You dont have javascript enabled! Please enable it! মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদের ভূমিকা ০২ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৪। বাংলাদেশের সমর্থনে সভা ও মিছিলের আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশের অ্যাকশন কমিটির প্রচার পত্র অ্যাকশন কমটির প্রচার পত্র ১৭ এপ্রিল,১৯৭১

বাংলাদেশ সমর্থনে সভা ও মিছিল

ট্রাফালগার স্কোয়ার, লন্ডন

তাং ১৮ই এপ্রিল, রবিবার

সময়ঃ বেলা ২ঘটিকা

কার্যসূচী

বেলা ২ ঘটিকায় ট্রাফালগার স্কোয়ারে একত্রিত হওয়ার পর বেলা সাড়ে তিন ঘটিকা পর্যন্ত সভার কার্য চলিবে। তৎপর পাশাপাশি ৫ জন করে লাইন ধরতে হবে এবং প্রতি সারির মাঝখানে ১ ফুট ব্যবধান রাখিয়া অগ্রসর হইতে হইবে। এই ধরণের ১২টি লাইনের পরে আবার তিন ফুটের ব্যবধান থাকিবে। প্রতি ১২ লাইনের জন্য একজন মার্শাল থাকিবে।

মিছিল ট্রাফালগার স্কোয়ার হইতে শুরু হইয়া ডানকান্‌ স্ট্রীট, ল্যাঞ্চাস্টার প্লেস, ওয়াটারলুস ব্রিজ, পার্লিয়ামেন্ট স্ট্রিট, হোয়াইট হল, হর্স গার্ড এভিনিউ হইয়া ভিক্টোরিয়া এমব্যাংকমেন্ট পর্যন্ত অগ্রসর হওয়ার পর টেম্পল প্লেনে আসিয়া শেষ হইবে। পরে প্রত্যেকে স্ব স্ব কোচে প্রত্যাবর্তন করিবেন।

বিঃ দ্রঃ মিছিল হোয়াইট হলের নিকট আসার পর ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট আট সদস্য বিশিষ্ট “ডেলিগেশন” বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে স্মারকলিপি প্রদান করিবেন।

    বাংলাদেশ অ্যাকশন কমিটি

                                             কর্তৃক প্রকাশিত।

৫৫নং ওয়ার্ড ওয়ার্থ রোড,

বার্মিংহাম।

______________________

<৪,১৫,২৩-২৪>

অনুবাদকঃ কাজী সাদিকা নূর

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৫। বাংলাদেশের প্রতি সমর্থনের জন্যে বিশ্বের সকল উপাচার্যের প্রতি বাংলাদেশের শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীদের আবেদন

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন স্কটল্যান্ডের প্রকাশিত প্রচারপত্র

 

১৯ এপ্রিল, ১৯৭১

উপাচার্যবৃন্দের প্রতি একটি নিবেদন

বাংলাদেশের (প্রাক্তন পূর্ব পাকিস্তান) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এবং ছাত্ররা পাকিস্তান আর্মি কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার শিকার হয়েছে। নিচে আমরা “সানডে টেলিগ্রাফ” (১৮ই এপ্রিল, ১৯৭১) -এ প্রকাশিত সংবাদ পুনঃউত্থাপন করছি, যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জনাব এ এস চৌধুরির তাঁর ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া ঘটনাসমূহের ব্যাপারে বক্তব্য প্রকাশ করেছেন। নিঃসন্দেহে উপাচার্য হিসেবে আপনাদেরও একইরকম অনুভূতি হবে এবং ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে আমরা আপনাদের কাছে আবেদন করছি রাজনৈতিকভাবে সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে, যার লক্ষ্য হচ্ছে বাংলার সকল বুদ্ধিজীবীদেরকে হত্যা করা।

ছাত্রদের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য

(দি সানডে টেলিগ্রাফ ১৮ই এপ্রিল, ১৯৭১)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গত তিন সপ্তাহেরও কিছু বেশি সময় ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ট্যাংক তাঁর ক্যাম্পাসে আঘাত হানা এবং তাঁর ছাত্রদেরকে ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যা করার ভয়ংকর ঘটনাটি উপলব্ধি করতে পারার আগ পর্যন্ত এটি তেমন উল্লেখযোগ্য কোন ঘটনা ছিল না।

আবু সায়েদ চৌধুরি পূর্ব পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত ঢাকা হাই কোর্টেরও একজন জ্যেষ্ঠ বিচারক। তিনি বলেন, “অবশ্যই আমার এখন পূর্ব পাকিস্তান বলা উচিত”। এখানে তাঁর অবস্থানকালে তিনি শুধুমাত্র তাঁর ব্রিটিশ উকিল এবং প্রাতিষ্ঠানিক বন্ধুদের সাথে তাঁর প্রাক্তন বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বলেছিলেন। গত সপ্তাহে তিনি মান্দ্রেককে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎকারটি দেন।

বিচারপতি জনাব চৌধুরি জেনেভায় মানবাধিকার কমিশনে পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে যোগদানের জন্য ১৮ই ফেব্রুয়ারি ঢাকা ছাড়েন। তিনি দুর্ভাগ্য স্বীকার করে বলেন, “আমরা জাম্বিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার আত্মসংকল্প নিয়ে কথা বলেছি। এখন দেখছি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন থেকে মুক্তি অর্জন ও স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যে অত্যাচার সহ্য করছে তা মানব ইতিহাসে অতুলনীয়।”

তিনি সাথে তাঁর পরিবারকেও নিয়ে এসেছিলেন। “এমন নয় যে আমি জানতাম এরকম কিছু ঘটবে। এখানে আমাদের জিসিই পড়ুয়া ছেলেকে আমার স্ত্রী দেখতে চেয়েছিল, তাই সাথে করে আমাদের ছোট দুই সন্তানও এসেছে।”

