছে। কিউ টি ৯৩৫৮  আছে জি আই এ-১

গ) ৩৮ এফ এফ এর এলিমেন্ট চৌগাছা এস কিউ জি আই এ-১ আছে।

ঘ) ৩৮ এফ এফ এর সি ও ডি কয় মাস্লিয়া এস কিউ বর্নি তে ও সানেহা ডাঙ্গা তে আছে।

৩। নিম্নোক্ত ১০৭ ব্রিগেডের ফোর্স যশোর ক্যান্টিন্মেন্টে আছে – ২১ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট ২২ এফ এফ রেজিমেন্ট, ৩৮ এফ এফ রেজিমেন্ট ৩০ এস ও টি বি এন । ৫৫ এফ ডি রেজিমেন্ট ১০ ইঞ্জিনিয়ার বি এন। ৭১ ম্যাড ব্যাটালিয়ন। ৭ এফ ডি অ্যামবুশ। ১৮ এম আই ২৭ সিগনাল ব্যাটালিয়ন, ৫৮ ই এম ই বি এন ও ১৪০ ইনফ ওক্সফ জি আই সি – ২

৪। ৫৭ ব্রিগেডের নিম্নোক্ত ফোর্স ঝিনেদা আছে – ১৬ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট ৮ বালুশ রেজিমেন্ট ১৮ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট ২৫ এফ এফ রেজিমেন্ট ৪৯ এফ ডি রেজিমেন্ট ৬১৪ এফ আই ইউ ও ৪০৯ জি এইচ কিউ এফ আই ইউ জি আই – সি -১

৫। ৩ এক্স ২৫ পি ডি আর গান চৌগাছায় যেতে দেখা যায়। ২ ট্রাক ভর্তি সৈন্য ছিল। জি – আই বি-১

৩৪ ১৬-১১-৭১ সাব সেক্টর ৪ লাল গোলা বাজুমারা ৬৫৭১ ও ৬৬৭১ এম/এস ৭৮ডি/১২ এবং চিলমারি ৬১৭০ ও ৬২৭০ এম/এস ৭৮ডি/১২ জি আই বি-১ অবস্থান চিনহিত।
৩৫ ১৬-১১-৭১ ৯ সেকশন টাকি

১। ১৪ নভেম্বর পাক ট্রেনিং প্রাপ্ত জামাতে ইসলামি ২ কয় ধরা পরে। তারা যশোর ক্যান্টনমেন্ট ও সাতক্ষীরায় ৭ মাস ট্রেনিং নিয়েছে। বশিরহাট টাকিতে তারা ৩ টি এ টি কে মাইন পুতে। মাধাইম এ ৩ টি চার্জ বসানো হয় রেল লাইনে। একটি ভারতীয় ট্রেন সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। (জি আই- ডি-১)

২। আরও ১৬ জন শত্রু বর্ডার ক্রস করেছে। সাথে ৪ টি এল এম জি ছিল। আরও ছিল ২ ইঞ্চি মর্টার ৩ টি ও অটো অস্ত্র। তাদের এখনো অবস্থান জানা যায়নি। ডি-১

৩৬ ১৬-১১-৭১ সোর্স রিপোর্ট

১। কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে প্রায় ১০০০ পাক আর্মি আছে ( সুবেদার সাফদার বালুস রেজিমেন্ট)

২। মাগুরা – পি টি আই তে ১ কয় আর্মি আছে। কমান্ডার ক্যাপ্টেন নিয়াজি ডাকবাংলোতে আছেন। সি-২

৩। প্রায় ১০০ টি মিলিশিয়াদের যান দেখা যায়। খুলনার  জেটি ৭ এ জাহাজে এগুলো ভর্তি ছিল। এম টি যানে অ্যাংকর চিনহ ছিল নং – ৪৪৮ অ ৪৩৮। এটি এফ এফ রেজিমেন্ট  থেকে ট্রুপ্স বহন করছিল। (লাল গোলাকার ব্যাকগ্রাউন্ড টুপি ও ব্যাজ, কালো ওয়েব ইকুইপমেন্ট)। খুলনায় কিছু পাঞ্জাব ব্যাটালিয়নের সৈন্যও দেখা যায়। জি আই – বি-১

৪। খুলনা বয়রা কমিশনারের অফিসের কাছে মুজাহিদের হেড কোয়ার্টার আছে। জি আই বি-১

৫। খুলনা টুতপারা ভূতের বাড়ি এক্স আনসার হেড কোয়ার্টারে রাজাকারদের হেড কোয়ার্টার অবস্থিত। জি আই বি-১

৬। ই পি সি এর হেডকোয়ার্টার খুলনা রুপ্সাঘাটে ( এক্স ই পি আর লাইন) অবস্থিত।  জি আই বি-১

৩৭ ১৮-১১-৭১ সোর্স রিপোর্ট

১। নভেম্বর ৭১ এ ৯ নং সেক্টরের লে জিয়া ৫ কেজি সোনা উদ্ধার করেন বাংলাদেশের ভেতর থেকে। এগুলো মেজর আব্দুল জলিলের কাছে (৯ নং সেক্টরের কমান্ডার) জমা দেয়া হয়। জি আই এ-১

২। ৯ নং সেক্টরের বাহিনীর কিছু সদস্য  একটি দেশী নৌকা থেকে ৮০০ মন চাল উদ্ধার করে। এগুলো বাকুন্দিয়া মুক্তি ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। নভেম্বর ৭১। জি আই এ- ১

৩৮ ১৮-১১-৭১ বি কয় বানপুর জি ০১১৬ ১৪-১১-৭১ ঈগল থেকে – নিয়মিত বাহিনী ও গন বাহিনী ১২ নভেম্বর আলমডাঙ্গা ন্যাশনাল ব্যাংক আক্রমণ করে ৮০ হাজার পাক রুপি ও ৩০ টি সোনার বার উদ্ধার করে। জি আই এ-১
৩৯ ১৯-১১-৭১ সি কয় বেতাই ডি কয় বয়রা লালগোলা

১। পাকসেনাদের সাথে আলবদর বাহিনী গান্রাবারিয়া ৫০৪০ এম/এস ৭৯ এ/৯ এ থাকে – দনের বেলা ছিল। পরে ভাট পারা ৫৬৩৮ এম/এস ৭৯এ/৯ চলে যায়। জি আই এ- ১

১। বিশ্বপারা ও মচিপারা এস ই ও / চুয়াডাঙ্গা ডাকবাংলো কিউ টি ৯২৬৯ তে শত্রুরা জড়ো হয়। জি আই এ-১

২। দিঘলসিঙ্ঘা তে ৮৯৬৬ এম/এস ৭৯ ই/৪ শত্রুরা অবস্থান নেয়। জি আই এ-১

তারা বাজুমারা ও চিল্মারি খালি করে দেয়। জি আই এ-১

৪০ ২০-১১-৭১ ডি কয় বয়রা পাকসেনারা সেলুয়া ও জগতি গ্রামবাসীদের খুব  দ্রুত এলাকা ছেড়ে যেতে বলে। ১৮০৫০০ নভেম্বর  তারা সেখানে কারফিউ জারি করে।  জি আই এ-১
৪১ ২১-১১-৭১

ডি কয়

বয়রা

১। প্রায় ২০০ পাকসেনা আমঝুপি ৫৩২৮ এম/এস ৭৯ এ/১০ বারাদি ৫৮২৫ এম/এস ৭৯এ/১০ তে মেহেরপুর থেকে এসে জড়ো হতে থাকে। জি আই এ-১

২। ৩০ জন রাজাকার ও ১ জন নায়েক সুবেদার মেহেরপুর পাওয়ার হাউজের কাছে ৪৯৩২ এম/এস ৭৯এ/৯ দেখা যায়। প্রায় ৮০ জন পাকসেনা ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট ৪৮৩১ ও কবরস্থানে ৪৮৩০ এম/এস ৭৯এ/৯ ৪ টি জীপ ৪ বাই ৩ টোনার দেখা যায়। জি আই এ-১

৩। যাদবপুর ঘাটে ৪৭৩০ এম/এস ৭৯এ/২ পাকসেনা ও একজন নায়েক সুবেদার দেখা যায়। একটি আর আর কামদেবপুরে আছে ৩৫৩৩। জি আই এ-১

৪। ১৬ নভ ২২ এফ এফ ও ২৮ এফ এফ চৌগাছায় অবস্থা নেয়। ৩৮ এফ এফ সেখান থেকে বদলি হয়ে নভারন যায়। জি আই এ-১

৫। ১৮ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত সকল যান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। চৌগাছা যশোর রাস্তা পুরো বন্ধ করে দেয়া হয়। জি আই এ-১

৪২ ২৩১৯১৫ রেডিও বাংলাদেশ ২৩১৪০০ নভেম্বর ৭১ পাক সরকার দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। জি আই এ-১
৪৩ ২৩১৯১৫ আকাশবাণী ২৩১৪০০ নভেম্বর ৭১ পাক সরকার দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। জি আই এ-১
৪৪ ২৩-১১-৭১ সোর্স রিপোর্ট

১। মিরপুরে ৮৭৫০ এম/এস ৭৯ই/১ বুল ডোজার দেখা যায়। কোন ট্যাংক ছিলোনা । জি আই এ-১

২। মেহেরপুরের সকল পাকসেনাদের সরিয়ে নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় রাখা হয়। জি আই এ-১

৪৫ ২৫-১১-৭১ ডি কয় বয়রা ১। ২৪ নভেম্বর বাঘাছড়ায় বাংলাদেশের পতাকা টানানো হয়। ছুটিপুর, দোস্তানিয়া ও রঘুনাথপুর থেকে শত্রুদের খালি করা হয়। আমাদের সৈন্য সেই এলাকাগুলো দখল করে। জিয়া ই এ-৩
৪৬ ২৫-১১-৭১

সি কয় বেতাই

বি কয় বানপুর

এ কয় গোজাডাঙ্গা

১। মেহেরপুরে ২ কয় পাকসেনা আসে। একটি ১২ পাঞ্জাব থেকে আর অন্যটি ১৮ পাঞ্জাব থেকে,

ক) ২০ রাজাকারসহ ১ পাই পাকসেনা মেহেরপুর পাওয়ার হাউজে অবস্থান নিয়েছে ৪৮৮৩২২ এম/এস ৭৯এ/৯।

খ) ৫০ রাজাকার সহ ২ পাই পাকসেনা মেহেরপুর কলেজ ও ভোকেশনাল ইন্সটিটিউটে ৪৮৩১ এম/এস ৭৯এ/৯ অবস্থান নিয়েছে।

গ) মেহেরপুর কর্মরত ১ সেকশন পাকসেনা ৪৭৭৩০৩ এম/এস ৭৯এ/৯ অবস্থান করছে।

ঘ) ২০ রাজাকারসহ ১ পাই পাকসেনা যাদবপুর ঘাটে ৪৬৩০ এম/এস ৭৯এ/৯ অবস্থান নিয়েছে।

ঙ) আর আর সহ পাকসেনারা কামদেবপুর ঘাটে ৪৫৩৩ এম/এস ৭৯এ/৯ অবস্থান নিয়েছে।

চ) গবিপুরে ৪৬৩২ এম/এস ৭৯এ/৯ শত্রুরা অবস্থান নিয়েছে। জি আই

১। শত্রুরা মাগুরা শ্রীপুরে এয়ার স্ট্রিপ বানিয়েছে ৯৪০৩৫৫ এম/এস ৭৯ই/৭ – এটি প্রাইমারী টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের কাছে। জি আই বি-২

সাতক্ষীরা ৯৬৫২২০ এম/এস ৭৯এফ/২, মহাম্মাদপুর ৮৮৩৯৮৬ এম/এস ৭৯এফ/২ আলিপুর ৯০১৯৮৮ এম/এস ৭৯এফ/২, গাংনি ৮৬৩৯৯২ এম/এস ৭৯ বি/১৪, নাবাতকাটি ৮৫৪৯৭৪ এম/এস ৭৯বি/১৪, শ্রীরামপুর ৮৬৫৯৪৫ এম/এস ৭৯বি/১৪ স্থানে শত্রুদের অবস্থান চিনহিত। জি আই বি-১

২। কুলিয়া ব্রিজ ৮৬৩৯৪৩ ৭৯ বি ব্রিজ উড়িয়ে দেয়া হয়। জীপ যেতে পারবেনা। তবে হেঁটে যাওয়া যাবে। জি আই সি – ২

৪৭ ২৬-১১-৭১ সোর্স রিপোর্ট

১। ঝিনেদা ক্যাডেট কলেজে শত্রুরা প্রচুর গোলাবারুদ পায় কিউ পি ০৮০৫

২। নবারন পুরাতন বাজার ৮৮৪৪ এম/এস ৭৯ই/৪ বেনাপোল যশোর রাস্তায় শত্রুরা কিছু এমও পায়। জি আই সি – ২

৩। ঝিনেদা ক্যাডেট কলেজ হেড কোয়ার্টারে ২ জন বাঙ্গালী অফিসারকে ই এম ই রেজিমেন্টে নিয়োগ দেয়া হয়। জি আই সি-২

৪৮ ২৮-১১-৭১ সোর্স রীপোর্ট

১। বিশ্বস্ত সূত্র থেকে নিচের খবর পাওয়া যায় – জি আই এ-১

ক) গাংনি ব্রিজে ৮৬২৯৮১ এম/এস ৭৯বি/১৪ প্রায় ৫০ জন পাকসেনা আছে।

খ) আলিপুর ৯০৯৯ এম/এস ৭৯এফ/২ ৫০ রাজাকার সহ ৭৫ জন পাকসেনা আছে।

গ) পুশপকাটি তে ৮৮৯৬ এম/এস ৭৯এফ/২ ৭৫ রাজাকার সহ ১৫০ জন পাকসেনা ছিল।

ঘ) মোহাম্মাদপুরে ৮৭৯৮ এম/এস ৭৯এফ/২ ১০০ রাজাকার সহ ১৭৫ জন পাকসেনা ছিল।

ঙ) সাতক্ষীরা শহরে ৯৫০১ এম/এস ৭৯ এফ/২ ২০০ রাজাকার সহ ৩০০ পাকসেনা ছিল।

চ) বাঁকাল ব্রিজে ৯২৭৯৯৮ এম/এস ৭৯ এফ/২ ৫০ রাজাকার সহ ১৫০ জন ছিল। জি আই এ-১

২। জানা যায় যে, সাতক্ষীরায় সকল জনসাধারণের বাহন দখল করে নেয় পাকসেনারা। জি আই এ-১

৩। সাতক্ষীরার কারফিউ বন্ধ করা হয়। জি আই এ-১

৪। শত্রুদের মনোবল মারাত্মক হ্রাস পেয়েছে। জি আই এ-২

 

 

৪৯ ২৩-১১-৭১

এফ কয় শিকারপুর

জি ০০৬২

২২-১১-৭১

১২ নভেম্বর গণবাহিনী আলমডাঙ্গা ন্যাশনাল ব্যাংক দখল করে। ব্যাংকের ম্যানেজার আত্ম সমর্পন করে ও ৮৩০০ টাকা ও ৭ টি ছোট কাপড় দিয়ে সিল করা ব্যাগ দেয়। এগুলো কয় হেড কোয়ার্টারে রেখে দেয়া হয়। মন্তব্য – টাকা  ও সিল করা ব্যাগ ৮ নং সেকশন হেড কোয়ার্টারে জমা দেয়া হয় – সুবেদার মজিদ মোল্লা এগুলো নায়েক সুবেদার আইয়ুব আলি সিগের কাছে জমা দেন – তারিখ ছিল ২৮-১১-৭১
৫০ ২৮-১১-৭১ সি কয় বেতাই ১। ২৬১০০ নভেম্বর ৭১ ২ টি জীপে ৪ বাই ৩ টোনার লোড করে মেহেরপুর ত্যাগ করে চুয়াডাঙ্গার দিকে যায়। একটি বেসামরিক ট্রাকে ১২ জন রাজাকার গাইড হিসাবে যায়। জি আই বি-২
৫১ বি কয় বানপুর জীবন নগর সম্পূর্ন মুক্ত হয়। জি আই – এ – ১
৫২ ৬-১২-৭১ সি কয়

১। ৪৩ জন বিহারি ও ৭ জন রাজাকার ৪৭২৭ এম/এস ৭৯এ/১০ স্থানে নিযুক্ত করা হয়। জি আই এ-২

২। ভাটিয়া কিউ উ ৬৬৬৪ থেকে শত্রু সেনাদের নিয়ে যাওয়া হয়। ২ টি লঞ্চে করে ২৮ নভেম্বর তাদের নেয়া হয়। জি আই এ-১

শিরনাম তারিখ

৩৬। যুদ্ধ পরিস্থিতি  রিপোর্ট

হিঙ্গলগঞ্জ সাব সেক্টর

৯ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১৯৭১

ট্রান্সলেটেড বাই: Razibul Bari Palash

<১১, ৩৬, ৪৭৮ ৪৭৯>

 

ক্রমিক নং

 

তারিখ

সূত্র নম্বর

তথ্য অন্তর্ভুক্তির তারিখ

 

