You dont have javascript enabled! Please enable it! পাকিস্তানী সরকারের দলিলপত্র ০৪ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৪০। ঢাকায় পাক আর্মি অপারেশনের কয়েকটি সাংকেতিক সংবাদ বাংলাদেশ আর্কাইভসের দলিলপত্র ২৬ মার্চ, ১৯৭১

২৬ শে মার্চ  ১৯৭১ সালের দুপুর ০২০০ ঘটিকা  থেকে সন্ধ্যা ০৬০০  ঘটিকা পর্যন্ত ঢাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অপারেশনের  রূদ্ধ বার্তার  প্রতিলিপির  উদ্ধৃতাংশ

হ্যালো ৯৯,  আমার প্রস্তাব মতে ,  আপনি আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে থাকুন অন্যথায়  ২৬ এবং অন্যদের কারণে একই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি ঘটবে. ।  তাজা খবর বলতে কিছুই নেই এখনো সংরক্ষিত লাইন ( ১) সুরক্ষিত এবং বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এখনও যুদ্ধ চলছে
আউট ।।

৭৭ থেকে – ৮৮ থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ বার্তা অনুযায়ী অবস্থার উন্নতি হয়েছে।   কিন্তু অনেকগুলো  ভবন থাকায় একটি একটি করে ধ্বংস করতে হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন.  এখনও পর্যন্ত  কোন প্রাণহানী হয়নি।  তার বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগ করায়. তিনি সবরকম অস্ত্র   ব্যবহার করছেন . ওভার।

৭৭ কে – তাকে বলুন যে আশা করা যাচ্ছে যে তার অগ্রজরা (২) শীঘ্রই এসে পৌঁছবে ।) আমি আশা করি   সেই ভবন ধ্বংসের  কাজে তাদের ব্যবহার করা যেতে পারে।  অপর পাশে  লিয়াকত ও ইকবাল ( ৩) এখন শান্ত ।  আমি কি সঠিক? ওভার ।

৭৭ থেকে- যদিও সমাপ্তির  রিপোর্ট আমার হাতে এসে পৌঁছেনি  কিন্তু  বোঝা যাচ্ছে যে তারা ঐ দুই জনের কাজে বেশ সন্তুষ্ট ।

কন্ট্রোল – তাহলে তো বেশ ভাল । এক  নম্বর  -এখন ছেলেরা রাস্তায়  ঘোষণা দিতে পারে।  দুই নম্বর- তারা বারবার কালো পতাকা নামিয়ে আনার আদেশ দিবে এবং  সেই সাথে  জানিয়ে দিবে  যে পতাকা সংযুক্ত কোন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে । কোন কালো পতাকা থাকবে না  এবং শহরের কোথাও কালো পতাকা দেখা গেলে  বা তাদের নমিত না করলে  পরিণতি অতন্ত কঠিন হবে।  এই বিষয়টি প্রত্যেকের কাছে পরিষ্কার করতে হবে। এ পর্যন্ত  রজার।  ওভার

১।  . রিজার্ভ লাইন – পিলখানা ঢাকায় অবস্থিত পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসের সদর দপ্তর
২।  বড় ভাই-আর্টিলারি সহায়তা
৩। লিয়াকত এবং ইকবাল – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস

.

.

৭৭ থেকে- রজার  ওভার

৭৭ কে-    দ্বিতীয়ত , রাস্তাঘাট অবরোধ  সম্পর্কে ঘোষণা করা হবে। রাস্তা অবরোধকারী যে কোন ব্যাক্তিকে তৎক্ষণাৎ গুলি করা হবে-১ নম্বর । দুই নম্বর-  কোনো এলাকার  জনগণ রাস্তা অবরুদ্ধ করে রাখলে  তাদের অভিযুক্ত  করে দায়ী করা হবে এবং বামে এবং ডানে – আমি আবারো বলছি বাম এবং ডান দিকের ঘরগুলোকে ভেঙ্গে ফেলা হবে. এই কথাগুলো  সকল মানুষকে স্পষ্ট করে বলে দিতে হবে ।   আজ রাত থেকে শুরু করে সারাদিন  সকাল এবং আগামীকাল সকাল. পর্যন্ত এই  আদেশ গুলো স্পিকার  এর মাধ্যমে ঘোষণা করা  হবে । ওভার

৪১ থেকে- রজার , ওভার

৪১ থেকে –একইভাবে যে কোন রাস্তা অবরুদ্ধ  করা হলে  তা হবে অপরাধমূলক ।

কাওকে এই অপরাধ করতে  দেখামাত্র গুলি করা হবে।  অবরোধের দুপাশে  ভবন মালিকদের

তাড়িত করা  হবে এবং তাদের ভবন  ভেঙ্গে  ফেলা হবে ।  . এটাও আপনার ভ্রাম্যমান টহল দ্বারা ঘোষণা করা উচিত. । ওভার

 ৮৮ কে – ইমাম (০৪)  থেকে –  বাংলাদেশের পতাকা বা কালো পতাকার সংক্রান্ত-

এই  পতাকা উত্তোলনকারী   ভবনের মালিকেদের ,  তাঁদের অপসারণ সম্পর্কে সতর্ক করা আবশ্যক , অন্যথায় তাদের  দোষী  সাব্যস্ত করা হবে.  ।

৮৮ কে-  যে কোন জায়গায়  সড়ক অবরোধ  ফৌজদারী অপরাধ হিসেবে গণ্য  হবে।  কাওকে এ অপরাধে  লিপ্ত হতে দর্শনমাত্র গুলি করে হত্যা করা হবে.। আপনার ভ্রাম্যমান টহল দ্বারা এই ঘোষণা করে দিতে হবে   যে দুপাশের  বাড়ি ও ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।

৮৮ থেকে – Wilco আর কিছু? ওভার

৮৮ কে –   আপনার ইমাম কি আপনাকে জানিয়েছেন যে , প্রায় তিন থেকে চার ঘন্টা প্রয়োজন হবে  কাজ সম্পন্ন করার জন্য?  ওভার

৮৮  থেকে –    হ্যাঁ-প্রায় তিন থেকে চার ঘণ্টা  লাগবে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে  কাজ সম্পন্ন করতে

।  ওভার

 ৮৮     ইমাম আপনার আরও  কোনো সহায়তার প্রয়োজন হলে ইমাম ২৬ কে জানাবেন। Buxer ( ৫)   সংক্রান্ত  উপাদান তাদের  মুখ্য অবস্থান থেকে শুরু হয়েছে এবং আপনাকে অবিলম্বে  আপনার সামনের সকল প্রতিবন্ধকতা  ধ্বংস করতে সক্ষম হবে। ওভার

৪।  ইমাম -কমান্ডিং অফিসার.

৫। Buxer- ধ্বংস স্কোয়াড.

.

.

৮৮ থেকে       – আমার পক্ষ থেকে  আপাতত এটুকুই । অসংখ্য  ধন্যবাদ আপনাকে।   ওভার

৮৮ থেকে  -রজার ।    স্বাগতম ৪১। আপনার বার্তা প্রেরণ করুন।

৪১ থেকে-  রেল লাইন এর পশ্চিমে পালাবার রাস্তা  সংক্রান্ত- আপনার এলাকায় আশা করি যে প্রয়োজনীয় ব্লক অবস্থানে এসেছে  যাতে  ক্যাম্পাসে ২৬ এবং ৮৮ এর  সম্মুখীন বাহিনীরা

পশ্চিমাভিমুখে চলে না যায় ।   ওভার

৪১ থেকে – আমরা খুব ব্যাপকভাবে এলাকায় টহল দিচ্ছি। . সজাগ দৃষ্টি চারদিকে । ওভার

৪১   কে-   রজার । আমি নিশ্চিত  ছিলাম যে আপনিই  নেতৃত্ব দেবেন ।

২৬  এর সৈন্যরা  সবকিছু  নিয়ন্ত্রণে রেখেছে ।    এটা   বেশ সন্তোষজনক।     আউট   ।

৯৯ থেকে – সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক (৬)    জানতে চান এলাকায় জগন্নাথ, ইকবাল ও লিয়াকত এলাকায়     কি ধরনের বিরোধীতার মুখোমুখি  হয়েছেন। ওভার

৯৯  কে ৮৮ –   প্রাথমিকভাবে জগন্নাথ( ৭) ও ইকবাল হল  থেকে কিরকম গোলাগুলি হয়েছে ?

৮৮ কে ৯৯ – রজার, ওভার ।

৮৮ থেকে –  একবার আমরা রোমিও রোমিও  (৮) ব্যবহার করেছি ।   এর পরে আমরা গোলাগুলির শব্দ শুনতে না পেলেও, কয়েকজন কে জব্দ করতে পেরেছি।

৯৯  কে ৮৮ – এখন আমি লিয়াকতের এলাকায় যাচ্ছি কারণ তাদের. সেটটি বিকল হয়ে গেছে।   তাদের অগ্রগতি সম্পর্কে আমি অবহিত নই। আমি নিরীক্ষণ শেষে আপনাকে জানাবো । ওভার

৮৮ কে ৯৯-  যদি স্বয়ংক্রিয়  আগ্নেয়াস্ত্রের গুলি বা কোনো গ্রেনেড ইত্যাদি নিক্ষিপ্ত হয়  আমাদের অনুগ্রহ করে জানাবেন . । ওভার

৯৯ কে ৮৮- আমরা কোন স্বয়ংক্রিয় গুলি বা গ্রেনেডের আওয়াজ শুনিনি। ওভার ।

৯৯  কে ২৬ – মার্কহোর (৯) অপর প্রান্তে আছেন।    । আপনার বার্তা টি পাঠান  । ওভার ।

২৬ কে ৯৯ – কোন কোন উদ্দেশ্য সফল হয়েছে আমাদের দয়া করে জানাবেন। ওভার ।

৯৯ কে ২৬ –  দুই হাজার ( ০১  ) গ্রেফতার ।  ব, তারপর রমনার  পি এস বন্দী ।    রেডিও টেলিভিশন পুরোপুরি আমাদের অধীনে । প্রথম ধাপ সম্পন্ন । ওভার

৬।  সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ- লেফটেন্যান্ট জেনারেল. টিক্কা খান

৭। জগন্নাথ- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস ।

৮।  রোমিও-  রোমিও রাইফেল.

৯।   মার্ক হোর – অ্যাডজাস ট্যাঁন্ড

১০। দুই হাজার-রাজারবাগ পুলিশ সদর.

.

.

ফ্রম ৯৯ আমাদের কমিশনার অফিসারদের অবস্থান থেকে আমরা পুরানো পল্টন এলাকায় অনেক আগুন দেখতে পাচ্ছি। এটা কি হেড অফিস(১১) না অন্য কোন অফিস? অভার।

২৬ ফর ৯৯    দুই হাজারে আগুন লেগেছে। আবারও বলছি দুই হাজারে আগুন লেগেছে। অভার

৯৯ ফর ৮৮   পিপল’স ডেইলীর কি খবর? অভার।

২৬ ফর ৯৯    ধ্বংসপ্রাপ্ত। আবারও বলছি ধ্বংসপ্রাপ্ত। আমাদের দুই ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছে ও দুজন অল্প আহত হয়েছে। তাদের সিএমএইচে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। অভার।

৯৯ ফর ২৬    অন্যপক্ষে হতাহতের সংখ্যা কত? অভার।

২৬ ফর ৯৯    না। এই মুহূর্তে যাচাই করা কঠিন। বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বলছে অথবা সম্পূর্ণরুপে ভস্মিভূত হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে কোনকিছুই বলা সম্ভব নয়। অভার।

৯৯ ফর ২৬    আপনি কি পুলিশ লাইনেও এমনই করেছেন? অভার।

২৬ ফর ৯৯    আমি শুধু বলছি দুই হাজার পুলিশ লাইনে আগুন লেগেছে। অভার।

৯৯ ফর ২৬    ভাল প্রদর্শনী। আউট।

ফ্রম ৫৫ রোডব্লক ছিল। আমরা অন্যান্য জিনিসের সাহায্যে এটা সরাচ্ছি। অভার।

টু ৫৫   আসলেই প্রশংনীয় কাজ। আপনার জিনিসপত্র ২৬ এ প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ৮৮ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, তাদের এগুলো বিশেষভাবে কাজে লাগবে।

টু ৫৫   অবস্থান অভার। ফার্মগেটের সামনের রাস্তার রোডব্লক সরাচ্ছি বিস্ফোরক ও অন্যান্য জিনিস দিয়ে। আমরা এখনও একই অবস্থানে আছি। অভার।

টু ৫৫   রজার। আশা করি কেউ তোমার বিরুদ্ধে দাঁড়াবার সাহস দেখায় নি। অভার।

ফ্রম ৫৫ হ্যাঁ

টু ৫৫   খুবই চমৎকার। আসতে থাক, আমরা পুরনো ভবনে আছি। তুমি রাস্তায় যেকোন অপ্রয়োজনীয় ক্ষতি এড়ানোর চেষ্টা করতে পার। আউট।

টু ১৬  আগে যেমন আলোচনা করা হয়েছিল তেমনভাবে আপনার মূল বাহিনীর ইমাম বিভিন্ন বিভাগে প্রয়োজনীয় অনুশীলন সম্পন্ন করবে যা অনুযায়ী তারা পরে আবার সংগঠিত হবে। যতক্ষণ না আপনার বাহিনীর ইমামের দেখা পাচ্ছেন আপনি ওখানেই থাকেন। অভার।

ফ্রম ১৬        উইলকো আউট।

১১. হেড অফিস- আওয়ামী লীগ সদরদপ্তর

১২. পিপল’স ডেইলী- দ্য ডেইলি পিপল

১৩. চিতা- ট্যাঙ্ক

ফ্রম ৪১ আমাদের বিশাল সংখ্যক লোকবল রয়েছে যারা অনেকগুলো রোডব্লক নিষ্ক্রিয় করেছে। অভার।

টু ৪১   শ্রমের উপযুক্ত ব্যবহার এটা। পরামর্শ দিচ্ছি এখনকার জন্য তাদের কাজে লাগাতে ও ইমামের কাছে ছাড়পত্র পাওয়া পর্যন্ত তাদের ধরে রাখতে। সেই অনুযায়ী আপনি তাদের ধরে রাখতে পারেন বা ছেড়ে দিতে পারেন। অভার।

টু ৪৪   আপনার ইলিমেন্ট RSU(14) এর সাথে যে আছে তার মাধ্যমে জিজ্ঞেস করেন RSU দরিয়াতে প্রহরা দিচ্ছে কিনা।

ফ্রম ৮৮       রজার অভার।

টু       ঠিক- আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাচ্ছিলাম যে RSU এর সাথে আপনার সূত্র যেন তাদের নৌবহরে টহল দিতে বলে। অভার।

টু ২৬  ডেইলি পিপল থেকে কি আপনি গুরুত্বপূর্ণ কাউকে উঠিয়ে আনতে পেরেছেন? অভার।

ফ্রম ২৬ নিল- নেগেটিভ, কিন্তু আমাদের সৈন্যরা আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানুষের কাছে গেছে। আমরা তাদের অগ্রগতির জন্য অপেক্ষা করছি। অভার।

টু ২৬  রজার- আলফা লিমা (১৬) এর অফিস কি দখল করা হয়েছে?

ফ্রম ২৬ না। টার্গেট ভোরবেলার জন্য রেখে দেয়া হয়েছে। অভার।

টু ২৬  রজার। তাছাড়া যেকোন রেকর্ড বা দলিল হয়তো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে বা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। যাই হোক, পরিকল্পনা মতো কাজ করুন আর আপনি চমৎকার অগ্রগতি করছেন। যেকোন ছোটখাট বিষয় ঘটার সাথে সাথে আমাদের জানাবেন। আউট।

ফ্রম ৭৭ টু ২৬  মারখোরকে জানিয়ে দিন যে ইমাম বলেছে ভোরের আলো ফোঁটার আগেই যত মৃতদেহ আছে সব যেন পরিষ্কার হয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট সকলকে বলে দিন। অভার।

ফ্রম ২৬ রজার- আপনি আপনার ইমাম আর মারখোরকে এই খবর দিয়ে দিন। আউট।

কন্ট্রোল হ্যালো ৪১। কারেক্টিং ১৬,৪১,৮৮, রিসিভ করেছেন? অভার।

হ্যালো ৮৮, আপনি কি ম্যাসেজ পেয়েছেন যা ৪১ মাত্র পড়ে শুনালো?

উত্তর (অস্ফূট)

টু ৮৮ হ্যাঁ। তাদের সৎকারের ব্যবস্থা করুন। আপনি স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে প্রকাশ্য স্থান থেকে তাদের সরিয়ে দিতে পারেন। অভার।

১৪. RSU-River Survey Unit

১৫. দড়িয়া- বুড়িগঙ্গা নদী

১৬. আলফা লিমা- আওয়ামী লীগ

টু ৮৮ অপরপক্ষের হতাহতের সংখ্যা আপনি কখন আনুমানিক বলতে পারবেন? আর কিছু না। আউট।

কন্ট্রোল আদেশের প্রয়োজনীয় বিচ্যুতি-ফলাফলের অপেক্ষা হচ্ছে- সকাল ০১০০ ঘটিকা থেকে যা হয়েছে তার SITREP এর একটা খসড়া দেয়ার পরামর্শ। অভার।

টু ৯৯  ০১০০ ঘটিকা থেকে প্রায় আধঘন্টার জন্য আমরা আপনার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিলাম। তারপর আমাদের টেলিফোন ও তার থেকে বেশ দূরের এই জায়গার মাঝে আসা যাওয়া করতে হয়েছে। তাই আমরা বেশিরভাগ খবরই মিস করেছি।

ফ্রম ৯৯ আপনাকে বলা হচ্ছিল বেলালের ছেলেদের (১৭) থেকে শুরু করে তারা কখন আসল পাখিকে (১৮) খাঁচায় ভরলো ও সাথে দুটি টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, রমনার পি.এস., পিপলস ডেইলি, সংরক্ষিত লাইন, এখনও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ও গুলশানের, সংশোধন ধানমন্ডির বাড়িগুলোতে যেসব এ্যাকশান নেয়া হচ্ছে, যাদের বসবাসকারীদের হদিস এখনও বের করা যায় নি। অভার।

টু ৯৯  শেষ বার্তাটির ব্যাপারে, সেই কর্মমর্তারা কারা যাদের ধানমন্ডি থেকে হদিস পাওয়া যায়নি? অভার।

ফ্রম ৯৯ তাজউদ্দীন ও ভূঁইয়াকে তাদের বাসায় পাওয়া যায়নি। একইভাবে, এই শারিরীক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট যেখানে অস্ত্র থাকার কথা ছিল সেখানে কিছুই পাওয়া যায়নি। অভার।

টু ৯৯  এটাই কি মোহাম্মদপুর এলাকার সেই শারিরীক ইন্সটিটিউট? অভার।

ফ্রম ৯৯ হ্যাঁ। এখনও সেখানে কিছু পাওয়া যায়নি। আমরা মালখানা ও লালবাগ কেল্লার খেয়াল রাখব।

টু ৯৯  তো আপনার অধিকাংশ উপহার শেষ।

ফ্রম ৯৯ নির্দেশনা আমরা সবই শুনেছি কিন্তু অন্যান্য নির্দেশনার কি খবর? অভার।

টু ৯৯  ১৬তে খুব কম প্রতিরোধ ছিল যেখানে তারা ৪ জনকে খুন করেছে ও ১০ জনকে আহত করেছে। তারপর তাজউদ্দীন, ভূঁইয়া অপারেশনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে ছিল। ইন্সটিটিউটে তারা অন্যান্য মানুষকে ধরে কিন্তু আসল টার্গেট আরও আগেই গোছগাছ করে চলে গেছে। সম্ভবত তারা সবাই ভয় পেয়ে গতকাল কোন একটা সময় থেকে শহর ছেড়ে যাওয়া শুরু করে। তারা সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে ও দ্বিতীয় প্রধান সুরক্ষিত করেছে। ক্যাম্পাস হয়ে পশ্চিম দিকে রেলওয়ে লাইন দিয়ে পালানোর রাস্তা তারা বন্ধ করে দিয়েছে। অভার।

১৭. বেলাল’স বয়- কর্ণেল সায়েদউদ্দীনের নেতৃত্বে কমান্ড ইউনিট

১৮. আসল পাখি- শেখ মুজিব

১৯. H.R.- House Rain (মুজিবের বাসভবন)

ফ্রম ৯৯ রজার, অভার।

টু ৯৯  আশা করছি আপনি আপনার জিম্মিদের সাথে ভাল আছেন। অভার।

ফ্রম ৯৯ আমি ভাবছি তাদের এখন কিভাবে খাওয়াবো। অভার।

টু ৯৯  তাহলে এতে নিশ্চই কোন ক্ষতি হবে না যদি তারা কিছুদিন খাবারের চেহারা না দেখে যেন তারা তোমার পদ্ধতি যা তুমি এতো সপ্তাহ ধরে করে আসছ সেটা গ্রহণ করতে পার। আউট।

টু ৮৮ আপনি জানেন যে ক্যাম্পাসের পশ্চিম অংশে ৪১ অবস্থান করছে । আপনার যদি কোন সাহায্য সহযোগিতার দরকার হয় তবে আপনি সহজেই তার সাথে সমন্বয় করতে পারেন- কারণ ঐ জায়গায় যদি এখনও কোন প্রতিরোধ থেকে থাকে তবে সে আপনাকে পিছন থেকে সাহায্য করতে আসতে পারে। অবশ্যই আপনাকে আপনার বাহিনীতে সমন্বয় সাধন করতে হবে। অভার।

উত্তর অশ্রবণযোগ্য

কন্ট্রোল রজার। কতদূর পৌছেছেন? আর কত বাকি? অভার।

টু ৮৮ আপনার অবস্থা বেশ প্রশংসনীয়। রেললাইন থেকে আপনি কতদূর? দিনের আলো ফোটার কোন আশা কি আপনি দিতে পারবেন? অভার।

টু ৪১   আপনি আপনার ইমামকে বলুন আপনার এলাকার বিশিষ্ট লোকজনের তালিকার কাজ শুরু করতে। আপনি যত মহিলাকে চেনেন সবার থেকে তথ্য নিয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তির তালিকা করুন যাদের ব্যাপারে আমরা আগ্রহী হতে পারি। অভার।

টু ২৬  জিনিস আপনার কাছে এতক্ষণে পৌঁছে যাবার কথা। ওখানে একটু উলটাপালটা হয়েছে। আপনার কাছে নির্দেশনা ১৬ আছে যে চিতা আপনার কাছে কিন্তু আপনার চিতা আসলে আমাদের সাথে। আমি আপনার বাসভবনে চিতা পাঠিয়ে দিচ্ছি। দয়া করে ১৬ এর চিতা একই পরিবহনে আমাদের অবস্থানে পাঠিয়ে দেবেন। বুঝা গেল? অভার।

        ALPHA PILLO(২০), যেমনটা আগে বলা হয়েছিল, দয়া করে সব কালো ও বাংলাদেশী পতাকা এক্ষুণি সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করুন। যদি এটার অন্যথা হয় তবে যারা এ পতাকা উড়াচ্ছে তাদের উচিত শিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করুন। আউট………

কন্ট্রোল এটা অবশ্যই করতে হবে, অন্যথায় আপনি জানেন যে এতে অনেক জটিলতা ও সমস্যা দেখা দেবে। তাছাড়া আমি বিশেষ করে ধানমন্ডি গিয়েছিলাম ঘরে ঘরে তল্লাশী চালাতে। তুমি সময় নিতে পার। আপনি ব্লক বাছাই করে ঘরের প্রতিটা মানুষকে দেখতে পারেন- আপনার জানামতো কেউ থাকলে বাছাই করতে পারেন, সে গুরুত্ব বহন করলে আপনি তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেন ও বাকিরা তাদের ঘরে ফিরে যাবে। এইটুকুই আমার বলার ছিল। আপনার আমাকে কিছু বলার থাকলে বলুন। অভার।

.

.

ফ্রম  ৭৭ রজার সো ফার

টু  ৭৭  আপনার এলাকায় এটাই আপনার কাজ হবে যেভাবে ইমাম বলেছে প্রত্যেকটা সারি পুরোপুরি ঘেরাও করে ফেলতে হবে এবং যথাযথ সতর্কবার্তা দেবার পর সকল বাসিন্দাদের বের হয়ে আসতে বলা হবে এবং

বিখ্যাত কেউ আছে সেটা চেনার চেষ্টা করা হবে ।

ফ্রম  ৭৭ এরপর সেই বাড়িগুলোর ভেতরে খুজে দেখা হবে কেউ আছে কিনা । রজার সো ফার , ওভার ।

ফ্রম ৪১  এই ঘরেঘরে তল্লাশি নেওয়াটা খুবই শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে সংঘটিত করতে হবে যাতে কোন কিছুই অপরীক্ষিত না থাকে , এছাড়াও আপনি স্থানীয় মানুষদের সহায়তা নেবার চেষ্টা করতে পারেন যারা বিশ্বস্ততার

সাথে আপনাকে তাদের পৃথক করতে সহায়তা করবে । ওভার

বার্তাটি বোঝা যায়নি ।

টু  ২৬ পাঠানো হলো । ওভার ।

ফ্রম ২৬ মারখোরে বলেছে যে লেঃ কমান্ডার মোয়াজ্জেম (২১) কে পাক নিতে গিয়েছিল তখন সে প্রতিরোধ করে যেটাতে সে মারা যায় । কমান্ডার মোয়াজ্জেম মারা গিয়েছে । তার দেহ আমাদের কাছে আছে ।

টু ২৬ রজার ওভার

টু ৮৮ আপনার এই জায়গা শেষ করতে এবং আপনার আসল দায়িত্বের জায়গা যেটা নদী আর রেলওয়ে লাইনের মাঝে অবস্থিত সেখানে ফিরে আসতে  আর কতক্ষণ সময় লাগবে ? ওভার ।

৮৮ ফর ৭৭ এখন সোয়া সাতটা বাজে । আমি এই জায়গা থেকে ৮ টার সময় সরবো । আমার দেহগুলো সংগ্রহ করতে এক ঘণ্টার মত লাগবে । ওভার ।

টু ৮৮ রজার । আপনি তাদের এক জায়গা থেকে সংগ্রহ করতে পারেন এবং কল সাইন ২৬ কে হয়তো তাদের চূড়ান্ত বন্দোবস্ত করার কথা বলা যেতে পারে , ইমাম বলেছেন পরেও করা যাবে । এখনের জন্য তাদের

হয়তো আলাদা ভাগে হিসাব করা যাবে পুলিশ আর বেসামরিকে এবং কল সাইন ২৬ আপনি যখন আপনার জায়গায় ফিরে যাবেন তখন তাদের উপর নজর রাখতে পারবে। ওভার ।

ফ্রম ৮৮ রজার এই সময়ের মধ্যে আমরা তাদের সংগ্রহ করবো এবং কোন এক জায়গায় ফেলে দেবো এবং ২৬ কে জানাবো । আর কিছু ?

টু ৮৮ হ্যা , কারফিউ প্রত্যাহারের পতাকা অপসারণ এবং পথরোধকের অপসারণ প্রসংগে – ইমাম চাচ্ছেন যে এগুলা যথাযথভাবে সংঘটিত করতে এবং ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি স্থানীয় ভাষাতেও

এবং সবসময় যাতে এটা চলে কারণ একটা বৃহৎ সংখ্যক মানুষ নিয়মনীতি সম্পর্কে জানে না । আগামীকাল ৭ টা পর্যন্ত কারফিউ বহাল থাকবে । ওভার ।

ফ্রম ৮৮ উইলকো । এমনকি গত ৩-৪ ঘণ্টা ধরে আমরা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছি ।

টু ৮৮ ব্যক্তিগত সহকারী রসদ ।

এটা খুবই ভাল এবং যেভাবে ইমাম বলেছেন সেভাবে আপনার পুনঃসংগঠন ও প্রশাসন চালিয়ে যান । আপনার কাছে ।

২১* লেঃ কমান্ডার মোয়াজ্জেম কথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ২নম্বর আসামী ছিলেন ।

.

.

হ্যালো ২৬ ৪১ আপনি কি গ্রহণ করেছেন ? ওভার

হ্যালো ফর ৭৭ ৮৮ এর কাছে পাঠানো বার্তাটি ছিল , এক ঘণ্টার মধ্যে সে তার আসল দায়িত্বপ্রাপ্ত জায়গায় চলে আসবে এবং যেসব লাশ সংগৃহীত হয়েছে সেগুলা সহ দায়িত্ব গ্রহণ করবে ।

আপনার ইমাম ৮৮ এর ইমামের সাথে সমন্বয় করে নিতে পারে । ওভার

কন্ট্রোল  …… হ্যালো ৮৮ , নদীর দক্ষিণে একটি জায়গা আছে , নাম জিঞ্জিরা – এটা আপনার জায়গা থেকে নদীর ঠিক দক্ষিণে । আগেই এটা জানানো হয়েছিল যে অস্ত্র এবং গোলাবারুদ সেখানে বাছাই করা হচ্ছে ।

আরএসইউ এর কাছে হয়তো তাদের টহল শেষ করার পর কিছু তথ্য থাকতে পারে যেটার উপর আপনার নজর রাখা ভাল হবে , ওভার … ধন্যবাদ । আমাদের জানাবেন আপনি কখন ক্যাম্পাস এলাকা

শেষ করবেন এবং আপনার নিজের জায়গায় ফিরে যাবেন । ওখানে কি এখনো গোলাগুলি অব্যাহত আছে ? ওভার

ফ্রম ৮৮ এখানে কোন গোলাগুলি হচ্ছে না কিন্তু আমরা এখনি বের হচ্ছি এবং একটা বাড়ি থেকে একটা গুলি ছোড়া হয়েছে । তাই আমরা কয়েকজনকে সেখান থেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছি । আমার মনে হয়না এখন আর

কোন গোলাগুলি হবে । ওভার

টু ১৬ রজার । আর কোন বিবরণ কি আসছে ? সব অস্ত্র আর গোলাগুলি কি আপনার নিয়ন্ত্রনে ? ওভার ।

ফ্রম ১৬ হ্যা । তবে আট থেকে দশ জনের মত লোক রাইফেল আর ২০ রাউন্ড গুলি নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিল । ওভার ।

ফর ৭৭ এগুলা তুচ্ছ ঘটনা । কতজন এখন লাইনে বহাল আছে ? আপনি গুনে দেখেছে? ওভার ।

ফ্রম ১৬ টু ৭৭ আমরা এখনো অপরাধীদের পৃথক করার কাজে আছি এবং যখনি তাদের পৃথক ভাগে আলাদা করা হবে তখনই আমরা তাদের গণনা করবো । আমরা এখনো অপরপক্ষের কাউকে যেমন প্রতিবেশীদের

 যাদের মাঝে অফিসাররাও অন্তর্ভুক্ত তাদের কাউকেই ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেইনি । ওভার ।

টু ১৬ সেটাই ভাল । যেভাবে সবচেয়ে ভাল মনে করেন সেভাবেই করেন। সেটাই সবচেয়ে সুবিধাজনক। কোন তাড়া নেই । যদি আপনার কোন গোলাবারুদের প্রয়োজন হয়, আমার মনে হয়না হবে, আপনার

উপাদানগুলো ছাড়া যেটা ৮৮ কে সহায়তা করেছিল যা আমাদের কাছে হস্তান্তরিত হয়েছিল । আউট

ফ্রম ১৬ সেই উপাদান এখন আমাদের সাথে নেই । আমি পরামর্শ দেবো আপনি এ ব্যাপারে ৮৮ এর সাথে যোগাযোগ করুন ।

টু ১৬ রজার – কিন্তু ৮৮ এখন তার আসল দায়িত্বপ্রাপ্ত জায়গায় ফিরে যাচ্ছে , যেটা রেলওয়ে লাইনের দক্ষিণে এবং আপনার উপাদান , আমার ধারণা মতে , আপনার কাছেই ফেরত যাবে ।

যাই হোক না কেন , আমরা তার থেকে উপাদান আদায় করবো । আউট

টু ৮৮ ইমাম সাহেব চাইছেন , যখন আপনি আপনার জায়গা থেকে সরে যাবেন তখন সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনে নিরাপত্তা জোরদার করবেন – আমি আবারও বলছি সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন যেখানে আপনি প্রথমে কিছু

উপাদান রেখেছিলেন । আপনার এলাকায় যাবার আগে এর নিরাপত্তা জোরদার করবেন । ৮৮ ওভার।

.

.

ফ্রম ৮৮ উইলকো ওভার

টু ৮৮ হয়ে যাবে । আপনার মতে বিশ্ববিদ্যালয়ে হতাহতের সংখ্যা কত হতে পারে – আমাকে আপনার দৃষ্টিকোণ থেকে শুধু একটা ধারণা দিলেই চলবে । নিহত বা আহত বা বন্দীর সংখ্যা কতজনহতে পারে ?

আমাকে শুধু একটা মোটামুটি সংখ্যা দিলেই চলবে ওভার ।

ফ্রম ৮৮ দাঁড়ান , প্রায় ৩০০ এর মত । ওভার

টু ৮৮ সাবাশ, ৩০০ নিহত ? আর কোন আহত বন্দী হয়েছে ? ওভার এসআইটিআরইপি

ফ্রম ৮৮ আমি কেবল একটা বিষয়েই বিশ্বাস করি – ৩০০ নিহত । ওভার ।

টু ৮৮ জি আমি আপনার সাথে একমত এটা বেশি সহজতর – না, কিছু জানতে চাওয়াও হয়নি কিছু করাও হয়নি , আপনাকে কোনকিছুর ব্যাখ্যাও দিতে হবে না। আবারও বলছি সাবাশ ; আবারও বলছি

আমি সব ছেলেকেই শাবাশি দিতে চাইব আজিজকে সহ যে এই জায়গায় এই চমৎকার কাজটি করার সময় আপনার পাশে ছিল । আমি খুবই সন্তুষ্ট । ওভার ।

.

.

শিরোনামঃ ১৪১। সামরিক আইনের কয়েকটি বিধি জারী

সূত্রঃ পাকিস্তান অবজারভার

তারিখঃ ২৮ মার্চ, ১৯৭১

.

সামরিক আইন আদেশ

আদেশে লে. আদি. টিক্কা খান SPK. পিএসসি. এমএলএ

ZOVE `বি ‘এমআইএল জোন` বি’

.

অর্ডার. 1. যেহেতু একটি কবরের অবস্থা পূর্ব পাকিস্তানে উদিত হয়েছে, যা বর্তমানে প্রশাসনের খোলা অবাধ্যতা, MLRs/MLOs লঙ্ঘনের বিপদ্ এবং পাকিস্তানের অখণ্ডতা লাগামহীন রাজনৈতিক কার্যকলাপ একটি ফল হিসেবে স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণের বাইরে একটি ভীতিকর অনুপাত পরিগৃহীত হয়েছে বেসামরিক প্রশাসন। পুলিশ ও ইপিআর, এবং যেহেতু জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এটা কার্যকরভাবে অধোগামী পরিস্থিতি গ্রেফতার করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়। তাই এখন আমি 1 লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান SPK, এতদ্দ্বারা এমএল আদেশ জারী করেন।

MLO নং 117- কোন ধরনের যাই হোক না কেন পূর্ব পাকিস্তানে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক কার্যকলাপ। কোন ব্যক্তি বা পরিচর্যা সংগঠিত বা খোলা বা অন্দর কোন ব্যক্তি যাই হোক না কেন প্রকৃতির কোনো মিছিলে অংশ গ্রহণ করিবে হয় একটি বক্তৃতা করাব।

MLO নং 118 -কোন সংবাদ বক্তৃতা, পোস্টার বা লিফলেট সংবাদ প্রকাশিত বা এতদুদ্দেশ্যে নিযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পূর্বে সেন্সরশিপ ছাড়া পর্যন্ত টিভি বা রেডিও ঘোষণা করা হইবে না।

MLO নং 119- কোন সংবাদ বা মতামত জন্মদান বা পূর্ব পাকিস্তানে রাজনৈতিক বা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর একটি শুনানির আছে সম্ভবত সম্প্রচার বা অনুষ্ঠান প্রচার করা বা অন্যথায় ছড়িয়ে প্রকাশিত বা সেন্সরশিপ কেন্দ্র স্থাপন দ্বারা পূর্বে সেন্সর ছাড়া পর্যন্ত কোনো পদ্ধতিতে যোগাযোগ না করা সদর দপ্তর এমএলএ জোন `বি ‘ও উপ-প্রশাসক এতদুদ্দেশ্যে এমএল। রেডিও ব্যক্তি, ব্যাংক মিশন বা অন্যান্য মিত্র সেবা বা সংস্থা দ্বারা আবিষ্ট ট্রান্সমিটার ধরনের সংবাদ বা মতামত ছড়াতে টেলিপ্রিন্টার মিডিয়া মাধ্যমে বার্তা প্রেরণ অন্তর্ভুক্ত।

MLO নং 120 – সকল ব্যক্তিদের মধ্যে সব সরকার যাই হোক না কেন ক্ষমতা নিযুক্তি, আধা সরকারি। আধা স্বায়ত্তশাসিত বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পিআইএ ব্যতীত 1000 ঘ় দ্বারা তাদের নিজ নিজ বিভাগের দায়িত্ব জন্য রিপোর্ট করবেন। এই অর্ডার ব্যর্থ হলে তাদের সেবা দায়ী ইস্যুর 27.3.71 এই আদেশের অমান্যের জন্য একটি সামরিক আদালতে বিচারের দ্বারা অনুসৃত বন্ধ করে দেওয়া হবে। বিভাগের প্রধানদের মেজর জেনারেল সুশীল বিষয়াবলি অনুপস্থিত নাম জমা দিতে হবে। MLO নং 121 -পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যন্ত আরও অর্ডার বন্ধ থাকিবে।

MLO নং- 122 কোন ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্র,  গোলাবারুদ, বিস্ফোরক অধিকারী হইবে না। সকল ধরনের কূটনৈতিক কর্মী ব্যতীত ব্যক্তি অবিলম্বে এই অর্ডার ইস্যু 24 ঘন্টার মধ্যে নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে যেমন অস্ত্র সমর্পণ এবং সঠিক রসিদ পেতে হইবে।

.