মানবাধিকার কমিশন তাঁদের আলোচনা শেষ করে এবং অন্য দিকে পূর্ব পাকিস্তানে ট্যাংক নিয়ে আক্রমণ শুরু হয়। চৌধুরি হিথরোতে পৌঁছনো মাত্র এ সম্পর্কে জানতে পারেন কিন্তু চার দিন আগেই সাইমন ড্রিং দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফে প্রকাশ করেন যে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলিবর্ষণ করা হয়েছে এবং তাঁর ছাত্র-শিক্ষকদেরকে হত্যা করা হয়েছে।

“সেই মুহূর্তে আমি স্তব্ধ হয়ে যাই এবং আমার এখানে ব্যাথা অনুভব করি”। তিনি তাঁর বুকে স্পর্শ করেন। “এরপর যখন নিশ্চয়তা আসে, তখন শ্বাসরুদ্ধকর একটি পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তৎক্ষণাৎ আমি শিশুর মত কান্নায় ভেঙে পরি। আমি আমার স্ত্রীকে জানাই এবং সেও ফুঁপিয়ে ওঠে”।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানের বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়, এখানে ছ’শ প্রাতিষ্ঠানিক কর্মচারী এবং দশ হাজার ছাত্র আছে। তিনি বলেন, তাদের মাঝে পাঁচ হাজারেরও কম সক্রিয়ভাবে রাজনীতির সাথে যুক্ত এবং তাঁর মতে তারা সবাই শান্তিপূর্ণভাবেই এতে অংশগ্রহণ করে। বাকিদের মধ্যে বেশিরভাগই “গ্রামের দরিদ্র ছেলেপেলে” যারা বাধ্য হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় হলে থাকে এবং তারাই ২৫ মার্চ রাতে সেনাবাহিনীর ঘুমন্ত লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।

যে পাঁচশ জন ছাত্রীর জন্য ১ মার্চ যে হল খোলার কথা ছিল তাদের ভাগ্যে কী লেখা আছে সেকথাও বিচারপতি জনাব চৌধুরি জানেন না। “আমি অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছিলাম এবং কঠোর নির্দেশ দিয়েছিলাম আমার ফিরে আসার অপেক্ষায় উদ্বোধনের দিন যেন কোনভাবেই পেছানো না হয়। নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে থাকার জায়গার বড্ড অভাব ছিল। কিন্তু জাতীয় সমাবেশ মূলতবী করায় ঢাকার জীবন পুরোপুরি থেমে যায়”।

যদিও তিনি পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন ব্রিটিশ সরকারের করণীয় সম্পর্কে এবং তিনি এই সপ্তাহে নিজের প্রস্তাব একদল রক্ষণশীল পশ্চাৎপন্থীদের সামনে রাখবেন। তাঁর যুক্তি অত্যন্ত কঠোর।

“অবিভক্ত পাকিস্তানের আদর্শ অবলম্বন করা এখন মরীচিকার পেছনে ছোটার মতই। এখানে দুইটি বিকল্প রাস্তা আছে। প্রথমত, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে তার আর্মি প্রত্যাহার করতে রাজি করানো, শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্ত করে দেয়া এবং তাকে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য একটি নতুন সংবিধান গঠন করার অনুমতি প্রদান করা। দ্বিতীয়ত, প্রেসিডেন্টকে শেখ মুজিবসহ অন্যান্য বুদ্ধিজীবীদের মেরে ফেলার অনুমতি দেয়া, এবং এর ফলে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলার রাজত্ব চলতে থাকবে। এই পরিস্থিতিকে কোনভাবেই অভ্যন্তরীণ ঘটনা হিসাবে দেখা যাবে না, যেখানে জনগণের ওপর গত দুই সপ্তাহ ধরে গোলাবর্ষণ হচ্ছে”।

তিনি একইভাবে এও নিশ্চিত যে, ততদিন পর্যন্ত তিনি ঢাকায় ফিরতে পারবেন না, যতদিন না পর্যন্ত সরকার বদলাচ্ছে। একজন বিচারক হিসাবে এটি অসম্ভব। “এই মুহূর্তে কীভাবে উচ্চ আদালতে কেউ সরকারের আদেশ নাকচ করে আবেদন নিয়ে যেতে পারে? এখন কোন আইন নেই। সরকার এখন জোরের”।

একজন উপাচার্যের জন্য এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। “আমার ছাত্রদেরকে যখন হত্যা করা হয়, তখন আমার মুখ দেখানোর মতন অবস্থা ছিল না। দেখুন, আমার ছাত্ররা আমায় ভালবাসৎ এবং আমিও আমার ছাত্রদেরকে ভালবাসতাম। যদি আমি তাদের প্রতি অবিচারের কোন সুরাহা আমি করতে না পারি, তাহলে ফিরে গিয়ে আমি মুখ দেখাব কী করে?”

এবং ব্রিটিশ সাংবাদিকদেরকে এতকিছু বলার পরেও তিনি সমর্থন পেতে ব্যর্থ হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,

রাজশাহী, চট্টগ্রাম এবং সংশ্লিষ্ট কলেজসমূহের কর্মচারীবৃন্দ

যারা উচ্চ শিক্ষার জন্য বর্তমানে স্কটল্যান্ডে আছেন

বাংলাদেশ অ্যসোসিয়েশান

স্কটল্যান্ড

১৫ এল্ডন স্ট্রিট

গ্লাসগো সি৩

১৯/৪/১৯৭১

<৪,১৬,২৫>

অনুবাদকঃ কাজী সাদিকা নূর

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৬। বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরের জবাব জনাব এ, আর, খানের প্রতি ব্রিটিশ এমপির চিঠি। ২২ এপ্রিল, ১৯৭১

এমপি ফ্র্যাংক জুডের পক্ষ থেকে

২২ এপ্রিল, ১৯৭১

জনাব খান,

আমি আপনার এবং অন্যদের দ্বারা স্বাক্ষরিত চিঠি ফরেইন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অ্যাফেয়ার্সের রাষ্ট্রসচিবের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি এবং তার উত্তর এইখানে সংযুক্ত করে দিয়েছি।

আশংকা করছি যে, এর মাধ্যমে ঘটনাটি সঠিকভাবে প্রকাশ পায় নি, কিন্তু আপনি নিশ্চিত থাকেন যে, আমার সহকর্মীরা এবং আমি এই বিষয়ে নজর রাখছি।

