শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
গনপজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শাসন ব্যবস্থা ও তার পুনর্গঠনের একটি পুর্নাঙ্গ প্রতিবেদন |
বাংলাদেশ সরকার পরিকল্পনা সেল |
১৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের
পরিকল্পনা সেলের কার্যালয়
মেমো নং PC-143/(2)/71
তারিখ……/১৯৭১
মাননীয় প্রধান মন্ত্রী।
আমি প্রশাসনিক সিস্টেম এবং এর পুনর্গঠনের রিপোর্ট ০১১ পাঠাচ্ছি।প্রতিবেদনটি তিনটি অংশে নিয়ে তৈরী করা হয়েছে(এগুলোকে অধ্যায় হিসেবে সাজানো হয়েছে)ঃ (১) সিভিল সার্ভিসের সমস্যাঃ (২) বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সংঠন, তাদের সাংগঠনিক কাঠামো এবং কার্যাবলি (একটি ছক ও দেওয়া হল)ঃ (৩) জেলা প্রশাসন- বিচারিক, আইন এবং আদেশ, রাজস্ব এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অন্যান্য বিশেষজ্ঞ বিভাগ এবং (৪) স্থানীয় স্বায়ত্ত শাসিত সংস্থা।
প্রতিবেদনটি যথেষ্ট বিস্তৃত। এটা পুরো প্রশাসন নিয়ে তৈরি।
যে সমস্যা গুলোতে এখনি নজর দেওয়া ও পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন হবেঃ
(১) জন ব্যক্তিত্ব। তিনটি জেলা ভিত্তিক পরিষেবা আছেঃ
(ক) সর্ব-পাকিস্তানি (সাবেক) পরিষেবা যেমন সি.এস.পি. ও পি.এস.পি. (খ) নিরীক্ষা, হিসাব, কাস্টমস, আয়-কর, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, সামরিক হিসাব, রেলওয়ে হিসাব ইত্যাদির মত কেন্দ্রীয় (সাবেক) উচ্চ পরিষেবা। (গ) প্রাদেশিক পরিষেবা।
(২) মূলত পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে এই তিন ধরনের সিভিল সার্ভিসের কোন যৌক্তিকতা নেই। তাদেরকে একটি একক গ্রেডিং কাঠামোতে সমন্বিত করতে হবে। এটা করা হয়েছে। এর জন্য অধ্যাদেশ আকারে একটি আইন জারি করতে হবে।
(৩) দুইটি স্তরে সচিব আছেন- কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক। এরকম দুইটি সত্তার কোন যৌক্তিকতা নেই।শুধুমাত্র একজন সচিব থাকবেন আর সেটা হল বাংলাদেশ সরকারের সচিব। অধ্যায় ২ এ একটি বিস্তারিত গঠন দেওয়া আছে। এটা একটি অধ্যাদেশ নির্বাহী আদেশ দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে।
(৪) জেলা প্রশাসনকে অধ্যায় ৩ এ বর্ননা করা হয়েছে। এতে জেলা প্রশাসনের –আইন ও আদেশ, বিচারিক, রাজস্ব এবং উন্নয়ন সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। স্থানীয় স্বায়ত্ত শাসিত সংগঠন গুলোকে সংক্ষেপে বর্ননা করা হয়েছে।
<003.176.436> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
<003.176.437> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
<003.176.438> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
মাথাপিছু আয় মাত্র ৫৬ ডলার। এর শিল্পায়নের প্রাথমিক পর্যায় নগদ অর্থের পরিমাণ সীমিত এবং অর্থনৈতিক অবকাঠামো অপর্যাপ্ত। সর্বোপরি এখানে রয়েছে খাদ্যাভাব যা আরো ব্যাপক আকার ধারণ করেছে ১৯৭০ এর ঘূর্ণিঝড় এবং বর্তমান পশ্চিম পাকিস্তানি শোষক সেনাবাহিনী দ্বারা বাংলাদেশে সংঘটিত অসমান্তরাল নির্মম গনহত্যার জন্য।
৬৫,০০০ এরও বেশি গ্রাম রয়েছে এখানে, সত্যিকারের বাংলাদেশ খুঁজে পাওয়া যায় এসব গ্রামে। আমাদের জনগণ এক অকল্পনীয় দারিদ্র্যতার শিকার, যার কারণ প্রথমত সরকারের কৃষি ব্যবস্থার প্রতি অন্যায় রকমের অবহেলা এবং দ্বিতীয়ত পুঁজিবাদী অর্থনীতির করালগ্রাসে আটকে পড়া জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতা যা কিনা দেশের মাত্র ২২ টি পরিবারের হাতে কুক্ষিগত। পৃথিবীর উর্বরতম জমি আমাদের থাকা সত্তেও আমাদের জনগণ প্রচণ্ড দরিদ্র। কিন্তু বর্তমান মুক্তি সংগ্রাম যার মধ্যে রয়েছে একটি শক্তিশালী সমাজ বিপ্লব আমাদের জনগণকে সজাগ করেছে এক অভূতপূর্ব পর্যায়ে। জনগণ আজকাল অনেক সজাগ। তারা এখন আর শুধু সরকারী নীতির নিষ্ক্রিয় সদস্য নয় বরং তারাই মূল চালিকাশক্তি। এই মুহূর্তে সত্যিকারের উদ্বেগজনক প্রশ্ন ‘কারা গরীব?’ থেকে ঘুরে ‘কেন তারা গরীব?’ এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মৌলিক প্রশ্ন থেকে পালিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। দারিদ্র্যতার সমস্যাটা কোন শিল্প চরিত্র বা খামখেয়ালীপনার সমস্যা নয় বরঞ্চ এটি একটি আর্থিক, শৈল্পিক এবং সাংগঠনিক সমস্যা। এই ইস্যুটিকে মোকাবেলা করতে হবে প্রথমত এর উৎস থেকে এবং দ্বিতীয়ত এর বিস্তার হতে।
আগেই বলা হয়েছে যে গ্রামই হল গঠনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ভিত্তির মূল কেন্দ্রস্থল। তাই গণতান্ত্রিক উপায়ে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বিপ্লব অবশ্যই গ্রামে-গঞ্জে যেখানে শতকরা ৯৪.৮ ভাগেরও বেশি মানুষ বাস করে সেখান থেকে শুরু করতে হবে। সমাজ উন্নয়ন এবং জাতীয় সম্প্রসারণ প্রকল্প হল গ্রামীণ সমাজব্যবস্থায় সামাজিক এবং অর্থনৈতিক রুপান্তরের কার্যকর ব্যবস্থা। অতএব সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প হল আমাদের জাতীয় জীবনের মূল গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র যা আমাদের গ্রামীণ জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করে।
সমাজ উন্নয়ন প্রকল্পের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। প্রথমত, সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প এবং জাতীয় সম্প্রসারণ প্রকল্পের তীব্র প্রচেষ্টার লক্ষ্য হল সেসব স্থান যেখানে সরকারের উন্নয়ন সংস্থাগুলো একত্রে দলবদ্ধভাবে কাজ করে এবং যা আগে থেকেই পরিকল্পিত এবং সমন্বিত। এসব কর্মকাণ্ড সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প এবং জাতীয় সম্প্রসারণ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত এবং একে গ্রামীণ জনজীবনের উন্নয়নের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। দ্বিতীয়ত, কর্মসূচির উপাদানগুলো হল যেসকল গ্রামবাসী তাদের দারিদ্র্যতা নিয়ে অতি সচেতন তারা একত্রিত হবে সামাজিক পরিবর্তন আনার জন্য, অর্থাৎ নিজেদের জন্য একটি উন্নত জীবন গঠন এবং প্রকল্পের পরিকল্পনা ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন ও দায়িত্ব বৃদ্ধিতে তারা অংশগ্রহণ করবে নিজেদের উন্নয়নের জন্য। এই পরিকল্পনা তাদেরকে নতুন সুযোগ-সুবিধা দিবে এবং এই পরিকল্পনায় তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং বাস্তবায়নের পরিবর্তে তারা নিজেদেরকে প্রদান করবে একটি উন্নত জীবন এবং বৃদ্ধি করবে নিজেদের সুযোগ ও প্রভাব। আত্মনির্ভরতা এবং সহযোগিতা হল এই আন্দোলনের মূলনীতি। এর মূল উদ্দেশ্য হল নেতৃত্বের সুযোগ তৈরি করে দেয়া। সংক্ষেপে এটি হল সমাজ উন্নয়নের আন্দোলন, যা গ্রামীণ জনজীবনের সবকটি ভাগ কে একত্রিত করে। তৃতীয়ত, আন্দোলনটিকে সব গ্রামীণ সংগঠনগুলোর আওতায় আনতে হবে এবং সমন্বিত ও অন্যান্য পরিমণ্ডলে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এটি আমাদের জনগণের উদ্যোগ এবং উদ্ভাবনের সক্ষমতাকে উন্নত করবে। এ থেকে বলা যেতে পারে যে, সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প হল গণতান্ত্রিক উপায়ে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির একটি সাধারণ নমুনা।
সমাজ উন্নয়ন বলতে গ্রামীণ সমাজের আত্মনির্ভরতাকে বোঝায়। এর উদ্দেশ্য হল গ্রামীণ সামাজিক এবং অর্থনৈতিক জীবনধারা কে বদলানো। এই কর্মসূচিতে বিদ্যমান প্রাথমিক আদর্শটি হল ততক্ষণ পর্যন্ত সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয় যতক্ষণ না গ্রামীণ জনগণ বিশ্বাস করে উন্নয়ন প্রয়োজন এবং সক্রিয় ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে। মূল সমস্যাগুলো গ্রামীণ জনগণের নিজেদেরি সমাধান করতে হবে। সরকারী সংস্থাগুলো গ্রামীণ সংগঠনগুলোকে সাহায্য করবে তাদের সমস্যাগুলোকে শনাক্ত করে সমাধান করতে, প্রয়োজনে তাদের নতুন দক্ষতা অর্জন করতে, তাদের নিজস্ব দক্ষতাগুলোকে আরও বাড়িয়ে তুলতে, গ্রামে প্রয়োজনীয় উন্নত কারিগরি দক্ষতা প্রদান করতে এবং সরকারী কোষাগার থেকে প্রয়োজনীয় আর্থিক অনুদান নিয়ে গ্রামীণ স্বেচ্ছা সংস্থাগুলোকে সাহায্য এবং উন্নত করতে। নেতৃত্ব অবশ্যই সাধারণ জনগণ থেকে উঠে আসতে হবে। এ থেকে প্রকাশিত হই আন্দোলনের প্রকৃতি যেখানে জনগণই সব ক্ষমতার অধিকারী হবে এবং সরকারী সংস্থাগুলো তাদের অধীনে কাজ করবে।
সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রম তৈরি করা হয়েছে এই স্বেচ্ছা সংস্থাগুলোকে সাহায্য করার জন্য। এর মধ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে গ্রামীণ জীবনে যা নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর অধীনে বিন্যস্ত করা হয়েছে।
১। কৃষিকাজঃ
ক) পশুপালন
খ) সেচকাজ
গ) শোধন
ঘ) উন্নত বীজ
ঙ) সার
চ) অন্যান্য যোগান
২। স্বাস্থ্য এবং গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবাঃ
ক) চিকিৎসা সেবা
খ) চিকিৎসক
গ) বিশুদ্ধ খাবার পানি
ঘ) পরিচ্ছন্ন পরিবেশ
৩। শিক্ষাঃ
ক) বয়স্ক শিক্ষা
খ) সামাজিক শিক্ষা
৪। যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ
ক) রাস্তা
খ) সেতু এবং কালভার্ট
গ) গ্রামীণ শিল্পকলা, কারুশিল্প এবং শিল্প
ঘ) আবাসন
সম্পূর্ণ গ্রামাঞ্চলকে কিছু সারি বা দলে ভাগ করতে হবে, যার প্রতিটা হবে ১৫,০০০-২০,০০০ মানুষের। প্রতিটা দল তাদের নিজেদের দলপতি এবং কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচন করবে। তারা সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে। কর্মকর্তাগণ তাদের সহায়ক হিসেবে কাজ করবেন। যদি কোন সময় নির্বাচন করা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণের সমন্বয়ে বিশেষ কমিটি গঠন করা যেতে পারে। সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প হল এই ব্যপক পরিকল্পনার একটি অংশ।
মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী
বি.দ্রঃ আন্দোলন চলাকালীন সময়েও তোমাদের নোটে যে সংগঠনটি গঠিত হয়েছে তা চলতে থাকবে। রৌমারী রিপোর্টটি এখানে সংযুক্ত করা হল কার্যক্রম শুরু করার জন্য।
<003.176.439>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বাংলাদেশ সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল একটি সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি ধারা শুরু করতে, যার ভিত্তি হবে গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, যা সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনার মেলবন্ধনে অগ্রণী ভুমিকা রাখবে। এই পুরো পরিকল্পনাটি তিনটি অখন্ড ভাগে সংযুক্ত থাকবে। পর্যায় :(ক) যুদ্ধপরবর্তী তাৎক্ষণিক এবং স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা, যার কিছু উদাহরণ উপরোল্লিখিত। পর্যায় (খ): ৫ বছর মেয়াদী মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনা পর্যায় (গ) : ২০-২৫ উর্ধ দৃশ্যমান দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র এবং সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির মৌলিক আদর্শ সরকারি প্রশাসনের কাজ এবং চরিত্রকে ব্যাপক ও গভীরভাবে প্রভাবিত করে। প্রশাসকগণ তাদের দায়দায়িত্বের উর্ধ্বে থেকে কাজের পরিধি, ব্যাপকতা, ভিন্নতা ও জটিলতা নিরসনে। যার অর্থ হচ্ছে সরকার আরো নতুন ও জটিল সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করছে। সরকারের নতুন পরিকল্পনার / দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত ছিল, সতন্ত্র মুদ্রানীতি, বৃহৎ শিল্পায়ন কার্যক্রম, সাধারণ শিল্পকারখানা গুলো জাতীয়করণ এর মুল সমস্যাগুলো, ব্যাক্তি মালিকানা উৎপাদনের মুল চাবিকাঠি, অর্থনীতিতে প্রযুক্তিগত বিপ্লব, কৃষি উন্নয়নে গতি আনা যাতে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জিত হয়, কৃষক ও সমবায়ীদের আবাদি জমি পুনঃবন্টন করা যায় কিনা? বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খাদ্য/শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কার্যকর অবকাঠামো, বিদ্যুৎ উন্নয়ন, প্রাকৃতিক সম্পদ আরোহণ ও উন্নয়ন,বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা, সমাজে সর্বসাধারণের জন্য চাকুরী, ক্ষুধা নির্মূল, দারিদ্র্য উৎপাটন, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, শিক্ষা সম্প্রসারণ, শিল্পে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সমাজে সকলের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা, পানির সম্পদের সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন, যোগাযোগব্যবস্থা, মূলধন বিনিয়োগে নিয়ন্ত্রন আনা, বাণিজ্যের অনুকুল ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা, গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে বৈদেশিক বানিজ্যের মাধ্যমে আমদানি – রপ্তানি করা, পরিকল্পিত আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে শহর ও দেশজুড়ে দারিদ্র্যসীমার নীচে অবস্থানরতদের বসবাসের মান উন্নয়ন করা, জনসংখ্যাবৃদ্ধি রোধ ও জন্মনিয়ন্ত্রণ, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন বিশেষায়িত সংস্থা গুলোর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা। জাতীয় ভাবে দারিদ্র্যতার সীমারেখা নির্ণয় করা, যাতে কেউ এই সীমারেখার নীচে না থাকে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সম্পদের উৎস নিরূপণ এবং বহুবিধ প্রকল্পে বিনিয়োগ, সামগ্রিকভাবে মানুষের গড় আয় / মাথা পিছু আয় বাড়াতে হবে, সর্বোপরি সামগ্রিকভাবে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে উন্নয়নই এর মুল উদ্দেশ্য। আমাদের বুঝতে এবং উপলব্ধি করতে হবে প্রযুক্তি / বিজ্ঞান কি, এবং জাতি গঠনে এর কি ভূমিকা, যার উপরে আমাদের সমগ্র ভবিষ্যত নির্ভর করছে। বিজ্ঞানীদের ভূমিকা, তাদের উদ্ভাবন এবং কার্যকারিতা অভাবনীয় ভাবে অগ্রসর হয়েছে। এখন প্রয়োজন জনগণের সাথে সর্বাত্মক ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ রক্ষা করা। সরকারের সাফল্য ও ব্যার্থতার দায়দায়িত্ব অনেকাংশে নির্ভর করছে এই প্রশাসকগণের উপর, এই অগ্রযাত্রা দরকার উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন, সৎ, দক্ষ ও উদ্যমী প্রশাসক, যারা বিশাল দায়িত্বেকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সামনে এগিয়ে নিবে। অবশ্যই একটা কার্যকর প্রশাসক পূর্ণগঠন মন্ত্রণালয়, সংশ্লিষ্ট বিভাগ, পরিচালকমন্ডলী, এবং অধীনস্থ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়েই গঠিত হবে।সমগ্র প্রাদেশিক প্রশাসনিক কার্যক্রম নির্মূল করে নতুন প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। জেলা শহর পল্লী অঞ্চল, গ্রাম ও পৌরসভার সকল প্রশাসকদের পুনঃবিন্যাস ও পুনঃগঠন করতে হবে। সমস্ত স্বায়ত্তশাসিত আধা-স্বায়ত্তশাসিত যাদের বিভিন্ন দায়দায়িত্ব বন্টন করা হয়েছে, তাদের অত্যন্ত সতর্কতার সাথে প্রতিষ্ঠানের পরিচর্চা ও পর্যবেক্ষণ এর মাধ্যমে নতুন প্রাণের সঞ্চালন করতে হবে।
<003.176.440>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
প্রশাসন বিভাগ ও এর কর্তাব্যক্তিদের সমস্যা হবে উপরোক্ত অনেক সমস্যার সমাধানের উপায় খুঁজে বের করা। এখন প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশে কোন ধারার প্রশাসনিক ব্যাবস্থার প্রচলন করা হবে। এবং এই প্রশাসনের মুল কার্যক্রম কি হবে। আওয়ামীলীগ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় / গণতান্ত্রিক প্রশাসন কি? নিয়মাবলী কি কি, যার মাধ্যমে আমরা নির্ধারণ করতে পারি একটি প্রশাসন বা সরকার গণতান্ত্রিক নাকি অগণতান্ত্রিক! আমরা অবশ্যই চাই পদ্ধতিগুলো খুঁজতে যার মাধ্যামে প্রশাসনকে গণতান্ত্রিক ভাবে সচল / তৈরি রাখা যায়। প্রফেসর জনাব সি. এইচ. হাইমেন ৪ টি ধারনা দিয়ে ব্যাপারটি আলোচনা করছিলেন। প্রথমত : এটা সবার বিশ্বাস বা ধারণা যে, আমলাতন্ত্রকে যাচাই করা হয় এটা কিভাবে তার শক্তি / ক্ষমতাকে ব্যাবহার করে তার উপর তাঁর আকৃতি বা ব্যায়ের উপর নয়। ২য়ত : যারা সরকারি ক্ষমতার চর্চা করে তাদের উচিত একটা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ক্ষমতার চর্চা করা যেটা সমগ্র জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। ৩য়ত :.
৪র্থত : আমরা খুব কমই নির্বাচিত কর্মকর্তা, মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদদের উপর নির্ভর করতে পারি যে, তারা নিয়ন্ত্রণ ও দিকনির্দেশনার কাজ সঠিকভাবে পালন করবে, পঞ্চমত: গণতান্ত্রিক বিবেচনায় প্রশাসন অবশ্যই উন্মুক্ত হবে এই বিবেচনায় যে, জনগণের সাথে বিস্তৃতভাবে যোগাযোগ করা যায়। এটা অবশ্যই শাসক কিংবা শাসকশ্রেণীর স্বার্থে পরিচালিত হবে না। এটা অবশ্যই সমাজের সর্বত্র হতে বৈষম্যবিহীন ভাবে সবাইকে নিয়োজিত করবে।এটা অবশ্যই সমাজের অবহেলিত অংশকেও বিবেচনায় আনবে। ষষ্ঠত: monsien pujet সঠিকভাবেই চিহ্নিত করেছেন যে, প্রশাসন শুধুমাত্র দাপ্তরিক স্তর বা বিচারিক ক্ষমতার দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হবে না, জনগণের অভিব্যক্তি এবং জনগণের স্বাধীনতার উপরেও নির্ভর করে।জনগণ এবং তাদের প্রতিনিধিকে অবশ্যই মুক্ত বা স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে। সপ্তমত : প্রশাসনিক ক্ষমতাকে অবশ্যই নমনীয় এবং অপ্রধান হতে হব্র। রাজনৈতিক ক্ষমতার অধীনে প্রশাসনিক ক্ষমতা স্বাধীনভাবে চলতে পারে না। অন্যদিকে বেসামরিক কর্মচারীদের সম্পূর্ণভাবে অধীনস্থ করা যাবে না এবং প্রশাসনকে অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোর ছত্রছায়া থেকে মুক্ত থাকতে হবে, ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর চাকুরীর একচেটিয়া দলীয়করণ করা উচিত না অথবা দায়িত্ববান বেসামরিক নাগরিকের উপর অযথা শক্তি প্রদর্শন বা চাপ প্রয়োগ করা উচিত না।প্রশাসনের চলমান নীতি অবশ্যই বজায় রাখা উচিত। মন্ত্রীবর্গ পদাধিকার বলেই বেসামরিক কর্মচারীদের উপর কর্তৃত্ব প্রয়োগ করতে পারবেন, তবে এটা অনুমোদন করে না, কোন বেসামরিক কর্মচারীদের উপর সরাসরি রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রোয়োগ। ৮ম : প্রফেসার Aron মনে করেন গণতন্ত্রের প্রধান অনুমাপক হচ্ছে প্রশাসনকে বিকেন্দ্রীকরণ করা, প্রশাসনকে সার্বজনীনে রূপান্তর করা যা মানুষের বা জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে, কর্মচারীদের সাথে কর্মকর্তাদের ঔদ্ধত্য বা অহংকার পরিহার এবং জনগণের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টিই হচ্ছে প্রশাসনে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার বহিঃপ্রকাশ। এগুলো হচ্ছে সেই সমস্ত গুণাবলীর উপস্থিতি যা, “আমার” এবং “তাদের” মাঝে সেতুবন্ধন হিসাবে কাজ করে, আবার মাঝে মাঝে শোষক এবং শোষিত মাঝে বৈরিতা সৃষ্টি করে। শাষক ও শোষিতের মাঝে এমন সম্পর্কের উপস্থিতি ভাল প্রশাসন এবং কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য যা প্রফেসর Robson সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন।
<003.176.441>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
প্রশাসনকে গণতান্ত্রিক রাখার সবচেয়ে কার্যকরি পদ্ধতিগুলোর একটি হলো আমলাতন্ত্রের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ। এটি মন্ত্রীপরিষদ ও পার্লামেন্ট এই দুটি পর্যায়ে প্রয়োগ করা যেতে পারে, । অধ্যাপক রবসনের সঠিক পর্যবেক্ষণ, “কোন সংসদীয় ব্যবস্থায় এটি কোনোমতেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘটে না। এটির জন্য প্রয়োজন শক্তিশালি একটি রাজনৈতিক সরকার যারা পর্যায়ক্রমে নির্ভর করে সংবিধানের ওপর, দলীয় পদ্ধতির ওপর, সংসদ ও নির্বাহীর সম্পর্কের ওপর এবং মন্ত্রীগণ ও সরকারী কর্মচারিদের সম্পর্কের ওপর।” আমাদের রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক নেতাদের এটি খুব গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত। ব্রিটেনে অধ্যাপক রবসন তুলে ধরেছেন যে, কার্যকরি রাজনৈতিক সংস্কার, নাগরিক সেবা সংস্কারকে ত্বরানিত্ব করে, যাতে একটি সংশোধিত হাউজ অব কমন্স ও এর সমর্থিত সরকার সিভিল সার্ভিস থেকে তুলনামুলক শক্ত অবস্থানে থাকে। এই উপমহাদেশে, প্রথম একটি অত্যন্ত শক্তিশালী ও দক্ষ আমলাতন্ত্র চালু করা হয়েছিল এবং সেটা গণতন্ত্রের রাজনৈতিক সংস্কার প্রবর্তনের অনেক আগেই। বিশ্ব বিখ্যাত আই.সি.এস-এর সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে ছিল এই দেশের প্রকৃত শাসক ছিলেন। আই.সি.এস. বস্তুত একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা ছিল। ১৯২১ সাল থেকে প্রাদেশিক পর্যায়ে কিছু সংশোধনী আনা হয়েছিল এবং ১৯৩৫ সালের আইন দ্বারা আরও বিস্তৃত করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৪৭ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত সরকারি চাকুরিজিবিরা মন্ত্রীদের অধীনস্ত ছিলেন না।
সাবেক পাকিস্তান রাষ্ট্রে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তানী শাসক দল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবজ্ঞাভরে ঘৃণা করত। রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ও মন্ত্রীদের মাধ্যমে সরকারি কর্মচারিদের নির্দেশনার সারমর্ম নিহিত আছে এর মাঝে যে মন্ত্রীরা নিজেরাই সংসদের কাছে দায়বদ্ধ। সাবেক পাকিস্তানে গণতন্ত্রের শেকড় ছড়াতে দেওয়া হয়নি। ১৯৪৭ সালের আগের যেমন ছিল, আমলাতন্ত্র, ততটাই স্বাধীন থেকে গেছে, বিশেষ করে ওপরের স্তরে। সাবেক পাকিস্তানে গণতন্ত্রের মৃত্যুর জন্য দায়ী কারন গুলোর একটি হলো আমলাতান্ত্রিক স্বাধীনতা। আশা করা যায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক নোতারা, রাজনীতিবিদরা ও সংসদ সদস্যরা এটি কখনো্ই ভুলবে না। একটি অবাধ্য ও অনিয়ন্ত্রিত আমলাতন্ত্র গণতন্ত্রের জন্য সত্যিকারের হুমকি।
অধ্যাপক রবসনের একটি উজ্জ্বল পর্যবেক্ষণ এখানে উল্লেখ করা যায়, “মন্ত্রীপরিষদ সরকার পদ্ধতিতে সংসদীয় সমিকরণের প্রধান উপাদান তিনটি: মন্ত্রীগণ, সংসদ সদস্য ও সরকারি চাকুরিজীবিরা। প্রতিনিধিত্বমূলক বা আমলাতান্ত্রিক, প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো তারাই গঠন করে; এবং তারা প্রত্যেকে পরস্পরের জন্য অপহিরহার্য। তারা একই অভিযানের সঙ্গী-‘মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করার অন্তহীন অভিযান।” অভিযানের সবাই যতক্ষণ না এই অংশীদারিত্বের শর্তগুলো উপলব্ধি করছে এবং গ্রহণ করছে, এটি হয়ত সফল হবে না। সংসদে মন্ত্রী সদস্য ও সরকারি চাকুরিজিবীদের বুঝতে হবে যে এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
মন্ত্রী ও সরকারি চাকুরেদের সম্পর্ক কোনো মতেই হ্রাস করা যাবে না। এটি যে কোনো আইনের ক্ষেত্রে সাংঘর্ষিক। রবসন লিখেছেন, “তাত্ত্বিক ভাবে বললে, মন্ত্রীরা নীতি নির্ধারণ করেন এবং সরকারি চাকুরেরা সেসব বাস্তবায়ন করেন। সাংবিধানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এসব পুরোপুরি সত্য; কিন্তু বাস্তবতা হলো এটি একটি প্রথাগত অর্ধ-সত্য।” কারণগুলো বের করা খুব কঠিন কিছু নয়। মন্ত্রীদের কারও সাহায্য ছাড়া নীতিমালা বাস্তবায়নের সময়, অথবা জ্ঞান, কখনও কখনও দক্ষতা খুব কমই থাকে। পরামর্শ ও দক্ষতার জন্য মৌলিক তথ্য ও পরিসংখ্যান, যার ওপর ভিত্তি করে নীতিমালা গঠন করা হবে সে সম্পর্কে জানতে, তাদের অবশ্যই উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ওপর নির্ভর করতে হবে। প্রাসঙ্গিক সব তথ্য ও যে তথ্যাবলির ভিত্তিতে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে, সেসব একত্র করা, তুলনামূলক বিচার, সংগ্রহ করা, বিশ্লেষণ ও সমন্বয়ের দায়িত্ব কর্মকর্তাদের। তাদের অবশ্যই এটা সৎভাবে ও কোনো সঙ্কোচ ছাড়া করতে হবে।
<003.176.442>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বিকল্প আরও নীতিমালা বাছাই করতে হবে এবং তাদের সক্ষমতা ও দুর্বলতা পরীক্ষা করে সৎভাবে ও নির্ভয়ে মন্ত্রীদের কাছে তুলে ধরতে হবে। প্রস্তাবগুলোতে শাসক দলের দর্শন ও কর্মসূচির প্রতিফলন ঘটবে, অথবা অন্তত সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে, সেটা নিশ্চিত করতে আমলারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন, এই প্রত্যাশার অধিকার মন্ত্রীদের আছে।
নীতিমালার কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একজন মন্ত্রীর অবশ্যই তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত, যদিও সেটা করার আইনী বা সাংবিধানিক কোনো বাধ্যবাধকতা তার নেই। এর জোড়াল একটি কারণ হলো, যদি গুরুতর কোনো ভুল সে করে বসে, সেক্ষেত্রে তার বিভাগ যেমন, তেমনি তার নিজেরও সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। লর্ড ব্রিজেস যেটিকে বলেছেন বিভাগীয় দর্শন, নিজের দিক থেকে সেটি তুলে ধরার অধিকার সরকারি কর্মচারির আছে। এটা অবশ্যই তার দায়িত্ব, নীতিমালার বৃহৎ ইস্যুগুলোর বিভাগীয় অভিজ্ঞতার সারাংশ তার মন্ত্রীকে জানানো যেটির সিদ্ধান্ত তার অবশ্যই নিতে হবে এবং এভাবেই বাস্তবিক দর্শনের স্রোতে তার মন্ত্রীরূপী প্রভুত্বের এগিয়ে দেওয়া ভাবনা ভাসিয়ে দেওয়া হোক। আমলাদের শুধুমাত্র পরামর্শ দেওয়া, সতর্ক করা, উৎসাহ দেওয়া ও ব্যখ্যা করার অধিকার আছে, তার বেশি কিছু নয়। একজন আমলা যদি বুঝতে পারেন তার মন্ত্রীর প্রস্তাব ভুলধারণাপ্রসূত; তখন তার দায়িত্ব হলো সেটি ধরিয়ে দেওয়া ও ব্যখ্যা করা। যদি তাকে বলা হয় তাহলে সে, সরকারের দৃষ্টিকোণ থেকে বিকল্প কার্যপ্রণালি গুলোর তুলনামুলক সুবিধা-অসুবিধাগুলো সম্পর্কে তার মতামত ব্যাখ্যা করতে পারে। তবে সে অবশ্যই তার ব্যক্তিগত ধারণা বা রাজনৈতিক পক্ষপাত দিয়ে নীতিমালাকে দমন বা বিকৃত করবে না কিংবা প্রশাসনিকভাবে কার্যকর সাধ্য কার্যপ্রণালিকে কলঙ্কিত করবে না, যদিও শেষ পর্যায়ে সে মনে করতে এটা অপ্রীতিকর। নীতিমালার ব্যপারে মন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পর আমলাদের দায়িত্ব এটাকে নিজের ভেবে সততার সঙ্গে বাস্তবায়ন করা ও ফলপ্রসূ করা।
একজন আমলার অসহযোগী, অগঠনমূলক ও নেতিবাচক হওয়ার অধিকার নেই। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর ওপর প্রভাব ফেলে এমন কোনো ধরণের রাজনৈতিক সংযোগ বা দলীয় চাপের প্রতি তিনি উদাসীন থাকবেন না। কর্মকর্তা হিসেবে তার এসব অন্য কাউকে জানানো ঠিক হবে না, তবে তা সত্বেও তিনি সেগুলোর অস্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকবেন এবং সেগুলোকে তার কাজের মধ্যে যথেষ্ট গুরুত্ব দেবেন। সরকারি কর্মচারীরা অধিকাংশ সময় তাদের রাজনৈতিক প্রধানদের নির্দেশনা ও আয়ত্তের বাইরেই কাজ করবেন; এজন্য গুরুত্বপূণ হলো, তারা যেন দৈনন্দিন প্রশাসনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মন্ত্রীর মানসিকতা অথবা নিদেনপক্ষে তার নীতির প্রতিফলন ঘটায়।
বিভাগীয় প্রশাসনে যদি সঠিকভাবে মন্ত্রীর মানসিকতার প্রতিফলন ঘটাতে হয়, তাহলে সকল পর্যায়ের আমলাদের মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তার দৃষ্টিভঙ্গী জানতে হবে। সরকারের পরিবর্তন হলে বা মন্ত্রীর বদল হলে এটা বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ন। সমবেত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রীর কথা ও ব্যক্তিগত যোগাযোগের অন্যান্য পদ্ধতি বিশাল সুফল বয়ে আনতে পারে, যা তাদের পেছনে ব্যয় করা সময় ও ঝামেলার প্রতিদান দেবে। মন্ত্রী ও তার কর্মকর্তাদের পারস্পরিক বোঝাপড়া, শ্রদ্ধাবোধ ও আত্মবিশ্বাস অভিজ্ঞতার শক্ত ভিত্তির ওপর নির্ভর করে হতে হবে: এটা নিশ্চিত করতে সময় ব্যয় হওয়া মানে ভালো কাজে সময় ব্যয় করা।
একটি অটুট নিয়ম আছে, যেখানে সংসদ সদস্যকে বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয় এবং তার অজ্ঞাতে ও বিনাঅনমুতি তার কর্মকর্তাদের কাছে সরাসরি যাওয়া যায় না। সংসদ সদস্য ও আমলাদের মধ্যে খুব ঘনিষ্ট সম্পর্কের বিপজ্জনক দিকগুলোও বিবেচনা করতে হবে। একজন বা একদল সংসদ সদস্যের রাজনৈতিক প্রভাবে কোনো সরকারি কর্মকর্তার বদলি হতে পারে।
<003.176.443>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
তার মনে হতে পারে যে তার নিজের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আইনসভার সদস্যদের উপর যাদের পক্ষে বা বিপক্ষে তিনি কিছুটা হলেও অবস্থান নিয়েছেন। কোন নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত বা নীতির ক্ষেত্রে আইনানুগ সহায়তার দ্বারা তার দপ্তরে মন্ত্রীত্বের কর্তৃত্ব ক্ষুন্ন হতে পারে। সর্বোপরি, সংসদে মন্ত্রীদের মর্যাদা ক্ষুন্ন হতে পারে যদি এমপিরা যা চায় তা তারা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গিয়ে পেয়ে যায়। আশা করা যায় যে এই ব্যাপারে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক নেতা এবং আইনসভার সদস্যরা শুধু যে যথেষ্ট মনোযোগ দেবেন তা নয় বরং এটাকে পুরোদমে চর্চা করবেন। যদি আইনসভার সদস্যদের একগুঁয়েমি, শত্রুতা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতা মন্ত্রীদের অবস্থান দূর্বল করে ফেলে, যেমনটা ফ্রান্সে হয়েছিল তবে তা আমলাদের অবস্থানকে দৃঢ় করবে।