.

এই আদেশ সশস্ত্র বাহিনী বেসামরিক সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না। যাচাইকরণ লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র মালিকদের পরে ফেরত পাঠানো হবে।

MLO নং 123- সকল ব্যাংকের পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের অবিলম্বে বন্ধ এবং বৈদেশিক মুদ্রা পর্যন্ত বিপরীত বিজ্ঞাপিত সহ অর্থ লেনদেনের থাকিবে। ব্যাংকের নিচে ক্লোজিং সব হিসাব জব্দ এবং পৃথক লকার এর সিলমোহর অন্তর্ভুক্ত করা হবে। MLO নং 124 – কোন ব্যক্তি সংগঠিত বা সশস্ত্র আধা সামরিক বা স্বেচ্ছাসেবক সেনাদল বা অক্জিলিয়ারী বাহিনী আকারে গ্রহণ লক্ষ্যে কার্যক্রম ইচ্ছাপূরণ হইবে।

MLO নং 125 -কোন ব্যক্তি কোন লাঠি, লোহার রড, রামদা বা অন্য কোন প্রাণঘাতী বা ভয়ংকর অস্ত্র যা একজন ব্যক্তির একটি আঘাত হতে পারে বহন করিবে না।

MLO নং 126- পাচঁ বা ততোধিক ব্যক্তির পরিষদের কারফিউ উদ্ধরণ পর পরবর্তী 72 ঘণ্টা পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান জন্য অনুমতি চাওয়া হতে পারে।

MLO নং 127 -স্ট্রাইকস, লকআউট এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি কর্মকর্তা, জনহিত কাজ ও ইনস্টলেশনের, সেবা এবং পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের শিল্প উদ্বেগ মধ্যে আন্দোলন অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা হবে। MLO নং 128 – কোন বিদেশী পূর্ব পাকিস্তানে কাজ বা বসবাসকারী পাবে পাস বা কোন প্রকার বা বর্ণনার অস্ত্র এমএলএ লিখিত অনুমতি ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত বা প্রচ্ছন্নভাবে পূর্ব পাকিস্তানে কেউ বিতরণ করে।

MLO নং 129 – কোন ব্যক্তি লুট করবে `ঘেরাও ‘`জ্বালাও’ বা অগ্নিসংযোগ অথবা অন্তর্ঘাত, বা বৈধরূপে প্রতিষ্ঠিত সরকারকে উত্খাত অন্যান্য সমস্ত কাজের মধ্যে ইচ্ছাপূরণ বা কোনো বিদ্রোহসংক্রান্ত কার্যকলাপ ইচ্ছাপূরণ বা পুলিশ বা ইপিআর বা অন্য কোন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্থা মধ্যে অনাত্মীয় তৈরি। MLO নং 130- সেনা কর্মিবৃন্দ কোনো অস্ত্র বা নাশকতামূলক সাহিত্য পুনরুদ্ধার করা দেওয়া অনুসন্ধানের পার্টি কম এক কমিশন্ড অফিসার এবং দুই অপরশ্রেণিক সমন্বয়ে গঠিত হইবে না উদ্দেশ্যে কোনো জায়গা, দোকান, বাসভবন বা আবাসস্থল একটি সার্চ করতে অনুমোদিত হয়। মেয়াদ কমিশন্ড অফিসার একজন জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার রয়েছে।

MLO নং 131- cyclostyling এবং প্রজনন যন্ত্র সকল মালিকদের এই অর্ডার ইস্যু 24 ঘন্টার মধ্যে উপ-প্রশাসক সামরিক আইন সদর দপ্তর সঙ্গে এই ধরনের যন্ত্রগুলোকে জমা দিবেন। 2. এই অর্ডারের কোনো অমান্য MLR -25 যা দশ বছর R.I বা প্রাসঙ্গিক MLRs উল্লেখিত সর্বোচ্চ শাস্তি ব্যবস্থাপত্র বিধানাবলী আকৃষ্ট করবে।

স্থান: ঢাকা, তারিখ: 25 মার্চ, 1971

MLO 132 উপর `নির্দেশনা ‘বিলুপ্ত আওয়ামী MLO লেফট্যানেন্ট জেনারেল টিক্কা খান SPK দ্বারা. পিএসসি. এমএলএ. জোন `বি ‘এমএল জোন` বি’ আদেশ নং 132.

সমস্ত সরকারি এবং আধা সরকারি. ব্যাংক বা স্বায়ত্তশাসিত কিংবা আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের যারা ছিল অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তা সহ

.

.

প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এযাবৎ তথাকথিত `ডিরেক্টিভ ‘(অবলুপ্ত) আওয়ামী লীগের দ্বারা জারি অন্তর্ভুক্ত নির্দেশাবলী মেনে চলার হয়েছে, ডিরেক্টিভ লগ্ন ক্ষান্ত হইবে জমি বা পদ্ধতির জন্য আইন অনুযায়ী কাজ স্বাভাবিক ভাবে ফিরে আসতে এর কাজ যেমন বিভাগের বা মৃতদেহ ব্যর্থতা মেনে চলতে তাদের অর্ডার দিয়ে বিধানানুযায়ী দণ্ডনীয় হইবেন MLR-25 যা পাবলিক উচ্চ উপায় বা দশ বছর সশ্রম MLO নং 133- রোড ব্লক বা ব্যারিকেড বা নির্মাণ বা পরিখা নির্মানের সর্বোচ্চ শাস্তি ব্যবস্থাপত্র রাস্তা বা রেল বা রানওয়ে যানবাহন বা অপসারণ অন্য কোন উপায়ে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত নিষিদ্ধ করা হয়। বাড়ি বা ভবন বা বাক্য যেমন একটি বাধা দুপাশে 100 গজ ব্যাসার্ধের মধ্যে অবস্থিত ধ্বংস করা দণ্ডনীয় হইবেন এবং বাসিন্দাদের যা দশ সর্বোচ্চ শাস্তি ব্যবস্থাপত্র MLR -25 এর বিধান মোতাবেক বিঘ্ন ঘটাচ্ছে জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা সাপেক্ষে হতে হবে বছর সশ্রম প্লেস। ঢাকা, তারিখ 26 মার্চ, 1971

MLO নং 134 – যেহেতু আওয়ামী লীগের ফান্ড পাবলিক সদস্যদের এবং যেহেতু এটা নিশ্চিত করার জন্য যে পূর্ব পাকিস্তানে বলেন তহবিল ব্যবহার বা কাজে লাগানো না হয় এমনভাবে হানির কারণ প্রয়োজনীয় অবদান আছে জনস্বার্থ। অতএব এখন আমি, লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এমএলএ, জোন `বি ‘এতদ্দ্বারা নির্দেশ করে: – (ক) পূর্ব পাকিস্তানে বলেন তহবিলের সকল লেনদেন অবিলম্বে নিথর হইবে প্রভাব

 (খ) কোন ব্যক্তি হইবে, পরে এখানে অ্যাকাউন্ট অপারেট এতদুদ্দেশ্যে (বলেন তহবিল বিষয়াবলি আমার নির্দেশ অধীন প্রণীত হয়েছে তদন্তের পর) আমার দ্বারা জারি আদেশ অনুযায়ী ব্যতীত বলেন তহবিলের হয়

(গ) ব্যাংক বা ফার্ম বা উদ্বেগ এই আদেশ জারীর তারিখ হইতে তিন দিন, সম্পদ আত্মসমর্পণ এবং এই সদর দফতরে জমা মধ্যে বলেন, তহবিলের হিসাব তাদের দ্বারা অনুষ্ঠিত যেমন থেকে আমানত বিবরণ এবং প্রত্যাহারের আউট সেটিং করবে হিসাব।

 স্থান: ঢাকা, তারিখ 26 মার্চ, 1971.

.

.

শিরোনামঃ ১৪২। সামরিক আদেশ বলে অফিসার ও প্রশাসক নিয়োগ

সূত্রঃ পাকিস্তান অবজারভার

তারিখঃ ৭ এপ্রিল, ১৯৭১

.

এম এল ও নং ১৩৭

চট্টগ্রামে এম.এল.এ এর সংযোগ কর্মকর্তা নিয়োগ

লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এস.পি.কে,পি.এস.সি,এম.এল.এ, জোন ‘বি’  এম.এল জোন ‘বি’কর্তৃক মার্শাল ল’ আদেশসমূহ। আদেশ নং – ১৩৭

১। আমি, লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এস.পি.কে, পি.এস.সি, এম.এল.এ, জোন ‘বি’ এতদ্বারা পি.এ-৫৭ ব্রিগেডিয়ার এম.এম.এ বেগ (অবসরপ্রাপ্ত)কে ঠিকানা: হেগ অ্যান্ড কো-স্পেন্সার ভবন,চট্টগ্রাম তাৎক্ষণিকভাবে এম.এল এর সংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করলাম।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল এম.এল.এ জোন ‘বি’ (টিক্কা খান)

স্থান: ঢাকা। তারিখ: ৬ এপ্রিল,৭১

এম এল সেক্টর-৫

উপ-প্রশাসক

লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এস.পি.কে, পি.এস.সি, এম.এল.এ, জোন ‘বি’ কর্তৃক এম.এল.এ আদেশ

এম এল জোন ‘বি’ আদেশ নং-১৩৬

১। ৬ এপ্রিল,১৯৭১ এ ভাইস-কমডর এ.আর মুনতাজ এস.কে টি.পি.কে, পি.এন(পি.এন-১০০) এবং উপ-প্রশাসক, সেক্টর-৬ (চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রামের পার্বত্য এলাকাসমূহ) অব্যাহতিপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে আমি, লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এস.পি.কে, পি.এস.সি, এম.এল.এ, জোন ‘বি’ এতদ্বারা পিএ-১৬৬০ ব্রিগেডিয়ার সৈয়দ আসগর হাসানকে পি.এস.সি, টি.কিউ.এ এম.এল সেক্টর-৫ এর উপ-প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করছি।

২। এলাকা: পুরো চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামের সাধারণ জেলাসমূহ, পার্বত্য এলাকা এবং বন্দর এলাকা এর অন্তর্ভুক্ত।

৩। হেডকোয়ার্টার: চট্টগ্রাম।

৪। এম.এল জোন ‘বি’ আদেশ নং ৮৬ ও ১১৩ বাতিল করা হয়েছে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল এম.এল.এ জোন ‘বি’ (টিক্কা খান)

স্থান: ঢাকা। তারিখ: ৬ এপ্রিল,৭১।

.

.

শিরোনামঃ ১৪৩। গভর্নর পদে লেঃ জেঃ টিক্কা খানের শপথ গ্রহণ

সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান

তারিখঃ ১০ এপ্রিল, ১৯৭১

.

গভর্নর পদে জেনারেল টিক্কা খানের শপথ গ্রহন

.

লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এসপিকে গতকাল (শুক্রবার) গভর্নর ভবনে এক ভাবগম্ভির অনুষ্ঠানে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হিসেবে শপথ গ্রহন করেছেন। শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ঢাকা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জনাব বি, এ সিদ্দিকী এস পিকে।

 এপিপির এই খবরে বলা হয় যে, কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করা হয় এবং শপথ গ্রহনের সাথে সাথেই পতাকা উত্তোলিত হয়।

শপথগ্রহন অনুষ্ঠানে ঢাকা হাইকোর্টের বিচারপতিবৃন্দ, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যগন এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন।

.

শিরোনামঃ ১৪৪। সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক ঠাকুরগাঁও দখল

সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান

তারিখঃ ১৬ এপ্রিল, ১৯৭১

.

প্রতিরোধের সকল কেন্দ্র নির্মূল কড়া হয়েছে

সশস্ত্র বাহিনী ঠাকুরগাঁও পুরোপুরি দখল করে নিয়েছে

.

 পাকিস্তান সেনাবাহিনী দিনাজপুরের আরও উত্তরে এগিয়ে ঠাকুরগাঁও পুরোপুরি দখল করে নিয়েছে। এর আগেই পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী দিনাজপুর থেকে সকল প্রতিরোধকারীকে বিতারন করে।

 দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁয়ের মধ্যে প্রতিরোধের সকল কেন্দ্র নির্মূল কড়া হয়েছে এবং পুরো অঞ্চল এখন দুষ্কৃতকারী ও অনুপ্রবেশকারীদের কবল থেকে মুক্ত হয়েছে।

 গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় পরিবেশিত এই খবরে বলা হয় যে, প্রদেশের অন্য সকল স্থানে চট্টগ্রাম, যশোর, খুলনা, কুমিল্লা, সিলেট, পাবনা, লালমনিরহাট, সৈয়দপুর, রংপুর ও রাজশাহী সহ অন্যান্য সকল প্রধান শহর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কার্যকরী নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

 দেশদ্রোহীদের অবশিষ্ট পকেটগুলোকে উপযুক্তভাবে মোকাবিলা কড়া হচ্ছে। এই অভিযানে গোলযোগপূর্ণ স্থানে সৈন্য ও সরঞ্জাম পরিবহনে পাকিস্তানী বিমানবাহিনী অংশ নিয়েছিল। পিআইএ ফকার বিমানও পূর্ব পাকিস্তানে স্বাভাবিক সার্ভিস অক্ষুণ্ণ রেখেও যখনই প্রয়োজন মুল্লবান সহায়তা দান করেছে। উল্লেখযোগ্য যে, সকল প্রধান শহরের সাথে ফকার বিমান চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে।

.

.

শিরোনামঃ ১৪৫। জেনারেল টিক্কা খানের বেতার ভাষণ

সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান

তারিখঃ ১৯ এপ্রিল ১৯৭১

জেনারেল টিক্কা খানের বেতার ভাষণ

জাতীয় ক্ষতির প্রতিবিধানে এগিয়ে আসুন

গভর্নর লেঃ জেনারেল টিক্কা খানের বক্তৃতার পূর্ন বিবরণঃ

প্রিয় ভাইসব, আচ্ছালামু আলাইকুম। দেশকে খণ্ডবিখণ্ড হওয়া থেকে এবং পরিণামে ভারতীয় দাসত্বের কবল থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে রক্ষা করার দায়িত্ব পালনের জন্যই সেনাবাহিনীককে আহ্বান করা হয়েছিল। অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগ এমন এক পথ ধরেছিলো যাতে কিনা বহু ত্যাগের বিনিময়ে এই উপমহাদেশের থেকে প্রতিষ্ঠিত মুসলমানদের আবাস ভূমি আমাদের এই দেশ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যেত। পাকিস্তান সৃষ্টিতে অগ্রগামী ভূমিকা গ্রহণকারী পূর্ব পাকিস্তানী মুসলমানগণ এই দেশকে টিকিয়ে রাখতে দৃঢ়সংকল্প।

স্বল্পসংখ্যক লোক প্রকাশ্য হিংসা ও আক্রমণাত্মক তৎপরতার দ্বারা জানমাল বিপন্ন করে তুলে বেশীর ভাগ মানুষের কণ্ঠরোধ করেছিল। যার ফলে আওয়ামী লীগ ধ্বংসাত্মক পথ গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছিল। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, যারাই আওয়ামী লীগে ছিল তারাই জাতির সংহতি ও অখণ্ডতার বিরোধী। যারাই পাকিস্তানের মঙ্গল চান তাদের ভয় করার কোন কারণ নেই। আমি তাদের এগিয়ে আসার, অন্যদের সাথে যোগ দেওয়ার এবং জাতির যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।

সশস্ত্রবাহিনী, পূর্ব পাকিস্তান রাইফেল ও পুলিশের কিছু লোক কর্তব্যস্থান ছেড়ে গেছে। এদের কেউ কেউ ছুটিতে ছিল এবং আর কাজে যোগ দেয়নি, কেউ কেউ পরিবার পরিজনের জন্য উদ্বেগের কারণে তাদের ইউনিট ছেড়ে গেছে। আবার কেউ কেউ উচ্চাকাঙ্ক্ষী নীতিজ্ঞানশূন্য সিনিয়রদের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়েছে। যারা নিজেদের ইউনিটে পুনরায় যোগদান করবে এবং যারা দুষ্কৃতকারী ও দেশের শত্রুদের পরিত্যাগ করে নিকটবর্তী সামরিক বাহিনীতে হাজির হবে তাদের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সহানুভূতিশীল আচরণ করা হবে। আমি তাদের এই সুযোগ গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছি। অন্যথায় তাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হবে।

১লা মার্চ থেকে ২৫শে মার্চ পর্যন্ত সরকারী কর্মচারীগণ অফিসে যেতে পারেননি। কারণ তাদের জীবন ও তাদের পরিবার-পরিজনের জীবন বিপন্ন হয়েছিল। যে পরিস্থিতিতে তাদের কাজ থেকে বিরত থাকতে হয়েছে, আমি তা পুরোপুরি অনুধাবন করি। এখন যেহেতু দুষ্কৃতকারী ও ফ্যাসিষ্টদের দমন করা হয়েছে এবং শান্তি বিরাজ করছে, তাদের সর্বান্তকরণে অকুণ্ঠচিত্তে অকুতোভয়ে জাতি ও দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করা উচিত।

সশস্ত্রবাহিনী এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা অনুপ্রবেশকারী, দুষ্কৃতকারী, সমাজবিরোধী ও জাতিবিরোধী লোকদের ধ্বংস সাধনে দৃঢ়সংকল্প। আমি সকল নাগরিকদের এরূপ লোকদের আশ্রয় না দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় তারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। আমরা জানমালের হানি এড়াতে চাই। কিন্তু কতিপয় দুষ্কৃতকারী লোকদের বাড়িতে ও শহরে আশ্রয় নিয়ে সেনাবাহিনীকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য করছে। এর ফলে অনেক নির্দোষ লোককেও কষ্ট পেতে হচ্ছে এর জন্য সম্পূর্ণভাবে দুষ্কৃতকারীরাই দায়ী। তাদের আশ্রয় দেবেন না। খাদ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে আমি খুবই উদ্বিগ্ন। দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে এবং আরো খাদ্য আসছে। কিন্তু খাদ্য চলাচল যদি বিঘ্নিত হয় তাহলে সাধারণ মানুষ খুব কষ্টে পড়বেন। দুষ্কৃতকারীরা যাতে খাদ্য চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে না পারে, তার নিশ্চয়তা বিধান করা জনসাধারণের কর্তব্য এবং এ কাজে আমি প্রত্যেকের পূর্ণ সহযোগিতা কামনা করি।

পরিশেষে আমি এই আশ্বাস দিতে চাই, সেনাবাহিনী দেশপ্রেমিক জনগণের সহায়তায় দেশকে রক্ষা ও আইন শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কর্তব্য পালন করবে।

 .

.

শিরোনামঃ ১৪৬। কাজে যোগদানের নির্দেশ

সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান

তারিখঃ ২১ এপ্রিল ১৯৭১

সরকারী কর্মচারীদের কাজে যোগদান সম্পর্কে প্রেসনোট

পূর্ব পাকিস্তান সরকারের এক প্রেসনোটে বলা হয়েছে যে, সংবাদপত্র এবং বেতার ও টেলিভিশনে ঘোষণা করা হয়েছিলো যে, সরকারী বিভাগ, ডাইরেক্টরেট, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাসমূহের সকল কর্মচারীকে সর্বশেষ ১৯৭১ সালের ২১শে এপ্রিলের মধ্যে কাজে যোগদান করতে হবে অন্যথায় ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ জারীকৃত ১২০ নম্বর সামরিক আইন আদেশ অনুযায়ী শাস্তিদান ছাড়াও তাদের বরখাস্ত করা হবে। এটা অনুধাবন করা হয়েছে যে, বিশেষ আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও কোন কোন এলাকায় যোগাযোগের অসুবিধার জন্য কোন কোন কর্মচারীর পক্ষে নিজ নিজ অফিসে কাজে যোগদান সম্ভব নাও হতে পারে। এই সকল কর্মচারীকে নিকটবর্তী জেলা বা মহকুমা সদর দফতরে কোন বিভাগের কোন অফিস না থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের নিকটবর্তী ডেপুটি কমিশনার বা মহকুমা অফিসারের কাছে হাজির হতে হবে। এতে ব্যর্থ হলে তাদের উল্লিখিত ব্যবস্থা অনুযায়ী শাস্তিদান করা হবে।

উল্লিখিত নির্দেশ অনুযায়ী যে সকল কর্মচারী নিজেদের স্বাভাবিক কাজে স্থান ছাড়া অন্য ষ্টেশনে কাজে যোগদান করবেন, তারা তাদের স্বাভাবিক কাজ পুনরায় শুরু করার জন্য শীঘ্রই নিজেদের অফিসে হাজির হবেন। এটা পরিষ্কার করে বোঝা দরকার যে, নিজেদের অফিসে কাজে যোগদান না করা পর্যন্ত তাদের বেতন দেয়া হবে না।

২৪ জন নবনিযুক্ত জুট এক্সটেনশন অফিসারকে কাজে যোগদানের নির্দেশ

ইতিপূর্বে এসডিএও (জুট) পদে চাকুরীতে ২৪ জন নবনিযুক্ত জুট এক্সটেনশন অফিসারকে তাদের নামের পাশে উল্লিখিত স্থানে অবিলম্বে যোগদান করতে বলা হয়েছে। এপিপির খবরে প্রকাশ, প্রাদেশিক সরকারের এক হ্যান্ড আউটে বলা হয় যে তাঁদেরকে তাঁদের আনুষ্ঠানিক নিয়োগপত্রের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। নবনিযুক্ত অফিসাররা তাদের কর্মস্থলে কাজে যোগদানে যাতে কোন অসুবিধার সম্মুখীন না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখার জন্য কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্ট সহকারী ডাইরেক্টর (পাট উৎপাদন) ও জেলা কৃষি অফিসারদের উপদেশ দেওয়া হয়েছে। উপরোক্ত অফিসাররা ৩০০-৬৭৫ টাকা স্কেলে (তৎসঙ্গে প্রতিমাসে কারিগরি ভাতা ৫০ টাকা) বেতন পাবেন।

নিচে নবনিযুক্ত ২৪ জন জুট এক্সটেনশন অফিসারদের নাম দেওয়া হলোঃ

১। জনাব মাইজুদ্দীন আহমদ, টাঙ্গাইল।

২। জনাব এইচ, এম, আনিস আলম সিদ্দিক, নড়াইল, যশোর।

৩। জনাব মোঃ আনসার আলী, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর।

৪। জনাব মোঃ লুৎফর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা।

৫। জনাব মোঃ মোফাজ্জল হোসেন প্রামাণিক, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর।

৬। জনাব মোঃ আলাউদ্দীন খান, জামালপুর, ময়মনসিংহ।

৭। জনাব মোঃ আবুল মনসুর, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা।

৮। জনাব মোঃ মতিউর রহমান, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকা।

৯। জনাব মোঃ তৌফিক উদ্দীন, চাঁদপুর, কুমিল্লা।

১০। জনাব মোঃ মহসিন মিয়া, জামালপুর, ময়মনসিংহ।

১১। জনাব মোঃ আবু বকর সিদ্দিক, নওগাঁ, রাজশাহী।

১২। জনাব আব্দুল মুহিত, দিনাজপুর (সদর)।

১৩। জনাব মোঃ মতিউর রহমান শিকদার, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকা।

১৪। জনাব মোঃ এ, এইচ, এম মহিউদ্দীন, কুমিল্লা (সদর উত্তর)।

১৫। জনাব মোঃ শাহজাহান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা।

১৬। জনাব আব্দুর রাজ্জাক, রাজশাহী (সদর)।

১৭। জনাব মোঃ ওসমান গনি, নওয়াবগঞ্জ, রাজশাহী।

১৮। জনাব মোঃ নজমুল হোসেন, নাটোর, রাজশাহী।

১৯। জনাব নজরুল ইসলাম, নাটোর, রাজশাহী।

২০। জনাব মোঃ ফজলুল হক রিকাবদার, চাঁদপুর, কুমিল্লা।

২১। জনাব মোঃ জহীরউদ্দীন ভূঁইয়া, নাটোর, রাজশাহী।

২২। জনাব মোঃ রমজান আলী, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর।

২৩। জনাব মোঃ হজরত আলী, ঢাকা (সদর উত্তর)।

২৪। জনাব মোঃ ইউনুস, নরসিংদী, ঢাকা।

————–

শিরোনামঃ ১৪৭। সামরিক কর্তৃপক্ষের নিকট হাজির হওয়ার নির্দেশ

সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান

তারিখঃ ২১ এপ্রিল ১৯৭১

সামরিক কর্তৃপক্ষের নিকট ৫ জনকে হাজির হওয়ার নির্দেশ

‘খ’ অঞ্চলের সামরিক শাসনকর্তা লেঃ জেঃ টিক্কা খান ঢাকা, বাকেরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহের পাঁচ ব্যক্তিকে আগামী ২৬শে এপ্রিল সকাল ৮ ঘটিকায় ঢাকাস্থ দ্বিতীয় রাজধানীতে এক নম্বর সেক্টরের সামরিক আইনের সাব-এ্যাডমিনিষ্ট্রেটরের নিকট হাজির হওয়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সামরিক আইনবিধি ও সামরিক আদেশ অনুযায়ী আনীত কতিপয় অভিযোগের জবাব দানের জন্য তাদের হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা হাজির হতে ব্যর্থ হলে এম এল আর-৪০ অনুযায়ী তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার করা হবে।

গতকাল মঙ্গলবার পি আই ডির এক হ্যাণ্ড আউটে এই খবর পরিবেশন করা হয়। যে পাঁচ ব্যক্তিকে হাজির হওয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে তারা হলেনঃ

১। তাজুদ্দিন আহমদ, ৭৫১, ধানমণ্ডি আবাসিক এলাকা, সাত মসজিদ রোড, ঢাকা।

২। তোফায়েল আহমদ, গ্রাম-কোরলিয়া, পোঃ খৈয়ারহাট, জেলা-বাকেরগঞ্জ।

৩। এস, এম নজরুল ইসলাম, লাঙ্গুল শিমুল পোঃ-কান্দানিয়া জেলা-ময়মনসিংহ।

৪। আবদুল মান্নান, মনসুর ভিলা, ১১০, সিদ্বেশ্বরী, ঢাকা।

৫। আবিদুর রহমান, স্বত্বাধিকারী, দি পিপল, ঢাকা।

উপরোক্ত ৫ ব্যক্তিকে পাকিস্তান দণ্ডবিধির ১২১, ২২৩ক, ১৩১ ও ১৩২ নং ধারা এম এল আর ৬, ১৪, ১৭ ও ২০ এম এল ও ‘খ’ অঞ্চলের ১২৪ নং এবং ১২৯ নং ধারা বলে আনীত অভিযোগের জবাব দিতে হবে। এদের সকলের বিরুদ্ধে এইসব ধারাবলে অভিযোগ আনয়ন করা হয়েছে। এ ছাড়াও ৫ নং অভিযুক্তকে (আবিদুর রহমান) ‘খ’ অঞ্চলের এম এল ও-১১৭ ও ১১৯ নং ধারার সাথে পঠিত এম এল আর ১৯ নং ধারাবলে আনীত অভিযোগের জবাব দিতে হবে।

 .

শিরোনামঃ ১৪৮। সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক সীমান্ত সুরক্ষিত

সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান

তারিখঃ ২১ এপ্রিল ১৯৭১

পূর্ব পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ বন্ধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ সীমান্ত সুরক্ষিত করা হয়েছে

এপিপি পরিবেশিত খবরে প্রকাশ, পাকিস্তান সশস্ত্রবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের পূর্বে ও পশ্চিম উভয় অঞ্চলের সীমান্ত এলাকায় তাদের অবস্থান আরো সুসংহত করেছে এবং প্রতিবেশী ভারতীয় রাজ্যসমূহ থেকে আরো অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে সীমান্তসমূহ সুদৃঢ়ভাবে সুরক্ষিত করা হয়েছে।

চারদিন আগের সামরিক কার্যক্রমে কুমিল্লা এলাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়া এবং কুষ্টিয়া এলাকায় চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর আয়ত্তে আনার পর এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকাগুলো আয়ত্তে আনার পর সশস্ত্রবাহিনী এই সকল এলাকা দুষ্কৃতিকারী ও অনুপ্রবেশকারীদের বাদ বাকী আড্ডাগুলো উদ্ধার করেছে এবং অধিকাংশ লোক অস্ত্রশস্ত্র পিছনে ফেলে ভারতীয় এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। নয়াদিল্লী বেতার মিথ্যার ঐতিহ্য বজায় রেখে রাষ্ট্রবিরোধী ব্যক্তিগণের হাতে চুয়াডাঙ্গা ও কসবা পুনর্দখলের অলীক কাহিনী প্রচার করে আসছে।

ভারতীয় বেতারের খবরকে ভারতীয় হস্তক্ষেপকারীদের কল্পনার বিলাস বলে ঢাকায় সরকারীভাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে এবং উল্লেখ করা হয়েছে যে সেনাবাহিনী কর্তৃক আয়ত্তে আনার পর এই সকল এলাকা তাদের সুদৃঢ় নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নয়াদিল্লী বেতার সিলেট বিমান ক্ষেত্র সম্পর্কে মিথ্যা প্রচার করে আসছে এবং অনবরত এটাকে শালুটকর বিমানক্ষেত্র বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।

ঢাকায় সরকারীভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই বিমানক্ষেত্র সিলেট বিমানক্ষেত্র বলে পরিচিত এবং এটাকে অন্য যে কোন নামে আখ্যায়িত করা ভুল হবে যেমন ভুল হবে ভারতে উত্তর প্রদেশকে যুক্ত প্রদেশ আখ্যায়িত করা।

ঢাকায় আরো বলা হয়েছে যে, সিলেট বিমান বন্দর সর্বদাই সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে এবং পি আই এ ঢাকা থেকে এই বিমান বন্দরে নিয়মিত ফ্লাইট চালিয়ে আসছে।

.

.

পৃষ্ঠা ৪৬৬

শিরোনাম সূত্র তারিখ

১৪৯। ১৪৮ নং সামরিক বিধি জারী

 

পাকিস্তান অবজারভার ২৭ এপ্রিল, ১৯৭১

১৪৮ নং এমএলও (সামরিক বিধি অধ্যাদেশ) জারী-

সরকারী সম্পত্তির ক্ষতিতে মৃত্যুদন্ডাদেশ

সামরিক আইন প্রশাসক, সদর দপ্তর জোন `বি’ ( ‘খ’ অঞ্চল) হতে জারীকৃত এমএলও  বিধি ১৪৮ অনুযায়ী,  কোন ব্যক্তি যদি যোগাযোগের মাধ্যমসমূহ, গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা অথবা সরকারী সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করে তবে তিনি এই ধারায় দন্ডিত হবেন যার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত হতে পারে। গতকাল এপিপি এই খবর প্রকাশ করে।

এই একই আদেশ (এমআরএল এবং এমএলও এর সংশ্লিষ্ট বিধির অধীনে) যে এলাকায় নাশকতা ঘটবে সেই এলাকার অধিবাসীগনের উপরও বলবৎ হবে।

এমএলও এর ধারা ১৪৮ এর বক্তব্য/আদেশ নিম্নে দেয়া হলো

১। কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ যদি সড়ক রেলপথ, খাল, বিমানঘাঁটি, টেলিগ্রাফ, টেলিফোন, বেতার স্থাপনা বা কোন সরকারী সম্পত্তি সক্রান্ত কোন কার্যে  ক্ষতিসাধন করে, বিনষ্ট করে অথবা হস্তক্ষেপ করে তাহলে এমআরএল ১৪ ধারার অধীনে শাস্তিযোগ্য হবেন এবং সর্বোচ্চ মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হবেন।

২। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানের অধিবাসীগন কিংবা কোন নির্দিষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত স্থান বা স্থানসমূহের অধিবাসীগনও এমএলও  জোন `বি'(‘খ’ অঞ্চল)  হতে জারীকৃত আদেশ নং ১৩৩ এর সহিত পঠিত এমআরএল ২৫ এর অধীনে সমষ্ঠিগতভাবে এই দন্ডবিধির  আওতায় পড়বেন।

.

.

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৫০। সীমান্ত এলাকার কর্তৃত্ব সুদৃঢ় করার নির্দেশ পূর্বদেশ ৭মে, ১৯৭১

লেঃ জেঃ নিয়াজীর সিলেট সফর

সীমান্ত এলাকার কর্তৃত্ব সুদৃঢ় করার নির্দেশ

ঢাকা, ১০ই মে (এপিপি)। ইস্টার্ন কমান্ডের কমান্ডার লেঃ জেঃ এ, এ, কে, নিয়াজী গত রবিবার সিলেট এলাকা সফর করেন তিনি সিলেট পৌঁছলে সেনাবাহিনীর স্থানীয় কমান্ডার তাঁকে অভ্যর্থনা জানান এবং পরে ঐ এলাকার দূষ্কৃতকারী নির্মূল অভিযানের অগ্রগতি তাঁকে অবহিত করেন। তাঁকে জানানো হয়, সীমান্ত পর্যন্ত সমগ্র এলাকায় সেনাবাহিনী তল্লাশী ও গ্রেফতার অভিযান চালায়। এলাকাটি পুরাপুরি তাদের আয়ত্ত্বে রয়েছে।

স্থানীয় কমান্ডার বলেন যে, রাষ্ট্রবিরোধী লোকজন ও ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের সীমান্ত সন্নিহিত গোপন আড্ডাগুলোতেও অভিযান চালানো হচ্ছে। দেশপ্রেমিকেরা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে এসব গোপন আড্ডা সম্পর্কে যথাযথ খবর দিচ্ছে। তারা রাষ্ট্রবিরোধী ব্যক্তি ও ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দেয়নি।

জেনারেল নিয়াজী মোটরে হেমুতে যান। এই স্থানটি সিলেট শহর থেকে ১৫ মাইল উত্তরে অবস্থিত। ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের প্রবেশ পথ বন্ধ করার জন্যে সেই এলাকায় যে ব্যবস্থা করা হয়েছে তিনি তা পরিদর্শন করেন। সীমান্ত এলাকাটিতে কর্তৃত্ব আরো দৃঢ় করার জন্য তিনি ওখানেই আদেশ দেন।

গ্রাম এলাকার মধ্য দিয়ে পনের মাইল ব্যাপী ভ্রমণকালে জেঃ নিয়াজী দেখেন যে, চাষীরা বোরো ধান কাটছে এবং গরুর পাল চরছে মাঠে। গ্রামাঞ্চলও সিলেট শহরের মত শান্ত। হিমু থেকে ফেরার পথে তিনি সিলেট বাজারের মধ্য দিয়ে আসেন। বাজারের পরিবেশ স্বাভাবিক।

জেনারেল নিয়াজী বিকেলে ঢাকায় ফিরে আসেন।

.

.

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৫১। পূর্ব পাক সরকারের প্রধান সচিবের কাছে বেসামরিক বিষয়ক সামরিক কর্মকর্তা রাও ফরমান আলীর চিঠি সরকারী দলিলপত্রঃ উদ্ধৃতঃ ‘এক্সপেরিয়েন্স অব এন এক্সাইল এট হোম’- মফিজুলাহ কবীর ডিসেঃ ১৯৭২ ৭ মে, ১৯৭১

সদর দপ্তর এমএলএ জোন `বি’

বেসামরিক বিষয়ক(সিভিল অ্যাফেয়ার্স)

গভর্নর হাউস

ঢাকা (পূর্ব পাকিস্তান )

নং-২৯০/আর/এ৭৯৪। ৭মে, ১৯৭১

প্রতি

প্রধান সচিব

পূর্ব পাকিস্তান সরকার,

ইডেন বিল্ডিংস, ঢাকা।

লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন বিভাগ ও অধিদপ্তর এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার প্রধানগন  তাদের দেয়া বেতার আলোচনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে অতীতের অর্জন এবং ভবিষ্যৎ অভিপ্রায় তুলে ধরছেন এবং বর্তমান পরিস্থিতি সম্মন্ধে খুব সামান্যই উল্লেখ করছেন।

তাদের অবহিত করা হচ্ছে যে তারা এ বিষয়ে বাস্তব প্রেক্ষাপটকে গুরুত্ব সহকারে নিবেন  এবং সংকট হতে উত্তোরনের জন্যপ্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের দিকনির্দেশনা  দিবেন, এটাই কাম্য। তাদের বক্তব্যে মাঠ পর্যায়ের জনবলের দায়িত্ব এবং  জনসাধারণের সহযোগিতার বিষয়টি যেন জোর দেন।

মেজর জেনারেল

বেসামরিক বিষয়ক সামরিক কর্মকর্তা

(স্বাক্ষরিত/-)রাও ফরমান আলী খান

নং-সিএআইভি/১০৯/৭১-২৮৯ তাং;ঢাকা ১৩মে;১৯৭১

রেজিস্ট্রার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর নিকট জ্ঞাতার্থে এবং দিক নির্দেশনা প্রদানের জন্য অনুলিপি প্রেরণ করা হলো।

স্বাঃ/-এজেডএম. শামসুল আলম.সিএসপি

                                                            উপ-সচিব

পূর্ব পাকিস্তান সরকার.