আপনার একান্ত অনুগত

এস ডি/

জনাব এম এ রাজ্জাক খান

৬ ব্রিটানিয়া রোড, সাউথসি

পোর্টসমাউথ পি০৫ ১এস এন

____________________________

ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিস

লন্ডন এস ডাব্লিউ ১

১৯ এপ্রিল, ১৯৭১

উপমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত

জনাব ফ্র্যাংক,

এলেক ডগলাস হোমকে আপনি গত ৬ এপ্রিল, আপনার কয়েকজন সংগঠক কর্তৃক স্বাক্ষরিত পূর্ব পাকিস্তান বিষয়ক যে চিঠিটি পাঠিয়েছিলেন, তিনি সেটির উত্তর দিতে আমাকে অনুরোধ করেছেন। আপনি জানেন যে, প্রতিমন্ত্রী গত ৫ এপ্রিল পাকিস্তানের অবস্থা নিয়ে হাউসে বক্তব্য পেশ করেছেন। আমি সেটির একটি প্রতিলিপি এইখানে সংযুক্ত করে দিয়েছি, যা আপনি জনাব রাজ্জাককে পাঠিয়ে দিতে পারেন।

আপনার সংগঠকদের তোলা কিছু প্রশ্নে আমি কেবলমাত্র নিম্নোক্ত বক্তব্যগুলোই প্রকাশ করতে পারি। পূর্ব পাকিস্তানে যে দ্বন্দ্ব চলছে তা অবশ্যই পাকিস্তান সরকারের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। সুতরাং, ব্রিটিশ সরকারের এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা কিংবা জাতিসংঘকে অনুরোধ করা উচিত হবে না। উপরন্তু, আমার মনে হয় আমরা পাকিস্তান সরকার ও রেড ক্রস সোসাইটির আন্তর্জাতিক লিগের সম্পর্কের মধ্যে  হস্তক্ষেপ করতে পারি না, কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের দুর্দশা দূর করার ক্ষেত্রে তাদের মানবিক প্রচেষ্টায় কোন বাঁধা দেয়া হলে ব্রিটিশ সরকার তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত।

বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে বর্তমানে কোন রকম সম্ভাবনা নেই এবং ব্রিটিশ সরকার ইসলামাবাদে পাকিস্তান সরকারকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।

আমি আপনার সংগঠকদের চিঠি ফেরত পাঠাচ্ছি।

একান্ত

অ্যান্থনি রয়্যাল

ফ্র্যাঙ্ক জুড, আইনিজীবী-সংসদ সদস্য

হউস অফ কমনস

লন্ডন, এস ডব্লিউ১

<৪,১৭,২৭>

অনুবাদকঃ কাজী সাদিকা নূর

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৭। বাংলার বুদ্ধিজীবী ও গণহত্যার প্রতিবাদে ও স্বাধীনতা সংগ্রামকে সমর্থন করার জন্যে ব্রিটেনের ছাত্র-শিক্ষকদের প্রতি বাংলাদেশ শিক্ষক সম্প্রদায়ের আহ্বান

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশান, ডান্ডি প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি

 

২৩ এপ্রিল, ১৯৭১

যুক্তরাজ্যের শিক্ষক এবং ছাত্রদের প্রতি একটি নিবেদন

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন,

২০, সাউথ জর্জ স্ট্রিট

(২য় তলা), ডান্ডি

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঠান্ডা মাথায় এ দেশের বুদ্ধিজীবীদেরকে নিঃশেষ করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ (প্রাক্তন পূর্ব পাকিস্তান) -এর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, তাঁদের পরিবার-পরিজন এবং শিক্ষার্থীদেরকে হত্যার বিষয়ে আমরা আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।টাইমস’(লন্ডন, ৩০ মার্চ, ১৯৭১) পত্রিকায় বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পুড়তে থাকা লাশ এখনও তাদের বিছানায় পড়ে আছেএকটি গণকবরকে তড়িঘড়ি করে ঢেকে ফেলা  হয়েছে”…একই পাশবিক ঘটনাকে ডেইলি টেলিগ্রাফ’(মার্চ ৩০, ১৯৭১)-এ প্রকাশ করে: বিস্ময়াভিভূত অবস্থায় আকস্মিকভাবে প্রায় ২০০ ছাত্রকে হত্যা করা হয় ইকবাল হলে… তারা ভবনে হানা দেয় এবং মেশিন গান দিয়ে কক্ষে গুলি বর্ষণ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ইন্নাস আলি এবং ড: কামাল হোসেনসহ ঐ ঘটনার শিকার দুর্ভাগ্যবানদের কথা টাইমস’ (লন্ডন, ০২ এপ্রিল, ১৯৭১) পত্রিকার সেসব প্রতিবেদনসমূহে প্রকাশ করা হয়। গার্ডিয়ানএ ব্রিটিশ প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী লেখা হয় কীভাবে হানাদার বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বাসভবনে ৯ জন প্রফেসর, তাঁদের পরিবার এবং ২১ জন ছাত্রকে হত্যা করা হয়

আমাদের সাথে একাত্ম হয়ে এই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রকাশ করার জন্য  আমরা আপনাদের কাছে আবেদন জানাই।

ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীবৃন্দ

এবং সংশ্লিষ্ট কলেজের শিক্ষকবৃন্দ যারা স্কটল্যান্ডে শিক্ষারত আছেন

<৪,১৮,২৮>

অনুবাদকঃ সমীরণ কুমার বর্মন

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৮। বৃটেনে প্রবাসী বাঙালিদের কেন্দ্রীয় সংগঠন অ্যাকশন কমিটি ফর দি পিপলস রিপাবলিক অফ বাংলাদেশ ইন ইউ-কে এর প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব কভেন্ট্রিতে অনুষ্ঠিত বাঙালিদের সভার প্রস্তাবাবলী ২৪ এপ্রিল,১৯৭১

পুনঃসিদ্ধান্তসমূহ

অত্র ২৪ এপ্রিল কভেন্ট্রি- তে অনুষ্ঠিত মহতী সভায় গৃহীত প্রস্তাবাবলী:

(১) গ্রেট বৃটেনে কেন্দ্রীয়ভাবে এ সভায় একটি সমিতি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, এবং এই সমিতির নামকরণ হল  “Action Committee For the People’s Republic of Bangladesh in U.K.”