যদি কখনও কোন সরকারী কর্মকর্তা আইনসভায় উল্লেখিত হয় যা কদাচিৎ হয়। সে যাই কিছু করুক তা মন্ত্রীর কর্মকান্ড হবে এবং মন্ত্রীর দায়িত্ব হচ্ছে তার চাকুরেকে রক্ষা করা, লর্ড অ্যাটলির দৃষ্টিতে- সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিতে হবে। প্রকাশ্যে কখনই একজন সরকারী কর্মকতা নিজের পক্ষ হয়ে কিছু বলতে পারবে না। এটা মন্ত্রীর উপরে ছেড়ে দিতে হবে। হাউজ অফ কমন্সে ক্রিটিহেল ডন কেইস নিয়ে বিতর্কে জনাব মরিসন (পরবর্তীতে লর্ড) তার দৃষ্টিভঙ্গি এই বলে প্রকাশ করেন যে, মন্ত্রীকে প্রকাশ্যে সব সময় তার কর্মকর্তাদের পক্ষ নেওয়ার প্রয়োজন নেই, এবং তিনি উল্লেখ করেন যে, এইরকমের একবার তিনি একজন মন্ত্রী হিসিবে তার নির্দেশাবলী মেনে চলায় ব্যর্থত হওয়ায় নিজের দফতরের একজনকে সংসদেই প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন।। যাই হোক, সাধারণত মন্ত্রী তার কর্মকতাদের সমস্ত কর্মকান্ডের দায় দায়িত্ব নেন, যদি তিনি সেটার অনুমোদন নাও দিয়ে থাকেন তবুও তিনি এসবের দায় দায়িত্ব গ্রহণ করেন। স্বরাষ্ট্রসচিব হিসেবে স্যার ডেভিড ম্যাক্সওয়েল (পরবর্তীতে কিলমুউইরেরলর্ড ) জনাব মরিসনের দৃষ্টিভঙ্গিকে জোড়াল ভাবে সমর্থন দিয়ে জানান যে, একজন মন্ত্রীর তার বিশ্বাস অনুযায়ী কোনটা ভুল বা তার কর্মকর্তাদের সুস্পষ্ট ত্রুটির জন্য তাদের পক্ষাবলম্বনে বাধ্যবাধকতা নেই। তিনি জানেন না এমন কিছু এবং তিনি যেসবের অনুমোদন দেননি সেইসব কর্মকান্ডে তার অনুমোদন দেওয়ার প্রয়োজন নেই; কিন্তু তা সত্ত্বেও সাংবিধানিকভাবে কিছু একটা ভুল হয়েছে যার জন্য তাকে দায়ী থাকতে হবে এবং সংসদে এর জবাবদিহি করতে হবে। মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব হচ্ছে সংসদীয় সরকারের অপরিহার্য মৌলিক নীতি। মন্ত্রী হচ্ছেন সংসদ ও তার দফতরের মধ্যকার যোগসূত্র। তিনি তার দফতরের সকল কর্মকান্ডের জন্য সংসদের কাছে দায়ী। যদি সংসদ কারো পদত্যাগ চায় তবে নিশ্চিতভাবেই তা হবে সেই মন্ত্রী।
রাজনীতি ও প্রশাসনের মধ্যকার সম্পর্ককে কয়েক পাতার মধ্যে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা সম্ভব না। এছাড়া আইনসভাও সরকারি কর্মকর্তাদের উপর যথেষ্ট প্রভাব প্রয়োগে করে থাকে। আইনসভা যেসব কৌশলের মাধ্যমে তাদের নিয়ন্ত্রণের চর্চা করে থাকেঃ বাজেটের উপর প্রশ্ন, সংকল্প, আলোচনা এবং অন্যান্য বিষয়াদি, স্থতিগতকরণের গতিবিধি, পরিষদসমূহ, বিশেষ করে সরকারী হিসাব পরিষদ। লর্ড অ্যাটলির মতে, “হাউজ অফ কমন্সে প্রশ্নোত্তর পর্বের সময়টা হচ্ছে সত্যিকার গণতন্ত্রের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ”। তিনি আরও পর্যবেক্ষণ করেন যে, “হাউজ অব কমন্সে প্রকাশ্যে মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা এবং আরও অনেক কৌশলী জিজ্ঞাসার ফল হচ্ছে সম্পূর্ণ আমলাতন্ত্রকে নখদর্পণে রাখা”। এছাড়াও অন্যান্য আরো অনেক রকমের নিয়ন্ত্রণ আছে, যেমন বিচার বিভাগ এবং প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল দ্বারা নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক নিয়ন্ত্রণ, প্রশাসনের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ এবং অন্যান্য আরো অনেক উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করা।
II
প্রশাসনিক কর্মচারীদের পুনর্গঠন
আমরা কর্মীদের উপর দারুণ জোর দিয়ে থাকি, এর কারণ হচ্ছে সর্বসাধারণ কর্মীবৃন্দ হচ্ছেন প্রশাসনের মধ্যে সার্বভৌম উপাদান। প্রথমত ইচ্ছা, সক্রিয়তা এবং বুদ্ধি এবং তারপরেই হচ্ছে সংগঠন। বাংলাদেশ সরকার যে সমস্যার মুখোমুখি হবে তা হচ্ছে অত্যন্ত উপযুক্ত, সক্ষম, সৎ, সক্রিয় অনুগত আমলা তৈরী করা যারা পূর্বদৃষ্টান্তহীন ব্যাপক জটিল সমস্যা যা অচিরেই আসবে তার মুখোমুখি হওয়ার উপযুক্তত।
<003.176.444>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
এই সমস্যা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের স্বল্পতার কারণে সংগঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের মাধ্যমে পশ্চিম পাকিস্থানীদের দ্বারা বাংলাদেশকে শোষন করা সহজতর হয়েছে। প্রশাসনের উচ্চতর পর্যায়ে বাংলাদেশ প্রায়শই অনুপস্থাপিত ছিল। এই নীতি প্রশাসনিকভাবে বাংলাদেশের উপর পাকিস্থানী শাসক চক্রকে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সমর্থ করেছিল। নিম্নলিখিত পরিসংখ্যানগুলো প্রশাসনিক আধিপত্যের প্রকৃতি ও বিস্তার প্রকাশ করেঃ
কেন্দ্রীয় প্রশাসনের (১৯৬৮-১৯৬৯) উচ্চতর পর্যায়ে
বাঙ্গালীদের অবস্থান (শতকরা হিসাবে):
পদমর্যাদা | বাংলাদেশ (পি.সি.) | পশ্চিম পাকিস্তান (পি.সি.) |
১ | ২ | ৩ |
সচিব | ১৪ | ৮৬ |
যুগ্ন সচিব | ৬ | ৯৪ |
সহ-সচিব | ১৮ | ৮২ |
অন্যান্য কর্মকর্তা | ২০ | ৮০ |
এছাড়াও পরিকল্পনা কমিশনের সহ-সভাপতি, কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রী, অর্থ সচিব, সম্পদ বন্টন দফতরের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিসমূহ বরাবরই পশ্চিম পাকিস্থানেরর হতো। পররাষ্ট্র কর্মস্থানে বাঙ্গালীদের সংখ্যা ছিল শতকরায় ১৫ জন। ৬০ জন পররাষ্ট্রা মিশন প্রধানের মধ্যে শুধুমাত্র ৯ জন বাংলাদেশ থেকে ছিলেন।
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের এই স্বল্পতা পূরণের উপায় ও হেতু বাংলাদেশ সরকারকে উদ্ভাবন করতে হবে।
তিনটি প্রধান সেবার ধরণ
ব্রিটিশ শাসনামল হতে বর্তমানে পরিষেবার তিনটি প্রধান ধরণ বিদ্যমান- (১) সর্ব-পাকিস্থান, (২) কেন্দ্রীয় এবং (৩) প্রাদেশিক পরিষেবা। পাকিস্থানে সর্ব-পাকিস্থানী পরিষেবা পুরাতন আই.সি.এস. ও ভারতীয় পুলিশ পরিষেবার উত্তরসূরি। এদেরকে কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ করা হতো। সি.এস.পি. সদস্যরা কেন্দ্রে, প্রদেশে, সচিবালয়ে, বিভাগে এবং জেলাতে ও সার্বজনীন পৌরসভাসহ বেসামরিক প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুতওপূর্ণ পদ অধিকার করতো। এছাড়াও সি.এস.পি. এর বিচার বিভাগীয় শাখা আছে এবং এই পরিষেবার শতকরা হিসাবে কিছু সংখ্যক সদস্যদের বিচারব্যবস্থার উচ্চতর পদে নিযুক্ত করা হয়। এটাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ যার মাধ্যমেই কেন্দ্রীয় সরকার প্রদেশে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পারতো। সি.এস.পি. ক্যাডারদের কেন্দ্রীয়ভূক্ত করা হয়েছিল এবং পি.এস.পি.কে প্রাদেশিকরণ করা হয়েছিল। কেন্দ্রের অন্যান্য উচ্চতর পরিষেবার সদস্যরা যেমন নিরীক্ষা ও হিসাবরক্ষণ, কাস্টমস, আয়কর, রেলওয়ে হিসাব, সামরিক হিসাব ইত্যাদি আলাদা আলাদা ভাবে কেন্দ্রের অধীনে কাজ করতো। পাকিস্থানের সাবেক কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কিছু কারিগরী পরিষেবা ছিল এবং এতে অন্তর্ভূক্ত আছেঃ কেন্দ্রীয় প্রকৌশলী পরিষেবা, তার প্রকৌশল পরিষেবা, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা, রেলপথ প্রকৌশলী পরিষেবা, ভূতাত্ত্বিক পরিষেবা বিভাগ, প্রত্নতাত্ত্বিক পরিষেবা ইত্যাদি।
কেন্দ্র এবং প্রদেশ উভয় ক্ষেত্রেই বেসামরিক পরিষেবা চার শ্রেনীতে বিন্যস্তঃ শ্রেণী ১ (যা সাবেক সর্ব-পাকিস্থানী পরিষেবাকে অন্তর্ভুক্ত করে), শ্রেণী ২, শ্রেণী ৩ এবং শ্রেণী ৪, এই ধরণের শ্রেনীবিভাগ বেতন কাঠামো উপর ভিত্তি করে করা হচ্ছে।
<003.176.445>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বাইরে কিংবা সদর দফতর যাই হোক না কেন সরকারের ব্যবস্থাপনাগত ও প্রশাসনিক পর্যায়ের কাজ তাদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হতো যারা ১ম শ্রেনীতে আছে, এই শ্রেনীতে আমরা দেখতে পাই যেঃ
(ক) সর্ব-পাকিস্থানী (প্রাক্তন) পরিষেবা ( সি.এস.পি. এবং পি.এস.পি.) মূলত প্রদেশ এবং কেন্দ্রের (প্রাক্তন) প্রশাসনিক কাজে, বাইরে এবং সচিবালয়ের নিযুক্ত ছিল;
(খ)কেন্দ্রীয় অ-কারিগরি পরিষেবা, ১ম শ্রেণী, কেন্দ্রের প্রশাসনের অ-কারিগরি ক্ষেত্রে যেমন নিরীক্ষা ও হিসাব, আয়কর, ডাক ও তার এবং রেলপথ বিভাগের তদারকিকে বোঝানো হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের সদস্যদের কেন্দ্রীয় সচিবালয়েও মোতায়েন করা হতো।
(গ)কেন্দ্রীয় কারিগরি পরিষেবা, ১ম শ্রেণী (প্রাক্তন) পরিষেবা যার প্রায় একই রকমের পরিষেবা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা, ভূতাত্ত্বিক পরিষেবা বিভাগ, প্রত্নতাত্ত্বিক পরিষেবা ইত্যাদির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। অল্প কিছু ক্ষেত্রে এইসবের সদস্যরা সচিব পদমর্যাদায় অভিষিক্ত হয়।
প্রাদেশিক পর্যায়েও কারিগরি ও অ-কারিগরি উভয় পরিষেবাই রয়েছে। এইসব বিভাগ প্রাদেশিক সরকার দ্বারা সুচারুভাবেই পরিচালিত হয়। মাঝে মাঝে এইসব পরিষেবার লোকদের কেন্দ্রে কাজ করতে নিয়ে যাওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পর্যায়ের এই পরিষেবাসমূহ উপর্যুপরি তাদের কে করতে বলা কাজের ধরণের ভিত্তিতে বিভক্ত। এগুলি হচ্ছেঃ ((ক) সর্বসাধারণের; (খ) কার্যকরী পরিষেবা; (গ) বিশেষজ্ঞ। সর্বসাধারণের পরিষেবা সি.এস.পি. এবং প্রাদেশিক বেসামরিক পরিষেবার ১ম শ্রেণীর সদস্যদের এবং আরো কিছু অন্তর্ভুক্ত করে। কার্যকরী পরিষেবা হচ্ছে হিসাব নিরীক্ষক, আয়কর, কাস্টমস্ এবং অন্যান্য। বিশেষজ্ঞদের পরিষেবা বৈজ্ঞানিক, প্রকৌশলী, ডাক্তার এবং অন্যান্য বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি পরিষেবায় গঠিত।
ধারণা করা হয় বৃটেন ও ফ্রান্সের মতো বাংলাদেশ এককেন্দ্রীক হবে। ভৌগলিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, সংস্কৃতিগতভাবে এবং ভাষাগতভাবে বাংলাদেশ ৫৫১২৬ বর্গমাইলের সমজাতিক সত্ত্বা। সেখানে বিভাগীয়, জেলাভিত্তিক, উপবিভাগীয়, থানা এবং ইউনিয়ন কাউন্সিল পর্যায়ে অসংখ্য প্রশাসনিক দল থাকবে। জেলা প্রশাসন নতুন করে বিবেচনা করা হবে যা পৃথকভাবে আলোচনা করা হল।
সরকারের গঠন হবে সংসদীয় যেখানে কার্যনির্বাহীরা আইনসভার নিকট দায়বদ্ধ থাকবে। আওয়ামী লীগ এতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বর্তমানে পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে জেলাভিত্তিক তিন ধরণের পরিষেবা ধরে রাখার কোন দরকার ও যৌক্তিকতা নেই। বিদ্যমান পরিষেবার জটিল গঠনকে বর্তমানে এককেন্দ্রীক সরকারের একক পদ্ধতি অনেক সহজ করতে পারে। জেলাভিত্তিক তিনটি পরিষেবার ধরণের পরিবর্তে সেখানে অ-কারিগরি পরিষেবা থাকবে, শুধু মাত্র এক ধরণের পরিষেবা থাকবে যার নাম হতে পারে বাংলাদেশ প্রশাসনিক পরিষেবা। কারিগরি দিক থেকে সেখানে শুধুমাত্র এক ধরনের পরিষেবার থাকবে যা বাংলাদেশ বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি পরিষেবা হিসেবে পরিচিত হবে।
<003.176.446>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
III
৩ প্রধান সমস্যা:
জেলা পর্যায়ের তিনটি পরিষেবা কে একটিতে রূপান্তর
সরকারি ব্যবস্থার মৌলিক ধরন যার অধীনে পরিষেবার এই তিনটি বিভাগ অস্তিত্ব রক্ষা এবং পরিচালিত হয়ে থাকে, স্বাধীনতার পরবর্তী দিন হতেই একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন এর মধ্যে দিয়ে যাবে। পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিলোপ হবে এবং অত:পর সরকার এবং প্রশাসনের সাবেক ব্যবস্থাও অদৃশ্য হয়ে যাবে। পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক শাসকদের কবল থেকে বাংলাদেশ নিজেকে মুক্ত করতে প্রবৃত্ত হয়েছে একটি ভয়ানক সংগ্রামের মাধ্যে দিয়ে এবং একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রেপরিণত হয়েছে । উপরে যেমন বলা আছে, বাংলাদেশ একটি একক ভৌগলিক সত্তা।এটি ভৌগলিকভাবে আবদ্ধ, সাংস্কৃতিকভাবে স্বজাত্য, এবং ভাষাগত ভাবে অনুরূপ। ধারণা করা হয় এটা একটি সমতাবিধায়ক রাষ্ট্র হবে যাতে ঐক্যমত ভিত্তিক সরকার ব্যবস্থা থাকবে। মূলত এমন একটি পরিবর্তিত অবস্থায় দেখা যায় সেখানে এই তিনটি পৃথক শ্রেণীর পরিষেবার কোন প্রয়োজন অথবা কোন যৌক্তিকতা নেই । সর্ব-পাকিস্তান সার্ভিস, যেমন, সি. এস. পি. এবং পি. এস. পি.,এর কোন প্রয়োজন নেই, শুধুমাত্র এ কারণেই যে অতীতের মতই দুটি ভাগে বিভক্ত কোন পাকিস্তান আর থাকছে না। মেয়াদী ব্যবস্থা- প্রদেশব্যাপী কেন্দ্র হতে কর্মকর্তা ধার করা অথবা তদ্বিপরিত ব্যবস্থা যা দ্বারা গুরুত্বপূর্ণ পদে সচিবালয় এবং বিভাগ ও জেলায় পরিপূরণ করা হয়েছিল, সেগুলোর আর কোনরূপ বৈধতা থাকছে না। জেলার জন্য দুইটি সর্ব-পাকিস্তান পরিষেবা হতে সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিস নামে একটি আলাদা বিভাগের প্রয়োজনীয়তাও নেই । একইভাবে জেলার জন্যে প্রভিন্সিয়াল সার্ভিস সি.এস.পি. ও অন্যান্য সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিস থাকার কোন প্রয়োজন ও যৌক্তিকতা থাকছে না, যেহেতু প্রদেশ আর থাকছে না। মূল সমস্যা হচ্ছে: এই তিনটি জেলা অনুযায়ী পরিষেবা কে একটি একক পরিষেবায় রূপান্তরিত করে তাদের ভিন্ন শর্তাধীন বেতন, সম্ভাবনা এবং অন্যান্য ঘটনা ঐক্যসাধন করা যায়, যা অপ্রযুক্তিগত দিক থেকে বাংলাদেশ এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস হিসেবে পরিচিত হবে, এবং প্রযুক্তিগত পরিষেবার দিক থেকে বাংলাদেশের বৈজ্ঞানিক এবং প্রযুক্তিগত পরিষেবক হিসেবে পরিচিত হবে।
IV
বিদ্যমান কাঠামোর অপূর্ণতা
সিভিল সার্ভিসের বিদ্যমান কাঠামো ব্রিটিশ ভারত থেকে উত্তরাধিকার হিসেবে আমাদের কাছে এসেছে। মূলত উনিশ শতকের রাজনৈতিক ও সামরিক উন্নয়ন দ্বারা সিভিল সার্ভিসের কাঠামো অনেকাংশেই নির্ধারিত হয়। এটা ম্যাকলে কমিটির ১৮৫৪ সালের রিপোর্ট দিয়ে শুরু হয় এবং সর্বোচ্চ সীমায় পৌছায় ১৯১২-১৫ এর ইসলিংটন কমিশন এবং ১৯২৪ এর লী কমিশনে। মন্টেগু-চেমসফোর্ড ১৯১৮ সালের রিপোর্ট এবং সাইমন কমিশন রিপোর্ট, ১৯৩০ আরো চরম একটি ভূমিকা নিয়েছে সিভিল সার্ভিসের কাঠামো নির্ধারণে। পাকিস্তানের সাবেক ব্যবস্থায় বেশ কিছু কমিশন ও কমিটি সমস্যাগুলো নিয়ে পরীক্ষা চালায়, কিন্তু মৌলিক কিছুরই বাস্তবে আত্মপ্রকাশ হয়নি। মৌলিক কাঠামো অতীতে যেমন ছিলো তেমনই রয়ে গেছে। এটা সাধারণভাবে স্বীকৃত হয় যে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া কাঠামো পর্যাপ্ত কিংবা যথোপযুক্ত নয় একটি সরকারের চাহিদা মেটানোর জন্যে যা আগের প্রশাসন থেকে মৌলিকভাবে ভিন্ন চরিত্রের এবং মতাদর্শের। উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া কাঠামো সংক্রান্ত ত্রুটিগুলির একটি কঠোর পরীক্ষার প্রয়োজন। বিদ্যমান কাঠামো প্রতিটি পদের দাবী পূরণ এর জন্য-পুংক্ষানুপুংক্ষ ভাবে পরীক্ষা করে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিকে নির্বাচন করা যা কিনা একমাত্র কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে বিবেচনা করা হয় তার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বিদ্যমান কাঠামো নিম্নলিখিত ত্রুটিবহুল বলে মনে করা হয়:
<003.176.447>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(1) এটি শ্রেষ্ঠ কর্মসংস্থানের এবং স্বতন্ত্র প্রতিভা ব্যবহার করতে বাধা দেয়। এক সেবা থেকে অন্য সেবায় গতিশীলতা প্রায় অসম্ভব। আবার, এক ক্লাস থেকে অন্য বিচলন খুব বেশি হয়। ক্লাস থেকে অন্য ক্লাসে বিচলনের আনুষ্ঠানিক ও অপেক্ষাকৃত অনমনীয় প্রক্রিয়া একক ব্যক্তির বিচলনের পথে অপ্রয়োজনীয় বাধা সৃষ্টি করে, ঊর্ধ্বে উচ্চতর দায়িত্ব পদে এবং নিম্ন শ্রেণীর দায়িত্ব পদে পার্শ্বাভিমুখ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজ উভয় ক্ষেত্রে। এটা অসামান্য সম্ভাবনাময়ী দ্রুত উন্নয়ন এবং অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের জন্য প্রচারকে বাধাগ্রস্থ করে।
(2) এটা নতুন কাজে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার সামর্থ্যের একটি প্রধান অন্তরায়। প্রতিটি সেবা এবং প্রতিটি শ্রেনী বিবেচনায় যেকোনো পদ সাধারণত তার সদস্যরা নিজের মতো করে সংরক্ষণ করেন, বিভিন্ন স্তরে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যার পদ দিয়ে পেশা গঠনের নিশ্চয়তা থাকে। পুরুষদের এবং মহিলাদের তাদের যৌবনে এই শেনীতে প্রবেশ করে এবং তাদের সম্ভাবনা সম্পর্কে প্রত্যাশা তৈরী করে, যা তারা দশ শহরে বছর কেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি করতে থাকে। সি এস পি সদস্যরা সমগ্র প্রশাসনের একটি বিশেষ কমান্ডিং অবস্থান দখল করে আছে। তারা সাধারণত যে কোন ধরণের কাজের জন্য যোগ্য হিসাবে বিবেচিত হয়। অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ তাদের জন্য সংরক্ষিত। তারা এক ধরনের পেশা থেকে আরেক ধরনের পেশায় যেতে পারে এবং এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে তাদের সম্মিলিত অভিজ্ঞতা প্রদান ছাড়াই অসাধারণ সুবিধাসহ স্থানান্তর হতে পারে। এই পদ্ধতি এই কার্যকারিতাকে বহুলাংশে প্রতিরোধ করে। এটা তাদের বিভাগের বিষয়বস্তু একটি গভীর জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম করে না। এটা আবশ্যিক ভাবেই অন্যান্য সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিস সদস্যদের প্রচারমূলক সম্ভাবনাকে সীমিত করে। অডিট ও হিসাব, কাস্টমস, আয়কর, ইত্যাদি একটি স্বাধীন সত্ত্বা, সিএসপি জন্য অনেক বেশী পদ সংরক্ষণ করা ছাড়াও নিজেদের কর্মী, বিষয়াবলির সীমাবদ্ধতা নিয়ে কাজ করছে।একটি কষ্টদায়ক শ্রেনী চেতনা ছাড়াও এটা কর্মীদের সর্বোচ্চ উন্নয়নকে ব্যহত করে, কারন একবার নিরীক্ষা, হিসাব, আয়কর বা কাস্টমসের সদস্য হলে তিনি সারা জীবন তা-ই থেকে যান। এমনকি যখন এই বিভাগের সদস্যরা অসামান্য কৃতিত্ব দেখায় এবং নেতৃত্বের অন্যান্য আচরন প্রকাশ করে ও বিশেষ কাজের বিচক্ষনতা দেখায়, তখন প্রশাসনের সর্বোচ্চ সুবিধার জন্য সব সময় এ ধরনের প্রতিভাকে কাজে লাগানো সম্ভব হয় না কারন কার্য কাঠামোর অনমনীয়তা তাদের অন্য ক্ষেত্রে, যেখানে তারা আরো ভাল করতে পারতেন সেখানে নিয়োগে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
(3) কর্ম সুযোগ যেগুলো বিভিন্ন সেবা এবং সেবা শ্রেনীর জন্য সংজ্ঞায়িত, সেগুলো তাদের আকর্ষনীয়তা ও পরিধির ক্ষেত্রে ব্যপক ভাবে পরিবর্তিত হয়, এমনকি একই শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রেও।সাবেক সর্ব পাকিস্তানের দুই পরিষেবা সি.এস.পি. ও পি.এস.পি এর সদস্য এবং প্রাদেশিক ১ম শ্রেনী সেবার সদস্যদের সমুহের বেতন, পদন্নতি, মর্যাদা ও সেবার অন্যান্য শর্তাবলীর মধ্যেও অনেক পার্থক্য রয়েছে।সি.এস.পি এর সাথে অন্য কেন্দীয় উচ্চতর সেবার ক্ষেত্রেও এটা একই ভাবে সত্য।বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, ডাক্তার এবং অন্যান্য উচ্চতর কারিগরি ব্যক্তি ও জেনেরালিস্টদের মধ্যেও একই বৈষম্য বিদ্যমান যেমনটা সি.এস.পি ও অন্যান্য অকারিগরি উচ্চতর সেবার মধ্যে আছে।এই পৃথক শ্রেনী বিন্যাস এই ধারনাকে উৎসাহিত করে যে,সুযোগ সবার জন্য সমান নয়। এটা ভিন্ন ও আলাদা বিভাগ ও শ্রেনী সেবার প্রতিভার সর্বোত্তম ব্যবহারকে সীমাবদ্ধ করে।
(৪) ‘শ্রেনী’ শব্দটি এবং এটা যে গঠন নির্দেশ করে তা শ্রেষ্ঠত্বের পাশাপাশি সীমিত সুযোগের অনুভুতি জাগায়।শ্রেনী, শ্রেনী-সচেতনতা, মর্যাদা, অবস্থান এবং পদ এবং গ্যাজেটেড ও নন গ্যাজেটেড সরকারী চাকুরীজীবিদের মধ্যে দুশ্চিন্তা, দুর্ব্যবহার এবং ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করে।
<003.176.448>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
এই সব কিছুই কারিগরি ও বিশেষায়িত উভয় ক্ষেত্রেই সরকারি কাজের দ্রুত ও সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হওয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
(৫) প্রতিষ্ঠানের কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানের কাজের দক্ষতা বাড়ায়। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই আর্থিক ও নীতিগত কাজ গুলো সাধারনত সি.এস.পি এর জন্য তাদের নিচের অন্যান্য সকল শ্রেনীর সহযোগীতা সহ সংরক্ষিত থাকে, যেখানে কারিগরি ও বৈজ্ঞানিক কাজ গুলো বিশেষায়িত শ্রেনীতে পরে। যেখানে প্রশাসন ও বিশেষজ্ঞগণ একই কাজে নিযুক্ত থাকেন সেখানে সমান্তরাল বা যৌথ শ্রেনী বিন্যাস তাদেরকে একসাথে কাজ করানোর সাধারন হাতিয়ার। কিন্তু এই শ্রেনী বিন্যাসে একজন প্রশাসন কর্মকর্তা সাধারনত অন্য একজন উর্ধ্বতন প্রশাসন কর্মকর্তার কাছে দায়বদ্ধ থাকেন এবং একই ভাবে একজন বিশেষজ্ঞ অন্য একজন বিশেষজ্ঞের কাছে, এভাবেই দায়িত্বের নির্ধারিত বিভাজন বজায় রাখা হয়। এই বিভাজন দায়িত্ব ও কর্তৃত্বের অনুশাসনের অস্পষ্টতায় ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। অনেক যৌথ কাজ আছে, বিশেষ করে উচ্চ কারিগরি বিষয় সংবলিত প্রজেক্ট ও প্রোগ্রাম গুলো , যেখানে ভাল ব্যবস্থাপনা নির্ভর করে একজন একক ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেওয়া এবং তাকেই ফলাফলের জন্য দায়ী ভাবার ওপর, বাকি পুরো দল তার কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। যাই হক, কখনো কখনো কাজের প্রস্তুতির জন্য দুই জনকে একসাথে দায়িত্বে থাকতে হয়, একজন বিশেষজ্ঞ এবং একজন প্রশাসন কর্মকর্তা। একজন ব্যক্তির কর্মজীবন প্রাথমিকভাবে তার শ্রেনী বা পেশার মধ্যেই ভাবা হয়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে যতগুলো সম্ভব গ্রেড ব্যবহার করে এর প্রতিটি কার্যক্ষেত্রে শ্রেনী সুযোগ বৃদ্ধির চাপ রয়েছে। এভাবে পুর্বানুমান বৃদ্ধি পায় যে, যেকোন কাজের ক্ষেত্রে কোন সংগঠনের শ্রেনী সংশ্লিষ্ট পুর্ণ গ্রেডিং কাঠামোর প্রতিফলন ঘটানো উচিত। এটা বিশেষায়িত শ্রেনীর জন্য ও প্রযোজ্য।
এই সকল সমালোচনার অন্তর্নিহিত মূল বিষয় হল, শ্রেনী ও পরিষেবা পৃথকীকরন পদ্ধতি কর্মীদের উপযুক্ত কাজে নিয়োগ দেওয়ার সবচেয়ে কার্যকর উপায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কারন শ্রেনী গুলো একাজের জন্য খুবই অনুপযুক্ত একটা অস্ত্র। এক্ষেত্রে দুইটি অনুমান অন্তর্ভুক্তঃ (১) যেকোন কাজ একজন বা শ্রেনীর অন্য কাওকে দ্বারা উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে; এবং (২) এরপর এটা সবচেয়ে উপযুক্তভাবে ওই শ্রেনীর সদস্যদের দ্বারা পূরন করা হবে, যাদের সবাই নীতিগত ভাবে অন্য শ্রেনীর যেকোন সদস্য থেকে ভাল প্রার্থী। এই ধারনা গুলো এখন আর যুক্তিসংগত এবং বৈধ বিবেচিত হয় না, বিশেষ করে সরকারি কর্মচারীদের বর্তমান পরিবর্তিত কাজের প্রেক্ষিতে।
আমাদের ব্যবস্থায় সময় এবং স্থান কোন কাঠামোগত বিস্তারিত পরীক্ষার সুযোগ দেয় না।
সম্পুর্ন নতুন ও ভিত্তিগত পরিস্থিতি পরিষেবার ব্যাপক ও বৃহত্তর পুনঃপ্রতিষ্ঠা দাবি করে। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া পরিষেবা কাঠামো বাস্তবতার সাথে অসামঞ্জস্যপুর্ণ হয়ে যাবে। বাংলাদেশের নতুন সরকার মৌলিক ভাবেই চারত্রিক ও আদর্শিক দিক দিয়ে পুর্বের সরকার থেকে আলাদা হবে। বাংলাদেশ সরকার গনতান্ত্রিক নীতি ও মুল্যবোধের ভিত্তিতে একটি সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা বিস্তৃত গণতন্ত্র, সমমাত্রিক গণতন্ত্র, গণনিয়ন্ত্রন অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিকল্লপনা এবং সামনের জটিল সমস্যা মোকাবেলায় সক্ষম একটি শক্তিশালী সরকার গঠনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এটা প্রশাসনকে একটি নতুন উদ্দেশ্য ও ভুমিকা দেবে। সরকারের বিভিন্ন অংশের পুনর্গঠন ও সমন্ব্য় এবং সকল অফিসাররা সমান ভাবে দেশের প্রশাসনের জন্য দায়ী এই বোধকে বৃদ্ধি করার জন্য উচ্চতর পরিষেবা গুলোর পুনর্গঠন ছাড়া রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যের নিশ্চিত বাস্তবায়ন সম্ভব না।
<003.176.449>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
আবার , কোনো সরকার পদ্ধতি, প্রশাসনিক ধরণ অপরিবর্তনীয়/ অপরিবর্তনক্ষম হতে পারে না। একটি নবীন জাতির পরিবর্তিত চাহিদা এবং প্রয়োজন পর্যাপ্তভাবে পরিপূরণের নিমিত্তে একে অবশ্যই বিবর্তনশীল এবং স্ব-সমন্বয় সাধনে সক্ষম হতে হবে। যে চাহিদা এবং প্রয়োজনের কথা উল্লেখিত হয়েছে, তা হবে গুরুভার এবং কঠিনসাধ্য। ট্রেভেল্যান-নর্থকোট-এর রিপোর্ট এর উপরে ভিত্তি করে ১৮৮৪ সালে ব্রিটেনে নিয়োগ, পদোন্নতি এবং অন্যান্য বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন-সমন্বিত করে একটি ‘সংগঠিত জন-প্রশাসন ব্যবস্থা’র চালু হয়- সেই ব্যবস্থা গত এক শতাব্দীতে পর্যায়ক্রমিক নিরীক্ষণ এবং সমন্বয়সাধনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। ফলস্বরূপ, ব্রিটিশ জন-প্রশাসন নিজেকে একটি অভিযোজন-সক্ষম সংগঠন হিসেবে স্ব-চিত্রিত করেছে, যা যে কোন কোনো গুরুতর ধকল সহ্য করতে এবং বিস্তৃত প্রকারের কর্মভার এবং পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সক্ষম। সহজে পরিবর্তন-যোগ্য একটি সংস্থা নির্মাণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সরকারি ব্যবস্থার সংস্কার আশু প্রয়োজন- যেই সংস্থা স্বচ্ছন্দ এবং দক্ষতার সাথে শিল্প এবং সামাজিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে , এবং সংকটময় ও দুর্দশাগ্রস্থ জাতীয় জরুরি পরিস্থিতিতে কার্যক্রম পরিচালনাতে সক্ষম হবে।
কৃষি, শিল্প, ও সামাজিক ক্ষেত্রে সর্বোতমুখী উন্নয়ন ও প্রগতির দূরপ্রসারিত এবং স্পষ্ট প্রয়োজনীয়তার দিকে এই গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে অবশ্যই মনোযোগ নিবদ্ধ করতে হবে। সরকারের সামগ্রিক লক্ষ্য একটি ব্যাপক পুনঃ-বিন্যাসের মধ্যে দিয়ে যাবে: যা ধারাবাহিক পঞ্চ-বার্ষিকী পরিকল্পনাগুলির মধ্যে দিয়ে উত্তর উত্তর প্রতিফলিত হবে। উন্নয়ন কার্যক্রমের সম্পাদন একটি প্রধান সমস্যা হিসাবে উত্থিত হবে। যোগ্য কারিগরি ও প্রশাসনিক জনবল নিয়োগ-পূর্বক প্রণোদনা যোগান ছাড়া, শুধু সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরী এবং অর্থ-সম্পদের যোগান দিলেই তা ইস্পিত লক্ষ্য অর্জন নিশ্চিত করবে না। ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে পর্যবেক্ষণ করলে, সরকারি কর্মসেবায় এক মৌলিক পুনঃ-সংগঠন প্রক্রিয়ার প্রয়োজন। নিন্মোক্ত মানদণ্ডের ভিত্তিতে সরকারি কর্মসেবার গঠন নির্ধারণ হওয়া উচিত :
জনপ্রশাসনের নতুন কাঠামো
বাংলাদেশে কোন মানদণ্ডের ভিত্তিতে এই নতুন প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলার প্রস্তাবনা করা হবে? আমাদের দৃষ্টিতে নতুন প্রশাসনের জন্য নতুন কাঠামো হবে নিন্মোক্ত নীতিমালার উপরে ভিত্তি করে:
(১) চাকুরীর বিষয়ে অবশ্যই একটি অনুসন্ধানমূলক বিশ্লেষণ এবং মূল্যায়ন থাকবে, যার উপরে ভিত্তি করে পদটির শ্রেণীমান এবং নিয়োগ-প্রাপ্তকে বাছাই করা হবে।
(২) প্রতিটি পদে নিয়োগ হতে হবে সেই ব্যক্তি দ্বারা- যার যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা সেই পদের সাথে সর্বতোভাবে সামাঞ্জস্যপূর্ণ। অন্য কোনো বিবেচনা এই নির্ধারণীতে কোনো প্রকারের ভূমিকা রাখতে পারবে না।
(2) প্রতিটি পোস্টের সেরা তার যোগ্যতা ও দ্বারা লাগানো ব্যক্তি দ্বারা পূরণ করা উচিত।
অভিজ্ঞতা তা পূরণ করতে. অন্য কোনো বিবেচনায় তা নির্ধারণ করার অনুমতি দেওয়া হবে।
(৩) বর্তমান সি.এস.পি-তে কোনো গোষ্ঠীর জন্য যেই প্রকারের পদ-সংরক্ষণের ব্যবস্থাতে বলবৎ আছে, তা থাকতে পারবে না। এই ব্যবস্থা রহিত করতে হবে, যদি না সেই পদের জন্য কোনো ব্যাক্তিবশেষ বা গোষ্ঠী একমাত্র যোগ্য হয়- যেমন স্বাস্থসেবা সংক্রান্ত পদগুলিতে, যথা চিকিৎসকবৃন্দ।
(৪) যেহেতু সময়ের সাথে সাথে কোনো নির্দিষ্ট পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিবেচ্য যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার মাপকাঠি পরিবর্তিত হবে, সেহেতু পরিচালনা পর্ষদের উপর ন্যায়সঙ্গত একটি যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতার মাপকাঠি নির্ধারনের দায়িত্ব অর্পিত হবে।
(৫) যে কোনো পদে পদোন্নতি নির্ধারিত হতে হবে ওই পদে উন্নীত ব্যক্তির মেধা এবং দক্ষতা দ্বারা। সঠিক পদে সঠিক ব্যক্তি অধিষ্ঠিত হবেন, এমনকি উক্ত ব্যক্তি যদিও জ্যেষ্ঠতার ক্রমে সর্ব নিকটবর্তী নাও হন, অথবা অন্য কাউকে না পাওয়া গেলে ওই ব্যক্তিকে প্রশাসনের বাইরে থেকেও আনায়ন করা যেতে পারে, এবং কখনও কখনও বাইরে থেকে এইধরণের নিয়োগ নৈপুণ্য এবং অভিজ্ঞতার মূল্যবান বর্ধন ঘটাবে।
<003.176.450>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(৬) পে-স্কেল বিষয়ে উপর্যুক্ত সংস্কার-সাপেক্ষে ইজলিংটন কমিশন দ্বারা নির্ধারিত শর্তাবলী গ্রহন করা যেতে পারে। এই কমিশনের ধারা নির্ধারিত শর্তাবলী হলো ”সরকার তাহার কর্মচারীদিগকে ঠিক সেই পরিমান বেতন প্রদান করিবে, যাহা ওই পদে নিয়োগ প্রদানের জন্য আবশ্যক, এবং ওই পদে নিয়োগকৃতের যথাযথ স্বাচ্ছন্দ ও সম্মান অক্ষুন্নপূর্বক তাহাকে লোভ হইতে রক্ষা করিবে, এবং ওই পদের মেয়াদকালের জন্য দক্ষ রাখিবে”। এই ব্যবস্থার একটা পরিবর্তন সাধন করা যেতে পারে- সরকারি কর্মচারীদের বেতনের হার এবং প্রশাসনের বাইরের সমমানের দায়িত্ব ও ক্ষমতা সম্পন্ন চাকুরীর বেতনের হারের মধ্যে একটি আপেক্ষিকতা বজায় রাখার মধ্যে দিয়ে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে, অভ্যন্তরীণ আপেক্ষিকতা বজায় রাখার প্রয়োজন হতে পারে।
(৭) এই পরিকাঠামো কার্যক্রম কে এমনভাবে সংগঠিত করে দিবে যাতে করে ‘চেইন-অফ-কমান্ড’ বা ‘আদেশের পালাক্রমে’ উক্ত কার্যক্রমের চাহিদা প্রতিফলিত হয়, এবং যেখানে প্রয়োজন, যে কোনো ধরণের দলাদলিকে শৃঙ্খলা এবং দক্ষতার দ্বারা পরিহার করবে
এই নীতিমালার প্রয়োগে দুটি মৌলিক এবং পরিপূরক পরিবর্তন প্রয়োজন। এর মাধ্যমে একটি একক ও সমন্বিত গ্রেডিং পদ্ধতি প্রশাসনের সকল ক্ষেত্রে চালু হবে, যেখানে যোগ্যতা ও দায়িত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যথাযথ সংখ্যক বেতন-স্তর থাকবে, প্রতিটি পদের জন্য সঠিক গ্রেডিং নির্ধারিত হবে সংশ্লিষ্ট কর্মের পর্যালোচনা সাপেক্ষে।