এসএন্ডজি এ (জি এ) বিভাগ

সংবিভাগঃ

বিভাগীয় প্রধানগন।

স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা সমূহের চেয়ারম্যান

অধিদপ্তরের প্রধানগণ

নং.জিএআইভি/১০৯/৭১-২৮৯/১তাং… ১৩/৫/১৯৭১

মেজর জেনারেল, সিভিল অ্যাফেয়ার্স,গভর্নর হাউস ঢাকা এর অবগতির জন্য অনুলিপি প্রেরণ করা হলো।

স্বাঃ (অস্পষ্ট)

উপ-সচিব

.

.

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৫২। কর্ণেল ওসমানীকে হাজির হওয়ার নির্দেশ পূর্বদেশ ১৪ মে, ১৯৭১

কর্ণেল ওসমানীকে হাজির হওয়ার নির্দেশ

        ঢাকা, ১৩ই মে (এপিপি)। ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক আগামী ২০ শে মে সকাল আটটার সময় ঢাকার দ্বিতীয় রাজধানীস্থ ১ নং সেক্টরে উপ- সামরিক আইন প্রশাসকের সামনে হাজির হবার জন্যে অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল এম এ জি ওসমানীকে নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পাকিস্তান দণ্ডবিধির ১১২, ১২৩, ১৩১ এবং ১৩২ নম্বর ধারা এবং ১০ ও ১৪ নম্বর সামরিক আইন বিধি অনুযায়ী আনীত অভিযোগের জবাব দেয়ার জন্যেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

        ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক যে আদেশ দেন নীচে তা দিয়ে দেয়া হলোঃ-

        ১। ৪০ নম্বর সামরিক আইন বিধি অনুযায়ী প্রাপ্ত ক্ষমতাবলে আমি ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেঃ টিক্কা খান এস, পিঁ, কে, পি এস সি আপনি কর্নেল এম, এ, জি ওসমানীকে (অবসরপ্রাপ্ত) আপনার বিরুদ্ধে পাকিস্তান দণ্ডবিধির ১২১, ১২৩, ১৩১ ও ১৩২ নম্বর ধারা এবং ১০ ও ১৪ নম্বর সামরিক আইনবিধি অনুযায়ী আনীত অভিযোগের জবাব দেয়ার জন্যে ১৯৭১ সালের ২০ শে মে সকাল আটটার সময় ঢাকার দ্বিতীয় রাজধানীস্থ ১ নম্বর সেক্টরের উপ- সামরিক আইন প্রশাসকের সামনে হাজির হতে আদেশ দিচ্ছি।

        ২। যদি আপনি উপরের উল্লেখমত হাজির হতে ব্যর্থ হন তা হলে আপনার অনুপস্থিতিতেই ৪০ নম্বর সামরিক আইন বিধি অনুযায়ী আপনার বিচার করা হবে।

————————-

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৫৩। সাংবাদিক সাক্ষাৎকার লেঃ জেঃ টিক্কা খান পূর্বদেশ ১৬ মে, ১৯৭১

সাংবাদিক সাক্ষাৎকারে গভর্নর লেঃ জেনারেল টিক্কা খানঃ

সশস্ত্র প্রতিরোধ নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে

        ঢাকা, ১৫ই মে (এপিপি)। পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর ও প্রাদেশিক সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেঃ টিক্কা খান বলেন যে, সারা প্রদেশ থেকে সুগঠিত সমস্ত প্রতিরোধ নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে। তবে প্রদেশের অভ্যন্তরভাগে কোথাও কোথাও লুট, সন্ত্রাস, কিংবা নিরীহ জনগণকে হয়রানি ধরনের কিছু কিছু বিক্ষিপ্ত দুষ্কর্ম চলছে বলে তিনি জানান।

        গভর্ণর এক ঘরোয়া পরিবেশে দুজন বিশেষ সংবাদ দাতার সাথে আলাপ করছিলেন। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে এসে এক সময় পূর্ব পাকিস্তান সফরের পর বিশেষ সংবাদ দাতা দুজন গতকাল গভর্ণর হাউসে গভর্নরের সাথে দেখা করেন।

        গভর্ণর টিক্কা খান সাংবাদিকদের সাথে ৪৫ মিনিটকাল আলোচনার সময় প্রদেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি ভারতীয় —- পূর্ণ প্রশাসনিক কর্তৃত্ব স্থাপন এবং অর্থনৈতিক জীবনধারার পুনর্জীবন বিষয়গুলো বিশেষভাবে জানান।

অনুপ্রবেশকারীরা সুবিধা করতে পারবে না।

        এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন যে, দুষ্কৃতিকারীদের কার্যকলাপ সেনাবাহিনীর লোকেরা বন্ধ করে দিচ্ছেন এবং তাদের নির্মুল করতে বেশীদিন লাগবে না। অনুপ্রবেশকারীদের সম্পর্কে জেনারেল টিক্কা খান বলেন যে, কোন কোন এলাকায় ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীরা ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সে চেষ্টায় তারা সুবিধা করতে পারেনি।

জনশক্তির সদ্ব্যবহারের জন্য স্কীম

        গভর্নর টিক্কা খান বলেন যে, প্রাপ্ত প্রশাসনিক জনশক্তির পূর্ণ সদ্ব্যবহার করার জন্য তিনি একটি স্কীম তৈরী করছেন। এর জন্য জেলা পর্যায়েও পূর্ণভাবে সাহায্য করা সম্ভব হবে। তিনি আরো বলেন যে, প্রশাসন ব্যবস্থা পূর্ণভাবে চালু করার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহীত হয়েছে।

আসন্ন দুর্ভিক্ষের সংবাদ ডাহা মিথ্যা

        পূর্ব পাকিস্তানে দুর্ভিক্ষ আসন্ন বলে বিদেশী সংবাদপত্রগুলো যে সংবাদ প্রচার করেছে তা ডাহা মিথ্যা বলে জেঃ টিক্কা খান জোর দিয়ে বলেন। খাদ্যশস্যের ব্যাপারে বলতে পারি এখানে এখনো তার অভাব দেখা দেয়নি। সরকারের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যশস্য মওজুদ রয়েছে। কোন কোন এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় খাদ্যশস্য পরিবহণে কিছু অসুবিধা দেখা দিয়েছে। যেমন, ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীরা ঢাকা ও চট্রগ্রামের মধ্যে কয়েকটি রেলব্রিজ নষ্ট করে দিয়েছে। দ্রুত এগুলোর সংস্কার চলছে বলে তিনি জানান।

অর্থনীতি সম্পর্কে

        অর্থনীতি সম্পর্কে গভর্ণর জানান যে, অধিকাংশ কলকারখানা, এমনকি দোকানপাটও পূর্ণোদ্যমে কাজ শুরু হয়েছে। বাকী শিল্প ও বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোতে দ্রুত কাজ শুরুর ব্যবস্থা চলছে। যে সকল শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান এ পর্যন্ত কাজ শুরু করেনি তাদের বিরুদ্ধে সামরিক আইন কর্তৃপক্ষের কোন প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার ইচ্ছা আছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন যে, সকলকে তাদের স্বীয় স্বীয় কাজ শুরু করার ব্যপারে উৎসাহিত করা হয়েছে।

প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না

        যে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং দোকানপাট এখনো খুলেনি সেগুলো বন্ধ করে দেয়া কিংবা প্রদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের খাতিরে অন্য কাউকে মঞ্জুরি দেওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে গভর্ণর বলেন যে, তিনি সে সম্ভাবনাকে একেবারে উড়িয়ে দেন না। তাদের কোন অবস্থায় পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না বলে গভর্ণর উল্লেখ করেন।

        কৃষি ব্যবস্থায় পূর্ন স্বাভাবিকতা ফিরে আসায় গভর্ণর জেনারেল টিক্কা খান সন্তোষ প্রকাশ করে মন্তব্য করেন ‘এটা পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতির একটি উতসাহজনক লক্ষণ’।

চা শিল্পের কোন ক্ষতি হবে না

        এক প্রশ্নের জবাবে গভর্ণর বলেন যে, সিলেট জেলার সকল চা বাগানের শ্রমিকরা ফিরে আসা শুরু করেছে। অতএব চা শিল্পের বিশেষ কোন ক্ষতি হবে না।

        এক প্রশ্নকারীকে তিনি জানান যে, গোলযোগপূর্ণ দিনগুলোতে বিভিন্ন ব্যাংক ও সরকারী ট্রেজারী থেকে দুষ্কৃতকারীরা যে বিপুল সংখ্যক টাকা-পয়সা লুট করে নিয়ে গেছে তার মোকাবিলা করার জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালান হচ্ছে। তার মত অনুসারে এই অর্থ দেশের বাইরে চালান হয়ে গেছে বলে তিনি জানান।

————-

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৫৪। সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত পূর্বদেশ ২১ মে, ১৯৭১

সকল বিশ্ব বিদ্যালয় ও কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত

        ঢাকা ২০ শে মে (এপিপি)। প্রাদেশিক সরকার আগামী ২রা আগষ্ট থেকে সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে আজ এখানে প্রকাশিত এক প্রেস নোটে বলা হয়েছে।

প্রেসনোটের পূর্ন বিবরণঃ

        নিন্মলিখিত সময়সূচী অনুযায়ী পলিটেকনিক ও অন্যান্য কারিগরি ইনস্টিটিউটসহ সমস্ত কলেজ, মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

        (ক) পলিটেকনিক ও অন্যান্য ও অন্যান্য কারিগরি ইনষ্টিটিউটসহ সমস্ত সরকারী কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়, পূর্ব পাকিস্তান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এবং ঢাকাস্থ পূর্ব পাকিস্তান ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়।

                (১) শিক্ষকদের ১৯৭১ সালের ১লা জুন কাজে যোগদান করতে হবে।

                (২) ১৯৭১ সালের ২রা আগষ্ট থেকে ক্লাস শুরু হবে।

        (খ) বেসরকারি কলেজ সমূহ (ইন্টারমিডিয়েট ও ডিগ্রী কলেজ)।

                (১) শিক্ষকদের ১৯৭১ সালের ১ লা জুলাই কাজে যোগদান করতে হবে।

                (২) ১৯৭১ সালের ২রা আগস্ট থেকে ক্লাশ শুরু হবে।

        নির্ধারিত তারিখ থেকে ক্লাশ শুরু করার উদ্দেশ্যে শিক্ষকরা তাদের কাজে যোগদানের তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবলম্বন করবেন।

        নির্ধারিত তারিখ কাজে যোগদান না করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের তাদের চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা যেতে পারে।

১৫৫। শিরোনাম- শিক্ষকদের দায়িত্বহীন উক্তি সম্পর্কে সামরিক কর্তৃপক্ষের হুঁশিয়ারি

সূত্র- সরকারি দলিলপত্র, উদ্ধৃতঃ “এন এক্সপেরিয়েন্স অব এক্সাইল এট হোম”- মফিজুল্লাহ কবীর

তারিখ- ২২ মে, ১৯৭১।

গোপনীয়/অবিলম্বে

                     সদর দপ্তর এমএলএ জোন ‘বি’,

                       বেসামরিক বিষয়াদি

                       ঢাকা, পূর্ব পাকিস্তান

                    নং- ৬০০/মিস/সিএ-২, ২২ মে,১৯৭১।

বরাবর- পাবলিক নির্দেশনা পরিচালক, ঢাকা।

বিষয়ঃ দায়িত্বহীন মন্তব্য প্রদানকারী শিক্ষক সম্পর্কে ব্যাবস্থা নেয়া প্রসঙ্গে।

১। এটা সদর দপ্তরে নজরে এসেছে, যে শিক্ষকদের মধ্যে দেশ সম্পর্কে দায়িত্বহীন মন্তব্য করা হচ্ছে। এই ধরণের হঠকারী মন্তব্য সাধারণ জনগণের মাঝে ছড়িয়ে পড়তে পারে যা, পরিস্থিতি নিন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যেতে পারে। যদি শিক্ষকরা এই ধরণের মন্তব্য প্রদান করা থেকে বিরত না হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সদর দপ্তর নির্দেশ দিচ্ছে।

২। দয়া করে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক করা হোক।

                        কর্নেল

                  সাং -মেজর সিভিল এফেয়ার্স

                  (সায়েদউদ্দিন আহমেদ)

                ( গোপনীয়/অবিলম্বে)

নং- ৬২৯৩/৬১-গ

থেকে: জনশিক্ষা পরিচালক, ইস্ট পাকিস্তান, ঢাকা।

জন্য: ১। জনশিক্ষা উপ-পরিচালক, ঢাকা / চট্টগ্রাম / রাজশাহী

/ খুলনা (বরিশাল) বিভাগ।

২। অধ্যক্ষ।

বিষয়: শিক্ষকদের দায়িত্বহীন মন্তব্য প্রসঙ্গে।

ইহার সঙ্গে অর্ডার নং একটি কপিও সংযুক্ত করা হলো-৬৬০ / মিস / সিএ-2 থেকে ২২.০৫.৭১ তারিখের

মার্শাল ল’ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পাঠানো এই চিঠিতে তাকে অনুরোধ করা হল যে অভিযুক্ত শিক্ষকদের অতিসত্বর এই চিঠি সম্পর্কে ধারণা দিয়ে তথ্য ও পথ নির্দেশনা দেয়া হোক। এই চিঠি অতি গোপনীয়। এটা অন্য কোথাও প্রকাশ করতে নিষেধ করা হল।

শিক্ষকরা যেন দেশের ব্যাপারে আর কোন অপপ্রচার না করতে পারে সে ব্যাপারটি নিশ্চিত করার অনুরোধ করা হল।

এবং যে কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক আইনানুগ ব্যাবস্থা নিতে বলা হচ্ছে।

                                 সাং/ -এম.এফ. খান ২৫.০৫.৭১

                                 জনশিক্ষা পরিচালক, ইপি

                                 পূর্ব পাকিস্তান।

১ লা জুন ১৯৭১,সকল শিক্ষকদের, পলিটেকনিক ও অন্যান্য  সব কলেজের শিক্ষক

কারিগরি প্রতিষ্ঠান, মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিজ নিজ দায়িত্বে থেকে রিপোর্ট করতে বলা হচ্ছে। শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এবং ব্যাবস্থা নিতে বলা হচ্ছে তাদের পরবর্তি কার্যদিবস ২রা আগস্ট, ১৯৭১ এর প্রেক্ষিতে। এবং তাদেরকে অনুরোধ করা হচ্ছে এই নতুন কার্যদিবস অনুযায়ী কার্যক্রম সাজানোর জন্য। শিক্ষকদের অবশ্যই পুর্ন কার্যদিবস অফিসে অবস্থান করতে হবে। এর অন্যথায় হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

                                      সাং/- এ.এন.কালিমুল্লাহ

                                       ০৪.০৬.৭১।

.

.

শিরোনামঃ ১৫৬। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা পুনর্বিন্যাস কমিটি গঠন

সুত্রঃ পূর্বদেশ

তারিখঃ ৩০শে মে, ১৯৭১

                  ভার্সিটির শিক্ষা পুনর্বিন্যাস কমিটি গঠন

ঢাকা ২৯শে মে (এপিপি)। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকে পুনর্বিন্যাস করার জন্য গভর্ণর নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছেনঃ-

ডঃ সাজ্জাদ হুসাইন, ভাইস-চ্যালেন্সর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ডঃ হাসান জামান, ডিরেক্টর, জাতীয় পুনর্গঠন ব্যুরো, ডঃ মোহর আলী, সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জনাব এ,এফ,এম, আবদুর রহমান, সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ডঃ আবদুল বারী, সদস্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ডঃ মকবুল হোসেন, সদস্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ডঃ সাইফুদ্দিন জোয়ারদার, সদস্য, রাজশাহী বিশবিদ্যালয়।

কমিটি নিম্নলিখিত বিষয়গুলো সম্পর্কে সুপারিশ করবেনঃ-

(১) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস।

(২) সিলেবাসকে জাতীয় চেতনায় উদ্ধুদ্ধ করে তোলার জন্য ইহার সংশোধন এবং

(৩) উপরোক্ত ব্যবস্থাগুলো বাস্তবায়নের ব্যাপারে সুবিধাজনক অন্যান্য সুপারিশ।

১৯৭১ সালের ৩১শে আগস্টের আগেই কমিটিকে ইহার রিপোর্ট সরকারের কাছে পেশ করতে হবে।

.

.

শিরোনামঃ ১৫৭। ১৪৯ নম্বর সামরিক বিধি জারী

সুত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান

তারিখঃ ৩ জুন, ১৯৭১

                 শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা সম্পর্কে

                ১৪৯ নম্বর সামরিক বিধি জারী

গতকাল বুধবার ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক প্রশাসক লেঃ জেঃ টিক্কা খান কতৃক জারীকৃত ১৮৯ নম্বর সামরিক বিধির বিবরণ নিচে দেওা হলঃ-

(১) ১৯৭১ সালের ২১শে মে স্থানীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত সময়সূচী মত বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনরায় খোলা হবে।

(২) নির্ধারিত তারিখে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কাজে যোগদান করবেন। অতিরিক্ত ১৫ দিন সময়ের মধ্যে (গ্রেস পিরিয়ড) পুনরায় কাজে যোগদানে ব্যর্থ হলে তারা চাকুরী থেকে বরখাস্ত হওয়ার গণ্য হবেন এবং নিদ্রিষ্ট ক্ষেত্রে ২৫ নম্বর সামরিক বিধি অনুসারে সামরিক আদালতে বিচার করা হবে।

(৩) এই নির্দেশ বলে ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন কতৃপক্ষের জারীকৃত ১২১ নম্বর বিধি বাতিল করা হল।

  এপিপি এ খবর পরিবেশন করেছে।

.

.

শিরোনাম- ১৫৮। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট পূর্ব পাক সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠি।

সূত্র- সরকারি দলিলপত্র উদ্ভুতঃ এক্সপেরিয়েন্স অব এন এক্সাইল এট হোম

তারিখ- ৪ জুন, ১৯৭১।

গোপনীয়/অতিসত্বর

পূর্ব পাকিস্তান সরকার

শিক্ষা মন্ত্রণালয়

৪ জুন, ১৯৭১।

সাং/সিঃনঃ/৪৮২ (৭)- ইডিএন

থেকে- জনাব এ এন কলিমুল্লাহ

পূর্ব পাকিস্তান সরকারের উপ-সচিব।

বরাবর- উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,

ঢাকা।

১ লা জুন ১৯৭১ থেকে সকল শিক্ষকদের, পলিটেকনিক ও অন্যান্য সব

কারিগরি প্রতিষ্ঠান, মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিজ নিজ দায়িত্বে থেকে রিপোর্ট করতে বলা হচ্ছে। শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এবং ব্যাবস্থা নিতে বলা হচ্ছে তাদের পরবর্তি কার্যদিবস ২রা আগস্ট, ১৯৭১ থেকে দায়িত্ব পুনঃগ্রহন থেকে নির্ধারিত তারিখে ক্লাস শুরু হওয়া পর্যন্ত।

তাদেরকে অনুরোধ করা হচ্ছে এই নতুন কার্যদিবস অনুযায়ী তাদের কার্যক্রম সাজিয়ে সেটি বিভাগ কর্তৃক ত্বরিত প্রণীত করার জন্য। শিক্ষকদের অবশ্যই পূর্ন কার্যদিবস অফিসে অবস্থান করতে হবে। এর অন্যথায় হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

                                      সাং/- এ.এন.কালিমুল্লাহ

                                       ০৪.০৬.৭১।

.

.

শিরোনাম সূত্র তারিখ

১৫৯। সামরিক গভর্ণরের সফর ও

বক্তৃতা-বিবৃতি

দৈনিক পাকিস্তান ৬ জুলাই, ১৯৭১

চুয়াডাঙ্গা, নাটোর ও রাজশাহীতে গভর্ণর

জনগণ পাকিস্তানকে ভেঙ্গে দেয়ার জন্য

কোন দলকে ম্যান্ডেট দেয়নি

   পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর ও সামরিক আইন শাসনকর্তা লেঃ জেঃ টিক্কা খান গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গা, নাটোর ও রাজশাহী সফর করেন।

   এপিপি পরিবেশিত এই খবরে প্রকাশ, সফরকালে তার সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘ আন্তঃএজেন্সী রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যান মিঃ রাহগাত আল তাবিল, তার সহকারী ও উপদেষ্টা মিঃ গ্লান-ই-হায়ডন, রেডক্রস সোসাইটি লীগের মিঃ পিষ্ট্যানসিস ও রিলিফ কমিশনার জনাব মোহাম্মদ আলী।

   গভর্ণর এই সফরকালে  স্থানীয় সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীগণ ও শান্তি কমিটিসমূহের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন।

   তিনি তাদের সঙ্গে আইন ও শৃংখলা পরিস্থিতি, মওজুদ খাদ্য পরিস্থিতি, যোগাযোগ ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠার এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আলোচনা করেন।

   তাঁকে জানান হয় যে সারা রাজশাহী বিভাগে গোলযোগ সৃষ্টিকারীদের নির্মূল করা হয়েছে এবং জনসাধারণ তাদের ঘর বাড়ীতে ফিরে এসেছে। পর্যাপ্ত খাদ্য মওজুদ রয়েছে, দোকানপাট খোলা হয়েছে, সরকারী অফিসে কাজকর্ম চলছে এবং অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিসসমূহে স্বাভাবিকভাবে কাজ চলছে।

  বিভিন্ন স্থানে শান্তি কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখা এবং জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে তাদের উত্তম কাজের প্রশংসা করেন। তিনি গোলযোগ সৃষ্টিকারীদের উপস্থিতির কথা কর্তপক্ষকে জানাবার জন্য তাদের আহ্বান জানান যাতে করে আইন ও শৃংখলা রক্ষাকারী এজেন্সীসমূহ তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।

   সর্বত্রই জনসাধারণ আগ্রহের সঙ্গে গভর্ণরকে অভিনন্দন জানান এবং পাকিস্তান পায়েন্দাবাদ ও কায়েদে আজম জিন্দাবাদ শ্লোগান দেয়।

চুয়াডাঙ্গা

  চুয়াডাঙ্গায় গভর্ণর অভ্যর্থনা কেন্দ্রও পরিদর্শন করেন। তিনি দেখেন যে, প্রত্যাবর্তনকারীদের গ্রহণের জন্য সেখানে প্র্য়োজনীয় সকল সু্যোগ-সুবিধা রয়েছে। তিনি বাসস্থান, খাদ্য ও চিকিৎসা সুবিধা পরিদর্শন করেন। তিনি কয়েকজন প্রত্যাবর্তনকারীর সঙ্গেও দেখা করেন। এবং তাদের সঙ্গে ঘরোয়াভাবে আলাপ করেন।

   গতকাল অভ্যর্থনা শিবিরে আগত একটি পরিবারের প্রধান গভর্ণরকে জানান যে, তিনি ইতিপূর্বে অনুমোদিত পথে দেশে আসার চেষ্টা করেছেন কিন্তু ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাকে আসতে দেয়নি। পরে এক অনুমোদিত পথে পূর্ব পাকিস্তানে আসতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, তিনি ও অন্যান্য প্রত্যাবর্তনকারীদের অভ্যর্থনা কেন্দ্রে ভালোভাবে দেখাশুনা করা হচ্ছে।

   গভর্ণর প্রত্যাবর্তনকারীদের মধ্যে লুঙ্গী ও শাড়ী বিতরণ করেন।

   গভর্ণরের প্রশ্নের জবাবে অভ্যর্থনা শিবিরে মেডিকেল অফিসার জানান যে, সকল প্রত্যাবর্তনকারীকে চিকিৎসা সুবিধা দেয়া হয়েছে এবং কোন গুরুতর অসুস্থতা বা মহামারী ঘটেনি। তিনি আরো জানান কয়েকদিন আগে আগত কয়েকজন প্রত্যাবর্তনকারী কলেরায় আক্রান্ত হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়েছিল কিন্তু তাদের অবিলম্বে রক্ষা করা হয়।

নাটোর

   নাটোরে জেঃ টিক্কা খান জিন্নাহ সরকারী হাইস্কুল ও সরকারী গার্লস স্কুল পরিদর্শন করেন এবং শিক্ষক ও কর্মচারীদের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁকে জানানো হয় যে, উপস্থিতি সন্তোষজনক এবং ক্লাশ রীতিমত চলছে। গার্লস স্কুলের ছাত্রীরা স্কুল প্রাঙ্গণে লাইন দিয়ে দাঁড়ায় এবং জাতীয় সংগীত শোনায়। তিনি পরে গাড়ীযোগে বাজারের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেন এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা প্রত্যক্ষ করেন।

রাজশাহী

   রাজশাহীতে শান্তি কমিটির সদস্যদের উদ্দেশ্যে ভাষণদান প্রসঙ্গে গভর্ণর বলেন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে এই জনগণের মূল্যবান অবদান রয়েছে এবং পাকিস্তানকে ভেঙ্গে দেয়ার জন্য কোন ব্যক্তিবিশেষ বা রাজনৈতিক দলকে তারা ম্যান্ডেট দেয়নি। তারা প্রাদেশিক স্বায়ত্ত্বশাসনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন কিন্তু বিলুপ্ত আওয়ামী লীগ পাকিস্তানকে ভেঙ্গে দেওয়ার ম্যান্ডেট হিসাবে তাদের সমর্থনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন। জনসাধারণের সক্রিয় সহযোগিতায় সশস্ত্র বাহিনীর সময়োচিত হস্তক্ষেপের ফলে ভাঙ্গনের হাত থেকে পাকিস্তান রক্ষা পেয়েছে এবং বর্তমানে পাকিস্তানকে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করার জন্য সকল প্রচেষ্টা চালানো প্রয়োজন।

   শান্তিপূর্ণ অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে শান্তি কমিটিরসমূহের প্রচেষ্টার জন্য তিনি বিশেষভাবে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

   গভর্ণর বলেন তিনি অবহিত আছেন যে, গত মার্চ মাসে বিভিন্ন কারাগার থেকে ক্রমাগতভাবে ছেড়ে দেওয়া প্রায় ১১ হাজার দন্ডপ্রাপ্ত বিচারাধীন ব্যক্তি কতিপয় স্থানে শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের হয়রানি করছে। তিনি বলেন তাদের খুঁজে বের করা এবং শাস্তিদানের জন্য শাসন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। তিনি এ ব্যাপারে জনসাধারণের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি শান্তি কমিটির সদস্যদের জানান যে এদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী এজেন্সীসমূহকে সাহায্য করার জন্য রাজাকার গঠন হচ্ছে এবং ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।

   পরে জেঃ টিক্কা খান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। তাকে জানানো হয় যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সকল কর্মচারী কাজে যোগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ২রা আগস্ট পুনরায় খোলার কথা।

   গভর্ণর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর পরে গাড়ী্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেন।

  জেনারেল টিক্কা খান বিকেলে ঢাকা প্রত্যাবর্তন করেন।

—————————

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৬০।জেনারেল নিয়াজীর সীমান্ত পরিদর্শন দৈনিক পাকিস্তান ৯ জুলাই, ১৯৭১

জেনারেল নিয়াজির সিলেট সীমান্ত পরিদর্শন

গোটা সিলেট জেলা থেকে দুষ্কৃতকারীদের

বিতাড়িত করা হয়েছে

   ইষ্টার্ণ কম্যান্ডের লেঃ জেঃ এ, এ, কে, নিয়াজী গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেট এলাকা সফরকালে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত বরাবর প্রতিরক্ষা কাজে নিয়োজিত সেনাবাহিনী পরিদর্শন করেন।

   তিনি জিওসি সমভিব্যহারে এই সফরে যান বলে এপিপির খবরে প্রকাশ।

   সীমান্তে যাতে আর কোন রকম অনুপ্রবেশ না ঘটে বা কোন রকম হামলা না চলে তারই জন্যে এই সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সীমান্ত ঘাঁটিগুলি সবই সেনাবাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

   জেনারেল নিয়াজী সৈন্যদের সাথে ঘরোয়াভাবে কথাবার্তা বলেন এবং তাদের কুশল জানতে চান। তিনি তাদেরকে  অত্যন্ত ভালো অবস্থায় দেখতে পান।

   স্থানীয় কমান্ডার জেঃ নিয়াজীকে জানান যে, বেসামরিক জনসাধারণের সক্রিয় সহযোগিতায় সারা সিলেট জেলা থেকেই গোলযোগ সৃষ্টিকারীদের বিতাড়িত করা হয়েছে। কমান্ডার জানান, ভারতে ট্রেনিংপ্রাপ্ত কিছু দুষ্কৃতকারী মাঝে মাঝে সীমান্ত পথে ভিতরে ঢুকে প্রধানতঃ আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তাদেরকে যথোপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।

   বিভিন্ন স্থানে দুষ্কৃতকারীরা যে নাশকতামূলক তৎপরতা চালাবার চেষ্টা করে স্থানীয় জনসাধারণ ও রাজাকাররা অত্যন্ত সাফল্যের সাথে তা প্রতিহত করে বলে কম্যান্ডার জানান।

   জেনারেল নিয়াজী সিলেট থেকে হেলিকপ্টারে জৈয়ন্তপুর যান এবং সেখানে তিনি সংবর্ধনা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। তাকে জানান হয় যে ৭ হাজার গৃহত্যাগী মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে এখানে ফিরে এসেছে। এদের মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ১২শ’ লোক রয়েছে। অনুমোদিত পথে ফিরে আসার ব্যাপারে ভারত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় এদের বেশিরভাগই অননুমোদিত পথে পাকিস্তানে ফিরেছে।

   সংবর্ধনা কেন্দ্রের কাছে দরবান্তপুরে এক বিরাট জনতা নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর, পাকিস্তান পায়েন্দাবাদ ও কায়েদে আজম জিন্দাবাদ ধ্বনি দিয়ে জেঃ নিয়াজীকে স্বাগত জানায়।

   এরপর জেঃ নিয়াজী শ্রীমঙ্গল এলাকায় কুশিয়ারা নদীতে শেওলামুখ ফেরী পরিদর্শন করেন।

   শ্রীমঙ্গলে স্থানীয় কম্যান্ডার জেনারেল নিয়াজীকে জানান যে এই এলাকায় চা বাগানগুলিতে কোন রকম বল প্রয়োগের হুমকি প্রদর্শন করা হয়নি। তিনি বলেন, দুষ্কৃতকারীরা অবশ্য চা বাগানগুলির দক্ষ শ্রমিকদের ভীত সন্ত্রস্ত করে তুলে তাদেরকে কাজ থেকে সরিয়ে দেবার চেষ্টা করে। এই দুষ্কৃতকারীরা স্বভাবতই ভারতের ট্রেনিং শিবির থেকে এসেছিল। ভারত তাদের সীমান্তে এইসব শিবির স্থাপন করেছে।

   সীমান্ত এলাকায় যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভারতীয় বিস্ফোরক দ্রব্যাদি পাওয়া গেছে সেগুলিও জেনারেল নিয়াজীকে দেখানো হয়।

 জেনারেল নিয়াজী সন্ধ্যায় ঢাকা ফিরে আসেন।

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৬১। পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে – জেনারেল নিয়াজী দৈনিক পাকিস্তান ১১ জুলাই, ১৯৭১

জেনারেল নিয়াজীর চট্টগ্রাম সফরঃ গোটা পূর্বাঞ্চলীয়

সীমান্ত সেনাবাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে

   পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের কমান্ডার লেঃ জেঃ এ এ কে নিয়াজী গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সেনাবাহিনী পরিদর্শন করেন বলে এপিপির খবরে প্রকাশ।

   চট্টগ্রাম পৌঁছলে সেনাবাহিনী ও নৌ-সেনাবাহিনীর সিনিয়র অফিসাররা জেঃ নিয়াজীকে সংবর্ধনা জানান। পরে স্থানীয় কমান্ডার তার কাছে এলাকার আইন-শৃংখলার পরিস্থিতি এবং সীমান্ত বরাবর প্রতিরক্ষা কাজে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর কার্যক্রমের বিবরণ দেন। আইন-শৃংখলার কথা বলতে গিয়ে স্থানীয় কমান্ডার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে জনসাধারণের সহযোগিতার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

   জেনারেল নিয়াজীকে জানান হয় যে, অনুপ্রবেশের সব সম্ভাব্য স্থল ও নৌ-পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকাকে সম্পূর্ণ মুক্ত  করা হয়েছে এবং পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত বরাবর গোটা এলাকা এখন সেনাবাহীর কার্যকরী নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

   চট্টগ্রাম থেকে জেঃ নিয়াজী হেলিকপ্টারযোগে দোহাজারী, কাপ্তাই ও রাঙ্গামাটি যান। দোহাজারীতে এক বিরাট জনতা তার চারপাশে সমবেত হয়ে দেশাত্মবোধক শ্লোগান দেয়। তিনি তাদের সাথে করমর্দন করেন এবং এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ফিরিয়ে আনা ও বজায় রাখায় তাদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।

   পরে জেঃ নিয়াজী কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে তার কাছে ধ্বংসাত্মক কাজের হাত থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রটিকে রক্ষার ব্যবস্থাদি বিশ্লেষণ করা হয়।

   তাকে জানান হয় যে সব শ্রমিকরাই কাজে যোগদান করেছেন এবং বর্তমানে সেখানে স্বাভাবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ চলছে।

   রাঙ্গামাটিতে জেঃ নিয়াজীকে জানান হয় যে উপজাতীয়রা দুষ্কৃতকারীদের অনুসরণ করে ধরার সাহায্য করছে এবং ফৌজী প্রধানরা কর্তপক্ষের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছেন। কয়েক জায়গায় তারা নিজেরাই দুষ্কৃতকারীদের ধরে তাদের অস্ত্রশস্ত্র আটক করেছে।

   জেনারেল নিয়াজীর এই সফরকালে চাকমা প্রধান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ সদস্য রাজা ত্রিদিব রায়ও উপস্থিত ছিলেন।

   অপরাহ্নে জেনারেল নিয়াজী ঢাকা ফিরে আসেন।

————————-

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৬২। পাকিস্তান বিষয়ক একাডেমী অর্ডিন্যান্স দৈনিক পাকিস্তান ১৮ জুলাই, ১৯৭১

বিএনআর-এর বদলে নয়া সংস্থা

পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর লেঃ জেঃ টিক্কা খান ১৯৭১ সালের পাকিস্তান বিষয়ক একাডেমী অর্ডিন্যান্স নামে একটি অর্ডিন্যান্স জারী করেছেন বলে এক সরকারী প্রেসনোটে জানানো হয়েছে।

অর্ডিন্যান্সের বিধান অনুযায়ী জাতীয় পুনর্গঠন ব্যুরো ভেঙ্গে দিয়ে তার পরিবর্তে পাকিস্তান বিষয়ক একাডেমী আর এইট সংস্থা চালু করা হবে। একাডেমী বিশেষ করে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পটভূমি এবং সাধারণভাবে পাকিস্তান সংক্রান্ত বিষয়ে অধ্যয়ন ও গবেষণায় নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া একাডেমী পূর্ব পাকিস্তানের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ  জাতীয় প্রশ্নাদি এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়াদি সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশনার দায়িত্বও গ্রহণ করবে।

   পনরজন সরকারী ও বেসরকারী সদস্য সমন্বয়ে গঠিত একটি বোর্ডের উপর এই একাডেমীর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বভার ন্যস্ত থাকবে। বোর্ড একাডেমীর কর্তব্য পালনের নীতি নির্ধারণ করবে। ৫ জন সদস্য নিয়ে গঠিত কার্যনির্বাহক কমিটি দৈনন্দিন কাজ সম্পাদন করবে। এই ৫ জন সদস্য বোর্ডেরও সদস্য থাকবেন। বিলুপ্ত জাতীয় পুনর্গঠন ব্যুরোর ডিরেক্টর জনাব হাসান জামানকে নব স্থাপিত একাডেমী ফর পাকিস্তান এফেয়ার্স এর ডিরেক্টর নিয়োগ করা হয়েছে।

.

.