(২) অতি অল্প সময়ের নোটিসে সম্মিলিত হওয়ার জন্য পাঁচজন সদস্যবিশিষ্ট একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হল এবং ঐ কমিটির নাম হবে Steering Committee of the Action Committee  এবং উক্ত কমিটিকে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার সর্ব ক্ষমতার সম্পূর্ণ অধিকার দেওয়া হল।

(৩) এই সভায় আর এক প্রস্তাবে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে যে এই-কে প্রয়োজনবোধে আরও সদস্য বাড়াবার ক্ষমতা দেওয়া হল।

(৪) এই কমিটির পাঁচজন সদস্যের নাম হল:

. জনাব আজিজুল হক ভূঁইয়া

২  জনাব কবীর চৌধুরী

৩. জনাব মনোয়ার হোসেন

৪. জনাব এস কে আব্দুল মান্নান

৫. জনাব সামসুর রহমান

 (৫) এই পাঁচজনের প্রথম সভার অধিবেশন উক্ত সভার সভানেত্রী বিলকিস বানুর আহ্বানে অনুষ্ঠিত হবে এবং ঐ সভায় একজন আহ্বায়ক নিযুক্ত করা হবে।

(৬) বর্তমানে গ্রেট বৃটেনে যত কমিটি আছে সে সকল কমিটি এই কমিটির শাখা সমিতি রূপে কাজ করবে।

 

<,১৯,২৯৩৪>

অনুবাদকঃ নাজনীন আক্তার দুহিতা, নওশীন তাসনিম

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৯। বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে পৃথিবীর বিভিন্ন মহলের অভিমতের সংকলন বাংলাদেশের রিলিফ ফান্ড কমিটির প্রকাশনা ও প্রচার  বিভাগের সংকলন এপ্রিল, ১৯৭১

বিচারপতি এ এস চৌধুরির নিকট উপস্থাপিত

বাংলাদেশের জন্য সংগ্রাম বিশ্বমতামত

যদি রক্ত হয়ে থাকে মানুষের স্বাধীনতার অধিকারের মূল্য, তবে বাংলাদেশ তা অতিরিক্তই দিয়ে ফেলেছে। কিন্তু যদি বা তাদের আন্দোলন কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ধ্বংস হয়েও যায়, তবে তা মুক্তিযুদ্ধের সাময়িক পরাজয় মাত্র, যা শেষ পর্যন্ত বাঙালির রাষ্ট্রসত্ত্বা হিসেবে স্বীকৃত হবে এবং তা খণ্ডন করা কঠিন হতে পারে, কিন্তু সেটি সবার জন্য সুবিধাজনক নয়। আর এই মুহূর্তে বিবেচিত হতে পারে আমরা এবং অন্যান্য দেশগুলো “জাতির আত্মসংকল্পের অধিকার” – এই চমৎকার শব্দগুলো দিয়ে ঠিক কী বুঝি, যা জাতিসংঘের সনদের মধ্যে সমস্বরে উচ্চারিত হওয়া শব্দের মত মনে হয়েছিল। পূর্ব পাকিস্তান কখনোই একটি ‘বিচ্ছিন্নতাকামী* রাষ্ট্র হতে পারে না যেমনটি আগে ছিল (বায়াফ্রার মত)। সাড়ে সাত কোটি পূর্ব পাকিস্তানি মনে করে সাড়ে চার কোটি পশ্চিমার মত তাদেরও জাতীয় সংসদে ‘প্রতিনিধিত্ব’ রয়েছে।

———– এই সত্যটুকু মেনে নেওয়ার আগ পর্যন্ত ঠিক কতটুকু মানবীয় দুর্দশা ভোগ করতে হবে?

         -নিউ স্টেটসম্যান, ১৬/৪/৭১।

পাকিস্তান সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ব পাকিস্তানকে নিছক অস্ত্রের জোরে দাবিয়ে রাখতে পারেনা।

  • হাউজ অব লর্ডসে লর্ড গ্ল্যাডুইন।

পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের প্রতি বৃটেনের বিশেষ কর্তব্য রয়েছে।

                                         -হাউজ অব লর্ডসে লর্ড উইনি-জোনস।

অত্র এলাকায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হওয়া উচিত বলে কমনওয়েলথের মত প্রকাশ করা উচিত।

                                                                       -লর্ড ব্রকওয়ে, হাউজ অব লর্ডস।

সাম্প্রতিককালে অভূতপূর্ব এই ভোটের পর জনগণকে গণতন্ত্রে প্রাপ্য সম্মানটুকু তাদেরকে দেয়া উচিত।

                                                                             -ডি হিলে, ছায়া পররাষ্ট্র সচিব।

মধ্যস্থতা আকারে স্যার অ্যালেকের কমনওয়েলথের মাধ্যমে একটি উদ্যোগ নেয়া উচিত।

                                                                                 -জেরেমি থর্প, উদারপন্থী নেতা।

বায়াফ্রা থেকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেক বেশি ভিন্ন। কমনওয়েলথের উচিৎ এর ভাল দিকগুলোকে গ্রহণ করা। আপোষের সম্ভাবনা একেবারেই কম।

                                                                       -এম স্টুয়ার্ট, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব।

গত সপ্তাহের ঘটনাগুলোর পর থেকে ব্যাপক একটি ধারণা ছিল যে, পাকিস্তান কখনোই এক দেশ হতে পারবে না। এটাকে কমনওয়েলথভুক্ত একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে ভাবাটাই ভুল ছিল – ব্রিটেনের এখানে প্রভাব ছিল এবং সেটিকে যুদ্ধবিরতির কাজেই লাগানো উচিত।

                                                                                   -ব্রুস ডগলাস-ম্যান, এমপি।

দু’টি অংশের মধ্যে একটি স্পষ্ট অর্থনৈতিক বিভেদ রয়েছে। এই বিভেদ দূর করার জন্য বিশ্বব্যাংক ও পাকিস্তানের মিলিত প্রচেষ্টায় ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে হবে।