ঘটনা
৭-৫-৭১ ৭-৫-৭১ কালীগঞ্জ থানা সহ আমাদের বাহিনী  ৫ টি স্থান পরিবর্তন করে। এতে শত্রুদের অনেক হতাহত হয়। আমাদের কেউ হতাহত হয় নাই।

জি ১৩০৯০০

০০০৭

১৫-৫-৭১

১। ১২১০৩০ টায় ৭০/৭৫ জন কালীগঞ্জ পৌঁছায়। কাকশিয়ালি নদী থেকে কালিগঞ্জ গ্রাম্য হাসপাতাল পর্যন্ত একটি বড় ও ১ টি ছোট লঞ্চ তাদের বহন করে। ছোটো টি ১২৩০ টায় ছাড়ে। একটি জীপ ও ২ টি ডজ সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ রাস্তা দিয়ে সেখানে আসে।

২। ২ টি হেভি মেশিনগান লঞ্চে ছিল। ২ টি আর আর পাওয়া যায়। পারুলিয়া ব্রিজে ২ টি ডজ পাওয়া যায়। অকালাত মিয়া, মিলিশিয়া নেতা, ও সি কালীগঞ্জ থানা ও আব্দুল গাফফার সি ইউ সি কালীগঞ্জ শত্রুদের সাহায্য করে। কালীগঞ্জ বাজারে শত্রুরা কিছু হিন্দুদের দোকান লুট করে। সেখানে সাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কারফিউ জারি করে।

জি ০০০৮

১৪০৯০০

১৫-৫-৭১

১। ১৩১১৩০ টায় আরও শত্রু সৈন্য কালীগঞ্জে আসে। ৬ টি ট্রাক ৩ টি ডজ ও ৩ টি জীপে করে তারা আসে। স্থানীয়দের ভাষ্য মতে তাদের লোকবল প্রায় ৩০০ জন। সাধারণের চলাচল পুরো বন্ধ করে দেয়া হয়। কালীগঞ্জ ওয়াপদা অফিসে একটি গান বোট পাওয়া যায়। নদীর পাশ দিয়ে পাকা ডিফেন্স আছে।

২। উজিরপুর ও বন্তলা বাজার আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয় ও লুট করা হয়। নাকিপুর গ্রামের হিন্দু বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়।

৩। পারুলিয়া বাজার আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয় ও লুট করা হয়। সেখানে শক্ত পাহারা  আছে।

৪। উজিরপুর আশাশুনি ও বরিগোয়ালিনিতে ৬ টি গান বোট আছে।

৫। ১৩১৩৩০ টায় পাকবাহিনী একটি শান্তি মিটিং এর ডাক দেয় এবং মুক্তিদের সহায়তাকারীদের সনাক্ত করতে বলে ও হিন্দুদের ভারতে চলে যেতে বাধ্য করে।

১৪-৫-৭১ ১৫-৫-৭১

পাক আর্মি কালীগঞ্জ আসার পর থেকে এ সি বি এস এফ এর নির্দেশ মোতাবেক নিম্নোক্ত ব্যাবস্থা নেয়া হয়।

ক) উকশা এলাকার উল্টা দিকে হিঙ্গলগঞ্জ  থেকে বাকরা পর্যন্ত ২ টি বাহিনীকে কালিন্দী নদীর পাড় পাহারা দিতে পাঠানো হয়।

খ) বসন্তপুরের উল্টা পাশে ৭ টি শত্রু অবস্থান বানানো হয়।

গ) সাথে আর্মস ও এমও ছিল।

ঘ) দ্রুতগামী নৌযান ছাড়া বাংলাদেশের ভিতরে পেট্রোল করা সম্ভব না। এখানে কোন স্পিড বোট ছিলোনা।

জি ০০০৯

১৫০৯০০

১৫-৫-৭১ ১৪-৫-৭১ তারিখে পরানপুর বি ও পি রিপেয়ার করা হয়। সকল বি ও পি ইস্ট পাকিস্তান সিভিল আর্ম ফোর্স কর্তৃক আয়ত্তে নেয়া হয়। বরিগোয়ালিনিতে গানবোটে মোবাইল পেট্রোল চালানো হয়। পাকা রাস্তা দিয়ে নাজিমগঞ্জ থেকে শ্যামনগর পর্যন্ত নিয়মিত পেট্রোল চলে।

জি ৪০০১৪

১৯০৮০০

১৯-৫-৭১ শত্রুরা সার্ভিস লঞ্চে গুলি করে ৩ জন সিভিলিয়ান হত্যা করে ও ৩ জন আহত হয়। তারা এল এম জি ও অন্য আটোমেটিক অস্ত্র নিয়ে উক্সা বি ও পি তে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টার সময় যায়। তারিখ ১৮ মে। তারা একটি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। বেয়োনেট দিয়ে সেখানকার ১৫০০ রিফুজিকে অত্যাচার করে। দ্রুত  মুক্তিবাহিনী সেখানে আসে। উক্সার পাশে পাকসেনারা ৩ টি ভারতীয় মাঝিকে ধরে নিয়ে যায়। বি এস এফ এর সাহায্যে কড়া পেট্রোল চলছে।

জি ০০২১

২৯০৭০০

৩০-৫-৭১ ২৮ মে ৭১ ০৮৩০ টায় এহত্রুরা বসন্তপুর বি ও পি দখল করে। সেখানে বিহারি সহ ২০ জন ছিল। তারা স্থানীয়দের সাহায্যে সবগুলো বি ও পি বাঙ্কার মেরামত করে ও কিছু নতুন বাঙ্কার বানায়। কাজের সময় হেভি অস্ত্র সহ একটি লঞ্চ স্ট্যান্ড বাই ছিল দামদামা ঘাটে । ২০/২৭ মে ৭১ ০৮০০ টায় ও ১২০০ টায় রাইফেল  এস এম জি এল এম জি  এর র‍্যাঙ্ক ক্লাসিফিকেশন চালানো হয়। স্থান ছিল কালীগঞ্জ গ্রাম্য হাসপাতাল ভবন। সাথে ছিল নতুন ট্রেনিং প্রাপ্ত বিহারিরা।

শিরোনাম তারিখ
৩৭। ৮ নং সেক্তর কমান্ডারের  একটি গোপন  চিঠি ৮ নং সেক্টরের দলিলপত্র ৩ নভেম্বর, ১৯৭১

ট্রান্সলেটেড বাই: Razibul Bari Palash

<১১, ৩৭ , ৪৮০৪৮৬>

গোপনীয়

জরুরী

হেডকোয়ার্টার বি সেক্টর

বাংলাদেশ বাহিনী

জে এস 1-সি / ১০৫ / সি

০৩ নভেম্বর ৭১

প্রতি

হেডকোয়ার্টার

বাংলাদেশ ফোর্স

সি সেক্টর

২ করপ্স

বিষয় – পাক স্পেশাল গেরিলা

সম্প্রতি ৬ জন বিশেষ পাকগেরিলা ৪ নং এস বি ইউ সেক্টর এর কাছে আত্মসমর্পণ করে। তারা চারঘাট এস কিউ ৬১৯২ এম / এস ৭৮ ডি / ১৫ দিয়ে প্রবেশ করেছিল। এই কর্মীদের বিশেষকরে আন্তর্জাতিক সীমানা জুড়ে এবং মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে দুই মাস অন্তর্ঘাত মিশনের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এই উদ্দেশ্যে নির্বাচিত ব্যক্তিগণ বেশিরভাগ ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা অভিবাসী যাদের  সম্পর্ক এখনো ভারতের সাথে ছিল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তারা তাদের কাছে সহজেই আশ্রয় পেত। এই ধরণের প্রশিক্ষণ সীমান্তের সবদিকেই আয়োজন করা হয়েছিল।

২। রাজশাহী জেলা

ক) একটি ১৩৮ ব্যক্তির দল হর্টিকালচার রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল।

দুই মাসের জন্য রাজশাহীতে তারা এই প্রশিক্ষণ নেয়। তারা সবাই বাঙালি।

খ. তদের নিম্নে উল্লেখিত জিনিস দিয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে: –

(১) CaptSSG – ১

(২) এন / সাব এস এস জি -১

(৩) এক হাবিলদার এস এস জি -১

(৪) এন কে এস এস জি – ২

(৫) শিবির টি পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ইলিয়াস নামের এক অধিনায়ক দেখাশোনা করে থাকেন। এটি রাজশাহীতে অবস্থিত।

গ. গেরিলাদের তিনটি গ্রুপ ছিল – যদিও তাদের মধ্যে সামান্য পার্থক্য ছিল।

(১) সারদা গ্রুপ – ২১ জন

(২) প্রেমতলী ও গোদাগাড়ী – ২৮ জন

(৩) শিবগঞ্জ – ৩০ জন

ঘ. এরা বিস্ফোরক, মাইন, সব অস্ত্র এবং সি কিউ বি অস্ত্রের উপর প্রশিক্ষণ নিয়েছে।

৩. নিচের মিশন তাদের দেওয়া হল: –

(১) রেইড করা – মুক্তিফৌজ এবং বিএসএফ শিবিরে

(২) সেতু ও কালভার্ট ধ্বংস করা

(৩) টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ লাইন কাটা

যেসব অস্ত্র ও বিস্ফোরক তাদের কাছে ছিল তা হল-

এ টি কে মাইন – ২ টি

এ পি মাইন – ২ টি

গ্রেনেড – ২ টি

তার কাটার – ১ টি

ভারতীয় ও পাকিস্তানি রুপি – ২০ রুপি – যা পাকবাহিনী কর্তৃক প্রদত্ত।

৪। রাজশাহীতে নিচের ক্যাম্পগুলো বরাদ্দ আছে

ক) রাজাকারদের জন্য – রাজশাহী উপশহর

খ) আলবদরদের জন্য – রাজশাহী স্টেডিয়াম

গ) মুজাহিদের জন্য – রাজশাহী বাড়াল কুটি

৫। এদেরকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের ৬ জন পাক স্পেশাল গেরিলা বলেছে তাদের পুরো দল আত্মসমর্পনের জন্য প্রস্তুত আছে।

স্বাঃ / -এম এ মনজুর

কমান্ডো

বি সেক্টর

বাংলাদেশ বাহিনী।

গোপনীয়

——————————————

বাংলার মুক্তিযুদ্ধ

(গেরিলা বাহিনীর নির্দেশাবলী)

“এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।”

-বংগবন্ধু

প্রনীত-

সেনানায়ক

দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী

 

একটি সংগ্রামী ফরিয়াদ

 

ভায়েরা

আজ আমরা আমাদের মাতৃভূমির স্বাধীনতা সংগ্রামে লিপ্ত। পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক গোষ্ঠী ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ থেকে যে নৃশংসভাবে নির্বিচারে বাঙালী হত্যা করেছে, আমাদের মা বোনকে ধর্ষণ করেছে ও আমাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে সম্পদ লুটে আমাদেরকে গৃহহারা করেছে তার বিরুদ্ধে আমরা রুখে দাঁড়িয়েছি। আমাদের যুদ্ধ ততদিন চলবে যতদিন পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী সমূলে নিপাক না হবে এবং বাংলাদেশ সম্পূর্ণ স্বাধীন না হবে। শত্রু নির্মুল করার জন্য শত্রুকে জানা দরকার ও তার রণকৌশল সম্বন্ধে জ্ঞ্যান থাকা নিতান্ত প্রয়োজন। আমাদের শত্রু সুসজ্জিত ও সংখ্যায় অধিক। তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধের সময় এখনো হয়নি। আমরা এখনো গেরিলা রণকৌশল ব্যাবহার করছি। অতর্কিতে শত্রুর উপর হামলা করে তাই সর্বাধিক ক্ষতি সাধন করতে হবে। দেখতে হবে শত্রু যেন তার দৈনিক সরবরাহ না পায় ও কোথাও নিরাপদ অনুভব না করতে পারে।

আমি বিশ্বাস করি যে মুক্তিযুদ্ধের যে নির্দেশাবলী এই লিপিকায় দেওয়া হয়েছে তা পুরাপুরিভাবে পালন করলে আমরা সফলকাম হবো।

খোদা মোদের সহায় হন-জয় আমাদের সুনিশ্চিত। জয় বাংলা।

এম, এ, মঞ্জুর

সেনানায়ক

আমরা বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী

 

আমাদের কাম্যঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা

 

আমাদের শত্রুঃ বিবেকহীন পশ্চিম পাকিস্তানী সরকার ও বর্বর হানাদার সেনারা, যারা-

* শিশু নারী বৃদ্ধ নির্বিচারে বাঙালীদেরকে হত্যা করেছে।

* ঘৃণ্যতম উপায়ে আমাদের মা বোনদের ইজ্জত নষ্ট করেছে।

* আমাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে।

* আমাদের সম্পদ লুট করে লক্ষ লক্ষ নিরাপরাদ নরনারীকে দেশছাড়া করেছে।

* বাঙ্গালী জাতীকে ধ্বংস করার জন্য আমাদের মাঝে ভাঙ্গন ধরাবার চেষ্টা করেছে।

আমাদের পণঃ খোদার উপর বিশ্বাস রেখে মরণপণ সংগ্রাম অক্ষুণ্ণ রাখবো, যতক্ষণ না আমাদের শেষ শত্রুটিকে দেশ ছাড়া করতে পারি এবং বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্ররূপে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি।

 

মুক্তিবাহিনীর নির্দেশাবলী

গেরিলা যুদ্ধের বিভিন্ন পর্যায়

 

১। প্রথম পর্যায়- ঘাঁটি স্থাপন – (১০-১৫ দিন মোটামুটি সময়)

(ক) ঘাঁটি ও লুকাইবার বিভিন্ন স্থান নির্বাচন।

(খ) অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ এবং অন্যান্য রসদ রাখার গুপ্তস্থান নির্বাচন।

(গ) কর্মরত গণবাহিনীর লোকদের সহিত যোগাযোগ স্থাপন।

(ঘ) স্বাধীনতাকামী স্থানীয় দলের সহিত যোগাযোগ।

(ঙ) স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের সহিত যোগাযোগ স্থাপন করে তাহাদের মন জয়।

(চ) শত্রু ও স্থানীয় বিরুদ্ধতাকারী দলগুলির সম্বন্ধে খবরাখবর সংগ্রহ।

(ছ) গোপন তথ্য সরবরাহকারী সংস্থা (ইনটেলিজেন্স নেটওয়ার্ক) স্থাপন ও খবর আদান প্রদানের ব্যাবস্থা। এই কাজ সব পর্যায়ে চলবে।

২। দ্বিতীয় পর্যায়ঃ অসামরিক জনগণের সমর্থন আদায়-

(এ কাজে কোন নির্দিষ্ট সময় নেই, তৃতীয় পর্যায় অবধি চলবে।)

(ক) জনগণের মনে রাজনৈতিক চেতনা সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন সমাজকল্যাণমুলক কাজ করে জনগণের মন জয় করতে হবে। সমাজকল্যাণমূলক কাজের মধ্যে রয়েছে – আর্তের চিকিৎসা, ত্রাণকার্য ও চুরি ডাকাতি বন্ধ।

(খ) রাজাকার, মুজাহিদ ও অন্যান্য যারা বিভিন্ন কারণে শত্রুর সহযোগিতা করছে তাদের মধ্যে ভাঙন ধরাতে হবে ও নিজেদের দলে ভিড়িয়ে নিতে হবে।

(গ) ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও হত্যাকান্ড এই সমস্ত ঘৃণ্য অসামাজিক কাজকে সমূলে উচ্ছেদ করতে হবে।

(ঘ) গ্রামের বা অঞ্চলের আঞ্চলিক রক্ষীবাহিনী গঠন করতে হবে।

৩। তৃতীয় পর্যায়ঃ সম্পূর্ণভাবে জয়লাভ না হওয়া পর্যন্ত শত্রুদের ধ্বংস সাধন করা।

(ক) রেলপথ, সড়ক এবং নদীপথে শত্রুর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা।

(খ) সকল বিমান যোগাযোগব্যাবস্থা বিনিষ্ট করা ও শত্রুদের ব্যাবহারের অনুপযোগী করা।

(গ) বিদ্যুৎ সরবরাহ নষ্ট করে দেওয়া।

(ঘ) শত্রুর সরকারি অফিস আদালত অকেজো করে দেওয়া।

(ঙ) শত্রুদ্বারা নির্বাচিত অনুষ্ঠানকে বিফল করা।

(চ) সকল জ্বালানি তেলের গুদাম বিনিষ্ট করা।

(ছ) আঞ্চলিক প্রশাসন ব্যাবস্থা প্রণয়ন। এ কাজে সকল সৎ ও কর্তব্যপরায়ণ মোড়ল-মাতব্বরদের যোগ্য স্থান দিতে হবে এবং প্রয়োজনবোধে নতুন লোক নিয়োগ করতে হবে।

(জ) পাট রপ্তানি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে। সরকারী গুদাম ও বড় বড় ব্যাবসায়ীদের (ইস্পাহানী ও আদমজী) গুদাম, যেখান থেকে পাট বিদেশে রপ্তানী করা হয় সেগুলো সম্পূর্ণভাবে ধব্বংস করতে হবে। দেশবাসীকে পাট না বুনে ধান বুনার জন্য উৎসাহিত করতে হবে।