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৬৩। কুমিল্লায় সামরিক গভর্ণর দৈনিক পাকিস্তান ২৬ জুলাই, ১৯৭১

কুমিল্লায় প্রতিনিধিত্বমূলক সমাবেশে গভর্ণর

ভারত কখনও পূর্ব পাকিস্তানীদের বন্ধু হতে পারে না

   পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর ও খ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেঃ টিক্কা খান গতকাল রোববার পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকা সফরকালে কুমিল্লায় এক প্রতিনিধি সমাবেশে বলেন যে, ভারত গত বুধবার কুমিল্লা শহরের লোকদের উপর নির্বিচারে গোলাবর্ষণ করতে দ্বিধা করেনি সে কখনো পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বন্ধু হতে পারে না।

   এপিপির খবরে প্রকাশ উস্কানিবিহীন এই ভারতীয় গোলাগুলিতে নিহতদের জন্য সমবেদনা প্রকাশ করে গভর্ণর বলেন, এই ব্যবস্থা নিরপরাধ জনসাধারণের জীবনের প্রতি ভারতের চরম অবজ্ঞাই প্রদর্শন করেছে।

   জেনারেল টিক্কা খান বলেন, আমরা আমাদের জনগণের অর্থনৈতিক ভাগ্যোন্নয়নের জন্য শান্তি চাই। কিন্তু ভারত সীমান্তে উত্তেজনা জিইয়ে রাখছে।

   গভর্ণর বলেন, ভারতীয় সৈন্যরা তাদের চরদের সহযোগিতায় মাঝে মাঝে বেসামরিক পোশাকে সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশ করে এবং আমাদের অর্থনীতির ধ্বংস সাধনের উদ্দেশ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে। পরিণামে সাধারণ মানুষকেই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তিনি জনসাধারণকে তাদের শত্রুদের সম্পর্কে সতর্ক করে দেন। তিনি বলেন, পল্লী এলাকার লোকদের গোলযোগ সৃষ্টিকারীদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করার উদ্দেশ্যে রাজাকারদের নিয়োগ করা হচ্ছে।

   তিনি শান্তি বজায় রাখার এবং দুষ্কৃতকারীদের দমনে শান্তি কমিটির প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেন যে শান্তি কমিটিগুলো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নয় এবং তারা পাকিস্তানের সংহতি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার একমাত্র লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে।

   জেনারেল টিক্কা খান জনসাধারণকে গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন এগুলো জনসাধারণের স্বার্থের পরিপন্থী। সাম্প্রতিক একটি উদাহরণ দিয়ে গভর্ণর বলেন যে, ঢাকায় শান্তিপূর্ণভাবে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যারা বিভ্রান্তিকর গুজবের দরুন পরীক্ষা দেয়নি তারা একটি মূল্যবান শিক্ষাবছর হারিয়েছে।

   এলাকার খাদ্য মওজুদের পরিমাণে সন্তোষ প্রকাশ করে গভর্ণর বলেন, যোগাযোগের অসুবিধা সত্ত্বেও প্রদেশের সব অংশের অভাবী লোকদের কাছে খাদ্য পৌঁছানো হবে।

   সীমান্তের ওপার থেকে গৃহত্যাগী ব্যক্তিদের প্রত্যাবর্তনের উল্লেখ করে গভর্ণর বলেন, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট একাধিকবার আশ্বাস দিয়েছেন যে সব পাকিস্তানীদের গৃহে প্রত্যাবর্তনকে অভিনন্দন জানানো হবে। এর মাঝে ৯০ হাজারেরও বেশি লোক ফিরে এসেছে। অনুমোদিত পথে ভারতীয়রা বাধা দিচ্ছে বলে তাদের অধিকাংশকেই অননুমোদিত পথে আসতে হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

   গভর্ণর বলেন যে, পাকিস্তান সীমান্ত বরাবর জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক মোতায়নের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে কিন্তু ভারত তা প্রত্যাখান করেছে। কারণ জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতে তার সত্যিকার অভিসন্ধি ফাঁস হয়ে পড়বে।

   কুমিল্লা থেকে জেঃ টিক্কা ফেনী ও লাকসামের মধ্যবর্তী জায়গায় গুণবতী রেলসেতু দেখতে যান। ইতিপূর্বে অনুপ্রবেশকারী ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা ডিনামাইট দিয়ে সেতুটি উড়িয়ে দেয়। সেতুটি এখন পুনর্নির্মাণের শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

   গভর্ণর ফেনী ও মাইজদি কোর্টও (নোয়াখালী) সফর করেন এবং সেখানে স্থানীয় কর্মকর্তা ও শান্তি কমিটির সদস্যদের সাথে ঘরোয়া পরিবেশে আলাপ করেন এবং শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখা ও জনসাধারণের আস্থা ফিরিয়ে আনায় তাদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

   তিনি স্থানীয় সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ করে আইন-শৃঙ্খলা, খাদ্য ও যোগাযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে মতবিনিময় করেন।

   সফরকালে জর্ডানী রাষ্ট্রদূত  সৈয়দ কামাল আল শরীফও গভর্ণরের সাথে ছিলেন। গভর্ণর গতকাল অপরাহ্নে ঢাকা ফিরেন।

.

.

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৬৪। আর একদিনের মধ্যে নিজ অবস্থায় ফিরে না আসলে মালিকানা বাজেয়াপ্তির হুমকি সরকারী দলিলপত্র জনসংযোগ বিভাগ, দিনাজপুর ২৮ জুলাই, ১৯৭১

   বালুবাড়ী ও বাড়িয়াডাঙ্গার অধিবাসীগণকে জানানো যাইতেছে আর একদিনের মধ্যে তাহাদের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দেওয়া যাইতেছে, অন্যথায় বালুবাড়ী ও বালুয়াডাঙ্গার সমস্ত খালি বাড়ী তালাবদ্ধ করিয়া সিল করিয়া দেওয়া হইবে।

   দিনাজপুর শহরের সমস্ত দোকানের মালিকগণকে জানান যাইতেছে যে, যাহাদের দোকান বন্ধ অবস্থায় পড়িয়া আছে, তাহা ৩১ শে জুলাইয়ের মধ্যে না খুলিলে ঐ সকল দোকান তালাবদ্ধ করিয়া দেওয়া হইবে এবং মার্শাল-ল কর্তৃক বাজেয়াপ্ত করা হইবে ও অন্য লোককে বন্দোবস্ত দেওয়া হইবে।

   পলু হাট, বালুবাড়ী, রামনগর খোয়াড় ও ফুলতোলা ঘাট, কাঞ্চন ঘাট, রাজাপড়া ঘাট, বাঙ্গী বাচা পাড়া ঘাট ও কসাইখানা আগামী ৩১ শে জুলাই বেলা ১২ টায় মিউনিসিপ্যাল অফিসে প্রকাশ্যে  নিলাম হইবে। ডাকের সব টাকা সঙ্গে সঙ্গে জমা দিতে হইবে। ৭ দিনের মধ্যে অফিসের নির্দেশ মোতাবেক এগ্রিমেন্ট দাখিল করিতে হইবে।

   পরবর্তী কোন আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত প্রত্যহ রাত ১০ টা হইতে সকাল ৪ টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকিবে। উক্ত সময়ের মধ্যে কাহাকেও ঘরের বাহিরে কিংবা রাস্তায় পাওয়া গেলে গুলি করা করা হইবে।

                                                                                                                  By order

                                                                                                                  M/L  Administrator

                                                                                                              Dinajpur

                                                                                                              28-7-71

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৬৫। চাকুরীজীবিদের পরিবারের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অনুসন্ধান সরকারী দলিলপত্র উদ্ধৃতঃ এন এক্সপেরিয়েন্স – প্রাগুক্ত ৩১ জুলাই, ১৯৭১

পাকিস্তান সরকার
চাকুরি ও সাধারন প্রশাসনবিভাগ
সাধারণ প্রশাসন শাখা
সেকশন – ৪

নং- গ.৪/২৩১/৭১-৬০৮(৫০)                                            তারিখ:৩১/০৭/১৯৭১

প্রেরক: এ. এম. এফ. ওহমান এস. কে.
অতিরিক্ত মুখ্যসচিব
পূর্ব পাকিস্তান সরকার।

প্রাপক: সচিব
শিক্ষা বিভাগ
পূর্ব পাকিস্তান সরকার।

এই মর্মে পূর্ব পাকিস্তান সরকারে এবং সকল স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সকল কর্মচারী যারা ঢাকা শহরে কর্মরত আছেন তাদের সকল সন্তান ও পোষ্য যারা ১৯৭১ সালে অনুষ্ঠিত এস. এস. সি. পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে অথবা করতে পারে নাই তাদের তালিকা করা প্রয়োজন। যারা অংশগ্রহন করতে পারে নাই যেসব ক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ না করার যথাযথ কারণ ও উল্লেখ করতে হবে।

(স্বাক্ষরিত, ৩১/৭/৭১)
এ. এম. এফ. রহমান
অতিরিক্ত মূখ্য সচিব
পূর্ব পাকিস্তান সরকার

নং- গ.৪/২৩১/৭১-৬০৮(৫০)                                           তারিখ: ৩১/০৭/১৯৭১

        অনুলিপি প্রেরণ করা হল পরিচালক, কারিগরি শিক্ষা / পরিচালক (গণযোগাযোগ), সকল স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান/ রেজিস্ট্রার,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়/ এবং অত্র দপ্তরের সকল শাখা কর্মকর্তা, তাদের আগামী ১০ আগস্ট, ১৯৭১ তারিখের মধ্যে যাচিত তথ্যাদি সরবরাহ করার জন্য অনুরোধ করা হল।

(স্বাক্ষর/অস্পষ্ট, ৫/৪/৭১)
শাখা কর্মকর্তা (শাখা – জি)
শিক্ষা বিভাগ

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৬৬। ছাত্রদের দৈনিক উপস্থিতির হার পাঠানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বিভাগের স্মারকপত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দলিলপত্র উদ্ধৃতঃ এন এক্সপেরিয়েন্স – প্রাগুক্ত ৬ আগস্ট  ১৯৭১

নং- ৩০৫৪৫

রেজিস্ট্রারের কার্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা – ২

তারিখ: ঢাকা, ৬ আগস্ট ১৯৭১
অতীব জরুরী/এক্সপ্রেস
২য় তাগিদ পত্র

প্রাপকঃ  ১। সকল বিভাগীয় প্রধান
২। ইন্সটিটিউট পরিচালক
ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়।

জনাব,

        অত্র অফিসে আগত পত্র নং সি/৭৩৮১৯, তারিখ: ২/০৬/১৯৭১ খ্রিঃ এবং পরবর্তী তাগিদ পত্রনং- ২৪০০-৪৪০, তারিখঃ ৬/৮/১৯৭১ খ্রিঃ এ উল্লিখিত বিষয়ের আলোকে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, কিছু কিছু বিভাগ থেকে শিক্ষার্থী উপস্থিতির দৈনিক প্রতিবেদন পরদিন সকাল ১১:০০ টা বাজেও অত্র দপ্তরে পেশ করা হয়না।

        এমতাবস্থায় সকল একত্রীকৃত প্রতিবেদন যাতে যথাসময়ে সরকারের কাছে অগ্রায়ন করা যায় সেজন্য আপনাকে প্রতিদিন শিক্ষার্থী উপস্থিতির প্রতিবেদন পরদিন সকাল ১১:০০ টার মধ্যে পাঠাাবার জন্য অনুরোধ করা হল।

আপনারবিশ্বস্ত
(স্বাক্ষরিত/অস্পষ্ট)
রেজিস্ট্রার
ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়।

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৬৭। জেনারেল নিয়াজীর বগুড়া সীমান্ত পরিদর্শন দৈনিক পাকিস্তান ৭ আগস্ট  ১৯৭১

জেনারেল নিয়াজীর বগুড়া সীমান্ত পরিদর্শন
সশস্ত্র বাহিনীর সাথে জনসাধারণ
সক্রিয় সহযোগীতা করছে

        পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক ও খ এলাকার সরকারী আইন প্রশাসক লেঃ জেঃ এ. এ. কে নিয়াজী পাকিস্তানের ঐক্য-সংহতি রক্ষায় বগুড়ার জনসাধারণের একনিষ্ঠ কর্মপ্রচেষ্টার আজ উচ্চ প্রশংসা করেন।

        জেনারেল নিয়াজীকে স্বাগত জানানোর জন্য তথায় সমবেত অত্র এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও শান্তি কমিটির সদস্যদের এক যৌথ সভায় তিনি ভাষণ দিচ্ছিলেন।

        জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ও জেঃ নিয়াজীর সাথে গমন করেন। পশ্চিম সীমান্ত বরাবর আত্মরক্ষামূলক কাজে সেনাবাহিনী মোতায়েন ব্যবস্থাবলী পরিদর্শনের জন্য জেঃ নিয়াজী অত্র এলাকায় একদিনের সফরে গমন করেন।

        জনসাধারনের সাথে আলাপ প্রসঙ্গে জেঃ নিয়াজী বলেন যে, আপনারা জাতির জন্য এক অমূল্য সেবা করছেন। তিনি আরও বলেন যে, ইসলামী রাষ্ট্র পাকিস্তানের সেবা করার অর্থ হল ইসলামের সেবা করা এবং আল্লাহ তাদের এ মহান কাজের জন্য অবশ্যই পুরষ্কৃত করবেন।

        জেনারেল নিয়াজী জনসাধারনকে মুসলমানদের অতীত গৌরবের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন যে, ইসলামের অনুশাসন অনুসরন করেই একদিন তারা বিরাট গৌরব অর্জন করেছিল এবং আমরা যদি ইসলামের অনুশাসন সততার সাথে অনুসরণ করি তবে আমরাও তা অর্জন করতে পারি।

        জাতীয় স্বার্থ ব্যাহত করার জন্য যে সব  লোক শত্রুর ক্রীড়নক হয়ে কাজ করছে লেঃ নিয়াজী জনসাধারণকে তাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ার করে দেন। উপরোক্ত ধরনের লোকেরা যে সর্বদাই মুসলমানদের ঐক্য ও সংহতির ক্ষতি সাধন করে সে সম্পর্কে জেঃ নিয়াজী ইতিহাস থেকে কতিপয় নজিরের উদ্ধৃতি দেন।

        জেনারেল নিয়াজী আরও বলেন, উদ্বাস্তু শিবিরে যারা আমাদের নারী ও শিশুদের প্রতি দূর্ব্যবহার করছে ও আামাদের অর্থনীতি ধ্বংস করার জন্য আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত করছে তারা কখনই জনসাধারনের শুভাকাঙ্খী হতে পারে না। এ উক্তি করার সাতে সাথে সমবেত জনসাধারণ পাকিস্তানের শত্রুদের নির্মূল করার জন্য তাদের দৃঢ় মনোভাব ব্যক্ত করে উচ্চ কণ্ঠে শ্লোগান প্রদান করে।

        জেনারেল নিয়াজী জনসাধারণের দেশপ্রেমিক আদর্শ ও উৎসাহ উদ্দীপনার উচ্চ প্রশংসা করেন। দেশের প্রতিরক্ষার সশস্ত্র বাহিনীর সাথে জনসাধারণের সহযোগীতার ও তিনি প্রশংসা করেন।

        সভা শেষে জেঃ নিয়াজী সামরিক আইন সদর দফতরে গমন করেন। তথায় তিনি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি তথা সমাজের সকল স্তরে স্তরে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা পরিস্থিতি করেন। তথায় তিনি আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত হন।

        পরে জেঃ নিয়াজী সীমান্ত এলাকায় সেনাবাহিনী পরিদর্শন করেন। তিনি সৈন্যদের সাথে ঘরোয়াভাবে আলাপ করেন ও তাদের কুশলাদি জিজ্ঞেস করেন। তিনি তাদেরকে আস্থাবান ও উৎফুল্ল দেখতে পান।

        অত্র এলাকা পরিদর্শনকালে স্থানীয় কমান্ডার জেঃ নিয়াজীকে জানান যে, জনসাধারণের সক্রিয় সহযোগিতা ছাড়া অত্র এলাকায় সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্ব পালনের কাজে বিরাটভাবে সহায়ক হয়েছে। তিনি আরও জানান যে, বিপুলসংখ্যক লোক রাজাকার হিসাবে তাদের নাম তালিকাভুক্ত করেছে।

        জেনারেল নিয়াজী অপরাহ্নে ঢাকা ফিরে আসেন। গতকাল শুক্রবার এপিপি ঢাকায় এ খবর পরিবেশন করে।

.

.

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৬৮। পরিত্যাক্ত বাড়িঘর ও পেশায় ফিরে আসার নির্দেশ ও আরো কয়েকটি ঘোষণা সরকারী দলিলপত্র সংযোগ বিভাগ, দিনাজপুর ৮ আগস্ট  ১৯৭১

(১) স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আসার পরিপ্রেক্ষিতে মার্শাল ল’ কর্তৃপক্ষ সকলকে তাহাদের পরিত্যক্ত বাড়ীঘরে ফিরিয়া আসার জন্য ও নিজ নিজ পেশা এবং গ্রামাঞ্চলে কৃষিকার্য আরম্ভ করার জন্য উপদেশ দিতেছেন। আগামী ১০ ই আগস্ট মধ্যে পরিত্যক্ত বাড়ীঘরে ফিরিয়া না আসিলে তাহা অন্য লোককে ইজারা দেওয়া হইবে। প্রকাশ থাকে যে, মার্শাল ল’ কর্তৃপক্ষ প্রত্যেকটি নাগরিকের জান ও মালের পূর্ণ নিরাপত্তার আশ^াস দিতেছেন।

(২) পরিত্যক্ত দোকান, হোটেল, বাড়ীঘর ইত্যাদি বন্দোবস্ত দেবার জন্য তারিখ বদলাইয়া দেওয়া হইয়াছে ও মহল্লাওয়ারী তারিখ দেওয়া হইয়াছে। দরখাস্তকরীগণ যেন নির্ধারিত তারিখে এ. ডি. সি. সাহেবের অফিসে বন্দোবস্ত নেওয়ার জন্য উপস্থিত থাকেন।

নিমতলা, মালদহপট্টি ও মাড়ওয়ারপট্টি – ৯ই আগস্ট বেলা ১০ টা হইতে ৯ টা পর্যন্ত।
বাসুনিয়াপট্টি, বড় বন্দর – ১০ ই আগস্ট ১০ টা হইতে  ১ টা পর্যন্ত।
গুদরি বাজার, বালুবাড়ি – ১১ ই আগস্ট বেলা ১০ টা হইতে ১ টা পর্যন্ত।

(০৩) এতদ্বারা জানান যাইতেছে যে, মিউনিসিপালিটির পুলহাট খোয়াড়, বালু বাড়ী খোয়াড়, কাঞ্চনঘাট এবং মিউনিসিপালিটির অফিস সংলগ্ন ৮ টি নারিকেল গাছের ডাব ও নারিকেল আগামী ৯ ই আগস্ট রোজ সোমবার বেলা বারটায় প্রকাশ্যে নিলামে বন্দোবস্ত দেওয়া এবং বিক্রয় করা হইবে। চূড়ান্ত ডাককারীকে সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত টাকা জমা দিতে হইবে এবং ডাকের তারিখ হইতে ৭ দিনের মধ্যে অফিসের নির্দেশ মোতাবেক এগ্রিমেন্ট দাখিল করিতে হইবে।

(০৪) আজ রাত ১০ টা হইতে সকাল ৪ টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। উক্ত সময়ের মধ্যে কাহাকেও ঘরের বাহিরে কিংবা রাস্তায় বের হলে গুলি করা হবে।

বাই অর্ডার
এম. এল. অ্যাডমিনিস্ট্রেটর
দিনাজপুর
৮-৮-৭১

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৬৯। ঢাকা শহরে অবস্থানরত চাকুরিজীবিদের শিক্ষার্থী সন্তানদের সম্পর্কে তথ্যানুসন্ধান সরকারী দলিলপত্র উদ্ধৃতঃ এন এক্সপেরিয়েন্স – প্রাগুক্ত ১০ আগস্ট ১৯৭১

গোপনীয়

পাকিস্তান সরকার
চাকুরি ও সাধারন প্রশাসন বিভাগ
সাধারণ প্রশাসন শাখা
সেকশন – ৪

নং- গ.৪/২৪৬/৭১/৬৬৩(৩৫)                               তারিখ: ঢাকা, ১০/০৮/১৯৭১ খ্রিঃ

প্রেরক: এ. এম. এফ. রহমান এস. কে.
অতিরিক্ত মুখ্যসচিব
পূর্ব পাকিস্তান সরকার।

প্রাপক:

এই মর্মে ঢাকা শহরে র্প্বূ পাকিস্তান সরকারের অধীনে এবং সকল স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সকল কর্মচারীদের সন্তান সম্পর্কে নি¤œলিখিত তথ্য সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে;-

ক. সন্তানের নাম ও বয়স
খ. যে স্কুল/কলেজে পড়ালেখা করছে
গ. ক্লাসে যায় কিনা? যদি না যায়, তাহলে কেন?
ঘ. যে স্থানে পড়ালেখা করছে

        ২. প্রশাসনিক ডেপুটির প্রধান তার প্রশাসনিক অঞ্চলের অধীন সকল সরকারী ও স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সন্তানের যাচিত তথ্যাদি সংগ্রহ করবেন। প্রাপ্ত তথ্যাদি অত্র বিভাগ কর্তৃক সংকলিত হবে এবং এদের একীভূত কপি পূর্ব পাকিস্তান সরকারের মূখ্য সচিব বরাবরে পেশ করা হবে।

        ৩. বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, কালেক্টরেট এবং সাব-ডিভিশন কর্মকর্তার কার্যালয়, ঢাকা সদর দক্ষিণ ও ঢাকা সদর উত্তর সাব- ডিভিশনে যে সকল কর্মচারী কর্মরত আছেন তাদের তথ্য সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, এবং সাব- ডিভিশন কর্মকর্তাদের দ্বারা সংগৃহীত হবে এবং তারা এটি সংকলিত করার পর তা রাজস্ব বোর্ডে পাঠাবেন। রাজস্ব বোর্ড বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, এবং দুটি সাব- ডিভিশন কর্মকর্তাদের পাঠানো সংকলিত তথ্য একীভূত করে মূখ্য সচিবের নিকট প্রেরণ করবেন।

        ৪. প্রতিবেদনের তথ্যগুলি এইচকিউ, এম.এল.এ জোন বি ‘তে পাঠানো হবে বিধায় বিষয়টি অতীব জরুরী বিবেচ্য।

(স্বাক্ষরিত, ১০/০৮/৭১)
এ. এম. এফ. রহমান
অতিরিক্ত মূখ্যসচিব

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৭০। রংপুরে শান্তি কমিটির সদস্যদের সমাবেশে সমরিক গভর্নর দৈনিক পাকিস্তান ১২ আগস্ট ১৯৭১

বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ বিনষ্টকারীরা জনগণের শুভাকাঙ্খী নয়গভর্নর

পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও “খ” অঞ্চলের সামরিক শাসনকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান গতকাল বুধবার বলেন যে, যারা যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন ও কলকারখানার ক্ষতিসাধন করে তারা জনগণের শুভাকাঙ্খী হতে পারে না।

জেনারেল টিক্কা খান রংপুরে শান্তি কমিটির সদস্যদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। গভর্নরের সাতে ছিলেন প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ডাঃ এ. এম মালিক ও জাতিসংঘের উদ্বাস্তু হাইকমিশনারের প্রতিনিধি মিঃ জন আর কেলি।

গভর্নর তার বক্তব্য বিশেষ করে বলেন যে, যোগাযোগ ব্যবস্থা না হলে জনগণের কাছে খাদ্যশস্য পৌছাতে অসুবিধা হবে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটালে শিল্পোৎপাদন স্বল্প হবে এবং পরিণামে বেকার হতে হবে কলকারখানার শ্রমিকরা।

গভর্নর এসব গণবিরোধী লোকদের আলাদা করার এবং তাদের উপস্থিতির কথা কর্তৃপক্ষকে জানাবার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

গোলযোগ সৃষ্টিকারীদের নির্মূল এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার কালে সহায়তা করার জন্য শান্তি কমিটি যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি তার প্রশংসা করেন। গভর্নর বলেন যে শান্তি কমিটিগুলো হলো অরাজনৈতিক সংস্থা। এগুলো প্রদেশে সর্বত্র শান্তি বজায় রাখার এবং জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার কাজে সহায়তা করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি আরো বলেন যে রাজাকারেরাও দুষ্কৃতিকারীদের হামলার মুখে নিজ নিজ এলাকা রক্ষা এবং সেতু এবং কালভার্ট পাহারা দিয়ে বিশেষ দরকারী দায়িত্ব পালন করছে।

ফিরে আসা উদ্বাস্তুদের প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন যে প্রেসিডেন্ট বারংবার বলেছেন যে যোগাযোগকালে যেসব প্রকৃত পাকিস্তানি সীমান্ত অতিক্রম করে গিয়েছিল তারা দেশে ফিরে আসলে তাদের স্বাগত জানানো হবে। তাদের জন্য অভ্যর্থনা শিবির খোলা হয়েছে এবং তাদের পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। গভর্নর বলেন কিন্তু ভারত তাদের ফিরে আসতে দিচ্ছে না।

এই বিষয়টি খোলাসা করে বলতে গিয়ে গভর্নর বলেন আমাদের লোকদের গ্রহণ করার জন্য আমরা অভ্যর্থনা শিবির স্থাপন করেছি। আর তাদের দেশে ফেরা বন্ধ করার জন্য ভারত বসিয়েছে চেকপোস্ট। শুধু তাই নয়, ভারত নিজ এলাকায় জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক মোতায়েনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ পর্যবেক্ষক মোতায়েন করা হলে ভারতের আসল উদ্দেশ্য প্রকাশ হয়ে পড়বে। উদ্বাস্তুরা যাতে বাড়ী ফিরতে না পারে সে জন্য সীমান্তে গোলযোগ সৃষ্টি করাই হলো ভারতের পুনঃ পুনঃ গোলাবর্ষনের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। এ সত্ত্বেও এ পর্যন্ত এক লক্ষ দশ হাজার লোক দেশে ফিরে এসেছে।

.

সরকারী কর্মচারীদের প্রতি নির্দেশঃ

    জেলার সরকারী কর্মচারীদের প্রতি একটি পৃথক সমাবেশে গভর্ণর বক্তৃতা দেন। গভর্ণর সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা জানার উদ্দেশ্যে তাদের কাছে যাওয়া এবং যতটুকু সম্ভব দ্রুতগতিতে এবং নিষ্ঠার সাথে কাজ করে সেসব অসুবিধা দূর করার জন্য সরকারী কর্মচারীদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন যে, কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠাই হলো অফিসারদের দায়িত্ব পালন মূল্যায়নের মাপকাঠি।

.

দিনাজপুরে গভর্ণরঃ

    পরে গভর্ণর বিমানযোগে দিনাজপুর যান। তিনি সেখানে শান্তি কমটির সদস্যবৃন্দের ও স্থানীয় অফিসারদের সাথে বৈঠকে মিলিত হন। গত মার্চে গভর্ণরের দায়িত্ব গ্রহণের পর এটাই হলো দিনাজপুরে লেফটেন্যান্ট টিক্কা খানের প্রথম সফর। সেনাবাহিনী এই জেলাটি উদ্ধারের আগে দুষ্কৃতকারীদের হাতে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে গভর্ণর তাদের জানান তার সমবেদনা।

    তিনি ক্ষত আরোগ্য করার এবং পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি হাসিলের উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ কঠোর পরিশ্রম করার জন্য জনগণকে উপদেশ দেন।

    শান্তি কমটির প্রেসিডেন্ট গভর্ণরকে জানান যে, সামরিক ও বেসামরিক কর্তৃপক্ষের আন্তরিক প্রচেষ্ঠার সুফল পাওয়া গেছে। জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হয়েছে এবং জনগপণের আস্থাও পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

    গভর্ণর শান্তি কমিটির সদস্যদের সাথে তাদের কতিপয় স্থানীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন এবং সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য তারা যে সুপারিশ করেছেন সহানুভূতির সাথে তা বিবেচনা করেন।

    গতকার বুধবার সকালে দিনাজপুরে সংঘটিত বাস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্দেশ্যে গভর্ণর দুঃখ ও সমবেদনা প্রকাশ করেন। একটি বাস বিরোল সীমান্ত থেকে ফিরে আসা একদন পাকিস্তানীকে দিনাজপুরে অভ্যর্থণা শিবিরে নিয়ে আসছিল। ভারতীয় এজেন্টদের পুতে রাখা রাস্তার মাইনের আঘাতে বাসটি উড়ে গেছে। গভর্ণর আহত বাস যাত্রীদের দেখার জন্য বেসামরিক হাসপাতালে যান। গভর্ণর গতকাল বিকালে ঢাকায় ফিরে এসেছেন।

.

.

শিরোনামঃ ১৭১। জেলা শহর পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস পালনের একটি কর্মসূচী

সূত্রঃ সরকারী দলিলপত্র জনসংযোগ বিভাগ দিনাজপুর

তারিখঃ ১৩ আগস্ট, ১৯৭১

.

স্বাধীনতা দিবস পালন উপলক্ষে নূতন প্রোগ্রাম

.

অদ্য ১৩ই আগষ্ট শক্রবার বিকেল ৩-৩০ মিঃ টাউন হল হইতে এক শোভাযাত্রা বাহির হইবে এবং শহর প্রদক্ষিণ করিবে। মহল্লা শান্তি কমিটির সভ্যগণকে নিজ নিজ এলাকা হইতে লোকজনসহ ৩টার মধ্যে টাউন হলে উপস্থিত হইতে বলা হইতেছে।

    ১৪ই আগষ্ট শনবার স্পকাল ৬টায় সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি ভবনে পাকিস্তানী পতাকা উত্তোলন।

    সলার ৬টা হইতে দুপুর ১টা পর্যন্ত সমস্ত মসজিদে কোরান পাঠ।

    সকাল ৭টায় স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা পতাকা উত্তোলন, সমস্ত স্কুলের ছাত্র জিলা স্কুলে সমবেত হইবে এবং সমস্ত স্কুলের ছাত্রী সরকারী গার্লস স্কুলে সমবেত হইয়া জাতীয় সঙ্গীত সহকারে পতাকা উত্তোলন করিবে।

    সকাল ৯টায় পুলিশ লাইনে রাজাকার ও পুলিশ বাহিনীর র‍্যালি ও প্যারেড সকল সরকারী কর্মচারী ও জনসাধারণকে উক্ত স্থানে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা যাইতেছে।

    সকাল ১০টায় স্কুলের ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে সিনেমা শো। ছাত্রদের জন্য সিনেমা বোস্তান ছাত্রীদের জন্য মডার্ন সিনেমা।

দুপুর ১-৩০মিঃ সমস্ত মসজিদে পাকিস্তানের সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করিয়া বিশেষ মোনাজাত। মন্দির ও গির্জায় অনুরূপ প্রার্থনা।

    বিকাল ২টায় মহিলাদের মিলাদ মাহফিল, নিউ টাউনের জন্য নিউ টাউন প্রাইমারি স্কুল ও অন্য এলাকার জন্য সরকারি গার্লস স্কুল।

    বিকাল ৪টায় টাউন হলে জনসভা।

    সন্ধ্যা ৭টায় সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি ভবনে আলোক সজ্জা। শ্রেষ্ঠ বিবেচিত বেসরকারি ভবনে আলোকসজ্জার জন্য পুরষ্কার দেওয়া হইবে।

    প্রথম পুরষ্কার ১০০ টাকা, দ্বিতীয় পুরষ্কার ৭৫ টাকা,ও তৃতীয় পুরষ্কার ৫০ টাকা।

    আজ রাত ১০-৩০ মিঃ হইতে সকাল ৪টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকিবে। উক্ত সময়ের মধ্যে কাহাকেও ঘরের নাইরে কিংবা রাস্তায় পাওয়া গেলে গুলি করা হইবে।

By order

  1. L. Administrator

Dinajpur

—————————–

শিরোনামঃ ১৭২। জাতীয় পতাকার যথেচ্ছ ও অসামঞ্জস্য ব্যাবহার বন্ধ করার নির্দেশ

সূত্রঃ সরকারী দলিলপত্র জনসংযোগ বিভাগ, দিনাজপুর

তারিখঃ ১৯ আগষ্ট, ১৯৭১

.

গত ২৬শে মার্চ হইতে জাতীয় পতাকা ব্যক্তিগত বাড়িঘর, গাড়ি, রিক্সা, সাইকেল ইত্যাদিতে যথেচ্ছভাবে উড়ান হইতেছে। ঐ সমস্ত পতাকার বেশীর ভাগ বিবর্ণ, ছেঁড়া ও উপযুক্ত মানের নহে।

    মার্শাল ল অথরিটির নির্দেশে সর্বসাধারণকে জানান যাইতেছে যে তাহারা যেন নিজ নিজ বাড়িঘর দোকান গাড়ী, রিক্সা, সাইকেল ইত্যাদি হইতে অবিলম্বে জাতীয় পতাকা নামাইয়া ফেলেন।

    যে সমস্ত বিল্ডিং এর পতাকা উঠাইবার নির্দেশ আছে সেই সব বিল্ডিং এ যথারীতি পতাকা উড়িবে।

    এতদ্বারা জানান যাইতেছে যে আহামীকল্য ২০ই আগষ্ট সকাল ৯টায় এ, ডি, সি সাহেবের অফিসে নিম্নলিখিত মহল্লার পরিত্যক্ত দোকান ও বাড়ীঘরসমূহের বন্দোবস্ত দেওয়া হইবে। নির্ধারিত সময়ে দরখাস্ত কারীগণকে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হইতেছে। প্রকাশ থাকে যে উক্ত মহল্লার জন্য আর কোন তারিখ দেওয়া হইবে না। বালু-বাড়ি, বড় বন্দর ঘাসিপড়া।

    আজ রাতে ১০-৩০মিঃ হইতে সকাল ৯টা পর্যন্ত কারফিউ জারি থাকিবে। উক্ত সময়ের মধ্যে কাহাকেও ঘরের বাহিরে কিংবা রাস্তায় পাওয়া গেলে গুলি করা হবে।

By order

M.L Administrator

Dinajpur

19-08-71

        —————

.

শিরোনামঃ ১৭৩। অভিযুক্ত জাতীয় পরিষদ সদস্যদের সামরিক আদালতে হাজির হবার নির্দেশ

সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান

তারিখঃ ২১ আগষ্ট, ১৯৭১

.

১৪ জন এম এন এ কে সামরিক আদালতে হাজিরের নির্দেশ

.

    ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন কর্তা লেঃ জেঃ টিক্কা খান সামরিক বিধি ও পাকিস্তান ও দণ্ডবিধি অনুসারে আনীত অভিযোগের জবাব দেবার উদ্দেশ্যে আগামী ২২ শে আগষ্ট সকাল ৮ টায় ২ নং সেক্টরের উপ-সামরিক শাসনকর্তার নাটোরস্থ আদালতে হাজির হওয়ার জন্য ১৪ জন নির্বাচিত এম, এন, এ কে নির্দেশ দিয়েছেন।

    ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক শাসনকর্তা সদর দফতর থেকে গতকাল সোমবার প্রকাশিত এক নোটিশে একথা জানানো হয়েছে।

    এপিপির খবরে প্রকাশ উপরোক্ত ১৪ জন নির্বাচিত এম, এন, এ যদি হাজির না হন তাহলে ৪০ নং সামরিক বিধিবলে তাদের অনুপস্থিতিতেই তাদের বিচার করা হবে।

   এম এন এ গণ হলেনঃ

    ১। রিয়াজুদ্দিন আহমদ, পিতা-দালল উদ্দীন, গ্রাম-হিঙ্গলরায়, থানা-কুড়িগ্রাম, জেলা-রংপুর

    ২। মোশাররফ হোসেন চৌধুরী, পিতা-হাজি মোঃ মফিজ উদ্দীন, দক্ষিন মুন্সী পাড়া, কোতোয়ালী, জেলা-দিনাজপুর।

    ৩। আবদুর রউফ, পিতা-হাজি আজিজুল্লাহ, পোঃবাগডোকরা,মির্জাগঞ্জ,রংপুর।

    ৪। মতিউর রহমান, পিতা-ডাঃ মসিদুর রহমান, গ্রাম-বড় রিশালপুর, পোঃ বোগদনর, থানা- পীরগঞ্জ, জেলা- রংপুর।

    ৫। মফিজ আলী মোহাম্মদ চৌধুরী, পিতা- মরহুম আলী মোহাম্মর চৌধুরী, গ্রাম- পেঞ্চালিয়া, পোঃ- মঙ্গলবাড়ী, জয়পুরহাট, জেলা- বগুড়া।

    ৬। মোহম্মাওদ আজিজুর রহমান, পিতা- মরহুম আকিম উদ্দিন, মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন কাউন্সিল নং ২, থানা ঠাকুরগাঁও জেলা- দিনাজপুর।

    ৭। শাহ মাহতাব আহম্মদ, পিতা- হাজি সিরাজ উদ্দীন, গ্রাম- উত্তর পলাশ বাড়ী, থানা- চিরির বন্দর, জেলা- দিনাজপুর।

    ৮। মজিবুর রহমান, পিতা- মিশরত উল্লাহ, গ্রাম- আলোক্তা, থানা- আদমদীঘি, জেলা- বগুড়া।

    ৯। মোতাহার হোসেন তালুকদার, পিতা- নইমুদ্দীন তালুকদার, লিয়াকত আলী রোড, সিরাজগঞ্জ, পাবনা।

    ১০। আবদুর আওয়াল, পিতা- মোঃ আবদুল বারী, সবাই, হারাগাছা, রংপুর।

    ১১। আবদুল মমিন তালুকদার, পিতা- আবদুল গফুর, গ্রাম- নাককতা, থানা- বেলকুচী, জেলা- পাবনা।

    ১২। আবু সাঈদ, পিতা- নাসির উদ্দীন সরকার, গ্রাম- বৃষ্কখিলা, থানা- বেড়া, জেলা- পাবনা।

    ১৩। এ, বি, এম, মকসেদ আলী, পিতা- মরহুম নেয়ামত আলী সরকার, পোঃ সেতাবগঞ্জ, থানা- বোচাগঞ্জ, জেলা- দিনাজপুর।

    ১৪। প্রফেসর মোঃ ইউসুফ আলী, পিতা- মোঃ গফির উদ্দীন, গ্রাম- ফারাক্কাবাদ, থানা- বিরোল, জেলা- দিনাজপুর।

    ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক শাসনকর্তা লেঃ জেঃ টিক্কা খান এইচ কিউ এ এস পি কে, পি এস সি এই ১৪ জন এম এন এ-র প্রত্যেককে পৃথক পৃথক নোটিশে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিবরণ দিয়ে তাদেরকে সামরিক আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

————-

.