প্রথমত সর্ব-পাকিস্তান এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় উচ্চতর প্রশাসন, প্রাদেশিক জন প্রশাসনের মধ্যেকার বিবারজমান বিভেদ বিলোপ করা উচিত। উচ্চ এবং নিন্ম-শ্রেণীর মধ্যেকার বিভেদ ও বিলোপ করতে হবে, এবং প্রতিটি পেশা-গোষ্ঠীর অবিচ্ছিন্ন গ্রেডিং বা ক্রমভুক্তি ব্যবস্থা প্রতিস্থাপিত করতে হবে। সেই জন্য, উদাহরণ স্বরূপ, আমরা সকল অ-কারিগরি কেন্দ্রীয় উচ্চতর প্রশাসন, সি।এস।পি সহ , দ্বিতীয় শ্রেণী, সকল অ-কারিগরি প্রাদেশিক প্রশাসন এবং করণিক শ্রেণীর একীভূতকরণ প্রস্তাব করছি।
এই সকল পরিষেবা একীভূত, সুশৃঙ্খল, ঐক্যবদ্ধ করে একটি একক গ্রেডিং কাঠামোতে নিয়ে আসা হবে। আমরা আরও প্রস্তাব করছি যে- বৈজ্ঞানিক জন-প্রশাসন, প্রকৌশলী এবং সন্বন্ধীয় গোত্র, ভূতত্ত্ব বিভাগ, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, স্বাস্থ্য সেবা, স্থাপত্য এবং প্রকৌশল নকশা বিভাগ, এবং অন্যান্য কারিগরী সেবাকে একীভূত করা হবে।
বর্তমান পরিকাঠামো কে পরিবর্তিত করে চাকুরীর নিন্ম থেকে উচ্চতর শ্রেণীর সকলকে সমন্বিত গ্রেডিং কাঠামোর মধ্যে অধিভুক্ত করণে একটি ব্যাপক পেশাভিত্তিক বিশ্লেষণ এবং মূল্যায়ন কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে: যাতে প্রতিটি পদের প্রয়োজনীয়তা এবং পদটির জন্য প্রযোজ্য যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতার বিষয়ে একটি নব নিরীক্ষণের দরকার হবে।
কোনো পদ বিশেষ কোনো শ্রেণী বা গোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত রাখা যাবে না, যদি না ওই পদগুলির জন্য একটি গোষ্ঠীর ব্যক্তিবর্গের যোগ্যতা অনন্য বলে গণ্য হয়। এই পদক্ষেপ আরেকটি ব্যাপক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে। অর্থাৎ, বর্তমানে যে ভাবে একজন ব্যক্তি তার চাকুরীর শ্রেণীর পরিবর্তনের কারণে সচরাচর বিভিন্ন পদের মধ্যে গমনাগমন করতে পারেন, সেই ব্যবস্থার অবসান হবে।
<003.176.451>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
উপরিউক্ত প্রস্তাবনার পূর্ণাঙ্গ প্রভাব প্রতিফলনের নিমিত্তে বর্তমান ব্যবস্থায় বহু-শ্রেণী এবং বিবিধ বিভাগে বিভক্ত প্রশাসন এবং তাদের আলাদা আলাদা পেশা প্রকাঠামো কে একটি সমন্বিত এবং শ্রেনীবিহীন গ্রেড-কাঠামোর দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা প্রয়োজন। এই ব্যবস্থার ভিত্তি হবে প্রশাসনের সকল পদসমূহকে কয়েকটি অনুক্রমিক গ্রেড-স্তরের মধ্যে অন্তর্ভুক্তকরণ। প্রতিটি গ্রেড একটি বেতনসীমা কে নির্দেশ করবে। মোট গ্রেডের সংখ্যা কেবলমাত্র তখনই নির্ধারণ করা যাবে- যখন বর্তমান পরিকাঠামোর একটি একটি পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষণ-বিশ্লেষণ সমাধা করা যাবে, বর্তমান পরিস্থিতে যে সেটা সম্ভব নয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সকল কাজ এখন বিভিন্ন সেবা এবং পরিষেবার শ্রেণীর দ্বারা সঞ্চালিত হয়- যা উপযুক্ত গ্রেড-ভুক্ত হওয়া উচিত। এজন্য কর্মবিশ্লেষণ এবং মূল্যায়নের বিষয়ে যত্নবান হতে হবে। এর ভিত্তি হতে হবে কয়েকটি উপাদান এর উপরে নির্ভরশীল যেমন- অভিষ্ঠ ‘প্রান্তিক ফলাফল’, চাকুরীজীবির দায়িত্বের ধরণ, কাজের গুরুত্ব, এবং উক্ত ফলাফল অর্জনে পদধারীর কি ধরণের যোগ্যতা এবং আবশ্যিক অভিজ্ঞতা । একই সাথে, উক্ত কর্মবিশ্লেষণ পদ্ধতি প্ৰশাসনের বাইরে অনুরূপ দায়িত্বসম্পন্ন পদের বাজারদরকেও ধর্তব্যের মধ্যে নিবে।
উর্ধ্বতন পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনা পরিষদ:
এই সামগ্রিক কাঠামোর মধ্যে অবশ্যই একটি বহু ধরণের কর্মকর্তা বৃন্দের সমাবেশ ঘটবে। প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে, ব্যবস্থাপনা-সংশ্লিষ্ট পদগুলির, যেমন সকল গ্রেডের সচিব এবং উপসচিববৃন্দ, মধ্যে স্বাতন্ত্র বজায় রাখা ভাল। একে উর্ধ্বতন পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনা পরিষদ বলে নামকরণ করা যেতে পারে। অন্য ভাষায়, বাংলাদেশ প্রশাসনিক পরিষেবার প্রথম শ্রেণীর (সি.এস.পি- কেন্দ্রীয় উচ্চতর প্রশাসন, প্রাদেশিক প্রশাসনের সদস্যবৃন্দ, প্রথম শ্রেণী কে একটি একককে গ্রেডিং কাঠামোতে একীভূত করার পরে) সকল পদকে তিনটি গোষ্ঠী অথবা শ্রেণীতে বিভক্ত করা যেতে পারে, যথা- উচ্চ, মধ্যম এবং নিম্ন শ্রেণী। এই তিনটি শ্রেণী অথবা গোষ্ঠী কে আবার তিনটি করে গ্রেডে, সর্বমোট, নয়টি গ্রেডে বিন্যস্ত করা যেতে পারে। প্রতিটি শ্রেণী এবং তৎসংশ্লিষ্ট গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তার সংবৃদ্ধি তার প্রমাণিত কার্যসম্পাদন এবং যোগ্যতার উপরে ভিত্তে করে হওয়া উচিত, প্রদর্শিত কর্মদক্ষতা, যোগ্যতা, এবং সততার উপর ভিত্তি করে নিম্ন স্তর থেকে মধ্যম স্তরে এবং মধ্যম স্তর থেকে উচ্চ স্তরে পদোন্নতি হবে। অন্যান্য বিষয়াবলীর সাথে সততার ব্যাপারে যথাযথ গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। নিম্ন স্তরে সরাসরি নিয়োগ হবে । সমন্বিত জন প্রশাসন কে নিন্মোক্ত পেশাজীবী বিভাগ /শ্রেণীতে বিভক্ত করা যেতে পারে: অর্থনৈতিক , কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন, সামাজিক ও শিক্ষা, জনশক্তি, প্রতিরক্ষা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, এবং পরিকল্পনা বিভাগ। তাঁদেরকে যথাযথ স্তরের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। জন প্রশাসনে পেশাদারিত্বের গুরুত্ব নিন্মে আলোচনা করা হলো। নিন্মে নয়টি বেতন স্কেলের তালিকা প্রদান করা হলো- যাতে বিদ্যমান প্রথম শ্রেণীর বেতন স্কেল সহজেই আত্মীকরণ করা যাবে। গ্রেডে যে পদগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে তার কিছু উদাহরন প্রদান করা হলো, এই দলিলের ক্রোড় পত্রটি কেবল মাত্র একটি রেখাচিত্রের মধ্যমে প্রদত্ত হয়েছে- এই কথা আমি জোর দিয়ে ব্যক্ত করছি। গ্রেড-সমূহ এবং তৎসংশ্লিষ্ট পদগুলি নির্ধারণের নিমিত্তে আরও বিশদ এবং সম্প্রসারিত নিরক্ষন প্রয়োজন হবে। আমি মনে করি, সরকারের অধীনস্ত সকল পদসমূহকে ২০ থেকে ২৫ টি গ্রেডের একটি কাঠামোর মধ্যে সন্নিবেশিত করা সম্ভব। প্রতিটা গ্রেড একটি বেতন-সীমা ধারণ করবে।
<003.176.452>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
প্রস্তাবিত ইউনিফর্ম গ্রেডিং গঠন উদ্দেশ্য সাপেক্ষে মূল্যায়িত সংশ্লিষ্ট পদেরর বর্ননা
প্রস্তাবিত বেতনসীমা এবং প্রকৃতির উদাহরন
Rs.৩,৫০০ (১) বাংলাদেশ সরকারের সচিব,
উচ্চ কারিগরী পদের কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান ও সদস্যরা
উচ্চ পর্যায় Rs.৩০০০ (২) অতিরিক্ত সচিব, সদস্য, অতিরিক্ত কিছু বোর্ডের সদস্য।
Rs. ২,৫০০-২,৭৫০ (৩) যুগ্ম সচিব, মূল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান, আয় বোর্ডের সদস্যগণ,
বিভাগীয় কমিশনার, বিভাগীয় প্রধানগণ, প্রধান প্রকৌশলী ইত্যাদি।
মধ্য পর্যায় Rs. ২,০০০-২,২৫০ (৪) কিছু অধিদপ্তরের প্রধানগণ, সাধারণ হিসাবরক্ষক, আয়কর কমিশনার,
প্রধান প্রকৌশলী (ছোট দায়িত্বে), চিকিৎসক ইত্যাদি।
Rs. ১,৬০০-২,০০০ (৫) পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী,
ক্ষুদ্রতর অধিদপ্তর প্রধানগণ।
Rs. ১,৩০০-১,৬০০ (৬) জুনিয়র প্রশাসনিক গ্রেড, সহকারী সচিব, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীগণ।
Rs. ৯০০-১,২৫০ (৭) সহকারী কমিশনারগণ, বিসিএসের প্রথম শ্রেণীর পদসমূহ, পুলিশের সহকারী
তত্ত্বাবধায়ক, নির্বাহী প্রকৌশলী, সচিব এর নীচের পদসমূহ, চিকিৎসকগণ।
নিচু পর্যায় Rs. ৭০০-১,১০০ (৮) C.S.S এর অনেক সিনিয়র স্কেল পোস্ট, পুরাতন C.S.P এর অনেক
জুনিয়র স্কেল এবং P.F.S এর অধীনে সচিব, পুলিশের এ.আই.জি,
নির্বাহী প্রকৌশলী, ডাক্তার ইত্যাদি।
Rs. ৪০০-৯৫০ (৯) উপরে উল্লেখিত ১ম শ্রেনীর সকলে,
তাদের ৪০০-৫০০ এর ট্রেনিং গ্রেড থাকতে পারে।
(১০) এবং (১১) দ্বিতীয় শ্রেণীদের দুটি গ্রেড থাকতে পারে।
Rs. ৩৫০-৯০০
(১২ থেকে ১৪) তৃতীয় শ্রেণীদের উপযুক্ত বেতন সীমার ৯ থেকে ১৩ টি
গ্রেড থাকতে পারে।
(১৫) চতুর্থ শ্রেণীর নূন্যতম প্রদেয় Rs. ১৭৫
দ্রষ্টব্যঃ পে-স্কেল প্রস্তাব বলবৎ হবে শুধুমাত্র যখন বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে আসবে। এই মুহুর্তে এটা বিবেচনার বাইরে।
<003.176.453>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস
এটা আগেই বলা হয়েছে যে সি এস পি সহ সকল নন-টেকনিক্যাল কেন্দ্রীয় উচ্চতর সার্ভিস, অন্যান্য সকল কেন্দ্রীয়(নন-টেকনিক্যাল)সার্ভিস, সকল শ্রেনীসহ সকল নন-টেকনিক্যাল প্রাদেশিক সার্ভিসকে একত্রিত করা হবে, সাজাতে হবে এবং তাদেরকে একীভূত করে একটি গ্রেডিং কাঠামোতে আনা হবে যার নাম হবে বাংলাদেশ প্রশাসনিক সার্ভিস। এই সার্ভিসের সদস্যগণ গ্রেডিং কাঠামোর বিভিন্ন পদে পদাসীন হবেন। এটা নিম্নলিখিত বিষয়ের ভিত্তিতে সম্পন্ন হতে পারে – a) বিভিন্ন অফিসারের বর্তমান পদ বা অবস্থান b) পারফর্মেন্স রেকর্ড c) কর্মদক্ষতা d) চাকুরীর বয়স e) শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং f) যোগ্যতা।
এটা আশা করা হচ্ছে যে উপরে উল্লেখিত বিভিন্ন সার্ভিসের সদস্যগণ পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এটা মেনে নিবেন। যদি এই সার্ভিস গুলোর কোন সদস্য এই নতুন কাঠামোতে যেতে না চান সেক্ষেত্রে তিনি তার চাকুরীর বয়স অনুযায়ী পেনশন নিয়ে রিটায়ারমেন্টে যেতে পারবেন। সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রীম কোর্টের আরেকজন সিনিয়র বিচারপতি, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান এবং ২/৩ জন রিটায়ার্ড সরকারী চাকুরে নিয়ে গঠিত একটি শক্তিশালী কমিটি সকল প্রশ্নের উত্তর দিবেন।
এটা উল্লেখ করা যায় যে ব্রিটেনের সিভিল সার্ভিসের ফুল্টন কমিটি ব্রিটিশ সিভিল সার্ভিসের জন্য ঠিক একই ধরনের কাঠামো তৈরির সুপারিশ করেছিল । কমিটির ভাষ্য হচ্ছে, “আমাদের মতে সকল সরকারী চাকুরেকে বিভিন্ন স্তরের দক্ষতা এবং দায়িত্ব অনুযায়ী একটি গঠনতন্ত্রের বিভিন্ন পে-স্কেলের আওতায় আনতে হবে এবং চাকুরীর কাজ পর্যালোচনা করে প্রত্যেক পদের সঠিক ও ন্যায্য গ্রেড নির্ধারন করা হবে”। গঠনতন্ত্রেকে একটি স্থায়ী রূপ দিতে গিয়ে কমিটি দেখেছে, “ আমাদের কাছে কোষাগারের সুপারিশ অনুযায়ী আমরা প্রশাসনিক এক্সিকিউটিভ ও কেরানী শ্রেনীকে একত্রিত করার প্রস্তাব দিচ্ছি।” এটা উল্লেখ করা ভাল যে ১৯৪৫ সালে ফ্রান্স সব সার্ভিসকে একটি সিভিল সার্ভিসে একত্রীত করার এই সাহসী এবং গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছিল । কিন্তু তারা তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য ভিন্নভাবে ট্রেনিং এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পেয়েছিল। এটা বিভাগ ত্বত্তের সংকীর্ন চিন্তাকে দূর করে যা সরকারী কর্মচারীদের মধ্যে ঐক্যতার বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে।ভারতীয় প্রশাসনের পুনর্গঠন কমিশন ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসের ক্ষেত্রেও একই সুপারিশ করেছিল। কমিশন একটি একীভূত গ্রেডিং কাঠামোর সুপারিশ করেছে।
বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সেবা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গুরুত্বকে অতিরঞ্জিত করা যায় না। এটা যথেষ্ট প্রশংসিত ও উপলব্ধ যে আমাদের পুরো ভবিষ্যত, অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে আমাদের সুরক্ষা বহুলাংশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োগের উপর নির্ভর করছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণার উন্নয়ন এবং বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত মানবসম্পদের উন্নয়ন জাতিগত অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের যেকোন ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ প্রাধান্য পাবে। আমাদের বিজ্ঞানীরা, আমাদের প্রযুক্তিবিদ, আমাদের ডাক্তার এবং অন্যান্য কারিগরি নারী ও পুরুষের প্রশাসনিক পদ্ধতিকে একত্রে তাদের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। দক্ষ বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও ডাক্তার এবং অন্যান্য কারিগরি মানুষদেরকে প্রশাসনিক স্তরে তাদের উপযুক্ত সম্মান ও স্বীকৃতি দিতে কোন কিছুই তাদের আটকাতে বা বাধা দিতে পারবে না।
(1) Report of the committee on the Civil Service (Fulton), Vol. I, 1966-68 Cmnd, 3638, para 192. p. 63
(2) Ibid., para 215, p. 70
<003.176.454>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
তাদের বেতন ও মর্যাদা আগামীর প্রশাসনে তাদের যোগ্যতার ও গুরুত্বের সমতুল্য হতে হবে। তাদের মধ্যকার তিক্ততা ও অসন্তোষ উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। অন্য কথায়, উদাহরন সরূপ একজন বিজ্ঞানী, বা একজন প্রকৌশলী অথবা একজন ডাক্তারকে সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব, উপসচিব পদে এবং শীঘ্রই তার যগ্যতা, অভিগ্যতা ও উপযুক্ততা অনুযায়ী কোন মন্ত্রনালয় বা বিভাগে নিয়োগ দেওয়া উচিত। তার কর্মজীবনের সঠিক স্তরে তাকে গণ প্রশাসনের শিল্প ও জ্ঞান সম্পর্কে প্রশিক্ষন দেওয়া উচিত।
বর্তমানে যেসব বৈজ্ঞানিক, প্রকৌশল, চিকিৎসা ও অন্যান্য কারিগরি চাকুরি আছে সেগুলো হলঃ
১. বৈজ্ঞানিক সরকারি চাকুরী
২. প্রকৌশল সেবা
৩. চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবা
৪. বন সেবা
৫. প্রত্নতাত্ত্বিক সেবা
৬. ভৌগলিক সেবা
ভবিষ্যতে এই সব সেবা, আরো যেসব সেবা তৈরী হবে সেগুলোকে একটি একক গ্রেডিং কাঠামোতে সাজাতে হবে যেখানে দক্ষতা ও দায়িত্বের সাথে মিল রেখে বিভিন্ন বেতন স্তরের সদস্যরা থাকবে এবং কাজের বিশ্লেসনের মাধ্যমে প্রতিটি পদের জন্য সঠিক গ্রেড নির্ধারন করা হবে। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নামক সংগঠন হিসেবে পরিচিত হওয়ার জন্য তারা একটি একক বৈজ্ঞানিক সেবার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, বিশেষায়িত দল গুলোতে বিভক্ত হতে পারে, একটি একক গ্রেডিং কাঠামোর আওতায় থাকতে পারে। প্রত্যেক গ্রেডে একটি বেতন সীমা থাকবে যা ঐ গ্রেডের বাংলাদেশ প্রশাসনিক সার্ভিসের বেতন সীমার অনুরূপ হবে। একই গ্রেডে বেতন স্কেল এবং এই দুই বিস্তৃত শ্রেনীর সার্ভিসের মধ্যে অন্য কোন সেবা মূলক ঘটনায় কোন পার্থক্য থাকবে না। এটা হয়তো উল্লেখ করা হয়েছে, ফুল্টন কমিটি বৃটেনে বিশেষায়িত সেবার কাঠামো গঠনের ক্ষেত্রে এইরকম সুপারিশই করেছিল। কমিটি পর্যবেক্ষন করে যে, “আমারাও বৈজ্ঞানিক অফিসার, পরীক্ষামুলক অফিসার, ও বিজ্ঞান সহায়ক শ্রেনী এবং পেশাদার শ্রেনীর কর্মী দল, কারিগরি কাজ, প্রকৌশল ও সমানের কাজ, স্থাপত্য ও প্রকৌশল ড্রাফটসম্যান শ্রেনীকে একত্রীকরনের প্রস্থাব দিচ্ছি।
বাংলাদেশ শিক্ষা সেবা
যেহেতু শিক্ষা নিঃসন্দেহে সরকারের প্রধান দায়িত্ব গুলোর একটি হবে, তাই সবচেয়ে ভালো নারী ও পুরুষদের এই ক্ষেত্রে আকর্ষিত করার জন্য বর্তমান শিক্ষা সেবাকে বিজ্ঞানের পদরেখা অনুযায়ী সম্পুর্নরূপে পুনর্গঠন করতে হবে। তাদের বেতন ও সেবার অন্যান্য শর্তাবলি এমন হতে হবে যা তাদেরকে জাতিকে নিজের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার জন্য উদবুদ্ধ করবে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, তারা জাতির ভবিষ্যৎ প্রত্যাশার দায়িত্বে আছে। উপরে উল্লেখিত অন্যান্য বিভাগের সাধারন ও বিশেষায়িত সরকারী কর্মচারীদের বেতন স্কেলের সাথে তাদের বেতন স্কেলের বিশদ মিল থাকা উচিত।
(I) Report of the Administrative Reforms Commission on Personnel Administration. Government of
India, Chapter IV. 1969
<003.176.455>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস
পুলিশ সার্ভিসের দুইটি প্রধান শ্রেণী আছে যেমন সর্ব পাকিস্তান পুলিশ সার্ভিস এবং প্রাদেশিক পুলিশ সার্ভিস। এই সার্ভিসগুলোর সদস্যরা একটি একক সমন্বিত ক্রমবিভক্ত গঠনপ্রণালীতে যুক্ত এবং সংগঠিত থাকবেন যেখানে বিভিন্ন স্তরের দক্ষতা ও দায়িত্বের সাথে মানানসই উপযুক্ত সংখ্যক বিভিন্ন বেতন স্তর থাকবে, এবং প্রত্যেক পদের সঠিক ক্রমবিভাজন নির্ধারণ করা হবে বাংলাদেশ প্রশাসনিক সার্ভিসের মান অনুসারে চাকরীর বিশ্লেষনের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ বৈদেশিক সার্ভিস
বাংলাদেশ সরকারের একটি নতুন বাংলাদেশী বৈদেশিক পরিষেবা গঠন করতে হবে। সাবেক পাকিস্তানের বৈদেশিক সার্ভিসের বর্তমান বাঙ্গালি সদস্যরা একটি ক্ষুদ্র একক গঠন করবে যাকে কেন্দ্র করে এই সার্ভিসটি বেড়ে উঠবে এবং উন্নতি করবে।
বেসামরিক সার্ভিসে পেশাদারিত্ব
এই পরিষেবায় সকল প্রশাসনিক চাকরী জরিপ করার প্রয়োজন হবে। এটি প্রস্তাবিত বেসামরিক পরিষেবা বিভাগের দায়িত্ব হবে কাজের বিশ্লেষণ ও সনাক্ত করা যেটি তাদের সাধারন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বিশেষীকরনের ক্ষেত্র তৈরী করে। এখানে এটি উল্লেখ করা যেতে পারে যে ফ্রেঞ্চ বেসামরিক সার্ভিস উচ্চতর স্তরে চারটি শাখায় বিভক্তঃ (ক) সাধারণ প্রশাসন (খ) অর্থনৈতিক ও আর্থিক প্রশাসন (গ) সামাজিক প্রশাসন (ঘ) বৈদেশিক বিষয়াবলী।
এই বিষয়ে ফুলটন কমিটির অভিমত বিশেষভাবে উল্লেখের যোগ্য। এই কমিটি প্রশাসনিক চাকরীগুলোকে দুইটি প্রধান শাখায় বিভক্ত করে। এই কমিটি বলে “ প্রথমে আমরা চিন্তা করি বিভিন্ন বিভাগে প্রশাসনিক চাকুরী গুলোর একটি বড় অংশ একটি বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত, যা প্রাথমিকভাবে অর্থনৈতিক ও আর্থিক। এই প্রধান শাখার মধ্যে সরকার কিছু ক্ষেত্রে জোর দিতে পারে এবং তা হচ্ছে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও নিয়ন্ত্রন; অন্যগুলোতে আন্তর্জাতিক বানিজ্য ও কিছু বিশেষ শিল্পে; অন্যগুলোতে বড় কার্যক্রমগুলোর মূলধন ও বর্তমান খরচের আর্থিক নিয়ন্ত্রন; অন্যগুলোতে (মূলত প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক বিভাগগুলোতে) বড় প্রযুক্তিগত প্রকল্পগুলোর আর্থিক দিকগুলো। এভাবে অর্থনৈতিক ও আর্থিক ভিত্তিতে কাজটি তার নিজস্ব অভ্যন্তরীন বিশেষত্ব তৈরী করে। আমরা মনে করি এই ধরনটি এই কাজের জন্য স্বতন্ত্র প্রশাসকদের প্রশিক্ষন এবং বিস্তারের ক্ষেত্রে প্রতিফলিত হবে”। দ্বিতীয় শাখা যেটা এই কমিটি আরো পর্যবেক্ষণ করে “প্রশাসনিক চাকরীর আরো একটি বিস্তৃত শাখা আছে যেটার ভিত্তি হচ্ছে মূলত সামাজিক; যেমন বাসস্থান, শহর এবং দেশ পরিকল্পনা, শিক্ষা, সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক, সামাজিক নিরাপত্তা, শিল্পসঙ্ক্রান্ত সম্পর্ক, কর্মচারী ব্যবস্থাপনা, অপরাধ এবং অপকর্ম। আবার জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার একটি সাধারন কাঠামোর মধ্যে কাজটি তার নিজের বিশেষত্ব তৈরী করে। এখানেও স্বতন্ত্র প্রশাসকদের প্রশিক্ষন ও বিস্তারের ক্ষেত্রে নমুনাটি প্রতিফলিত হবে”।
সরকারের ভূমিকায় সুবিশাল পরিবর্তন এবং কাজে অসীম বৈচিত্র্যতার কারনে উচ্চতর প্রশাসনে প্রয়োজন বিভিন্ন রকমের দক্ষতা হয়। উচ্চতর স্তরগুলোতে এই নতুন কাজগুলোতে এমন দক্ষতা প্রয়োজন যা রাতারাতি অর্জন করা সম্ভব না, কিন্তু গ্রহন করা যায় বিশেষ প্রশিক্ষনের মাধ্যমে যা মঞ্জুর করে মৌলিক যোগ্যতা।
- Fulton Committee, op. cit., Para-215, P.70.
<003.176.456>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
প্রত্যেক নতুন প্রশাসনিক ক্ষেত্র-হোক সেটা অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিল্প, কারিগরি, বৈজ্ঞানিক, কৃষি, আর্থিক, বানিজ্যিক এর নিজস্ব শিক্ষাগত যোগ্যতা, জ্ঞান ও কৌশল থাকে। প্রত্যেক ক্ষেত্রের কার্যকর শাসন এর মূলনীতি সম্পর্কে গভীর জ্ঞান ও এর সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা দাবি করে। এজন্য সার্ভিসকে নিশ্চিত করতে হবে যে এর প্রশাসনের কর্মচারীগণ যাতে সহায়ক ধারনাগত কাজ ও বিশ্লেষক বিষয়বস্তুর সাথে সঠিক জ্ঞান অর্জন করে। এর অর্থ একজন প্রশাসন কর্মকর্তার অন্তত তার কাজের শুরুর দিকে, অর্থনীতি, শিল্প, কৃষি, ব্যবসা এবং আর্থিক বা সামাজিক যেকোন এক বা একাধিক বিষয়ে বিশেষায়িত জ্ঞান অর্জন করা উচিত। সেই অনুযায়ী প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা উচিত। এভাবেই সিভিল সার্ভিসে প্রয়োজনীয় পেশাদারিত্ব গড়ে তোলা যায়।
পেশদারিত্ব কি? ফুল্টন কমিটি পেশাদারিত্বের দুইটি প্রধান বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেন সেগুলো সরকারী চাকরীর বিভিন্ন কাজের সমন্বয় সাধনের জন্য জরুরী। একটা হল নিজের কাজে দক্ষ হওয়া- দক্ষতা যা প্রশিক্ষন ও দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে আসে। আর একটি হল কোন বিষয় সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান ও গভীর পরিচিতি থাকা যা একজন মানুষকে এর ধারনার সংগে সহজে মানিয়ে নিতে সমর্থ করে। উভয়ই উদয় হয় এবং উচ্চ মানের জন্য প্রতিনিয়ত সংগ্রামের জন্য নতুন করে বলপ্রয়োগ করে। সরকারি কাজ এই গুন গুলো শুধুমাত্র সাধারন ভাবে পরিচিত পেশার সদস্যদের কাছেই দাবি করে না বরং পরিষেবার সকল পর্যায় ও অংশের কাছে দাবি করে।
পেশাদারিত্বের এই বৈশিষ্ট গুলো ইতমধ্যেই সিভিল সার্ভিসে কিছু পরিমানে বিদ্যমান। কিন্তু বর্তমানের কাজ জন্য এগুলোর এখনকার থেকে আরো অনেক বেশি উন্নয়ন দরকার। ফুল্টন কমিটির মতে সেবার প্রধানত দুই ধরনের পেশাদারিত্ব দরকার। প্রথমত তাদের পেশাদারিত্ব যাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রয়োগ করার অনেক গুলো পেশাগত সুযোগের একটি সরকারি চাকরী। এই শ্রেনীতে আছেন স্থপতি, আইনজীবি, ডাক্তার, প্রকৌশলি, বিজ্ঞানী, হিসাব্রক্ষক, অর্থনীতিবিদ, ড্রাফটসম্যান, টেকনিশিয়ান এবং আরো অনেকে। এদের মধ্যে কেউ কেউ, যেমন ড্রাফটসম্যান ও টেকনিশিয়ানের চাকরীতে যোগদানের পর দক্ষতা অর্জন ও উন্নয়ন করতে পারে। সিভিল সার্ভিসের এই অংশ গুলো ‘বিশেষজ্ঞ’ হিসেবে পরিচিত।
দ্বিতীয় ধরনের পেশাদারিত্ব, যেটার আরো বেশি সতর্কতার সাথে উন্নয়ন দরকার সেটা হল প্রশাসন ও কার্যনির্বাহী স্তরের সেই সকল সদস্য যারা নিজেদের কে “সাধারন কর্মচারী” হিসেবে গন্য করে। সাধারন কর্মচারীরা প্রায়শই এক চাকরী থেকে অন্য চাকরী এবং এক মন্ত্রনালয় থেকে অন্য মন্ত্রনালয়ে স্থানান্তরিত হয়, এবং সেজন্য তারা সরকার পরিচালনা এবং মন্ত্রনালয় ও সংসদের কাজে দক্ষতা অর্জন করে। কিন্তু পুর্ন পেশাদারিত্ব অর্জনে ব্যার্থ হতে পারে যেটা এখন তাদের কাজের দাবি। তারা গভীর ভাবে কোন বিভাগ সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন করে না এবং এমনকি বিভাগীয় কাজের সাধারন পরিধি সম্পর্কেও জ্ঞান রাখে না। অনেক সময় তাদেরকে সেই সব বিষয়ে পরামর্শ দিতে হয় যা তারা ভালভাবে জানে না অথবা এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয় যার গুরুত্ব তারা পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারে না।
(1) Report of the (Fulton) Committees, op. cit., Para-46, P. 19-20.
(2) Ibid., Para-47, p. 20.
(3) Ibid., Para-32, P. 16.
(4) Ibid., ara-35, P. 16. (1)
<003.176.457>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
এর কিছু ভয়াবহ পরিণাম রয়েছে। যেমন এই ধরণের ব্যাপার গুলো বাজে নীতিনির্ধারণের দিকে পরিস্থিতিকে ঠেলে দেয়। এটা প্রশাসনিক এইসব নীতির মৌলিক মুল্যায়নের প্রতিপালনকে বাধাগ্রস্ত করে। এটি প্রায়শই প্রণীত নীতিগুলো বাস্তবায়নে অপরিপক্ব ও ভুল পদ্ধতি বেছে নিতে বাধ্য করে। সার্ভিসের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ পরামর্শের উৎস গুলোর সাথে ফলপ্রসূ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠায় ব্যাঘাত ঘটায়। ফুলটন কমিটির সুপারিশ সমূহ সাবধানতার সাথে বিবেচনা করা উচিত।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, যে ধরণের সিভিল সার্ভিস বাংলাদেশে প্রচলিত আছে তা থেকে একটি পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় যে এখন সিভিল সার্ভেন্টকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, বৈজ্ঞানিক এবং অন্যান্য সমসাময়িক সমস্যা গুলোর মোকাবেলা করার ক্ষমতা থাকতে হবে। সরকারী কর্মকান্ড দিন দিন কাজের ধরণ ও প্রকৃতি অনুযায়ী আরো জটিল থেকে জটিল তর হচ্ছে। সরকারী কাজের প্রকৃতি বিচার করলে সেই কাজের যোগ্য হওয়ার জন্য সিভিল সার্ভেন্টদের মধ্যে যোগ্যতার তুমুল প্রতিযোগীতা প্রয়োজন। সিভিল সার্ভেন্টদের সমগ্র দেশে নানা ব্যাপারে দেশের স্বার্থ এবং মতামত সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। সেই সাথে দেশের বাইরের নানা উন্নয়ন সম্পর্কে ধারণা রাখা জরুরী। নতুন জ্ঞানের দ্রুত বর্ধন সম্পর্কে তাদের ভালো ধারণা রাখতে হবে তা প্রয়োগ করার কৌশল আয়ত্ত্ব করতে হবে। বাংলাদেশী সিভিল সার্ভেন্টদের কৃষিবিজ্ঞান, সহায়তা, শিল্প ব্যবস্থাপনা, ব্যবসা বাণিজ্য, অঞ্চল বাণিজ্য, ব্যাংকিং, বীমা, জাতীয় অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সাধারণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা, গণমূলধন যোগান, গৃহায়ন, নগর এবং দেশ পরিকল্পনা, শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা, শিল্প সম্পর্ক, ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনা, অপরাধ এবং কর্তব্যে অবহেলা সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখা জরুরি। তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের আন্তর্জাতিক সংগঠনের সাথে কারবার করতে হবে।
এই প্রত্যেকটি কাজের ধরণেই একটি দ্রুত বর্ধমান জ্ঞানের ভান্ডার রয়েছে। আমাদের প্রশাসকদের ভবিষ্যতে অবশ্যই তার প্রশাসনিক পরিধি এবং তার প্রশাসনিক দায়িত্বের সাথে সামঞ্জস্যপুর্ন যথেষ্ট মৌলিক ধারনা ও জ্ঞান অর্জন করতে হবে হোক সেটা সামাজিক, অর্থনৈতিক, শৈল্পিক, কৃষিজাত কিংবা আর্থিক। প্রশাসকের অবশ্যই তার প্রশাসনিক কর্মকান্ডের ধরণ অনুযায়ী তার কার্যক্ষেত্রের কাজের ধারা, পদ্ধতি এবং উন্নয়ন প্রবণতা সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখা জরুরী।
বাংলাদেশের সিভিল সার্ভিসে কাজের ক্ষেত্রে পেশাদারিত্ব আনার জন্য সিভিল সার্ভিসকে নিম্নোক্ত পেশাদারী ভাগে ভাগে করা জরুরী :
- অর্থনৈতি কপ্রশাসন
- শৈল্পিক প্রশাসন
- কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন প্রশাসন
- সমাজ ও শিক্ষা প্রশাসন
- ব্যবসায়িক প্রশাসন
- কর্মী প্রশাসন
- মূলধণ প্রশাসন
- প্রতিরক্ষা প্রশাসন ও আভ্যন্তরীণ সুরক্ষা
- পরিকল্পনা
এই সকল বিশেষায়িত কাজে যোগদানকারী প্রত্যেক কর্মীকে অবশ্যই স্পেশাল ট্রেনিং প্রাপ্ত হতে হবে এবং প্রয়োজনীয় প্রেক্ষাপট তৈরী করতে হবে। এই সকল বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট জ্ঞানাবলী আসলে পর্যাপ্ত পড়াশোনা এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক বিষয়াদির দীর্ঘ সময় ধরে অনুশীলনের মধ্য দিয়েই আসে, অন্তত কিছু কিছু ক্ষেত্রে, যেমন প্রতিশ্রুতি-একটি পেশাদার প্রতিশ্রুতির ক্ষেত্র যথেষ্ট দীর্ঘ সময়।
<003.176.458>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
এইসকল পেশাদারী ভাগে জ্ঞান এবং দক্ষতা যেসকল বিষয়ের মধ্য দিয়ে আসে তা নিচে ব্যাখ্যা করা হল :
(ক) আর্থিক প্রশাসন :
মূদ্রানীতি, ব্যাংকিং এবং মূলধন প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিদেশী সহায়তা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, আয়ের সম্পর্কিত সমস্যাবলী, বেতন এবং মূল্য।
(খ)শৈল্পিক প্রশাসন :
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, শিল্প অনুমোদন, টেকনিক্যাল জ্ঞান এর আমদানি, এছাড়াও আয়ের সম্পর্কিত সমস্যাবলী, বেতন এবং আয় এর অন্তর্ভুক্ত।
(গ) কৃষিজাত ও পল্লী উন্নয়ন প্রশাসন :
পল্লী সহায়তা, সামাজিক উন্নয়ন, সেচ প্রকল্প, পল্লী বিদ্যুতায়ন, কৃষিবিজ্ঞান, কৃষি অর্থনীতি এবং পল্লী সমাজবিজ্ঞান।
(ঘ) সামাজিক ও শিক্ষা প্রশাসন :
শিক্ষা, সামাজিক উন্নয়ন, পরিবার পরিকল্পনা, নগরায়ন, শ্রমিক উন্নয়ন এবং শিল্পজাত সম্পর্ক, কারখানা ও শ্রমিক পরিদর্শন, তথ্য ও সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থা।
(ঙ) ব্যবসায়িক প্রশাসন :
মূলনীতি, পদ্ধতি, বড় পরিসরের ব্যবসার প্রশাসন পদ্ধতি যেমন সাধারণ সহায়তা, ট্রেডিং করপোরেশন, পাট বাণিজ্য কর্পোরেশন।
(চ) কর্মী প্রশাসন :
ব্যবস্থাপনা বিশ্লেষণ যার মধ্যে কাজ সম্পর্কিত পড়াশোনা, গ্রেডিং, পোস্ট এর যাচাই বাছাই, সংগঠন ও পদ্ধতি, বাছাই পদ্ধতি, ট্রেনিং ও ক্যারিয়ার ব্যবস্থাপনা, স্টাফ পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ, উদ্বুদ্ধকরণ, নীতি ও কর্মী সহায়তা প্রদান।
(ছ) মূলধন প্রশাসন :
লাভ-ক্ষতি বিশ্লেষণ, বাজেট প্রক্রিয়াকরণ এবং ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, পারফরম্যান্স বাজেট, লাভ, আয়কর প্রদান ইত্যাদি।
(ঞ) প্রতিরক্ষা প্রশাসন ও আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা :
ইন্টেলিজেন্স, স্ট্র্যাটেজি ও ট্যাকটিকস সম্পর্কে ধারণা, লজিস্টিকস, অস্ত্রপাতি, অস্ত্রপাতির বিশ্লেষণ, নিরাপত্তা শিল্প, নিরাপত্তা গবেষণা এবং উন্নয়ন ইত্যাদি।
(ট) পরিকল্পনা :
চাহিদা এবং রসদের পরিমাপ এর উপর আলোকপাত, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মডেল, ইনপুট-আউটপুট অনুপাত, আভ্যন্তরীন সেক্টরের ভারসাম্য, প্রজেক্ট এবং স্কীমের লাভ ক্ষতি বিশ্লেষণ, পরিকল্পনা পদ্ধতি, উন্নয়ন নীতি এবং ফিডব্যাক নেয়ার পদ্ধতি, ফলাফল যাচাই, অপারেশন রিসার্চ এবং সিস্টেম ব্যবস্থাপনা।
যেসকল ব্যক্তিবর্গ এই ৯টি বিষয়ের জন্য নির্বাচিত হবেন তাদের সকলের মধ্যে কিছু নীতি ও ব্যবস্থাপক পর্ষদের অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত, যা সরকারের কাছে দায়বদ্ধ এবং বিভিন্ন প্রশাসনিক বিভাগে বাংলাদেশ সরকার এর হয়ে উচ্চ ব্যবস্থাপনার কাজ সম্পন্ন করবে।
- , Para-39, P. 18.