                                                                                       -বি আর ব্রেইন, এমপি।

পূর্বের বেশিরভাগ দরিদ্র, জনবহুল, অবহেলিত বাঙালি শক্তিশালী পশ্চিমা শাসকদের সামরিক ঐতিহ্যের কাছে আর কোন শোষণ ও অবহেলা সহ্য করবে না।

-সম্পাদক, ডেইলি টেলিগ্রাফ,৩/৩/৭১।

বাঙালিদের সংখ্যাগরিষ্ঠের সর্বশক্তি দিয়ে প্রণীত এমন সংবিধানে যদি রাষ্ট্রপতি (পাকিস্তানের) অনুমোদন দিতে রাজি না হয়, তবে শেখের পশ্চিমাংশ পাকিস্তানের বাকি অংশ থেকে আলাদা হয়ে গেছে বলে ঘোষণা করা ছাড়া সম্ভবত আর কোন পথ থাকবে না এবং দু’টি প্রদেশের চিরকালের জন্য আলাদা হয়ে যাবে।

                                     -পিটার হ্যাজেলহার্স্ট, সানডে টাইমস, ৭/৩/৭১।

পূর্বাংশের ওপর রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়ার ক্ষমতা পুনর্বহালের তাৎক্ষণিক কার্যকর প্রভাব যাই হোক না কেন, পূর্বাংশ ইতোমধ্যে মানসিকভাবে পৃথক হয়েই গেছে।

                                       -ডেভিড হল্ডেন, সানডে টাইমস, ২৮/৩/৭১।

জোর করে কোন ঐক্য নয়: কিন্তু পাকিস্তানের ঐক্য বজায় রাখা বা পুনরুদ্ধার করা যাবে না, সেনাবাহিনী কর্তৃক……… আর ঐক্য যদি সম্ভব না হয়, তবুও শান্তিপূর্ণভাবে পাকিস্তানকে ভেঙে দু’টি বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্রে পরিণত করাই হবে সবার শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য।

-সম্পাদক, দ্যা অবজারভার, ২৮/৩/৭১।

সামরিক সরকার “এক পাকিস্তান”-এর নামে বিশাল এক জনগোষ্ঠীর উপর নিষ্ঠুর আক্রমণ চালিয়ে এক পাকিস্তান যে কখনো সম্ভব নয়, সেটাই নিশ্চিত করেছে।

-মার্টিন অ্যাডেনি, গার্ডিয়ান, ২৯/৩/৭১।

কিন্তু হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে কখনও একতা আসতে পারে না; আর নিরীহ মানুষের জীবনের মূল্য দিয়েতো একতা নয়ই। বছরের পর বছর ধরে সমস্ত বাঙালি সংশয়ের জ্যান্ত প্রমাণ হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান আজ কেবল এক দখলকৃত ও শোষিত অঞ্চল হিসেবে টিকে রয়েছে। ওরা, যারা আমেরিকার মত পাকিস্তানি সেনাদের পুষে রেখেছে, তাদের নিজ নিজ অস্ত্রসম্ভারের ব্যবহার সম্পর্কে উপলব্ধি করা উচিত। ওরা, চীন ও শ্রীলংকার  মত যারা তাদের সেনাবাহিনীকে পশ্চিম থেকে আসার অনুমতি দেয়, তাদেরকে সেই বাহিনীর কার্যক্রম ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে উপলব্ধি করতে হবে। ওরা, ব্রিটেনের মত যারা এলাকায় নিজেদের প্রভাব ধরে রাখে, তাদেরকে তা প্রকাশ্যে এবং বলপূর্বক ব্যবহার করতে হবে।

                                                                               -সম্পাদক, গার্ডিয়ান, ৩/৪/৭১।

৭০,০০০ সদস্যের একটি সেনাবাহিনী কোন কালেই সাড়ে সাত কোটি জনতাকে দাবিয়ে রাখতে পারবেনা। পাকিস্তান যে মোটামুটি সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিকভাবে ভোট দিয়েছিল, শেখ মুজিব ও তাঁর দল যে সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানিদের আদেশপত্র ধারণ করে, পশ্চিমা শাসক জান্তা ও তাদের বুনো পদাতিক সৈন্যরা যে “জাতীয় ঐক্য”-এর স্বার্থে সেই আদেশপত্র ছিঁড়ে ফেলেছে, তা অবশ্যই চিরকালের জন্য শেষ – পরিস্থিতির এই সারমর্ম ভুলে যাওয়া আসলে খুবই সহজ। বর্বরতা দিয়ে দু’টি দেশকে এক করা যায় না।

-সম্পাদক, গার্ডিয়ান, ৩/৪/৭১।

শেখ মুজিব ভারতীয়দের সহমর্মিতা পেয়েছেন, কারণ তিনি ভারতের লালিত মূল্যবোধকে ধারণ করতেন – গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আমিও তাঁর জনগণের সমর্থন পেয়েছিলাম, নির্বাচনের ফলাফল এবং অন্যান্য উন্নয়ন সংঘটিত হবার পর একজন মানুষকে তা তারা দেখিয়েছে। শেষেমেশ বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক রায়কে গুঁড়িয়ে দিতে ট্যাংকগুলোকে ব্যবহার করা হয়েছিল।

-ইন্দিরা গান্ধী, ভারতীয় এমপি।

অনর্থক হত্যা, উন্মত্ব নিষ্ঠুরতা। প্রাপ্ত প্রমাণাদি থেকে যে কেউ বুঝতে পারবে যে, লক্ষ্য (ইয়াহিয়ার) ছিল আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া, যাতে তারা আর কোনো প্রতিরোধ আন্দোলনের জন্য কার্যকর নেতৃত্ব প্রদান করতে না পারে।