গোরিলা যুদ্ধের রীতি কৌশল

 

শত্রুকে চমকে দেওয়া ও প্রতারণা করা- গেরিলার জন্য সবচে বড় অস্ত্র কৌশল- শত্রুকে হঠাৎ চমকে দেওয়া। শত্রু অধিকৃত এলাকায় সল্প সংখ্যক লোকবল ও অস্ত্রবল নিয়ে কাজ করতে হয়, সুতরাং শত্রুকে আচমকা আঘাত না হানলে শত্রু প্রস্তুতি নিয়ে উল্টো আঘাত হেনে অবাঞ্জিত পরিমাণ ক্ষতিসাধন করতে পারে। অতএব এ ধরনের চমক দেওয়ার জন্য গেরিলারা নিম্নলিখিত উপায়ে কাজ করবেঃ-

(ক) শত্রু যেখানে তোমাদের আঘাতের আশংকা আশা করে না সেখান থেকে আঘাত করো।

(খ) একই স্থানে বারবার আক্রমণ করবে না, এতে শত্রু সাবধান হয়ে আটঘাট বেঁধে আঘাত প্রতিহত করবে।

(গ) রাত্রের অন্ধকারে কাজ করবে।

(ঘ) তোমার কাজের ধরণ নিয়মিত পদ্ধতিতে হবে না, ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তন করবে।

(ঙ) কঠিন সাবধানতা অবলম্বন করবে।

২। সাবধানতা – বেঁচে থাকা গেরিলাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এমন কোন কাজ করবে না যাতে তোমার অস্তিত্বের আশংকা দেখা দেয়। সর্বক্ষণ জাগ্রত দৃষ্টি রাখবে যাতে শত্রু তোমাকে আচমকা আঘাত না করতে পারে।

৩। গতিশীলতা – নিয়মিত যুদ্ধে সৈনিকের যেসব যানবাহনের সুযোগ থাকে, গেরিলাদের তা থাকে না। এই জন্য গেরিলা তৎপরতা এমন সব স্থানে করতে হবে যেখানে নিয়মিত সৈনিকরা আধুনিক যানবাহন নিয়ে আসতে না পারে।

গেরিলাদের গতিশীলতার প্রয়োজনঃ-

(ক) ধাঁধাঁর জন্য।

(খ) চমকে দেওয়ার জন্য।

গাতিশীলতার জন্য গেরিলাঃ

(গ) শারীরিকভাবে হালকা হবে।

(ঘ) বাহ্যিক ও মানসিক দিক থেকে দৃঢ় হবে।

(ঙ) চিন্তাশীল ও ভালো পরিকল্পনাবিদ হবে।

৪। আক্রমণ- গেরিলাই সর্বদা আক্রমণে উদ্যোগী হবে। যদি কোথাও শত্রু আক্রমণ করে তবে যথাসম্ভব সম্মুখ যুদ্ধ এড়িয়ে যেতে হবে।

চেতনা- গেরিলার চেতনা ও উদ্যম সর্বোচ্চস্তরের হওয়া চাই। তাদের মনোভাব এমন হবে যে, তারা সবাই একই পরিবারের লোক। একই আদর্শ বা কারণের জন্য যুদ্ধরত। সাথীকে বিপদে ফেলে গেরিলা কখনো পালায় না।

নিয়মানুবর্তিতা- গেরিলার শৃঙ্খলা সর্বোচ্চস্তরের হবে। নিজের জীবণ বিপন্ন করেও গেরিলা তার দলপতির নির্দেশ মানে।

 

মুক্তিবাহিনী কি করবে কি করবে না

 

কি করবেঃ

(ক) সর্বদা শত্রুর খবরাখবর সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে।

(খ) শত্রুর চর সর্বত্র ছড়িয়ে আছে, তাদের সম্বন্ধে সজাগ থাকতে হবে।

(গ) পর্যবেক্ষণ পোস্ট, পেট্রোল, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি সতর্কতামূলক ব্যাবস্থা গ্রহণ করে প্রয়োজনমত ঘাঁটিকে রক্ষা করতে হবে।

(ঘ) শত্রু যেখানে দুর্বল সেখানে সকল শক্তি একত্রিত করে আঘাত হানতে হবে। শত্রু অধিক শক্তিশালী হলে সরে আসতে হবে।

(ঙ) গেরিলাকে সর্বদা চলমান থাকতে হবে- কোন অপারেশন শেষে তৎক্ষণাৎ সরে আসতে হবে।

(চ) গেরিলা তৎপরতা জবাব হিসাবে শত্রুর যে কোন ধ্বংসাত্মক আক্রমণ থেকে গ্রামকে বাঁচাতে হবে।

(ছ) নারীদের প্রতি গেরিলারা সম্মান প্রদর্শন করবে এবং শিশুদের স্নেহ করবে। বিপদে উভয়কে বাঁচাবে।

(জ) মুক্তিবাহিনীর সততা, ন্যায় বিচার এবং একানিষ্ঠতার উদাহরণ জনগণের সামনে প্রদান করতে হবে।

২। কি করবো নাঃ

(ক) বাছ বিচার ছাড়া বেসামরিক হত্যাকান্ডে লিপ্ত হবে না।

(খ) গৃহ বিবাদে লিপ্ত হবে না ও অতীতের গৃহ বিবাদের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য অস্ত্র ব্যাবহার করবে না।

(গ) মুক্তিবাহিনী লুটতরাজ, হত্যাকান্ড, ধর্ষণ বা অর্থ সংগ্রহের মত অন্যায় কার্যে কখনোই লিপ্ত হবে না- এর শাস্তি মৃত্যুদন্ড।

(ঘ) কোন অপারেশনের লুটের মাল ছোঁবে না। কোন সরকারী গুদাম ইত্যাদি দখল করা হলে স্থানীয় লোকদের মধ্যে গুদামজাত মাল যাতে বিতরন হয় তা দেখবে- নিজেরা জড়িয়ে পড়বে না। কোন শত্রুর চর নিহত হলে তার উত্তরাধিকারীরা তার সম্পত্তির মালিকানা পাবে।

(ঙ) অপারেশনের পরিকল্পনা শুধু যার জন্য প্রয়োজন সে ছাড়া অন্য কারো সংগে আলোচনা করবে না।

(চ) একই জায়গায় স্থিতিশীল হবে না- সর্বদা চলমান না থাকলে সেটা আত্নঘাতী হবে।

 

মুক্তিবাহিনীর দলপতি হিসেবে নিম্নলিখিত কর্তব্যগুলো অবশ্যই সম্পাদন করতে হবে-

 

১। পুলিশ বিভাগসহ পাকিস্তানের সকল প্রশাসন যন্ত্রকে বিকল করা।

২। পাক সেনা রাজাকার ও পুলিশ বাহিনীর অত্যাচার থেকে বেসামরিক জনসাধারণের নিরাপত্তার ব্যাবস্থা করা।

৩। দুর্ভিক্ষকালীন সময় বেসামরিক জনগণকে খাদ্য সরবরাহ করা।

৪। যথাসাধ্য আর্তের চিকিৎসার ব্যাবস্থা করা।

৫। শিশুদের বিদ্যালয়ে শিক্ষাগ্রহণসহ সকল স্তরের মানুষকে তার নিজের পেশাগত কার্যে ব্যাস্ত রাখতে হবে- যেমন কর্মকার, ছোট ছোট ব্যাবসায়ী ও চাষী প্রত্যেকেই তার নিজের কাজে ব্যাস্ত থাকবে।

৬। মুক্তিবাহিনী সদস্যদের মধ্যে একতা, শৃঙ্খলা ও আমাদের মহৎ উদ্দেশ্যের প্রতি অটুট বিশ্বাস যাতে অবিচল থাকে তার খেয়াল রাখতে হবে।

শপথনামা

আমি এতদ্বারা আল্লাহ্‌/ভগবানকে সাক্ষী রাখিয়া প্রতিজ্ঞা করিতেছি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য আমার জীবন উৎসর্গ করিতে আমি প্রস্তুত। আমি আরও অঙ্গীকার করিতেছি যেঃ-

(ক) সর্বদা বাংলাদেশের জনসাধারণের প্রতি আইনতঃ সরকারের প্রতি ও মুক্তিবাহিনীর প্রতি অনুগত  থাকিব।

(খ) নিজের জীবন বিপন্ন করিয়া ও সকলভাবে বাংলাদেশের জনসাধারণের কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করিব।

(গ) আমাদের প্রধান শত্রু পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ধব্বংস সাধনে লিপ্ত থাকিব।

(ঘ) কোন লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ বা অন্য কোন অসামাজিক কাজে লিপ্ত হইবো না। কোন লুটের মাল ছোঁব না।

(ঙ) নারী ও শিশুদের প্রতি কোন অশোভন কাজ করিব না।

(চ) মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ না করিলে কোন বাঙালীকে হত্যা করিতে কাহাকেও সাহায্য করিব না।

শিরোনাম তারিখ
৩৮। মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক কর্নেল এম এ জি ওসমানীর একটি চিঠি ১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১৫ নভেম্বর ১৯৭১

 

ট্রান্সলেটেড বাইঃ Saniyat Islam

<১১, ৩৮ , ৪৮৭>

IN LIEU OF NSCTORM

ওপিএস: তাৎক্ষণিক

হতে: ইস্টসিওই জি এস (এক্স)                            DTG – 151400 (গোপনীয়)

প্রতি: ডেল্টা সেক্টর                                           এ- ১০১৫

ইনফো: আলফা ব্রাভো চার্লি একো একো ওয়ান ফক্সট্রট জুলিয়েট সেক্টরস ওপিএস শাখা (হাতে প্রেরিত)

সি-ইন-সি হতে ক্যাপ্টেন গাফফার (কমান্ড ইস্ট বেঙ্গল ৪) এর জন্য – তাকে কমান্ড ‘কে’, ‘এস’, ‘জেড’ এবং সকল ইস্ট বেঙ্গল কমান্ড এবং বাংলাদেশ সেক্টর কমান্ড (সিও এস) থেকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে। “(১) সালদা নদী উত্তর অংশে খুব অল্প ক্ষতিসাধনে (নিহত ১, আহত ৭), আপনারা শত্রুর (নিহত ৩০ পাঞ্জাব সেনা সদস্য) পাল্টা আক্রমনের জবাবে আপনাদের বীরচিত যুদ্ধ জয়লাভে আমার হৃদয়গ্রাহী অভিনন্দন গ্রহণ করুন। আপনাদের এই প্রচেষ্টা বজায় রাখুন। এই বার্তা সকলের কাছে পৌছে দিন এবং বিশেষ কুরিয়ারের মাধ্যমে বীরত্ব পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পাঠিয়ে দিন। (২) আমি এটাও মনে করিয়ে দিতে চাই যে জয়ের খুব ক্ষীন সম্ভাবনার মধ্যেও এটিই আপনার প্রথম বিজয় নয় বরং এর আগেও প্রতিপক্ষের এয়ার ফোর্সকে প্রতিহত করে আপনি আপনার যুদ্ধ পরিচালনায় মেধা এবং নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন এবং এর স্বীকৃতিস্বরূপ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার আপনাকে বীরত্বের (তাৎক্ষণিক প্রযোজ্য) উচ্চ পর্যায়ের খেতাবে ভূষিত করছে। (৩) (শুধুমাত্র কে ফোর্সের জন্য প্রযোজ্য) অভিনন্দন। আইজিরো১৫এ ৩০(৩০) জুলাই ৭১ অনুযায়ী অতি সত্ত্বর কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ মানপত্র প্রিন্টেড ফর্মে পাঠাবেন যারা এই পুরস্কারে জন্য প্রযোজ্য / অন্য স্বীকৃতির জন্যও প্রযোজ্য। (৪) (এটি সকল বাংলাদেশ কমান্ড এবং বিএনএস ইস্টবেঙ্গলের জন্য প্রযোজ্য ) আপনাদের সকলের কাছ থেকে এরকম শত্রুজয়ের সুখবর আশা করছি।বীরত্ব পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পাঠিয়ে দিন (জেড ফোর্স কমান্ড ৩ এবং ৪ নম্বর সেক্টর এই পুরস্কারের আওতা বহির্ভূত থাকবে)। বিশেষ কুরিয়ারে মাধ্যমে এই কাজ তরান্নিত করুন।” (জ্যাকপট সেক্টরের জন্য প্রযোজ্য) সকল ঠিকানায় এই বার্তার প্রাপ্যতা সুনিশ্চিত করুন।

এম এ জি ওসমানী

কমান্ডার-ইন-চিফ

১০১৫ এ, ১৫ নভেম্বর ১৯৭১

শিরোনাম তারিখ
৩৯। মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়কের একটি চিঠি ১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ৩০ জুলাই, ৭১

 

ট্রান্সলেটেড বাইঃ Razibul Bari Palash

<১১, ৩৯, ৪৮৮৪৮৯>

গোপনীয়

 

বাই এয়ার কুরিয়ার সার্ভিস

নং- ১০১৫/এ

হেড কোয়ার্টার, বাংলাদেশ ফিল্ড ফোর্স

সি/ ও- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, মুজিবনগর

৩০ জুলাই, ৭১

প্রতি

সকল সেক্টর কমান্ডার / বি এন এস  ইস্ট বেঙ্গল

অবগত করন কপি – COS

বিষয় – বীরত্বের পুরস্কারের জন্য সুপারিশ

১। বীরত্বের পুরস্কারের জন্য নিম্নলিখিত আদেশগুলো প্রদান করা হলেও এখনো সবগুলো সুপারিশ পৌঁছেনি।

বীরত্বের প্রকার নির্বাচন    

খেতাব / পুরস্কার

 

সর্বোচ্চ ধাপ

মৃত্যুর মারাত্মক ঝুঁকি থাকার পরেও এবং শত্রুপক্ষের ভালো অবস্থান থাকা সত্ত্বেও যার সফলতায় যুদ্ধে আমাদের জয় হবে এমন ব্যাক্তি এই পুরস্কার পাবেন। এর ৩ জন সাক্ষী থাকতে হবে।

 

১০০০০ রুপি

সর্বোচ্চ বীরত্বের প্রশংসনীয় সার্টিফিকেট

 

 

উপরে উল্লেখিত অবস্থার চেয়ে সামান্য কম বীরত্বের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে। ২ জন সাক্ষী থাকতে হবে।

৫০০০ রুপি।
  এর থেকে সামান্য কম অবদানের ক্ষেত্রে। ১ জন সাক্ষী থাকতে হবে। ২০০০ রুপি।
 

 

এর চেয়ে কম বীরত্বের ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত মানের সার্টিফিকেট প্রদান করা না হলেও একটি পজিটিভ স্বীকৃতি পুরষ্কার দেয়া হবে।

 

 

২।  এপেন্ডিক্স এ সংযোজিত ফরমটি দায়িত্বরত কমান্ডার  (যেমন – কয় কমান্ডার, ব্যাটালিয়ন ও সেক্টর কমান্ডারের মাধ্যমে) ইনিশিয়েট করবেন এবং তিনি সঠিক ভাবে পূরণ করে পার্সোনেল , হেড  কোয়ার্টার বাংলাদেশ ফোর্স বরাবর পরবর্তি ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য  প্রেরণ করবেন। প্রত্যেক উল্লেখিত কমান্ডারগণ নিজ হাতে সুপারিশ ফরমে নাম ও সে কোন পর্যায়ের পুরস্কার পাবে সেই সুপারিশ স্পষ্ট করে উল্লেখ করবেন।

এই পূরণকৃত ফরমটি ‘গোপনীয়’ বিবেচিত হবে। জানার প্রয়োজন নেই – এমন কারো কাছে কোন ভাবেই এটি প্রকাশ করা যাবেনা। ৩০ জুন ৭১ পর্যন্ত  সকল সুপারিশ অতিসত্বর জমা দিতে হবে। এর পর থেকে প্রতি মাসেরটা তার পরের মাসের ১ তারিখ জমা দিতে হবে।

৩। তাৎক্ষণিক পুরস্কারের জন্য বিশেষ বিধান – কোন অসাধারণ কাজ অথবা বড় কোন অপারেশনে অসাধারণ বীরত্বের জন্য তাৎক্ষণিক পুরস্কার দেয়া যেতে পারে। এবং সেটি অতিসত্বর উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিতে ফরম পূরণ করে যথাযথ মাধ্যম বরাবর প্রেরণ করতে হবে।

৪। হেড কোয়ার্টার এগুলো প্রাপ্তির পর, একটি বোর্ড নিচের প্যারা ৫ এ বর্নিত পদ্ধতিতে প্রতিটি ক্ষেত্র মূল্যায়ন ও নিরীক্ষণ করবেন।  এবং সি-ইন-সি এর অনুমোদনের পর “সি-ইন-সি ‘থেকে চূড়ান্ত সুপারিশ করাব জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বরাবর প্রেরণ করবেন। তিনি সরকারের পক্ষে পুরস্কারটি চূড়ান্ত অনুমোদন করবেন। এরপর সম্পর্কিত সকলকে অবগত করা হবে।