.

দৈনিক পাকিস্তান

১৮ আগষ্ট

আরো ১৬ জন এম এন এ কে সামরিক কর্তৃপক্ষের নিকট হাজির হতে বলা হয়েছে

.

    ১। আতোয়ার রহমান তালুকদার, পিতা- মরহুম হাজী জসীমউদ্দীন তালুকদার, গ্রাম- মথুরাপুর, থানা- বদলগাছি, জেলা- রাজশাহী।

    ২। মোঃ বয়তুল্লাহ, পিতা মরহুম লাল মোহাম্মদ, গ্রাম- চক এনায়েত, পোঃ নওগাঁ, রাজশাহী।

    ৩। খালিদ আলী মিয়া, পিতা- হাজো ইউনুস আলী মিয়া, গ্রাম- সন্তোষ্পুর, পোঃ আলীনগর, রাজশাহী।

    ৪। শাহ মোঃ জাফরুল্লাহ, পিতা- হাকিমুদ্দীন, গ্রাম- তাহের পুর, থানা- বাগমারা, জেলা- রাজশাহী।

    ৫। এ এইচ এম কামরুজ্জামান, পিতা- মোঃ আবদুল হামিদ, মালোপাড়া, রাণী বাজার, পোঃ- বোয়ালিয়া, জেলা- রাজশাহী।

    ৬। আমিরুল ইসলাম, পিতা- ওয়াসেল হোসেন, গ্রাম- মধুপুর, পোঃ ইমানপুর, জেলা- কুষ্টিয়া।

    ৭। আজিজুর রহমান আক্কাস, পিতা- আয়েজুদ্দীন, গ্রাম- বাহিরমোদী, থানা- দৌলতপুর, কুষ্টিয়া।

    ৮। আবু আহমদ আফজালুর রশিদ, পিতা- রুস্তম আলী বিশ্বাস, গ্রাম- বান্দিয়া, থানা- আলমডাঙ্গা, কুষ্টিয়া।

    ৯। কামারুজ্জামান, পিতা- শামসুদ্দীন আহমেদ, গ্রাম- কাঞ্চন নগর, থানা- ঝিনাইদাহ, যশোর।

    ১০। ইকবাল আনোয়ারুল ইসলাম, পিতা- খোশবান, স্যার ইকবাল রোড, থানা- ঝিনাইদাহ, যশোর।

    ১১। সুবোধ কুমার মিত্রা, পিতা- জ্ঞানেন্দ্র নাথ মিত্র, গ্রাম- বেলিয়াডাঙ্গা, থানা- কেশবপুর, যশোর।

    ১২। খোন্দকার আবদুল হাফিজ, পিতা- আবদুল ওয়াদুদ খন্দকার, গ্রাম- মহিষখোলা, থানা- নড়াইল, যশোর।

    ১৩। সোহরাব হোসেন, পিতা- গোলাম তহুর, মাগুরা কাউন্সিল অফিস, পোঃ- মাগুরা, যশোর।

    ১৪। এম, রওশান আলী, পিতা- মান্দার আলী, পোঃ পারা, যশোর।

    ১৫। মোঃ মহসীন, পিতা- মরহুম তসিমুদ্দিন, এম, টি রোড, খুলনা।

    ১৬। মহিউদ্দীন, পিতা- ইয়াকুব হোসেন, ওয়ার্ড নং-২, মেহেরপুর টাউন, কুষ্টিয়া।

.

.

দৈনিক পাকিস্তান

২০ আগষ্ট

আরো উনত্রিশজন এম এন এ কে হাজিরের নির্দেশ

.

    (‘খ’ অঞ্চলের সামরিক প্রশাসন কর্তা লেফটেন্যান্ট জেমারেল টিক্কা খান পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থান থেকে নির্বাচিত আরো ২৯ জন এম এন এ কে আগামী ২৪ শে ও ২৫ শে আগষ্ট সকাল ৮টায় নিজ নিজ এলাকার উপ-সামরিক শাসনকর্তার সম্মুখে হাজির হয়ে তাদের বিরুদ্ধে সামরিক বিধি ও পাকিস্তান দণ্ডবিধি বলে আনীত কতিপয় অভিযোগের জবাব দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার ও গত বৃহস্পতিবার ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক শাসনকর্তার সদরদপ্তর থেকে প্রকাশিত নোটিশে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক প্রশাসন কর্তা পৃথক পৃথক নোটিশে এই এন এম এ দিগকে নিজ নিজ এলাকায় উপ-সামরিক শাসনকর্তার সামনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নোটিশ আছে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিবরণ এবং যে যে ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে সেই ধারাগুলোর উল্লেখ।)

    ১। আবদুল মমিন, পিতা- আঃ আজিজ, গ্রাম- কাজিআটি। থানা- মোহনগঞ্জ, ময়মনসিংহ।

    ২। আমদুল হামিদ, পিতা- তায়েবুদ্দিন হাই, গ্রাম- কামালপুর, পোঃ আঃ নিকজ ধামপাড়া, ময়মনসিংহ।

    ৩। মোঃ আঃ হাকিম, পিতা- হাজি মোঃ জয়নুদ্দিন, গ্রাম- পাথলিয়া, থানা- জামালপুর, ময়মনসিংহ।

    ৪। জিল্লুর রহমান, পিতা- মেহের আলী, গ্রাম- ভৈরবপুর, থানা- ভৈরব, ময়মনসিংহ।\

    ৫। সৈয়দ নজরুল ইসলাম, পিতা- সৈয়দ এ, রইস, গ্রাম- বীরধামপুরা, থানা- কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ।

    ৬। মওলবী হুমায়ুন খালিদ, পিতা- শমসের আলী, গ্রাম- দরবির ছড়ি, থানা ঘাটাইল, টাঙ্গাইল।

    ৭। শামসুর রহমান খান, পিতা- আবদুল মালেক খান, গ্রাম- বাগুনতা, থানা- ঘাটাইল, টাঙ্গাইল।

    ৮। কে, এম, ওবায়দুর রহমান, পিতা- খান আতিকুর রহমান, গ্রাম- লস্করপাড়া, থানা- নগরকান্দা, ফরিদপুর।

    ৯। মোল্লা জালাল উদ্দিন, পিতা- হাতেম মোল্লা, গ্রাম- বড়ফা, থানা- গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর।

    ১০। শামসুদ্দিন মোল্লা, পিতা- নরুদ্দিন আহমদ, গ্রাম- চুমুবদি, থানা- নাগরকান্দা, ফরিদপুর।

.

.

দৈনিক পাকিস্তান

২১ আগষ্ট

.

    ১১। এম, এ, গফুর, পিতা- মৃত জনাব আলী, ধর্মসভা ক্রস রোড, খুলনা শহর।

    ১২। শেখ আবদুল আজীজ, পিতা মৃত শেখ হাফিজুদ্দিন, গ্রাম- মোহসিনাবাদ, থানা- কোতয়অলী, খুলনা।

    ১৩। নুরুল ইসলাম মঞ্জুর, পিতা- মৃত হেমায়েত উদ্দীন আহমদ, বাগুরায়োয়া, বরিশাল।

    ১৪। আবদুল মান্নান হাওলাদার, পিতা- হাসেম হাওলাদার, গ্রাম দক্ষিন নারায়ংগঞ্জ, থানা- বাকেরগঞ্জ, বরিশাল।

    ১৫। আবদুর রব সেরনিয়াবাত, পিতা- আবদুল খালেক সেরনিয়াবাত, গ্রাম- সেরাল, থানা- গৌরনদী, বরিশাল।

    ১৬। এনায়েত হোসেন খাঁন, পিতা- আবদুল কাদের খান, শেহানগল, বাকেরগঞ্জ।

    ১৭। তাহেরুদ্দীন ঠাকুর, পিতা- ফিরোজ উদ্দীন ঠাকুর, গ্রাম- বড় দেওয়ানপাড়া, থানা- সরাইল, কুমিল্লা।

    ১৮। আলী আজম, পিতা- মজিদ ভূইয়া, মাধবী পাড়া, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, কুমিল্লা।

    ১৯। আবদুস সামাদ, পিতা- মৃত সরিয়ত উল্লাহ, গ্রাম- ভুরাখালী, থানা- জগন্নাথপুর, সিলেট।

    ২০। আবদুর রব, পিতা- মৃত আলহাজ্জ মনোয়ার, গ্রাম- আড়ানিযা, পোঃ- খাগুড়া, সিলেট।

    ২১। মুস্তফা আলী, পিতা- মৃত হাজী নাজাত আলী, শায়েস্তা নগর কোয়ার্টার, হবিগঞ্জ, সিলেট।

    ২২। লুৎফর রহমান, চৌধুরী (মানিক), পিতা- আবদুল বশির চৌধুরী, গ্রাম- খাগুড়া, সিলেট।

    ২৩। দেওয়ান ফরিদ গাজী, পিতা- হামিদ গাজী, গ্রাম- কুয়াহাপাড়া, কোতয়ালী, সিলেট।

    ২৪। মোঃ ইলিয়াস, পিতা- মোঃ দাগির, শ্রীমঙ্গল টাউন, পোঃ শ্রীমঙ্গল, সিলেট।

    ২৫। ফজলুর রহমান, পিতা- জহির উদ্দীন ভূইয়া, গ্রাম- তারাকান্দী, থানা- মনোহরদী, জেলা- ঢাকা।

    ২৬। এ, কে, শামুজ্জোহা, পিতা- হাজী ওসমান আলী, ৯৯, চাষাড়া, পোঃ নারায়নগঞ্জ, জেলা- ঢাকা।

    ২৭। আবদুল করিম বেপারী, পিতা- মৃত হাজী ফালান বেপারী, গ্রাম উত্তর রামগোপালপুর, থানা- মুন্সীগঞ্জ, জেলা- ঢাকা।

    ২৮। আবদুর রাজ্জাক ভূইয়া, পিতা- মোগাম্মদ আলী ভূইয়া, গ্রাম- কাঞ্চন হাটাবো, থানা- রূপগঞ্জ, জেলা- ঢাকা।

    ২৯। শামসুল হক, পিতা- ওসমান গণি, গ্রাম- টাঙ্গরাবন্দ, থানা- কালিয়াকৈর, জেলা- ঢাকা।

.

.

দৈনিক পাকিস্তান

২১ আগষ্ট

আরো ১৩ জন এন এমে এ’র প্রতি হাজির হবার নির্দেশ

.

    ১। মিসেস নূরজাহান মুর্শেদ, স্বামী ডঃ সারোয়ার মুর্শেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ৩৭/ই বিশ্ববিদ্যালয়, আবাসিক এলাকা, ঢাকা।

    ২। মিজানুর রহমান চৌধুরী, পিতা- মরহুম মোঃ হাফিজ চৌধুরী, ওয়ার্ড নং ৩, চাঁদপুর পৌরসভা, পোঃ- পুরান বাজার, থানা- চাঁদপুর।

    ৩। এফ, ওয়ালিউল্লাহ, পিতা- ওয়াজুদ্দিন, গ্রাম- চররামপুর, পোঃ- রামপুর, থানা- চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা।

    ৪। কাজী জহিরুল কাইয়ুম, পিতা কাজী জুলফিকার হোসেন, গ্রাম- চিওড়া, থানা- চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা।

    ৫। খোন্দকার মুশতাক আহমদ, পিতা খবির উদ্দিন খোন্দকার, গ্রাম- দশপাড়া, থানা- দাউদকান্দি, কুমিল্লা।

    ৬। খুরশিদ আলম, পিতা- আলহাজ্জ মইন উদ্দীন ভূঁইয়া, ঝাউতলা, কুমিল্লা পৌর এলাকা, কুমিল্লা।

    ৭। নূরুল ইসলাম চৌধুরী, পিতা- আবদুস সালাম চৌধুরী, গ্রাম- গোবিন্দের খিল, থানা- পটিয়া, চট্টগ্রাম।

    ৮। মোহাম্মদ ইদ্রিস, পিতা- মরহুম মোঃ ইসমাইল, ৮৬ টাইগারপাস, পাহাড়তলী, থানা- ডবলমুরিং, চট্টগ্রাম।

    ৯। মুস্তাফিজুর রহমান, পিতা- হাজী মোঃ হোসেন চৌধুরী, গ্রাম- দক্ষিণ রহমতনগর, থানা- সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম।

    ১০। খালিদ মোহাম্মদ আলী, পিতা- হাজী মোঃ নাজাত উল্লাহ মিয়া, গ্রাম- চরমনসা, থানা- লক্ষ্ণীপুর, নোয়াখালী।

    ১১। খাজা আহমদ, পিতা- মরহুম আসলাম মিয়া মোক্তার, বাশপাড়া কোয়ার্টার, থানা- ফেনী, নোয়াখালী।

    ১২। নুরুল হক, পিতা- আবদুর মজিদ, গ্রাম- হাজীপুর, থানা বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী।

    ১৩। মোহাম্মদ হানিফ, পিতা- মরহুম মৌলবী ইব্রাহিম, গ্রাম- কলিকাপুর, থানা- বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী।

——

.

.

শিরোনামঃ ১৭৪। যোগ্য ঘোষিত পরিষদ সদস্যদের প্রতি দায়িত্ব পালনের আহ্বান

সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান

তারিখঃ ২৪ আগষ্ট, ১৯৭১

.

নির্বাচকমন্ডলীর প্রতি দায়িত্ব পালনের জন্য এগিয়ে আসার আহবানঃ

যোগ্য ঘোষিত পরিষদ সদস্যদের পূর্ণ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদান

.

    বেআইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগের নব নির্বাচিত এমএনএ ও এমপিএ গণ যারা পরিষদে ব্যক্তিগতভাবে তাদের আসন বহাল রাখার সুযোগ পেয়েছেন, পূর্ব পাকিস্তান সরকার তাঁদের পুরোপুরিভাবে রক্ষা করার নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন বলে গতকাল সোমবার এপিপির খবরে বলা হয়।

    প্রাদেশিক সরকারের জনৈক মুখপাত্র সোমবার ঢাকায় বলেন যে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের এসব সদস্য তাঁদের নির্বাচনী কেন্দ্রের নির্বাচিত প্রতিনিধি বিধায় জাতি বর্তমানে যে অসুবিধাজনক সময়ের সম্মুখীন হয়েছে, তাতে নির্বাচকমন্ডলীর প্রতি তাঁদের যে দায়িত্ব রয়েছে তা পালনে এগিয়ে আসতে তাঁদের দ্বিধা করা উচিত।

    উক্ত মুখপাত্র আরও বলেন যে, বিলুপ্ত আওয়ামী লীগের টিকেটে নির্বাচিত এমএনএ ও এমপিএ-দের কেসসমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে এবং ৮৮ জন নবনির্বাচিত এমএনএ ও ৯৪ জন নবনির্বাচিত এমপিএ’র বিরুদ্ধে আপত্তিকর কিছুই পাওয়া যায়নি। তাই তাঁদের ভীত হওয়ারও কোনই কারণ নেই এনং দায়িত্ব পালনে তাঁদের এগিয়ে আসা উচিত বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

.

দৈনিক পাকিস্তান

২৮ আগষ্ট

যোগ্য এমএনএ-এমপিও’দের প্রতি আহ্বান

নির্ভয়ে দেশে ফিরে আসুন

.

    বেআইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগের যেসব এমএনএ ও এমপিএ’র আসন ব্যক্তিগত ক্ষমতায় বহাল বলে ঘোষিত হয়েছে, তাঁদের মধ্যে যারা এখনো রয়ে গেছেন পাকিস্তানে ফেরার ব্যাপারে তাঁদের মনে কোনরূপ আশঙ্গকা থাকা উচিত নয়। সীমান্ত অতিক্রম করে তাঁদের ভারত গমন অপরাধ বলে গণ্য হবে না। গতকাল শুক্রবার সরকারীভাবে এ কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

    ঘোষণায় বলা হয়, যেসব নবনির্বাচিত এমএনএ ও এমপিওকে ক্লীয়ারেন্স দেওয়া হয়েছে তা সামগ্রিক ও শর্তহীন।

    আরো বলা হয়েছে যে, এমএনএ এবং এমপিএ-রা যেন স্বার্থান্বেষী মহলের রটানো গুজবে কান না দেন এবং পাকিস্তানে ফিরে এসে নির্বাচকমণ্ডলী এবং জাতির প্রতি তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন।

.

.

শিরোনামঃ ১৭৫। ক্ষতিগ্রস্থ লোকদের জন্য যশোর সদর মহকুমা প্রশাসনের অনুদান মঞ্জুরী সভার একটি কার্যবিবরণী

সূত্রঃ সরকারী দলিলপত্র

তারিখঃ ২৭ আগষ্ট, ১৯৭১

.

যশোর সদরের সাব ডিভিশনাল অফিসারের চেম্বারের ২৮ শে আগস্ট সকাল ১০ টায়  মঞ্জুরী সভার একটি কার্যবিবরনীতে বিগত বিশৃংখলায় সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের অনুদান প্রদানের জন্য বরাদ্দ কমিটিতে জনাব মোঃ মুসা, সাব ডিভিশনাল অফিসার, সদর ও চেয়ারম্যান বরাদ্দ সভাপতিত্ব করেন।

উপস্থিত

জনাস সৈয়দ শামসুর রহমান, চেয়ারম্যান বিভাগীয় শান্তি কমিটি, যশোর

আমজাদ হোসেন সাবির সম্পাদক, বিভাগীয় শান্তি কমিটি, যশোর

এস কে আবদুল্লাহ ম্যাজিস্ট্রেট সদস্য-সচিব

মোঃ মাসুদুর রহমান সম্পাদক নগর শান্তি কমিটি, যশোর

মো কামরুদ্দিন চেয়ারম্যান নগর শান্তি কমিটি

অফিস এ পর্যন্ত ৮৬৪ টি দরখাস্ত পেয়েছে।(গৃহ নির্মান অনুদান, কারিগরী অনুদান, নগদ আর্থিক অনুদান) । এছাড়াও প্রায় প্রতিদিনই অফিসে আবেদন গ্রহন করছে। ৮৬৪ টা আবেদনের মধ্যে ক্ষয় ক্ষতির পরিমান মুল্য নিরুপন করা হয়। আমাদের নিষ্পত্তিতে নিম্নলিখিত শতকরা এবং আক্রান্ত মানুষদের নিরূপিত ক্ষতি/ হানির সীমাবদ্ধতার ভিত্তিতে আবেদনসংখ্যা এবং সরকারী অনুদান বিবেচনা করে অনুদান বরাদ্দ করতে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

        ক্ষয় ক্ষতির পরিমান     স্থির শতাংশ     সর্বনিম্ন সর্বোচ্চ

ক) ভুমি নির্মান অনুদান  ১।সর্বোচ্চ রুপি ৩০০/= ৮.০০%        ১৫০/- রুপি    ২৪০/- রূপী

খ) কারিগরি অনুদান    ২। রুপী ৩০০০/-থেকে রুপী ৫০০০/-   ৬.০০%        ২৪৬/- রুপী    ৩০০/- রুপী

        ৩। রুপী ৫০০/- থেকে উপরে    ৫.০০% ৩১০/- রুপী    ৫০০/- রুপী

গ) নগদ অনুদান        ১। সর্বোচ্চ রুপি ৫০০০/-        ৩.০০% ১০০/-রুপী     ১৫০/- রুপী

        ২। রুপী ৫০০/- এবং এর উপরে ২.০০% ১৫৫/-রুপী     ৫০০ রুপী/-

ঘ) পরিবারে উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের মৃত্যুতে নগদ  সাদারন ত্রান নগদান প্রতি পরিবারে দেয়া হবে।

ঙ)এছাড়াও এটি নির্ণীত যে একজন সদস্য- সচিব দ্বারা নিজ ওয়ার্ড/ মহল্লা/ এলাকার শান্তি কমিটির একজন সদস্য কর্তৃক যথাসথভাবে শনাক্তকৃত  অনুদানপ্রাপ্তদের অর্থ প্রদান করা হবে।

চ) এটাও সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, গোলমালে ক্ষতি গ্রস্ত প্রতিটা পরিবারের জন্য সর্বোচ্চ নগদান অনুদান তিনটি উদ্দেশ্যর জন্য এবং ৫০০ টাকার বেশি নয় যা সরকারী আদেশ মেমো নং; সেকশন ১১১৮২২ (১০)অনুযায়ি ৭ই আগস্ট ১৯৭১ তারিখে ত্রান ও পূনর্বাসন বিভাগ ঢাকা কর্তৃক জারি কৃত।                                                                          ।

                                                এসডি/- মোঃ মুসা ২৮.০৭.৭১

                                                চেয়ারম্যান, বন্দোনস্ত কমিটি

                                                         এবং

                                        সাব ডিভিশনাল অফিসার, সদর যশোর

মেমো নং

পাঠিয়ে দেয়া অনুলিপি                           তারিখ ২৮শে আগষ্ট ১৯৭১

সহকারী . উপ- প্রশাসক , সামরিক আইন প্রশাসন , যশোর .

জেলা প্রশাসক , যশোর

অতিরিক্ত জেলা প্রশাষক যশোর

আপানাদের জ্ঞ্যাতার্থের অথ্য অনুগ্রহে

.

.

শিরোনামঃ ১৭৬। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে সামরিক সরকারের বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা

সূত্রঃ সরকারী দলিলপত্র উদ্ধৃতঃ এক্সপেরিয়েন্স – প্রাগুক্ত

তারিখঃ ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

[ এই দলিলটি উদ্ধৃত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা বিভাগ প্রকাশিত সাহিত্য পত্রিকা, শীত সংখ্যা হতে। প্রকাশ কালঃ ১৯৮২ ইং। ]

.

নিবন্ধন রক্ষকঃ

পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও সামরিক আইন প্রশাষকের অধিদপ্তর ও অফিস সংশ্লিষ্টদের জন্য নিম্নোলিখিত আদেশ সমূহঃ

        ১) সামরিক আইন সদর দপ্তর জোন ‘বি’ ঢাকা।

   আমি, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর লেফট্যানেন্ট জেনারেল টিক্কা খান HQA, S.PK.

এতদ্বারা আপনাকে সতর্ক করা হইতেছে, আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ডঃ মুনির চৌধুরী, ভবিষ্যতে আপনার কোন প্রকার রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে অংশগ্রহনে কোন প্রকারের প্রশ্রয় দেয়া হইবে না.

স্থানঃ ঢাকা                                     এসডি লেফটেনেন্ট জেনারেল টিক্কা খান

১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১                              সামরিক আইন প্রশাষক জোন ‘বি’ এবং

                                                পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর

        ২) সামরিক আইন এর প্রধান সদর দপ্তর ঢাকা।

    আমি, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর লেফট্যানেন্ট জেনারেল টিক্কা খান HQA, S.PK.

এতদ্বারা আপনাকে সতর্ক করা হইতেছে, আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ডঃ নীলিমা ইব্রাহিম,  ভবিষ্যতে আপনার কোন প্রকার রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে অংশগ্রহনে কোন প্রকারের প্রশ্রয় দেয়া হবে না।

স্থানঃ ঢাকা                                     এসডি লেফটেনেন্ট জেনারেল টিক্কা খান

১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১                              সামরিক আইন প্রশাষক জোন ‘বি’ এবং

                                                পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর

        ৩) সামরিক আইন সদর দপ্তর জোন ১৩ ঢাকা।

  আমি, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর লেফটেনেন্ট জেনারেল টিক্কা খান HQA, S.PK.

এতদ্বারা আপনাকে সতর্ক করা হচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের ডঃ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আপনি ভবিষ্যতে কোন প্রকার রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে অংশগ্রহনে কোন প্রকারের প্রশ্রয় দেয়া হইবে না।

স্থানঃ ঢাকা                                     এসডি লেফটেনেন্ট জেনারেল টিক্কা খান

১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১                              সামরিক আইন প্রশাষক জোন ‘বি’ এবং

                                                পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর

৪) সামরিক আইন সদর দপ্তর, জোন ‘বি’ ঢাকা

সামরিক আইনের ধারা ৮০ অনুযায়ী, প্রধান সামরিক আইন প্রশাষক হিসাবে অর্পিত ক্ষমতা বলে, আমি লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান HQA. S.PK, জোন “বি” এর সামরিক আইন প্রশাষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হিসাবে, এতদ্বারা বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ডঃ মনিরুজ্জামান কে অনতিবিলম্বে চাকরী অবসায়ন এর আদেশ এবং সামরিক আইন ৭৮ ধারা অনুযায়ী আপনাকে ৬ মাসের জন্য আটক রাখার নির্দেশ প্রদান করা হইলো

স্থানঃ ঢাকা                                     এসডি লেফটেনেন্ট জেনারেল টিক্কা খান

১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১                              সামরিক আইন প্রশাষক জোন ‘বি’ এবং

                                                পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর

                ৫) সামরিক আইন সদর দপ্তর, জোন ‘বি’ ঢাকা

সামরিক আইনের ধারা ৮০ অনুযায়ী, প্রধান সামরিক আইন প্রশাষক হিসাবে অর্পিত ক্ষমতা বলে, আমি লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান HQA. S.PK, জোন “বি” এর সামরিক আইন প্রশাষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হিসাবে, এতদ্বারা বাংলা উন্নয়ন বোর্ড এর চেয়ারম্যান এবং উক্ত বিশ্ব বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অতিরিক্ত প্রভাষক হিসেবে ডঃ ইনামুল হক কে চাকরী অবসায়ন এর আদেশ প্রদান করা হলো।

স্থানঃ ঢাকা                                     এসডি লেফটেনেন্ট জেনারেল টিক্কা খান

১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১                              সামরিক আইন প্রশাষক জোন ‘বি’ এবং

                                                পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর

৬) সামরিক আইন সদর দপ্তর, জোন ‘বি’ ঢাকা

সামরিক আইনের ধারা ৮০ অনুযায়ী, প্রধান সামরিক আইন প্রশাষক হিসাবে অর্পিত ক্ষমতা বলে, আমি লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান HQA. S.PK, জোন “বি” এর সামরিক আইন প্রশাষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হিসাবে, এতদ্বারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক ইতিহাস বিভাগের প্রধান ডঃ এ বি এম হাবিবুল্লাহ কে অনতিবিলম্বে চাকরী অবসায়ন এর আদেশ প্রদান করা হইলো।

স্থানঃ ঢাকা                                     এসডি! লেফটেনেন্ট জেনারেল টিক্কা খান

১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১                              সামরিক আইন প্রশাষক জোন ‘বি’ এবং

                                                পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর

                                                এসডি!- এস. সাজ্জাদ হোসেন

                                                ১৫.০৯.৭১

ঘোষনা

.

……. এবং যেহেতু জনাব সৈয়দ আকরাম হোসেন বাংলা বিভাগের সর্বশেষ নিযুক্ত অস্থায়ী অধ্যাপক। পূর্বোক্ত তারিখের মধ্যে কাজ নিয়ে প্রতিবেদন করতে ব্যার্থ এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যাতীত এভাবে অনুপস্থিত থেকে ইচ্ছাকৃত ভাবে কর্তব্যে অবহেলা করিয়াছেন।

এবং যেহেতু জোন ‘বি” এর গভর্নর এবং সামরিক আইন প্রশাষক সাথে আদেশ করিয়াছেন, “ যে সব অফিসার ১৫ই জুন ১৯৭১ এর বিকালের মধ্যে কাজে যোগদানে ব্যার্থ হইয়াছেন, পরবর্তী নির্দেশ দেয়া পর্যন্ত ১৬ই জুন ১৯৭১ এর পুর্বাহ্নের সাথে সাথে তাহাদের স্থগিতাদেশ কার্যকর হইবে।

এবং যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় তার সব কর্মচারীদের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করিয়াছে যে, উপরোক্ত ফলাফলের দৃষ্টান্ত স্বরুপ সকলকে সর্বশেষ ১৫-০৬-১৯৭১ এর মধ্যে দায়িত্বে যোগদান করার।

সেহেতু, জনাব সৈয়দ আকরাম হোসেন কে এতদ্বরা জানানো যাচ্ছে যে, জোন “বি” এর গভর্নর এবং সামরিক আইন প্রশাষকের ব্যাক্ত আদেশ এবং ৫ই আগষ্ট তাহাতে বিশ্ববিদ্যালয় মন্ত্রনা সভার সমাধান অনু্যায়ী তাহার স্থগিতাদেশ ১৬ই জুন ১৯৭১ এর পূর্বাহ্নের মধ্যে কার্যকর হবে।

                                                আদেশক্রমে

                                                এসডি আই –নুর উদ্দিন আহমেদ

                                                ২৮-০৭-৭১

                                                নিবন্ধন রক্ষক

                                                ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মেমো নং- c/5917-24                         তারিখঃ ০৩-০৯-৭১

.

.

              শিরোনাম            সূত্র         তারিখ
১৭৭। কয়েকজন অধ্যাপক ও সিএসপি  অফিসারকে হাজির হওয়ার নির্দেশ     দৈনিক পাকিস্তান   ২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

কয়েকজন অধ্যাপক ও সিএসপি অফিসারকে
হাজির হওয়ার নির্দেশ

খ. অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেনারেল টিক্কা খান গতকাল বুধবার এক ইশতেহারে পাঁচ ব্যাক্তিকে তাঁদের সকলের বিরুদ্ধে ২৫ নং সামরিক আইন বিধি ও সেই সঙ্গে পাঠিতব্য খ, সামরিক আইন অঞ্চলের ১২০ নম্বর নির্দেশ অনুযায়ী ৮ই সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় ঢাকা এম পি হোষ্টেলে ছয় নম্বর সেক্টরের সাব মার্শাল ‘ল’ এডমিনিষ্ট্রেটরের সামনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছেঃ
১। মোজাফফর আহমদ চৌধুরী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
২। আবদুর রাজ্জাক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
৩। সারওয়ার মুর্শেদ, ইংরেজী বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
৪। মাজহারুল ইসলাম, বাংলা বিভাগ , ঢাকা  বিশ্ববিদ্যালয়।
৫। আবু জাফর সামসুদ্দিন, বাংলা একাডেমী।

এরা হাজির  হতে ব্যর্থ হলে ৪০ নম্বর  সামরিক আইন বিধি অনুযায়ী এদের  অনুপস্থিতিতে এদের বিচার করা হবে।

খ. অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেনারেল টিক্কা খান গতকাল এক পৃথক ইশতেহারে ১৩ জন অফিসারকে তাঁদের সকলের  বিরুদ্ধে ২৫ নং সামরিক আইন বিধি ও সেই সঙ্গে পাঠিতব্য সামরিক আইন অঞ্চলের ১২০ নম্বর নির্দেশ অনুযায়ী ৮ই সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় ঢাকা এম পি হোষ্টেলে ছয় নম্বর সেক্টরের সাব মার্শাল ‘ল’ এডমিনিষ্ট্রেটরের কাছে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। উক্ত ১৩ জন অফিসার হচ্ছেনঃ

১। খোন্দকার আসাদুজ্জামান, সিএসপি, জয়েন্ট সেক্রেটারী , অর্থ বিভাগ, ঢাকা।
২। এইচ টি ইমাম, সিএসপি, ডিসি, চট্রগ্রাম ।
৩। জনাব আবদুস সামাদ, সিএসপিদ, ডিসি, সিলেট।
৪। জনাব মোহাম্মদ এন কিউ খান, সিএনপি, ডিসি, পাবনা।
৫। সৈয়দ আবদুস সামাদ, সিএসপি, পুনবার্সন অফিস, পার্বত্য চট্রগ্রাম।
৬। কুদরত এলাহী চৌধুরী, সিএসপি, অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার, রাজশাহী।
৭। মোহাম্মদ খুরশেদুজ্জামান চৌধুরী, সিএসপি, এসডিও, কিশোরগঞ্জ।
৮। কাজী রাকুবদ্দিন, সিএসপি, এসডিও, ব্রাক্ষণবাড়িয়া ।
৯। ওয়ালিউল ইসলাম, এসডিও মাগুরা।

         ১০।  আকবর আলী খান , সিএসপি, এসডিও, হবিগঞ্জ।
১১। কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সিএসপি, এসডিও, নড়াইল।
১২। মোহাম্মদ তৌফিক এলাহী চৌধুরী, সিএসপি, এসডিও, মেহেরপুর।
১৩। সাদাত হোসেন, সিসিপি, এসিষ্ট্যান্ট কমিশনার, যশোর।

এরা হাজির হতে ব্যর্থ হলে এদের অনুপস্থিতেতে ৮০ নম্বর সামরিক আইন বিধি অনুযায়ী এদের বিচার
করা হবে ।
.

.

শিরোনামঃ ১৭৮| অভিযুক্ত প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যদের সামরিক কর্তৃপক্ষের নিকট হাজির হবার নির্দেশ

সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান

তারিখঃ ২-৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

৪৮ জন এমপিকে সামরিক কর্তৃপক্ষের নিকট হাজির হবার নির্দেশ

“খ” অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক মোঃ জেনারেল টিক্কা খান অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগের ৪৮ জন নবনির্বাচিত এমপিকে সামরিক আইন বিধি ও পাকিস্তান দন্ডবিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে কতিপয় অভিযোগের জবাবদানের জন্য ৮ই সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় দুই নম্বর সেক্টরের (নাটোর) সাব-মার্শাল ‘ল’ এডমিনিস্ট্রেটরের কাছে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

এমপি পরিবেশিত এই খবরে প্রকাশ, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রদোহিতা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ। উক্ত নির্দেশ অনুযায়ী তারা হাজির হতে ব্যর্থ হলে ৪০ নম্বর সামরিক আইন বিধি মোতাবেক তাদের বিচার করা হবে। এমপিদের নাম ও তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিচে দেয়া হলোঃ

১| আবদুর রহমান চৌধুরী, পিতা- রেশম উদ্দিন চৌধুরী, গ্রাম- নীলফামারী, ডাকঘর ও থানাঃ নীলফামারী, জেলাঃ রংপুর।

ক) ১৬ (ক) সামরিক আইন বিধি এবং ৩০২/১০৯ পাকিস্তান দন্ডবিধি।

খ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা- পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

গ) সামরিক বিধি ৯।

২| আজহারুল ইসলাম, বি, এ, পিতা- মফেল উদ্দিন মিয়া, গ্রাম- উত্তর বড়ভিটা, ডাকঘর- উত্তর বড়ভিটা, থানা- কিশোরগঞ্জ, জেলা- রংপুর।

ক) সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক), পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯।

খ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা- পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

গ) রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় বিদ্রোহী ইপিআর কর্মচারীদের সহায়তাদান ও পরিচালনা- সামরিক

আইন বিধি ৭, ৫ ও ১৬ (ক)।

৩| ডাঃ জিকরুল হক, পিতাঃ জিয়ার উল্লাহ আহমদ, নতুন বাবুপাড়া, ডাকঘর ও থানাঃ সৈয়দপুর, জেলা- রংপুর।

ক) সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক), পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯ ।

খ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা- পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

গ) রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় ইপিআর কর্মচারীদের সহায়তা ও সাহায্য দান- সামরিক দন্ডবিধি ৭ ও

১৬ (ক)।

৪| আবিদ আলী, পিতা- বশিরউদ্দিন, গ্রাম- রসুলগঞ্জ, ডাকঘর ও থানা- পাটগ্রাম, জেলা- রংপুর।

ক) রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় বিদ্রোহী ইপিআর কর্মচারীদের সাহায্যদান- ৭ নম্বর সামরিক আইন

বিধি।

খ) সৈন্যদের চলাচলে বাধাদানের জন্য তার এলাকায় কালভার্ট ও ভবনসমূহের ধ্বংসকার্যে

সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ ও সংগঠন- ১৪ নম্বর সামরিক আইন বিধি।

গ) সামরিক আইন বিধি ৯/৫ পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯।

ঘ) রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা- সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক)।

৫| করিম উদ্দিন আহম্মদ, পিতা- মরহুম অসিমুদ্দিন আহমদ, গ্রাম- কাশিরাম, ডাকঘর- করিমপুর, থানা- কালিগঞ্জ, জেলা- রংপুর।

ক) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯।

খ) সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছে এইরুপ বিদ্রোহী বাহিনী সংগঠনে সক্রিয় অংশগ্রহণ- সামরিক

আইন দন্ডবিধি ৭।

৬| এলাহী বক্স সরকার, পিতা- হাজী জহর উদ্দিন সরকার, গ্রাম- সায়ের, থানা- বদরগঞ্জ, জেলা- রংপুর।

ক) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯ ।

খ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা- পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক) ও সামরিক আইন দন্ডবিধি ১৬ (ক)।

৭| মোঃ সিদ্দিক হোসেন, পিতা- খয়ের উদ্দিন, মৌজা- বখতারপুর, থানা- কোতয়ালী, জেলা- রংপুর।

ক) সামরিক বিধি ১৬ (ক) সামরিক আইন বিধি ৯।

খ) রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় অংশগ্রহণের জন্য গ্রামগুলোকে সংগ্রাম পরিষদ সংগঠন-সামরিক আইন

বিধি ১৬ (ক)।

গ) ১৯৭১ সালের ২৮শে মার্চ রংপুর ক্যান্টনমেন্টে হামলার সংগঠন ও নেতৃত্বদান- সামরিক আইন

বিধি ১৬ (ক)।

৮| মোঃ গাজী রহমান, পিতা- গফুর সরকার, গ্রাম- পীরগঞ্জ, ডাকঘর ও থানা- পীরগঞ্জ, জেলা- রংপুর।

ক) পীরগঞ্জ থানার অস্ত্রাগার লুট এবং লুট করা অস্ত্র দুষ্কৃতকারীদের মধ্যে বন্টনের জন্য দায়ী

সামরিক আইন বিধি ৯ ও ১৬ (ক)।

খ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা- পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

গ) ১৯৭১ সালের ২৮শে মার্চ রংপুর ক্যান্টনমেন্টে হামলার সংগঠন পরিচালনা-সামরিক আইন বিধি

১৬ (ক)।

ঘ) সামরিক আইন বিধি ৯।

দৈনিক পাকিস্তান

৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

.