                                                                                    -সম্পাদক, টাইমস, ৩/৪/৭১।

সোভিয়েত ইউনিয়ন বাঙ্গালি নেতা, শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রেফতার ও নিপীড়ন সম্পর্কে অবগত, যিনি পূর্ব পাকিস্তানের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বিশ্বাসযোগ্য সমর্থন পেয়েছিলেন। বলপ্রয়োগ কেবল সমস্যাকে গুরুতর করতে পারে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ওপর নিপীড়ন এবং রক্তপাত বন্ধ করার জন্য জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।

                                                                                  -রাষ্ট্রপতি পোজোর্নি, রাশিয়া।

পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনাগুলোতে ভারত নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকতে পারেনি। বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে তা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি কিছু। এটি এমন একটি বিষয়, যা বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে যাচ্ছে।

                                                                                 -ইন্দিরা গান্ধী, ভারতীয় এমপি।

জেনেভার কূটনৈতিক সূত্রগুলো ভেবেছিল যে, পাকিস্তান সরকার রেডক্রসকে পাকিস্তান থেকে দূরে রাখতে চেয়েছিল ঠিক যে কারণে, সেই একই কারণে সংবাদপত্রের কর্মীদেরকেও তাড়িয়ে দিয়েছিল – সেখানে কোন আন্তর্জাতিক সাক্ষী বা পর্যবেক্ষক না রাখার উদ্দেশ্যে।

                                                                       -প্যাট্রিক কিটলি, গার্ডিয়ান, ৬/৪/৭১।

পাকিস্তান নিরস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধে এই আগ্রাসন, উচ্ছৃঙ্খল ধ্বংসযজ্ঞ, এবং নারী ও শিশু নির্যাতন এবং পুরুষ হত্যা চালিয়ে যাবার অনুমতি কি বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে পেতে পারে?

                                                                         -স্বরণ সিং, পররাষ্ট্র মন্ত্রী, ভারত।

কিন্তু পাকিস্তান থেকে বাঙালিদের বিচ্ছিন্নতা এখন এমনভাবে সম্পন্ন হয়েছে যে শেষ পর্যন্ত তারা জয়ী হবে বলে মনে হয় না।

                                                                             -মার্টিন উলাকট, গার্ডিয়ান, ৭/৪/৭১।

পূর্ব পাকিস্তানে যা ঘটছে, তা একটি অনর্থক সামরিক আগ্রাসন। বহির্বিশ্ব এবং কমনওয়েলথ অফিস এখনও বিশ্বাস করে যে, পূর্ব পাকিস্তানের ঝরে পড়া রক্তের চেয়ে তাদের বিদেশি সরকারের কূটনৈতিক স্বীকৃতিটিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সে (ইয়াহিয়া) যা করেছেন বা করছেন তা হল পূর্ব পাকিস্তানি এবং তাদের নির্বাচিত নেতাকে নিপীড়নের জন্য তার সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করা। নতুবা আপাত দৃষ্টিতে আপোষ আলোচনা ভেঙে গেছে। জনগণ ভোটের মাধ্যমে শেখ মুজিবকে সেই ক্ষমতা দিয়েছিল, তা তিনি পান সেটি ইয়াহিয়া চাননি। সুতরাং রাষ্ট্রপতি বন্দুকের আশ্রয় নিলেন। সেনাবাহিনী প্রেরণের মাধ্যমে তিনি নিজেকে কেবল গণতান্ত্রিক অধিকারের ব্যাপারে উদাসীনই নন, বরং একজন বেপরোয়া শাসক হিসেবেও প্রমাণ করলেন। পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক হস্তক্ষেপটি ছিল একটি পূর্ব-পরিকল্পিত কাজ। ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যকার দ্বন্দ্বসমূহের চেয়েও এটি খারাপ ও ক্ষতিকর দিকে মোড় নিতে পারত।

                                                                                   -সম্পাদক, গার্ডিয়ান, ৬/৪/৭১।

কিন্তু পরিস্থিতির গুরুত্ব এখন পূর্ণরূপে বিদ্যমান। অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার অভাবে পূর্ব পাকিস্তানে ভয়াবহ কিছু ঘটছে বলেই মনে হচ্ছে। কিন্তু ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট পোজোর্নি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কাছে নিয়ন্ত্রণ ও আপোষের বিষয়ে যে ধরণের আবেদন জানিয়েছেন, তার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেতে পারত যদি তা সম্পূর্ণভাবে নিরাপত্তা পরিষদ থেকে করা হত।

-সম্পাদক, অবজারভার, ১১/৯/৭১।

পাকিস্তানের গৃহযুদ্ধে পূর্বের মানুষদের পশ্চিমা সৈন্যদের বর্বরতা সমগ্র বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে এবং এটি আর্ত মানবতার আঙিনায় রাশিয়ান ও চাইনিজদের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্বকে আরও উদ্বেগজনকভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছিল। পাকিস্তানের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাসে দেখা যায় যে, এর একমাত্র বিকল্প ছিল যুক্তরাষ্ট্রীয় কায়দায় পূর্বের স্বায়ত্বশাসন প্রতিষ্ঠা করা।

                                                                       -সম্পাদক, ডেইলি টেলিগ্রাফ, ১২/৪/৭১।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের বর্তমান শাসক সামরিক জান্তা যেকোন মূল্যে পূর্ব পাকিস্তানের ওপর কর্তৃত্ব বজায় রাখতে বদ্ধ পরিকর।

-ক্লেয়ার হলিংসওয়ার্থ ডেইলি টেলিগ্রাফ, ১৩/৪/৭১।

এটি স্পষ্ট যে, সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী জনাব কোসিজিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মিসেস গান্ধীকে জানিয়েছেন যে, সোভিয়েত ইউনিয়ন দিল্লীকে সমর্থন দেবে যদি ভারত বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারকে স্বীকৃতি দেয়।

                                           -পিটার হ্যাজেলহার্স্ট, টাইমস, ১৩/৪/৭১।

পূর্ব বাংলার পরিস্থিতিকে আর কোনভাবেই ‘অভ্যন্তরীণ’ ব্যাপার বলে বিবেচনা করা যাচ্ছিল না। নিশ্চিতভাবেই এটি এখন আর এমন কোন ঘটনা নয়, ওখানে কী ঘটছে তা আমরা জানব না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ঘোষণা করেছে যে, পাকিস্তানে অস্ত্রের চালান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক সাহায্য দেয়ার ব্যাপারটিও আলোচনা-পর্যালোচনার মধ্যে রয়েছে।