৫।  বীরত্বের পুরস্কার জন্য প্রস্তাবনা যাচাই বোর্ড-

প্রেসিডেন্ট: চীফ অব স্টাফ (তাৎক্ষণিক পুরস্কার বা অন্যথায়, যখন COS ‘উপস্থিতি থাকতে পারবেন না সেক্ষেত্রে ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ চেয়ারম্যান হবেন )

সদস্য: একজন সেক্টর কমান্ডার (বাই রোটেশন) ,  ACOS (অপারেশনস) , ACOS (পার্সোনেল ও সরবরাহ) – এরাও বোর্ডের সেক্রেটারি থাকবেন।

৬।  উদ্ধৃতি প্রকাশনা –  বীরত্বের পুরস্কার জন্য মানপত্রটি সাবধানে  পরীক্ষা নিরীক্ষা করত ও নিরাপত্তা জনিত বিষয় মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় সংশোধন/ পরিমার্জন করে প্রকাশন / রেডিও সম্প্রচারের জন্য প্রস্তুত ও কার্যকর করতে হবে।

৭। এ সি কে

স্বা – এম এ জি ওসমানী

কমান্ডার ইন চিফ

গোপনীয়

শিরোনাম তারিখ
৪০। মুক্তিযোদ্ধাদের পদক প্রাপ্তির জন্য সুপারিশনামা ১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ৩০ জুলাই ১৯৭১

ট্রান্সলেটেড বাইঃ Razibul Bari Palash

<১১, ৪০, ৪৯০৪৯১>

গোপনীয়

পরিশিষ্ট এ

হেড কোয়ার্টার বাংলাদেশ ফোর্সেস

চিঠি নং – ১০১৫ এ

৩০ জুলাই ৭১

জমা দিতে হবে ট্রিপলেট আকারে

বীরত্বের পুরস্কার

বাংলাদেশ বাহিনীর জন্য সুপারিশ

(মুক্তিবাহিনী)

১। ব্যক্তিগত / রেজিমেন্টাল / সার্ভিস সংখ্যা: ৩০০- ৩৮২

২। র‍্যাংক ও তারিখ – সুবেদার, সুব/ মেজর: ২৬-৪-৭১ টেম্প (অফিসারদের জন্য)

Actg —–

৩। ট্রেড এবং / অথবা বর্গ: G.D / ক্লাস II

৪। পূর্ণ নাম (মরণোত্তর ফখরুদ্দীন আহমদ চৌধুরী পুরস্কার, নাম এবং আত্নীয় পরবর্তী হেলেনা আক্তার (স্ত্রী) এর পূর্ণ ঠিকানা ক্ষেত্রে ছাড়াও দেওয়া যাবে): শাখা-সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী,

৫। ব্রাঞ্চ – আর্মি, নেভি, এয়ার ফোর্স, গেরিলা, স্পেশাল ফোর্স, ই পি আর

৬। আর্মিদের ক্ষেত্রে – রেজিমেন্ট / কর্পস: সেনাবাহিনীর যদি ১৪ উইং (ইপিআর)

৭। সাব ইউনিট এবং ইউনিট যা ইপিআর এর সঙ্গে সঞ্চালিত:

চট্টগ্রাম সেক্টর

৮। বর্তমান সাব ইউনিট, এবং ইউনিট ক্রমিক নং ৭ সেক্টর ১ বাদে অন্য ইউনিট

৯। তথ্যসূত্র (তারিখ, সময়, স্থান এবং প্রেমপূর্ণ কর্মের পূর্ণ কিন্তু সুনির্দিষ্ট বিবরণ দিতে. ডিগ্রী নির্বচন দপ্তরে বাংলাদেশ ফোর্সেস চিঠি নং ১০১৫ ৩০ জুলাই ৭১ প্যারা ১).

১।  মে মাসে এই জেসিও ২ সপ্তাহ ধরে কমান্ড করে ও সুভাপুর সেতু রক্ষার সময় প্লাটুনকে ডিসঅর্গানাইজসড করে।

২। শত্রুর ভীষণ চাপের  বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি এই অত্যাবশ্যক সেতু ব্যবহারের বাধা দেন দীর্ঘ ২১ দিনের জন্য। ব্যাটালিয়ন এবং ব্রিগেড শক্তির শত্রু ট্যাংক এবং কামান দ্বারা আক্রমণে এক সময় পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং তাদের মানুষ এবং বস্তুগত প্রচুর ক্ষতি হয়।

৩। দীর্ঘ ২১ দিনের যুদ্ধে তিনি যে সাহস এবং বীরত্ব দেখিয়েছেন তা এই জেসিও এর বীরত্বের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

(পৃথক শীট ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে যদি স্থান অপর্যাপ্ত হয়)

১০. সংখ্যা, পদমর্যাদা ও সাক্ষীদের নামের সঙ্গে স্বাক্ষর;

ক) সাক্ষী ১ –          স্বাক্ষর / মেজর                 ০৭ ডিসেম্বর ৭১

(PA7210M রফিকুল ইসলাম)

খ. সাক্ষী ২             স্বাক্ষর ক্যাপ্টেন                  ০৭ ডিসেম্বর ৭১

(PSS-I0334 মাহফুজ উর রহমান)

গ. সাক্ষী ৩ –

গোপনীয়

১১ সুপারিশ এবং কমান্ডিং অফিসারের স্বাক্ষর

স্বাঃ / -ক্যাপ্টেন

কমান্ডার  সাব সেক্টর ‘বি’

(মাহফুজ ড রহমান)

তারিখ-০৭ ডিসেম্বর ৭১

১২. ব্যাটালিয়ন বা সমমানের কমান্ডারের সুপারিশ এবং স্বাক্ষর- তারিখ-

১৩ নং সেক্টরের বা সমমানের কমান্ডারের সুপারিশ এবং স্বাক্ষর (ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এর অনুপস্থিতিতে)

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বীরত্বসূচক পুরস্কারের জন্য প্রস্তাবিত।

তারিখ ০৭ ডিসেম্বর ৭১

স্বাঃ / –

মেজর

কমান্ডার, ১  নং সেক্টর

বাংলাদেশ বাহিনী

(এম রফিকুল ইসলাম)

১৪।  সুপারিশ এবং নিরীক্ষণ বোর্ডের

প্রেসিডেন্টের  স্বাক্ষর —–

তারিখ ———-

১৫. সি-ইন-সি এর এন্ডর্স্মেন্ট এবং স্বাক্ষর

তারিখ ———–

১৬।  অনুমোদন ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর স্বাক্ষর. তারিখ ——

১৭। তারিখ এবং পুরস্কার ————

১৮।  তারিখ এবং পেমেন্ট বা পুরস্কার —————

১৯ অরিজিনাল প্রাপ্তির পদ্ধতি প্রজ্ঞাপন সংখ্যা ( রেকর্ডের জন্য) —————————-

গোপনীয়

—————–

শিরোনাম উৎস তারিখ
৪১। মুক্তিযোদ্ধাদের পদকপ্রাপ্তির জন্য সুপারিশনামা ফরম ১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ৩০ জুলাই ১৯৭১

ট্রান্সলেটেড বাইঃ Razibul Bari Palash

<১১, ৪১, ৪৯২-৪৯৩>

গোপনীয়

পরিশিষ্ট এ

হেড কোয়ার্টার বাংলাদেশ ফোর্সেস

চিঠি নং – ১০১৫ এ

৩০ জুলাই ৭১

জমা দিতে হবে ট্রিপলেট আকারে

বীরত্বের পুরস্কার

বাংলাদেশ বাহিনীর জন্য সুপারিশ

১. ব্যক্তিগত / রেজিমেন্টাল / সার্ভিস সংখ্যা. পাক-4295

২ তারিখ দিয়ে মান. গর্ভস্থ: ফিট, লে টেম্প (offr জন্য)

Actg

৩ ট্রেড এবং / অথবা বর্গ ……………………..

৪. নাম হাই পূর্ণ (মরণোত্তর পুরস্কার, নাম এবং আত্নীয় পরবর্তী পূর্ণ ঠিকানার ক্ষেত্রে

অতিরিক্ত দায়িত্বে) ——— ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সুলতান মাহমুদ

৫। ব্রাঞ্চ – আর্মি, নেভি, এয়ার ফোর্স, গেরিলা, স্পেশাল ফোর্স, ই পি আর

৬। আর্মিদের ক্ষেত্রে – রেজিমেন্ট / কর্পস: সেনাবাহিনীর যদি ১৪ উইং (ইপিআর)

৭। সাব ইউনিট এবং ইউনিট যা ইপিআর এর সঙ্গে সঞ্চালিত:

৮. বর্তমান সাব ইউনিট, এবং ইউনিট  যদি ক্রমিক নং ৭ বাদে অন্য কিছু হয়।

৯। তথ্যসূত্র (তারিখ, সময়, স্থান এবং প্রেমপূর্ণ কর্মের পূর্ণ কিন্তু সুনির্দিষ্ট বিবরণ দিতে. ডিগ্রী নির্বচন দপ্তরে বাংলাদেশ ফোর্সেস চিঠি নং ১০১৫ ৩০ জুলাই ৭১ প্যারা ১).

চট্টগ্রাম সিটি এলাকায় মদনাঘাটে ০৬ অক্টোবর তিনি একটি সাহসী গ্রুপের নেতৃত্বে

গেরিলা আক্রমণে  বিদ্যুৎ সাব স্টেশন ধ্বংস করেন।  প্রচন্ডভাবে প্রহরারত পাওয়ার স্টেশনে  তিনি তার দলের সঙ্গে বরাবর সফলভাবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন যা বন্দর ও শিপিং ক্রিপ্লিং এর বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় এবং শত্রু অর্থনীতি ব্যাহত হয়।

এই কর্মকর্তা তার নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এটা সম্পন্ন করেন এবং তিনি অসাধারণ সাহস ও বীরত্ব দেখিয়েছেন।

(পৃথক শীট ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে যদি  স্থান অপর্যাপ্ত হয়)

১০. সংখ্যা, পদমর্যাদা ও সাক্ষীদের নামের সঙ্গে স্বাক্ষর;

ক) সাক্ষী ১ –                               তারিখ –

খ. সাক্ষী ২                                  তারিখ

গ. সাক্ষী ৩ –           স্বাক্ষর – ক্যাপ্টেন         ২৮ জানুয়ারি  ৭২

গোপনীয়

পৃষ্ঠা

১১ সুপারিশ এবং কমান্ডিং অফিসারের স্বাক্ষর

স্বাঃ / -ক্যাপ্টেন

তারিখ-২৮-১-৭২

১২. ব্যাটালিয়ন বা সমমানের কমান্ডারের সুপারিশ এবং স্বাক্ষর- তারিখ-

১৩ নং সেক্টরের বা সমমানের কমান্ডারের সুপারিশ এবং স্বাক্ষর (ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এর অনুপস্থিতিতে)

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বীরত্বসূচক পুরস্কারের জন্য প্রস্তাবিত।

তারিখঃ ২৮ জানুয়ারী ১৯৭২

স্বাঃ / –

মেজর

কমান্ডার

(এম আর ইসলাম)

১৪।  সুপারিশ এবং নিরীক্ষণ বোর্ডের প্রেসিডেন্টের  স্বাক্ষর —–

তারিখ ———-                                               প্রেসিডেন্ট মেম্বার – ১—–

২—–

৩——

১৫. সি-ইন-সি এর এন্ডর্স্মেন্ট এবং স্বাক্ষর

তারিখ ———–

১৬।  অনুমোদন ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর স্বাক্ষর.

তারিখ ——

১৭। তারিখ এবং পুরস্কার ————

১৮।  তারিখ এবং পেমেন্ট বা পুরস্কার —————

১৯ অরিজিনাল প্রাপ্তির পদ্ধতি প্রজ্ঞাপন সংখ্যা ( রেকর্ডের জন্য) —————————-

গোপনীয়

—————–

শিরনাম তারিখ
৪২। মুক্তি বাহিনীর সর্বাধিনায়কের একটি চিঠি ১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ২৬ নভেম্বর, ১৯৭১

ট্রান্সলেটেড বাইঃ Razibul Bari Palash

<১১, ৪২, ৪৯৪>

ব্যক্তিগত গোপনীয়

 

কর্নেল এম এ জি  ওসমানী. পি এস সি, এম এন এ

সেনাপ্রধান

বাংলাদেশ ফোর্সেস

সি/ ও গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

মুজিব নগর

ডি ও নং ২০১৫ এ

২৬  নভেম্বর ৭১

প্রিয় রফিক,

রেফারেন্স: – হেডকোয়ার্টার বাংলাদেশ ফোর্সেস নং ১০১৫/  ৩০ জুলাই ৭১ এবং জি আই জি  নং

১০১৫ তাং ১৫  নভেম্বর ৭১

স্মরণ করিয়ে দেবার পরেও আপনার সেক্টর থেকে বীরত্বের পুরস্কার প্রদানের জন্য সুপারিশ এখনো পাইনি। এটা অন্যায্য হবে যদি সেই সব নিয়মিত ও গনবাহিনীর বীর – যারা আপনার বা আপনার পূর্বসুরীদের  অধীনে লড়াই করেছে (যাদের মধ্যে অনেকে শহীদ হয়েছেন) তাদের সন্মানিত না করা হয়।  এবং আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি এতে কমান্ডারের অধীনে যারা কাজ করে তাদের মনে কমান্ডারের প্রতি তাদের দিকে যথাযথ মনোযোগের ব্যাপারে বিরূপ ধারনা জন্মাতে পারে।

তাই এমতাবস্থায় আপনি অবশ্যই সততার সাথে ২৬  মার্চের আগে সুপারিশ নির্ধারিত ফরমে জমা দিবেন।

শুভ কামনা

স্বাঃ / -এম এ  জি ওসমানী

* পরিশিষ্ট ‘এ’ তে দেয়া হল। হেড কোয়ার্টার বাংলাদেশে ফোর্স নং ১০১৫/এ, ৩০ জুলাই ৭১

প্রিন্টেড ফর্ম ও পাঠানো হল। নং ১০১৫/ এ ২২ সেপ্টেম্বর ৭১

মেজর মোঃ রফিকুল ইসলাম

১ নং সেক্টর কমান্ডার

বাংলাদেশ ফোর্স

ফিল্ড

গোপনীয়

শিরোনামঃ তারিখ
৪৩। মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়কের লেখা ১ নং সেক্টর কমান্ডারের একটি পত্র

১ নং সেক্টরের দলিলপত্র

 

৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১

ট্রান্সলেটেড বাইঃ Saima Tabassum Upoma

<১১, ৪৩ , ৪৯৫৪৯৮>

(গোপনীয়)

সেক্টর হেডকোয়ার্টার

বাংলাদেশ বাহিনী

নং ২বি/আই/এফ/এ

০৪ ডিসেম্বর,৭১

প্রাপকঃ বাংলাদেশ বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ

বিষয়ঃ গুরুত্বপুর্ন বিষয়সরকারী নির্দেশের অপেক্ষা

১। একদিকে যখন মুক্তিবাহিনী বাংলাদেশকে শ্ত্রুর হাত থেকে মুক্ত করছিল ঠিক অন্যদিকে মুক্ত এলাকাগুলোতে নানা রকম সমস্যারও সৃষ্টি হচ্ছিল, যেখানে সকারের তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজনীয়তা গুরত্বপুর্ন হয়ে দাঁড়ায়। যদিও এইসব ব্যপার আমার ১ নাম্বার সেক্টরের মিলিটারি কমান্ডারের দ্বায়িত্বের মাঝে পরে না কিন্তু একজন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমি আমার এই দ্বায়িত্ব থেকে সরে আসতে পারিনা। নিম্নে উল্লেখিত প্রতিটা তথ্য হয়ত সকারের কাছে পৌঁছেও গেছে, আমি শুধু আবার মনে করিয়ে দিচ্ছি বিষয়গুলো এবং কিছু চিন্তা-ভাবনা জানাচ্ছি, ভবিষ্যতে যদি কাজে এসে যায় এই ভেবে।

২। আইন শৃঙ্খলা

(ক) গত আট মাসে বাংলাদেশের কোথাও কোনো আইন শৃস্খলা ছিল না, মানুষ আশা করেছিল স্বাধিনতার পরে এখানে শান্তি থাকবে, সাধারণ মানুষ সম্পুর্ন সম্মান এবং নিরাপত্তার সাথে সেই স্বাধীনতা ভোগ করবে- যা থেকে তারা শত শত বছর বঞ্চিত হয়েছে।দুর্ভাগ্যবসত ব্যাপারগুলো অন্যরকম হচ্ছিল। মুক্ত এলাকাগুলোতে মানুষ নিজের হাতে আইন তুলে নিচ্ছে। নাম মাত্র বাহিনী এবং গণবাহিনীর নামে নানা রকম অভিযোগ উঠছে এবং তাদের পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে তুলনা করা হচ্ছে। বেদনাদায়ক হলেও অভিযোগগুলো সত্যি।