৯| মোঃ সামসুল হক চৌধুরী, পিতা- কাজী শরাফুদ্দিন চৌধুরী, গ্রাম- চরবলদিয়া, থানা- ভুরুঙ্গামারী, জেলা- রংপুর।

ক) সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক) ও ৯।

খ) রাষ্ট্রদ্রোহী- পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

গ) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০

 ঘ) সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক)।

১০) আবদুল হাকিম, বি, এড, পিতা- মফিজ উদ্দিন শেখ, গ্রাম- রসনাবাদ (নাগেশ্বরী), জেলা- রংপুর।

ক) তার নিজের এলাকায় বিদ্রোহী দল সংগঠন ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করা এবং

এভাবে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা- পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২১/০৯।

খ) সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক)/৫।

গ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা- পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

ঘ) সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক)।

১১| আবুল হোসেন, পিতা- করিম উদ্দিন মন্ডল, গ্রাম- সরাভনা, থানা- লালমনিরহাট, জেলা- রংপুর।

ক) সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক) ও পাকিস্তান দন্ডবিধি ১০৯/৩০২।

খ) সামরিক আইন বিধি-৯।

১২| আবদুল্লাহ সোহরাওয়ার্দী, পিতা- আহমদ হোসেন মন্ডল, গ্রাম- চাকিপাশের ভালুক (উলিপুর), জেলা- রংপুর।

ক) গ্রামে গ্রামে বিদ্রোহী দল সংগঠন ও পরিশেষে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ-সামরিক আইন বিধি

১৬ (ক) ও সামরিক আইন বিধি ৭।

খ) সামরিক আইন বিধি ৯ ও ৫।

১৩| নুরুল ইসলাম, পিতা- নায়েব উল্লা, রৌমারী ইউনিয়ন কাউনসিল, জেলা- রংপুর।

ক) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০৯ খ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক) গ) সামরিক বিধি

১৬ (ক)।

১৪| এম, এ, তালেব মিয়া, পিতা- তাজউদ্দিন, ১০ নং ওয়ার্ড, রংপুর মিউনিসিপিয়ালিটি, কোতয়ালী থানা, জেলা-রংপুর।

ক) সামরিক আইন বিধি ১৬(ক)।

১৫) মোঃ ওয়ালিউর রহমান, পিতা- মোঃ আজিজুর রহমান, ১১ নং ওয়ার্ড, গাইবান্ধা শহর কমিটি, জেলা- রংপুর।

ক) সামরিক আইন বিধি ৯।

খ) সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক)।

গ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা, পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

১৬| আজিজুর রহমান, পিতা- সিরাজ উদ্দিন সরকার, গ্রাম- ভগবানপুর, থানা-পলাশপুর, জেলা- রংপুর।

ক) সামরিক আইন বিধি ৫, ৭ ও ১৬ (ক)।

খ) পলাশবাড়ী থানার অস্ত্রাগার লুটে অংশগ্রহণ- সামরিক আইন বিধি ৯ গ) সামরিক আইন বিধি

১৬ (ক)

১৭| কমর উদ্দীন আহমদ, পিতা- মরহুম হাজী মোঃ ইব্রাহীম, গ্রাম- নতুন বন্ধী, থানা- পঞ্চগড়, জেলা- দিনাজপুর।

১৮| সিরাজুল ইসলাম, এল-এল-বি, পিতা- ইমাজুদ্দীন, গ্রাম- মহাজন পাড়া, থানা- বোদা, জেলা- দিনাজপুর।

১৯| মোঃ ফজলুল করিম, পিতা- মইন উদ্দীন আহমদ, গ্রাম- মলপাড়া, ঠাকুরগাঁ টাউন, জেলা- দিনাজপুর।

ক) এদের নির্বাচনী কেন্দ্রসমূহে আনসার, ইপিআর ও পুলিশ বাহিনীর লোকদের বিপথগামী করে

বিদ্রোহী সংগঠন, তৎপর উক্ত বাহিনীর সাথী হয়ে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ- সামরিক আইন বিধি

৭ ও ১২।

খ) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯।

২০| মোঃ গোলাম রহমান, পিতা- জমির উদ্দীন শাহ, গ্রামঃ গোওয়াল দীঘি, থানা- খানসামা, জেলা- দিনাজপুর।

ক) সামরিক আইন বিধি ৯, ৫ ও ১৬ (ক)।

খ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা- পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

গ) রাষ্ট্রবিরোধী কর্মতৎপরতা- সামরিক আইন বিধি ১৬(ক)।

২১| এস, এম ইউসুফ, পিতা- মরহুম নাজিমউদ্দীন আহমদ শাহ, গ্রাম- মোখলেশপুর, থানা- সিভাল, জেলা- দিনাজপুর।

ক) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯।

খ) সরকারের বিরুদ্ধে মুজাহিদ, আনসার এবং ইপিআর পুলিশ বাহিনীর লোকদের উদবুদ্ধ করা-

পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

গ) রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা- সামরিক আইন বিধি ১৬(ক) ঘ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা- পাকিস্তান দন্ডবিধি

১২৪(ক)।

২২| এম, আবদুর রহিম, পিতা- মরহুম ইসমাইল সরকার, গ্রাম- উত্তর মুনসীপাড়া, থানা- কোতোয়ালী, জেলা- দিনাজপুর।

ক) ভারত গমন এবং ১৯৭১ সালের মার্চ এপ্রিল মাসে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য অস্ত্রশস্ত্র

ও গোলাবারুদ সংগ্রহ।

খ) সামরিক আইনবিধি ১৬ (ক)।

গ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা- পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪(ক)।

২৩| মোঃ খতিনুর রহমান, পিতা- মোঃ চিনুল্লা প্রামানিক, গ্রাম- বসুপাড়া, থানা- পার্বতীপুর, জেলা- দিনাজপুর।

২৪| সরদার মোশারফ হোসেন, পিতা- শফিউদ্দীন সরদার, গ্রাম- ঈদগাবাড়ী, থানা- কোতোয়ালী, জেলা- দিনাজপুর।

ক) সামরিক আইন বিধি ৯/৫ ও পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯।

খ) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯ ঘ) পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

২৫। সাইফুর রহমান, পিতা- নাসির উদ্দিন, গ্রাম- বালিখান বাজার, থানা ও ডাকঘর- পাঁচবিবি, জেলা- বগুড়া।

ক) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯।

খ) সামরিক বিধি ১৬ (ক)।

২৬| কাজিম উদ্দীন আহমদ, পিতা- মোহাম্মদ আলী, শান্তাহার বাজার, ডাকঘর- শান্তাহার, থানা- আদমদিঘী, জেলা- বগুড়া।

ক) সামরিক আইন বিধি ৯।

খ) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯ ।

গ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা- পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

২৭| ডাঃ মোঃ মঈনুদ্দীন আহমদ, পিতা- ডাঃ কলিমুদ্দীন আহমদ, গ্রাম- মনাকষা সদরতলা, ডাকঘর- মনাকষা, জেলা- রাজশাহী।

ক) সামরিক আইন বিধি ৯ ও ১৬ (ক)।

খ) সামরিক আইন বিধি ৯ ও ১৬ (ক)।

গ) সামরিক আইন বিধি ৭ ও পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯।

২৮| মোঃ ডাঃ গোলাম সরওয়ার, পিতা- মরহুম আবদুল গফুর সরকার, গ্রাম- কানোর পাড়া, পোঃ ও থানা- ধুনট, জেলা- বগুড়া।

ক) সামরিক আইন বিধি ৯ ও ১৬ (ক)।

 খ) সামরিক আইন বিধি ৭ ও ৯।

২৯| মোজাফফর হোসেন, পিতা- হাজী রহমতুল্লা পিকে, গ্রাম- দুস্তগাড়ী, পো: ও থানা- শিবগঞ্জ, জেলা- বগুড়া।

৩০| মছেন আলী সরকার, পিতা- হরমাসুদ আলী সরকার, গ্রাম- হরিপদভোগ, পোঃ ভালুরপাড়া, থানা- গাবতলী, জেলা- বগুড়া।

৩১| মোঃ মাহমুদুল হাসান খান, পিতা- ইদরিস খান, চক সূত্রাপুর-১, পোঃ, থানা ও জেলা- বগুড়া।

ক) সামরিক আইন বিধি ৯ ও ১৬(ক)।

খ) সামরিক আইন বিধি ৯ ও ১৬ (ক) ।

গ) বগুড়া থানা অস্ত্রাগার লুট ও দুষ্কৃতকারীদের লুন্ঠিত অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ- সামরিক আইন বিধি ৭ ও ৯।

ঘ) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯।

৩২| এন, এ হামিদুর রহমান, পিতা- ফাহিমদ্দিন মিঞা, গ্রাম- লক্মীনারায়ণপুর, পোঃ বোয়ালিয়া, জেলা- রাজশাহী।

ক) সামরিক আইন বিধি ৭ ও পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯ (ক)।

খ) সামরিক আইন বিধি ৯ ।

গ) সক্রিয়ভাবে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ পরিচালনা- সামরিক আইন বিধি ১৬(ক)।

৩৩| এ, এ, এম মেসবাহুল হক (বাচ্চু ডাক্তার), পিতা- হাজী মোহাম্মদ মনীর উদ্দীন, ঝিলিম রোড, পোঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জেলা- রাজশাহী।

ক) পাকিস্তান আইন বিধি ৯ ও ১৬ (ক)।

খ) সামরিক আইন বিধি ৭ ও পাকিস্তান দন্ডবিধি।

গ) সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক) ও পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯ ।

ঘ) রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ- সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক) ।

ঙ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা-পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

৩৪| মোঃ ডাঃ বশিরুল হক, পিতা- খোদা বকস, গ্রাম ও পোঃ পোরশা, জেলাঃ রাজশাহী।

ক) সামরিক আইন বিধি ৯।

খ) সামরিক আইন বিধি ৯ ।

গ) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯।

৩৫| ইমাজ উদ্দীন প্রামাণিক, পিতা- হজরত উল্লা প্রামাণিক, গ্রাম- বালিকাপুর, পোঃ চকপাইলা, জেলা- রাজশাহী।

ক) সামরিক আইন বিধি ৯ ও পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯।

খ) মউনা থানায় আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগঠন- সামরিক আইন বিধি ১২।

গ) রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা- সামরিক বিধি ১৬ (ক)।

৩৬| গিয়াস উদ্দীন সরদার, পিতা- মরহুম রহিম বকস সরদার, গ্রাম- চক এনায়েত-৩, পোঃ নওগাঁ, জেলাঃ রাজশাহী।

ক) নবনির্বাচিত এমপিএ (পি ই-৫৪) ডাঃ আলাউদ্দীনের সাথে সারদাহ পুলিশ একাডেমীর অস্ত্রাগার

লুট- সামরিক আইন বিধি ৯।

খ) লালপুর থানা থেকে রাইফেল লুট ও দুষ্কৃতকারীদের নিকট সে সব হস্তান্তর- সামরিক আইন

বিধি ৭ ও ৯ ।

গ) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯।

৩৭| মোঃ আজিজুল হক খান, পিতা- জয়নুদ্দীন খান, গ্রাম- সুলতানাবাদ, পোঃ ঘোড়ামারা, জেলা- রাজশাহী।

ক) সামরিক বিধি ১৪।

খ) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯ রাষ্ট্রদ্রোহিতা- পাকিস্তান দন্ডবিধি (ক)।

৩৮| রিয়াজ উদ্দীন আহমদ, পিতা- ওসমান আলী বিশ্বাস, গ্রাম- কেতা বারুইপাড়া, থানা- গোদাগাড়ী, জেলা- রাজশাহী।

ক) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২।

খ) সামরিক আইন বিধি ৯।

গ) রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা- সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক)।

৩৯| আবদুল হাদি, পিতা- আবদুল গফুর, গ্রাম- রাণীনগর, থানা- বোয়ালিয়া, পোঃ ঘোড়ামারা, জেলা- রাজশাহী।

ক) সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক) ও ১৪।

খ) সামরিক আইন বিধি ৯/৫।

গ) রাজশাহী ডেপুটি কমিশনার ৩ জেলা জজের অফিস হতে জাতীয় পতাকা নামিয়ে অগ্নিদগ্ধ সামরিক আইন

বিধি ১৬ (ক)।

ঘ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

৪০) সরদার আমজাদ হোসেন, পিতা- সরদার মোঃ আলী, গ্রাম- হাজির কুটসা, পোঃ গোয়ালকংখী, জেলা- রাজশাহী।

ক) বিদ্রোহী পুলিশ অফিসারদের সহযোগিতায় পুলিশ একাডেমীর অস্ত্রাগার হতে রাইফেল লুট-সামরিক

দন্ডবিধি ৭ ও ৯।

খ) পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯।

গ) রাষ্ট্রবিরোধী কর্মতৎপরতা- সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক)।

৪১| ডাঃ মোঃ আলাউদ্দীন, পিতা- মোঃ এতিম হোসেন সরকার, গ্রাম+পোস্ট ও থানা- নাটোর, জেলা- রাজশাহী।

ক) সামরিক আইন বিধি ৯ ও ১২।

খ) নবনির্বাচিত এমপিএ (পিই-৫৩) সরদার আমজাদ হোসেনের সাথে একত্রে সারদার পুলিশ অস্ত্রাগার লুঠ

সংগঠন- সামরিক আইন বিধি ৯।

গ) ভারতের অমৃত বাজার পত্রিকার সংবাদদাতা ও ফটোগ্রাফারকে তাদের রাজশাহী জেলা সফরে সর্বাধিক

সাহায্য ও সহযোগিতা দান। সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক)।

ঘ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা-পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

৪২| শ্রী শংকর গোবিন্দ চৌধুরী, পিতা- কুমন্দ গোবিন্দ চৌধুরী, গ্রাম- নিরাবাজার, থানা- নাটোর, জেলা- রাজশাহী।

ক) সামরিক আইন বিধি ৯/৫ ও পাকিস্তান দন্ডবিধি ৩০২/১০৯।

খ) ‘খ’ অঞ্চলের পুনঃগঠিত ১২২ নং সামরিক আইন বিধি লংঘন করে ধ্বংসাত্বক কার্যক্রম চালানোর

জন্য তার বাসভবনে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য সঞ্চিত রাখা)- সামরিক আইন বিধি ২৫।

গ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা- পাকিস্তান দন্ডবিধি ১২৪ (ক)।

ঘ) রাষ্ট্রবিরোধী কর্মতৎপরতা সামরিক আইন বিধি ১৬ (ক)।

৪৩| আশরাফুল মিয়া, পিতা- গরিউল্লাহ, গ্রাম- তাজপুর, থানা- সিংড়া, জেলা- রাজশাহী।

ক) পাকিস্তান দন্ডবিধির ৩০২ ধারা।

খ) এম, এল, আর ৭ ও ৯।

গ) রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ- এম এল আর ১৬ (ক)।

৪৪| মোহাম্মদ মনসুর আলী, পিতা- মরহুম হরফ আলী সরকার, গ্রাম- ভগনপুর, পোঃ ও জেলা- পাবনা।

ক) ১৯৭১ সালের মার্চ এপ্রিলে বিদ্রোহী দুষ্কৃতকারীদের প্রধান সংগঠক হিসেবে কাজ করা- এম এল

আর ১৬ (ক)।

খ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা- ১২৪ (ক)।

৪৫| সৈয়দ হায়দার আলী, পিতা- সৈয়দ আকবার আলী, গ্রাম- আল মাহমুদ এভিনিউ, পোঃ সিরাজগঞ্জ, জেলা- পাবনা।

ক) এম এল আর ৯/৫ ও পিপিপি ৩০২/১০৯।

খ) পুলিশ, আনসার ও ইপিআর কর্মচারীদের উত্তেজিত করা ও একটি বিদ্রোহী বাহিনী সংগঠন করে

উল্লাপাড়া থেকে নগরবাড়ী ঘাটের দিকে আগত পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধে তাদের লেলিয়ে

দেয়া- এম এল আর ৭ ও ১২।

৪৬| রওশানুল হক, পিতা- ওবেদুল হক, গ্রাম- কৃশহ্নদিয়া, পোঃ পাকসি, জেলা- পাবনা।

ক) এম এল আর ৭ ও ৯/৫।

খ) বগুড়ার কাছে সেনাভবনে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য

সেগুলিকে দুষ্কৃতকারীদেরকে সরবরাহ- এম এল আর ৯ ও ১২/৫ ।

গ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা- পিপিসি ১২৪ (ক)।

৪৭| গোলাম আশরাফ, পিতা- আলহাজ্ব আবদুর হামিদ, গ্রাম ও পোঃ উল্লাপাড়া, জেলা- পাবনা।

ক) পিপিসি ৩০২/১০৯।

খ) ৭১ সালের ২৭-২৮ শে মার্চ সেনাবাহিনীর একটি কোম্পানীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিদ্রোহী দুষ্কৃতকারীদের পক্ষে

অংশ গ্রহণ- এম এল আর ১২।

গ) এম এল আর ৯ ও ১৬ (ক)।

ঘ) এম এল আর ১৪ ও ১৬ (ক)।

৪৮| আবদুর রহমান, পিতা মোহাম্মদ ওয়াহেদ আলী, মনিরামপুর গোলা, শাহজাদপুর, জেলা- পাবনা।

ক) এম এল আর ৯ ও ১৬ (ক)।

খ) ৭১ সালের ২৭-২৮ শে মার্চ বিদ্রোহী ও দুষ্কৃতকারীদের সাথে মিলিত হয়ে সেনাবাহিনীর একটি

কোম্পানীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ- এম এল আর ১২।

গ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা- পিপিসি ১২৪ (ক)।

দৈনিক পাকিস্তান

৩ সেপ্টেম্বর।

আর ও ১৪৫ জন এমপিএ’র প্রতি হাজির হবার নির্দেশ

.

গতকাল বৃহস্পতিবার ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক শাসনকর্তার সদর দফতর থেকে জারীকৃত এক বিজ্ঞপ্তিতে পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় আর ও ১৪৫ জন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যকে তাদের বিরুদ্ধে সামরিক বিধি ও পাকিস্তান দন্ডবিধি অনুযায়ী আনীত কতিপয় অভিযোগের জবাব দেয়ার জন্য ৯ই সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় তাদেরকে স্ব স্ব এলাকার সামরিক উপ-শাসনকর্তার নিকট হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহিতা, অস্ত্রাগার লুন্ঠন, দুষ্কৃতকারীদের মধ্যে অনুমোদিত অস্ত্রবিতরণ, ভারত থেকে অস্ত্র চোরাচালান এবং রাষ্ট্রবিরোধি ব্যক্তিদের ট্রেনিং প্রদান। যদি তাঁরা নির্দেশ মত হাজির হতে ব্যর্থ হয় তাহলে ৪০ নম্বর সামরিক বিধি অনুযায়ী তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার করা হবে।

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযোগ্য যে গতকাল ৪৮ জন এমপিএকে আগামী ৮ই সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় ২ নম্বর সেক্টরের নাটোর উপ-সামরিক শাসনকর্তার সামনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আজকের তালিকা প্রকাশের পর সামরিক বিধি ও পাকিস্তান দন্ডবিধি অনুযায়ী অভিযোগ এমপিএ-র সংখ্যা দাড়াল ১৯৩ জন। নিচে ১৪৫ এমপির নাম এবং তাদেরকে যে সমস্ত সামরিক বিধি ও পাকিস্তান দন্ডবিধির যে সমস্ত ধারা অনুযায়ী অভিযুক্ত করা হয়েছে তার বিবরণ দেয়া হলো।

সেক্টর-১ঃ ঢাকা

.

নিম্নলিখিত এমপিএদের সেক্টর ১ (ঢাকা)-এর উপ-সামরিক শাসনকর্তার সামনে হাজির হতে হবেঃ

১| মোঃ আশরাফ হোসেন (ময়মনসিংহ)ঃ এম এল আর ১৬ ক। এবং পিপিসি ১২৪ ক।

২| মোঃ রাশেদ মোশাররফ (ময়মনসিংহ)ঃ এম এল আর ১৬ ক। এবং পিপিসি ১২৪ ক।

৩| মোঃ আবদুল হাই (ময়মনসিংহ) ঃ এম এল আর ১৬ ক। এবং পিপিসি ১২৪ ক।

৪| নিজাম উদ্দীন আহমদ (ময়মনসিংহ) এম এল আর ১৬ ক। এবং পিপিসি ১২৪ ক।

৫| ডাঃ নাদিরুজ্জামান খান (ময়মনসিংহ) এম এল আর ১৬ ক, পিপিসি ৩০২/১০৯ এবং পিপিসি ১২৪ ক।

৬| মোঃ আবদুল হালিম (ময়মনসিংহ)ঃ এম এল আর ৯ পিপিসি ৩০২/১০৯ এবং পিপিসি ১২৪ ক।

৭| কুদরতুল্লা মন্ডল (ময়মনসিংহ)ঃ এম এল আর ১৬ ক।

৮| শামসুল হক (ময়মনসিংহ)ঃ এম এল আর ৭, ৯ পিপিসি ৩০২/১০৯ এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

৯| মোঃ জামান আলী মিয়া (ময়মনসিংহ)ঃ এম এল আর ১৬(ক), পিপিসি ধারা ৩০২/১০৯ এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

১০| মোঃ হাতেম আলী (ময়মনসিংহ)ঃ এম এল আর ১৬ (ক), পিপিসি ৩০২/১০৯ এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

১১) খোন্দকার আবদুল মালেক ওরফে শহীদুল্লাহ (ময়মনসিংহ)ঃ এম এল আর ৭, ১২, ১৬ (ক) এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

১২| আবুল মনসুর আহমদ (ময়মনসিংহ)ঃ পিপিসি ৩০২/১০৯, এম এল আর ১৬ (ক) এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

১৩| মোস্তফা এম, এ মতিন (ময়মনসিংহ)ঃ এম এল আর ১৬(ক), ৭ এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

১৪| আবদুল হাসেম (ময়মনসিংহ) এম এল আর ৭, ১৬ (ক) এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

১৫| আবদুল মজিদ ওরফে তারা মিয়া (ময়মনসিংহ) এম এল আর ১৪, ১৬(ক) এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

১৬| আবদুল খালেক (ময়মনসিংহ) এম এল আর ৭, ১৬ এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

১৭| এ,কে, এম সামসুল হক (ময়মনসিংহ) এম এয় আর ৭, ১৬ (ক)।

১৮| এম, এ কুদ্দুস (ময়মনসিংহ) এম এল আর ১৬ (ক) এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

১৯| গোলাম মুর্শেদ ফারুক (ঢাকা) পিপিসি ৩০২/১০৯, এম এল আর ৭, ১২/৫, ১৬ (ক)।

২০| মোঃ হাসেম (ঢাকা) পিপিসি ৩০২/১০৯, এম এল আর ১৪, ১৬ (ক)।

২১| মাসুদ আহমেদ চৌধুরী (সিলেট) এম এল আর ১৬ (ক) এবং ৯।

২২| সৈয়দ সেরাজুল ইসলাম (কুমিল্লা) পিপিসি ৩০২/১০৯ এবং এম এল আর ১৬ (ক)।

২৩| লুতফুল হাই (কুমিল্লা) পিপিসি ৩০২/১০৯, এম এল আর ৯,১৬ (ক)।

২৪| সৈয়দ ইমাদুল বারী (কুমিল্লা) এম এল আর ১৬ (ক), ৭।

২৫| আহমেদ আলী (কুমিল্লা) পিপিসি ৩০২/১০৯, এম এল আর ১৬ (ক), ৭/৫।

২৬| কাজী আকবার উদ্দীন আহমদ (কুমিল্লা) এম এল আর ৯, পিপিসি ৩০২/১০৯ এবং এম এল আর ১৬ (ক)।

২৭| মোঃ গোলাম মহিউদ্দীন আহমেদ (কুমিল্লা) এম এল আর ৭, ১৬ (ক) ৯, এবং পিপিসি ৩০/৯।

২৮| আবদুর রশিদ (কুমিল্লা) এম এল আর ১৬ (ক)।

২৯| এ, আজিজ খান (কুমিল্লা) পিপিসি ৩০২/১০৯, এম এল আর ৭, ১৬ (ক)।

৩০| আমীর হোসেন এম এল আর ৭,৯, ১৬ (ক) পিপিসি ৩০২/১০৯, এম এল আর ২৩।

৩১| মীর হোসেন চৌধুরী (কুমিল্লা) এম এল আর ৭,৯,১২, ১৬ (ক) পিপিসি ৩০২/১০৯।

৩২| আবদুল আউয়াল (কুমিল্লা) এম এল আর ৯, ১৬ (ক), ১৪, ১২, ৭।

৩৩| জালাল আহমদ (কুমিল্লা) পিপিসি ৩০২/১০৯ এম এল আর ১২/৫, ১৪, ৯, ১৬(ক)।

৩৪| সিকান্দার আলী (কুমিল্লা) পিপিসি ৩০২/১০৯ এম এল আর ৭,৯, ১৯, ১৬(ক)।

৩৫| আবদুল সাত্তার (কুমিল্লা) পিপিসি ৩০২/১০৯, এম এল আর ১২, ১৬ (ক) ৯ ও ১৪ ।

৩৬| সাবেক ফ্লাইট লেঃ এ, বি সিদ্দিক সরকার (কুমিল্লা) এম এল আর ৭, ৯, ১২/৫, ১৬ (ক)।

৩৭| সেরাজুল ইসলাম পাটওয়ারী (কুমিল্লা) এম এল আর ৭, ৯, ১৪, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২/১০৯।

৩৮| মোঃ রাজা মিয়া (কুমিল্লা) এম এল আর ৯,১২, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২/১০৯।

৩৯| আবদুল হাকিম চৌধুরী (সিলেট) এম এল আর ৭, ১৬(ক), পিপিসি ১২৪ (ক)।

৪০| সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত (সিলেট) এম এল আর ১৬ (ক) এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

৪১| আজিজুর রহমান (সিলেট) এম এল আর ৯, ১৬(ক), এবং পিপিসি ১২৪(ক) ।

৪২| এনামুল হক (সিলেট) এম এল আর ৯, ১৬ (ক)।

৪৩| ডাঃ আবুল হাসেম (সিলেট) এম এল আর ১৬(ক) এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

৪৪| গোপাল কৃষ্ণ মহারত্ন, এম এল আর ১৬(ক) এবং পিপিসি ১২৪(ক)।

৪৫| শেখ মিজানুর ইসলাম (টাঙ্গাইল) এম এল আর ৭ এবং ১৬ (ক)।

৪৬| বদিউজ্জামান খান (টাঙ্গাইল) এম এল আর ৭,৯, ১২, ১৬(ক)।

৪৭| এম, এ, বাসিত সিদ্দিকী (টাঙ্গাইল) এম এল আর ১২/৫ এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

৪৮| এ, লতিফ সিদ্দিকী (টাঙ্গাইল) এম এল আর ৭, ১২, ১৬ (ক) এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

৪৯| মোঃ ইনসান আলী মোক্তার (টাঙ্গাইল) এম এল আর ২৫/৫ এবং পিপিসি ১২৪(ক)।

৫০| সেতাব আলী খান (টাঙ্গাইল) এম এল আর ৭, ১২, ১৬ (ক) এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

৫১| ফজলুর রহমান খান (টাঙ্গাইল) এম এল আর ৭, ১২, ১৬ (ক) এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

৫২| মোঃ সামসুদ্দীন আহমদ (টাঙ্গাইল) এম এল আর ৭, ১২ এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

৫৩| আবদুর রইস (সিলেট) এম এল আর (ক) ৯, ১৬(ক) এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

৫৪| শমসের মিয়া চৌধুরী (সিলেট) এম এল আর ৭, ১২, ১৬ (ক)।

৫৫| মোঃ আবদুস জহুর (সিলেট) এম এল আর ১৬ (ক), ১২, ১৬(ক) ।

৫৬| মোঃ আবদুল লতিফ (সিলেট) এম এল আর ১২, পিপিসি ৩০২/১৪৯ এবং এম এল আর ৯ এবং ১৬ (ক), পিপিসি ১২৪(ক)।

৫৭| আইয়ুব আলী (সিলেট) এম এল আর ১৬(ক), ৯ ।

৫৮| নওয়াব আলী (সিলেট) এম এল আর ৯, ১৬(ক), ১২, পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

৫৯| তাওয়াবুর রহিম (সিলেট) এম এল আর ৭, ৯, ১২(ক) ।

৬০| আলতাফুর রহমান চৌধুরী (সিলেট) এম এল আর ৯, ১৬ (ক), পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

.

সেক্টর নং- ২ নাটোর

.

নিম্নলিখিত ২ জন এম পি-কে ২ নং সেক্টরে (নাটোর) এর উপ সামরিক শাসনকর্তার সামনে হাজির হতে বলা হয়েছেঃ

১| মোঃ মোজাম্মেল হক (পাবনা) এম এল আর ৭,৯/৫, ১৪, পিপিসি ১২৪ (ক) এবং ০২/১০৯।

২| মোঃ আবদুর রব (পাবনা) এম এল আর ৯, ১৬ (ক), এবং পিপিসি ৩০২/১০৯।

.

সেক্টর-৩ যশোর

.

নবনির্বাচিত ৪৮ জন এমপি এ-কে যশোরে ৩ নং সেক্টরের উপ-সামরিক শাসনকর্তার দফতরে হাজির হতে হবেঃ

১| কাজী খাদেমত ইসলাম (যশোর) ১২, ৭,৯ এবং ১৬ (ক) সামরিক বিধি এবং পিপিসি-র ৩০২/১০৯।

২| এ,বি,এম গোলাম মজিদ (যশোর) এম এল আর ৭ ও ৯ এবং পিপিসি ৩০২/১০৯।

৩| জে, কে,এম,এ, আজিজ (যশোর) এম এল আর ৯, ১৬(ক), এবং ৩০২/১০৯ পিপিসি। ।

৪| মোঃ তবিবর রহমান সরকার (যশোর) এম এল আর ৭,৯, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২/১০৯।

৫| মোঃ আবুল ইসলাম (যশোর) এম এল আর ৭, ৯, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

৬| মোঃ নুরুল ইসলাম এডভোকেট (যশোর) এম এল আর ৭,৯, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২/১০৯।

৭| শাহ বদিউজ্জামান (যশোর) এম এল আর ৯, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

৮| এম, মোশাররফ হোসেন (যশোর) এম এল আর ৯, ১২, ১৬(ক) এবং ৩০২/১০৯, ১০৯ ও ১২৪ (ক) পিপিসি।

৯| আসাদুজ্জামান মোক্তার (যশোর) এম এল আর ৯, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২/১০৯।

১০| সৈয়দ আতর আলী (যশোর) এম এল আর ৯, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২/১০৯।

১১| শহীদ আলী খান (যশোর) এম এল আর ৯ এবং ৩০২ পিপিসি।

১২| এস, এম মতিয়ার রহমান (যশোর) এম এল আর ৯, ৭, ১৬(ক) এবং ৩০২/১০৯, ৩৭৬/১০৯ এবং ১২৪(ক), পিপিসি।

১৩| কাজী হেদায়েত হোসেন (ফরিদপুর) এম এল আর ৭, ১২, ১৬ (ক)।

১৪| গৌর চন্দ্র বালা (ফরিদপুর) এম এল আর ১৬(ক), পিপিসি ১২৪ (ক)।

১৫| ডাঃ আবতাবুদ্দীন মোল্লা (ফরিদপুর) এম এল আর ৭,১২, ১৬(ক) ।

১৬| ইমামুদ্দীন আহমদ (ফরিদপুর) এম এল আর ৭, ৯, ১৬(ক) ।

১৭| আমীন উদ্দীন আহমদ (ফরিদপুর) এম এল আর ১৬(ক) এবং ৩০২/১০৯ এবং ১২৪(ক) পিপিসি।

১৮| কাজী আবদুর রশীদ এডভোকেট (ফরিদপুর) এম এল আর ৯, ১২ এবং ৩০২/১০৯, ১২৪ (ক) পিপিসি ।

১৯| আখতার উদ্দীন মিয়া (ফরিদপুর) এম এল আর ৯, ১২, ৩০২/১০৯, ১২৪(ক) পিপিসি ।

২০| সতীশ চন্দ্র হালদার (ফরিদপুর) এম এল আর ১৬(ক), ৫, ৯ এবং ৩০২/১০৯ ও ১২৪(ক)।

২১| ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী (ফরিদপুর) এম এল আর ৫, ৯ এবং পিপিসি ৩০২ ।

২২| আসমত আলী খান আইনজীবী (ফরিদপুর) এম এল আর ৭, ১৬(ক), ২৫ ‘খ’ অঞ্চল, এম এল ও ১৩৩ এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

২৩| মোঃ মতিয়ার রহমান (ফরিদপুর) এম এল আর ৯, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২/১০৯, ৩৭৬/১০৯।

২৪| মোঃ আলী আহমদ খান (ফরিদপুর) এম এল আর ৭,৯, ১২ এবং পিপিসি ৩০২/১০৯, ১২৪(ক)।

২৫| আবদুর রাজ্জাক (ফরিদপুর) পিপিসি ১২৪(ক) ।

২৬| ফনী মজুমদার (ফরিদপুর) এম এল আর ৭, ১৬(ক), পিপিসি ৩০১/১০৯ ।

২৭| এ,কে, এম ইসমাইল মিয়া (বাকেরগঞ্জ) এম এল আর ৯, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২ ।

২৮| মোঃ আমীর হাসান ওরফে আমীর (বাকেরগঞ্জ) এম এল আর ৭, ১২,৯, ১২/৫, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

২৯| মোঃ ফজলুল হক (বাকেরগঞ্জ) এম এল আর ৯ ও পিপিসি ৩০২/১০৯।

৩০| সওগাতুল আলম (বাকেরগঞ্জ) এম এল আর ১২, ১৬(ক), পিপিসি ১২৪ (ক)।

৩১| মহিউদ্দিন আহমদ (বাকেরগঞ্জ) এম এল আর ৭,৯, ১৬(ক)।

৩২| আবদুল করিম সরদার (বাকেরগঞ্জ) এম এল আর ৭,৯, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২/১০৯।

৩৩| ক্ষীতিশ চন্দ্র মন্ডল (বাকেরগঞ্জ) এম এল আর ৭, ৯ এবং পিপিসি ৩০২, ৩৭৬/১০৯, ১২৪(ক) ।

৩৪| শেখ আলী আহমদ (খুলনা) এম এল আর ১৬(ক), ৯ এবং পিপিসি ৩০২/১০৯, ৩৭৬, ১২৪(ক) ।

৩৫| এ, রহমান শেখ (খুলনা) এম এল আর ৯, ১২/৫ এবং পিপিসি ৩০২/১০৯, ১২৪(ক)।

৩৬| কুবের চন্দ্র বিশ্বাস (খুলনা) এম এল আর ১২, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২, ৩০২/১০৯, ১২৪(ক) ৩৭| এনায়েত আলী খান (খুলনা) এম এল আর ৯, ১৬(ক) পিপিসি ৩০২/১০৯।

৩৮| এস, এম আলাউদ্দীন (খুলনা) পিপিসি ৩০২/১০৯, এম এল আর ৯।

৩৯| সৈয়দ আবদুল হাসেম (পটুয়াখালী) এম এল আর ১৬(ক), ৭,৯ এবং পিপিসি ১২৪ (ক)।

৪০| আবদুল আজিজ খন্দকার (পটুয়াখালী) এম এল আর ১৬ (ক), পিপিসি ১২৪(ক) ।

৪১| আবুল বারেক (পটুয়াখালী) এম এল আর ১৬(ক), পিপিসি ৩০২ এবং ১২৪ (ক)।

৪২| গোলাম কিবরিয়া (কুষ্টিয়া) এম এল আর ৭, ১৬(ক) এবং ৯, পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

৪৩| নুরুল হক (কুষ্টিয়া) এম এল আর ৭,৯, ১৬ (ক), পিপিসি ৩০২/১০৯।

৪৪| ডাঃ আসমাবুল হক (কুষ্টিয়া) এম এল আর ৭, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২/১০৯ এবং ১২৪(ক) ।

৪৫| এখলাস আলী (কুষ্টিয়া) এম এল আর ৭, ১৬(ক) এবং পিপিসি ৩০২/১০৯ এবং ১২৪(ক)।

৪৬| জহুরুল হক (কুষ্টিয়া) এম এল আর ৭, ৯ এবং পিপিসি ৩০২/১০৯, ৩০২ ।

৪৭| আবদুর রউফ চৌধুরী (কুষ্টিয়া) এম এল আর ৭, ৯ এবং পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

৪৮| আহসানুল্লাহ (কুষ্টিয়া) এম এল আর ১২/৫ এবং পিপিসি ১২৪(ক)।

.

সেক্টর- ৪ (চট্টগ্রাম)

.