-কেনেথ কিটিং, ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, ১৫/৪/৭১।

তিন সপ্তাহ ধরে যত্রতত্র রক্তপাত ঘটানোর পর পাকিস্তানের সামরিক শাসকরা এখন কোন অবস্থানে আছে? বরং তারা আরও বাড়ছে। তারা এমন করছে যেন, মাথা কেটে ফেললেই বাঙালিদের জাতীয়তাবাদকে শেষ করে দেয়া যাবে; তারা আসলে বিশ্ব মতামত ভুলে গিয়ে নিজেদেরকে উল্টোটাই প্রমাণ করছে। এ কথা বারবারই বলা যায় যে, বাংলাদেশের ঘটনাটি কোন দ্বিতীয় বায়াফ্রা নয়। এটি মূলত একটি সহজ বিষয়: স্বাধীনতা, নৈতিকতা ও মানবতার।

                                                                                  -সম্পাদক, গার্ডিয়ান, ৪/৪/৭১।

সময় হয়েছিল অনেক আগেই, পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনায় জনসম্মুখে ব্রিটিশ সরকারের অসন্তোষ প্রকাশের বিষয়টির যতটা জোরালোভাবে করা উচিত ছিল, তার অনেক দেরি হয়ে গেছে। আরও প্রথাগত ও নিজস্ব, কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ইয়াহিয়া খানকে তার কর্মপন্থা কতখানি বিপজ্জনক আর ভুল, তা জানিয়ে দেয়া উচিত। প্রয়োজনে পাকিস্তানে বিদেশী সাহায্য সরবরাহকারীদের কার্যক্রমও বিবেচনা করতে হবে – এমনকি যদি তা পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণের নিজেদের অনির্বাচিত সামরিক শাসকদের বোকামির জন্য ভোগান্তি তৈরি করার মত অবিচার করেও হয়।

-সম্পাদক, সানডে টাইমস, ১৮/৪/৭১।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান নিঃসন্দেহে একটি ক্রমবর্ধমান কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছেন।

-দি ইকোনমিস্ট, ১০/৪/৭১।

হিটলারের পর পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনাই ছিল পৃথিবীর সবচাইতে নির্মম ও নিষ্ঠুর ঘটনা।

-লর্ড ব্রকওয়ে, ১৭/৪/৭১।

ঔপনিবেশিক স্বাধীনতা আন্দোলন কনফারেন্সে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতির জন্য একটি রেজুলেশন পাশ করা হয়েছিল। লন্ডনেও শ্রম এমপি ব্রুস ডগ্লাসম্যান কর্তৃক ‘পূর্ব পাকিস্তানের ন্যায়বিচার’ পুনরুদ্ধারের জন্য একটি কমিটি প্রত্যাবর্তন করা হয়।                                                         -গার্ডিয়ান, ১৯.৪.৭১।

আমরা এটাই বুঝতে পারছিলাম না যে, এরকম একটি ধারার শাসনকে যুক্তরাষ্ট্র কেন সমর্থন দিয়ে যাচ্ছিলো।

-পূর্ব পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রীয় সফরকারী, ১৯/৪/৭১।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার সম্প্রতি ভুক্তভোগীদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন এবং আশা করেছেন যে পূর্ব পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ঘটনার জন্য সৃষ্ট ভোগান্তি অচিরেই লাঘব হয়ে যাবে।

-চার্লস ব্রে, যুক্তরাষ্ট্র স্টেট ডিপার্টমেন্ট, নিউজউইক।

ভারতের পক্ষে চুপ করে থাকা সঠিকও নয় এবং সম্ভবও নয় (বাংলার করুণ অবস্থা নিয়ে)।

-মিসেস ইন্দিরা গান্ধী, প্রধানমন্ত্রী, ভারত।

সাড়ে সাত কোটি পূর্ব পাকিস্তানিকে দাবিয়ে রাখতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী চরমভাবে ব্যর্থ হবে, এই তীব্র বিশ্বাস থেকেই বেশিরভাগ বিদেশি সরকার রয়ে-সয়ে থাকার নীতি অবলম্বন করে আছে।

-নিউজউইক, ১৯/৪/৭১।

পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক শাসকগণ যারা দুই পাকিস্তানকেই শাসন করেছে, তারা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পূর্ব পাকিস্তানকে অবহেলা করেছে এবং পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাইবে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

-স্পেক্টেটর, ১৭/৪/৭১।

কেন্দ্রীয় সরকার না দিলেও পশ্চিমবঙ্গের আমরা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছি।

-বি এস নাহার, মুখ্যমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ।

প্রদর্শনের জন্য হলেও, পূর্ব পাকিস্তানি নাগরিকদের ওপর মেশিনগানের ভারী গোলাবর্ষণ একই সংগে বর্বর ও নৃশংস।

  • নিউজউইক, ২৬/৪/৭১।

জাতীয়তাবাদী হোক বা না হোক, শিক্ষার্থী, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার এবং নেতৃত্ব দান করার মত যে কাউকেই ইসলামাবাদের নির্দেশে সৈন্যরা শেষ করে দিয়েছে।

  • নিউজউইক, ২৬/৪/৭১।

পূর্ব পাকিস্তানের উপর পাকিস্তান সরকারের ক্ষমতা ধরে রাখার স্পষ্ট সংকল্প থাকা সত্ত্বেও পরিস্থিতির সঠিক পর্যবেক্ষণে বোধ হচ্ছিলো বাঙালিরা শেষমেশ স্বাধীনতা অর্জন করবেই।

-টাইম, ২৬/৪/৭১।

আমরা অত্যন্ত কঠিন এই পরিস্থিতির একটি রাজনৈতিক সমাধান চাই।

-অ্যাডওয়ার্ড হিথ, প্রধানমন্ত্রী, যুক্তরাজ্য, ২৪/৪/৭১।

পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা প্রতিবেদনগুলোগুলো এতটাই ভয়াবহ যে কমনওয়েলথের সদস্যদের কাছ থেকে কিছু মন্তব্য আহ্বান করা হয়েছে।