(খ) এর পেছনে কারন

(১) কোনো সিভিল বা সামরিক আইনের অনুপস্থিতিই এর প্রধান কারন। যেখানে একজন অপরাধীর যোগ্য শাস্তি হয়না সেখানে মানুষ নিজের উপর আস্থা অনুভব করে যা তাকে সকল খারাপ কাজ করতে উতসাহ দেয়।

(২) দ্বিতীয় কারন হচ্ছে, গণবাহিনী এবং নিয়মিত বাহিনীর প্রত্যেকে নিজেদের শক্তিশালী কর্তৃপক্ষ মনে করত এবং ভাবত তারা তাদের মতানুযায়ি যে কাউকে শাস্তি দেয়ার অধিকার রাখে। একটি সাম্প্রতিক ঘটনায় দেখা যায়, কিছু গেরিলা ৮জন রাজাকারকে হত্যা করেছিল যারা কিনা ২৫০ জন আত্মসমর্পন করা পাকিস্তানি বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং তারা মূলক এখন আর ক্ষতিকারক ছিলোনা। আমি এই দলটির খোঁজ করছি। এরকম আরও অনেক অভিযোগ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে।

(৩) তৃতীয় কারন হচ্ছে কিছু কর্মকরতারা নিজেরাই নিজেদেরকে বিমুক্ত এলাকার কমান্ডার বলে পরিচয় দিচ্ছে যা একদমই সত্যি না। বাংলাদেশের সকল অফিসার এবং কমান্ডার শুধুমাত্র সামরিক অপারেশনের জন্য নিয়োজিত, আর এডমিন্সট্রেশনের দ্বায়িত্ব জোনাল কাউন্সিলকে দেয়া হয়েছে। যাই হোক, এখানে জোনাল কাউন্সিলের প্রতিটি জোনের জন্য একজন সেনাবাহিনীকে নিয়োগ করা আছে যে কিনা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত এবং বাহিনীর সাথে বন্ধুত্বপুর্ন সম্পর্ক বজায় রাখে। বিভিন্ন অভিযোগ আসছে গণবাহিনী এবং নিয়মিত বাহিনীর সদস্যরা সাধারণ নাগরিকদের ভয় দেখিয়ে খাজনা, গবাদি পশু-পাখি, মুরগি ইত্যাদি নিজেদের খরচ চালানোর জন্য নিচ্ছে। এটা ঘটতে পারত না যদি না যেখানে সঠিক কমান্ডার থাকত এবং আমরা এটা বন্ধ করার একমাত্র উপায় ঠিক পথ খুঁজে বের করতে হবে। জনগণের সামনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যাবস্থাই হবে এর যোগ্য জবাব।

(গ) রাজাকারদের প্রায় ৯৫% পরিস্থিতির শিকার হন। একই অবস্থা বাকি রাজনৈতিক দলগুলোতে যোগ দেয়া মানুষগুলোর জন্য প্রজোয্য। রাজাকার, মুসলিম লীগের দোহাই দিয়ে এই নিরীহ মানুষগুলোকে গণবাহিনী এবং নিয়মিত বাহিনীর মেরে ফেলছে। এমনকি তাদেরকেও যারা পাক-বাহিনীকে সাহায্য করেছে অথচ তারা কেউ জানে না কতটা জোরপুর্বক এই কাজ তাদের করতে হয়েছে। আমি একটি কাহিনি জানি যেখানে ১৬ বছরের একজন বালিকাকে ধর্ষন করা হয় এবং তাকে তার ছোট বোন আর বাবকে জিম্মি রেখে ভারত পাঠানো হয় তথ্য সংগ্রহের জন্য। বাংলাদেশে বসবাসরত মানুষের জীবনের এটাই কঠিন বাস্তব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা কি একজন বাঙ্গালীকে সঠিক বিচার বিশ্লেষণ ছাড়াই খুন করতে পারি? আমরা কি পারি জাতির জন্য আনা স্বাধিনতাকে অস্বীকার করতে ?যদি তা নাই হয়, তবে আমাদের নিজেদের বিবেককে খুজে বের করা উচিৎ এবং যারা পরিস্থিতির স্বীকার তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া বন্ধ করা উচিৎ। এটা অবশ্যই সত্যি যে কিছু সত্যিকার অপরাধী আছে, কিন্তু তা সবাই নয়। যদি আমরা আইন-শৃঙ্খলা , শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই এবং আমরা আমাদের সম্মান প্রদর্শন করতে চান তাহলে আমাদের নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ।  অন্যথায় বাংলাদেশ শুধুমাত্র ভৈগোলিক ভাবেই স্বাধীন দেশ হিসেবে পরিচিত হবে কিন্তু তার মাঝে আদিম বর্বরতা থেকেই যাবে।

ঘ) পরামর্শ-

(১) পুলিশ বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা। তাদের যথেষ্ট শক্তিশালী হতে হবে। তাদের পোষাক , অস্ত্র এবং ক্ষমতা অবিলম্বে নির্ধারণ করতে হবে।

(২)সরকারকে ঘোষনা দিতে হবে যে, সেক্টার কমান্ডার এবং সিভিল এডভাইসার এর নির্দেশ ছাড়া অন্য যে কোনো বাঙ্গালীকে হত্যা করা যাবে না। তার মানে এই না যে একজন ব্যাক্তি বাংলাদেশের বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করবে। কিন্তু যদি যুদ্ধবন্দী হিসেবে কাউকে এমন পাওয়া যায় তবে তাকে তার সঠিক ও আইনি বিচারের জন্য সঠিক জায়গায় পাঠানো উচিৎ। যে এই আদেশ লঙ্ঘন করবে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। এই ঘোষণাটি শুধুমাত্র মুক্তিযুদ্ধের জন্য নয় বরং পরবর্তি সময়ের জন্যও প্রযোজ্য।

(৩) মুক্ত এলাকায় অবস্থানরত গণ বাহিনীর সকল সদস্যদের রেডিও এর মাধ্যমে জানাতে হবে  তারা যেন দ্রুত নিকটবর্তি পুলিশ স্টেশনে / ম্যাজিস্ট্রেট / আর্মি হেডকোয়ার্টারে রিপোর্ট করে। এইসকল স্থানে তাদের গোলাবারুদ জমা রাখার কথা জানানো হয়দেয় এবং নিজ পরিবারকে এবং পারিবারিক বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগ দেয়ার আহ্বান করতে হবে।

(৩) সকল উইপেন্স, গোলাবারুদ এবং সরঞ্জাম পূর্নুদ্ধার করতে হবে। এই দৃষ্টিভঙ্গি এছাড়াও অবিলম্বে দরকার

মনোযোগ। গণ বাহিনীর অনেক সদস্যের কার্যক্রম থেকে এটা আন্দাজ করা যায় যে তারা তাদের বন্দুক আড়াল করার চেষ্টা করবে এবং অপরাধীদের সাথে রাজনৈতিক সম্পর্কে জড়ানোর চেষ্টা করবে। এই অশান্তি সৃষ্টি করতে বাধ্য করবে  এবং একটি গৃহযুদ্ধের দিকে পরিস্থিতিকে এগিয়ে নেয়া হবে। অস্ত্র আদায় দৃঢ়তার সঙ্গে পরিকল্পনা করতে হবে। একটি বিশেষ অপারেশনের মাধ্যমে সকল অস্ত্র / গোলাবারুদ পুনরুদ্ধার করার ব্যবস্থা নিতে হবে বলে । এই সম্মানার্থে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গেরিলা অভিষিক্ত সকল কর্তৃপক্ষ কে গেরিলাদের খবর, অস্ত্র/ গোলাবারুদ ইত্যাদির খবর রাখার কথা জানাতে হবে। থানা ভিত্তিক বিস্তারিত জ্ঞ্যান রাখতে হবে যাতে পরে দ্রুত পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব দেয়া যায়। এই তথ্যের বিস্তারিত বিবরণ এর বেশ কিছু কপি নিজেরদের কাছে রাখতে হবে।

(৪) রেডিও বাংলাদেশের উচিৎ বাংলাদেশের মানুষের কাছে নিম্নলিখিত নির্দেশ জারী করা ঃ

ক. মুক্ত এলাকার সব সেতু, ইনস্টলেশন ও যোগাযোগ লাইনগুলো কড়া পাহারা দেওয়া।

খ . সেনাবাহিনী থেকে ক্লিয়ারেন্স পাওয়া ছাড়া কোনও বাংকারস ইত্যাদি যেন ঢুকতে না পারে

গ . নাগরিক ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের নির্দেশ দিতে হবে

ঘ . কোন অননুমোদিত ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীর কাউকে ট্যাক্স ইত্যাদি না দেয়া। সব অভিযোগ  বেসামরিক প্রশাসনের নিকট করতে হবে এবং সকল ট্যাক্স তাদের দিতে হবে।

ই . নিজ নিজ এলাকায় গ্রামের অবস্থা এবং রাস্তা ও যোগাযোগ মাধ্যমের উন্নয়নে ভলান্টারী কাজ করতে হবে।

চ . কাছের পুলিশ স্টেশনে সব অপরাধী ও সক্রিয় সহযোগীদের তুলে দিতে হবে।

ছ . কোন অদ্ভুত বস্তু স্পর্শ  করা যাবে না।. এমন বস্তু দেখলে তার কাছে একটি লাল পতাকা দিয়ে রাখা উচিৎ এবং দেরী না করে এই ধরনের বস্তু সম্পর্কে পুলিশ বা সেনাবাহিনী অবহিত করতে হবে।

  1. বিমুক্ত এলাকায় ধ্বংস ছাড়া আর কেউ কিছুই দেখা যায়না। নিম্নলিখিত পরিকল্পনা অপরিহার্য ঃ

(ক) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

              (১) আবাসন .

              (২)আসবাবপত্র .

(৩) সকল উপকরণ .

(৪) স্টেশনারী

(৫) বই : বাংলাদেশের  ইতিহাসের উপর বিশেষভাবে পুনর্লিখিত করা বই। সব শ্রেণীর জন্য এটি  নির্ধারিত হবে। নিম্নলিখিত ব্যাপারে  বিশেষ জোর দেওয়া হবেঃ

(ক) একটি জাতি হিসেবে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠত্ব

(খ) পশ্চিম পাকিস্তানীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং পৃথিবীর বুকে আমাদের নিজের নামে আলাদা ভুখণ্ডের পরিচয়

(গ) সকল অনাত্মীয় দেশের প্রতি আমাদের মনোভাব

(খ) স্বাস্থ্য

(১) হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা  .

              (২) ওষুধ ও অপারেশনের সকল সরঞ্জাম

              (৩) মহামারী প্রতিরোধ .

(৪) নলকুপ ইত্যাদি

(গ)  ত্রাণ ও পুনর্বাসন

(১) বর্তমান ফসল সম্পর্কে জানা এবং পরিকল্পনা পর্যালোচনার মাধ্যমে দুর্ভিক্ষ এড়ানো।

(২) দৈনিক সরবরাহ নিত্যপণ্যের আয়োজন .

(৩) গৃহ নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ .

(৪) যুদ্ধের সব ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার পরিকল্পনা .

(৫) এতিমদের পুনর্বাসন .

(৬) প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন .

(৭)তাদের দেখে রাখতে হবে  যারা পরিবারের আয়রত সদস্যদের হারিয়েছেন । এছাড়াও যারা মানসিকভাবে নৃশংসতার কারণে মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়েছেন।

(৮)  ভারতে বিভিন্ন লকআপগুলির মধ্যে এখন যেসব বাঙ্গালী রয়েছেন তাদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে হবে। .

৬. যোগাযোগ ইত্যাদি

ক. রাস্তা এবং রেললাইন তৈরি এবং মেরামত

খ. সরকারি কাজের জন্য বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে প্রয়োজনে যে কোনো সময় ব্যবহার করা যায়। এটার জন্য বিস্তারিত পরিকল্পানার দরকার

       গ. বিমানঘাঁটি এবং পোর্ট

       ঘ টেলিকমিউনিকেশনঃ এটার জন্য সময় লাগতে পারে। কিন্তু আমাদের থানা পর্যায় থেকেই পরিকল্পনা করতে হবে।

       ই. বিদ্যুৎ : অপচয়ে এটা ধ্বংস হয়ে যাবে। সব গুরুত্বপূর্ণ শহর ও হাসপাতালে  জেনারেটার সরবরাহ করার জন্য পরিকল্পনা ও ব্যবস্থা নেয়া অপরিহার্য।

৭. এই বিষয়গুলো গুরুত্বপুর্ন। আমি আশা করি এই ব্যাপারগুলো মনোযোগের সাথে দেখা হবে কেনোনা এগুলি আইন শৃঙ্খলার সাথে সম্পৃক্ত।

                              স্বাঃ / -দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত

মেজর, কমান্ডার সেক্টর ১

( এম রফিকুল ইসলাম)

(গোপনীয়)

শিরোনাম তারিখ
৪৪। ১ নং সেক্টর কমান্ডারের একটি গোপন চিঠি ১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ২৮ আগস্ট, ১৯৭১

ট্রান্সলেটেড বাইঃ Razibul Bari Palash

<১১, ৪৪, ৪৯৯>

হইতে

ইমাম হেড কোয়ার্টার ১  নং  সেক্টর

                           ডি টি জি  ২৯১৪০০              গোপনীয় এ / ০৭৬২

প্রতি

সাব সেক্টর ১,২,৩

সাব সেক্টর ৫ (হাতে হাতে দিতে হইবে)

আলফা – শত্রুদের কাছ থেকে আটক করা অস্ত্রর ধরণ অনুযায়ী পুরষ্কার এর পরিমাণ।

১। রাইফেল – ৩০ রুপি

২। চাইনিজ রাইফেল ৫০ রুপি

৩। এল এম জি ৩০৩ – ১০০ রুপি

৪। এল এম জি ৭.৬২ চাইনিজ – ১৫০ রুপি

৫। এম জি – ২০০ রুপি

এছাড়া অন্যান্য অস্ত্রের জন্যও উপযুক্ত পুরস্কার দেয়া হবে।

ব্রাভো – বন্দীদের ক্ষেত্রে

১। শত্রু সৈন্য – ২০০ রূপী

২। শত্রুদের জে সি  ও – ৩০০ রুপি

৩। শত্রু অফিসার – ১০০০ রুপি

চার্লি – গুরুত্তপূর্ন ডকুমেন্ট ও দরকারি জিনিসপত্রের ক্ষেত্রে গুরুত্বের উপর নির্ভর করে উপযুক্ত পুরস্কার দেয়া হবে।

ডেলটা – এটা সকল  র‍্যাংক  এর   অবগতির জন্য প্রকাশ করা হল ।

নং – ৩০ এস /১/এ ২৮ আগস্ট ৭১

       স্বা-

                                                মেজর

                                         মো রফিকুল ইসলাম

শিরোনাম তারিখ
৪৫। মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়কের অফিস থেকে পাঠানো একটি চিঠি ১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ২২ সেপ্টেম্বর ৭১

ট্রান্সলেটেড বাইঃ Razibul Bari Palash

<১১, ৪৫, ৫০০>

হাতে হাতে দিতে হবে

নং – ১০১৫/ এ

হেড কোয়ার্টার বাংলাদেশ ফোর্স

সি/ ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, মুজিবনগর

২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

প্রতি

নং – ১,২,৩ ও ৪ নং সেক্টর

ইনফো – COS

বিষয় – ফরমের সাপ্লাই সম্পর্কে

আমাদের চিঠি নং – ১০১৫/ এ রেফারের তারিখ – ৩০ জুলাই ৭১

১। প্রত্যেকটির ২০০ কপি ছাপানো ফরম {বাংলাদেশ ফোর্সের – (মুক্তিবাহিনী ) বীরত্বের  পুরস্কাররের  জন্য  মনোনীতদের সুপারিশ } এর সাথে দেয়া হল।

২। ফরমের অপচয় রোধ করে ব্যবহার করতে অনুরোধক্রমে আদেশ দেয়া গেল।

সংযুক্তি (২০০ ফর্ম )                                         স্বা

                                                       সহকারী চিফ অফ স্টাফ (পারসোনেল)

শিরোনাম তারিখ
৪৬। গেরিলা যুদ্ধ সংক্রান্ত একটি ইশতেহার ১ নং সেক্টরের দলিল পত্র ১৯৭১

কম্পাইল্ড বাইঃ Irshat Ara

<১১, ৪৬, ৫০১৫০৪>

 

।। গেরিলা যুদ্ধ ।।

আত্মসংযমজ্ঞানতিতিক্ষাকষ্টসহিষ্ণুতা

 

এই যুদ্ধের রীতি বহু প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন যুদ্ধের সময় অনুসৃত হলেও ১৮০৭ সালের আগে গেরিলা যুদ্ধরীতি একটি সহজ যুদ্ধরীতি হিসেবে সামরিক অভিযানে স্বীকৃত হয়নি। ১৮০৭ সালে নেপোলিয়ানের ফরাসী সৈন্যরা স্পেনের সাইবেরীয় প্রনালী আক্রমন করলে স্পেনের স্বল্পসংখ্যক অনিয়মিত সৈন্যদল এই কায়দায় যুদ্ধ করে। স্পেনের ভাষায় ‘গুয়েরিলা’ শব্দের অর্থ হলো ছোট যুদ্ধ বা খন্ড যুদ্ধ।