নিম্নলিখিত ১৬ জন এমপিএকে ৪ নম্বর সেক্টরের (চট্টগ্রাম) এস এম এম এ- এর সামনে হাজির হতে হবেঃ

১| আবু নাসের চৌধুরী (নোয়াখালী)ঃ এম এল আর ৭, ৯/৫, ১৬(ক) ও পিপিসি ৩০২/১০৯।

২| মাস্টার রফিকুল্লাহ মিয়া (নোয়াখালী)ঃ এম এল আর ৯, ৫, ১৬(ক) ও পিপিসি ৩০২/১০৯।

৩| নুরুল আহাদ চৌধুরী ওরফে কালু চৌধুরী (নোয়াখালী) এম এল আর ৯, ৫ ও ১৬(ক)।

৪| বিসমিল্লাহ মিয়া (নোয়াখালী) এম এল আর ৯, এম এল আর ১৪, ১৬ (ক) ও পিপিসি ৩০২/৯০১।

৫| মোঃ আবদুল মোহাইমেন (ঢাকা) এম এল আর ১৬(ক) ও পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

৬| শহীদুল্লাহ ইসকান্দার (নোয়াখালী) এম এল আর ৭, ৯ ও ১৬(ক) ও পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

৭| সিরাজুল ইসলাম (নোয়াখালী) এম এল আর ১৬(ক), ৯/৫, ১২ ও পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

৮| মোশাররফ হোসেন (চট্টগ্রাম) এম এল আর ৭, ৯, ১৬(ক) ও পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

৯| মীর্জা আবু মনসুর (চট্টগ্রাম) এম এল আর ৯/৫, ৭, ১৬(ক) ও পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

১০| আবদুল ওয়াহাব (চট্টগ্রাম) এম এল আর ১৬(ক), ২০ ও ১২/৫ ।

১১| জহুর আহমদ চৌধুরী (চট্টগ্রাম) এম এল আর ১৬(ক), ২০ ও পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

১২| ডাঃ এম, এ মান্নান (চট্টগ্রাম) এম এল আর ৯,১৬(ক) ও পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

১৩| ডাঃ বি, এম ফয়জুর রহমান (চট্টগ্রাম এম এল আর ১৬(ক) ও পিপিসি ৩০২/ ১০৯ ।

১৪| মোহাম্মদ উল্লাহ (চট্টগ্রাম) এম এল আর ৯/৫, ১২, ১৬(ক) ও পিপিসি ৩০২/ ১০৯ ।

১৫| মৌলবী খয়ের উদ্দিন এম এ, এল-এল-বি, এডভোকেট (চট্টগ্রাম) এম এল আর ১৪, ৯/৫ ও ৭ ।

১৬| এ,বি, এম তালেব আলী (চট্টগ্রাম) এম এল আর ৯, ৭, ১৬(ক) ও পিপিসি ৩০২/১০৯।

.

সেক্টর- ৬ (ঢাকা)

.

নিম্নোক্ত ১৯ জন এমপিএকে হোস্টেল ৬ নম্বর সেক্টরের এম এম এল এ-এর সামনে হাজির হতে বলা হয়েছে।

১| খোন্দকার মাজহারুল হক (ঢাকা) এম এল আর ৯ ও ১৬(ক), পিপিসি ১২৪(ক)।

২| শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন (ঢাকা) এম এল আর ৭, ১২, ১৬(ক), পিপিসি ১২৪ (ক)।

৩| জামাল উদ্দিন চৌধুরী (ঢাকা) এম এল আর ১২, ৯, পিপিসি ১২৪(ক) ।

৪| মোঃ শামসুল হক মিয়া (ঢাকা) এম এল আর ১৬(ক), পিপিসি ১২৪(ক) ।

৫| আবু মোহাম্মদ সুবিদ আলী (ঢাকা) এম এল আর ১৬(ক), পিপিসি ১২৪(ক) ।

৬| হামিদুর রহমান (ঢাকা) এম এল আর ১২/৫, এম এল আর ১৬(ক), পিপিসি ১২৪(ক)।

৭| মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম (ঢাকা) এম এল আর ২৫, এ ইচ কিউ এম এল আর বি অর্ডার নং ১৩৩, এম এল আর ১৬(ক), এম এল আর ৭ ।

৮| গাজী গোলাম মোস্তফা (ঢাকা) এম এল আর ১৬(ক), পিপিসি ১২৪(ক) ।

৯| ডাঃ মোশাররফ হোসেন (ঢাকা)ঃ এম এল আর ১২/৫, পিপিসি ৩০২/১০৯ ও এম এল আর ৯ ।

১০| হেদায়েতুল ইসলাম (ঢাকা)ঃ এম এল আর ১৬(ক), পিপিসি ১২৪(ক) ।

১১| আবদুল হাকিম মাস্টার (ঢাকা)ঃ এম এল আর ১৬(ক), এম এল আর ১৪, এম এল আর ১৬(ক), এম এল আর ৭।

১২| মোহাম্মদ আনোয়ার জঙ্গ (ঢাকা)ঃ এম এল আর ৯/৫, পিপিসি ৩০২/১০৯ ।

১৩| মোঃ মইজুদ্দীন (ঢাকা)ঃ এম এল আর ৯/৫, পিপিসি ৩০২/১০৯, ১২৪ (ক)।

১৪| গাজী বজলুর রহমান (ঢাকা)ঃ এম এল আর ১৬(ক), এম এল আর ৯/৫, এম এল আর ১৬(ক), পিপিসি ১২৪(ক) ।

১৫| রাজিউদ্দীন আহমদ (ঢাকা)ঃ এম এল আর ১৬(ক), এম এল আর ৯/৫, পিপিসি ৩০২/১০৯, এম এল আর ১২/৫, ১২৪(ক) ।

১৬| মুসলেহ উদ্দীন ভূঁইয়া(ঢাকা)ঃএম এল আর ৯/৫, পিপিসি ৩০২/১০৯, এম এল আর ১২/৫, পিপিসি ১২৪(ক) ।

১৭| মোঃ সাদত আলী সিকদার (ঢাকা)ঃ এম এল আর ১৬(ক), পিপিসি ১২৪(ক)।

১৮| মোঃ সাজিদ আলী মিয়া মোক্তার (ঢাকা)ঃ এম এল আর ২৫/ ‘খ’ অঞ্চলের এম এল ও নম্বর ১৩৩, পিপিসি ১২৪(ক) ।

১৯| আফজল হোসেন (ঢাকা)ঃ এম এল আর ২৫/ ‘খ’ অঞ্চলের এম এল ও নম্বর ১৩৩, পিপিসি ১২৪ (ক)।

.

.

শিরোনামঃ ১৭৯। ই, পি, সি, এস, অফিসারদের সামরিক কতৃপক্ষের নিকট হাজির হবার নির্দেশ।

সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান

তারিখঃ ৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

.

ই, পি, সি, এস, অফিসার

‘খ’ অঞ্চলের সামরিক শাসনকর্তা ৪৪ জন ই, পি, সি, এস, অফিসারকে এম এল আর ২৫/‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইনের ১২০ নম্বর আদেশের অধীনে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের জবাবদানের জন্য আগামী ৮ই ও ৯ই সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় ৬ নম্বর সেক্টরের উপ-সামরিক প্রশাসকের কাছে হাজির হওার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশ মোতাবেক হাজির হতে ব্যর্থ হলে ৪০ নম্বর সামরিক বিধির অধীনে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার করা হবে।

নিম্নোক্ত ৩৩ জন ই, পি, সি, এস, অফিসারকে ৮ই সেপ্টেম্বর ঢাকা এম পি এ হোস্টেলে এস এম এল এ-র সামনে হাজির হতে হবে।

১। মোঃ আলতাব হোসেন খান, ইপিসিএস, পিতা আশরাফ আলী খান, গ্রাম- চকমোহনবাড়ী, পোঃ বাগবাটি, জেলা- পাবনা।

২। জিতেন্দ্রলাল চক্রবর্তী, ইপিসিএস, পিতা রাধা শ্যাম, গ্রাম- গুয়াতলা, পোঃ রহমগঞ্জ, জেলা- ফরিদপুর।

৩। আলতাব হোসেন, ইপিসিএস, পিতা মরহুম মৌঃ উমির উদ্দীন সরকার, গ্রাম ও পোঃ কমরজারি, জেলা- রংপুর

৪। এ, কিউ, এম কামরুল হুদা, ইপিসিএস, পিতা- মরহুম ইশহাক উদ্দীন, ৩৬, জেল রোড, ময়মনসিংহ।

৫। মোঃ আবদুল মতিন সরকার, ইপিএসসি, পিতা- মরহুম সোলায়মান সরকার, গ্রাম- কৃষ্ণপুর, পোঃ তুলসীঘাট, থানা- পলাশবাড়ী, রংপুর।

৬। হেলাল উদ্দীন খান, ইপিএসসি, পিতা- মরহুম আমর উদ্দীন খান, ফুলবাড়িয়া, পোঃ জিবান, জেলা- ময়মনসিংহ

৭। মোঃ আবদুল লতিফ, ইপিএসসি, পিতা- মৌঃ মোঃ আবদুর রশীদ, গ্রাম- হরিশংকরপুর, পোঃ পিরিজপুর, রাজশাহী

৮। আবদুল হালিম, ইপিএসসি, পিতা মোঃ দরবেশ আলী মিয়া, গ্রাম- কাশিভদ্রবাড়ি, পোঃ ঘাটাইল,জেলা- টাঙ্গাইল

৯। জিয়াউদ্দীন আহমেদ, ইপিএসসি, পিতা এ, এস, এম মজহারুল হক, গ্রাম- আলী নগর, পোঃ মধ্যনগর, থানা- রায়পুরা, জেলা- টাঙ্গাইল

১০। ক্ষিতিশ চন্দ্র কুণ্ড, ইপিএসসি, পিতা অন্নতা চরণ কুণ্ড, গ্রাম শ্রীলতলা, পোঃ রামপাল, থানা- রামপাল, খুলনা

১১। কাজী লুতফর হক, ইপিএসসি, পিতা কাজী আজহার উদ্দীন আহমেদ, গ্রাম ও পোঃ ষোলঘর, থানা- শ্রীনগর, জেলা- ঢাকা

১২। মাখন চন্দ্র মাঝি, ইপিএসসি, পিতা মৃত শশীমোহন মাঝি, গ্রাম- ফুলবাড়ি, পোঃ ব্রাক্ষণবাড়িয়া, কুমিল্লা।

১৩। মোঃ মিজানুর রহমান, ইপিসিএস, পিতা আবদুর রহমান, গ্রাম- আলমপুর, পোঃ রাজগঞ্জ, নোয়াখালী।

১৪। আবদুল কাদের মুন্সী, ইপিসিএস, পিতা মরহুম আজহাত ইয়াকুব আলী মুন্সী, গ্রাম- খন্তাকাটা, পোঃ শরণখোলা, খুলনা।

১৫। বিজেন্দ্র নাথ ব্যাপারী, ইপিসিএস, পিতা দীনবন্দু ব্যাপারী, গ্রাম- ছোটহাজারী, পোঃ মীরখালি, বাকেরগঞ্জ।

১৬। মানিক লাল সমাদ্দার, ইপিএসসি, পিতা- অমৃত লাল সমাদ্দার, গার্লস স্কুল রোড, পোঃ মাদারীপুর, ফরিদপুর।

১৭। আফতাবুদ্দীন, ইপিএসসি, পিতা- তজীমুল আলী, সাগর নলটি এস্টেট, পোঃ সাগরনল, থানা- কুলাউড়া, সিলেট।

১৮। কাসানন্দ মোহন দাস, ইপিএসসি, পিতা- মৃত ক্ষিরোদ চন্দ্র দাস, গ্রাম- দাউদপুর, পোঃ রেংগা দাউদপুর, সিলেট।

১৯। অমিরাংশু সেন, ইপিএসসি, পিতা- অমৃত চরণ সেন, গ্রাম- বরমচল টি স্টেট, পোঃ বারাসাত, সিলেট।

২০। মোহাম্মদ ইসহাক, ইপিএসসি, পিতা মরহুম বশির উদ্দীন, গ্রাম, পোঃ ও থানা- চট্টগ্রাম।

২১। মোঃ আবদুল আলী, ইপিএসসি, পিতা মোঃ ওয়াহেদ মিয়া, গ্রাম- বালিয়াকান্দী, পোঃ উজানী, ফরিদপুর।

২২। এ, কে, এম রুহুল আমীন, ইপিএসসি, পিতা মৌঃ আবদুল লতিফ, গ্রাম- সাউথ বালিয়া, পোঃ গোবিন্দিয়া, থানা- চাঁদপুর, কুমিল্লা।

২৩। ইয়াকুব শরীফ, ইপিএসসি, পিতা মরহুম মুন্সী ইয়াসিন হাওলাদার, গ্রাম- বাগদিয়া, পোঃ কলসকাটি, বাখরগঞ্জ।

২৪। চিত্তরঞ্জন চাক্মা, ইপিএসসি, পিতা যোগেন্দ্র লাল পরবাড়ী, গ্রাম দুলুছড়ি, পোঃ বাবুছড়া বাজার, থানা- হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

২৫। প্রিয়দা রঞ্জন দাস, ইপিএসসি, পিতা যোগেন্দ্র লাল দাস, গ্রাম- ধলাই, পোঃ কাটিরহাট, থানা- হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

২৬। জ্ঞানরঞ্জন সাহা, ইপিএসসি, পিতা তারক চন্দ্র শাহা, গ্রাম পোঃ ও থানা- উজিরপুর, বরিশাল।

২৭। অমরেন্দু মজুমদার, ইপিএসসি, পিতা তরুণী কুমার, গ্রাম০ চর আমানুল্লাহ, পোঃ দাসের হাট, থামা- হাতিয়া, নোয়াখালী।

২৮। গোলাম আকবর, ইপিএসসি, পিতা মরহুম মঊঃ আনয়ারুল হক, ৩৪, পিটার রোড, খানপুর, পোঃ নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা।

২৯। বিবেকানন্দ মজুমদার, ইপিএসসি, পিতা ব্রজকান্ত মজুমদার, মিঠাখালী, পোঃ মঠবাড়িয়া, বরিশাল।

৩০। দীপক কুমার সাহা, ইপিএসসি, পিতা মনোমোহন সাহা, গ্রাম- সাতবাড়িয়া, পোঃ ও থানা- সাতবাড়িয়া, পাবনা।

৩১। সবীর কুমার সাহা, ইপিএসসি, পিতা- সুধীর চন্দ্র, গ্রাম ও পোঃ বাথি, থানা গৌরনদী, বরিশাল।

৩২। অনিলচন্দ্র সিংহ, ইপিএসসি, পিতা- মৃত উমেশ চন্দ্র সিংহ, গ্রাম- করিয়াবাসা, পোঃ মুন্সিরহাট, থানা- হালুয়াঘাট, ময়মনসিংহ।

৩৩। আবদুল লতিফ ভূঁইয়া, ইপিএসসি, পিতা- মরহুম উমর আলী ভূঁইয়া, গ্রাম- মনোহরপুর, থানা- বড়ুয়া, পোঃ আড্ডা, কুমিল্লা

নিম্নলিখিত অবশিষ্ট ১১ জন ইপিএসসি অফিসারকে আগামী ৯ই সেপ্টেম্বর এস এম এল এ- এম্পিএ হোস্টেলে, সেক্টর ৬ নম্বর-এ হাজির হতে হবেঃ

১। এইচ,এম,আব্দুল হাই, ইপিএসসি,(৩৪৩), অব রাজশাহী।

২। মোহাম্মদ আতানত উল্লাহ, ইপিএসসি, (১৮৮), অব ঢাকা।

৩। রিয়াজুর রহমান, ইপিএসসি, (৩০২), অব মালদাহ (পশ্চিমবঙ্গ)।

৪। এ,এফ,এম রমিজ উদ্দীন, ইপিএসসি, (২০৮), অব ঢাকা।

৫। জ্যোতি বিনোদ দাস, ইপিএসসি, (৪০৪), অব নোয়াখালী।

৬। আজিজুর রহমান, ইপিএসসি, (৫৬৫), গ্রাম-লক্ষিপুর, পঃ+জেলা-রাজশাহী।

৭। বিভূতি ভূষণ বিশ্বাস, ইপিএসসি, (১৯৯), অব ফরিদপুর।

৮। জিতেন্দ্রলাল দাস, ইপিএসসি, (৩৮৩), অব সিলেট।

৯। খান আমীর আলী, ইপিএসসি, (৬১৪), গ্রাম- মাটিভাঙ্গা, বরিশাল।

১০। যোগেশ চন্দ্র ভৌমিক, ইপিএসসি, (২১৫),১১/১ শেখ সাহেব বাজার, ধাকা-২ (হোম ডিসট্রিক্ট- কুমিল্লা)।

১১। জহিরুল ইলসাম ভূঁইয়া, ইপিএসসি, (১৪৪) অব ঢাকা।

.

.

শিরোনামঃ ১৮০।  বিধবাদের নিকট পরিত্যক্ত বাড়ী-ঘর বন্দোবস্ত দেওয়ার সরকারী ঘোষণা।
সুত্রঃ সরকারী দলিলপত্র জনসংযোগ বিভাগ, দিনাজপুর
তারিখঃ ৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

                       বিধবাদের জন্য বিশেষ ঘোষণা

(১) পরিত্যক্ত বাড়ী-ঘর ইত্যাদি সম্পত্তি বিধবাদের নিকট বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য বিধবাদের নিকট হইতে দরখাস্ত চাওয়া যাইতেছে।
সবুজ রংয়ের দরখাস্তের ফরম আনজুমানে মোহাজেরিনের অফিস ও টাউন হলের নিকট অবস্থিত শান্তি কমিটির অফিস হইতে আগামীকল্য হইতে পাওয়া যাইবে।

শান্তি কমিটি ও রিলিফ কমিটির মেম্বারগণকে এবং সমস্ত সমাজ কর্মীগণকে বিধবাদের উক্ত ফরম পূরণ করিতে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করা যাইতেছে। ফরম পূরণ করিয়া আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডি, সি সাহেবের অফিসে দাখিল করিতে হইবে।

(২)  বিনা অনুমতিতে সরকারী, মিউনিসিপ্যালিটি কিংবা কোনো প্রাইভেট ব্যক্তির জমির উপর কোন প্রকার ঘর কিংবা বাড়ী উঠানো নিষিদ্ধ।  ঐ সমস্ত ব্যক্তিকে মার্শাল ল-রেগুলেশনের অধীন বিচার করা হইবে। আগামী ৮ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঐ সমস্ত বেআইনিভাবে উঠানো ঘর-বাড়ী ভাঙ্গিয়া ফেলা হইবে ও বাড়ি তৈরারীর জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হইবে।

প্রত্যহ রাত ১১টা হইতে সকাল ৪টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকিবে। উক্ত সময়ের মধ্যে কাহাকেও ঘরের বাহিরে কিংবা রাস্তায় পাওয়া গেলে গুলি করা হইবে।

আদেশক্রমে
এম.এল প্রশাসক
দিনাজপুর
৩.৯.১৯৭১
.

.

শিরোনামঃ ১৮১। ছাত্র উপস্থিতির দৈনিক রিপোর্ট প্রেরণ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভাগের আরো একটি জরুরী চিঠি।
সূত্রঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দলিলপত্র; উদ্ধৃতঃ এক্সপেরিয়েন্স-প্রাগুক্ত
তারিখঃ ৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

                        নং. বি/৬০১৮-৫৩ খুব জরুরী জ্ঞাপন
নিবন্ধন অফিস
তৃতীয় অনুস্মরণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা-২
তারিখঃ ৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

প্রাপক
সকল বিভাগীয় প্রধান
পরিচালকমণ্ডলী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বিষয়ঃ ছাত্রদের উপস্থিতি

মহোদয়,
আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি  অফিস পত্র নং. সি/৭৩৮১৯, ২রা জুন, ১৯৭১ এবং পরবর্তী অনুস্মরণ নং. ২৪০০-৪৪০, ২রা আগস্ট, ১৯৭১ এবং নং. ৩০৫৪-৯৫, ৬ই আগস্ট, ১৯৭১ – এ উল্লেখিত বিষয়গুলোতে। আমি আপনাকে জানাতে চাচ্ছি যে,  অফিসে কিছু বিভাগের অধীন ছাত্রদের উপস্থিতির রিপোর্ট জমা দেয়া হচ্ছেনা, এমনকি পরের দিন দুপুরেও রিপোর্ট দেয়া হচ্ছেনা।

আপনার নিকট বিশেষ প্রার্থনা এই যে, আগামীকল্য সকাল ১০টার মধ্যে ছাত্রদের উপস্থিতির রিপোর্ট এই অফিসে প্রেরণ করবেন যেন অফিস থেকে সঠিক সময়ে রিপোর্টসমূহ সরকারের নিকট  হস্তান্তর করতে পারা যায়।

                                                             আপনার বিশ্বস্ত,
এসডি/ইলেজিবল
নিবন্ধক
৩.৯.৭১

.

.

শিরোনামঃ ১৮২। গভর্নর হিসেবে ডাঃ এ, এম মালিকের শপথ গ্রহণ।
সূত্রঃ পাক সমাচার, ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
তারিখঃ ৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
.
নয়া গভর্নর হিসেবে

ডাঃ এ, এম মালিকের শপথ গ্রহণ

.
পূর্ব পাকিস্তানের নয়া গভর্নর ডাঃ এ, এম মালিক গত ৩রা সেপ্টেম্বর বিকেলে গভর্নর বভনের দরবার কক্ষে এক জাঁক-জমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে শপথ গ্রহণ করেন।  পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি জনাব বি, এ সিদ্দিকী গভর্নরকে শপথ গ্রহণ করান।

শপথ গ্রহনের পর ডাঃ এ, এম মালিক এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে প্রদেশের প্রশাসনের দায়িত্ব পালনে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার আশীর্বাদ ও  বন্ধু-বান্ধবদের সহযোগিতা  কামনা করেন।

তিনি বলেন আজকের এই দিনে পাকিস্তানের বিশেষ করে পাকিস্তানের সংকটময় মুহুর্তে প্রদেশের প্রশাসনের গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করেছি। একমাত্র আল্লাহর অনুগ্রহে ও সকল বন্ধু-বান্ধবদের সহযোগিতায় এই দায়িত্ব পালনের জন্য আমি চেষ্টা করব।

 তাঁকে এবং জাতিকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করার জন্য তিনি জনগনের প্রতি আহ্বান জানান এবং তিনি এ ব্যাপারে আল্লাহর সাহয্য প্রার্থনা করেন।

সংক্ষিপ্ত ভাষণের পর গভরনর সেনাবাহিনীর গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন। খ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেঃ এ, কে নিয়াজীসহ উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক অফিসারগণ এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান অত্যন্ত জনাকীর্ণ ছিল। সমাজের সকলস্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে প্রদেশের দু’জন সাবেক গভর্ণর ছিলেন। এরা হলেন জনাব সুলতানউদ্দীন আহমদ ও জনাব আবদুল মোনায়েম খান।

অন্যান্যদের মধ্যে অধ্যাপক গোলাম আজম, জনাব আবদুল কাশেম, জনাব ফজলুল কাদের চৌধুরী, জনাব খান এ, সবুর, জনাব শামসুল হুদা, জনাব ইউসুফ আলী চৌধুরী, জনাব এ, এস, এম সোলায়মান, জনাব আব্দুল জব্বার খান, পীর মোহসেনুদ্দিন, আনোয়ারুল হক, জনাব হাফিজুদ্দীন, জনাব দোহা, জনাব কিউ এম রহমান, নওয়াব হাসান আসকারী, জনাব এ.এম ইস্পাহানী বিচারপতি জনাব আমিন আহমদ এবং বিদেশী কুটনৈতিক  মিশনের বিচারপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, লেখকগণও উপস্থিত ছিলেন।

.

.

শিরোনামঃ ১৮৩।  লেঃ জেঃ নিয়াজীর ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ।
সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান
তারিখঃ ৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

                           নিয়াজীর নয়া দায়িত্বভার

পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের কমান্ডের লেফটেনেন্ট জেনারেল এ, এ, কে নিয়াজী গতকাল শুক্রবার ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি লেফটেনেন্ট জেনারেল টিক্কা খানের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।

এপিপি পরিবেশিত এই খবরে আরো বলা হয়েছে যে, মেজর জেনারেল রহিম খান গতকাল ‘খ’ অঞ্চলের সহকারী সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

.

.

১৮৪। শিরোনামঃ গতিবিধি ও নিলাম সম্পর্কিত একটি সরকারী ঘোষণা
সূত্রঃ সরকারী দলিপত্রঃ জনসংযোগ বিভাগ  দিনাজপুর
তারিখঃ ৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

(১) সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানান যাইতেছে যে, যাহারা বাহির হইতে দিনাজপুর টাউনে আসিতেছেন তাহারা যেন জেলা শান্তি কমিটির নিকট তাহাদের আগমনের কথা রিপোর্ট করেন।

(২)  আগামী ৯ই সেপ্টেম্বর সকাল ১০:৩০ মিনিটে নিম্নলিখিত জিনিসগুলো অস্ট্রেলেশিয়া ব্যাঙ্কের সম্মুখে অবস্থিত ১ নং রিলিফ গোডাউনের সম্মুখে প্রকাশ্য নিলাম বিক্রয় হইবে।

সুপারি, বার্নিশ ও রং, হাইড্রো-সালফাইড, চিনা পাউডার, প্যাকিং কাগজ, দড়ি, পাথর, নানা প্রকার জুতা, বস্তা, খালি বাক্স, ফ্যান, বেল্ট, ঝুড়ি, সাইকেলের মার্ডগার্ড, কড়াই,  ২.৫সের ওজন করার পাথর, এক রল সি, আই, সিট্, পলিথিন পেপার, ড্রাম, তেলের কালী টিন, লেমন ক্রোম, তক্তা, উডেন প্লেস্ক।

(৩)   পরিত্যক্ত বাড়ী-ঘর ইত্যাদি সম্পত্তি বিধবাদের নিকট হইতে দরখাস্ত চাওয়া যাইতেছে।

সবুজ রংয়ের দরখাস্তের ফরম আনজুমানে মোহাজেরিনের অফিস ও টাউন হলের নিকট অবস্থিত শান্তি কমিটির অফিস হইতে আগামীকল্য হইতে পাওয়া যাইবে। শান্তি কমিটি ও রিলিফ কমিটির মেম্বারগণকে এবং সমস্ত সমাজ কর্মীগণকে বিধবাদের উক্ত ফরম পূরণ করিতে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করা যাইতেছে। ফরম পূরণ করিয়া আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডি, সি সাহেবের অফিসে দাখিল করিতে হইবে।

(৪) প্রত্যহ রাত ১১টা হইতে সকাল ৪টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকিবে।

আদেশক্রমে
এম, এল প্রশাসক
দিনাজপুর
৪.৯.৭১

.

.

শিরোনাম- ১৮৫। স্কুল, কলেয, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র অনুপস্থিতি সম্পর্কিত শিক্ষা বিভাগের একটি সার্কুলার।
সূত্র- সরকারি দলিলপত্র উদ্ধৃত, এক্সপেরিয়েন্স
৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

পূর্ব পাকিস্তান সরকার,
শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা।
৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১।
নং জি/১০-১৩/৭১ ৮৯০-ইডিএন

বিজ্ঞপ্তি

বিষয়: স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদির উপস্থিতি সম্পর্কে।

সরকারের নজরে এসেছে যে কিছু শিক্ষক প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী ভিত্তিহীন গুজব ছড়ানোতে অংশ নেয়ার পাশাপাশি ক্লাসে অনুপস্থিত থাকার জন্য উৎসাহিত করছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের কৃত কাজ ক্লাসে অনুপস্থিত থাকার মূল রসদ যোগাচ্ছে। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের তাদের অধীনে যে সব কর্মচারী আছে তাদের নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে যোগদান এবং দায়িত্ব পালন করছে কিনা তা লক্ষ্য রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদেরকে শ্রেনীকক্ষে নিয়মিত যোগদান নিশ্চিত করতে তাদের উৎসাহিত করতে হবে। এবং তাদের মধ্যে বোঝাতে হবে হবে যে যারা গুজব ছড়াচ্ছে তারা তাদের বন্ধু নয় ও তাদের নিজেদের স্বার্থে তাদের ক্লাসে উপস্থিত থাকা উচিত।

২। এটিও খেয়াল করা গেছে যে ছাত্র এবং শিক্ষকদের ক্লাসে উপস্থিত থাকতে প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে রাষ্ট্রবিরোধী উপাদান সম্বলিত পোষ্টার লাগানো হচ্ছে। কর্মীদের নির্দেশ উপেক্ষা পর্যবেক্ষণ করার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের  নির্দেশ করা হচ্ছে ও প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনে কোন ধরনের পোষ্টার লাগানো বা ব্যবহার করা যাবেনা সে ব্যাপারেও নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে। ছাত্রদের ছবি সম্বলিত পরিচয়পত্র ইস্যু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও বলা যাচ্ছে যেন প্রয়োজনের সময় সেগুলো ব্যবহার করা যায়।

সাং- অস্পষ্ট
৭/৯/১৯৭১
উপসচিব।

.

.

শিরোনামঃ ১৮৬। চাপিয়ে দেয়া হলে আক্রমণকারী ভূখন্ডেই যুদ্ধ হবে’ নিয়াজী

সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান

তারিখঃ ৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

.

প্রদেশের উত্তর- পশ্চিমাঞ্চলে জেঃ নিয়াজী

চাপিয়ে দেয়া হলে আক্রমণকারীর ভূখণ্ডেই যুদ্ধ হবে

.

 এপিপির এক খবরে প্রকাশ, ইস্টার্ন কমান্ডের কমান্ডার ও ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেনারেল এ, এ, কে নিয়াজী গতকাল বুধবার প্রদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে সফরকালে জনগনের প্রতি এই মর্মে আশ্বাস দেন যে, আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হলে আক্রমণকারীর ভূখণ্ডে যুদ্ধ করার মত যথেষ্ট শক্তি পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থিত সমগ্র বাহিনীর রয়েছে।

 তিনি জনগনের প্রতি প্রদেশ থেকে ভারতীয় চর ও রাষ্ট্রবিরোধী ব্যক্তিদের উৎখাতে দেশপ্রেমিক হিসেবে তাদের ভুমিকা অব্যাহত রাখার উপদেশ দেন। জেনারেল নিয়াজী একদিনের জন্য পাবনা, রাজশাহী ও বগুরা সফর করেন। সফরকালে জিওসি তার সঙ্গে ছিলেন।

 জেনারেল নিয়াজী সেনাবাহিনীর একখানি হেলিকপ্টার সফর করেন। প্রথমে তিনি নাটোরে অবতরন করেন। স্থানীয় কমান্ডার তাকে জানান যে, সদা জাগ্রত সৈন্যরা আক্রমনের সম্ভাবনার অকল পথ বন্ধ করে দিয়েছে এবং এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

 স্থানীয় কমান্ডার জানান যে,কিছু ভারতীয় চর মাঝে মাঝে পাট চলাচল ব্যাহত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু রাজাকার ও স্থানীয় জনসাধারন তাদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে। স্থানীয় কমান্ডার আরো জানান যে, ভারতীয় চরেরা, কয়েকবার পাটের চোরাচালান করে ভারতে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে। কিন্তু তা ব্যর্থ করে দেয়া হয়। মহাদেবপুরে (রাজশাহী) জেঃ নিয়াজী শিক্ষারত রাজাকারদের দেখেন।

 তিনি তাদের গুলি চালনা প্রশিক্ষণও পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি কয়েকটি স্থানে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করার নির্দেশ দেন, যাতে দুশমনেরা কোন রকম সুযোগ নিতে না পারে।

 সীমান্ত এলাকায় একটি জীপে সফর করার সময় তিনি জনসাধারনকে স্বেচ্ছায় সাম্প্রতিক বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও বাধ মেরামত করতে দেখেন। তিনি তাদের আস্থা ও মনোবল দেখে মুগ্ধ হন। জেনারেলের যাবার পথে জনগনে হর্ষধ্বনি করে তাকে স্বাগত জানায়। ও বিভিন্ন দেশাত্মবোধক শ্লোগান তুলে। তিনি প্রতিটি স্থানে গাড়ি থামিয়ে জনগনের সাথে করমরদন করেন এবং তাদের খোজ খবর নেন।

 তাদের সবাইকে সুখি ও প্রফুল্ল দেখা যায়। এর পরে জেনারেল নিয়াজী বন্যা উপদ্রুত পাবনা জেলায় সফরে যান। পাবনা শহরে তিনি স্থানীয় কর্মকর্তাদের সাথে রিলিফের ব্যবস্থা নিয়ে আলচনা করেন। বন্যা পরিস্থিতির বেশ উন্নতি হয়েছে এবং রিলিফের কাজ সন্তোষজনকভাবে চলছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা তাকে জানান যে, প্রথম দিকে কিছু কিছু লোক কলেরায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও সময়োচিত ব্যবস্থা নিবার দরুন কলেরা আর মহামারি আকারে দেখা দিতে পারেনি।

 জেনারেল নিয়াজী পাবনা বাজারের মধ্যে দিয়ে মোটরগাড়ি চালিয়ে যান। তিনি বাজারে সম্পূর্ণ স্বাভাবিকভাবে কাজকর্ম চলতে দেখেন। সফরকালে বিভিন্ন স্থানে জেনারেল নিয়াজী সৈন্যদের সাথে ঘরোয়াভাবে আলোচনা করে এবং তাদের উচ্চ মনোবল দেখতে পান। তিনি মহাদেবপুর ও পাবনায় শান্তি কমিটির সদস্যদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন।

 সশস্ত্র বাহিনী আক্রমণকারীদের হটিয়ে দেয়ার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত বলে তিনি তাদের আশ্বাস দেন। কিন্তু আভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী অনিচ্ছাসত্ত্বেও দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হচ্ছে। কারন তাদের মৃত্যুর অর্থ হচ্ছে পূর্ব পাকিস্তানে বিধবা ও এতিমের সংখ্যা বৃদ্ধি।

 সেতু উড়িয়ে দেয়, পাইলনে বিস্ফোরণ কিংবা রেললাইন তুলে ফেলা নিজের ঘর ধ্বংস করারই সামিল এবং এইগুলি বিপথগামী লোকদের বলার জন্যই তিনি শান্তিকমিটির সদস্যদের উপদেশ দেন। তিনি বলেন যে, এই বিপথগামী লোকেরা বাস্তবিক পক্ষে এই দেশেরই সন্তান এবং এই দেশটিও তাদের। তাই যদি খাদ্য সরবরাহ চোরাচালান কড়া হয় বা প্রদেশের মধ্যে তা চলাচলে বাধা দেয়া হয় তাহলে এর জন্য সাধারন মানুষ দুর্ভোগ পোহাবে।

 জেনারেল পরাধিন জাতির দুর্দশার বর্ণনা দিয়ে আজাদী পূর্বকালে মুসলমানগন যে দুঃখ-দুর্দশায় দিন যাপন করেন, তা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন যে, আমাদের সন্তানদের হিন্দুদের অধীনে যেতে দিব না। জেনারেল নিয়াজী ইসলাম ও পাকিস্তানের দুশমনদের মোকাব্লার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উপদেশ দেন।

 তিনি মুসলমানদের ইতিহাসের উধ্বৃতি দিয়ে বলেন যে, আমাদের প্রতিপক্ষ শ্রেষ্ঠ হয়েও আমাদের কখনো পরাজিত করতে পারেনি। তিনি বলেন যে, শুধু দেশদ্রোহীরা আমাদের ঐক্যকে ফাটল ধরানোর জন্য কয়েকটি যুদ্ধে আমাদের পরাজয় বরন করতে হয়।

 তিনি এসব দেশদ্রোহী সম্পর্কে সজাগ থাকার জন্যে ও তাদের নির্মূল করার কাজে কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করার জন্য জনসাধারনের প্রতি উপদেশ দেন।

.

.

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৮৭। সামরিক সরকারের বেসামরিক গভর্ণর ডাঃ এ, এম মালিকের বেতার ভাষণ সরকারী প্রচার পুস্তিকা- পূর্ব পাক সরকারের তথ্যবিভাগ ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

.

বেতার ভাষণ

১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

ডাঃ আবদুল মোতালেব মালিক, এইচ কিউ এ

গভর্ণর, পূর্ব পাকিস্তান

.