<003.176.459>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সাধারণ প্রশাসন
বর্তমান সময়ে জটিল এবং বহুবিধ প্রশাসনিক কর্মকান্ডের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সি এস পি এবং প্রথম শ্রেনীর সিভিল সার্ভিসে সুযোগ ও উপকরন তুলনামূলক ভাবে সীমিত। তারপরও যেখানে সুসংগঠিত সার্ভিস সমূহ পাওয়া দূরূহ সেখানে এটি বিভিন্ন পদের জন্য উপকারী ও ভালো উপাদান সরবরাহ করতে পারে। বিশেষ করে যেসব কর্মকান্ডের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং অভিজ্ঞতার প্রয়োজন, সেসব ক্ষেত্রে এই সার্ভিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সিভিল সার্ভিসের সকল উদ্দেশ্যের সদস্যদের জন্য কোন একটি নির্দিষ্ট কর্ম ক্ষেত্র তৈরী করা যেতে পারে। এর মাঝে রাজস্ব প্রশাসন, শাসন সংক্রান্ত কর্মকান্ড এবং অন্য কার্যসেবার অফিসার দ্বারা পরিচালিত ক্ষেত্র বাদে রেগুলেটরি কর্মকান্ড অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। এরকম পদের উদাহরণ হল এসিস্ট্যান্ট ডেপুটি কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার, ডিরেক্টর অফ সিভিল সাপ্লাই, ডিরেক্টর অফ সেটলমেন্ট, ডিরেক্টরস অফ ল্যান্ড রেকর্ডস, রাজস্ব সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বিভাগীয় কমিশনার ইত্যাদি।
প্রশাসক বিভাজন এর নীতিটি এমন হওয়া উচিত যাতে প্রশাসকগণ এর তাদের কাজের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জনে সুবিধা হয়। প্রতিটি গ্রুপে নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝা পড়া, জ্ঞান, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার চাহিদা তাদের দায়িত্বের ধরন অনুযায়ী পরিবর্তিত হবে। পোস্ট এর দায়িত্ব যত বেশি, দায়িত্ব পালনকারীদের মধ্যে বোঝা পড়া তত বেশি হওয়া জরুরী। পেশাদারিত্ব সিনিয়র কিংবা জুনিয়র সকল স্তরে থাকতে হবে। এর মানে যে পর্যায়েই হোক না কেন, প্রতিটি কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও যথাযথ প্রচেষ্টা নিশ্চিত করা জরুরী।
অর্থনৈতিক, সামাজিক, আর্থিক এবং সামাজিক প্রশাসকদের মূল উদ্দেশ্য বিজ্ঞানি, প্রকৌশলী, সামাজিক বিজ্ঞানীদের বিশেষ জ্ঞান অনুকরন করা নয় এবং বিজ্ঞানি, প্রকৌশলী, সামাজিক বিজ্ঞানীদের ক্ষেত্রেও একই নীতি প্রযোজ্য।বরং প্রশাসকদের তার নিজের কাজের ব্যাপারে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন এবং পরবর্তীতে সেটা নিজের কাজে প্রয়োগ করে কাজের সাথে নিজের একটি ভালো সম্পর্ক ও বোঝাপড়া নিশ্চিত করা যাতে ওই কাজে প্রশাসক থেকে তার সেরা প্রচেষ্টাটি পাওয়া সম্ভব হয়।
সরকারি কর্মকান্ডের বিভিন্ন স্তরে কর্মকান্ডের বিষয়ে বিশেষ ট্রেনিং প্রদানে সুবিধা প্রদান করার জন্য বাংলাদেশের প্রশাসনিক সার্ভিস এর সদস্যদের কর্মস্তর বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট অনুযায়ী নিশ্চিত করা উচিত। একদম উপরের স্তরে প্রশাসকদের এমন একটি দল থাকা উচিত যাদের সাধারন প্রশাসনে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আছে, দূরদর্শিতা আছে, প্রশাসনের পুরোক্ষেত্র সম্পর্কে বিস্তৃত ধারনা আছে, উদার দৃষ্টিভঙ্গী আছে, এক কথায় যারা বিশাল প্রশাসন সংস্কৃতির সম্পর্কে ভালভাবে জ্ঞাত।
কর্মী প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা
কর্মী প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনার প্রধান সমস্যা হচ্ছে সরকার অতীতে এই প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়নি। প্রশাসনে মানুষের উপস্থিতির গুরত্ব সমগ্র বিশ্বে যথেষ্ট যত্ন সহকারে সমাদৃত। মানব সম্পদ, যা বর্তমানে মানব মূলধন নামে বেশি পরিচিত তা প্রকৃত ও আর্থিক সম্পদের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করছে বলে ধরা হয়। প্রফেসর টওনির মতে, মানব সম্পদ এখন পর্যন্ত কোন দেশের সবচাইতে দামী ও ব্যবহারোপযোগী সম্পদ। সুতরাং, এই মানব সম্পদকে কার্যকরি ও উপযুক্ত ভাবে কাজে লাগিয়ে সেরাটা বের করে আনার প্রচেষ্টা তরান্বিত করতে হবে।
<003.176.460>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
নিয়োগ পদ্ধতি, প্রশাসক ও বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে পেশাদারিত্বের উন্নয়ন, একটি বৈজ্ঞানিক কর্ম ব্যাবস্থাপনা, কর্মীদের প্রশিক্ষন ও নিয়োগ এবং ব্যাপক বিভাগীয় কার্যকারিতার প্রচার কর্মক্ষেত্রের কেন্দ্রীয় ব্যাবস্থাপনার কাছে আরো বেশি কিছু দাবী করবে । লোকবলের অবিরত সমন্বয় এবং পরিবর্তিত কার্যপদ্ধতির প্রয়োগ অবশ্যই একটি যৌথ দায়িত্ব, যা কেন্দ্রীয় ব্যাবস্থাপনা এবং স্বতন্ত্র বিভাগসমূহ উভয়ের উপর বর্তায়, তবে কেন্দ্রীয় ব্যাবস্থাপনার সেসকল ক্ষেত্রে চূড়ান্ত কর্তৃত্ব থাকা আবশ্যক যাতে সমগ্র সরকারী কর্মক্ষত্রের স্বার্থ প্রভাবিত হয় । কেন্দ্রীয় ব্যাবস্থাপনার মৌলিক কর্তব্যসমূহ হওয়া উচিৎঃ
(১) বিভাগসমূহের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়োগ পদ্ধতির নীতি নির্ধারন করা;
(২) বিভাগীয় কাজের পরিবর্তন ও উন্নয়ন এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা ও কাঠামো পর্যালোচনায় বিভাগসমূহকে উৎসাহ প্রদান ও সহায়তা করা;
(৩) প্রয়োজনীয় লোকবলের পরিমাণ ও দক্ষতা উভয়ই নির্ধারন, এই প্রয়োজনীয়তাসমূহ কিভাবে পরিপূর্ণ হবে তা বিভাগসমূহের সাথে সমন্বয় সাধন, নতুন নিয়োগ এবং আভ্যন্তরীন স্থানান্তরকরনে আবশ্যকীয় সাধারণ সেবাসমূহ প্রদান করা;
(৪) বিভাগীয় কাজে নতুন নিয়োগের জন্য বিভাগসমূহের পরামর্শে দক্ষতা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা স্থির করা;
(৫) পারিশ্রমিক, পেনশন এবং কর্মক্ষেত্রের অন্যান্য শর্তসমূহ নির্ধারন করা;
(৬) বিভাগসমূহের পরামর্শে প্রশিক্ষন নীতি নির্ধারন, কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষন কার্যক্রম পরিচালনা, বৈদেশিক প্রশিক্ষন, বিভাগসমূহের মধ্যে উদ্দীপ্তকরণ ও প্রদর্শক প্রশিক্ষন এর আয়োজন করা;
(৭) সকল পর্যায়ের সর্বাপেক্ষা সম্ভাবনাময় সদস্যদের কর্মক্ষেত্রে পেশাগত অগ্রগতির উন্নয়ন , বিশেষত একে অপরের সাথে সহযোগিতা ও বিভাগসমূহকে এসকল উন্নয়ন এর ব্যাপারে শিক্ষাদানের পথ প্রদর্শন এবং ভবিষ্যত উন্নয়ন পরিকল্পনা করা;
(৮) বিভাগসমূহের মধ্যে এবং কর্মক্ষেত্রে ও বহিঃস্থ কর্মসংস্থান উভয়ের মধ্যে সক্রিয়তা/গতিশীলতার উন্নয়ন করা;
(৯) সকল ধরণের উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পর্কে উচ্চপর্যায়ে ( যেমন- শীর্ষস্থানীয় নীতি ও ব্যাবস্থাপনা শাখা ) আলোচনা এবং বিভাগসমূহের মধ্যে উক্ত শাখা ও নিম্নপর্যায়ে স্বতন্ত্র পদক্ষেপ উত্থাপনের উদ্যোগ নেয়া;
(১০) প্রধানমন্ত্রীকে উপদেশ প্রদানঃ-
(ক) উপসচিব এবং উচ্চপর্যায়ের বেতন স্তরে নিয়োগ; এবং
(খ) বিভাগসমূহের মধ্যে সর্বাপেক্ষা কার্যকরী শাখা;
(১১) সাংগঠনিক কার্যপদ্ধতির নতুন ক্রমবিকাশ চর্চা, ব্যাবস্থাপনা কৌশল ও দাপ্তরিক যন্ত্রপাতি এবং কর্মক্ষেত্রের সর্বত্র এর ব্যাবহার উন্নীত করা।
কর্মজীবন ব্যাবস্থাপনার জন্য
একজন মানুষের কর্মজীবনের প্রথম দিকে তিনি সেই বিশেষজ্ঞ শ্রেনীর মধ্যে অবস্থান করতে চান যার জন্য তিনি প্রশিক্ষিত হয়েছেন। তবে এটা আবশ্যক নয় যে তিনি একই বিভাগে একটি পদেই থেকে যাবেন; তার পদ এবং সম্ভবত বিভাগসমূহের মধ্যে স্থানান্তর হওয়া উচিত তবে স্বাভাবিকভাবেই তার বিশেষজ্ঞতার সীমার মধ্যে । প্রশাসক যতদূর সংশ্লিষ্ট থাকবে, তাহলে বর্তমানের তুলনায় কম দ্রুত বিরতিতে তার পদ পরিবর্তন করা উচিত।
<003.176.461>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বর্তমানের তুলনায় কম দ্রুত বিরতিতে তার পদ পরিবর্তন করা উচিত । যখন পেশাগত নমুনায় বড় ধরণের বৈচিত্র্য থাকবে, তখন পেশাগত ব্যাবস্থাপনার মূলনীতি হওয়া উচিত বিশেষজ্ঞতা সীমার মধ্যে এবং একে অপরের সাথে সম্পর্কিত কর্মকান্ডের ক্ষেত্রের মধ্যে প্রগতিশীল উন্নয়ন । যখন কর্মক্ষেত্রের চাহিদা প্রথমে আসা আবশ্যক, তা সত্ত্বেও ব্যক্তিগত স্বার্থ এবং ব্যক্তির ইচ্ছাকে বর্তমান সময়ে প্রতীয়মান স্বাভাবিক রীতির চেয়ে আরও ইতিবাচক বিবেচনায় নেয়া উচিত । সকল শ্রেনীর বেসামরিক কর্মী- সাধারণ ও বিশেষজ্ঞ এর মধ্যে কর্মী ব্যাবস্থাপনার উপর বর্ধিত লক্ষ্য এবং স্বতন্ত্র কর্ম পরিকল্পনা প্রয়োগ করা উচিত ।
পদোন্নতি
ফুলটন কমিটির পর্যবেক্ষন অনুযায়ী, “সঠিক সময়ে সঠিক পদন্নোতি কর্মক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে পূর্ণ প্রতিভা তৈরি প্রক্রিয়ার একটি অপরিহার্য অংশ”। নতুন পদন্নোতি পদ্ধতির প্রয়োজনীয় ভিত্তি স্থাপনের জন্য যেসকল সমন্বিত পদমর্যাদা কাঠামো বাঞ্ছনীয়ঃ
(১) একজন ব্যক্তির তার পদে কর্মক্ষমতার মানের উপর ভিত্তি করে পদন্নোতি প্রদান করা উচিত ।
(২) ব্যক্তির দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা আরো প্রত্যক্ষভাবে এবং উচ্চ পর্যায়ে একটি নির্দিষ্ট পদের প্রয়োজনীয়তায় বিশেষভাবে সংযুক্ত হতে পারে ।
(৩) পদোন্নতি পর্ষদসমূহ উচ্চতর পদের জন্য প্রার্থীকে বিবেচনা করতে পারেন, শুধুমাত্র তাদের বিশেষীকরণ ক্ষেত্রের মধ্যেই নয়, কিন্তু এছাড়াও ব্যবস্থাপনা পদে যেখানে তাদের বিশেষ জ্ঞান উপযোগী হতে পারে ।
(৪) সবার জন্য আরো বেশি নিরপেক্ষ পদোন্নতির সুযোগ থাকবে কারণ সঠিকভাবে কর্মক্ষমতাকে বিবেচনায় নেওয়া হয় এবং একটি বিশেষ শ্রেণীর সদস্যপদের চেয়ে ব্যক্তির দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে নির্বাচন করা হয় ।
(৫) সক্ষম ব্যক্তি পদমর্যাদাক্রম এড়িয়ে যেতে পারেন ।
(৬) যেখানে জ্যেষ্ঠতা মূল্যবান অভিজ্ঞতা প্রদান করে, সেখানে তার যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে। এটি ভুলে গেলে চলবে না যে জ্যেষ্ঠতা কখনো কখনো প্রাচীনত্বের সমার্থক । কর্মক্ষমতা, যোগ্যতা ও মেধা পদোন্নতির প্রধান ভিত্তি হওয়া উচিত ।
নতুন বেসামরিক চাকুরী বিভাগ
কেন্দ্রীয় ব্যাবস্থাপনার কর্মসমূহ কার্যকরভাবে পালনেরে জন্য বেসামরিক চাকুরী বিভাগ পরিচিতিতে একটি নতুন বিভাগ তৈরী করা উচিত । এই কাজসমূহের সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন নির্ভর করে একটি শক্তিশালী, সক্ষম, যোগ্য এবং উদ্যমী প্রশাসনের বিবর্তনের উপর যা নির্ভরযোগ্য ও সক্রিয় উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য অপরিহার্য । বাংলাদেশে যার অভাব নিশ্চিতভাবেই রয়েছে । রাজনৈতিক নেতা ও জনগনের একটি অতিশয় উন্নত প্রশাসনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনুধাবন করা আবশ্যক । অতীতে কর্মীদের প্রশাসন ও ব্যাবস্থাপনার উল্লেখযোগ্যভাবে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর প্রতি কখনোই পর্যাপ্ত মনোযোগ প্রদান করা হয়নি । সরকারে সম্প্রসারিত কর্মকান্ডে একটি সুচিন্তিত কার্যকর পদক্ষেপ এর প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত জরুরী, বিশেষত অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে, যার ফলে সমগ্র বেসামরিক কর্মক্ষেত্রে ক্রমবর্ধিত চাপ প্রদান করবে । এই বিভাগের কর্মীদের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে । যা অন্য কোন সংজ্ঞায় আলোচনা করা হবে ।
<003.176.462>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সময় এবং পরিসর আমাদের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা- নিয়োগ, প্রশিক্ষন, শৃঙ্খলা এবং আচরণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার অনুমতি প্রদান করেনা । শুধুমাত্র মেধাই নিয়োগের ভিত্তি হওয়া উচিত । সরকারী কর্মকমিশনের দ্বারা পরিচালিত উন্মুক্ত প্রতিযোগিতামুলক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সকল শাখা হতে প্রথম শ্রেণীভুক্ত মেধাবীদের নিয়োগ করা উচিত । সনাতন পদ্ধতি বাদে, ব্রিটেনের মত দ্বিতীয় পদ্ধতি প্রয়োগ করা যেতে পারে । সবশেষে, নিয়োগপ্রাপ্তদের মান ব্যাপকভাবে নির্ভর করে দেশের শিক্ষামানের উপর । স্বাধীনতার পর সরকারের উচিত উপযুক্ত কর্মীর তীব্র স্বল্পতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে অবিলম্বে বেসামরিক চাকুরীর বাইরে বিভিন্ন পেশা হতে বেশ ভালো সংখ্যক ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদান করা । এ ধরনের বিকল্প নিয়োগ একটি চুক্তি ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য হবে । বাংলাদেশ সরকার হতে প্রাপ্ত প্রশিক্ষন ব্যাবস্থা প্রাণহীন, উৎসাহশুণ্য ও অসম্পূর্ণ । ফ্রান্সের ‘Ecole National d’ Administration’ ( National School of Administration ) যে নীতি ও পদ্ধতির উপর নির্মিত তার উপর ভিত্তি করে প্রশিক্ষন পদ্ধতি স্থির করা উচিত । আচরণ ও শৃঙ্খলার মর্মার্থ হওয়া উচিত ন্যায়বিচার, সমতা ও সততা । বেতন কাঠামো যৌক্তিক ও দেশের বিরাজমান অর্থনৈতিক অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকা উচিত । সর্বোচ্চ বেতন এবং সর্বনিম্ন বেতন মধ্যে হাস্যকরভাবে অর্থহীন এই ব্যবধানকে কমিয়ে আনতে হবে । নিম্নস্তরে বেতনের পরিমাণ জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম মজুরী হতে হবে । স্বাধীনতার অব্যবহতি পরেই বছর দুয়েকের জন্য সর্বোচ্চ মাসিক বেতন ১,৫০০.০০ টাকার বেশী হবেনা । অন্যান্য বিষয় অপরিবর্তিত থাকলে, ধারণা করা হয় , অর্থনীতি, এই সময়ের মধ্যে পুনরূজ্জীবিত হয়ে উঠবে, এবং এই সময়ের শেষে বেতন কাঠামোর সম্পূর্ণ বিষয়টি এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় একটি উচ্চ-ক্ষমতাপ্রাপ্ত বেতন কমিশন দ্বারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসন্ধান করা হবে । দুর্নীতি ও বিভিন্ন ধরণের অপকর্ম কার্যকরভাবে মোকাবেলা করতে হবে । ইউ.এস.এ. এর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দুর্নীতি সম্পর্কিত সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে দেখা যায় এর ব্যয় অত্যাধিক । এই ক্রমবর্ধমান সমস্যা সমাধানে উপযুক্ত পদ্ধতির উদ্ভাবন করতে হবে ।
প্রশাসনিক সংগঠন
সচিবালয়
প্রশাসনিক সংগঠনের কর্মশক্তির মূলকেন্দ্র হচ্ছে সচিবালয়, যেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের নীতিমালা প্রসূত হয়, পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, রূপায়িত করা হয় এবং অধিদপ্তরের মধ্যে বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরে, সংযুক্ত কার্যালয়, বিভাগ, জেলা, মহকুমা, থানা ও গ্রামে জারি করা হয় । এটা বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপকরণ হবে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সকল সরকারী কার্যকলাপের বিভিন্ন বিষয় পরিচালনা করার জন্য দায়বদ্ধ হবে । সচিবালয়ে সরকারের সকল নীতি প্রণয়ন ও সমন্বয় সাধন করা হয় ।
এখন, সচিবালয়ের দুটো প্রধান স্তর রয়েছে- কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক । বাংলাদেশে শুধুমাত্র একটিই প্রধান সচিবালয় থাকবে, সেটা হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার সচিবালয় । প্রাদেশিক সচিবালয় এর সঙ্গে জড়িত থাকবে । আলাদা করে প্রাদেশিক সচিবালয়ের কোন প্রয়োজন থাকবে না । বৃটিশদের সময়কালে, সচিবালয় বিভিন্ন বিভাগে বিভক্ত ছিল, প্রতিটি বিভাগ একটি নির্দিষ্ট বিষয় তদারকি করত, গভরনর জেনারেল এর কার্যনির্বাহী পরিষদের একজন সদস্য মন্ত্রীর কার্যভার গ্রহন করত । ১৯৪৭ এ ক্ষমতা হস্তান্তরের সময়, কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিভাগসমূহের নতুন নামকরন করা হয় মন্ত্রণালয় এবং প্রদেশগুলোতে সচিবালয় বিভাগ নামে পরিচিত ছিল । বাংলাদেশে সচিবালয় সংগঠিত ও স্থাপিত হবে মন্ত্রণালয়ে, নির্দিষ্ট বিষয় বা বিষয়সমূহ তদারককারী একজন মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকবেন যিনি জাতীয় সংসদের নিকট দায়বদ্ধ থাকবেন ।
<003.176.463>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সন্তোষজনক এবং দক্ষ কার্যাবলীর ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় বা দপ্তরগুলো প্রশাসনিক কাঠামোর বৃহত্তম মহকুমা বা অংশ হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করে| প্রত্যেক সুসংগঠিত সরকারব্যবস্থায় বিভিন্ন দায়িত্ব পরিচালনার ভার সুনির্দিষ্ট বিষয়ানুযায়ী বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা দপ্তরের উপর ন্যস্ত থাকে|
মন্ত্রণালয় বা দপ্তরগুলোর পাশাপাশি সরকার নিযুক্ত বা অধীনস্থ বিভিন্ন কার্যালয়গুলো সরকারি কাজ পালন করে| মন্ত্রণালয় দ্বারা প্রণীত নীতি বাস্তবায়নের জন্য এসব কার্যালয় প্রায়োগিক পরামর্শ দিয়ে থাকে| গৃহীত নীতি বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহিক নির্দেশনাও এই সকল প্রতিষ্ঠান দিয়ে থাকে|অধীনস্থ কার্যালয়গুলো মূলত মাঠ পর্যায়ে সরকারি নীতি বাস্তবায়নের জন্য কম -বেশি কাজ করে থাকে | যেখানে মন্ত্রণালয় থেকে সরাসরি নির্দেশনা দেওয়া থাকে না সেসব ক্ষেত্রে অথবা সরকার নিযুক্ত কার্যালয়গুলোর নির্দেশনায় এরা পরিচালিত হয়|
মন্ত্রণালয় সংগঠন
বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনিক দায়িত্বসমূহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ভাগ করে দেওয়া হবে| একটি মন্ত্রণালয় সাধারণত দুই বা ততোধিক দপ্তরে বিভক্ত থাকবে এবং একজন মন্ত্রী তার সার্বিক দায়িত্বে থাকবেন| কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে দুই বা ততোধিক মন্ত্রণালয় একই মন্ত্রীর অধীনে থাকবে| সাংগঠনিক একক হিসেবে মন্ত্রণালয়ে একজন সচিব এবং সচিবালয়ে তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন অংশ অন্তর্ভুক্ত থাকবে| বাংলাদেশ সরকারের একজন সচিব মন্ত্রণালয়ের কার্যকরী এবং প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে ভূমিকা পালন করবেন| সচিবের কাজ চার ধরণের (ক)তিনি প্রশাসনিক এবং নীতি সংক্রান্ত সকল বিষয়ে মন্ত্রীর প্রধান পরামর্শক, (খ)তিনি তাঁর মন্ত্রণালয়, তৎসংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং তাঁর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা ও আর্থিক অবস্থার জন্য দায়ী, (গ) মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদীয় কমিটির নিকট তিনি আর্থিক পরিস্থিতির বিবরণ দিবেন, (ঘ) অবশেষে, প্রধান দাপ্তরিক কর্মকর্তা হিসেবে দাপ্তরিক সকল ব্যয় তিনিই তদারক করবেন|
যখন মন্ত্রণালয়ের কাজ সচিবের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে তখন একজন যুগ্ম সচিবসহ এক বা একাধিক শাখা প্রতিষ্ঠা করা হবে অথবা প্রত্যেক শাখার দায়িত্বে একজন অতিরিক্ত সচিব থাকবেন| এক্ষেত্রে যুগ্ম সচিব বা অতিরিক্ত সচিব সচিবালয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন|
মন্ত্রণালয়ের কাজ দ্রুত এবং ত্বরিত গতিতে সম্পাদনের জন্য একে বিভিন্ন বিভাগ, শাখা এবং সেকশনে ভাগ করা হয়েছে | প্রত্যেক বিভাগে একজন উপ সচিবের নিয়ন্ত্রণে দুটি শাখা থাকে| প্রত্যেক শাখার দুটি উপশাখা থাকবে একজন নিম্ন সচিবের নিয়ন্ত্রণে| উপশাখায় সেকশন কর্মকর্তার অধীনে কিছু সংখ্যক দাপ্তরিক কর্মচারী, ঊর্দ্ধতন ও অধস্তন কেরানি, মুদ্রলিখক, রোজনামচা লেখক থাকবে| নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে উপ সচিব বা নিম্ন সচিব সরাসরি মন্ত্রীর নিকট দাবি পেশ করতে পারবেন| কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে যুগ্ম সচিব বা সচিব বা উভয়ের উপস্থিতি আবশ্যক|
সচিবালয়ের নকশা
সচিবালয়ের নকশা নিম্নে দেওয়া হল:
সচিব
অতিরিক্ত সচিব যুগ্ম সচিব
যুগ্ম সচিব উপ সচিব
উপ সচিব নিম্ন সচিব
নিম্ন সচিব সহকারী সচিব
সহকারী সচিব সেকশন কর্মকর্তা
সেকশন কর্মকর্তা.
