You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.06.27 | দ্যা দাগেন্স নাইহেটার | স্টকহোম, ২৭ জুন ১৯৭১ | হিংসাত্মক তৎপরতা বন্ধ করতে হবে - সংগ্রামের নোটবুক

দ্যা দাগেন্স নাইহেটার | স্টকহোম, ২৭ জুন ১৯৭১ | হিংসাত্মক তৎপরতা বন্ধ করতে হবে

পূর্ববাংলাতে সন্ত্রাসের রাজত্ব হচ্ছে প্রায় চার মাস। পালিয়ে যাওয়া মানুষ এখনও ভারতে সীমান্ত জুড়ে অবস্থান করছে। পাকিস্তানি সামরিক একনায়কত্বের নিষ্ঠুরতার কোন সীমা নেই- খুব অল্প সংখ্যক নেতার বাঙ্গালী গ্রুপের সন্ত্রাসী হামলাকে আগ্রাসীরা নির্মূল করার চেষ্টা করছে। এছাড়াও সাধারণ মানুষ ‘চূড়ান্ত সমাধানের’ শিকারে পরিণত হয়, যা ক্ষমতার অজুহাতে পাকিস্তানি আর্মি প্রদর্শন করছে। তারা দশকের বেশি সময় ধরে ভুলভ্রান্তির মধ্য দিয়ে সরকার পরিচালনা করছে। পূর্ববঙ্গ ও ভারতের মধ্যকার সীমান্তে দৈনিক সংঘর্ষের ফাঁকে তারা এই মিথ্যা প্রচার করছে যে পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিকতার দিকে ফিরে’ আসছে। এর মাধ্যমে একনায়ক নেতৃত্ব তার নিজের জনগণের বিরুদ্ধে করা অপকর্ম ঢাকার চেষ্টা করছে।

এই যুদ্ধ যত দীর্ঘ হবে – এই নিপীড়ন এবং ধ্বংস চলতেই থাকবে। আমাদের নিন্দা ততই বাড়তে থাকবে। সরকার রক্তক্ষয় বন্ধ করার জন্য কোন একটি দৃঢ় প্রচেষ্টা নেয়নি। আমরা বাঙালি নারীর চোখে নির্যাতনের যে চিত্র দেখেছি তা আমাদের যুগের শাসনতন্ত্রের একটি বিরল চিত্র। বাইরে থেকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে চাপ দেবার ব্যার্থতা – নৈতিক, রাজনৈতিক এবং সব অর্থনৈতিক চাপ- শত্রুতার ঊর্ধ্বে ভবিষ্যতে পাকিস্তানি সামরিক একনায়কত্বকে বিশ্বের এই অংশে স্থায়ী রূপ দিতে পারে।

যাইহোক, ওয়াশিংটন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, যারা পাকিস্তানের বড় সাহায্যদাতাও বটে – তারা সম্প্রতি মানবিকভাবে বিবেচনায় আর নতুন করে কিছু মঞ্জুর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি সম্ভবত পাকিস্তানে সৃষ্টি হওয়া অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলার কারণে নেয়া হয়েছে – যেহেতু পাকিস্তানী একনায়ক সরকার পূর্ববাংলাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে- যে সামান্য বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ ছিল সেগুলি দিয়ে তারা আরও বেশি অস্ত্র কিনছে সহিংসতা আরও বাড়ানোর জন্য।

পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর আগ্রাসী নীতিমালার আওতায় এটি প্রথম আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ হবে। একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নেবার জন্য আরও কিছু পদক্ষেপ নেয়া হবে। পাকিস্তানের সামরিক একনায়করা ধ্বংসের মাঝে যেভাবে অবস্থান করছেন তাতে করে পাকিস্তানের অস্তিত্বের জন্য একক জরিপের ব্যাবস্থা করা হবে।