-স্টিল, হাউজ অফ কমনস, ২০/৪/৭১।

এশিয়া, জাতিসংঘ এবং এই দেশ থেকে বহির্বিশ্বের কাছে পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা জানিয়ে রিপোর্ট করার জন্য একজন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকের দরকার।

-হ্যারল্ড উইলসন, হাউজ অফ কমনস, ২০/৪/৭১।

পূর্ব পাকিস্তানের বিপর্যয়ের জন্য ব্রিটেনে এই গ্রীষ্মে পাকিস্তান ক্রিকেটের সফর ইস্তফা দেয়ার জন্য তিরিশ জনেরও বেশি সংসদ সদস্য কমনস প্রস্তাবনায় স্বাক্ষর প্রদান করেন। এমপি বারনেসের প্রতিশ্রুতিতে এই প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়।

-টেলিগ্রাফ, ২১/৪/৭১।

পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিদিনই মাই লাইয়ের মত ঘটনা ঘটে যাচ্ছিলো। ব্রিটিশ সরকারের পাকিস্তানে অর্থনৈতিক সাহায্য পাঠানো বন্ধ করার ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

-ব্রুস ডগলাসম্যান, এমপি, ২৩/৪/৭১।

আর আলম, মুদ্রণ ও প্রচার ইউনিট, বাংলাদেশ ত্রাণ তহবিল কমিটি কর্তৃক সংকলিত

<৪,২০,৩৫-৩৬>

অনুবাদকঃ নওশীন তাসনিম

শিরোনাম সূত্র তারিখ
২০। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংগ্রামের প্রতি সমর্থন দানের জন্য ব্রিটেনের রাজনৈতিক দলসমূহের প্রতি বাংলাদেশ এ্যাকশন কমিটির আহ্বান। এ্যাকশন কমিটির প্রচারপত্র এপ্রিল, ১৯৭১

বাংলাদেশের পক্ষে আওয়াজ তুলুন

১৯৭১ এর কঞ্জার্ভেটিভ ও ইউনিওনিস্ট পার্টির সম্মেলনের বার্ষিক সভার প্রতিনিধিদের কাছে একটি নিবেদন

সুপ্রিয় প্রতিনিধি,

আপনি নিশ্চয়ই পশ্চিম পাকিস্তানের নির্বোধ ও ফ্যাসিবাদি সেনাবাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশের নিরস্ত্র ও সহজ-সরল মানুষদের ওপর চালানো পৃথিবীর সবচাইতে ভয়ংকর মানবিক দুর্যোগটি সম্পর্কে জেনে থাকবেন। সংবাদপত্রের প্রতিবেদন এবং টেলিভিশন থেকে আপনি হয়ত তা জেনে থাকবেন। তা সত্ত্বেও, আমাদের জনগণের ওপর যে গণহত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণ চালানো হয়েছে এবং আজও পর্যন্ত হচ্ছে, সেই দুর্যোগের গভীরতা ও মাত্রা, যা আমরা প্রত্যক্ষ করছি, তা বেশিরভাগ মানুষের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। নিরাপরাধ মানুষের ওপর এমন নৃশংস অন্যায় মেনে নেয়ার কারণে সৃষ্ট মানবীয় অপরাধবোধ ও সভ্যজগতের নিন্দা থেকেই কি নীরবতা থেকে জেগে উঠতে এত সময় লাগছে?

হাজারে একশ মানুষ হত্যা, লক্ষ লক্ষ বাড়ি পুড়িয়ে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়া এবং অগণিত হাজার হাজার মা-বোনকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয়েছে। প্রায় নব্বুই লাখ মানুষ দেশ ছাড়া হয়েছে, যারা এখন শরণার্থী শিবিরগুলোতে মানবেতর জীবনযাপন করছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনাহার এবং দুর্ভিক্ষে ইতোমধ্যে এক কোটি সতের লাখ মানুষ মৃত্যুর শিকার হয়েছে। পাকিস্তান নামের এক ভূখণ্ডে কেবলমাত্র গণতন্ত্র আদায়ের মত সাধারণ একটি বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষকে দিতে হয়েছে জীবনের বিনিময়ে এক ভয়ানক মূল্য। এটি নিছক আমাদের আঘাতপ্রাপ্ত জীবন কিংবা মর্যাদার প্রশ্ন নয়, এটি হল স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং ন্যায়বিচারের প্রশ্ন, যা বিচারাধীন রয়েছে। হাজারে দশজন যুবক কেবলমাত্র জনগণকে রক্ষার দায়েই নয়, বরং এসব নীতি ও মানবিক মূল্যবোধের উপলব্ধি থেকেই অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে।

দলের একজন সদস্য হিসেবে, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং ন্যায়বিচারের নীতির গর্বিত পৃষ্ঠপোষক হিসেবে, আমরা আপনাদেরকে এই আহ্বান জানাই,

(১) ইসলামাবাদের ফ্যাসিবাদী শাসকদের প্রতি শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সাধনের জন্য নিন্দাজ্ঞাপন করুন।

(২) বাংলাদেশের অবিসংবাদিত ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

(৩) বাংলাদেশ থেকে পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে অপসারণের দাবি জানান।

(৪) মাননীয় সরকারের কাছে পাকিস্তানে মানবিক সাহায্য ব্যতীত সকল প্রকার অর্থনৈতিক সাহায্য, যা বাংলাদেশে সামরিক নৃশংসতাকে উস্কে দিতে পারে, তা পাঠানো বন্ধ রাখার অনুরোধ জানান; এবং

(৫) মাননীয় সরকারের কাছে পৃথিবীর অষ্টম বৃহত্তম জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানে সম্মতি জানানোর অনুরোধ করুন।

­­­­­­­­­­­­­­­­­­­­গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এ্যাকশন কমিটির পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক প্রকাশিত। ১১, গোরিং স্ট্রিট, লন্ডন ই.সি., টেলিফোন২৮৩ ৫৫২৬ এবং ২৮৩ ৩৬২৩