<003.176.464>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
প্রতিষ্ঠানসমূহের মানদণ্ড
সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ মূলত পদক্রম বা কলেজিয়ামের ভিত্তিতে গড়ে উঠে| পদক্রম ভিত্তিতে যে প্রতিষ্ঠানসমূহ গড়ে উঠে সেখানে উচ্চ পর্যায় থেকে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত ঊর্দ্ধতন- অধস্তন সম্পর্ক মেনে চলতে হয়| অধিকাংশ মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলো পদক্রম ভিত্তিতেই গড়ে উঠে| এর ইতিবাচক এবং নেতিবাচক উভয় দিকই আছে| এটি উপর থেকে নিচ পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে সুষ্ঠু প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে ওঠা নিশ্চিত করে| পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের কাজের সাথে সমন্বয় করে কাজের গতি ত্বরাণ্বিত করে|এটি দুটি ধারায় কাজ করে| উদাহরণস্বরূপ সেকশন কর্মকর্তা এবং মন্ত্রণালয়ে তাঁর দায়িত্বাধীন অংশ সহকারী সচিবের নিকট জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবেন যেহেতু পদক্রম অনুযায়ী সহকারী সচিবের অবস্থান এক স্তর উপরে| তেমনি সহকারী সচিব এবং মন্ত্রণালয়ে তাঁর অধীনস্থ শাখা উপ সচিবের দায়িত্বাধীন| উপ সচিব ও তাঁর দায়িত্বাধীন শাখা যুগ্ম সচিবের নিকট দায়ী থাকবেন| যুগ্ম সচিব এবং তাঁর মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেবেন মন্ত্রণালয়ের উচ্চতর পদমর্যাদাশীল সচিব| এর মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব বণ্টন এবং সঠিক স্থানে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভবপর হয়| এর পাশাপাশি প্রতি স্তরে দায়িত্বশীল প্রতিনিধি তৈরি হয়| যেকোন বড় প্রতিষ্ঠানের জন্য পদক্রম অপরিহার্য| স্বায়ত্ত্বশাসিত বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও এটি সমানভাবে প্রযোজ্য|
পদক্রমে যিনি সর্বোচ্চ পদমর্যাদায় আসীন তাঁর উপর সুবিশাল দায়িত্ব ন্যস্ত থাকে| এখানেই মূলত সমস্যা সৃষ্টি হয়| এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে গিয়ে এক নতুন ধারণার জন্ম হয় যার নাম হল “নিয়ন্ত্রণের বিস্তৃতি”|যেসব প্রতিষ্ঠানে বহু কর্মচারী নিয়োজিত তাদের পরিচালনার ভার যেন কেবলমাত্র নির্দিষ্ট একজনের উপর ন্যস্ত না থাকে সেটাই এ ধারণার সারকথা| এই সিদ্ধান্তের পেছনে কিছু অপরিহার্য কারণ রয়েছে, (ক) সীমাবদ্ধ শারীরিক সামর্থ্য, (খ) সীমাবদ্ধ জ্ঞান, (গ)সময়স্বল্পতা (যেহেতু পদক্রম অনুসারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরস্পর পরস্পরের উপর নির্ভরশীল কারণ সম্পূর্ণ কাজ সম্পাদন একটি ব্যাপার)|
কলেজিয়াম নীতি অনুযায়ী একটি প্রতিষ্ঠানের উচ্চতর পদমর্যাদায় আসীন সকল ব্যক্তি মোটামুটি একই ধরণের ক্ষমতা এবং সুযোগ-সুবিধার অধিকারী হবেন| এর সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ হল বৃটিশ মন্ত্রণালয়| সেখানে সকলেই সহকর্মী, কেউই ঊর্দ্ধতন বা অধস্তন নয়| যদিও প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান সকলের পূর্বে|এছাড়াও পরিষদ বা কমিশন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানও আছে যেমন- সরকারি পৌরসভা বা পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সভা|
সারা পৃথিবী জুড়ে অধিকাংশ মন্ত্রণালয়, দপ্তর, প্রতিষ্ঠান এই পদক্রম ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে| বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়|
<003.176.465>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
কার্যবণ্টনের নীতিসমূহ
সরকারি কার্যসমূহ কোন মন্ত্রণালয়ের উপর ন্যস্ত হবে তার কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে| যেমন-(ক) উদ্দেশ্য, (খ) কার্যপদ্ধতি, (গ)ভোক্তা এবং (ঘ) ভৌগলিক কাঠামো| যখন একটি প্রতিষ্ঠানের সবগুলো শাখা একই উদ্দেশ্যে কাজ করে তখন তাদের একত্র করে একটি পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রণালয় গড়ে ওঠে| একারণেই এদেরকে উদ্দেশ্যেনির্ভর প্রতিষ্ঠান বলা হয়ে থাকে যেমন-প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় ইত্যাদি| এই বৈশিষ্ট্যগুলোর উপর ভিত্তি করেই সারা পৃথিবী জুড়ে অধিকাংশ মন্ত্রণালয়গুলো গড়ে উঠে| যারা একই উপকরণ নিয়ে একই উদ্দেশ্যে কাজ করে তাদেরকে কার্যপদ্ধতি অনুযায়ী একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনা হয়| এভাবে একটি মন্ত্রণালয়ের কার্যপদ্ধতি সমন্বয় করা হয়| উদাহরণস্বরূপ, পূর্ত মন্ত্রণালয় প্রকৌশলীদের এবং গণস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ডাক্তারদের চাকরি দিয়ে থাকে|
ভোক্তা নির্ভর কিছু মন্ত্রণালয় আছে যারা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর জনগণের চাহিদা মেটানোর উদ্দেশ্যে কাজ করে থাকে| যেমন- শ্রম মন্ত্রণালয়, উদ্বাস্তু মন্ত্রণালয় ইত্যাদি| যদি বিভিন্ন শ্রেণীর সকল পেশাজীবী দেশের কোন নির্দিষ্ট অণ্চলের প্রয়োজনে একই সাথে কাজ করে থাকে তখন তাদেরকে একই নেতৃত্ব বা দপ্তরের অধীনে আনা হয়|ভৌগলিক ভিত্তিতে নেতৃত্ব এভাবেই গড়ে উঠে| যেমন- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেনসে ভ্যালী নেতৃত্ব, ঘানার ভোল্টা নদী চুক্তি, অস্ট্রেলিয়ার তুষারাবৃত মারে নদী প্রকল্প ইত্যাদি|
মন্ত্রণালয় বা দপ্তরগুলোর আয়তন নির্ধারণে আরো কিছু বিষয় ভূমিকা রাখে- সচিবের দায়িত্ব পরিচালনার দক্ষতা, কাজের সার্বিক সমরূপতা, সাংবিধানিক বিধানসমূহ এবং একটি দেশের ঐতিহ্য|
একটি প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনে মন্ত্রীর প্রধান পরামর্শক হিসেবে সচিবের প্রশ্নাতীত অবস্থান যেমন চাপের তেমনি গুরুত্বপূর্ণ| মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের প্রশাসনিক দায়িত্ব এবং মন্ত্রীর প্রধান পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য ১৯৩৭ সালে গঠিত ম্যাক্সওয়েল কমিটি একজন কর্মকর্তার উপরেই গুরুত্ব আরোপ করে| এই কমিটির মতানুযায়ী, “মন্ত্রণালয়ের সার্বিক দায়িত্ব সম্পাদনের জন্য মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক প্রধান এবং মন্ত্রীর পৃথক দায়িত্ব রয়েছে, দপ্তরের দক্ষতা বৃদ্ধি বা নীতি পালনে এ ছাড়া অন্য কোন ব্যবস্থাই সহায়ক হবে না”
<003.176.466>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
অতএব, একটি মন্ত্রণালয়ের সামগ্রিক দায়িত্বে একজন সচিব-কে রুটিন মাফিক ভারমুক্ত করে সমন্বয়ের কার্যাবলী, বিভাগীয় কার্য সম্পাদনে নিয়োগ দেয়া অধিকতর যুক্তিসঙ্গত হবে। একটি মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরে গঠিত প্রত্যেকটি বিভাগের নেতৃত্বে একজন করে অতিরিক্ত সচিব থাকবেন। এই পুনঃবিন্যাস সচিবদের সেই সুযোগটি দিবে যার ফলে তারা নীতি নির্ধারণ ও আধপোড়া নীতি কোন পরিপক্ক বিবেচনা ছাড়া গ্রহণ রোধ করতে সময় ও মনোযোগ দিতে পারবেন।
সেখানে অবশ্যই উপযুক্ত জনশক্তির কোন অপ্রয়োজনীয় ও পরিহার্য অপচয় হওয়া যাবে না যখন প্রশাসনের অবৈজ্ঞানিক এবং এমনকি ত্রুটিপূর্ণ সংগঠনের কারণে তীব্র সংকট দেখা দিবে।
উপরিউক্ত বক্তব্য বিবেচনায় আনা হলে এটা মনে হচ্ছে যে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীপরিষদ নিম্নোক্ত মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বয়ে গঠিত হওয়া উচিত: প্রতিরক্ষা, অর্থ, পররাষ্ট্র, খাদ্য ও কৃষি, বাণিজ্য ও শিল্প, শিক্ষা, গণস্বাস্থ্য, পরিবহন ও যোগাযোগ, জ্বালানি, খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদ, সমাজ উন্নয়ন ও স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন, সেচ ও বিদ্যুৎ, স্বরাষ্ট্র, আইন ও সংসদ বিষয়ক, সংখ্যালঘু ও শরণার্থী পুনর্বাসন, তথ্য ও সম্প্রচার, শ্রম ও কর্মসংস্থান, এবং গণপূর্ত, গৃহায়ণ ও সরবরাহ, এবং সেবা ও লোক প্রশাসন
বিদ্যমান প্রাদেশিক সচিবালয় অধিদপ্তর
বর্তমানে প্রাদেশিক সচিবালয় নিম্নলিখিত সচিবালয় বিভাগ দ্বারা গঠিতঃ
(১) কৃষি, কৃষি বিপণন, সমবায়,বন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ; (২) মৌলিক গণতন্ত্র ও স্থানীয় সরকার; (৩)শিল্প এবং বাণিজ্য ; (৪) শিক্ষা (৫) অর্থ; (৬) খাদ্য; (৭) স্বাস্থ্য, শ্রম ওসমাজ কল্যাণ; (৮) হোম, পুলিশ ও আনসার, কারাগার এবং বেসামরিক প্রতিরক্ষা; (৯) তথ্যএবং জাতীয় পুর্নগঠন; (১০) আইন ও সংসদ বিষয়ক; (১১) পরিকল্পনা; (১২)রাজস্ব ও ত্রাণ; (১৩) যোগাযোগ, রেলপথ, জলপথ, এবং সড়ক পরিবহন;(১৪) পরিষেবাদি ও সাধারণ প্রশাসন; এবং (১৫) ওয়ার্কস, বিদ্যুৎ ও সেচ।
উপরে বর্ণিত এই সকল বিভাগ মন্ত্রনালয়ে পরিণত হবে।সেই সাথে, সংযুক্ত অফিসের কার্যক্রম, বিভাগ, অধিদপ্তর ও অধীনস্থ দপ্তরসমূহ মূলত পরিবর্তিত পরিস্থিতির আলোকে পুনরায় সংগঠিত করতে হবে।
প্রাদেশিক অধিদপ্তর
বিদ্যমান প্রাদেশিক সচিবালয় নিম্নলিখিত অধিদপ্তরের অধীনে হয়ঃ (১)কৃষি অধিদপ্তর; (২) বিপনন পরিদপ্তর; (৩) মৎস্য অধিদপ্তর:(৪)পশু পরিদপ্তর; (৫) বনের প্রধান সংরক্ষক; (৬) সমবায় নিবন্ধক;(৭) দমকল পরিদপ্তর; (৮) প্রধান প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল; (৯) শিল্প ও বাণিজ্য অধিদপ্তরের; (১০) সরবরাহ পরিদপ্তর;(১১) জনশিক্ষা পরিদপ্তর; (১২) কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর; (১৩)অন্তঃশুল্ক এবং করব্যবস্থা পরিদপ্তর; (১৪) জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তর; (১৫)ক্রয় সংক্রান্ত, বিতরণ ও রেশন (খাদ্য) পরিদপ্তর; (১৬) আন্দোলন এবং স্টোরেজ পরিদপ্তর; (১৭) পরিদর্শন ও নিয়ন্ত্রণ; (১৮) স্বাস্থ্য সেবা পরিদপ্তর; (১৯)শ্রম পরিদপ্তর; (২০) সমাজ সেবা অধিদপ্তর; এর (২১) পুলিশ মহাপরিচালক; (২২) কারাগার মহাপরিদর্শক ; (২৩) আনসার ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর;(২৪) E.P.R(জরুরী প্রস্তুতি এবং প্রতিক্রিয়া) পরিদপ্তর; (২৫)সর্বসাধারণ পরিদপ্তর
<003.176.467>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(২৫) জনসংযোগ পরিচালনা পরিষদ (২৬) জাতীয় পুনর্নির্মাণ ব্যুরো (২৭) রেজিস্ট্রেশনের মহাপরিদর্শক (২৮)লিগ্যাল রিমেমব্রেন্স; (২৯) পরিসংখ্যান ব্যুরো (৩০) জমি জরিপ ও রেকর্ড পরিচালক (৩১) ত্রান ও পুনর্বাসন কমিশনার (৩২) প্রধান প্রকৌশলী; সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ (৩৩)দুর্নীতি দমন কমিশন; (৩৪) জনকল্যান কমিশন; (৩৫) যানবাহন ও যোগাযোগ কমিশন ; (৩৬) প্রধান প্রকৌশলী, নির্মাণ ও স্থাপনা।
এই পরিচালনা পরিষদ গুলি ছাড়াও আরও অনেক সংশ্লিষ্ট অফিস আছে। বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে এদের পুনর্গঠন করতে হবে
পাবলিক কর্পোরেশন
দেশে বিশাল পরিমানে পাবলিক কর্পোরেশন ও বিভিন্ন অন্য স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান! এদের প্রতিটিই অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত। তারা দুটি সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন পাবলিক সংস্থা- (ক) নমনীয় কার্যনীতি (খ) অর্থনৈতিক স্বায়ত্তশাসন
এটা তাদের অন্যান্য সরকারি বিভাগসমুহের মতো সরকারি সুনির্দিষ্ট বাঁধাধরা নিয়মনীতির বাইরে গিয়ে তাদের কর্তব্য পালনে সহায়তা করে! তাদের কর্মচারীদে ভিতর বিভিন্ন সরকারি দপ্তর থেকে আগত অফিসারেরা রয়েছেন। প্রায় সকল ক্ষেত্রেই চেয়ারম্যান একজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা। তারা এইসব সংস্থায় কিছুসময় কাজ করেন এবং এরপর আবার তাদের নিজের কাজে ফেরত যান। তারা এই সংস্থাসমুহের কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা রাখতে পারেন না। ফলস্রুতিতে স্বায়ত্তশাসিত এসব সংস্থার কাজ বাধাগ্রস্ত হয় এবং দেশেরও ক্ষতি হয়। এই দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য “ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস” নামক নতুন একটি পদের সৃষ্টি করা উচিত। তারা হবে পূর্ণকালীন অফিসার এবং এদের বাছাই সরকারি ও প্রাইভেট দুধরনের প্রতিষ্ঠান থেকেই করা হবে। অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতাসম্পন্ন সরকারি করমচারিদের এই পদের পূর্ণকালীন মেম্বার হওয়া উচিত।
পাবলিক কর্পোরেশন গুলো কতটা স্বায়ত্তশাসিত? বর্তমান পরপ্রেক্ষিতে স্বায়ত্তশাসনটা কেবল দেশেই সীমাবদ্ধ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এটা প্রকৃত স্বায়ত্তশাসন হতে হবে। প্রশাসনিক অধিদপ্তরগুলির নিয়ন্ত্রন থেকে তাদের মুক্ত করতে হবে যাতে তাদের কাজকর্মে ব্যাঘাত না ঘটতে পারে। এই সংস্থাগুলির নিজেদের তহবিল ব্যবহারের পূর্ণ অধিকার থাকতে হবে।
এখনো পর্যন্ত বিদ্যমান সংস্থাগুলোয় রয়েছেঃ ১) বাংলাদেশ শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন ২) বাংলাদেশ শিল্প কর্পোরেশন ৩) বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন ৪) বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন ৫) বাংলাদেশ পাট বিপনন কর্পোরেশন ৬) বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন ৭)বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন ৮) বাংলাদেশ পানি ও শক্তি উন্নয়ন কর্পোরেশন ৯) বাংলাদেশ জাহাজ কর্পোরেশন ১০) বাংলাদেশ পথ ও পরিবহন কর্পোরেশন ১১) বাংলাদেশ অন্তর্দেশীয় জলপথ যোগাযোগ কর্তৃপক্ষ ১২) বাংলাদেশ রেলওয়ে বোর্ড ১৩) ঢাকা পানি সরবরাহ এবং নর্দমা কর্তৃপক্ষ ১৪) চিটাগং পানি সরবরাহ এবং নর্দমা কর্তৃপক্ষ ১৫) ঢাকা ক্ষতিপুরন তহবিল ১৬) চিটাগং উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ১৭) খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
এরই সাথে আরও কিছু কর্পোরেশন স্থাপন করা জরুরি। একজন উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন এই পুনর্গঠন ও এদের কার্যবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা হোক…
<003.176.468>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
স্থানীয় প্রশাসন মৌলিক প্রতিজ্ঞাগুলো যেটির উপর স্থানীয় প্রশাসন ভিত্তি হবে: স্বাশসনের জন্য ভালো সরকার ব্যবস্থার বিকল্প নেই। আওয়ামীলীগ গ্রামীণ ও শহুরে উভয় এলাকায় পূর্ণ গণতান্ত্রিক স্থানীয় স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সকল স্তরে বড় উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য একটি উন্নত, সুসংগঠিত স্থানীয় স্বশাসন অপরিহার্য। পরন্তু, শক্তিশালী, দক্ষ, এবং গণতান্ত্রিক স্থানীয় স্বশাসন, শিল্প অথবা সরকার অথবা প্রশাসনে মানুষদের শিক্ষিত করা বাদে, দেশে স্বৈরাচারী একনায়কতন্ত্র বৃদ্ধির বিরুদ্ধে শক্তিশালী আত্মরক্ষার উপায় হওসেবে কাজ করবে। কেন্দ্র থেকে স্থানীয় এলাকায় ক্ষমতা এবং কর্তৃত্ব বিকেন্দ্রীকরণেও তারা নেতৃত্বদান করবে। কোনো রাজ্যে স্বাধীনতা থাকে না যেখানে কেন্দ্রে ক্ষমতার অতিরিক্ত একাগ্রতা থাকে। এটি গ্রামীণ জনসাধারণকেও প্রকৃত অর্থে অংশগ্রহণে উদ্ভূত করবে। আবার, তাদের দ্বারা প্রভাবিত প্রয়োজনগুলো অঙ্গীভূত করার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পরবর্তীতে সেগুলো বাস্তবায়ন করা তাদের প্রধান দায়িত্ব থাকবে। আমাদের সুস্পষ্ট সত্য স্বীকার করতে হবে যে সব সমস্যার প্রকোপ কেন্দ্রীয় নয়; সমস্যার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয়য় সরকারের উপর ছেড়ে দেওয়া যা সমাজের শুধুমাত্র একটি অংশকে প্রভাবিত করবে যা সে অংশে দায়িত্বানুভূতির এবং উদ্ভাবনের অভ্যাস ধ্বংস করবে। প্রদত্ত এলাকার বাসিন্দাদের সাধারণ অভীষ্ঠ লক্ষ্য প্রয়োজন, যা শুধুমাত্র তারাই পুরোপুরি জানে। তারা অতঃপর দেখতে পাবে যে তাদের নিজেদের পরিতৃপ্ত করার ক্ষমতা তাদেরকে অনেক বেশি সুখ সৃষ্টির একটি প্রাণশক্তির গুণ প্রদান করবে তারপর ঘটনা আসবে যদি পরিতৃপ্তি যোগায়,অথবা নিয়ন্ত্রণ, ব্যতিরেকে। প্রশাসনের জন্য সবসময় স্থানীয় মতামতের প্রতি সহানুভূতিশীল ক্ষমতা সজীবকরণ অনুপস্থিত থাকে,এটি চিন্তা ও চাহিদার আত্ততা এবং অভিব্যক্তি লক্ষ্য করতে ব্যর্থ হশ যা সফল সরকারের জন্য জরুরি। এটি স্থানের প্রতিভার অভাব বোধ করে। প্রশাসন from without ভালোভাবে ধিক্কারে প্ররোচিত করতে পারে কিন্তু it cannot elicil creative support from those over whom it rules. এটি করার প্রক্রিয়ার সাথে যারা জড়িত তাদের আগ্রহ জাগানোর জন্য যা করতে হবে তা হতে এর দূরত্ব অনেক। স্থানীয় স্বশাসকের অঙ্গসংগঠন পুনঃগঠন এবং পুনর্নির্মাণের সাথে সম্পর্কিত সমস্যাগুলো : (ক) স্থানীয় সরকারের ক্ষেত্র। আওয়ামীলীগের ইশতেহারে সঠিকভাবে ইঙ্গিত করা আছে যে বিদ্যমান উপবিভাগগুলো, উপযুক্ত পরিমার্জন এবং সমন্বয়ের সাথে, জেলাতে রূপান্তরিত হবে। জনসংখ্যার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রত্যেক জেলা কার্যকর প্রশাসনের জন্য অনেক বিশাল। জনসাধারণ এবং কর্মকর্তাদের অনুপাত এতই বড় যে জেলাগুলো সবসময় underadministere। বেঙ্গল কমিশনের রিপোর্ট,১৯৪৩ এ এটির ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।প্রত্যেক উপবিভাগ এক একটি জেলায় রূপান্তরিত হবে। প্রত্যেক থানা উপযুক্ত পরিমার্জনের সাথে উপবিভাগে রূপান্তরিত হবে। উক্ত মাপ অনেক বিলম্বিত হয়েছে। এটি অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার একটি অংশ। (খ) গণতান্ত্রিক স্থানীয় অঙ্গসংগঠন। প্রত্যেক অঙ্গসংগঠন, গ্রামীণ এবং শহুরে উভয় এলাকায়, সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচিত হবে। প্রত্যেক স্থানীয় অঙ্গসংগঠন-জেলা বোর্ড, ইউনিয়ন বোর্ড এবং পৌরসভার সদস্য সংখ্যা প্রত্যেক এলাকার ভোটার সংখ্যা নিরূপণের পরে নির্ধারিত হবে। যেখানে সম্ভব উক্ত সংগঠনগুলোর সাথে মহিলাদের যুক্ত করার চেষ্টা করতে হবে। নির্বাচিত সদস্যগুলো স্ব স্ব চেয়ারম্যান অথবা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবে।
<003.176.469>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(গ) কার্যক্রম। স্থানীয় প্রতিষ্ঠানসমুহের কার্যক্রম সুনির্দিষ্ট থাকবে। এ সম্পর্কে কিছুই স্থায়ী বা অপরিবর্তনীয় নয়। ইহা অভিজ্ঞতার আলোকে পরিবর্তন করা যাইবে। কার্যাবলী অধিকন্তু নৈমিত্তিক ও উন্নয়ন নিয়ামক ইত্যাদিতে উপবিভক্ত হতে পারে।
(ঘ) কমিটি ব্যাবস্থা। প্রতিটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের একটি সুপরিকল্পিত কমিটি থাকতে হবে। স্থানীয় কর্মকর্তাগন এই কমিটিতে সম্পৃক্ত থাকবে।
(ঙ) আর্থিক সংস্থান। অর্থের উৎস হবে – ১) স্থানীয় করসমূহ ও অন্যান্য অর্থ-সম্পত্তি ২) সরকারী অনুদান। বিদ্যমান রাজস্বের উৎস সমূহ যত্নসহকারে পর্যবেক্ষন করতে হবে। এবং ৩) উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড।
(চ) স্থানীয় সরকার সেবা। ১৯৪৩ সালে সিমন কমিশন একটি সুগঠিত স্থানীয় সরকার সেবার অভাবকে উপমহাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যাবস্থার অন্যতম প্রধান বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন। একটি সুগঠিত স্থানীয় সরকার ব্যাবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এই সেবা সংশ্লিষ্ট সকলেই স্ব স্ব স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে থাকবে।
(ছ) থানা কমিটি। প্রত্যেক থানাধীন সকল ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যানগণকে নিয়ে থানা পর্যায়ে সমন্বয় কমিটি গঠিত হতে পারে। ইহা স্ব স্ব স্থানীয় পরিষদকে আহ্বান করতে পারে।
(জ) স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পর্ক। এই সম্পর্কের মূল ভিত্তি হবে পারস্পরিক সমঝোতা, সাহায্য ও সহযোগিতা। কেন্দ্রীয় সরকার ও স্থানীয় স্বায়ত্বশাসিত পরিষদের মধ্যে সম্পূর্নরূপে জনকল্যানে নিবেদিত একটি প্রকৃত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক থাকবে। যেখানেই বা যখনই কোন স্থানীয় স্বায়ত্বশাসিত পরিষদ মারাত্মক ত্রুতিপূর্ন হবে বা গুরুতর কোন অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হবে, তৎক্ষণাৎ তা বিলুপ্ত হয়ে যাবে, এবং অতিসত্ত্বর নতুন নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনই তাদের ত্রুটির সাজা প্রদানের সুযোগ পাক।
২য় অধ্যায়
প্রশাসনিক ব্যাবস্থা
সচিবালয়
বাংলাদেশ সরকারের সচিবালয় নিম্নলিখিত মন্ত্রনালয়সমূহ নিয়ে গঠিত হবেঃ
১. প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়
২. অর্থ মন্ত্রনালয়
৩. পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়
৪. খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রনালয়
৫. পাট মন্ত্রনালয়
৬. শিল্প ও বানিজ্য মন্ত্রনালয়
৭. শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষনা বিষয়ক মন্ত্রনালয়
৮. জনস্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়
৯. পরিবহন ও যোগাযোগ মন্ত্রনালয়
১০. জ্বালানি, খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়
১১. সাম্প্রদায়িক উন্নয়ন, স্বসাশন ও পল্লী গৃহায়ন মন্ত্রনালয়
১২. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়
১৩. সেচ ও যান্ত্রিক শক্তি বিষয়ক মন্ত্রনালয়
১৪. আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়
১৫. পরিসেবা ও জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়
১৬. শরনার্থী পুনর্বাসন ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রনালয়
১৭. শ্রম, কর্মসংস্থান ও সমাজ কল্যান মন্ত্রনালয়
১৮. তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রনালয়
১৯. কলকারখানা, গৃহায়ন ও রসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়
<003.176.470>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
<003.176.471>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৯। পরিবহন ও যোগাযোগ মন্ত্রাণালয়
১০। জ্বালানী, খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রানালয়
১১। গৃহায়ণ,সমাজ উন্নয়ন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রানালয়
১২। স্ব-রাষ্ট্র মন্ত্রানালয়
১৩। সেচ এবং বিদুৎ মন্ত্রাণালয়
১৪। আইন এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রাণালয়
১৫। সেবা এবং সাধারণ প্রশাসন বিষয়ক মন্ত্রানালয়
১৬। সংখ্যালঘু এবং উদ্বাস্তু পুনর্বাসন মন্ত্রানালয়
১৭। শ্রম, কর্মসংস্থান এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রানালয়
১৮। তথ্য এবং যোগাযোগ মন্ত্রানালয়
১৯। কর্মসংস্থান, গৃহায়ন ও সরবরাহ মন্ত্রানালয়
সচিবালয় এবং মন্ত্রানালয়ের বিস্তারিত কাঠামো নিম্নরুপঃ
১।প্রতিরক্ষা মন্ত্রানালয়
কার্যক্রম এবং সংগঠনসমূহ
এই মন্ত্রানালয় সরকারের প্রতিরক্ষা বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন ও নিরাপদ প্রয়োগের জন্য কেন্দ্রের নিকট দায়বদ্ধ।
অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলীঃ
১। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা এবং প্রতিরক্ষা বিষয়ক সকল কার্যাবলি সহ যুদ্ধ পূর্ববর্তি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং যুদ্ধ পরবর্তি অব্যাহত আইন জুরীদের মাধ্যমে প্রণয়ন এবং সমাপ্তির ক্ষেত্রে নৌ গবেষণা ও নদী প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা নেয়া।
২। বাংলাদেশের স্থল, নৌ, বিমানবাহিনী এবং অন্যান্য সামরিকবাহিনীর রক্ষণাবেক্ষণ করা।
৩। সেনানিবাস গঠন, সেনানিবাসের সীমানা নির্ধারণ, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনা, সেনানিবাসের সংবিধান এবং নীতিমালা প্রণয়ন।
৪। সেনা, নৌ এবং বিমানবাহিনী একসাথে তোপ কারখানার কাজ করা।
৫। প্রতিরক্ষার জন্য সম্পদ অধিগ্রহণ বা প্রদানের ব্যাপারে কাজ করা। অবৈধ দখলদারদেরকে সরকারি আবাসস্থল থেকে উচ্ছেদের কাজেও প্রতিরক্ষা বিভাগ কাজ করবে।
৬। বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিনিধিত্ব সমূহঃ
(a) সেনা সদস্যদেরকে পেশাগত, বৃত্তিমূলক এবং কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান।
(b) পদোন্নতি বা বিশেষ বিষয়ে পড়াশোনা বা গবেষণার জন্য ‘প্রতিরক্ষা বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান ‘।
<003.176.472> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৭। সামরিক কারখানাঃ
সরকারের অন্যান্য মন্ত্রানালয়ের মত প্রতিরক্ষা মন্ত্রানালয়ও বিভিন্ন কাজ করবে। সেনা, নৌ এবং বিমান সদর দপ্তর গুলা সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর প্রধাণদের নিয়ন্ত্রনে কাজ করবে। “আন্তঃ পরিসেবা প্রতিষ্ঠান ” নামে সংগঠনের মাধ্যমে খাদ্য সেবা প্রদানক করে থাকে তিনটি বাহিনীতেই। যা মন্ত্রানালয় থেকে সরাসরি পরিচালনা করা হয়।
মন্ত্রানালয়টি মন্ত্রিপরিষদের একজন মন্ত্রি দিয়ে পরিচালিত হবে। তাকে একজন প্রতিমন্ত্রী এবং দুইজন মন্ত্রিপরিষদ সচিব সহায়তা করবে।
প্রতিরক্ষা বিষয়ক সকল নীতিমালা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে
(a) সামরিক/প্রতিরক্ষা মন্ত্রিপরিষদ কমিটিঃ
এই পরিষদের সভাপতি হবেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যান্য সদস্যরা হবেন প্রতিরক্ষা, শিক্ষা এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণা মন্ত্রানালয়ের সাথে স্বরাষ্ট্র, বিনিয়োগ এবং পরিবহণ ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
প্রতিরক্ষা পরিষদ প্রতিরক্ষা মন্ত্রিপরিষদের হয়ে সামরিক সকল গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা দেখাশোনা করবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদকে প্রতিবেদন দিবে। সামরিক পরিষদের অবর্তমানে সভাপতি সিদ্ধান্ত নিবেন কার কাছে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
(b) প্রতি
রক্ষা মন্ত্রিপরিষদ(আন্তঃ সেবা) : প্রতিবেদন যদি গুরুত্বপূর্ণ না হয় তবে তা প্রতিরক্ষা পরিষদের মন্ত্রিপরিষদে দাখিল না করে তা প্রতিরক্ষা মন্ত্রিপরিষদ(আন্তঃ সেবা) বরাবর সিদ্ধান্তের জন্য দাখিল করতে হবে।প্রতিরক্ষা মন্ত্রিই হবেন কমিটির সভাপতি। অন্যান্য সদস্যরা হবেন সহকারী সচিব, নৌ,সেনা ও বিমান বাহিনী প্রধানদের।
(c) কর্মচারী পরিষদের প্রধানগনঃ এই পরিষদ তিন বাহিনীর সেনা বিষয়ক পেশাগত উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব দ্বারা এই কমিটির পূর্বোক্ত সচিব নিয়োগ হবে।
সচিবালয়ঃ
সচিবালয় কর্মকর্তারা হচ্ছেঃ
সচিব ১
যুগ্ম সচিব ২
সহকারী সচিব ৭
সহ-সহকারী সচিব ১৫
সেকশন অফিসার ২০
<003.176.473>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
মন্ত্রণালয়ের সচিবরা নিম্নলিখিত শাখায় সংগঠিত হবেন। বিভাগগুলো আবার উপশাখায় বিভক্ত : (১) অস্ত্র কারখানা শাখা (২) অ্যাডজুটেন্ট শাখা (৩) বিমান শাখা (৪) বেতন এবং পেনশন শাখা (৫) সাধারণ কর্মচারী শাখা (৬) সমন্বয় শাখা (৭) প্রহরা শাখা (৮) নৌ শাখা (৯) কর্মী শাখা (১০) নিবন্ধনন শাখা (১১) কোয়ার্টারর সাধারণ শাখা (১২) জনগনের সৈন্যবাহিনী শাখা (১৩) প্রশাসনিক শাখা Defiance উৎপাদন শাখা Defiance মন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে, এবং defence উৎপাদনের কন্ট্রোলার জেনারেলকে বিভাগীয় প্রধান করে সেখানে একটি Defiance উৎপাদন বোর্ড থাকবে। বোর্ডের বাকি সদস্যরা বাংলাদেশ সরকারের তিনটি সেবার জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি হবে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি, ডিরেক্টর-জেনারেল, তোপ কারখানা, বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা। Defiance উৎপাদনের সাথে সম্পর্কিত রাষ্ট্রীয় সেবা গবেষণা সমন্বয়, উন্নয়ন, এবং ক্রিয়াকলাপ পরিকল্পনা বোর্ডের প্রধান কাজ। Defiance উৎপাদনের কন্ট্রোলার জেনারেল Defiance উৎপাদন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী এবং সংগঠনের বিভাগীয় প্রধানই defiance উৎপাদনের কন্ট্রোলার জেনারেল এবং সমন্বয় এবং Defiance উৎপাদন এবং উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং উৎপাদন প্রভাব পরিচালনা তার সামগ্রিক দায়িত্ব। সেনাবাহিনীর প্রযুক্তিগত উন্নয়নও তার অধীনে আসবে। সেনাবাহিনী সদরদপ্তর সেনাবাহিনী সদরদপ্তর সরাসরি সেনাবাহিনী প্রধানের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এটি নিম্নলিখিত প্রধান শাখায় বিভক্ত হতে পারে যা পুনরায় অধিদপ্তরে বিভক্ত হবে: (১) সাধারণ কর্মচারী শাখা। উক্ত শাখা, সাধারণ কর্মচারী প্রধানের অধীনে, সেনাবাহিনীর নীতি, সেনাবাহিনী কার্যক্রম, গোয়েন্দা, সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা, সংগঠন এবং সেনাবাহিনীর আন্তঃযোগাযোগ সেবা এবং নতুন অস্ত্র ও যন্ত্রপাতির পরীক্ষণের সাথে সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক বিষয় কারবার করবে।, (২)অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল শাখা। লোকবল সংগ্রহ এবং সংগঠনের সাথে সম্পর্কিত বিষয়ের জন্য উক্ত শাখা দায়ী থাকবে; অবকাশ, উৎপাদনের সংক্রান্ত সাধারণ নীতি
<003.176.474>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
২ এডজুনেন্ট জেনারেল’স ব্র্যাঞ্চ।এই শাখা জনশক্তি,নিয়োগ এবং সংস্থা,ছুটি সংক্রান্ত সাধারন নীতিমালা,উতপাদন,বর্ননামূলক,বেতন-ভাতা এবং অবসরকালীন ভাতা,সাধারন কল্যানভাতা,মনোবল,স্বাস্থ্য,সামরিক আইন এবং সেনাবাহিনীর সকল সদস্যের জন্য বেতনভাতার জন্য বাজেট বরাদ্দ ইত্যাদি সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্বে থাকবে।
৩ কোয়াটার মাস্টার জেনারেল’স ব্র্যাঞ্চ।এই শাখা সকল কর্মচারীর চলাচল,গুদাম,সাজসরঞ্জাম বিধান,খাদ্য সামগ্রী এবং গুদামজাতকরন সংক্রান্ত বিষয় এবং তদন্ত,কর্ম পরিকল্পনা,সেনাবাহিনী এবং এই সংক্রান্ত বিষয়ের জন্য আবাসস্থল,সামরিক ফার্মের জন্য প্রশাসনিক ভবন,নতুন করে ঘোড়া সরবারহ করা এবং পশু চিকিৎসা সেবা,সেনাবাহিনী ডাক এবং ক্যান্টিন সেবা,অগ্নিনির্বাপন সেবা,এম ই এস কাজের বিলের জন্য প্রজুক্তিগত পরীক্ষা এবন কিউ সাধারন নাগরিকদের জন্য প্রশাসনিক সেবা সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্বে থাকবে।
৪ মাষ্টার জেনারেল অফ অর্ডিনেন্স ব্র্যাঞ্চ।এটি দেখভাল করবে বিধান,গুদাম,মেরামত, রক্ষনাবেক্ষন এবং গোলা সংরক্ষনের বিষয় সংক্রান্ত এবং এম টি যানবাহনের উপকরন,যুদ্ধোপকরন এবং গুলি,সিগনাল সংক্রান্ত সাজসরঞ্জাম,সেনাবাহিনীর সকলের জন্য একটি দোকান এবং বস্ত্র সংক্রান্ত বিষয়।
৫ প্রধান প্রকৌশলীর শাখা।এটির দায়িত্বে থাকবে
ক নকশা,সকল আবাসস্থল নির্মান এবং রক্ষনাবেক্ষন ও এয়ারফিল্ডের ডক নির্মান,সামরিক রাস্তা,পানি সর্বরাহ,বিদ্যুত এবং আলো সরবরাহ, রেফ্রিজারেশন এবং আসবাবপত্র সহ তিনটি সেবার জন্য কাজ করবে।
খ ইঞ্জিনিয়ার ইউনিট স্থাপন যাতায়াত ব্যাবস্থা সহ,বোমা নিস্ক্রিয় এবং মাইন নিস্ক্রিয় ইউনিট,তাদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষন,সংস্থা,প্রশাসনিক ব্যাবস্থা ঃ অপরাশেনাল পরিকল্পনা এবং গোয়েন্দাবৃত্তি।
গ গবেষনা,নকশা এবং প্রকৌশল উপকরন এর জন্য উন্নয়ন, প্রকৌশল প্ল্যান্ট,বিস্ফোরক ধ্বংসকরন,এম ই এস সহ মাইন ডিটেকশন উপকরন সংগ্রহ।
ঘ আহারন,অধিষ্ঠিত এবং প্রকৌশল ভান্ডার বিতরন(পরিবহন ভান্ডার সহ).