আমার প্রিয় দেশবাসীগণ,

জনগণ কতৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের উদ্যোগ শুরু করার উদ্দেশ্যে প্রেসিডেন্ট আমাকে এই প্রদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নিযুক্ত করেছেন। গভর্ণর হিসেবে আমার একটি মন্ত্রী পরিষদ থাকবে। আল্লাহতায়ালা আমাদের কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন করেছেন। প্রদেশের অভ্যন্তরে ও বহিঃশত্রু থেকে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও হুমকি প্রদেশের শান্তির বিঘ্ন ঘটিয়েছে এবং অর্থনীতির ক্ষতিসাধন করেছে। আমার জীবনের সায়াহ্নে এই গুরুদায়িত্ব আমি শুধু এই জন্যই তুলে নিয়েছি যাতে যে দেশের প্রতিষ্ঠা ও সংহতির জন্য আমারও ক্ষুদ্র অবদান ছিল, সেই দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও পুনর্গঠনের কাজে যথাসাধ্য শক্তি নিয়োগ করতে আমি যেন পিছপা না হই।

প্রিয় দেশবাসীগণ, আমি আপনাদের সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করছি এই জন্য, যাতে প্রদেশে শান্তি ফিরিয়তে আনা যায়, যাতে করে আমরা এমন এক মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে পারি যেখানে বিভিন্ন সমস্যা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে, শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে নয়; যেখানে জনসাধারণ ও দলসমূহ পরস্পরের সাথে মতানৈক্য থাকা সত্ত্বেও একই দেশের শান্তিপ্রিয় নাগরিক হিসেবে একত্রে বসবাস করতে পারবেন। যে অন্ধ বিদ্বেষ আমাদের বর্তমান দুর্দশার জন্য দায়ী, আসুন আমরা তা পেছনে ফেলে রেখে নতুন যাত্রা শুরু করি। এই যাত্রা পথকে সহজ ও সুগম করার উদ্দেশ্যে প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যেই সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন।  এর পূর্ণ সু্যোগ এখন আমাদের গ্রহণ করতে হবে। সকল ভীতি, সন্দেহ ও তিক্ততা দূর করে পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলাবার দায়িত্ব আমদেরই।

আমার প্রিয় ভাই-বোনেরা, প্রদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে উদ্যোগী হওয়ার জন্য আমি আপনাদের সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের নিজেদের স্বার্থেই এটা প্রয়োজন। আমি আবারও বলছি, আমাদের নিজেদের স্বার্থেই এটা প্রয়োজন। এ সময় পরস্পরকে দোষারোপ করা, কারো ঘাড়ে দোষ দেওয়া কিংবা মনে ক্ষোভ পোষণ করার সময় নয়। এখন অতীতের সমস্ত দোষ ও অভিযোগ বিস্মৃত হয়ে পুনর্গঠনের কাজে সবাইকে সামিল হতে হবে, যাতে জাতি আবার শান্তি ও উন্নতির পথে অগ্রসর হতে পারে।

আজকের যুবক শ্রেণী তো জানে না যে, নতুন এক জাতির বাসভূমি আমাদের এই পাকিস্তানকে বাস্তবে রুপায়িত করার জন্য আমাদের কত পরিশ্রম করতে হয়েছে, কত ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। যখন অবিভক্ত ভারতে আমরা বুঝতে পারলাম যে, আমাদের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে পড়েছে, তখন আমরা একটা পৃথক আবাসভূমি দাবী করতে বাধ্য হলাম। এই কাজ সহজসাধ্য ছিল না। সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদেরকে পদানত করে রাখাই শোষকদের গূঢ় অভিসন্ধি ছিল। আমাদের শ্ত্রুরা আমাদের চেয়ে অনেক বেশী সঙ্গবদ্ধ ছিল এমনকি নতুন ও প্রাণবন্ত এই রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার পরও তারা আমাদের উন্নতির পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করার প্রাণপণ চেষ্টা করেছে। সবচেয়ে মৌলিক কথা হচ্ছে এই যে, আমাদের শত্রুরা পাকিস্তানের অস্তিত্বই স্বীকার করতে চায়নি। যা হোক আমরা কিছুতেই আমাদের মাতৃভূমিকে আন্তর্জাতিক ক্ষমতার দন্ধে দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহৃত হতে দেব না। আবার যারা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে আমাদেরকে ব্যবহার করতে চায়, তাদের কাছে আমাদের অস্তিত্বকে বিকিয়ে দিতে অথবা অর্থনীতিকে বন্ধক দিতে আমরা রাজী নই। শত্রুর হাতে আমরা ক্রীড়নক হতে চাই না।  তাই আমরা এমন কিছু করব না যা কিনা জাতীয় আত্মহত্যার সামিল হবে। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের যেসব যুবক সীমান্তের ওপারে চলে গিয়েছেন, তাদের এখন ফিরে আসা উচিৎ। এটা তাদেরই দেশ এবং একে পুনর্গঠন করার দায়িত্ব তাদেরই। আমি তাদের ফিরে আসার জন্য আহবান জানাচ্ছি। আমি তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে। তাই স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করলে তাদের কোন ক্ষতির আশংকা নাই। তাদের প্রত্যাবর্তনে বাধাদানের উদ্দেশ্যে যে সকল মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা গুজব রটনা করা হচ্ছে তাতে যেন তারা কর্ণপাত না করেন। এটা অত্যন্ত দুঃখের কথা যে, আমাদের বাস্তুত্যাগীদের প্রতি সহৃদয় ব্যবহার ও সমবেদনা প্রকাশ না করে, বিদেশ থেকে অর্থসাহায্য লাভের উদ্দেশ্যে তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে এবং ক্ষুদ্র সার্থসিদ্ধির তাগিদে তাদের সংখ্যাও অনেক বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। সর্বোপরি যারা পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে যায়, তাদের রাজনৈতিক গুটি হিসেবে বাস্তুত্যাগীদের ব্যবহার করা হচ্ছে। তাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পথে তাই নানাবিধ বাঁধার সৃষ্টি করা হচ্ছে।

আপনারা জানেন যে, সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা ছাড়া প্রেসিডেন্ট সমস্ত প্রকৃত নাগরিকদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের আহবান জানিয়েছেন এবং তাদের পুনর্বাসনের জন্য সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাদের আস্তা ফিরিয়ে আনার জন্য পাকিস্তান সরকার জাতিসংঘের প্রস্তান গ্রহণ করেছেন। এই প্রস্তাব অনুসারে সীমান্তের উভয় পারে এবং ভারতে অবস্থিত বাস্তুত্যাগী শিবিরগুলিতে গঠন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পিকিক ও আইডিবি ও পাকিস্তানে অবস্থিত অভ্যর্থনা শিবিরগুলিতে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক মোতায়েন করার কথা। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, ভারত এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। ভারতের অসম্মতি জ্ঞাপন সত্ত্বেও প্রত্যাবর্তনকারীদের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে আমরা সীমান্তের এপারে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক মোতায়েনে সম্মত হয়েছি, আমি আপনাদের কাছে অঙ্গীকার করছি যে, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর পদের দায়িত্ব পালনকালে আমি জনগণের মনে আস্থা সৃষ্টির জন্য সকল প্রচেষ্টা চালাবো। যারা স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করবেন তাদের পুনর্বাসনের জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং সীমান্ত পার হয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে গমনের জন্য কারও বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। যাদের বাসগৃহ, দোকানপাট ও জীবিকার উপায় বিনষ্ট হয়েছে তাদের পুনরায় স্বাভাবিক জীবনে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার ব্যাপারে সর্বপ্রকার আর্থিক ও প্রশাসনিক সাহায্য করা হবে। যাদের সম্পত্তি বেআইনিভাবে দখল হয়েছে কিংবা যাদের সম্পত্তি সাময়িকভাবে অন্যদের মধ্যে বন্টন করা হয়েছে, সেগুলি প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দেয়া হবে। এই কার্যে বাধাদানের কোন প্রকার চেষ্টা হলে তাকে কঠিন হস্তে দমন করা হবে। জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টির সম্মুখেই আমাদের পুনর্বাসনসূচি রুপায়ণ করা হচ্ছে এবং এই কাজ যাতে দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হয় সেদিকে আমি কড়া নজর রাখবো।

এই সুযোগে আমি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে এই আশ্বাস দিতে চাই যে, পাকিস্তানের অন্যান্য নাগরিকদের মত তারাও নাগরিকত্তের সমঅধিকারে অধিকারী। স্বদেশে পাকিস্তানের বিশ্বস্ত নাগরিক হিসেবে শান্তিপূর্ণভাবে জীবন যাপনের জন্য প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যেই তাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তাদের বাড়িঘর ও অন্যান্য সম্পত্তি তাদের ফিরিয়ে দেয়া হবে। ১৯৫০ সালের লিয়াকত-নেহেরু চুক্তি মোতাবেক সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিষয়ক মন্ত্রীপদ আমি গ্রহণ করেছিলাম। আমি তাদের সমস্যা সম্পর্কে অবগত আছি। কাজেই যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোন ব্যক্তির প্রতি কোন প্রকার অবিচার না করা হয়, সেদিকে আমি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখবো। লিয়াকত-নেহেরু চুক্তি মোতাবেক ভারত সরকারের মন্ত্রী মিঃ সি সি বিশ্বাস ও পাকিস্তান সরকারের উজির হিসেবে আমি মিলিতভাবে কাজ করছি, যাতে উভয় দেশের উপদ্রুত অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়। এখন পুনরায় অনুরুপ ব্যবস্থা গ্রহণ কেন সম্ভবপর হবে না তার কোন কারণ আমি দেখতে পাই না। এই বিরাট মানবিক সমস্যা সমাধানের জন্য আশু ব্যবস্থাদি আলোচনা করার উদ্দেশ্যে আমি এই বিষয়ক ভারতীয় মন্ত্রীর সঙ্গে যত শীঘ্র সম্ভব বৈঠকে মিলিত হতে রাজী আছি। প্রকৃত সদিচ্ছা ও মানবিক দুর্গতির প্রতি সত্যিকারের সহানুভূতি থাকলে এই সমস্যা সমাধানে আমাদের অপারগ হওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠে না।

অতঃপর আমি আমাদের ছাত্র সম্প্রদায়কে এটা উপলব্ধি করতে বলবো যে, তারা হলেন পাকিস্তানের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। তারাই হলেন জাতির ভবিষ্যত স্থপতি। সুতরাং তারা যাতে ভবিষ্যতে নিজ দায়িত্ব যথাযতভাবে পালন করতে পারেন তার জন্য তাদের প্রস্তুত হতে হবে এবং তাদের শিক্ষা জীবন যাতে বাধাপ্রাপ্ত বা বানচাল না হয়, সেদিকে তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। তাদের শিক্ষা জীবন পুনরায় শুরু করার জন্য যত শীঘ্র সম্ভব তাদের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করা উচিৎ। কোন ভয়, ভীতি বা ভ্রান্ত ধারণা তাদের শিক্ষা জীবন ব্যাহত করুক তা কারুর কাম্য নয়। কারণ এ মনোভাব কোন জাতির পক্ষেই মঙ্গলজনক নয়। অপরপক্ষে এর ফলে সমাজ দুঃখ-দুর্দশার সম্মুখীন হয়। আমার যৌবনের প্রাক্কালে কিছু সময়ের জন্য আমিও বাংলার সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। কিন্তু শীঘ্রই আমি উপলব্ধি করলাম যে সন্ত্রাসবাদের অর্থই হল আমার দেশবাসীর জন্য ধ্বংস ও মৃত্যু এবং এই নীতি অনুসরণ করলে আমরা কোন লক্ষ্যেই উপনীত হতে পারব না। তাই আমি সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন থেকে নিজেকে মুক্ত করে স্বজাতির অধিকার অর্জনের উদ্দেশ্যে নিয়মতান্ত্রিক ও অহিংসামূলক পথ বেছে নিলাম। এবং আমি নিজেও দেখেছি যে, নিয়মতান্ত্রিক ও অহিংসামূলক আন্দোলন খুবই ফলপ্রসূ। সেকালের অন্যান্য সন্ত্রাসবাদী নেতৃবৃন্দও অনুরুপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। অসহযোগ আন্দোলন ফলপ্রসূ না হওয়ায় জাতীয় কংগ্রেসের মধ্যেও সি আর দাস ও মতিলাল, নেহেরুর মত বড় বড় নেতারা স্বরাজ পার্টি গঠন করেন এবং আইন পরিষদে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন। আমি সাধারণভাবে যুবকদের এবং বিশেষ করে ছাত্র সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যেন তারা পাকিস্তানের পুনর্গঠন ও উন্নতির ক্ষেত্রে তাদের ভবিষ্যত দায়িত্ব স্মরণ রাখেন নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত হন।

শ্রমিক ও মজুরদের এক আজীবন সেবক হিসেবে আমি শ্রমিক ও মালিক উভয় সম্প্রদায়ের নিকট অনুরোধ করবো যেন তারা দেশের অর্থনীতিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য একযোগে কাজ করেন। শ্রমিকদের এটা বুঝতে হবে যে, কলকারখানা বন্ধ হলে প্রকারান্তরে তাদেরই সমূহ ক্ষতি। এবং এর ফলে জনসাধারণকেই ভুগতে হয়। মজুররা যাতে শান্তিপূর্ন পরিস্থিতিতে উৎপাদন কার্য সম্পাদন করতে পারেন এবং যাতে তাদের ওপর কোন প্রকার জুলুম বা হয়রানি, ভীতি প্রদর্শন অথবা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, সেদিকেও আমি লক্ষ্য রাখবো। এ ব্যাপারে আমি আপনাদের আমার ব্যক্তিগত আশ্বাস দিচ্ছি। আপনাদের প্রতি আমার আবেদন এই যে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনারা কাজে যোগদান করুন। মালিকদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই যে, সামাজিক ন্যায় বিচার ও সুখী শ্রমশক্তি ছাড়া কোন শিল্পেরই উন্নতি বা অর্থনীতির বিকাশ সাধিত হতে পারে না।

বর্তমান প্রধান সমস্যা হল প্রদেশের প্রতিটি লোকের কাছে প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করা। দুঃখের বিষয় হলো যে, উপর্যুপরি বেশ কিছু বছর ধরে এই প্রদেশ খাদ্য ঘাটতি অঞ্চল হয়ে পড়েছে। এই বৎসর এই খাদ্য ঘাটতির পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে, কারণ উৎপাদন হ্রাসের আশঙ্কা রয়েছে। তাই বর্তমান আর্থিক বছরে আমরা পশ্চিম পাকিস্তান ও বিদেশ থেকে ১৩ লক্ষ টন  খাদ্যশস্য আমদানীর ব্যবস্থা করেছি। প্রদেশব্যাপী সরবরাহ কেন্দ্রসমূহ মারফত খাদ্যশস্য চলাচল ও বন্টন ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং এই উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রদেশের প্রত্যেক অঞ্চলের খাদ্যশস্য সরবরাহ পরিস্থিতির উপর সবিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। উপকূলীয় জাহাজ ও অভ্যন্তরীণ নৌযানের সংখ্যা বৃদ্ধি করে নদী পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি সাধন করা হচ্ছে। এই ব্যবস্থা অনুসারে আমন ধান ওঠার আগ পর্যন্ত, আগামী ৪ মাসে, মাসপ্রতি দেড় লক্ষ থেকে দু লক্ষ টন খাদ্যসামগ্রী বন্দর থেকে বন্টন কেন্দ্রসমূহে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোটকথা নিয়মিত খাদ্যশস্য সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করার ফলে যে কোন বিশেষ সময়ে পূর্ব পাকিস্তানের খাদ্য চাহিদা মেটানোর পূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান খাদ্য পরিস্থিতির মূল কারণ এটা নয় যে খাদ্যদ্রব্যের অনটন রয়েছে। আসল সমস্যা হল, যোগাযোগ ব্যবস্থার অসুবিধা, আর তার কারণ হল প্রদেশে সাম্প্রতিক গোলযোগের ফলে রেলগাড়ি ও সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অসুবিধা। বন্দর থেকে খাদ্যসামগ্রী প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিতরণ কেন্দ্রে প্রেরণ করতে হবে। গোলযোগের আগে শতকরা ৬০ ভাগেরও বেশী খাদ্যদ্রব্য রেলগাড়ীর সাহায্যে পাঠানো হত। যেহেতু পূর্বের তুলনায় বর্তমানে রেল ও সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার অপ্রতুলতা রয়েছে সেহেতু বেশীরভাগ খাদ্যসামগ্রী নৌযানের সাহায্যে পাঠানো হচ্ছে। এই ব্যাপারে বন্ধুরাষ্ট্রসমূহের মধ্যে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বেশকিছু উপকূলবর্তী জাহাজ সরবরাহ করে আমাদের খাদ্যশস্য বন্টনের কাজে বিশেষ সহায়তা করেছেন। খাদ্য সরবরাহের কাজে এই অতিরিক্ত ব্যবস্থার ফল হবে এই যে, চট্টগ্রাম থেকে অভ্যন্তরীণ নৌ-বন্দরগুলিতে সরবরাহের পরিমাণ ৩ গুণ বেড়ে যাবে। এর ফলে চট্টগ্রাম থেকে চলাচলের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো সম্ভবপর হবে।

সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা আরও উন্নত করবার উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই বিদেশ থেকে ট্রাক আমদানীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া পশ্চিম পাকিস্তান থেকে ১০০ থেকে ১৫০টি ট্রাক পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এটা বলা হচ্ছে যে, খাদ্যশস্যের সরবরাহ থাকলেও অনেকের পক্ষে ক্রয় করার ক্ষমতা থাকবে না। সরকার এই সমস্যা সম্পর্কেও সচেতন রয়েছে। এবং ইতিমধ্যেই গ্রামাঞ্চলে টেস্ট রিলিফের কাজ শুরু করা হয়েছে, যার ফলে সহজ কায়িক শ্রমকে কাজে লাগানো হচ্ছে। উপদ্রুত অঞ্চলে কাজ সৃষ্টি করে লোকজনের আয়ের পথ সুগম করে দেওয়া হচ্ছে যাতে তাদের কষ্ট লাঘব কারা সম্ভব হয়। ইতিমধ্যে এই কাজের খাতে কেন্দ্রীয় সরকার প্রাদেশিক সরকারকে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন এবং প্রয়োজনবোধে আরো টাকা দেওয়া হবে। বর্ষার শেষে গ্রামাঞ্চলে ওয়ার্কস প্রোগ্রামের যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে যার জন্য বাজেটে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, এই টেস্ট রিলিফের কাজ তার অতিরিক্ত।

গত কয়েক মাসের ঘটনাবলীর ফলে আমাদের অর্থনীতিতে বড় রকম ক্ষতিসাধন হয়েছে। মার্চ মাসে সকল প্রকার অর্থনৈতিক কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল এবং তারপরে ব্যক্তিগত ও জাতীয় সম্পদের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে।

অর্থনৈতিক কার্যকলাপ পূর্ণোদ্যমে চালু করার জন্য সরকার ইতিমধ্যে বহু পন্থা অবলম্বন করেছে এবং এর ফলে অনেকটা উন্নতিও দেখা দিয়েছে। বড় বড় কারখানাগুলির উৎপাদন ক্ষমতাও বর্ধিত হচ্ছে। বন্দরগুলিও স্বাভাবিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জুন ও জুলাই মাসে চট্টগ্রাম ও চালনা বন্দর থেকে মোট ১৮ কোটি ৭২ লক্ষ টাকার মাল রফতানী করা হয়েছে। গত বৎসর এই সময়ে মোট ২৪ কোটি ৫২ লক্ষ টাকার মাল রফতানী করা হয়েছিল। সুতরাং তুলনামুলকভাবে দেখতে গেলে এই বৎসরের রফতানীর পরিমাণ নেহাৎ খারাপ নয়। ব্যাংকগুলি পূর্ণোদ্যমে কাজ করে যাচ্ছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যো ভালোভাবেই চলছে। সুতরাং দেশের অর্থনীতি ক্রমে ক্রমে আগের পর্যায়ে ফিরে আসবে। এ প্রসঙ্গে আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, জনসাধারণের সার্বিক কল্যাণের জন্যে প্রদেশের অর্থনীতিকে পুনর্গঠন এবং উন্নয়নমূলক কর্মসূচীর পুনরুজ্জীবন আমার সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। সরকারের এই প্রচেষ্টায় আমি প্রদেশের সকল শ্রেণীর নাগরিকের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করছি।

জরুরী মেরামত ও পুনর্বাসন কার্যের জন্য যা কিছু প্রয়োজন সরকার ইতিমধ্যেই তা নির্ধারণ করার চেষ্টা করেছে। এই কাজের জন্য এই বৎসরের বাজেটে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রদেশের উৎপাদন শক্তিকে বাড়ানোর জন্য উন্নয়ন খাতে যে ২৭৯ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, এই ১৫ কোটি টাকা তার অতিরিক্ত বরাদ্দ। ঢাকায় অবস্থিত উচ্চ ক্ষমতাবিশিষ্ট একটি বোর্ডের অধীনে সৃষ্ট তহবিল পুনর্গঠনের জন্য বরাদ্দকৃত এই অর্থ দেওয়া হয়েছে। আশু মেরামত, পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের সকল প্রস্তাব অনুমোদনের সকল ক্ষমতা এই বোর্ডের উপর ন্যস্ত করা হয়েছে।

ব্যক্তিগত মালিকানাধীন কারখানাগুলিতে সত্বর স্বাভাবিক কাজ আবার শুরু করার জন্য কারখানাগুলিকে সর্বপ্রকার সাহায্য দেওয়া হয়েছে। কাঁচামাল আমদানীর জন্য আমদানী নীতিতে সুবিধা দান, ব্যবসা ও বাণিজ্যের সম্প্রসারণের জন্য স্টেট ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ কতৃক ঋণদানের বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যুক্তভাবে সাহায্যের প্রয়োজনে বিভিন্ন ব্যাংক একজোট হয়ে কনসোর্টিয়াম গঠন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পিকিক ও আইডিপিকে দেয়া পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন কারখানাগুলির ঋণ পরিশোধের সময় বাড়িয়ে দেওয়া ছাড়াও নগদ পুজিদানেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গোলযোগকালে যে সকল ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ব্যাবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের বীমার টাকা দিয়ে দেবার নীতিও গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে ব্যক্তিগত ব্যবসায়ে রত লোকদের পক্ষে তাদের ব্যবসাকে পুনর্গঠনের সুযোগ দেওয়া হবে।

প্রদেশের অর্থনীতির প্রধান অবলম্বন কৃষি ক্ষেত্রে ঋণদানের বিশেষ ব্যবস্থা করবার জন্য এডিবিপিকে বিশেষ খাতে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। এই বৎসরের পাটনীতিতে পাটের সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণকালে মণ প্রতি ২ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে পাটচাষীদের আয়ের পথ সুগম হবে। পাটের এই বর্ধিত মূল্যকে টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে কাঁচা পাট রফতানীর ক্ষেত্রে বোনাসের সুযোগও শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার কতৃক প্রতিষ্ঠিত জুট ট্রেডিং কর্পোরেশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, তারা যেন সরকার কতৃক নির্ধারিত সর্বনিম্ন মূল্যে বহুল পরিমাণ পাট ক্রয় করে। এ কাজ যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে তার জন্য এই সংস্থাগুলোকে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। এই দুই সংস্থার কাজে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে সরকার আরও একটি সংস্থার সৃষ্টি করার সিদ্ধান্ত করেছেন। তার নাম হবে জুট প্রাইস স্টেবিলাইজেশন কর্পোরেশন। এই প্রতিষ্ঠানের কাজ হবে যে, প্রদেশের সমস্ত বিকল্প পাটের বাজার থেকে পাট ক্রয় করা।

অবশ্য আমি এ কথা বলতে পারি না যে, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ সন্তোষজনক। এখনও এমন অনেক অর্থনৈতিক ক্ষেত্র রয়ে গেছে যা সরকারের পক্ষে উদ্বেগের কারণ। যা হোক এ কথা অনস্বীকার্য যে, আমরা মোড় ফিরাতে সক্ষম হয়েছি এবং অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের পথে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছি। আমি আমার দেশবাসীর নিকট আবেদন জানাচ্ছি যে, তারা যেন আমাদের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে সরকারকে সর্বোতভাবে সাহায্য করেন। এই বিরাট কাজে যে শুধু জনগণ ও প্রদেশের সরকারের কর্মতৎপর হতে হবে তাই নয়, বরং এতে সমগ্র জাতির সম্পদ ও সহায়তার প্রয়োজন হবে। আমি এ সম্বন্ধে একেবারে নিশ্চিত যে, সম্মিলিত, শক্তিশালী ও আত্মপ্রত্যয়ী জাতি হিসেবে পাকিস্তান যাতে উন্নতির পথে অগ্রসর হতে পারে, তার জন্য এই মহান দেশের আপামর জনসাধারণ একই সঙ্গে হাত মিলিয়ে পূর্ব পাকিস্তানকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করবে।

এবার আমি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে দু-একটি কথা বলব। আমাদের চারিদিকে এখন যা ঘটছে তাতে জনসাধারণের মনে দারুণ উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। আমি জানি যে, এই অস্বাভাবিক অবস্থার দরুন সমাজের প্রায় সকল স্থরের লোক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তাদের এই দুঃখ-দুর্দশায় আমি গভীরভাবে দুঃখিত। তাদেরকে আমি আমার আন্তরিক সহানুভূতি জানাচ্ছি। কাজেই সামজিক পুনর্বাসন অপেক্ষা মানবিক পুনর্বাসন আজ অনেক বেশী জরুরী। কার্য-কারণ অনুসন্ধান করলে আমরা দেখতে পাব যে, প্রত্যেকের মনেই ভয় ও ভীতির সঞ্চার হয়েছে। এই অবস্থার অবসান ও জনগণের মনে সম্পুর্ণ আস্থা ও শান্তি ফিরিয়ে আনা আমার সরকারের প্রধান দায়িত্ব। এই গুরুদায়িত্ব পালনে আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

আমার বিশ্বাস যে, এই ব্যাপারে বেসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সাম্প্রতিক গোলযোগে শাসন ব্যবস্থারও প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। আমি আশা করি দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকারী কর্মচারীরা সততা, নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে তাদের কর্তব্য পালন করে যাবেন, আমি তাদের এই আশ্বাস দিতে চাই যে তারা যাতে সুচারুরূপে তাদের কর্তব্য সম্পাদন করতে পারেন সেজন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হিবে।

পরিশেষে আমি আরও একবার আমার পূর্বের কথা আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, আমার সরকার একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার। যে মুহুর্তে স্বাভাবিক অবস্থা ফিয়ে আসবে এবং নির্ধারিত কার্যক্রম অনুসারে উপনির্বাচন সমাপ্ত করা হবে, সেই মুহুর্তে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনগণের সার্বভৌমত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হবে। আজ আমরা আল্লাহর নিকট মোনাজাত করি, তিনি যেন আমাদের এই প্রচেষ্টাকে সাফল্যমন্ডিত করেন।

পাকিস্তান পায়েন্দাবাদ।

.

.

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৮৮। চট্টগ্রামে শান্তি কমিটির প্রতি জেঃ নিয়াজি দৈনিক পাকিস্তান ১৭ সেপ্টেম্বর

.

চট্টগ্রামে শান্তি কমিটির প্রতি জেঃ নিয়াজি

বিপথগামীদের জাতীয়

পুনর্গঠনে শরীক

হতে উদ্বুদ্ধ করুন

.

এপিপির খবরে প্রকাশ, ইষ্টার্ন কমান্ডের কমান্ডার ও ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসন লেঃ জেনারেল এ, এ, কে নিয়াজী গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম শান্তি কমিটির সদস্যদের প্রতি বিপথগামী দেশত্যাগীদের মন থেকে ভ্রান্ত ধারণা অপসারণ ও দেশে ফিরে এসে জাতীয় পুনর্গঠনের কাজে আত্মনিয়োগের জন্য তাদের বোঝানোর আহবান জানিয়েছেন।

সামরিক আইন প্রশাসক বলেন যে, বিপথগামী ব্যক্তিরা তাদের ঘরবাড়ী ও পরিবার-পরিজন ছেড়ে এক শোচনীয় অবস্থার মধ্যে বাস করছে। তিনি বলেন যে, বাস্তবিকপক্ষে তারা হচ্ছে আমাদের জাতীয় সম্পদ তবে সত্য উপলব্ধি করে দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে পুনরায় তাদের জীবন যাত্রা শুরু করতে হবে।

পক্ষান্তরে তারা তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা অব্যাহত রাখলে সাধারণ মানুষের দুর্ভগ সৃষ্টি ছাড়া আর কিছুই লাভ করবে না।

জেনারেল নিয়াজী বলেন যে, বিচ্ছিন্নতাবাদী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে খতম করতে হবে। তবে এই প্রক্রিয়ায় শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের কষ্ট ভোগ করা উচিৎ নয়। জেনারেল নিয়াজী শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, তাদেরও রাষ্ট্রের প্রতি কর্তব্য রয়েছে এবং রাষ্ট্রবিরোধী ব্যক্তিদের নির্মূলের ব্যপারের প্রশাসন ব্যবস্থাকে সাহায্য করা উচিত।

রাষ্ট্র ও এর নিরাপত্তা সম্পর্কে জেনারেল নিয়াজী বলেন যেন, পাকিস্তান হচ্ছে ইসলামের দুর্গ এবং যারা পাকিস্তানকে ধ্বংসের তৎপরতায় লিপ্ত, তারা কার্যতঃ ইসলামের শত্রু। তিনি বলেন যে, পাকিস্তান হচ্ছে সমগ্র জাহানের আশা-আকাঙ্খার প্রতীক। তাই এই রাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য ইসলামী নীতিসমূহের অনুসরণ অবশ্য কর্তব্য।

ইসলামে জাগতিক সুখ শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির বিধান রয়েছে। ইতিহাস থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, যতদিন আমরা ইসলামী নীতিসমূহ মেনে চলেছি ততদিন আমরা সমুন্নত ছিলাম। কিন্তু যখনই আমরা ইসলামকে অবহেলা করেছি তখনি আমরা এক পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি। তিনি বলেন যে, ইসলামী জীবনধারা পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে মুসলিম জাতি আবার তার গৌরবময় শিখরে আরোহণ করতে পারে।

এর আগে জেনারেল নিয়াজী, চট্টগ্রামে ট্রেনিং গ্রহণরত রাজাকারদের পরিদর্শন করেন। তিনি তাদের মনোবল ও উৎসাহের প্রশংসা করেন। পরে জেনারেল নিয়াজী রাঙ্গামাটি সফর করেন। সেখানে তিনি শান্তি কমিটির সদস্যসহ এক বিরাট জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। জনসাধারণ প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে জেনারেলকে অভ্যর্থনা জানাতে আসেন। এদের মধ্যে চাকমা প্রধান ও নির্বাচিত এম এন এ, রাজা ত্রিদিব রায়ও উপস্থিত ছিলেন।

জেনারেল নিয়াজী রাঙ্গামাটি এলাকা থেকে দুষ্কৃতিকারীদের সফলভাবে উৎখাত ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জনসাধারণের প্রতি অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানে যে সৈন্য আছে, তাদের পক্ষে প্রতিরোধ ও নাশকতামূলক তৎপরতার সকল উৎসকে নির্মূল করতে দীর্ঘদিন লাগবে না কিন্তু নির্মমভাবে কোন নির্মূল অভিযান পরিচালিত হলে বহু মূল্যবান জীবন নষ্ট এবং বহু নারী বিধবা ও শিশু এতিম হয়। তারা আমাদেরও মা-বোন ও সন্তান এবং তাদের জন্যে আমাদের সবরকম শ্রদ্ধা রয়েছে।

তিনি শান্তি কমিটির সদস্যদের প্রতি বিপথগামী ব্যক্তিদের দেশে ফিরে এসে দেশপ্রেমি নাগরিক হিসেবে সম্মানজনক জীবন শুরু করার জন্য তাদেরকে বোঝানোর আহবান জানান। চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম সফরকালে জেনারেল নিয়াজী সৈন্যদের সাথেও মিলিত হন। স্থানীয় কমান্ডার এলাকার সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন যে, আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষা ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো প্রহরার ব্যাপারে রাজাকার ও ই,পি,আর খুবই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে বলে সেনাবাহিনীর উপর চাপ অনেকখানি হ্রাস পেয়েছে এবং তারা এখন প্রধানতঃ সীমান্ত রক্ষার ব্যাপারেই নিয়োজিত আছে। জেনারেল নিয়াজী বিকেলে ঢাকা ফিরে আসেন। সফরকালে জিওসিও তার সাথে ছিলেন।

.

.

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৮৯। প্রাদেশিক মন্ত্রীসভার শপথ গ্রহণ পাক সমাচার ২৪ সেপ্টেম্বর ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

.

প্রাদেশিক মন্ত্রীসভার

শপথ গ্রহণ

.

গত ১৭ই সেপ্টেম্বর অপরাহ্নে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের ১০ সদস্য বিশিষ্ট মন্ত্রী পরিষদের ৯ জন সদস্য শপথ গ্রহণ করেন।

ঐদিনে বিকেল চারটায় গভর্নর ভবনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে প্রাদেশিক গভর্নর ডাঃ এ এম মালিক মন্ত্রীসভার সদস্যদের শপথ গ্রহণ করান।

যে ৯ জন ঐদিন মন্ত্রী হলেন, তারা ইতিপূর্বে কখনও মন্ত্রিত্ব করেননি। তবে এদের কেউ কেউ জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন।

যারা মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন তারা হলেন, রংপুরের জনাব আবুল কাশেম, বগুড়ার জনাব আব্বাস আলী খান, বরিশালের আখতার উদ্দিন আহমদ, ঢাকার জনাব এ এস এম সোলায়মান, খুলনার মওলানা এ কে এম ইউসুফ, পাবনার মওলানা মোহাম্মদ ইসহাক, কুষ্টিয়ার জনাব নওয়াজেস আহমদ, নোয়াখালীর জনাব ওবায়দুল্লাহ মজুমদার ও চট্টগ্রামের অধ্যাপক শামসুল হক।

মন্ত্রীদের মধ্যে জনাব আবুল কাশেম, আব্বাস আলী খান, জনাব আখতার উদ্দিন, মওলানা এ কে এম ইউসুফ ও জনাব এ এস এম সোলায়মান ইতিপূর্বে জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। এই মন্ত্রীদের মধ্যে নোয়াখালীর জনাব ওবায়দুল্লাহ মজুমদার ও চট্টগ্রামের শামসুল হক অধুনালুপ্ত আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে যথাক্রমে এম এম এ ও এমপিএ নির্বাচিত হন।

ডাঃ মালিকের মন্ত্রীসভায় কাউন্সিল মুসলিম লীগের ২ জন (দলের সাধারণ সম্পাদক জনাব আবুল কাশেম ও বহু পুরাতন কর্মী এডভোকেট নওয়াজেশ আহমদ), জামাতে ইসলামের ২ জন (জনাব আব্বাস আলী খান ও মওলানা এ কে এম ইউসুফ), অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগের ২ জন (জনাব ওবায়দুল্লাহ মজুমদার ও জনাব শামসুল হক) কে এস পির একজন (জনাব এ এস এম সোলায়মান), নেজামে ইসলামের একজন (মওলানা মোহাম্মদ ইসহাক)। কনভেনশন মুসলিম লীগের একজন (জনাব আখতারুদ্দিন আহমদ) এবং একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি মিঃ আউংশুপ্রু।

প্রদেশের মনোনীত সংখ্যালঘু মন্ত্রী মিঃ আউংশুপ্রু শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি। তিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসার জন্য নির্দিষ্ট বিমানে আরোহণ করতে পারেননি।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর গভর্নর ডাঃ মালিক সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনা প্রসঙ্গে বলেন যে, তাঁর মন্ত্রীরা সবাই সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক শাসনকর্তা লেঃ জেনারেল এ এ কে নিয়াজী ঢাকা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জনাব বি এ সিদ্দিকী, হাইকোর্টের বিচারপতিবৃন্দ উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক অফিসারগণ উপস্থিত ছিলেন।

মিঃ আউংশুপ্রু চৌধুরী পরদিন ১৮ই সেপ্টেম্বর ঢাকায় গভর্নর ভবনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে গভর্নরের মন্ত্রী সভার সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন।

পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর জনাব আবদুল মোতালিব মালিক শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অভ্যাগতদের মধ্যে মন্ত্রী সভার সদস্যরা ছিলেন।

.

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৯০। মন্ত্রী পরিষদ সদস্যদের দফতর বণ্টন পাক সমাচার ২৪ সেপ্টেম্বর ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

.

মন্ত্রী পরিষদ সদস্যদের দফতর বণ্টন

.

গত ১৮ই সেপ্টেম্বর পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের দফতর বণ্টন করা হয়েছে।

জনাব আবুল কাসেমকে অর্থ দফতরের এবং জনাব আব্বাস আলী খানকে শিক্ষা দফতরের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

জনাব আখতার উদ্দিন আহমদ বাণিজ্য ও শিল্প দফতরের এবং অস্থায়ীভাবে আইন ও পার্লামেন্টারী বিষয়ক দফতরের দায়িত্ব পালন করবেন।

জনাব এ এস এম সোলায়মানকে শ্রম, সমাজ কল্যাণ ও পরিবার পরিকল্পনা দফতরে মন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে।

মিঃ আউংশুপ্রুকে বন, সমবায় ও মৎস্য দফতরের দায়িত্বভার দেয়া হয়েছে। তিনি সংখ্যালঘুদের বিষয়ও দেখাশোনা করবেন।

মাওলানা এ কে এম ইউসুফকে দেয়া হয়েছে রাজস্ব দফতরের দায়িত্বভার। তিনি অস্থায়ীভাবে পূর্ত, বিদ্যুৎ ও সেচ দফতরের দায়িত্বও পালন করবেন।

মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক পেয়েছেন মৌলিক গণতন্ত্র ও স্থানীয় স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা সংক্রান্ত দফতরের দায়িত্বভার।

জনাব নওয়াজিশ আহমদ খাদ্য ও কৃষি দফতরের মন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জনাব মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ মজুমদারকে। তিনি সাময়িকভাবে তথ্য দফতরেরও দায়িত্ব পালন করবেন।

অধ্যাপক শামসুল হককে সাহায্য ও পুনর্বাসন দফতরের মন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি প্রত্যাগত ও গৃহত্যাগী ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের সমস্যাবলীও দেখাশুনা করবেন।