গেরিলা যুদ্ধের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল যুদ্ধ ব্যাপারটাকে খুব সহজ ও সরলভাবে নেওয়া। অন্যান্য যুদ্ধরীতিতে যে সামরিক সমারোহ, যে সাজসজ্জা ও বিপুল তোড়জোড় তা এতে একেবারেই নেই। এতে দেখা যাবে যে, আমাদের অসামরিক অধিবাসীরাও যখন দরকার হবে, হঠাৎ যুদ্ধে যোগদান করতে পারবে এবং অল্পদিনের মধ্যেই কাজ চালাবার মত যুদ্ধবিদ্যা শিখে নিতে পারবে। দৈনন্দিন জীবনের ভিতরে স্বাভাবিকভাবে যুদ্ধ পরিচালনাই হল আর এক বিশিষ্টতা। তার মানে, দিনের বেলায় কলকারখানায় শ্রমিক হিসাবে বা মাঠে চাষী হিসেবে কাজ করে রাত্রিতে শ্ত্রু সৈন্যদের আক্রমণ করে তাদের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পালিয়ে যাওয়া। এতে হয় শ্ত্রুদের ভিতর ব্যাপক সন্ত্রাস কিন্তু এই প্রনালী শুধু চলতে পারে যুদ্ধের প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরে।

বলাবাহুল্য সামরিক বিজ্ঞানে আছে চার প্রকারের যুদ্ধ- সামগ্রিক যুদ্ধ, সাধারন যুদ্ধ, সীমাবদ্ধ যুদ্ধ ও বৈপ্লবিক যুদ্ধ।

সামগ্রিক যুদ্ধ হলো যাতে এক বা একাধিক দেশের সরকার প্রতিপক্ষ সরকারের সম্পূর্ন ও নিঃশেষিত ধ্বংসের জন্য তার  সর্বশক্তি প্রয়োগ করে। গত দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ হলো এই ধরনের যুদ্ধের নজীর।

সাধারন যুদ্ধেও একটি সরকার শত্রু পক্ষের পরিপূর্ন ধ্বংস চায় কিন্তু এই ধ্বংসের জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ হয় না। ১৯৪৮ সালে কোরিয়া যুদ্ধ হলো সীমাবদ্ধ যুদ্ধের একটি দৃষ্টান্ত। এই যুদ্ধে যুদ্ধরত দেশগুলি এক ভৌগলিক সীমার মধ্যে একটা নির্দিষ্ট লক্ষের জন্য যুদ্ধ করে। বৈপ্লবিক যুদ্ধ একটি দেশের দুইটি সরকারের মধ্যে যুদ্ধ। এই যুদ্ধে কোন একটি অস্থায়ী বৈপ্লবিক সরকার অন্য একটি অবাঞ্ছিত প্রতিষ্ঠিত সরকারকে  ধ্বংস করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর ইন্দোচীন, মালয়, আলজিরিয়ায় এই ধরনের যুদ্ধ হয়েছে। এই চার রকমের ভিতর যে কোন একটিতে গেরিলা যুদ্ধের নীতি আংশিকভাবে অনুকরন হতে পারে কিন্তু বেশীর ভাগই বৈপ্লবিক যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

সাধারণতঃ তিনটি সম্ভাবনা দেখা যায় গেরিলা বাহিনীর উদ্ভবের পিছনে-

(১) যেখানে নিয়মিত শক্তিশালী সৈন্যদল পরাজিত এবং যেখানে নিয়মিত শক্তিশালী সৈন্যদল গড়ে তোলার আর কোন উপায় থাকে না।

(২) অনেক সময় নিয়মিত শক্তিশালী সৈন্যদল গড়ে তোলার আগেই প্রথম থেকে গেরিলা বাহিনী গড়ে তোলা হয়।

(৩)যেখানে নিয়মিত শক্তিশালী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত সৈন্যদল কন কারনে যুদ্ধ করতে পারে না, সেখানেও গেরিলা বাহিনী গড়ে তোলা হয়।

কাঠামো

 

গেরিলা যুদ্ধের উদ্ভব যে কারনেই হোক না কেন এই যুদ্ধরীতির সাফল্যের জন্য কয়েকটি বিশেষ অবস্থায় প্রয়োজন হয়। যেমন পরিবেশ বা ভূমি প্রকৃতি, সেনাবাহিনীর গতিবিধির মধ্যে ঐক্য, গণ সমর্থন এবং নিরাপত্তা, কর্ম বিভাগ ও নৈকট্য।

পরিবেশ বলতে শুধু ভৌগলিক অবস্থাই বোঝায় না। এই পরিবেশ বলতে জলবায়ু, উদ্ভিজ্জ, রাস্তাঘাট, স্থানীয় অর্থনৈতিক অবস্থা, গ্রাম ও শহরের অবস্থান এবং দেশের অধিবাসীদের  দৃষ্টিভঙ্গী ও বোঝায়।

ভাষা ও সংস্কৃতি এ যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ন দিক। এই দুইটি বিষয়ই পরিবেশের অন্তর্গত। গেরিলা বাহিনী যে অঞ্চলে কাজ করবে সেখানকার অধিবাসীরা যদি তাদের ভাষা না বোঝে তাহলে যুদ্ধের কাজ ভালভাবে চলতে পারে না। কারন স্থানীয় জনগনের সহায়তা ছাড়া এ যুদ্ধ কোনমতেই চলতে পারে না। ভাষাগত ব্যাবধান এ ব্যাপারে অন্তরায় হয়ে উঠতে পারে।

স্থানীয় জনগনের সংস্কৃতি ও ভাবধারা গেরিলা যুদ্ধের অনুকূল হওয়া চাই স্থানীয় জনসাধারণ যদি কুসংস্কারচ্ছন্ন এবং তাদের মনোভাব যদি অতীতাশ্রয়ী বা ঐতিহ্যাশ্রয়ী হয়, তাহলে তারা গেরিলা যুদ্ধের বৈপ্লবিক রীতিটাকে মেনে নাও নিতে পারে। তার মানে, এ যুদ্ধ কেন হচ্ছে এবং তার রাজনৈতিক লক্ষ্য কি সে বিষয়ে জনগনকে ভালভাবে বোঝাতে হবে। মনে রাখতে হবে, এও হতে পারে জনগণ অকুন্ঠভাবে যুদ্ধ হচ্ছে বলে মেনে নিতে পারে, কিন্তু যদি তার সাফল্য সম্বদ্ধে সচেষ্ট না হয়, তাহলে সেখানে এ যুদ্ধ কখনই সফল হতে পারে না। এই যুদ্ধের জন্য প্রয়জনীয় পরিবেশের আর একটি গুরুত্বপূর্ন দিক হল ভৌগলিক অবস্থা। পাহাড়, জঙ্গল, নদ- নদী যা নিয়মিত সৈন্যদলের বিশেষভাবে বাধার সৃষ্টি করে, গেরিলা যুদ্ধের সেগুলি বিশেষভাবে বাধার অনুকুল অবস্থার সৃষ্টি করে।

সাবধান

কোন ফাঁকা জায়গায় একটি মাত্র গ্রাম বা জলপথ বা ফাঁকা মাঠের মাঝে একটি মাত্র বন বা জঙ্গল কোন ঘাটির উপযুক্ত নয়। কারন সেই বিচ্ছিন্ন গ্রাম বা বনটি যে কোন সময় শ্ত্রু সৈন্যরা ঘেরাও করে ফেলতে পারে। তখন বাইরে পালাবার বা বাইরে থেকে কোন লোক আসার কোন উপায় থাকে না।

এরপর আসে গতিবিধির ঐক্যের কথা। একটি দেশের মধ্যে বিভিন্ন অঞ্চলে গেরিলা বাহিনীরা কাজ করতে পারে। বিভিন্ন দিক থেকে শত্রুরা আক্রমণ করে বিপর্যস্ত করে ফেলতে পারে। কিন্তু বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থা চাই। বিভিন্ন গেরিলা বাহিনীর গতিবিধি ও কার্যকলাপের মধ্যে ঐক্য সংহতি থাকা চাই। যেহেতু সাধারনত অনুন্নতঃ গেরিলাদের কাছে বেতার বা বিমান যোগাযোগ থাকে না। তাদের বিভিন্ন দলের কার্যকলাপও সবসময়  জানা সাধ্য হয় না, শত্রুরা এর সুযোগ নেয়। কোন ক্ষেত্রে দেখা গেছে দুই নিজস্ব দলের ভিতরেও  জন সংঘর্ষ দেখা গেছে।

গণসমর্থন

 

জনগণের শক্তি যে কোন সৈন্যদলকে পরাস্ত করতে পারে। পরিবেশে ও ঐক্যের পরে আসে গণসমর্থন ও গণ নিরাপত্তার কথা। ব্যাপক গণসমর্থন ছাড়া গেরিলা যুদ্ধ মোটেই চলতে পারে না, সফল হওয়া দূরের কথা। খাদ্যবস্ত্র, আশ্রয়, অস্ত্রশস্ত্র, রসদ মটরের তেল প্রভৃতি জিনিসগুলি স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা ছাড়া গেরিলারা পেতে পারে না। অবশ্য এই সব পাওয়ার জায়গা আরও আছে। বাইরের সমতাবলম্বি দল বা রাষ্ট্রের কাছে এবং শত্রুদের কাছ থেকে ।

গণসমর্থন নিরাপত্তা বাড়িয়ে তোলে। জনগণ যত বেশী পরিমান সমর্থন করবে তত বেশী তারা নিশ্চিন্তে ঘোরাফেরা করতে পারবে শত্রুদের চোখে ধুলা দিয়ে। জনগণ তখন তাদের আশ্রয় দেবে ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে।

আবার যেখানে জনগণের কাছ থেকে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন পাওয়া যায় না সেখানে গেরিলাদের কঠোর হতে হবে, সেখানে ব্যাপক সন্ত্রাসবাদের সৃষ্টি করতে হবে সারা দেশজুড়ে। এই সন্ত্রাসবাদের ফলে বিভিন্ন দিক থেকে অনেক অনেক কাজ পাওয়া যায়। প্রথমতঃ জনগণ না চাইলেও ভয়ে সমর্থন করে গেরিলাদের। দ্বিতীয়তঃ শত্রুরা সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে, তাদের মনোবল ভেঙ্গে যায়। তৃতীয়তঃ দলীয় সংগঠনের ভিত্তিও পাকা হয়। কারন দলের লোকেরাও তত বেশি করে অনুগত হয় তাদের নেতার উপরে। ভয়ে কেউ দল ছেড়ে যায় না, কারন তারা জানে এর পরিণাম হবে মৃত্যু। গেরিলারা কাউকে ক্ষমা করে না যখন কেউ আন্দোলনের ক্ষতি করে।

তবে নেতার দেখতে হবে যত কম সন্ত্রাস সৃষ্টি করে স্থানীয় সমর্থন পাওয়া যায়, তত ভাল, তার জন্য নেতাকে তাদের কথা ভালভাবে জনগণকে বুঝিয়ে দিতে হবে, যে তারা জনগণের মুক্তির জন্যই যুদ্ধে নেমেছেন এবং তাতে তারা প্রান উৎসর্গ করতে প্রস্তত। এটা যখন জনগণ বুঝতে পাবে, তখনই তারা গেরিলাদের নিজেদের মত দেখবে ও তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে।

গণসমর্থন যদি ব্যাপক ও প্রবল থাকে গেরিলাদের পিছনে তাহলে তাদের কাজ অনেক সহজ হয়,গণসমর্থনের ফলে তাদের রাজনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক দিক দুটো জোরালো হয়ে উঠে। এক মহৎ রাজনৈতিক আদর্শ ও উদ্দেশ্যে বলীয়ান হয়ে তারা যুদ্ধ করে। তাদের আত্বত্যাগ সহজ হয়ে উঠে, প্রচুর পরিমাণে তারা আত্বশক্তি খুঁজে পায়। তারা ভাবে, আমরা একা নই। আমাদের পিছনে আছে আরও অগণিত মানুষ।

যুদ্ধে অস্ত্র চাই ঠিক, কিন্তু অস্ত্রই সব কথা ন্য, শুধু অস্ত্র দিয়েই যুদ্ধ জেতা যায় না। যুদ্ধ করে মানুষ। যুদ্ধের জন্য চাই ব্যাপক গণসমর্থন। জনগণের হানুভূতিশীল  মন। সুতরাং শত্রুদের জমকালো অস্ত্র-শস্ত্র ও সৈন্যসংখ্যা দেখে ঘাবড়ে গেলে চলবে না। কোন যুদ্ধের ক্ষেত্রে কার কত সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি আছে তা শুধু দেখলে চলবে না দেখতে হবে কোন পক্ষে কত লোকবল আছে আর দেখতে হবে সেই সব লোকের মনোবল কতখানি।

গেরিলা নীতি হলো বিকল্প নীতি। বন্দুকের পরিবর্তে প্রচার চাই।বিমানের পরিবর্তে চাই বিধ্বংসী ক্রিয়া, অস্ত্র শিল্পের পরিবর্তে চাই রাজনৈতিক শিক্ষা এবং মেশিনের পরিবর্তে মানুষ।

গেরিলা শুধু যুদ্ধের খাতিরেই যুদ্ধ করবে না, সঙ্গে তারা জনগণকে অনুপ্রানিত করবে, সংগঠিত করবে সশস্ত্র করে তুলবে এবং বৈপ্লবিক রাজনৈতিক শক্তির প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করবে।

মনে রাখবে, গরীবদের সবসময় সাহায্য ক্রবে।যে কোন ভাবে দরকার হলে, তাদের খাওয়া থাকার সুবন্দোবস্ত করবে। তাদের দুঃখ দূর করার চেষ্টা করবে, যুদ্ধের প্রথম স্তরে যত কম সম্ভব ধনীদের বিরক্ত করবে।

নৈকট্য

 

গেরিলা যুদ্ধের নৈকট্য বলতে বোঝায় ভৌগলিক ও মনস্তাত্ত্বিক নৈকট্য এটা হল গেরিলা বাহিনী ও শত্রুসৈন্যের মধে নৈকট্য। এই নৈকট্য গেরিলা যুদ্ধের গতি প্রকৃতি ও পদ্ধতিকে নিয়ন্ত্রিত করে।

কর্মবিভাগ

 

এই বাহিনীর কর্মবিভাগ ও সংগঠন একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়, অনেক কষ্ট করে গেরিলা বাহিনীকে গড়ে তুলতে হয় এবং এর গঠন পদ্ধতি বড়ই জটিল।সাধারনতঃ দুই ধরনের লোক এই বাহিনীতে থাকেঃ একদল সব সময়ের জন্য যুদ্ধ্ব করে আর একদল কিছু সময়ের জন্য লড়াই করে।

পুরো গেরিলা- যারা সমাজজীবন একেবারে ত্যাগ করে বনে জঙ্গলে পাহাড়ে গেরিলা বাহিনীর সঙ্গে ঘুরে ঘুরে হাতে কলমে যুদ্ধ শেখে। তাদের নীতি ও আদর্শে দীক্ষিত হতে হয়।

আধা গেরিলা- আংশিক গেরিলারা ট্রেনিং করার পরে সাধারন জীবন যাপন করে এবং দরকার হলেই তারা যুদ্ধ্ব নেমে পড়ে। এরা গেরিলা বাহিনীকে সক্রিয়ভাবে সাহায্য করে।

এই আধা বা আংশিক গেরিলাদের অবদান কিছুতেই কম নয়। এরা দুই কাজ করতে পারে অতি সহজে।ক) গুপ্তচরের কাজ খ) ধংসাত্বক ক্রিয়াকলাপ। যেমনঃ শত্রুসৈন্যদের গতিপথে দুর্লভ বাধা সৃষ্টি করা,  রাস্তায় খাল করে দেয়া, বেরিকেড বাধাঁনো, সেতু ভাঙ্গা ইত্যাদি।

তবে কোন গেরিলা যুদ্ধের সময় পুরো ও আধা যোদ্ধার সংখ্যা কত হবে তা ঠিক করবেন যুদ্ধের নেতারা। ঠিক করবেন অবস্থা বুঝে। যুদ্ধের মূলনীতি অনুসারে যেন এটা হবে।

কর্মপ্রনালী

 