এম ই এস কর্মচারীদের এবং ইঞ্জিনিয়ার কোরের প্রশাসনিক ব্যাবস্থা
৬ সামরিক সচিবের শাখা।এটির দায়িত্ব হবে সেনাবাহিনীতে কমিশন প্রদান,পোস্টিং,বদলি,পদন্নতির ছাড়পত্র,অবসর,পদত্যাগ,সেনাবাহিনীর সমস্ত নন মেডিকেল অফিসারদের বাতিলকর।এটি রক্ষনাবেক্ষন করবে গোপন প্রতিবেদন এবং সেনাবাহিনীর সমস্ত নন মেডিকেল অফিসারদের ব্যাক্তিগত রেকর্ড সংরক্ষন এবং অফিসারদের উচ্চ পদে পদন্নতির সুপারিশের জন্য সচিবালয়কে সরবরাহ করা।এই শাখা আরো প্রদান করবে সম্মান এবং সাধারন নাগরিকদের থেকে সেনাবাহিনীকে পুরস্কার প্রদান।
আদেশ এবং অঞ্চলঃ
সেনা সদর দপ্তরের অধীনে,সেনাবাহিনী তার কমান্ডের অধীনে সংগঠিত হচ্ছে,লেঃ জেনারেল পদমর্যাদার প্রত্যেকে একজন জি ও সি এর দায়িত্বপালন করবে।কমান্ড এরিয়া ভিত্তিক ভাগ হবে,একজন জি ও সি এর কমান্ডের অধিনে প্রত্যেক মেজর জেনারেল পদমর্যাদার এবং তাদের এরিয়া ভাগ হয়ে যাবে প্রত্যেক বিগ্রেডিয়ারের অধীনে সাব এরিয়াতে।এটি একটি অপরিবর্তনীয় সৈন্যবিন্যাস, the operational mobile formations corresponding to the Command, Area, and Sub-Area being respectively Army, Divisions and Brigade. . In so far as the
organisation of active formation is concerned, a Corps Headquarters to command and
control two or more Divisions
<003.176.475>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
নৌ সদরদপ্তর।
নৌ সদর দপ্তর নিয়ন্ত্রন করবে প্রশাসনিক এবং সব জাহাজের অপারেশন এবং স্থাপনা।এই সংস্থার প্রধান হবে নৌবাহিনীর প্রধান।তার অধীনে চারজন প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার থাকবে এবং নৌ সচিব যেভাবে নিচে দেখান হলঃ
১ নৌ কর্মচারীদের উপ প্রধান।সে অপারেশনের সাথে জড়িত সকল কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকবে,পরিকল্পনা,চলাচল,গোয়েন্দাবৃত্তি,নিরাপত্তা,যোগাযোগ,জলভাগের মানচিত্র,প্রকাশনা এবং প্রচারনা,পরিসংখ্যান এবং প্রকল্প।পাশপাশি,নৌবাহিনীর উপ প্রধান এই কাজের উপ সমন্বয়কারী থাকবে নৌ সদর দপ্তরের অন্য শাখার এবং নৌবাহিনী প্রধানের অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্বপালন করবে।
২ চিফ অফ পার্সেনোল।সে নিয়োগ,চাকরির শর্ত,প্রশিক্ষন,কল্যানভাতা এবং নৌ কর্মচারীদের শৃঙ্খলা,কর্মকর্তাদের নিয়োগ এবং ফ্লিট কে সাধারনভাবে দৃঢ় করার দায়িত্বে থাকবে।পাশাপাশি সে শিক্ষা,চিকিৎসা সর্বরাহ এবং victualling,পরিশোধ,অবসর এবং ভাতা।
৩ চিফ অফ ম্যাটেরিয়াল।সে জাহাজের ব্যবস্থাপনা,অস্ত্র এবং উপকরন,ডকইয়ার্ডের সুবিধা এবং তাদের অর্জনের সংস্থান ও জাহাজ নির্মাণ এবং উৎপাদন ও নৌ গুদামের সংস্থাপন।পাশপাশি সে নোবাহিনীর যুদ্ধোপকরন সরবরাহ এবং অর্ডিন্যান্স তদন্ত সংস্থা ও বৈজ্ঞানিক গবেষনার জন্য এবং উন্নয়নের জন্য দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।
৪ নৌবাহিনী এভিয়েশনের প্রধান।তিনি সাধারন নির্দেশনা এবং নৌবাহিনী্র সমস্ত বিমান বিষয়ক সমন্বয় পরিকল্পনা প্রনয়ন সহ,কর্মচারী এবং উপাদানবাচক দৃস্টিভঙ্গি ও প্রশিক্ষনের মহরার ক্রিয়াকর্মের উপর নিয়ন্ত্রন এবং নৌবাহিনী বিমান ইউনিটের প্রশাসনিক দায়িত্বের জন্য নিয়োজিত থাকবেন।
৫ নৌবাহিনী সচিব।নৌবাহিনী সচিব সচিবালয়ের প্রধান এবং একই সাথে নিয়োগ সংক্রান্ত সকল platters ,চাকরির শর্ত,কল্যানভাতা এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বেসামরিক লোকদের শৃঙ্খলা,বাজেটের সমন্বয়ের জন্য, সংস্থাপনের বিষয়ের জন্য,চিঠি,গোপনীয় বই,এবং রেকর্ড সংরক্ষনের দায়িত্বের জন্য নিয়োজিত থাকবেন।
সমস্ত জাহাজ মাইন অপসারনের জন্য চালু থাকবে এবং জরিপ জাহাজ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ফ্ল্যাগ অফিসার(ফ্লোটিলা) এর নিয়ন্ত্রনে থাকবে।চট্রগ্রাম এবং খুলনাতে একজন কমান্ডার ইন চার্জ থাকবে, যে সমস্ত উপকূ্লের কাছে এবং দূরে নৌবাহিনীর স্থাপনা নিয়ন্ত্রন করবে।
বিমান সদর দপ্তর
বিমান সদর দপ্তর বিমান বাহিনী প্রধানের অধীনে থাকবে।যিনি আদেশ,শৃংখলা,অপারেশন,প্রশিক্ষন,বিমান বাহিনীর সক্ষমতার জন্য দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।বিমান সদর দপ্তর তিনটি প্রধান শাখা নিয়ে গঠিত হবে,প্রত্যেকটি একজন প্রিন্সিপ্যাল স্টাফ অফিসার এয়ার ভাইস মার্শাল অথবা এয়ার কমোডর পদমর্যাদার দায়িত্বে থাকবে।
(১) বিমান কর্মচারী শাখা।এই শাখা বিমান বাহিনীর উপপ্রধানের(ডি সি এস এস) দায়িত্বে থাকবে,যিনি বিমান সামগ্রীর বিষয় নিয়ন্ত্রন করবেন। ডি এ সি এস অপারেশনাল ইউনিটের ক্ষিপ্রতা এবং দক্ষ ক্রিয়াকর্মকান্ড, ও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষন এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জন্য বিমান কর্মচারীদের পরিকল্পনা এর দায়িত্বের জন্য নিয়োজিত থাকবে।তিনি আরো নিশ্চিত করবেন সিগানলের এবং গোয়েন্দা নিয়োগ যেন প্রতিরক্ষার জন্য উপযোগী হয় এবং এটি ঐ নিয়ন্ত্রন এবং প্রস্তুতির বিধান
<003.176.476>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় পত্র
তাদের বেতন এবং জীবন যাত্রার মান হতে হবে তাদের যোগ্যতা, গুরুত্ব এবং আজকের এবং আগামীর প্রশাসনে তাদের প্রয়োজনীয়তার সমতূল্য। তাদের মধ্যকার তিক্ততা এবং বিরক্তভাব উন্নয়ন কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করছে। উদাহরণ দিয়ে বললে, একজন বিজ্ঞানী অথবা একজন ইঞ্জিনিয়ার অথবা একজন ডাক্তার কে তার স্ব স্ব ক্ষেত্রে যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন মন্ত্রানালয়ে সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ন সচিব, সহকারী সচিব পদে নিয়োগ দেওয়া উচিৎ। জনপ্রশাসনের আর্ট এন্ড সাইন্স সম্পর্কে তাকে তার ক্যারিয়ারের যথাযথ সময়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিৎ।
বৈজ্ঞানিক, ইঞ্জিনিয়ারিং, চিকিৎসা এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত যেসকল সুবিধাদি বর্তমানে রয়েছে =
১) বৈজ্ঞানিক বেসামরিক প্রশাসন
২) ইঞ্জিনিয়ারিং প্রশাসন
৩) চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য প্রশাসন
৪) বন অধিদপ্তর
৫) প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ
৬) ভূতাত্ত্বিক বিভাগ
এই সকল বিষয়ে ভবিষ্যতে আরও অনেক চাকরির সুযোগ বাড়বে এবং তাদেরকে তাদের দক্ষতা এবং দায়িত্ব অনুযায়ী একটি একক গ্রেডিং পদ্ধতিতে তাদের পে-লেভেলকে ভাগ করতে হবে এবং সঠিক গ্রেড সেই সকল বিভাগের বিশ্লেষকরা নির্ধারণ করবেন। তারা যেকোন একটি বৈজ্ঞানিক প্রশাসনের সাথে যুক্ত থাকবে যা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হবে এবং একটি গ্রেডের অধীনে থাকবে যা বাংলাদেশ বৈজ্ঞানিক প্রশাসন নামে পরিচিত। তাদের বেতন হবে বাংলাদেশ জনপ্রশাসনে তাদের সমপদের সমান। এই দুই শ্রেণীর পে-স্কেলের কোন তফাত থাকবে না। এখানে “ফুলটন কমিটির” কথা উল্লেখ্য যারা ব্রিটেনের জনপ্রশাসনের জন্য একই প্রস্তাব করেছিলেন। কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে – “আমরা বৈজ্ঞানিক অফিসার, প্রযুক্তিবিদ এবং বৈজ্ঞানিক সহযোগী এবং এই কাজে দক্ষ, ইঞ্জিনিয়ার এবং তৎসংশ্লিষ্ট এওং আর্কিটেক্ট এবং নকশাকারদের এতে যুক্ত করার প্রস্তাব জানাচ্ছি।“
বাংলাদেশ শিক্ষা প্রশাসন
যেহেতু শিক্ষা সরকারের অন্যতম একটি গুরুত্তপূর্ণ দায়িত্ব, তাই বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে বৈজ্ঞানিক উপায়ে ঢেলে সাজাতে হবে যাতে করে যাতে করে বর্তমানের চৌকস ছেলে এবং মেয়ে এর প্রতি আকৃষ্ট হয়। তাদের পে-স্কেল এবং অন্যান্য সুবিধাদি এমন হতে হবে যাতে করে তারা জাতিকে তাদের সর্বোচ্চটা দিতে পারে। নিশ্চয় বলে দিতে হবে না যে জাতির ভবিষ্যৎ তাদের হাতে। উপরে বর্ণিত বেসামরিক কর্মচারী, সাধারণ এবং বিশেষজ্ঞদের পে-স্কেলের সাথে তাদের মিল থাকতে হবে।
<003.176.477>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(গ)প্রতিরক্ষা কেন্দ্রীয় সদরের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
(২)অস্ত্র-কারখানার সাধারন পরিচালকের দপ্তর।
অস্ত্র-কারখানার প্রধান পরিচালক দ্বারা অস্ত্র-কারখানা পরিচালিত হবে।
(৩)বাংলাদেশ বিদ্যুৎ।প্রতিরক্ষা সচিব পরিচালকমণ্ডলীর সভাপতি নির্বাচিত হবেন।প্রতি দিনকার প্রশাসন পরিচালনার জন্য একজন সার্বক্ষণিক পরিচালন অধিকর্তা থাকবেন।এই কারখানা সরকারের প্রতিরক্ষা ও বেসামরিক বিভাগের জন্য তারবিহীন এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম তৈরি করবে।
(৪)প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সংস্থা।
এই পরিচালনা অধিদপ্তরের দায়িত্ব হবে প্রযুক্তিগত গবেষণা,নকশা উন্নয়ন,পরিদর্শন, সকল অস্ত্রের প্রযুক্তিগত পথানুসরন ও পরিবর্তন,বারুদ,A & B যানবাহন,প্রকৌশল গুদাম,ইলেকট্রনিক্স,সাধারন গুদাম ও বস্ত্র এবং নির্দিষ্ট ঔষধের দোকান।প্রধান ব্যবসায় হবে অস্ত্র ও সরঞ্জাম উৎপাদনের যাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা যায়।
(৫)বিজ্ঞান প্রতিরক্ষা সংস্থা।
বাংলাদেশ সরকার কে জাতীয় শারীরিক পরীক্ষাগার,বাংলাদেশ নৌ রাসায়নিক ও ধাতুবিদ গবেষণাগার,এবং মানসিক গবেষণা ইউনিট এর-ও উন্নয়ন করতে হবে।
(৬)জাতীয় রণশৈক্ষবাহিনী পরিদপ্তর।এই পরিদপ্তর ঢাকায় অবস্থিত হবে এবং সামরিক সেনাপতি এর পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন।
(৭)সামরিক ভূমি ও সেনাবাহিনীর দায়িত্ব।
(ক)সামরিক ভূমি ও সেনাবাহিনীর পরিচালক,বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রশাসন এবং সেনাবাহিনীর সকল ভিতর ও বাইরের সামরিক ভুমির দায়িত্বের প্রধান হবেন।প্রতিরক্ষা কাজের জমি ও ভবনের লিখিত ফরমাশ ও অধিনিগ্রহণের জন্য তিনি দায়বদ্ধ থাকবেন।
(খ)ভুমি,মজুরি ও নিষ্পত্তি।
এই কাজের-ও দায়িত্বে থাকবে সামরিক ভূমি ও সেনাবাহিনী পরিচালক।এ কাজের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে যুদ্ধকালীন লিখিত ফরমাশ করা জমি ও ভবনের অধিগ্রহণ,যুদ্ধকালীন জমি ও ভবনের মত নির্মিত সম্পদের নিষ্পত্তি এবং এসব সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ ব্যয়।
(৮)বিদেশী ভাষা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।এই প্রতিষ্ঠান ফ্রেঞ্চ,রাশিয়ান,জার্মান,চাইনিজ, জাপানিজ,পার্সিয়ান,আরবি,বার্মিজ এবং স্প্যানিশ ভাষার ট্রেনিং প্রদান করবে।
(৯)প্রধান পরিচালক,এই সংস্থা সশস্ত্রবাহিনীর প্রধান পরিচালকের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী,নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য দায়বদ্ধ থাকবে।
(১০)মিলিত ঐতিহাসিক আন্তঃ-সেবা অধ্যায়।
<003.176.478>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
১১-ইতিহাস সেকশন (বাংলাদেশ) এই সেকশন বাংলাদেশ এর স্বাধিনতা সংগ্রাম এর ইতিহাস সংরক্ষন করবে। ১২- আর্মড ফোর্স ইনফরমেশন অফিসারঃ অফিস টি আর্মড ফোর্স অফিসার এর পরিচালনায়য় থাকবে। এবং এর প্রধান কাজ হবে প্রেস, রেডিও,টেলিভিশন, ফিল্ম এর মাধ্যমে জনগন কে কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত রাখা ১৩-আর্মড ফোর্স ফিল্ম এন্ড ফটো ডিভিশন এই অংশ তিন বাহিনির ফিল্ম এবং ফটোগ্রাফি সংরক্ষনন করবে ১৪- অগ্নি পরামর্শকক অফিস অফিসার অগ্নি নির্বাপণ সংক্রান্ত পরামর্শ প্রদান করবেন ১৫-মিলিটারি কার্যনির্বাহী পরিচালক মিলিটারি কার্যনির্বাহী পরিচালক ১) প্রিন্টিং,পাব্লিকেশন২)স্টেশনারি,অফিস মেশিনারি সরবরাহ ৩) এবং যোগ্য ব্যাক্তিকে মেডেল প্রদানের দ্বায়িতে থাকবেন ১৬-বাংলাদেশ পদাতিক সৈন্য, নাবিক এবং আকাশ পথ বোর্ড এই বোর্ড এক্স সার্ভিস ম্যান দের পারিবারিক ভরনপোষন করবেন ১৭-রি সেটেল্মেন্ট সেকশন ১৮- পুনর্বাসন সেকশন এইই সেকশন সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এবং বেসরকারী সংস্থা এর সম্পর্ক স্থাপন করবে। এই সব প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন সদস্য দের পুনর্বাসন করবে ১৮- বাংলাদেশ রাইফেলস. তারা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে। অর্থ মন্ত্রণালয় অর্থ মন্ত্রানালয় নিম্ন লিখিত কাজ করবেন – (1) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ প্রশাসন পরিচালনা এবং সমগ্র দেশের অর্থনৈতিক পরিচালনা (2) প্রশাসন পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় রাজস্ব উত্থাপন এবং সরকারের কর ও ঋণ নীতি নিয়ন্ত্রণ
<003.176.479>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(৩)ব্যাংক, মুদ্রা সংক্রান্ত প্রশাসনিক সসমস্যার সমাধান এবং এ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয় পরিচালনা। সেই সসাথে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা সম্পদের যথাযত ব্যবহারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহন (৫) অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সংশ্লিষঠতার মাধ্যমে সমগ্র সরকারের ব্যায় নিয়ন্ত্রন মন্ত্রণালয় এ সচিবালয়, সংযুক্ত অফিস এবং সাব অর্ডিনেট অফিস থাকবে। মন্ত্রণালয়ের একজন মন্ত্রী দ্বারা পরিচালিত হবে। যার সহায়তায় দুইজন অর্থ উপ-মন্ত্রী ও চার সংসদীয় সচিব থাকবেন।মন্ত্রণালয় অবশ্যইপর্যাপ্ত দক্ষ হবে এবং সকল ব্যাবসায়ী কার্য পরিচালনার যোগ্য হবে মন্ত্রণালয় নিম্নলিখিত চারটি বিভাগে বিভক্ত হবে,তারমধ্যে তিন ডিভিশন আরো শাখা প্রশাখায় বিভক্ত হবে (ক) রাজস্ব বিভাগ (খ) ব্যয় বিভাগে (গ) অর্থনৈতিক বিষয়ক অধিদপ্তর (ঘ) কম্পানি ল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগ প্রতিটি বিভাগে অতিরিক্ত সচিব কতৃক পরিচালিত হবে কিন্তু সামগ্রিক বিষয় প্রধান সচিবের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকবে অর্থমন্ত্রী-উপমন্ত্রী-সচিব অতিরিক্তসচিব-অতিরিক্ত সচিব, ইকোনমিক এফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট-অতিরিক্ত সচিব expandeture ডিপার্টমেন্ট- অতিরিক্ত সচিব,কোম্পানি ল ডিপার্টমেন্ট রাজস্ব বিভাগেরপ্রশাসন অতিরিক্ত সচিব:১ যুগ্ম-সচিব:৩ উপসচিব:৭ আন্ডার সেক্রেটারি ঃ১৪ সেকশন অফিসার ঃ৩৬
<003.176.480>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
ব্যয় বিভাগ
অতিরিক্ত সম্পাদক : ১
যৌথ সম্পাদকগণ : ২
সহকারী সম্পাদকগণ : ৬
অধীনস্থ সহকারীগণ : ১২
অধ্যায় কর্মকর্তাগণ : ৩৬
অর্থনৈতিক বিষয়াবলী বিভাগ অতিরিক্ত সম্পাদক : ১
যৌথ সম্পাদকগণ : ৬
প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা : ১
সহকারী সম্পাদকগণ : ১২
সহকারী অর্থনৈতিক উপদেষ্টা : ১
সহায়ক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা : ১
অধীনস্থ সহকারীগণ : ২৪
অধ্যায় কর্মকর্তাগণ : ৪৮
কোম্পানি আইন ও প্রশাসন বিভাগ
অতিরিক্ত সম্পাদক : ১
যৌথ সম্পাদক : ১
সহকারী সম্পাদকগণ : ১
অধীনস্থ সহকারীগণ : ৩
অধ্যায় কর্মকর্তাগণ : ৯
রাজস্ব বিভাগ
রাজস্ব বিভাগ,যা রাজস্ববোর্ড হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে,নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর লেনদেন করেঃ
আয়কর,ব্যয়-কর,সম্পদকর,সংস্থা কর,শুল্কবিভাগ,আবগারি শুল্ক,আফিম ও চেতনানাশক,বাণিজ্যিক কর,বিক্রয়কর,ভূমি রাজস্ব,ডাকটিকিট,নিবন্ধন ও অন্যসব কর এবং দায়িত্বসমূহ।
রাজস্ববোর্ড একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান,যার কেন্দ্রীয় সমিতি রাজস্ব আইন,১৯২৪ দ্বারা গঠিত।শুল্কবিভাগ ও আবগারি শুল্ক আইন মোতাবেক এর শুনানি ও আবেদনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়।বাংলাদেশ সরকারের সম্পাদক দ্বারা এই প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হবে,যিনি পদসূত্রে রাজস্ববোর্ড এর-ও সভাপতি এবং বাংলাদেশ সরকারের ৩জন যৌথ সম্পাদক-ও সহায়তা করবেন।এটা ভূমি রাজস্ব অনুযায়ী আবেদনের কাজ করবে।
রাজস্ববোর্ড অনুযায়ী পরিদর্শনের জন্য দুইটি পরিচালকের দপ্তর থাকবে-একটি আয়কর পরিদর্শন ও তদন্তের জন্য এবং অন্যটি শুল্কবিভাগ ও আবগারি শুল্কের জন্য।আয়কর পরিদর্শন ও তদন্ত পরিচালক দপ্তরের দুইটি শাখা থাকবে-(ক)পরিদর্শন এবং (খ)তদন্ত।একটি পৃথক সতর্ক শাখা নির্মিত হতে পারে
<003.176.481> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
Directorate of Inspection, Customs and Excise, for keeping a watch on all corruption
and malpractice cases in the Customs and Excise. This wing is responsible direct to
the Hoard of Revenue.
The Board also will have under it a Statistical Branch for the compilation of
statistics relating to all taxes and duties.
অর্থব্যয় বিভাগ
ব্যয় বিভাগকে নিম্নোক্ত উপবিভাগে ভাগ করা যেতে পারে।
(১) সংস্থাপন অধিদপ্তর
(২) বেসামরিক ব্যয়
(৩) প্রতিরক্ষা ব্যয় বিভাগ
সংস্থাপন অধিদপ্তর
এই বিভাগটি মূলত সেসব ব্যাপারে জন্য দায়ী যা অর্থনৈতিক নীতিমালা ব্যাখ্যা করে, পাশাপাশি যেসব ন্যায়-নীতি পারিশ্রমিক, ভাতা, ছুটি, পেনশন ইত্যাদির সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছে। তাছাড়া এটি সংস্থাপন সংক্রান্ত সকল বিভাগ এবং সরকারি চাকুরেদের বেতন কাঠামো সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের সমাধানের লক্ষ্যে একটি সমন্বয়কারী ইউনিট হিসেবে কাজ করে। উপরন্তু উক্ত বিভাগটি এই মন্ত্রণালয়ের নানান বিভাগের নির্দিষ্ট কিছু প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে।
বেসামরিক ব্যয়
এই বিভাগের প্রধান কাজ হচ্ছে বিভিন্ন প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে আর্থিক তদন্ত সস্পন্ন করা। সাধারণত যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার আর্থিক উপদেষ্টা এই দায়্ত্বি বহন করবেন যাদের জিম্মাদারিত্ব বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে গঠিত। অতিরিক্ত অর্থ উপদেষ্টা পদমর্যাদার ডেপুটি সচিব এবং প্রতিটি মন্ত্রণালয় বা মন্ত্রণালয় শাখা অর্থ উপদেষ্টা সহযোগিতা লাভ করবেন। মূলধন ব্যয় সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব এবং জটিল নীতি, যদিওবা অর্থ উপদেষ্টা কর্তৃক প্রাথমিকভাবে যাচাইকৃত যারা কিনা ব্যয় বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সভাপতিত্বে অর্থব্যয় কমিটিতে আছেন, যেখানে প্রত্যেক আমলা তদবর্তমান বর্তমান প্রস্তাবের সাথে সংযুক্ত। ব্যবসার ত্বরিত নিষ্পত্তি জন্য এটি দরকার হবে।
প্রতিরক্ষা ব্যয় বিভাগ
প্রতিরক্ষা ব্যয় বিভাগ অর্থ উপদেষ্টার অধীনে থাকবে। Defense Services, whose status is that of a Joint Secretary to the Government of Bangladesh. তার কাছে প্রতিরক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ প্রবেশাধিকার থাকবে এবং সে নিজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থ উপদেষ্টা, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর প্রধান এবং প্রতিরক্ষা সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সভাপতিত্বে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কমিটিতে সদস্য হবেন এবং পাশাপাশি তিনি মন্ত্রিসভার প্রতিরক্ষা কমিটির মিটিংয়ে উপস্থিত থাকবেন। এই বিভাগটি তদন্ত, অনুমোদন এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যয়ের হিসাব-নিকাশের জন্য দায়বদ্ধ থাকবে এবং প্রতিরক্ষা হিসাব বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করবে।
<003.176.482> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
আর্থিক বিষয় বিভাগ
আর্থিক বিষয় বিভাগকে নিম্নোক্ত শাখায় ভাগ করা যেতে পারে, প্রতিটি শাখা একজন যুগ্ম সচিবের অধীনে থাকবে। আর্থিক বিষয় বিভাগটি প্রধান অর্থ উপদেষ্টার অধীনে থাকবে।
১. বাজেট বিভাগ
২. পরিকল্পনা বিভাগ
৩. অভ্যন্তরীণ অর্থ বিভাগ
৪. বহি:স্থ অর্থ বিভাগ
৫. অর্থনীতি বিভাগ
৬. বীমা বিভাগ
এগুলো ছাড়াও, যুগ্ম সচিবের অধীনে রাজধানী নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়ের জন্য আরো আলাদা শাখা থাকতে পারে। শেয়ার বাজার এবং অর্থ দুর্নীতি, এছাড়া, বিক্রয় কর সংশ্লিষ সমস্যা সমাধানের জন্য বিভাগে একটি বিক্রয় কর ইউনিট চালু করা যেতে পারে।
(১) বাজেট বিভাগ। এই বিভাগটি প্রথমত রেলওয়ে ছাড়া বাজেট প্রস্তুতের জন্য দায়বদ্ধ। প্রতিরক্ষা সেবার জন্য প্রাপ্ত অনুদান যাচাই করা এবং প্রতিরক্ষা বিভাগ কর্তৃক তা সংকলন করা, যেথায় ডাক ও টেলিগ্রাফ বিভাগের জন্য নির্ধারিত অনুদান ডাক ও টেলিগ্রাফ ডিরেক্টর জেনারেল কর্তৃক রচনা করা হবে। অন্যান্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সরকারের বিভাগ সংক্রান্ত অনুদান সংযুক্ত অর্থ বিভাগের সহযোগিতায় বাজেট বিভাগ তা রচনা করবে। সমগ্র বাজেটের একত্রীকরণ করার চূড়ান্ত দায়িত্ব এবং এর সমর্থনকারী নথি প্রস্তুতি বাজেট বিভাগের উপর ন্যস্ত হবে।
নিম্নোক্ত কাজের জন্যেও এই বিভাগটি দায়বদ্ধ থাকবে।
(ক) সারাবছর ব্যাপী জাতীয় সংসদের প্রতিটি সেশনে সম্পূরক অনুদান এবং অধিকৃত অর্থের সংগ্রহ করা হবে।
(খ) “পথ ও উপায়” এর প্রস্তুতিতে নির্ধারিত অনুদান, জনসাধারণের ঋণের বোঝা, ক্ষুদ্র সঞ্চয় আন্দোলনের প্রচার, নারীদের সঞ্চয়ী প্রচারণা, জনগণের ঋণের প্রশাসন এবং সরকারের ধার-দেন এবং administration of the Contingency Fund of Bangladesh Rules, including the
sanctioning of the advances and their ultimate recoupment to the Fund.
(গ) অডিট সংক্রান্ত প্রশ্ন, হিসাব কার্যপদ্ধতি, সরকারি হিসাবের লেনদেন শ্রেণীবিন্যাস এবং কাঠামোবদ্ধ করা এবং কোষাগারের নিয়ম-নীতির প্রয়োগ।
(ঘ) সুদের ঋণ হার পরিশোধ সংক্রান্ত কাজ, উৎপাদনশীলতা পরীক্ষা হার, সরকার কর্তৃক ঋণের উপর নির্ধারিত সুদের হার, বাণিজ্যিক বিভাগসমূহ এবং অন্যান্য পার্টি এবং নিয়ন্ত্রণকর্তার হিসাব ও অডিট রিপোর্ট এবং Auditor-General to the President of Bangladesh before
their presentation to the Parliament
<003.176.483> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(গ)বছরব্যাপী অর্থ ব্যায়ের জন্য যে সঠিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা তা মন্ত্রীদের বেলায় প্রযোজ্য হবেনা।
(ঘ) পরিকল্পনা বিভাগঃ এই বিভাগ নিম্নোক্ত বিষয়াবলীর সাথে সম্পৃক্ত ব্যাপারগুলি নিয়ে কাজ করবেঃ
(a) আর্থিক সহায়তা সহ উন্নয়নের জন্য ঋনের ব্যাপারও দেখবে;
(b) মূলধনের সাথে বাজেট এবং তহবিলের মূল একাউন্টের সাথে খরচের হিসাব নিমন্ত্রণ করা।
(c) জাতীয় সমীক্ষা প্রশাসন সম্পর্কিত নীতি নির্ধারণ
(d) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠান
তাছাড়া এটি মন্ত্রনালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধণ করে কেন্দ্রিয় সরকারের বিভিন্ন অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী নিয়েও কাজ করবে।
এটি পঞ্চ বার্ষিকী মেয়াদি জন সহায়তা কার্যক্রমও দেখবে।
৩। অভ্যন্তরীণ অর্থ বিভাগঃ এই বিভাগ বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা এবং ব্যাংকিং, টাকশাল প্রশাসন,নিরীক্ষা অধিদপ্তর এবং ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রেস’ এর সাথে সম্পর্কিত বিষয়াবলীর কাজ করবে।
৪। বহিঃ অর্থ বিভাগঃ এটা বিদেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ করে।
এই বিভাগ সাধারণত বিনিময় নিয়ন্ত্রণ, পেমেন্ট ও অন্যান্য আর্থিক চুক্তি সম্পাদন,
বিদেশী বিনিয়োগের জন্য প্রস্তাব যাচাই , বিদেশী ঋণ সংগ্রহ এবং
বাংলাদেশের সাথে বৈদেশিক আর্থিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ করবে।
এই বিভাগটি তিনটি শাখায় বিভক্তঃ
(a) বিনিময় নিয়ন্ত্রণ শাখাঃ এই বিভাগ বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ে বিভিন্ন প্রকার পন্য যেমনঃ শস্য দানা আমদানির সাথে বিভিন্ন বৈদেশিক সংস্থা প্রদত্ত সহায়তা, মোট সম্পদের সাথে বৈদেশিক রপ্তানি থেকে প্রাপ্ত আয় এবং অন্যান্য দৃশ্যমান আয়ের ব্যাপারও দেখবে।
অধিকন্তু এই বিভাগ বিদেশি মুদ্রা পাওয়ার ব্যাপারেও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবে।
(b) দ্বিতীয় শাখাঃ এই বিভাগ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাথে কাজ করবে এবং I.B.R.D সহ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাথে মুদ্রা বিনিময়ে বিধি নিষেধ এর ব্যাপারে বাৎসরিক আলোচনা করবে।
(c) তৃতীয় শাখাঃ এই শাখাটি বৈদেশিক সাহায্যের(অর্থনৈতিক ও কারিগরি) ব্যাপারে কাজ করবে।
এই বিভাগ সকল প্রকার আন্তর্জাতিক সহায়তা বিষয়ক কাজগুলি “অর্থনৈতিক বিষয়ক অধিদপ্তর ” এর মাধ্যমে সম্পাদিত হবে। এবং এই শাখাটি বিদেশি সরকারের, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বিশ্বপ্রেমিক সংগঠনের সাথে চুক্তি সম্পাদনে কাজ করবে।
৫। অর্থনীতি বিভাগঃ এই বিভাগের দায়িত্বে থাকিবে
অর্থনৈতিক উপদেষ্টা,সহায়তায় একজন ডেপুটি অর্থনৈতিক উপদেষ্টা এবং কয়েকজন সহকারী অর্থনৈতিক উপদেষ্টা এবং গবেষণা কর্মকর্তা।
<003.176.484> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
অর্থনৈতিক বিভাগের কার্যকলাপ নিম্নরুপঃ
(a) অর্থনীতি, অর্থনৈতিক এবং আর্থিক বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে গবেষণা ও পড়াশোনা করা।
(b) প্রস্তুতি এবং পেমেন্ট এর মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রেখে পরিসংখ্যানগত রক্ষণাবেক্ষণ,
বাণিজ্য, মুদ্রা ও মুদ্রা ভারসাম্ বজায় রাখা।
(c) বিদেশী অর্থনীতি এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কিত প্রতিবেদন যেসব বাংলাদেশি কূটনৈতিকরা এবং বিদেশী ব্যাবসায়ীরা পাঠিয়ে থাকেন সেইসব বিষয়ে পর্যালোচনা এবং পড়াশোনা।
৬। বীমা বিভাগঃ জীবন বীমা বাণিজ্যকে জাতীয়করণ করতে হবে। একটা জীবন বীমা সংস্থা গড়ে তুলতে হবে। এই বিভাগ বীমা আইন নিয়ে কাজ করবে।
কোম্পানি আইন ও প্রশাসন বিভাগঃ এই বিভাগটি কোম্পানি প্রশাসন ও এর সাথে সম্পর্কিত পেশাদারী ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সংস্থা নিয়ে কোম্পানি তদন্ত, লেনদেন এবং অনুমোদন নীতিমালা নিয়ে কাজ করবে। সেখানে চিটাগাং এর কিছু আঞ্চলিক অধিদপ্তর হতে পারে। খুলনা, রাজশাহী ও ঢাকার জন্য আলাদা বিভাগীয় পরিচালক, কোম্পানি ব্যবস্থাপক ও কোম্পানি আইন প্রণেতা থাকবে। বিভাগীয় অধিদপ্তরের মূল কাজ হিবেঃ
১। কোম্পানির সব গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন এবং এর ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে সর্বদা দেশের সংস্পর্শে থাকতে হবে।
২। নিবন্ধিত কোম্পানী গুলোর কর্মদক্ষতার দিকে নজর রাখা এবং তাদেরকে সকল ব্যাপারে উপদেশ দেয়া যখনি তারা তা চাইবে।
৩। কোম্পানীর বিষয়াদি তদন্দ ও অনুসন্ধানের জন্য নিয়োগকৃত পরিদর্শককে সবসময় স্মরণিকা, পাবলিক প্রিসিকিউটর, পুলিশ প্রশাসন এবং অনুসন্ধানী পরিদর্শককে কার্যাবলির জন্য সহায়তা করতে হবে।
৪। গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও শিল্প উন্নয়নের ব্যাপারে
দেশ এবং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা প্রবণতা এবং
কোম্পানি আইন নিয়মানুযায়ী সুরক্ষিত করতে সহায়তা করা এবং
প্রশাসনিক যুক্তি পরামর্শ অব্যাহত রাখা।
৫। যোগাযোগ কর্মকর্তা হিসাবে কোম্পানি এবং সরকারের মধ্যবর্তী কাজ করা।
৬। মানুষ এবং বিশেষ করে ছোট কোম্পানি গুলোকে আইনের প্রয়োগ এর ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া।
যৌথ কার্যালয়ঃ
নিম্নে যৌথ কার্যালয়ের বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হলঃ
জাতীয় সঞ্চয় কমিশনারের কার্যালয় ঢাকাঃ
এই অফিস একটি জেলার ভিত্তিতে কাজ করা উচিত এবং একটি কেন্দ্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।
ঢাকায় অফিস, জাতীয় সঞ্চয় কমিশনারের অধীনস্থ হবে। আমি, সে পুরো
প্রতিষ্ঠানের লক্ষ হবে জনগণের মধ্যে মিতব্যয়িতা অভ্যাস গড়ে তুলা।
<003.176.485> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(২) বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রেস (সাথে কারেন্সি নোট প্রেস এবং সেন্ট্রাল স্ট্যাম্প স্টোর নির্মিতব্য) বাংলাদেশের সরকারি নোট, ডাক এবং অন্যান্য স্ট্যাম্প, ডাক স্টেশনারি এবং বিবিধ সামগ্রী, যেমন আবগারি ব্যান্ডরোল এখানে ছাপানো হবে। (৩) ব্যান্ডলাদেশের সরকারি টাকশাল (ঢাকায় নির্মিতব্য)। টাকশালের প্রধান কাজগুলি হবে: (ক) ছাপা, ঢালাই, মুদ্রণ এবং বাংলাদেশের খনি, ব্যাংক, বাটখারা ব্যবসায়ী এবং সাধারণ জনগণের স্বর্ণ ও রুপার বাট বিশোধন করা। (খ) স্টেট্ ব্যাঙ অফ বাংলাদেশের জন্যে নোট-পানচিং মেশিনের উৎপাদন এবং মেরামত করা। (গ) আদর্শ ওজন ও পরিমাপের উৎপাদন এবং যাচাইকরণ এবং সামঞ্জ্যঃসকরণ। (ঘ) স্ট্যাম্প অফিসের রঞ্জক, সরকারি সিল ইত্যাদি উৎপাদন। (ঙ) মেডেল, সামরিক নক্ষত্র এবং ব্যাজের আকর্ষণীয়তা বৃদ্ধি। (৪) গবেষণা বিভাগ। সরকারি বিভাগ এবং জনসাধারণ ও বিশিষ্ট ব্যক্তির জন্যে স্বর্ণ এবং রৌপ্য এবং জালমুদ্রা ইত্যাদি যাচাই-বাছাই করার জন্য দায়বদ্ধ থাকবে। (৫) জাতিসংঘের কারিগরি সহায়তা বোর্ডের অফিস। ঢাকা। এই দপ্তরের প্রধান কাজগুলো হলো:
ক) সংগঠনে জমা প্রদানের লক্ষ্যে দেশের নীতি নির্ধারণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পে প্রযুক্তি সাহায্য বিষয়ক পরিকল্পনা উপস্থানের ব্যাপারে সরকারকে সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করা।
(খ) প্রযুক্তি সহায়তা বিষয়ক বোর্ড এবং সংগঠন গুলোকে বাংলাদেশে প্রযুক্তি সহায়তার ব্যাপারে পরামর্শ প্রদান করা। সেই সাথে সংগঠন গুলোর পক্ষ থেকে সরকারের সাথে চুক্তি প্রণয়ন এবং প্রয়োজনে এই সকল সংগঠনকে সরকারী নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে অন্যান্য চুক্তির ব্যাপারে সহায়তা করা।
(গ) বিভিন্ন সংগঠন দ্বারা প্রযুক্তি সহায়তার যথাযথ প্রভাবমূলক ফলাফল নিশ্চিত করার জন্য সহায়তা প্রদান এবং সেই সাথে বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে প্রযুক্তি ব্যবহার এবং সহায়তা সংগঠনগুলো দ্বারা নিযুক্ত বিশেষজ্ঞদের দ্বারা ঠিকমত বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না তা তদারক করা।
(ঘ) সুবিধার জন্যে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক স্থাপিত সমন্বিত মেশিনারি ব্যবহার করতে কারিগরি সহায়তা করা।
(ঙ) প্রয়োজনে প্রশাসনের কাছ থেকে বিশেষজ্ঞদের বিশেষ অনুরোধ বিবেচনায় প্রশাসনিক সহায়তা প্রদান এবং সেই সাথে বিশেষজ্ঞদের ফান্ড এর বাইরে সরকারি ভাবে কিংবা সংগঠনের কাছ থেকে আনুষঙ্গিক খরচ প্রদান নিশ্চিত করা।
(চ) ফেলোশীপ ও বৃত্তি প্রার্থীর বাছাই করতে সরকারকে সহায়তা করা।
<003.176.486> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(ছ) কারিগরি সহায়তা সংক্রান্ত সব বিষয় বজায় রাখার জন্য একদিকে সরকার এবং প্রতিষ্ঠানের মাঝে সমন্বয় করতে হবে।
পরিদর্শন ও তদন্ত অধিদপ্তর(আয়কর):
অধিদপ্তরের অধীনে একটি পৃথক সংগঠন থাকবে যার কাজ হবে ঠিকাদারদের ছোট-বড় লেনদেন ও লভ্যাংশের রশিদ বাংলাদেশের সকল আয়কর অফিস থেকে সংগ্রহ ও সরবরাহ করা।
অধিদপ্তরের পরিচালকদের (আয়কর) কাজ হবে নিম্নরুপঃ
১। কারিগরি কাজের সার্বিক তত্ত্বাবধানে একজন বিশেষায়িত অফিসার দায়িত্বে থাকবে।
২। বাজেটের সাথে বাংলাদেশের সকল অগ্রগতির প্রতিবেদনের সংকলন তুলনামূলক মূল্যায়ন করতে হবে।
৩। বিভিন্ন প্রকার দক্ষ এবং কার্যকরী অর্থনৈতিক নির্দেশনার বিবেচনা করতে হবে।
৪। আইন প্রয়োগকারী তদন্ত সংস্থা সকল কার্যকলাপের মূল্যায়ন,রক্ষণাবেক্ষণ এবং সংকলনের জন্য নিবিড় নজরদারি করবে।
৫। গেজেটেড এবং নন-গেজেটেড কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ও সৃষ্টিশীল কাজের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬। রাজস্ব বোর্ডের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে গেজেটেড এবং নন-গেজেটেড কর্মকর্তাদের পরীক্ষা আয়োজন এবং সম্পন্ন করতে হবে।
৭। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দ্বি-করারোপ চুক্তি বিধানের প্রয়োগের ক্ষেত্রে কাজ করবে এই কমিটি।
৮। আপীলের দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সহকারী কমিশনারের কার্যালয় পরিদর্শন করতে হবে।
৯। অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট এবং এই সংক্রান্ত উদ্ভূত সকল ব্যাপারে রাজস্ব বোর্ডকে পরামর্শ দেয়া।
১০। নতুন কর এলাকা তৈরির জন্য কর কমিশনারকে পরামর্শ প্রদান।
(a) তদন্ত শাখাঃ
এই শাখা বৃহদাকার কর ফাঁকির মামলার ব্যাপারে বিস্তারিত পর্যালোচনা এবং গভীর তদন্ত করবে। ঢাকায় কেন্দ্রীয় সংগঠন হিসাবে এটি অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখবে এবং তথ্য সংগ্রহ করবে।এই শাখা কর্মকর্তাদের তদন্ত করতে সাহায্য করবে এবং প্রয়োজনীয় কারিগর সহযোগিতা দিবে। আয়কর কর্মকর্তাদের মধ্যে দূর্নীতির ব্যাপারেও এই শাখা কাজ করবে।
৭। পরিদর্শন অধিদপ্তর – শুল্ক ও আবগারিঃ
এট নির্বাহী নিরীক্ষার জন্য একটি সংস্থা হিসেবে কাজ করবে।
প্রশাসনিক আবগারি ও রীতি-নীতি ও সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে রাজস্ব আদায় করা।
<003.176.487> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
অধিদপ্তর মূলত নিম্নলিখিত কাজগুলো করবেঃ
(a) এই অধিদপ্তর শুল্ক ও আবগারি আইন (ভূমি অধিগ্রহণ) এবং এই সংক্রান্ত বাস্তব সমস্যার প্রতিবেদন দেখবে এবং সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করবে। সেই সাথে শুল্ক ও আবগারি আইন প্রণালী আত্নস্থ করে তদনুযায়ী উন্নয়নের জন্য রাজস্ব বোর্ডকে পরামর্শ দিবে।
(b) শুল্ক,কর ও আবগারি বিভাগের জন্য নিত্যনতুন নিয়মাবলী ও নির্দেশনা সংকলন এবং রক্ষণাবেক্ষণ করবে ; সেই সাথে সাধারণ জনগণকে আবগারি আইন সম্পর্কে তথ্য দিবে।
(c) রাজস্ববোর্ডের হয়ে, শুল্ক ও আবগারি কর্মকর্তাদের পরীক্ষা গ্রহণের জন্য একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করবে।
সেখানে পরিদর্শন অধিদপ্তরের কিছু আঞ্চলিক ইউনিট হতে পারে।
৮। রাজস্ব গোয়েন্দা অধিদপ্তরঃ
এই অধিদপ্তর সাড়া বাংলাদেশ জুড়ে চোরাচালান সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে গবেষণা করবে এবং চোরাচালান বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
অধস্তন দপ্তর
অধস্তন দপ্তর গুলো নিম্বরুপঃ
১। কোম্পানির আঞ্চলিক পরিচালকদের কার্যালয়
২। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনায় কোম্পানি রেজিস্টারের কার্যালয়
৩। ঢাকা,চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা অঞ্চলের শুল্ক আদায়কারী কর্মকর্তা
শুল্কভবনের মূল কাজ হচ্ছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসা বাংলাদেশ থেকে যাওয়া পণ্যের উপর কর আরোপ ও শুল্ক আদায় করা। তাছাড়া তারা আমদানি ও রপ্তানি আইন অনুযায়ী প্রশাসক হিসাবে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে থাকে। প্রতিটা শুল্কভবন রাজস্ব বোর্ডের সরাসরি নিয়ন্ত্রণাধীন। প্রতিটা শুল্ক কর্মকর্তা শুল্ক আদায়কারী কর্মকর্তার অধীনস্থ। অন্যান্য ছোট বড় বন্দরের শুল্ক আদায় শুল্কবিভাগ দেখাশোনা করে।
৪। ঢাকা,চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনার আবগারি আদায়কারী কর্মকর্তা।
আবগারি সংগ্রাহকগন শুল্ক সংগ্রহের জন্য সরকার কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত। স্থলবন্দর ও নদীবন্দরেও শুল্কও তারা আদায় করবে শুধু চট্টগ্রাম ও খুলনা ছাড়া।
৫। আয়কর বিভাগ
আয়কর বিভাগের প্রশাসনিক সেট আপ বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়।
জেলা ইউনিট,প্রতিটি জেলা ইউনিট একটি কমিশনারের অধীনস্থ।
<003.176.488> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
এই ইউনিট গুলো সেই সব মামলা বা মামলার শ্রেনী নিয়ে কাজ করে যেগুলোতে পদ্ধতিগত ভাবে কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয় অথবা হিসাবের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত প্রয়োজন হয়। এই মামলা গুলো রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক বিশেষভাবে তাদের ওপর আরোপিত হতে পারে।
(৬) পরিসংখ্যান শাখা (আয়-কর)।
এর দায়িত্ব হল আয়কর পরিসংখ্যান সংকলন, বিভিন্ন শ্রেনীর ব্যক্তিদের মোট আয় এবং পরিশোধিত কর, বিভিন্ন ব্যবসা, বানিজ্য, শিল্প, পেশার আয়ের শ্রেনী বিভাগ সংক্রান্ত কাজ গুলো করা।
(৭) পরিসংখ্যান ও গোয়েন্দা শাখা (আবগারি)।
পরিসংখ্যান ও গোয়েন্দা বিভাগ মুলত বিভিন্ন আবগারি পন্য সংক্রান্ত পরিসংখ্যান সংগ্রহ, ছক আকারে তালিকাভুক্ত করা এবং সেগুলো ব্যাখ্যা করার কাজ করে। কাস্টমস শুল্কের সাপেক্ষে বিভিন্ন শর্তাবলীর ওপর নির্মিত কাস্টমসের কাজ সংক্রান্ত দরকারি পরিসংখ্যান গুলোর
কম্পাইল ও এই শাখা করে।
(৩) পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়
কার্যাবলি ও সংগঠন
পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় নিম্ন লিখিত বিষয় গুলোর সাথে সম্পর্কযুক্ত কাজের দায়িত্বে থাকবেঃ
(১) বৈদেশিক বিষয়াবলি
(২) বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস, বাংলাদেশ বৈদেশিক প্রজ্ঞাপনের কূটনৈতিক ও বানিজ্যিক প্রতিনিধিত্ব
(৩) জাতিসংঘের সংগঠন, আন্তর্জাতিক সম্মেলন, সমিতি ও অন্যান্য সংগঠন
(৪) বিদেশি রাষ্ট্র গুলোর সাথে মধ্যস্থতা ও চুক্তি
(৫) পররাষ্ট্র অধিকার ও বহিঃসমর্পন
(৬) বাংলাদেশ থেকে অন্য দেশে দেশান্তরীত হওয়া, পাসপোর্ট, ভিসা, এবং বাংলাদেশের বাইরে তীর্থযাত্রা
(৭) মন্ত্রনালয় কিছু নির্দিষ্ট আইন প্রয়োগের দায়িত্বে থাকবে
একটি সচিবালয় এবং কিছু অধীনস্ত দপ্তর নিয়ে মন্ত্রনালয় গঠিত হবে। মন্ত্রনালয় প্রধানের পরে থাকবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং উপমন্ত্রী ও সংসদীয় সচিবগণ তাকে সহায়তা করতে পারে।
সচিবালয়
সচিবালয়ে থাকবেঃ
সচিব -১জন
অতিরিক্ত সচিব -১জন
অতিরিক্ত রাষ্ট্রমন্ডলীয় সচিব -১জন
যুগ্ম সচিব -৩জন বা ৪জন
উপ সচিব -১০জন বা ১৫জন
সচিবের অধনস্ত -২০জন
বিভাগীয় কর্মকর্তা -২৫জন বা ৩০জন
<003.176.489> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
যেভাবে মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব ভাগ করা হয়েছিল তার একটি চার্ট নিচে দেওয়া হল
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় | |||||||||||||||
পররাষ্ট্র মন্ত্রী | |||||||||||||||
সচিব | |||||||||||||||
অতিরিক্ত সচিব | অতিরিক্ত কমনওয়েলথ সচিব | ||||||||||||||
উঃসঃ সচিব | উঃসঃ সচিব | আইন উপদেষ্টা | উঃসঃ সচিব | উঃসঃ সচিব | আইন উপদেষ্টা | ||||||||||
ডিএস | ডিএস | ডিএস | ডিএস | ডিএস | ডিএস | ডিএস | ডিএস | ডিএস | ডিএস | ডিএস | ডিএস | ডিএস | ডিএস | ||
ইউএস | ইউএস | ইউএস | ইউএস | ইউএস | ইউএস | ইউএস | ইউএস | ইউএস | ইউএস | ইউএস | ইউএস | ইউএস | ইউএস | ||
মন্ত্রনালয়ের খুব কম দপ্তর ছিল, এরমধ্যে কিছু প্রাদেশিক এবং কিছু ডিপ্লোম্যাটিক । ওই দপ্তর গুলো নিচের উপদলে ভাগ করা হয়েছিলো ।
১. আমেরিকা অংশ ঃ উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিন আমেরিকার দেশ সমূহ বৈদেশিক সাহায্য
২. ভারতীয় অংশ ঃ
৩. পশ্চিম অংশ ঃ ই ইউ ও ইউরোপ ( যুক্তরাজ্য , ইউ.এস.এস.আরেবং পুর্ব ইউরোপের দেশ সহ)
৪. পূর্ব ইউরোপ ঃ ইউ.এস.এস.আর. এবং পূর্ব ইউরোপের বৈদেশিক সাহায্য
৫. কমলওয়েলথ ডিভিশন ঃ যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউইজল্যান্ড এবং অন্যান্য কমওয়েলথ
রাষ্ট্র সমূহ।
৬. দক্ষিন পূর্ব এশিয়া ঃ জাপান,ইন্দোনেশিয়া,চিন, ভিয়েতনাম, কোরিয়া, মায়ানমার, ফিলিপাইন,
থাইল্যান্ড, মালে।
৭.মধ্য পূর্ব আফ্রিকা ঃ সুদান, মিশর, সৌদি আব,লিবিয়া, মরোক্কো, জর্ডান, ইরান, তূর্কী, এবং
অন্যান্য আফ্রিকান দেশসমূহ।
৮. প্রটোকল ডিভিশন ঃ প্রোটোকল, অধিনায়কত্ব ও দেশান্তর
৯. প্রশাসনিক বিভাগ ঃ প্রশাসন, নিজস্ব, গৃহরক্ষনাবেক্ষন প্রধান দপ্তর বাংলাদেশ বৈদেশিক মিশন
১০. বিহির্বিশ্বে প্রচার বভাগ ঃ
১১. পররাষ্ট্র সেবা পরিদপ্তর ও অপহরন
১২. ঐতিহাসিক বিভাগ
<003.176.490>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বিদেশে বাংলাদেশ মিশনসমূহের , জাতিসংঘের প্রধান ত্রৈমাসিক স্থায়ী প্রতিনিধি। অধস্তন কর্মকর্তা। (১) প্রবাস সংস্থাপন (৪) খাদ্য-মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয় নিম্নলিখিত দুটি বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত হইবে। (ক) খাদ্য অধিদপ্তর, এবং (খ) খাদ্য এবং কৃষি বিভাগ: কার্যাবলী এবং সংগঠন। খাদ্য বিভাগ নিম্নলিখিত ফাংশনের জন্য দায়ী থাকিবেন: (ক) সামরিক ও বেসামরিক চাহিদার অনুকুলে প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য সংগ্রহ: (খ) আমদানিকৃত খাদ্যশস্যের যথাযথ বিতরণ। (গ) পারস্পরিক সমন্বয়,সুষ্ঠ পরিকল্পনা এবং নেতৃত্বের পুরোটাই দেশের খাদ্য নীতিমালার অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। (ঘ) নিয়মিত খাদ্যশস্য আমদানি ও রপ্তানিকরণ। (ঙ) ভান্ডারদপ্তর যেসব সেক্রেটারিয়েট স্টাফ নিয়ে গঠিত : সচিব …….যুগ্মসচিব…….ডেপুটি সচিব ……..নিম্ন সচিব …..সেকশন অফিসার …..এডমিনিসট্রেটিভ অফিসার। ১ ২ ৩ ৯ ৩৯ খাদ্য বিভাগের নিম্নলিখিত শাখা গঠিত হবে: (১) নীতিমালা এবং মৌলিক পরিকল্পনা (২) সুষ্ঠ বন্টন (৩) আন্দোলন অধিদপ্তর (৪) আমদানি (৫) সংগ্রহকরণ এবং পরিদর্শন। (৬) বন্দর এবং ডিপো ও সেলস ডিপো। (৭) বাজেট প্রণয়ন ও আর্থিক সমন্বয় এবং (৮) সেনাবাহিনীর ক্রয় সংগঠন। সংযুক্ত অফিস: চিনি পরিচালনা অধিদপ্তর (ক) চিনি কারিগরী অধিদপ্তর সেকশন। (খ) চিনি উন্নয়ন কাউন্সিল সেকশন (গ) কো-অপারেটিভ কারখানা সেকশন।
<003.176.491>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
ঘ) চিনি নিয়ন্ত্রণ সেকশন। অধস্তন
কর্মকর্তা (১) আঞ্চলিক পরিচালক, খাদ্য, ঢাকা ও রাজশাহী অফিসের কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগ নিম্নলিখিত কাঠামোর জন্য দায়ীবদ্ধ : ১. কৃষিখাত । ২. কৃষি গবেষণা, শিক্ষা এবং এক্সটেনশন। ৩.পশুপালন ও মৎস্য চাষ এবং বনায়ন। ৪. ফল এবং সবজি জাতীয় পণ্যের ইন্ডাস্ট্রি। ৫. কৃষি অর্থনীতি ও পরিসংখ্যান: ৬. কৃষি উন্নয়ন।
৭. ইউ এন এবং আন্তর্জাতিক কৃষি ক্ষাতের অন্যান্য খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সাথে কারিগরি ও অর্থনৈতিক সাহায্য বিষয়ক মৈত্রী চুক্তি সম্পাদন। ৮. প্রকিউরমেন্ট ও সার বিতরণ। ৯.কৃষি বিপনন। ১০.সমন্বয়। ১১. ভূমি পুনরুদ্ধার। ১২. টিউবওয়েল ও ক্ষুদ্রসেচ। ১৩. মাটি সংরক্ষণ। কৃষিখাত বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোর কিছু একটা সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিচে দেওয়া হলো।
১.কৃষি উৎপাদন : খাদ্যে নুন্যতম অর্ধ স্বয়ংসম্পূরন হতে ক্রমবর্ধমান জনগণের খাদ্যৎপাদনের জন্য আরও সবল প্রচারণা স্বাধীনতার অবিলম্বেই শুরু করতে হবে। এটা পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার একটি অংশ হিসেবে
রাজধানীর যেকোনো একটি জায়গা দখল করা হবে যা স্বাধীনতার পর এক্সিকিউশনে রাখা হবে। খাদ্য প্রযোজনা পরিকল্পনার পুরো অবস্থানের একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ যত্নশীল মূল্যায়ন করা হবে। বন্যার্তদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া আবশ্যক এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রদান করতে হবে। পরিমিত মাত্রায় অনুরূপ একটি কর্মসূচি যুদ্ধ বিদ্ধস্ত এলাকাগুলোতে চালু করা যেতে পারে।২. কৃষি গবেষণা, শিক্ষা ও সম্প্রসারণ। গবেষণা ও সম্প্রসারণ সেবা বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে। ৩.কমোডিটি কমিটি। গবেষণা ও কৃষি ক্ষেত্রে এক্সটেনশন বিভিন্ন কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হবে। কমিটিকে এই উদ্দেশ্যে অনুদান করতে হবে। ৪. বাংলাদেশ জুট কমিটি। গবেষণা ও সম্প্রসারণ পরিষেবা হলো পাট ক্ষাতের একটি কার্যক্রম যা একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
<003.176.492>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৫.একইভাবে তামাক, নারিকেল, সুপারি, তৈলবীজ, ইত্যাদি বিষয়ক কমিটি একই উদ্দেশ্যে স্থাপন করা হবে। ৬. বাংলাদেশ চিনি কমিটি। ৭.বাংলাদেশ টোব্যাকো কমিটি। ৮. কৃষি সম্প্রসারণ। ৯. পশুপালন, কৃষি, মৎস্য ও বনায়ন। ১০. কৃষি অর্থনীতি ও পরিসংখ্যান। ১১. কৃষি উন্নয়ন কার্যক্রম বিভিন্ন অফিসের মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে। ১২. জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের সাথে কারিগরী ও অর্থনৈতিক এইড এবং কৃষিখাতে মৈত্রীচুক্তি সম্পাদনা।১৩. প্রকিউরমেন্ট ও সার বিতরণ। ১৪.কৃষি বিপনন। ১৫.সমন্বয়। ১৬. ভূমি পুনরুদ্ধার।১৬ নলকূপ ও ক্ষুদ্রসেচ। সংযুক্ত অফিস: ১. কৃষি গবেষণা বাংলাদেশ কাউন্সিল….. ক) গভর্নিং বডি খ) স্থায়ী ফাইন্যান্স কমিটি গ) উপদেষ্টা পরিষদ। ঘ) গবেষণা পরিষদ বোর্ড।ঙ) বৈজ্ঞানিক কমিটি। চ) আঞ্চলিক কমিটি। ২. অর্থনীতি অধিদপ্তর এবং বিপনন পরিসংখ্যান ৩.অধিদপ্তর এবং ইন্সপেকশন। ৪. কাউন্সিলর নিম্নরূপ অঙ্গের মাধ্যমে কাজ করবে। উদ্ভিদ সুরক্ষা, এবং দ্বিঘাত সংগ্রহস্থল সম্প্রসারণ। ৫.অধিদপ্তর ও প্রশিক্ষণ। ৬. সকল প্রাদেশিক অধিদপ্তর এই পরিকল্পনার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অধস্তন কর্মকর্তা: ১. বাংলাদেশ ভেটেরিনারী রিসার্চ ইনস্টিটিউট ২. বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট. ঢাকা ৩. জাতীয় ডেইরি গবেষণা ইনস্টিটিউট
<003.176.493>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৪ সামুদ্রিক মৎস গবেষনা ষ্টেশন।
৫ আভ্যন্তরীণ মৎস গবেষনা ষ্টেশন
৬ গভীর সমুদ্র মৎস গবেষনা ষ্টেশন।
৭ মৎস প্রযুক্তি গবেষনা ষ্টেশন।
৮ ধান গবেষনা প্রতিষ্ঠান।
৯ আলু গবেষনা প্রতিষ্ঠান।
১০ পাট গবেষনা প্রতিষ্ঠান।
১১ ইক্ষু প্রজনন প্রতিষ্ঠান।
১২ ইক্ষু গবেষনা প্রতিষ্ঠান ,রাজশাহী।
১৩বাংলাদেশ যান্ত্রিকিকরন ফার্ম।
১৪ চা গবেষনা প্রতিষ্ঠান।
১৫ অনুসন্ধানমুলক টিউব ওয়েল সংস্থা।
১৬ বন গবেষনা প্রতিষ্ঠান।
১৭ ঢাকা প্রাণিবিদ্যা বিষয়ক উদ্যান।
১৮ মৃত্তিকা সংরক্ষন কেন্দ্র।
রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকারাবদ্ধ
১ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন
২ বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন কর্পোরেশন
৩ বাংলাদেশ বন উন্নয়ন কর্পোরেশন।
.
(৫) পাট মন্ত্রনালয়
পাট বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান গুরুত্বপূর্ন স্থান দখল করে আছে।এটি তার অর্থনীতির প্রধান অবলম্বন।এটি সবচেয়ে বৃহৎ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী।এর গুনাবলী দ্বারা ,এটি পূর্নাংগ মন্ত্রনালয় এর দাবি রাখে।
কর্মকান্ড এবং সংস্থা
মন্ত্রনালয় নিম্নোক্ত কাজের জন্য দায়ী থাকবে
১ পাট উৎপাদনের ব্যাপারে মূল নীতিমাল এবং পরিকল্পনা সংক্রান্ত
২ পাটের মোট ক্ষেতের পরিমান
৩ বিদেশী বাজারে এবং আভ্যন্তরীণ খরচের মূল্যায়ন।
৪ একর প্রতি মানসম্পন্ন পাট এবং অধিক ফলনের উন্নতি।
৫ পাটের নতুন ব্যাবহার
৬ পাট চাষের ব্যাপারে আগ্রহ।
<003.176.494>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সচিবালয়
মন্ত্রী
সচিব
যুগ্ম সচিব
উপ সচিব উপ সচিব
ভারপ্রাপ্ত সচিব ভারপ্রাপ্ত সচিব
এস ও এস ও এস ও এস ও এস ও এস ও
সংযুক্ত প্রতিষ্ঠান
১ কেন্দ্রীয় পাট কমিটি
২ পাট গবেষনা প্রতিষ্ঠান
৩ পাট বীজ multiplication ফার্ম
রাস্ট্রীয় অঙ্গীকারাবদ্ধ
১ রাস্ট্রীয় পাট বানিজ্য কর্পোরেশন ফার্ম
আওয়ামীলীগ সরকার পাট ব্যাবসাকে জাতীয়করণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।এর আভ্যন্তরীন ক্রয় এবং বিক্রয় ,একইভাবে এর রপ্তানী সহ।এর লক্ষ পরাশ্রয় মধ্যসত্বভোগীদের এবং উতপাদনকারিদের শোষণকারীদের বাদ দেয়া।এটি পাট চাষীদের সঠিক মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করবে।একটি আই কর্পোরেশন স্থাপনের ব্যাপারে পাশ হবে।
২ পাট বাজারজাতকরন কর্পোরেশন।
৬ শিল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রনালয়
কর্মকান্ড এবং সংস্থা
শিল্প এবং বানিজ্য মন্ত্রনালয় কাজের মাধ্যমে সম্পৃক্ত থাকবে বৈদেশিক বানীজ্য,পুরো আমদানী এবং রপ্তানীর উপর নিয়ন্ত্রন,রপ্তানী উন্নয়ন,বানিজ্য চুক্তি সম্পর্কে আলোচনা,শুল্ক নিরুপন,বৈদেশিক দেশ সমূহে বানিজ্যক উপস্থাপন এবং আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলা ও প্রদর্শনীতে অংশগ্রহন।এটি আরো নিয়ন্ত্রন করবে আভ্যন্তরীন ব্যাবসা এবং বানিজ্য,ট্রেডমার্কস,মালিকানা সত্ব,গুনগন মান,পন্যের মান নির্নয়,বাহিরের বাজার এবং মূল্য প্রতিযোগিতা।প্রায় পুরো ব্যাক্তি মালিকানা শিল্পের ক্ষেত্র এবং সরকারী শিল্প ক্ষেত্র, ক্ষুদ্র শিল্প সহ যেমন চা এর সাথে জড়িত শিল্প এবং
<003.176.495>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
রাবার ইত্যাদি এই মন্ত্রনালয়ের অধীনে থাকবে। আরো উল্লেখ্য যে এটি উৎপাদনকারীদের তাদের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সাহায্য এবং দেশের শিল্প উন্নয়নের গতিবেগ বজায় রাখার দায়িত্বে নিয়োজিত একই সময়ে, ভোক্তাদের আগ্রহে,এটি উৎপাদন,বিতরন এবং আরো জরুরী জিনিসপত্রের দাম নির্ধারন, রাসায়নিক এবং সিমেন্ট সহ পুরো ব্যাবস্থা নিয়ন্ত্রন করবে।
শিল্প ও বানিজ্য মন্ত্রনালয় একটি সচিবালয় ,আরো কতগুলো অফিস এবং এর অধিনস্থ কিছু অফিস নিয়ে গঠিত।এই মন্ত্রনালয়ের অধীনে থাকবে একটি বৃহৎ সংখ্যক রাস্ট্রীয় অঙ্গিকারাবদ্ধ বোর্ড,একটি কমিশন,একটি কমিটি,এবং বাংলাদেশ মান নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠান।এই মন্ত্রনালয় পরিচালিত হবে শিল্প এবং বানিজ্যের জন্য মন্ত্রী পরিষদের মন্ত্রী দ্বারা, যে সহযোগিতা পাবেন দুই জন প্রতি মন্ত্রী, একজন বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের জন্য এবং আরেকজন শিল্প মন্ত্রনালয়ের জন্য।
সচিবালয়
সচিব ১
অতিরিক্ত সচিব ১
যুগ্ম সচিব ৬
প্রধান শিল্প উপদেষ্টা ১
(অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব)
১১১ কমিশনার(ক্ষুদ্র শিল্পের) উন্নয়ন
এবং অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ১
টেক্সটাইল কমিশনার এবং
অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ১
চেয়ারম্যান (বাংলাদেশ তাত বোর্ড)
এবং অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ১
চেয়ারম্যান (চা বোর্ড) ১
উপ সচিব ১৩
ভারপ্রাপ্ত সচিব ২৬
সেকশন অফিসার ৭৮
সংযুক্ত কার্যালয়
শিল্প এবং বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের সংযুক্ত কার্যালয়ের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরন নিচে দেয়া হল।
১ প্রধান নিয়ন্ত্রক আমদানী এবং রপ্তানী এর কার্যালয় ,ঢাকা।এই কার্যালয় যা প্রধান নিয়ন্ত্রক রপ্তানী এবং আমদানির অধিনে রয়েছে সেটি প্রথামিক ভাবে বাংলাদেশ সরকারে রপ্তানী এবং আমদানী সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতিমালা বাস্তবায়নের বিষয় দেখভাল করবে।এই কার্যালয়ের শাখা থাকবে চট্রগ্রাম,খুলনা,রাজশাহী এবং ঢাকাতে।
২ বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টার কার্যালয়।বাংলাদেশ সরকারে অর্থনৈতিক উপদেষ্টা,সহোযগিতা প্রাপ্ত হবে তার কর্মচারী,মন্ত্রনালয়ের পারিশ্রমিক প্রদান সংক্রান্ত উপদেষ্টা,অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত সকলে।সে বৈদেশিক ব্যাবসা এবং বানিজ্য সংক্রান্ত অধ্যায়ন এবং বিভিন্ন অর্থনৈতিক উপাত্ত অনুবাদ এবং তথ্য সংগ্রহ করবে।
<003.176.496>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
<003.176.497>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
<003.176.498>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অর্থনীতির সকল বিষয় মন্ত্রনালয়কে অবহিত করেন। তিনি বৈদেশিক বানিজ্য সহ দেশের সকল অর্থনৈতিক তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ এবং যাচাই বাচাই করেন। এছাড়া দেশের মূল্যসুচকের সমন্বয় সাধন, মূল্য নির্ধারণ, শুল্কের প্রভাব, কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক বানিজ্য সহ সকল অর্থনৈতিক বিষয়ে মন্ত্রনালয়কে পরামর্শ দান করেন।
(৩) ঢাকার উন্নয়ন সংস্থাঃ
এই সংস্থা প্রধান কাজ হচ্ছে বস্ত্র এবং চিনি শিল্প বাদে বাকি সব বৃহৎ ও মাঝারি শিল্পের পরিকল্পনা ও উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আলোচনা করা। দেশের শিল্পখাতের উন্নয়নের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা, নিয়ন্ত্রন ও পরিচালনা করার প্রধান দায়িত্ব এই সংস্থার। এই সংস্থার প্রধান কাজগুলোকে নিম্নোক্তভাবে ভাগ করা হয়…
১) শিল্পখাতের উন্নয়ন এবং পরিকল্পনা সুষম ও যথাযথ রাখতে যে পদক্ষেপগুলো নেয়া হয়েছে,
(ক) দেশের চাহিদা মোতাবেক পণ্য সরবরাহ এবং উৎপাদন বৃদ্ধি নিশ্চিত করা,
(খ) দেশের নানামুখী চাহিদার কথা বিবেচনা করে উৎপাদনে বৈচিত্রতা আনয়ন করা,
(গ) পণ্য্যের গুণগত মান ঠিক রেখে সর্বোচ্চ কম মুল্যে সরবরাহ নিশ্চিত করা,
(ঘ) প্রয়োজনে বৈদেশিক দাতা সংস্থা গুলো থেকে সুযোগ সুবিধা নেয়া।
২) পুরাতন শিল্পকারখনা পরিবর্ধন এবং নতুন কারখানা তৈরির জন্য আবেদনগুলো যাচাই বাচাই করা।
৩) শিল্প উন্নয়ন ব্যাংক এবং সরকারের নিকট থেকে ঋণ চাওয়া ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খোঁজ খবর নেয়া,
৪) শিল্পকারখানা গুলোতে কাঁচামাল যেমন ষ্টীল, সিমেন্ট, তেল, বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং পরিবহন সুবিধার ক্ষেত্রে সাহায্য করা।
৫) আরো যেসব সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে…
(ক) ষাণ্মাসিক আমদানি ও রপ্তানি সুবিধা প্রণয়ন,
(খ) কাঁচামাল পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের লাইসেন্স মঞ্জুর,
(গ) বিভিন্ন শিল্প ইউনিটে লোহা ও ইস্পাত বরাদ্দ,
(ঘ) কর্মীদের প্রশিক্ষণ,
৬) সমস্যা:
(ক) যন্ত্রপাতি আমদানি ও রপ্তানির জন্য লাইসেন্স
(খ) বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম এবং যন্ত্রপাতি যা বাংলাদেশে উত্পাদিত হয়না সেগুলোর উপর শুল্ক প্রদান থেকে অব্যাহতি দান।
৭) দোকানে সরবরাহের জন্য কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করা।
৮) সংগ্রহ ও প্রতিষ্ঠাপিত ক্ষমতা সংক্রান্ত শিল্প তথ্য সংকলন,
প্রকৃত উৎপাদন, কর্মসংস্থান অবস্থান, স্টক, মূল্য ইত্যাদি।
৯) যেমন ইস্পাত খনি, জ্বালানির, অর্থ হিসাবে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কারিগরি সহায়তা,
শিক্ষা, পরিকল্পনা কমিশন, ইত্যাদি, এবং
২) আমদানি ও রপ্তানি বিষয়ক ডেপুটি চিফ কন্ট্রোলার
আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের সহায়তা করা তার
দায়িত্ব।
৩) চেয়ারম্যান, ট্যারিফ কমিশন, চট্টগ্রাম অফিস
ট্যারিফ কমিশন একজন চেয়ারম্যান ও তিন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হবে। এটি
সংবিধিবদ্ধ এবং ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী। শিল্প সুরক্ষার সব ক্ষেত্রেই পরীক্ষা করা এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য। শুধু উৎপাদন ব্যবস্থার শুরুই নয় এর সঠিক সুরক্ষা দান করার জন্যই তাদের উক্ত ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও কৃষি মঞ্জুরির প্রশ্ন বিবেচনা করার ক্ষমতাও দেয়া হয়েছে।
শিল্প. কমিশন উভয় বিষয়ে ব্যাপক বিচক্ষণতার সহিত কাজ করবেন এবং শুল্ক স্থায়ীকরণ সংক্রান্ত নীতি,
সংরক্ষিত শিল্পের নীতি উভয় বিষয়ে কমিশনকে সিদ্ধান্ত নিতে স্বাধীনতা দেওয়া হতে পারে।
প্রতিটি শিল্প প্রয়োজন অনুযায়ী সুরক্ষার সময়কালও নির্ধারণ করবেন কমিশন।
৪) বানিজ্য রেজিস্ট্রারের অফিসে.
এই অফিসে একজন রেজিস্ট্রার থাকবেন যিনি তার কর্মকর্তা দ্বারা পরিচালিত হবেন। তার প্রধান কাজ সমূহঃ
ক) দায়ের দরখাস্ত যাচাই-বাছাই শেষে ট্রেড বানিজ্য নিবন্ধনের
রেজিস্ট্রেশন করা।
খ) সব রেজিস্টার্ড ট্রেডমার্ক একটি রেজিস্টার রক্ষণাবেক্ষণ করবেন ও সব রেকর্ডিং
এক্ষেত্রে পরবর্তী এন্ট্রি ট্রেডমার্ক মালিকানা পরিবর্তন করবেন,
বরাদ্দ করবেন, ইত্যাদি
গ) এ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে পরামর্শ দিবেন।
৫) শত্রুদের সম্পত্তি জমাদারের অফিসঃ
এই প্রতিষ্ঠানের দায় দায়িত্ব প্রশাসনের এবং শত্রুদের চিনহিত করে তাদের সকল সম্পত্তি নিষ্পতি করে জমাদারের কাছে থাকবে। কারণ প্রত্যেক ব্যক্তিই আবার তার সম্পত্তি ফিরে যেতে চান। এ কারণে দেশে উদ্বেগ পূর্বক যুধ্যমান ক্ষমতা দখল করে. জিম্মাদার রেজিস্ট্রেশন করবেন এবং বাঙালিদের দাবির প্রেক্ষিতে শত্রুদের সম্পত্তি দখল করবেন।
৬) মহা-পরিচালক, বাণিজ্যিক গোয়েন্দা ও পরিসংখ্যান, ঢাকা অফিস.