  • শত্রুর শক্তি খর্ব করার জন্য যে কোন সুযোগের সৎ ব্যবহার করাই হল গেরিলাদের রীতি।
  • নিয়মিত যুদ্ধের কলাকৌশলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলবে।
  • মুক্ত অঞ্চল বা ঘাঁটি তৈয়ার করবে।
  • ভ্রাম্যমান যুদ্ধরীতি গড়ে তুলবে।
  • সেনা নায়কদের সঙ্গে সঠিক সম্পর্ক রেখে চলবে।
  • গেরিলা যুদ্ধে রক্ষনশীলতাকে সব সময় বাধা দিতে হবে।
  • যুদ্ধের মূলনীতি হবে নিজেকে বাচিঁয়ে চলা আর শত্রুকে ধ্বংস করা
  • গেরিলা যুদ্ধের আর একটি মূলনীতি হল আক্রমনাত্বক নীতি। গেরিলাদের আক্রমনাত্বক ভূমিকা হবে নিয়মিত সৈন্যদলের থেকে আরও তীব্র।
  • কোন আক্রমণের সময় প্রথমে ড্রাইভার তারপরে যাত্রীদের, এটা সব রকমের যানবাহনের সময়ও একই পন্থা।
  • শত্রুরা যখন তোমাদের অতর্কিতে আক্রমন করে তখন তাদের দুর্বল অংশটি খুঁজে বার করবে। তারপর সেই দিকে পালাবে শত্রুদের চোখে ধুলা দিয়ে।স্মোক বম্ব ব্যবহার করবে।
  • যত দিন দেখবে শত্রুদের সৈন্য সংখ্যা ও অস্ত্র শস্ত্রর পরিমাণ বেশী শুধু ততই গেরিলা রণকৌশল চালিয়ে যাবে।
  • একমাত্র চুরান্ত জয় যখন সুনিশ্চিত, তখনই নিয়মিত সৈন্যদল গঠন করে প্রতি-আক্রমনের ব্যবস্থা করবে।
  • যখন শত্রুরা তোমাদের ঘিরে ফেলবে, ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়বে। যখন দেখবে যুদ্ধ ক্ষেত্রের ভূ-প্রকৃতি কাজের অনুকূল নয়-ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়বে।যখন সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না তখনও কেটে পড়বে। যখন ব্যাপক অঞ্চল জুড়ে কাজ করতে হবে তখন বিভিন্ন দলে ছড়িয়ে পড়বার জন্য ছত্রভঙ্গ হবে।আক্রমনের বেলায়ও এ প্রনালী।
  • গেরিলারা কখনও ভয়ে দমে না, তারা ভয়ে পিছপা হয় না, যতই না বাধা বিঘ্ন আসে পথে।
  • যুদ্ধের খাতিরেই যুদ্ধ করবে না সঙ্গে সঙ্গে জনগণকে অনুপ্রানিত করবে। এ সব ছাড়াই যুদ্ধের কোন অর্থই হয় না।

শিরোনাম তারিখ
৪৭। একজন গেরিলার যুদ্ধ পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি চিঠি গেরিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ত্রিপুরা ২৬ জুলাই, ১৯৭১

কম্পাইল্ড বাইঃ Irshat Ara

<১১, ৪৭, ৫০৫৫০৬>

মাননীয়

কমান্ডিং অফিসার, শ্রীনগর গেরিলা কেন্দ্র, ত্রিপুরা, ভারত।

জনাব,

    আমি (সি-২৫৬) ও অন্য একজন গেরিলা (সি-২৫৭)গত মাসে শ্রীনগর ট্রেনিং ক্যাম্প থেকে গেরিলা যুদ্ধের ট্রেনিং নিয়ে জুলাই মাসে দেশে ফিরি। আমরা জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে আমাদের উপর অর্পিত কার্যাদি সম্পন্ন করতে থাকি। এসব কার্যাবলীর মধ্যে আছে পাঞ্জাবী হানাদার সৈন্যর উপর গ্রেনেড আক্রমণ, পাক বাহিনীর দালাল খতম, নূতন গেরিলা সৃষ্টি।

পাঞ্জাবী হানাদার বাহিনী খতম

 

আমাদের গেরিলা অঞ্চল হল ঢাকা জিলার মনোহরদী থানার পূর্বাঞ্চল ও ময়মনসিংহ জেলার কটিয়াদি থানার কোতয়ালি অঞ্চল। এ অঞ্চলের উপর দিয়ে মাঝে মাঝে পাক হানাদার বাহিনীর সামরিক কলাম চলাচল করত। আমরা দেশে ফিরার প্র থেকেই এদের উপর আক্রমণ করার পরিকল্পনা করতে থাকি। তারা মিঞা (সি-২৫৭) দের বাড়ীর কাছে নূতন একটি বাজার আছে, জনসাধারণ একে জয় বাংলা বাজার নামে ডাকে। জুলাই মাসের ২১ তারিখে ১০১ জন পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্য ও কিছু বাঙ্গালী দালাল ও বন্দী ই,পি,আরসহ হানাদার বাহিনীর ১৬০ জনের মত লোক এই বাজারে হানা দেয়। হানাদার বাহিনী সকাল ৭ টার সময় পৌছেঁ সারাদিন কিছু লুটপাট করার পর তারা সন্ধ্যার সময় খাবার রান্না করতে থাকে। চারদিকে পাহাড়া বসিয়ে তারা নিশ্চিন্ত মনে ঘোরাফেরা ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজকর্মে ব্যস্ত থাকে। আমি (সি-২৫৬) ও তারা মিঞা (সি-২৫৭) সারাদিন থেকেই তাদেরকে আক্রমণ করার জন্য ঘুরতে থাকি।সন্ধ্যা ৭ টার সময় অতি কষ্টে আমরা হানাদার বাহিনীর ৫০ গজের মধ্যে পৌছি কিন্ত তাদেরকে সুবিধামত পাওয়া যায় না। আবার রাত্র ৯ তার দিকে তারা মিঞা (সি-২৫৭) ও আমি (সি-২৫৬) তাদের কাছে পৌছি। প্রথম তারা মিঞা তাদের উপর গ্রেনেড চার্জ করে। সাথে সাথে আমি ও তারা মিয়া মোট চারবার তাদের উপর গেনেড চার্য করি। গ্রেনেড চার্য করার পর আমরা সেখান থেকে ভালভাবেই রিট্রিট করি। রাত্রেই দস্যুরা গ্রামে আগুন দিতে থাকে। সকালের দিকে তারা মিঞা (সি-২৫৭)দের বাড়ী, তাদের আত্বীয় স্বজন ও চার মান্দালিয়া গ্রামের অন্যান্য লোকজনের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। গ্রামের লোকজন সবাই অন্যদিকে সরে পড়ে , দুইজন তাদের হাতে নিহত হয়। পরে লোকজনের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি যে হানাদার সৈন্যের মোট ২ জন নিহত ও দশ বারজন আহত হয়। কাছে দালাল থাকায় ও বাজারের ঘর থাকায় এবং সৈন্যরা প্রথম আক্রমণের পর তারা পজিশন নিয়ে ফেলায় তাদের ক্ষতি কম হয়।

পাকবাহিনীর দালাল খতম

 

পাক সামরিক বাহিনীর গ্রাম থেকে যাওয়ার পর আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী অনুসন্ধান করে জানতে পারে যে তারা মিঞার (সি-২৫৭)গ্রামে (চর মান্দালিয়া) দস্যুদের আনার ব্যাপারে মনোহরদী থানার চর মান্দালিয়া ইউনিয়নের খালিয়াবাদ গ্রামের মোশারফ হোসেনের হাত আছে।মোশারফ হোসেনের অত্র অঞ্চলে মুসলিম লীগের একজন নেতা ছিল। সে পূর্ব বাংলার  প্রতারকদের মধ্যে অন্যত্ম।বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জিলায় কখনও মিলিটারী কখনও ইন্সপেক্টর কখনও দারোগা প্রৃভতি সাজিয়া বহু লোকের কাছ থেকে বহু টাকা পয়সা প্রতারনা করে জোগাড় করেছে।এই অঞ্চলে গত ইলেকশনের সময় সে প্রগতিশীল ও স্বাধীনতা কর্মীদের উপর সশস্ত্র হামলা চালাইয়াছিল। চর মান্দালিয়া গ্রাম পোড়ানোর পর সে লোকজনকে বলে “শালাদের ঠান্ডা করেছি এবার তোরা মুসলিম লীগ জিন্দাবাদ পাকিস্তান জিন্দাবাদ বল, নইলে তোদেরও খতম করব”। এসব শোনার পর ও তার পূর্ব কার্যকলাপের দরুন আমরা তাকে খতম করে নিই।আমি ও এ গ্রামের অন্যান্য যুবকরা মিলে গত ২৩ শে জুলাই শুক্রবার রাত্রে তাকে খতম করার সিদ্ধান্ত দেই। মোশারফ দালালকে খতম করার পর আমাদের অঞ্চল সম্পূর্নরূপে পাক দালালমুক্ত হয়েছে।

নতুন গেরিলা সৃষ্টি

 

আমরা জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক প্রচারনা চালিয়ে গ্রামের প্রায় ৫০ জনের মত লোককে মানসিক দিক থেকে গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তত করেছি। তারা মিঞার (সি-২৫৭) সাথে কিছু লোককে ভারতে পাঠাচ্ছি। তারা এ মাসেই ভারতে পৌঁছবে ও বিভিন্ন ক্যাম্পে গেরিলা যুদ্ধের ট্রেনিং নিবে।

আমরা এখন অস্ত্র সংকটে ভুগছি। আমাদের গ্রেনেড শেষ হয়ে গেছে। পাক বাহিনী সংখ্যার দিক থেকে বেশী হওয়ায় আমরা তার ক্ষতি সাধন করলে তার কাছ থেকে কোন অস্ত্র উদ্ধার করতে পারি নাই। আমরা এখন নিরস্ত্র অবস্থায় আছি।তারা মিঞা(সি-২৫৭)আরও অস্ত্রের জন্য ভারতে আসছে। আপনি দয়া করে আমাদের দুইজনকে দুটি অটোমেটিক হাতিয়ার দিয়ে দিবেন। আমরা আমাদের সম্পূর্ন শক্তি দিয়ে পাক বাহিনীর ও তার দালালদের প্রতিরোধ করব।

আপনার

স্বাঃ/- মোহাম্মদ রফিকুল আলম

সি-২৫৬

শ্রীনগর গেরিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।

ডোমনমারা

মনোহরদী

ঢাকা

২৬শে জুলাই, ১৯৭১

…………………।

শিরোনাম তারিখ
৪৮। যুদ্ধ পরিস্থিতি রিপোর্ট ৯ নং সেক্টরের দলিলপত্র ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

ট্রান্সলেটেড বাইঃ Razibul Bari Palash

<১১, ৪৮, ৫০৭>

প্রতি – ৯ নং সেক্টর হেড কোয়ার্টার, তাকি

বিষয়রিপোর্ট

১। বাংলাদেশের উদ্যেশ্যে ২৫  সেপ্টেম্বর ৭১  হেড কোয়ার্টার ত্যাগ করে।

২।  ২৭০১০০ টায় মাহেরতলায় পাকবাহিনীর দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়। স্থান – থানা – মহেশখালী, যশোর।

৩। ০৬০৪০০ অক্টোবর ৭১  আমাদের ভাটিয়াপাড়া  বেতার স্টেশনে হামলা করা হয়।  আমরা সফলভাবে স্টেশন ধ্বংস করি।  আমাদের দিকে কোন ক্ষয়ক্ষতি হয় নাই।  ১৭ জন  পাক সেনা নিহত এবং ৯ জন  গুরুতর  আহত হয়েছে।  ১ (এক) জন রাজাকারও আহত হয়েছে।

৪। ১০১০৭১ এ হেড কোয়ার্টারের সাথে স্থানীয় একটি দলের সঙ্গে ভেদরগঞ্জ থানা আক্রমণ করা হয়। ২০ ঘন্টা যুদ্ধের পর থানা ধ্বংস হয়। আমাদের হাবিলদার  মহিউদ্দিন সরদার শহীদ হন। শত্রুপক্ষের ৮৫ জন  পুলিশ এবং রাজাকার নিহত হয়।

৫।  ১৫১২০৫ টায় হেড কোয়ার্টার  দামদিয়া গশেরহাটে (মাদারীপুর) পাকসেনাদের উপর অ্যামবুশ করা হয়। সাড়ে পাঁচ ঘন্টা যুদ্ধের পর ১  মেজর, ১  ক্যাপ্টেন সহ ৭২ জন পাকসেনা এবং ৩৫ জন  রাজাকার নিহত হয়। (মোট -১০৭ জন) । ৬৯ জন গুরুতর আহত হয়। আমাদের ১২ জন মুক্তিফৌজ নিহত হয়। এদের ৮ জন হেড কোয়ার্টারের আর ৪ জন স্থানীয়। আমাদের হেডকোয়ার্টেরে তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়। বিস্তারিত চিঠিতে দেয়া হবে।

স্বা

কমান্ডার

(সাব সেক্টর ফরিদপুর হেড কোউয়ার্টার)

(নূর মোহাম্মাদ)

শিরোনাম তারিখ
৪৯ । যুদ্ধ পরিস্থিতি রিপোর্ট ৯ নং সেক্টরের দলিলপত্র ২৭ সেপ্টেম্বর ৭১

ট্রান্সলেটেড বাইঃ Razibul Bari Palash

<১১, ৪৯, ৫০৮>

গোপনীয়

৯ নং হেড কোয়ার্টার

টেলি নং – ৫২

নং – ০৫৭১/ জি এস

২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

প্রতি – এন/ সুবেদার হেমায়েত

ইনফো – বাবুল ,ওমর

বিষয়দায়িত্ব অর্পন

১। হাবিলদার হেমায়েত কে নায়েক সুবেদার হিসেবে আশু পদোন্নতি দেয়া হল। সে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া থানার সাথে পাটগাতি, গোপালপুর, কাজুলিয়া ইউনিয়ন দেখাশোনা করবে।

২। সে বাবুলের সাথে অপারেশন ও প্রশাসনিক কাজ সম্পন্ন করবে। ভবিষ্যতে তার প্রতিবেদন বাবুল তৈরি করবেন।

স্বা

মেজর

কমান্ডার

(এম এ জলিল )

শিরোনাম তারিখ
৫০ ) যুদ্ধ পরিস্থিতি রিপোর্ট ১১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১৬ অক্টোবর ১৯৭১

কম্পাইল্ড বাইঃ নীলাঞ্জনা অদিতি

<১১, ৫০, ৫০৯>

মুক্তিবাহিনী কর্তৃক ………………………………………………………………………………………………………………..

……………………………………………………………………………………………………………………………………মণ …………………………………………………………………………………………… বহণ করার অনুমতি দেয়া হইল।

স্বাঃ কাদের সিদ্দিকী                                                                                                                                       ১৬/১০                                                                                                                               মুক্তিবাহিনী তত্বাবধায়ক                                                                                                                        টাঙ্গাইল, ঢাকা, ময়মনসিংহ সেক্টর

শিরোনাম উতস তারিখ

৫১) যুদ্ধ পরিস্থিতি সংক্রান্ত জনৈক মুক্তিযোদ্ধার চিঠি

 

১১ নং সেক্টরের দলিলপত্র

 

২০ অক্টোবর ১৯৭১

 

 

কম্পাইল্ড বাইঃ নীলাঞ্জনা অদিতি

<১১, ৫১, ৫১০>

প্রিয় স্যার,

সবিনয় নিবেদন এই আমরা ১৪/ ৯/ ৭১ ইং তারিখ ভালুকায় পৌঁছিয়াছি। পথে পাক ফৌজের ঘেরাওয়ের মধ্যে পরিয়া ৫ / ৬ ঘন্টা যুদ্ধ হয়। ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হইয়াছে ১৭ জন পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হইয়াছে। আমি অনেক পূর্বেই সংবাদ দেবার চেষ্টা করিয়াছি শওকত আলীকে পাঠাইয়াছিলাম সে পথিমধ্যে রাজাকারদের হাতে ধরা পরিলে তাহাকে কৌশলে মুক্ত করা হইয়াছে। আমি আফছার উদিন সাহেবের সঙ্গে থাকিয়া মুক্তিফৌজের ডাক্তার হিসেবে কাজ করিতেছি। আমাদের এখানে ১৮০/১৯০ মাইল পর্যন্ত মুক্ত এলাকা। আমি আসিয়া অনেক ছেলে পাঠাইলাম। আমি দেশে গিয়া দেশের খুব শোচনীয় অবস্থা দেখিয়াছি। আমরা ঐ সময় দেশে পৌছিতে না পারিলে বহূ লোক রাজাকারে চলিয়া যাইত। আমাদের ভালুকার মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র ছাড়িয়া অনেকেই আত্মগোপন করিয়াছিল। আমার বাড়ি ঘর বলতে কিছুই নাই। পাক সেনারা পোড়াইয়া ফেলিয়াছে। নিবেদন ইতি।

                                                                                                                                                              আপনার বিশ্বস্ত

স্বাঃ অস্পষ্ট                                                                                                                                                                   ডাঃ উদ্দিন                                                                                                                                                                    ২০ / ১০/ ৭১

শিরোনাম তারিখ
৫২) ইশতোর

১১ নং সেক্টরের দলিলপত্র

 

২৪ অক্টোবর ১৯৭১

কম্পাইল্ড বাইঃ নীলাঞ্জনা অদিতি

<১১, ৫২, ৫১১>

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

ঢাকা টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ ও পাবনা জেলা বেসামরিক দপ্তর

|| ঈশতেহার ||

প্রিয় দেশবাসী:

আসসালামু আলাইকুম। আপনাদের জানাচ্ছি পবিত্র মাহে রমজানের মোবারকবাদ। সম্প্রতি মুজিবনগর থেকে ফিরে আসার পর আমার সামনে নতুন কতগুলো সমস্যা এসে দাঁড়িয়েছে। সেই সমস্যার আলোকে আমি আপনাদের কাছে মুক্তিবাহিনীর তরফ থেকে নির্দেশ দিচ্ছি।

১ ) আপনারা যারা দেশকে ভালবাসেন কিন্তু জালেম দস্যু বিদেশী সৈন্যদের আওতায় আছেন তারা যেভাবে পারেন বাংলাদেশের স্বার্থে কাজ করুন প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন । আমরা আপনাদের সাথে আছি।

২ ) যারা দীর্ঘদিন ধরে  বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরিপন্থী কাজ করছেন কিন্তু পরবর্তী বাস্তবতা বুঝতে পেরে বিবেকের দংশনে নিজেদের অপরাধ বুঝতে পেরেছেন তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। যত অন্যায় ই করে থাকুন আমরা সহানুভূতির সঙ্গে তা বিবেচনা করব।

৩) যারা এখনো সরকারী চাকুরি করছেন তারা নিজ নিজ স্থান থেকেই বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করে যান এবং উপযুক্ত সময়ে মুক্তিবাহিনীর নির্দেশে আপনারা এক যোগে কাজ থেকে সরে পরবেন।

৪) বাংলাদেশের কৃষক শ্রমিক চাকুরীজীবী প্রত্যেকেই যেভাবে পারেন আমাদের সাহায্য পৌছে দিন।

৫ ) যারা রাজাকারে ভর্তি হয়েছেন তাদের কাছে সবিশেষ অনুরোধ আপনারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করে একযোগে আমাদের সাথে স্বাধীনতা আন্দোলনে শরীক হন।

৬ ) স্বেচ্ছায় যে কোন আত্মসমর্পণকারীর সঙ্গে সম্মানজনজক ব্যবহার করা হবে।

৭ ) লাইসেন্সসহ প্রতি মণ পাটের জন্য এক টাকা খাজনা দিয়ে যে কোন দিকে পাট বহন করার অনুমতি পাবেন।

৮ ) জমি সংক্রান্ত ব্যাপারে নির্দেশ হল ২৫ শে মার্চের আগে যে জমি যার দখলে ছিল তারই থাকবে।

৯ ) ( ক) পাহাড়ি অঞ্চলে নতুন করে রিজার্ভ ভাঙ্গা চলবে না।

(খ) যে সমস্ত জমি চার বতসর আগে বানানো হয়েছে সেগুলো এখন আবাদযোগ্য তবে জমিতে গাছ থাকলে গাছের পাতাও কাটা চলবে না।

(গ) চার বছর আগে যারা রিজারভ ভেঙ্গেছেন এবং একেবারে নিঃসম্বল দরিদ্র ঘরবাড়িসহ পাঁচ বিঘে জমি তাদের বহাল থাকবে।

আশা করি উপরোক্ত নির্দেশাবলি আপনারা মেনে চলবেন। খোদা হাফেজ। জয় বাংলা।

স্বাঃ কাদের সিদিকী

২৪-১০-৭১

শিরোনাম তারিখ
৫৩। যুদ্ধ পরিস্থিতি সংক্রান্ত জনৈক মুক্তিযোদ্ধার চিঠি ১১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ২৮ অক্টোবর ১৯৭১

কম্পাইল্ড বাইঃ Aadrita Mahzabeen
<১১, ৫৩, ৫১২>

ডালু এম এফ

হেড কোয়ার্টার

জনাব মেজর সাহেব,

আমার ছালাম নিবেন। পর সমাচার এই যে, গত ২৭-১০-৯১ বিকাল ৩ ঘটিকার সময় একটা পার্টি লইয়া পেট্রোলে যাই। এবং ফরেস্ট অফিসের সামনে বড় উঁচু একটা পাহাড়ে উঠিয়া অনেক নতুন ও পুরানো বাংকার দেখিতে পাইলাম। আর ফেফারী এলাকায় একটা পাহাড়ে তাহাদের ও পি পোস্ট তৈয়ার করিতেছে এবং টেলিফোনের তার লাগাইয়া মাটির সাথে ফেলাইয়া তৈয়ার করিয়াছে। ওরা সব ঠিক করিয়া যাওয়ার পর আমরা উক্ত টেলিফোনের তার সন্ধ্যা ৭টায় ৩৩ গজ কাটিয়া আনি এবং ওরা যখন জানিতে পাইল আমরা ওদের ফোন লাইন কাটিয়া দিয়াছি তখন আমাদের উপরে ফায়ার দেয় এবং আমরাও ১৫০ রাউন্ড গুলি ফায়ার দেই। স্টেনগানে ৫০ রাউন্ড ফায়ার দিয়া ফিরিয়া আসি। খোদার ফজলে আমাদের কোন ক্ষতি হয় নাই। আমরা নিরাপদেই ওদের টেলিফোন লাইন নষ্ট করিয়া ৩৩ গজ তার নিয়া আসিয়াছি এবং উক্ত তার আপনাদের এখানে পাঠাইলাম।

ইতি-

স্বাঃ/মোহাম্মদ আলী

পানিহান্তা এম এফ ক্যাম্প

তাং-২৮-১০-৭১

শিরোনাম তারিখ
৫৪ ) জনৈক মুক্তিযোদ্ধার সংকেতপূর্ণ চিঠি ১১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১ নভেম্বর ১৯৭১

কম্পাইল্ড বাইঃ নীলাঞ্জনা অদিতি

<১১, ৫৪, ৫১৩>

প্রিয় ছোট ভাই,

আমার স্নেহ নিও। তোমার চিঠি পেয়ে বেশ উদ্বিগ্ন হলাম। তোমার যে তিন বোনের কথা ওদের নাম পাঠাও। বিশ্বাস ঘাতকদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যু। ডাক্তার এবং সিরাজ সম্পর্কে আমাদের এই অভিমত। তবে যদি সম্ভব হয় ওদের যেভাবে পারো আমার কাছে পাঠাবার ব্যাবস্থা কর। না পারলে সিদ্ধান্ত তোমরাই নেবে।

আগে যে নির্দেশ দিয়েছি তা ঠিক মত পালন করছনা। সকল নির্দেশ বুঝে পালন করতে চেষ্টা করবে।

তোমাদের জন্য ডিম এবং মুরগি সত্বর পাঠাবার ব্যাবস্থা করব। সময় কিছু লাগবে। যে সব ব্যাপারে জানতে চেয়েছি তা সত্বর জানাবে। তোমার সাংসারিক খরচের জন্য ১০০ (এক শত ) টাকা পাঠালাম। আহারের সংস্থান অবশ্যই স্থানীয়ভাবে করতে হবে। নাখলার বড় বোন দুজনকে যোগাযোগ করতে বল। ওরা নীরব কেন?

আমরা ভালো আছি। তোমাদের কুশল কামনা করি।

ইতি

বড় ভাই

শিরোনাম উৎস তারিখ
৫৫ ) জনৈক মুক্তিযোদ্ধার চিঠি ১১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১৩ নভেম্বর ১৯৭১

কম্পাইল্ড বাইঃ নীলাঞ্জনা অদিতি

<১১, ৫৫, ৫১৪>

প্রিয় রাজ্জাক সাহেব,

প্রীতি ও শুভেচ্ছা নেবেন। আশা করি কুশলেই আছেন। ৩০/১০ তারিখে আনিস ভাই এর কাছে কাজের রিপোর্ট দেয়ার পর পরবর্তী সাপ্তাহিক রিপোর্ট দেয়া সম্ভব হয়নি। কেননা শামছুদ্দিন ভীষন ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল।

নতুন কোন সিস্টেম চালু করতে পারি নাই। কাজেই সে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর তার কাছে রিপোর্ট প্রেরণ করলাম। আসার পরবর্তী সময় থেকে ক্রমাগত ৩ বার টাইফয়েডে আক্রান্ত হই এবং সুস্থ হয়ে কাজ শুরু করি। কিন্তু পরিশ্রমের পর এখন চতুর্থ বারের মত আক্রান্ত হয়েছি। নেত্রকোনার ছেলেটি এবং হাটপাড়ার ছেলেটি আজ থেকে প্রায় ২০/ ২৫ দিন পূর্বে নিজের এলাকায় গিয়েছিল। এখনও ফিরে আসে নাই। বাকিদের মধ্যে আমি সহ ৩ জন অসুস্থ। বাকি লোকেরা সাধ্যমত কাজ করছে। বিশেষ আর কি লিখব।

ইতি

                                                                                                                                                                     ছৈয়দ মিজানুর রহমান

শিরোনাম উতস তারিখ
৫৬) জনৈক মুক্তিযোদ্ধার সংকেতপূর্ণ চিঠি ১১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১৭ নভেম্বর ১৯৭১

কম্পাইল্ড বাইঃ নীলাঞ্জনা অদিতি

<১১, ৫৬, ৫১৫>

ছোট ভাই,

স্নেহাশীষ নিও। থানা সেল গঠন করে সত্বর নাম পাঠাতে হবে। মামাদের নেয়ার ব্যপারে কোন সিদ্ধান্ত নেইনি। জিনিসপত্র পাঠানো যাবে কিন্তু সময়সাপেক্ষে। শীতের বস্ত্র কেনার জন্য জনপ্রতি ১০ টাকা করে পাঠালাম। জনসাধারনকে বুঝিয়ে অন্যান্য খরচের ব্যবস্থা করতে হবে। এটা তো তোমরা ভাল করেই বুঝতে পার। আপাততঃ ৫০ টাকা পাঠাইলাম। দলীয় বিশ্বাসঘাতকদের শাস্তির ব্যবস্থা করেছে কিনা জানিয়ো।

হযরত আলী রহিম আমাদের কাছে আছে। পরে যাবে। বাহককে ৫০ টাকা দিলাম। ব্যবসা সংক্রান্ত ব্যপারে যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তার ২৪ দিনের পরবর্তী ৭ দিনের কাজ আরম্ভ করবে এবং খবর জানাবে। নতুন সংকেত দিলাম। এগুলি ব্যবহার করেই চিঠি দিও।

ইতি

                                                                                                                                                               বড় ভাই।

শিরোনাম তারিখ
৫৭। অফিসীয় নির্দেশ ফরিদপুর সাব সেক্টরের দলিলপত্র ১৮ নভেম্বর ১৯৭১

কম্পাইল্ড বাইঃ Razibul Bari Palash

<১১, ৫৭, ৫১৬>

ছান্দাল হেড কোয়ার্টার

এম এফ – ৩/ ৭১

তারিখ – ১৮/১১/৭১

প্রতি

সকল কমান্ডার

সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য ।

১। ক্যাপ্টেন বাদল কে বাংলাদেশ ফোর্সের সাব সেক্টর কমান্ডার হিসাবে নিয়োগ দেয়া হল। সে ফরিদপুর হেড কোয়ার্টারের নগরকান্দা থানার দায়িত্বে থাকবে।

২। আব্দুল আজিজ মোল্লাকে নগরকান্দা থানার অপারেশন কমান্ডার হিসাবে নিয়োগ দেয়া হবে। এটি ১৫ নভেম্বর ৭১ থেকে কার্যকর হবে।

১। আলতাফ হোসেন খান কে নগরকান্দা থানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেয়া হল। আপনাদেরকে কাজের প্রয়োজনে তার সাথে যোগাযোগ করতে বলা হল।

স্বা

আব্দুল আজিজ মোল্লা

কমান্ডার

মুক্তি ফৌজ

ফরিদপুর

বাংলাদেশ

সি সি –

১। থানা এডমিন অফিসার, নগর কান্দা

২। হেড কোয়ার্টার ছান্দাল

৩। আব্দুল হান্নান মিয়া, পুরাপারা

৪। আব্দুল হামিদ

৫। মো বাদশা মিয়া

৬। গোলাম মোস্তফা

শিরোনাম তারিখ
৫৮।টাঙ্গাইলের গেরিলা কমান্ডারের চিঠি ১১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১৮ নভেম্বর, ১৯৭১

কম্পাইল্ড বাইঃ Aadrita Mahzabeen

<১১, ৫৮, ৫১৭>

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের

ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ ও পাবনা এলাকার

সামরিক প্রধান…………………..

পক্ষে-ফজলুর রহমান, ক্যাপটেন

তারিখ-১৮-১১-৭১

হাবিব সাহেব,

আশা করি ভালো আছেন। ২টার সময় সি,ইন,সি সাহেব চলে গেছেন। যাক, কত ইঞ্চি মরটার বোমা দিতে হবে জানাবেন। কোন প্রকার চিন্তা না করে ডাটে থাকুন। বাকি খোদা হাফেজ। যোয়ানদের প্রতি অশেষ দোয়া ও স্নেহাশীষ রইল।

আমার শরীর খূব ভালো না। সিগন্যাল পাঠাবেন।

স্বাক্ষর/ক্যাপ্টেন ফযলুর রহমান**

————-

*টাঙ্গাইলের গেরিলা নেতা জনাব আব্দুল কাদের সিদ্দিকী

**লেখক এবং প্রাপক উভয়েই টাঙ্গাইলের গেরিলা কমান্ডার।‘ক্যাপটেন’ স্থানীয় ভিত্তিতে গেরিলাদের ঘোষিত পদবী।

শিরোনাম তারিখ
৫৯। জনৈক মুক্তিযোদ্ধার সংকেতপূর্ণ চিঠি ১১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১ নভেম্বর, ১৯৭১

কম্পাইল্ড বাইঃ Rashed Islam

<১১, ৫৯, ৫১৮ >

তুলা/১/গ (১)

বড় ভাই সাহেব,

সালাম নিবেন। অনেকদিন গত হতে চলল আপনার কোন সংবাদ না পেয়ে চিন্তাযুক্ত আছি। কাকা পেপার মিলে বাঁশ দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। এখন তার (১০০০ পাঃ) বাঁশ পাঠাতে হবে। তিনি কিছু টাকা তুলেছেন। ভাইজান খোকন বর্তমানে ২০টি কবুতর ক্রয় করতে চায়। তার জন্য একটি ঘুঘু পাঠোবেন। বড় ভাই সাহেবের বিয়ে ঠিক হয়েছে। আগামী ২৫ তারিখে বউ আনতে যাবেন। কাজেই টাকা পয়সার প্রয়োজন। আব্বার কাছে কোন টাকা নেই। আর এখানে জিনিসপত্রের মূল্য অনেক বেশি। আপনি অতি সত্বর ১১৭ টি মুরগী পাঠাবেন। বড় মুরগী ১২ টি এবং রোস্ট করার জন্য ৮০ টি ছোট মুরগীর ব্যবস্থা করবেন। জামাই নিয়ে যাওয়ার জন্য ৪ টি (চার) বড় নৌকা ও দুইটি ছোট নৌকার ব্যবস্থা করবেন। উত্তর পাড়ার ভাই সাহেব আপনার কাছে যে টাকা পাঠিয়েছেন তা দিয়ে ৫০০০ডিম পাঠাবার জন্য বলেছেন। কারণ তিনি ডিমের ব্যবস্থা করেন।কয়েকটা বড় হোটেলে তিনি ডিম ১০০০ লেবু পাঠানোর কথাও বলেছেন। এইগুলি না পাঠালে তার ব্যবসার বিরাট ক্ষতি হবে। আপনি এই সমস্ত জিনিসের ব্যবস্থা করে যেভাবেই হোক বিয়েতে উপস্থিত হবেন, নয়তো দুঃখিত হব। বিশেষ কি লিখব। বাড়ীর সবাই ভাল আছি। চিন্তার কোন কারন নাই। শ্রেণীমত সবার কাছে সালাম ও স্নেহ দিবেন।

ইতি-

ছোট ভাই।

…………………………

শিরোনাম তারিখ
৬০। জনৈক মুক্তিযোদ্ধার সংকেতপূর্ণ চিঠি ১১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১৯ নভেম্বর, ১৯৭১

কম্পাইল্ড বাইঃ Aadrita Mahzabeen
<১১, ৬০, ৫১৯>

তুলা/১/গ/১

বড় ভাই সাহেব,

সালাম নিবেন। আশা করি খোদার কৃপায় ভালই আছেন। আমাদের থানা ক্লাবের শাখা করেছি। আপনার কাছে কয়েক দিন পূর্বে পত্র লিখেছি কিন্তু কোন উত্তর পাই নাই। আপনি যাওয়ার পর মৌলভী সাহেব বাহিরের কাচারীতে আপনার সিটে থাকেন। তিনি কাচারি ঘরে আমাদের এলাকার বোনদের কোরআন শরীফ পড়াচ্ছেন। মৌলভী সাহেব আপনার কথা প্রায়ই জিজ্ঞাসা করেন। তার কাছে পত্র লিখবেন। মিতা আমাদের এখানে আছে। দাদা গরুর খোঁয়াড় রেখেছেন। মামা ভালই আছেন। বোনও ভাল। চিন্তা করবেন না। বাড়ীর সবাই আল্লাহর কৃপায় ভালই আছে। কোন প্রকার চিন্তা করবেন না। সবার কাছে শ্রেনী মত দোয়া ও সালাম দিবেন।

ইতি

ছোট ভাই

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!