মহা-পরিচালক, যিনি এই অফিস প্রধান। তিনি বিভিন্ন ধরণের বাণিজ্য ও শিপিং পরিসংখ্যান প্রকাশের এবং বাণিজ্যিক কাজ করবেন।
৭) বিশেষ অধিকার এবং নকশা পরিকল্পনা অফিস, ঢাকা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়।
তার প্রধান কাজ আছে:
(ক) প্রতিটি পেটেন্ট পরীক্ষার পর উদ্ভাবন পেটেন্ট মঞ্জুর করা।
(খ) শিল্প নকশা রেজিসটার করা।
(গ) পেটেন্ট সংক্রান্ত একটি বার্ষিক প্রকাশনার প্রকাশ করা এবং
(ঘ) সংশ্লিষ্ট কারিগরি বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পরামর্শ নেয়া।
৮) কীটপতঙ্গ গবেষণা কেন্দ্র, রাজশাহী।
এটা রেশম পোকার নানা শাখায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণা পরিচালনা করবে।
রাষ্ট্রের দায়িত্ব
১) জাতীয় ক্ষুদ্র শিল্প কর্পোরেশন
২) রাষ্ট্র ট্রেডিং কর্পোরেশন
বিশেষ রপ্তানি এবং প্রধান পণ্যদ্রব্য আমদানি বহির্বাণিজ্য। যেমনঃ
তুলা, লোহা ও ইস্পাত পণ্য, কয়লা, খাদ্যশস্য, সিমেন্ট এবং সার। একটি আইন করে রাষ্ট্র ট্রেডিং কর্পোরেশন গঠন করা হবে।
৩) বাংলাদেশ শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন।
৪) বাংলাদেশ কুটির শিল্প করপোরেশন।
বোর্ড
১) বাংলাদেশ চা বোর্ড
২) বাংলাদেশ তুলা বোর্ড
৩) ছোবড়া বোর্ড
৪) সিল্ক বোর্ড
(৭) শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা-মন্ত্রণালয়
শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা মন্ত্রণালয় নিম্নলিখিত সমন্বয়ে গঠিত হইবে
বিভাগ:
(১) শিক্ষা অধিদপ্তর
(২) সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগ।
(৩) বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর।
<003.176.499>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
নামঃ মালিহা তাবাসসুম
ক্রিয়াকর্ম এবং সংগঠন
শিক্ষা অধিদপ্তরের উপর নিম্নোক্ত কাজগুলির দায়িত্ব থাকবে
১। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ।
২। মহাবিদ্যালয় শিক্ষা।
৩। বিদ্যালয় শিক্ষা।
৪। মৌলিক, সামাজিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা।
৫। ইউনেস্কো, প্রকাশন তথ্য এবং পরিসংখ্যান
৬। বৃত্তি- সকল ধরনের সরকারি বৃত্তিসমূহ, জাতীয় সহকারিতা প্রকল্পসমূহ, ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ উপবৃত্তি প্রকল্পসমূহ, বৈজ্ঞানিক, তথ্যপ্রযুক্তিগত, সামাজিক বিজ্ঞানে এবং শিল্পকলায় গবেষণার জন্য গবেষণা বৃত্তি, কলম্বো প্লান বৃত্তি প্রকল্প, জাতিসংঘ এবং ইউনেস্কো বৃত্তিসমূহ, এবং সহকারি বৈদেশিক প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, বৃত্তি।
বিভাগের নেতৃত্বে থাকবেন উপমন্ত্রী যিনি কাজ করবেন শিক্ষা এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সামগ্রিক নিয়ন্ত্রণ এবং নির্দেশনায়।
দপ্তরঃ
( শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এবং শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক অধিদপ্তর)
সচিবালয়ের কর্মচারীদের নিয়ে গঠিত
শিক্ষাগত উপদেষ্টা ও সচিবঃ ১
যৌথ শিক্ষা উপদেষ্টা ও যুগ্ম-সচিবঃ ১
যৌথ শিক্ষা উপদেষ্টাঃ ২
উপদেষ্টা, জাতীয় শৃঙ্খলা প্রকল্পঃ ১
উপসচিবঃ ৪
সহকারী সচিবঃ ১৬
উপ-শিক্ষা উপদেষ্টাঃ ৬
সহকারী শিক্ষা উপদেষ্টাঃ ১৬
পরিচালক (শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক গবেষণা ব্যুরো)ঃ ১
পরিচালক (পাঠ্যপুস্তক গবেষণা ব্যুরো)ঃ ১
শিক্ষা কর্মকর্তাঃ ১৫
অনুচ্ছেদ কর্মকর্তাঃ ৫০
<003.176.500>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিক্ষা অধিদপ্তরকে নিম্নোক্ত বিভাগে ভাগ করতে হবে-
১) প্রশাসন বিভাগ
২) মৌলিক এবং সামাজিক শিক্ষা বিভাগ
৩) মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ
৪) বৃত্তি বিভাগ
৫) ইউনেস্কো, প্রকাশনা, তথ্য এবং পরিসংখ্যান
সংযুক্ত কার্যালয়:
১। জন নির্দেশনা দপ্তর
অধীনস্থ কার্যালয়ঃ
শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষার জন্য ঢাকা গবেষণা প্রকল্ক, মনোবিজ্ঞান-শিক্ষক প্রশিক্ষণ, এবং শিক্ষা ও মনোবিজ্ঞানে স্নাতকত্তোর এবং উচ্চতর ডিগ্রী পর্যায়ের কোর্স ।
২। প্রাপ্তবয়স্ক অন্ধদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
৩। মৌলিক শিক্ষা গবেষণার জন্য জাতীয় প্রতিষ্ঠান, এবং মৌলিক শিক্ষায় পরিদর্শকগণ, প্রশাসক ও শিক্ষা অন্যান্য উচ্চতর কর্মীবৃন্দ এর জন্য উন্নত প্রশিক্ষণ আনতে ।
৪। জাতীয় মৌলিক শিক্ষা কেন্দ্র, ঢাকা-সামাজিক শিক্ষা, বৈদেশিক শিক্ষা বিভাগ
স্বায়ত্বশাসিত দেহ সমাজকল্যাণ বোর্ড:
সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এবং শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক অধিদপ্তর
ক্রিয়াকর্ম এবং সংগঠনসমূহ
এই অধিদপ্তর নিম্নোক্ত বিষয়গুলির জন্য দায়ী থাকিবে
১। সাংস্কৃতিক কার্যক্রম
২। শারীরিক শিক্ষা ও বিনোদন, ক্রীড়া এবং জঞ্জাল, যুব কল্যান;
এই অধিদপ্তর নিম্নোক্ত বিভাগে ভাগ করা হবেঃ
১। সাংস্কৃতিক বিভাগ
২। বাহ্যিক সম্পর্ক বিভাগ এবং
৩। শারীরিক শিক্ষা বিভাগ।
সংযুক্ত কার্যালয়ঃ
১। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, ঢাকা
অধীনস্থ কার্যালয়ঃ
১। নৃবিজ্ঞান বিভাগ, কুমিল্লা
২। জাতীয় পাঠাগার, ঢাকা
৩। বাংলাদেশের জাতীয় নথিপত্র, ঢাকা
৪। আধুনিক শিল্পকলা গ্যালারি, ঢাকা
৫। জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা
৬। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর, ঢাকা
বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর:
ক্রিয়াকর্ম এবং সংগঠনঃ
এই অধিদপ্তর নিম্নোক্র বিষয়গুলির জন্য দায়ী থাকিবেঃ
১। বৈজ্ঞানিক গবেষণা জরিপ
২। কারিগরী ও বৈজ্ঞানিক শিক্ষা।
<003.176.501>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বিভাগটি সরকার এবং নিম্নে উল্লেখিত সংগঠনগুলোর মধ্যে প্রশাসনিক সংযোগ হিসেবে কাজ করবেঃ
১. বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ
২. বাংলাদেশ ন্যাশনাল সায়েন্টিফিক এন্ড টেকনিক্যাল ডকুমেন্টেশন সেন্টার (ব্যান্সডক)
৩. জাতীয় গবেষণা উন্নয়ন সংস্থা
বিজ্ঞান গবেষণা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগটি একজন প্রতিমন্ত্রীর অধীনে থাকবে যিনি সামগ্রিক কেন্দ্রগুলো এবং শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা মন্ত্রীর সামগ্রিক নিয়ন্ত্রনে কাজ করবেন।
সচিবালয়ঃ
সচিবালয়ের গঠনঃ
অতিরিক্ত সচিব ১
শিক্ষা উপদেষ্টা এবং পদাধিকারে যুগ্ম সচিব ১
উপ সচিব ২
সহকারী শিক্ষা উপদেষ্টা ১
সচিব অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তা ৪
সহযোগী শিক্ষা উপদেষ্টা ৪
কারিগরী কর্মকর্তা ……
শিক্ষা কর্মকর্তা ……
জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ২
সহযোগী শিক্ষা কর্মকর্তা ২
বিভাগীয় কর্মকর্তা ১৫
অধীনস্থ কার্যালয়সমূহঃ
১. বাংলাদেশ খনি ও ফলিত ভূতত্ত্ব ইন্সটিটিউট
২. বাংলাদেশ জরিপ, চট্টগ্রাম
৩. বাংলাদেশ উদ্ভিদ জরিপ, রাজশাহী
৪. বাংলাদেশ প্রাণী জরিপ, ময়মনসিংহ
৫. ভূপ্রকৃতি বোর্ড, ঢাকা
৬. জাতীয় মানচিত্র সংস্থা, ঢাকা
৭. ঢাকা পলিটেকনিক, ঢাকা
৮. বাংলাদেশ প্রযুক্তি ইন্সটিটিউট, সিলেট
৯. শিক্ষা ও বিজ্ঞান গবেষণা মন্ত্রণালয়ের আঞ্চলিক কার্যালয়; ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও খুলনা
(৮)স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
কর্মকাণ্ড এবং সংগঠন
মন্ত্রণালয় নিম্নের কাজগুলোর জন্যে দায়ী থাকবেঃ
ক) চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা ;
<003.176.502>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
খ) মেডিকেল গবেষণায় প্রসার; মেডিকেল, ফার্মাসিউটিকাল, ডেন্টাল এবং নার্সিং পেশার উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা; এবং এসব পেশার শিক্ষাব্যবস্থার মান নির্ধারণ;
গ) মেডিকেল শিক্ষার প্রসার
ঘ) সমগ্র বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার প্রচার ও প্রসার;
ঙ) ঔষধের মান নির্ধারণ এবং নিয়ন্ত্রণ; এবং খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধ;
চ) বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে গভীর অনুসন্ধানের প্রসার
ছ) আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সম্পর্ক এবং কোয়ারেনটাইন- পরবর্তী ব্যবস্থাপনা
স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রশাসনঃ
নিন্মলিখিত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দায়বদ্ধ থাকবেঃ
১. বাংলাদেশের সকল সরকারী হাসপাতাল
২. চিকিৎসা গবেষণা কেন্দ্র, ফেনী
৩. বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য ইনিস্টিটিউট, চট্টগ্রাম
৪. ঢাকা নার্সিং কলেজ
৫. মেডিকেল স্টোর সংস্থা
৬. ঔষধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা
৭. ঔষধ গবেষণাগার, ঢাকা
৮. বি.সি.জি. প্রতিষেধক গবেষণাগার, খুলনা
৯. বাংলাদেশ চিকিৎসা বিজ্ঞান ইনিস্টিটিউট, ঢাকা ( স্থাপন করা হবে )
১০. অংশীদারী স্বাস্থ্যসেবা পরিকল্পনা, ঢাকা
১১. বাংলাদেশ ক্যান্সার গবেষণা কেন্দ্র, ফরিদপুর
১২. দেশীয় ঔষধ ব্যবস্থাপনা গবেষণা কেন্দ্র, রংপুর
১৩. মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট, পাবনা
১৪. কুষ্ঠ ইন্সটিটিউট, দিনাজপুর
১৫. ভি.ডি. প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ঢাকা
কেবিনেট মন্ত্রী মন্ত্রণালয়টির নেতৃত্বে থাকবেন
দপ্তর কর্মীরা হবেনঃ
সচিব ১
উপ সচিব ৬
সচিব অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তা ১২
বিভাগীয় কর্মকর্তা ২৪
মন্ত্রণালয়ের দপ্তর নিম্নলিখিত বিভাগগুলোর সংগঠনে হবেঃ
১. পরিকল্পনা, হাসপাতাল এবং ঔষধ বিভাগ
২. মেডিকেল বিভাগ
৩. স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিভাগ
<003.176.503>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৪. গৃহস্থালি বিভাগ।
সংযুক্ত কার্যালয়ঃ
১. স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তর, ঢাকা।
অধীনস্থ কার্যালয়সমূহঃ
১. গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ঢাকা
২. জনস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ফেনী
৩. বাংলাদেশ ম্যালেরিয়া ইন্সটিটিউট, দিনাজপুর
৪. বাংলাদেশ সরকারের রক্ত ও রাসায়নিক পরীক্ষক, বরিশাল
৫. অ্যান্টিজেন উৎপাদন ইউনিট, নোয়াখালী
৬. মানসিক ব্যাধি হাসপাতাল, পাবনা
৭. নার্সিং কলেজ, ঢাকা
৮. মেডিকেল স্টোর সংস্থা
৯. সমুদ্র ও বিমানবন্দর স্বাস্থ্য সংস্থা
১০. ঔষধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা
১১. ঔষধ গবেষণাগার, ময়মনসিংহ
১২. বি.সি.জি. প্রতিষেধক গবেষণাগার, কুমিল্লা
১৩. বেসামরিক ও সামরিক ঔষধালয়
১৪. এক্স-রে প্রতিষ্ঠা, ময়মনসিংহ
(৯) পরিবহন ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়
মন্ত্রণালয় নিম্নলিখিত অধিদপ্তর নিয়ে গঠিত হবেঃ
(ক) রেলওয়ে অধিদপ্তর
(খ) সড়ক-পরিবহন অধিদপ্তর
(গ) বেসামরিক বিমান ও যোগাযোগ অধিদপ্তর
রেলওয়ে অধিদপ্তর
কার্যক্রম ও গঠন
রেলওয়ে অধিদপ্তর বাংলাদেশ সরকারের একটি মন্ত্রণালয় হিসেবে কাজ করবে। পরিবহন ও যোগাযোগ মন্ত্রী এই অধিদপ্তরের দায়িত্বে থাকবেন এবং উপরে উল্লেখিত প্রতিটি অধিদপ্তরের জন্য, তিনজন উপমন্ত্রী তাকে সাহায্য করবেন ।
রেলওয়ে অধিদপ্তরে থাকবেন একজন চেয়ারম্যান এবং চারজন সদস্য যাদের একজন ফিন্যান্সিয়াল কমিশনার । বাকি তিনজন সদস্য আলাদা
তিনটি আলাদা দপ্তরের দায়িত্বে থাকবেন- কর্মী, পরিবহন এবং প্রকৌশল।
অধিদপ্তরের চেয়ারম্যান পদাধিকারবলে রেলওয়ে মন্ত্রনালয়ে বাংলাদেশ সরকারের একজন সচিব হবেন এবং শুধুমাত্র মন্ত্রীর অধীনে থেকেই তিনি কারিগরী ও অন্যান্য বিষয়সমূহে সিদ্ধান্ত নিতে এবং রেলওয়ের কর্মপন্থা বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দিতে পারবেন। সকল নীতি এবং অন্যান্য বিষয় তার মাধ্যমেই মন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হবে।
<003.176.504>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
রেলওয়ের অর্থনৈতিক কমিশনারঃ
স্বীয় পদাধিকার বলে রেলওয়ের অর্থনৈতিক কমিশনার যেকোনো আর্থিক ব্যয় অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন । তার পূর্ব অনুমোদন ছাড়া ব্যয় সংক্রান্ত বা মুনাফায় প্রভাব ফেলে এমন কোনো প্রস্তাব গৃহীত হবে না ।
অন্যান্য সদস্যঃ
কর্মীদের দায়িত্বে থাকা , পরিবহন ও প্রকৌশল এর সদস্যরা তাদের অধীনে থাকা সকল ধরনের কারিগরি বিষয়ের জন্য দায়বদ্ধ হবেন ।
রেলওয়ে বোর্ডের গঠন এটিকে পরিমার্জন ও রেলওয়ে নীতিমালা পরিচালনার জন্য স্বাধীনতা দেবে যাতে করে রেলওয়ে কে জাতীয়ভাবে বাণিজ্যিকভিত্তিতে উন্নয়ন করা যায় ।
রেলওয়ে বোর্ডের মেম্বাররা পরিচালকবৃন্দ ও উপ- পরিচালকবৃন্দ দ্বারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবেন। পরিচালক মর্যাদায় রেলওয়ে বোর্ডের একজন সচিব থাকবেন ।
এই সচিবালয় সংস্থাটি মোটামুটি বেসামরিক সচিবালয় এর আদলে হবে কিন্তু পূর্বোক্ত কর্মীদের চাকুরির শর্তাবলী নীতিগতভাবে রেলওয়ে কর্মী হিশেবে নিয়োগকৃতদের সাথে সামাঞ্জস্যপূর্ন হবে ।
সংযুক্ত কার্যালয়
গবেষণা, নকশা এবং প্রমিতকরণ সংস্থা
এই প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য পরিবর্তনশীল অবস্থা এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা ফলাফলের ভিত্তিতে স্টক, ট্র্যাক , ব্রীজ ইত্যদি রেলের এমন সব উপকরন এর ক্রমান্বয়ে উন্নতি সাধন করা। বাংলাদেশ রেলওয়ের মানদন্ড অনুযায়ী নকশা , সরঞ্জামের বিবরনী এবং বাংলাদেশের রেলওয়েতে ব্যবহৃত উপকরণের প্রস্তুতি ও সরবরাহের জন্য এটি দায়বদ্ধ থাকবে । বয়লার পরিদর্শনসংক্রান্ত কাজকর্মও এই কার্যালয় থেকে ব্যবস্থা করা হবে। রেলওয়ে প্রকৌশলের বিভিন্ন শাখায় বিশেষজ্ঞ হিশেবে বিদেশী উপদেষ্টা প্রকৌশলীদের বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করবে । এটির একটি স্থাপত্য বিষয়ক শাখাও আছে যা রেলওয়ের প্রয়োজনীয় স্থাপত্য সংক্রান্ত সকল কাজ পরিচালনা করে।
এছাড়া রেলওয়ের পরীক্ষা ও গবেষনা সংক্রান্ত সংস্থাটি সিভিল, মেকানিক্যাল, ইলেক্ট্রিক্যাল এবং মেটালার্জিক্যাল ও কেমিক্যাল গবেষনার ক্ষেত্রে পরীক্ষণ ও উদ্ভুত সমস্যাগুলোর তদারক করবে । কনক্রিট ও স্থাপত্য বিষয়ে গবেষণা এবং ব্রীজ কাঠামো ও ট্র্যাক বিষয়ক গবেষণা ও পরীক্ষণগুলোও এই সংস্থা যাচাই করে দেখবে । এটি তথ্য সেবাও প্রদান করবে যা বাংলাদেশ ও বিদেশে সংঘঠিত গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার বিষয়ে বুলেটিন ও সারসংক্ষেপ প্রকাশ করবে । এটি বাংলাদেশ রেলওয়ের কারিগরি বুলেটিন ও রেলের অন্যান্য কারিগরি কাগজপত্রও প্রকাশ করবে ।
অধীনস্ত কার্যালয়সমূহঃ
(১) রেলওয়ে নিরীক্ষণ আদালত (Railway Rates Tribunal)
কর্তৃত্বপূর্ণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি রেলওয়ে নিরীক্ষণ আদালত চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠা করা জরুরী। এই মর্মে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজনীয়। এই আদালতের কাজ হবে অযৌক্তিক বৈষম্য, অন্যায্য ভাড়া, ষ্টেশন থেকে ষ্টেশনে ভাড়া হার প্রকাশ না করা ইত্যাদি বিষয়ে রেলওয়ে ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর শুনানি ও সিদ্ধান্ত নেওয়া । অতিরিক্ত হিশেবে, তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের ক্ষেত্রে, মহাব্যবস্থাপক এর সংশোধনী ক্ষমতা প্রয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারের অভিযোগগুলো ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে ।
<003.176.505>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(২) রেলওয়ে সেবা পরিষদ (Railway Service Commission)
এটি বিভিন্ন শাখার জন্য তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ এর বাছাইকাজ পরিচালনা করবে। এটি করা হবে রাজশাহী, চিটাগং, খুলনা এবং ঢাকায় ।
(৩) রেলওয়ে সংযোগ কর্মকর্তার কার্যালয় এবং এর সাথে সরবরাহ ও নিষ্পত্তি সংক্রান্ত মহাপরিচালকের কার্যালয় ।
(৪) রেলওয়ে স্টাফ কলেজ, চট্টগ্রাম
রেলওয়ে কর্মকর্তাদের বিশেষায়িত কারিগরী প্রশিক্ষন প্রদানের জন্য এই কলেজ টি প্রতিষ্ঠা করা হবে। এটি শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাদের সাধারণ রেলওয়ে কর্মকান্ড এবং এর সাথে কনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের পুনঃঅনুশীলনমূলক সূচীতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করবে । এছাড়াও, বিশেষত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের জন্য, এটি নিয়মিতভাবে স্বমাধ্যমে বিশেষায়িত বক্তাদের দ্বারা নির্বাচিত বিষয়সমূহে বিশেষ শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করবে ।
পরিবহণ বিভাগ
এই বিভাগ নিম্নলিখিত বিষয়সমূহের দায়িত্বে থাকবেঃ
(ক) সড়ক পরিবহণ ও সড়ক উন্নয়ন
(খ) প্রধান বন্দর
(গ) পর্যটন
(ক) সড়ক পরিবহণঃ এই অংশের মূল কার্যক্রম হবে মোটরযানের কর সংক্রান্ত নীতিগুলো প্রয়োগ করা এবং মোটরযান নিবন্ধন, চালক ও কন্ডাকটরদের অনুমোদন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, তৃতীয় পক্ষ থেকে আশংকাজনিত কারনে বীমা, সড়ক পরিবহণের জাতীয়তাকরণ সহ সমগ্র বাংলাদেশে সরক পরিবহনের তদারকি করা। এই ক্ষেত্রে এটি সবধরনের কর্মকান্ড পরিচালনা করবে ।
সড়ক উন্নয়নঃ
সড়ক সম্পর্কিত নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিয়ে সরকার কাজ করবে-
(১) আইনসভা কর্তৃক ঘোষিত কিংবা আইনসভা গৃহিত আইনের অধীনে ঘোষিত মহাসড়কগুলো হবে জাতীয় মহাসড়ক ।
(২) সরকারী অনুদানে তৈরীকৃত রাস্তা।
(৩) জাতীয় কিংবা সামরিক বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ ঘোষিত সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা ।
বন্দরঃ
চট্টগ্রাম ও খুলনায় অবস্থিত বন্দরসমূহের উন্নয়ণ, বর্ধিতকরণ ও আধুনিকীকরণ
সামূদ্রিক জাহাজ চলাচল ও বাতিঘরসমূহ
অভ্যন্তরীণ জলপথ ও অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন
এযাবৎকাল এগুলো আমাদের দেশে অবহেলিত ছিল। বাংলাদেশে যোগাযোগব্যবস্থার মূল চালিকাশক্তি হিশেবে এগুলোর উন্নয়ণ, বর্ধিতকরণ ও আধুনিকীকরণ করা উচিত ।
<003.176.506>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
পর্যটন
বৈদেশিক মূদ্রা আয় করার জন্য বিদেশ থেকে পর্যটকদের আসা-যাওয়া এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এর সুনাম প্রচার গুরুত্বপূর্ন বিষয় । এদিকে পর্যাপ্ত নজর দেয়া উচিত।
পরিবহন বিভাগ একটি একটি সচিবালয় এবং কিছু অধীনস্থ অফিস নিয়ে গঠিত।
সচিবালয়ঃ
সচিবালয় গঠনে থাকবেনঃ
সচিব এবং নৌ পরিবহন মহাপরিচালক : ১
উন্নয়ন উপদেষ্টা এবং পদাধিকারবলে যুগ্ম সচিব : ১
পরামর্শক প্রকৌশলী (সড়ক উন্নয়ন) এবং পদাধিকারবলে যুগ্ম সচিব : ১
উপ সচিব : ৬
সচিব অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তা : ১২
বিভাগীয় কর্মকর্তা : ২৪
অধীনস্থ কার্যালয় এবং অন্যান্য ইউনিটঃ
১ মহাপরিচালক নৌ পরিবহন, চট্রগ্রাম ।
এটি বাণিজ্যিক জাহাজ পরিবহন এবং নৌবিদ্যা পরিচালনা, বাণিজ্যিক জাহাজ পরিবহন আইন এর ব্যবস্থাপনা, বাংলাদেশি নাবিকদের নিয়োগ ও কাজের শর্ত সংক্রান্ত নিয়ম এবং বিধিবিধান, কল্যানভাতা এবং প্রশিক্ষন এর সুবিধার উন্নয়ন সংক্রান্ত সকল বিষয়ে সরকারি নীতির প্রয়োগ নিশ্চিত করবে ।
নিম্নোক্ত অধস্থন কার্যালয়গুলো নৌ পরিবহন মহাপরিচালক এর প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রনাধীনে থাকবেঃ
(ক) মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপার্টমেন্ট, চট্রগ্রাম।
(খ) নৌ পরিবহন কার্যালয়সমূহ, চট্রগ্রাম এবং খুলনা।
(গ) নাবিক কল্যান কার্যালায়সমূহ, চট্রগ্রাম এবং খুলনা।
(ঘ) নাবিক নিয়োগ কার্যালয়সমূহ, চট্রগ্রাম এবং খুলনা।
(ঙ) প্রশিক্ষন প্রতিষ্ঠান।
(চ) আঞ্চলিক কার্যালয়সমূহ।
পরিচালক মেরিন প্রকৌশলী প্রশিক্ষন
২। বাতিঘর এবং হালকা জাহাজ বিভাগ।
৩। আঞ্চলিক পর্যটন কার্যালয়সমূহ।
<003.176.507>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বেসামরিক বিমান চলাচল এবং যোগাযোগ বিভাগ
কার্যক্রম ও গঠন
এই বিভাগটির দায়িত্ব হবে পরিচালনা করাঃ
১ বেসামরিক বিমান এবং বিমান পরিবহন শিল্প
২ ডাক ও টেলিগ্রাফ এবং টেলিফোন শিল্প
৩ আবহাওয়া বিদ্যা
৪ রেলওয়ে তদন্ত
৫ বৈদেশিক যোগাযোগ
৬ বেতার পরিকল্পনা এবং সমন্বয়।
এই বিষয়গুলো নিম্নে উল্লিখিত অধীনস্ত সংস্থা দ্বারা পরিচালিত হবে, যার প্রধানরা প্রতিটির বিপরীতে নির্দেশিত আছেঃ
১ বেসামরিক বিমান চলাচল বিভাগ।(মহাপরিচালক বেসামরিক বিমান চলাচল বিভাগ)
২ বিমান পরিবহন শিল্প(বাংলাদেশ বিমান এবং বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল কতৃপক্ষ)
৩ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ (মহাপরিচালক ডাক ও টেলিযোগাযোগ)
৪ বেতার পরিকল্পনা ও সমন্বয় সংস্থা (উপদেষ্টা, বেতার, পরিকল্পনা এবং সমন্বয়)
৫ বাংলাদেশ আবহাওয়া বিভাগ (মহাপরিচালক, মানমন্দির)
৬ বৈদেশিক যোগাযোগ সেবা(মহাপরিচালক বৈদেশিক যোগাযোগ সেবা)
৭ রেলওয়ে পরিদর্শকগন (প্রধান সরকারি পরিদর্শী, রেলওয়ে)
৮ বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প (ব্যাস্থাপনা পরিচালক বাংলাদেশ টেলিফোন)
সমগ্র যোগাযোগ এবং পরিবহন মন্ত্রনালয় একজন মন্ত্রী দ্বারা পরিচালিত হবে,যার দুজন প্রতিমন্ত্রী থাকবে।
সচিব
(বেসামরিক বিমান এবং যোগাযোগ বিভাগ)
সচিবালয়ঃ ১
যুগ্ম সচিবঃ ১
উপ সচিবঃ ৪
সচিব অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তাঃ ৮
বিভাগীয় কর্মকর্তাঃ ১৬
<003.176.508>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সংযুক্ত কার্যালয়সমূহঃ
১। মহাপরিচালক বেসামরিক বিমান
(ক) প্রশাসন পরিচালকের দপ্তর
(খ) বিমান পরিবহন পরিচালকের দপ্তর
(গ) প্রশিক্ষন এবং লাইসেন্স পরিচালকের দপ্তর
(ঘ) বিমানচালনা সংক্রান্ত পরিদর্শকের দপ্তর
(ঙ) বিমান পথ এবং বিমান বন্দর পরিচালকের দপ্তর
(চ) যোগাযোগ পরিচালকের দপ্তর
(ছ) ব্যবস্থাপনা এবং তথ্য পরিচালকের দপ্তর
(জ) গবেষণা এবং উন্নয়ন পরিচালকের দপ্তর
২। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মহাপরিচালকের দপ্তর
অধীনস্থ কার্যালয়সমূহঃ
১। আবহাওয়া বিভাগ
২। রেলওয়ে পরিদর্শকের দপ্তর
৩ মহাপরিচালকের দপ্তর, বৈদেশিক যোগাযোগ।
রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকারবদ্ধঃ
১। বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প
২। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থা
৩। বাংলাদেশ বিমান পরিবহন সংস্থা
১০ জ্বালানী,খনি এবং প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রনালয়।
কার্যক্রম ও গঠনঃ
নিম্নোক্ত বিষয়সমূহ এই মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে থাকবেঃ
(১) খনি এবং খনিজ
(২) জ্বালানী, কয়লা, লিগনাইট, তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস।
এই মন্ত্রনালয় রাস্ট্রের একজন মন্ত্রী দ্বারা পরিচালিত।
সচিবালয়
সচিব : ১
যুগ্ম সচিব : ১
উপ সচিব : ৩
সচিব অধীনস্ত
বিশেষ কর্মকর্তা : ৬
বিভাগীয় কর্মকর্তা : ১২
অধীনস্থ কার্যালয়
১। বাংলাদেশ ভূ জরীপ
এটি একজন পরিচালক দ্বারা পরিচালিত হবে যার প্রধান কার্যালয় ঢাকাতে থাকবে যেখানে প্রধান শাখা গুলো হবে পেট্রোলজিকাল, জীবাশ্মবিজ্ঞান এবং রাসায়নিক গবেষনাগার, জিওফিজিক্যাল সেকশন, ভূগোল প্রকৌশল এবং ভূ-পানি বিভাগ ইত্যাদি ।
<003.176.509>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
২. তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস কমিশন
দেশের অভ্যন্তরে তেল অনুসন্ধান এবং পরিশোধনের দায়িত্ব নেবে সরকার। এটি তেল এবং গ্যাস কমিশনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। কমিশনটি নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর জন্য দায়ী থাকবেঃ
(ক) প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পদ অনুসন্ধান এবং তেল অনুসন্ধান ও পরিশোধন সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে সরকারকে উপদেশ প্রদান।
(খ) (১) তেলের অনুসন্ধানের জন্য ভূতাত্ত্বিক এবং জিওফিজিক্যাল জরিপ পরিচালনা।
(২) তেলের মজুদ খুঁজে পেতে ড্রিলিং এবং অন্যান্য কার্যাদি পরিচালনা করা।
(৩) প্রারম্ভিক প্রক্রিয়া এবং সংরক্ষণ সহ তেলের উৎপাদন শুরু করা ।
(৪) তেল কোম্পানিসমূহের সাথে চুক্তি এবং বাস্তবায়ন করন।
(৫) দেশের প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তেল সম্পর্কিত এবং খনির নিয়মনীতি অন্যান্য বিষয়সমূহ সম্পর্কিত পরিসংখ্যান সংগ্রহ এবং প্রকাশ করা।
(গ) প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তেলের অনুসন্ধান সম্পর্কিত বিবৃতি এবং প্রবন্ধ প্রকাশ এবং
(ঘ) সরকার নির্ধারিত অন্য যে কোনো কাজ ।
(১১) সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন ও গ্রামীণ গৃহায়ণ
এই মন্ত্রণালয় দুইভাগে গঠিত হবেঃ সমাজকল্যাণ বিভাগ এবং আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন ও গৃহায়ণ বিভাগ ।
সমাজকল্যাণ বিভাগঃ
১৯৬১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৫.২ শতাংশ শহরাঞ্চলে বসবাস করে এবং ৯৪.৮ শতাংশ গ্রামে বাস করে।
আবার জাতীয় আয়ের প্রায় ৬৫ শতাংশ আসে কৃষি থেকে, গ্রামাঞ্চলের লোক যার উপর পুষ্টিসাধন, কর্ম ও জীবিকা জন্য নির্ভরশীল । বৈদেশিক মূদ্রা আয়ের প্রধান ক্ষেত্র কৃষি । মোট আয়ের মাত্র ১০% আসে শিল্পকারখানা থেকে। সত্যিকার বাংলাদেশ নিহিত আছে ৬৫,০০০ এরও বেশি গ্রামের মধ্যে । এগুলোর সমৃদ্ধি এবং কল্যাণ এর সাথে সমগ্র দেশের সম্পর্ক রয়েছে । এখানে প্রস্তাবিত সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আলাদা বিভাগ গঠনের কাজ ও গুরুত্ব বিবৃত করা হয়েছে।
সমাজ কল্যাণ বিভাগ নিম্নোক্ত কাজগুলোর দায়িত্বে থাকবেঃ
(১) বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রমের পরিকল্পনা, পরিচালনা, সমন্বয়।
(২) কেন্দ্রীয় কমিটির মূল নীতি বিষয়সমূহ ।
(৩) স্থানীয় সংস্থা দ্বারা বাস্তবায়ন ।
<003.176.510>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন অধিদপ্তর
এই বিভাগের প্রধান দায়িত্ব হবে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসল এর বিভিন্ন সংস্থা– ইউনিয়ন বোর্ড, থানা পর্যায়ের সমন্বয় কমিটি এবং গ্রামাঞ্চলের জেলা বোর্ড এবং শহরের পৌর সভাগুলোতে- সংস্থা, সংবিধান, কার্যক্রম, সরকারি আর্থিক সহযোগিতা সম্পর্কিত সকল বিষয় পরিচালনা করা এবং কেন্দ্রীয় সরকার ও স্থানীয় স্বায়ত্তশাষিত সরকারের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করা ।
মন্ত্রনালয়ে একজন মন্ত্রিপরিষদ মন্ত্রী থাকবেন যিনি দুইজন উপমন্ত্রী দ্বারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবেন- একজন স্থানীয় সরকারের জন্য এবং অন্যজন সামাজিক উন্নয়নের জন্য।
সচিবালয়ের কর্মচারির মধ্যে থাকবেন:
সচিব : ১
যুগ্ম সচিব : ২
উপ সচিব : ৪
সচিব অধিনস্ত বিশেষ কর্মকর্তা : ৮
বিভাগীয় কর্মকর্তা : ১৬
অধীনস্ত অফিসসমূহঃ
১। সামাজিক শিক্ষা সংগঠক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র-ঢাকা,রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও খুলনা।
২। উন্নয়ন কর্মকর্তা র্প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ঢাকা এবং খুলনা।
স্বায়ত্তশাষিত সংস্থা :
১। স্থানীয় সরকারের জাতীয় ইনস্টিটিউটসমূহ ।
২। পল্লী উন্নয়ন একাডেমি,কুমিল্লা ।
৩।এইবিষয়ে অন্যান্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হবে ।
(১২) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়
কার্যক্রম ও গঠনঃ
প্রধানত নিম্নলিখিত বিষয়সমূহের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দায়ী থাকবে:
১.জননিরাপত্তা
২.জনস্বার্থ বিষয়ক কিছু বিষয়
জননিরাপত্তা :
জননিরাপত্তা দানের ক্ষেত্রে, সারাদেশে আইন শৃঙ্খলা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দায়ী থাকবে।
মন্ত্রনালয় নিম্নলিখিত সাধারণ জনস্বার্থ বিষয়ক কাজের জন্য দায়ী থাকবে:
(১) রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, উপমন্ত্রীর ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা; প্রধান বিচারপতি ও উচ্চ আদালতের অন্যান্য বিচারকদের বেতন, নিয়োগ ও চাকুরীর শর্তাবলী; অগ্রগণ্যতা সনদ; জাতীয় পতাকা; রাষ্ট্রপতির পতাকা; জাতীয় সংগীত; পরিচায়ক চিহ্ন; জাতীয় প্রতীক; আদমশুমারি ইত্যাদি।
<003.176.511>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(II) বিদেশী; নাগরিকত্ব; জাতীয়তা; প্রেস আইন ইত্যাদি
সচিবালয় :
সচিবালয় গঠনে থাকবেন:
সচিব : ১
যুগ্ম সচিব : ২
উপ সচিব : ৪
সচিব অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তা : ৬
বিভাগীয় কর্মকর্তা : ১৮
সংযুক্ত অফিসসমূহঃ
সংযুক্ত অফিসসমূহের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিচে দেওয়া হল:
(১) পুলিশ অধিদপ্তর, পুলিশের মহাপরিদর্শক
এই অধিদপ্তরের প্রধান দায়িত্ব দেশের আইন ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা। এই অধিদপ্তর পুলিশ মহাপরিদর্শকের দায়িত্বাধীনে থাকিবে, ঢাকায়
অবস্থিত সদর দপ্তরসহ । এটির কয়েকটি শাখা সারাদেশে বিস্তৃত থাকবে ।
(২)কারাগার মহাপরিদর্শক।
(৩)আনসার পরিচালক।
(৪)ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো।
ব্যুরোটি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়ে সরকারকে গোয়েন্দা-তথ্য সরবরাহ করবে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিষয়ে পরামর্শ দেবে। এটা একজন পরিচালক দ্বারা পরিচালিত হবে, যিনি ঢাকা,খুলনা, রাজশাহী এবং চট্টগ্রামের আঞ্চলিক অফিসের দ্বারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবেন। (ক) একটি ডিটেকটিভ ট্রেনিং স্কুল, (খ) ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যুরো, & (গ) একটি ফরেনসিক ল্যাবরেটরি স্থাপন করার জন্য সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
(৫)বিশেষ পুলিশ প্রতিষ্ঠা।
এই সংস্থার কাজ হচ্ছে রেল ও ঠিকাদারসহ সরকারের বিভিন্ন বিভাগের অফিসে দুর্নীতি সনাক্তকরণ ও দূর্নীতি মামলা পরিচালনা করা। ঢাকা সদর দপ্তরসহ, এটি পুলিশ মহাপরিদর্শকের দায়িত্বে থাকবে । সারা দেশে এটির কয়েকটি শাখা থাকবে। এই প্রতিষ্ঠানটি অপহৃত ব্যক্তির পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত কাজের দায়িত্বে থাকবে।
(৬) সারদা পুলিশ ট্রেনিং কলেজ।
বিদ্যমান কলেজটির আরও উন্নয়ন করতে হবে । কলেজটিতে আরো মনোযোগ দেওয়া উচিত যাতে এটা তার দায়িত্বসমূহ কার্যকরভাবে পালন করতে পারে।
<003.176.512>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
অধীনস্ত দপ্তরসমূহঃ
অধ:স্থন দপ্তরসমূহের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিচে দেওয়া হলঃ
(১)সমন্বয় অধিদপ্তর।
এটি প্রধানত তিনটি বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট : (ক) বেতার যোগাযোগের বিষয়ে সরকারের নিকট কারিগরি পরামর্শ, (খ) পুলিশ বেতার সংগঠনের সমন্বয় এবং গ) প্রযুক্তিগত যোগাযোগ বিভাগ এবং পরিষেবার সঙ্গে সংযোগ এবং সমন্বয়।
(২) জাতীয় ফায়ার সার্ভিস কলেজ,চট্টগ্রাম।
উন্নত অগ্নিনির্বাপক প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনমূলক কোর্স দেয়ার জন্য সরকারকে একটি জাতীয় ফায়ার সার্ভিস কলেজ স্থাপন করতে হবে।
(৩) পুলিশ ট্রেনিং কলেজ,সারদা।
মন্ত্রনালয়ে একজন মন্ত্রিপরিষদ মন্ত্রি থাকবেন যিনি দুইজন উপমন্ত্রী দ্বারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবেন।
(১৩)সেচ ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়
কার্যক্রম ও গঠনঃ
মন্ত্রণালয় নিম্নলিখিত কাজের দায়িত্বে থাকবে:
১. বিদ্যুত
২. সেচ
৩. বন্যা নিয়ন্ত্রণ
৪. নদী উপত্যকার প্রকল্প
বিদ্যুৎ
বিদ্যুৎ সংক্রান্ত ব্যাপারের জন্য মন্ত্রণালয়কে নিম্নলিখিত জিনিসগুলো বরাদ্দ করা যেতে পারেঃ
১. বিদ্যুৎ উন্নয়ন।
২. বিদ্যুৎ উন্নয়নের জন্য কারিগরি সহায়তা।
৩. বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ লাইন সমন্বয়।
৪. বিদ্যুৎ উন্নয়নের জন্য পানির সদ্ব্যবহার।
৫. বিদ্যুৎ উন্নয়ন/উৎপাদন।
৬. বিদ্যুৎ বিষয়ক গবেষণা।
৭. বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সরবরাহ।
সেচ
বাংলাদেশের মতো একটি কৃষিপ্রধান দেশে সেচের গুরুত্ব অপরিসীম। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা কমর্সূচির প্রয়োজনীয়তা সেচকাজের সাথে সম্পর্কিত কাজগুলোকে অগ্রসর করতে বাধ্য করেছে । বাংলাদেশ সরকার এর উচিত এসংক্রান্ত সমস্ত দায়িত্ব নেওয়া।
বন্যা নিয়ন্ত্রণ
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এটার প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই। এই হুমকিগুলো মোকাবেলা করার জন্য ভারত সরকার, জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতা করা উচিত ।
<003.176.513>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
নদী উপত্যকার প্রকল্প
কর্ণফুলী বহুমুখী প্রকল্প এখন পর্যন্ত উন্নয়ন হয়নি। এটি এমন একটি ক্ষেত্র যাতে আপাতদৃষ্টিতে কোন উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হয় নি। এ বিষয়ে বিস্তৃত গবেষণামুলক পদক্ষেপ অবশ্যকরণীয়।
সচিবালয়ঃ
সচিবালয় গঠিত হবেঃ
সচিবঃ ১
যুগ্ম সচিবঃ ২
উপসচিবঃ ৪
সচিব অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তাঃ ৮
বিভাগীয় কর্মকর্তাঃ ২৪
রাষ্ট্রীয় প্রতিশ্রুতি
বাংলাদেশ পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
আরও অনেক বিভাগ, যেমন সেচ ও শক্তি বিভাগ, কর্ণফুলী বহুমুখী প্রকল্প, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
(১৪) আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়
কার্যক্রম ও গঠনঃ
মন্ত্রনালয়ের প্রধান কার্যাবলী হচ্ছেঃ
১) মন্ত্রীগন এবং সকল রাষ্ট্রীয় বিভাগসমূহকে সকল আইনী বিষয়ে পরামর্শ প্রদান।
২) খসড়া বিল, অধ্যাদেশ ও প্রবিধান এর খসড়া তৈরি এবং তা কার্্যকর করা এবং ঘোষণা পর্যন্ত ধাপে ধাপে নজরদারি।
৩) আইনগত ও খসড়ার দৃষ্টিকোণ থেকে সংবিধিবদ্ধ আইন ও আদেশসমূহের সুক্ষাতিসুক্ষ বিশ্লেষণ।
৪) আইন ও অন্যান্য সংবিধিবদ্ধ আদেশ ও সধ্যাদেশ জারির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন।
আইনগত প্রস্তাব প্রসঙ্গে (যা প্রশাসন দ্বারা বিধিবদ্ধ) মন্ত্রীদের কাজ শুধুমাত্র প্রশাসনিক মন্ত্রনালয়ের নির্ধেশনার উপর বিধির খসড়া তৈরি করা
এই আইনের আওতায় উক্ত মন্ত্রনালয়টি বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এর শলাপরামর্শ করবে।
বাংলাদেশের নতুন সংবিধান কার্যকর হলে জাতীয় নির্বাচন এই মন্ত্রনালয়ের অধীনে ন্যস্ত করা হবে।
মন্ত্রনালয়টি সচিবালয় ও অধস্তন অফিস নিয়ে গঠিত হবে, এর নেতৃত্বে থাকবেন একজন মন্ত্রী যাকে সাহায্য করবেন একজন উপমন্ত্রী।
<003.176.514>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সচিবালয়ঃ
সচিবালয় গঠিত হবেঃ
সচিবঃ ১
যুগ্ম সচিবঃ ১
উপসচিবঃ ২
সচিব অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তাঃ ৬
বিভাগীয় কর্মকর্তাঃ ১২
অধস্তন অফিসঃ
আয়কর আপিল বিভাগ।
মহাপরিদর্শক, নিবন্ধন ।
রাজকীয় স্মারক।
(১৫) সাধারন প্রশাসন ও সেবা মন্ত্রনালয়
এই মন্ত্রনালয় দুটি বিভাগ নিয়ে গঠিত হবেঃ
(ক) সিভিল সার্ভিস বিভাগ
(খ) সিভিল সার্ভিস সাধারন প্রশাসক বিভাগ
কার্যক্রম ও গঠনঃ
বিভাগটি নিমোক্ত কাজওগুলোর জন্য দায়িত্ব পালন করবেঃ
১) নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন
২) বিভিন্ন মন্ত্রনালয় ও বিভাগের অধীনস্ত সংস্থার আকার-আকৃতি ও প্রয়োজনীয় দক্ষতার পর্যালোচনা
৩) জনশক্তি চাহিদা এবং তার পরিমান ও দক্ষতা নিরূপণ
৪) বেতন, পেনশন ও সেবার অন্যান্য শর্তাবলী
৫) প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা
৬) পেশাগত উন্নয়ন এবং কর্মজীবনের গতিশীলতা
৭) পদোন্নতি
৮) উপসচিব এবং তদূর্দ্ধ পর্যায়ে অফিসার নিয়োগদানে প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ প্রদান
সাধারন প্রশাসন বিভাগঃ
বিভাগটি নিমোক্ত কাজওগুলোর জন্য দায়িত্ব পালন করবেঃ
১) সরকারি সংবাদ সংস্থা ও স্থায়ী সংগঠনসমূহ
২) কেন্দ্রীয় ডেসপ্যাচ –রেকর্ড সংরক্ষক, সচিবালয়, পাঠাগার ও পাঠকক্ষ
৩) জেলা তথ্যকোষ
৪) হুইটলি (Whitly) পরিষদব্যবস্থা।
<003.176.515>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
এই মন্ত্রনালয়ের প্রধান হবেন একজন মন্ত্রীপরিষদভুক্ত মন্ত্রী, তার সাহায্যে থাকবেন দুইজন প্রতিমন্ত্রী।
সচিবালয়ঃ
সচিবঃ ১জন
অতিরিক্ত সচিবঃ ১জন
যুগ্মসচিবঃ ১জন
উপসচিবঃ ৪জন
সচিব অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তাঃ ৮জন
বিগাগীয় কর্মকর্তাঃ ১৬জন
সংযুক্ত এবং অধীনস্ত অফিসমূহঃ
১) সিভিল সার্ভিস একাডেমি
২) জাতীয় জনপ্রশাসন একাডেমি
৩) জাতীয় জনপ্রশাসন ইন্সটিটিউট
৪) অ্যাডমিনস্ট্রেটিভ স্টাফ কলেজ
৫) গেজেটভুক্ত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ একাডেমি
৬) পাবলিক সার্ভিস কমিশন
(১৬) উদ্বাস্তু পূনর্বাসন মন্ত্রনালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
এই মন্ত্রনালয় প্রধানত নিম্নলিখিত কাজগুলোর জন্য দায়িত্বে থাকবেঃ
১) ত্রান ও পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা
২) উদবাস্তুদের সঠিক ব্যবস্থাপনা
৩) দাবি নিস্পত্তিকরন এবং ক্ষতিপূরণ মঞ্জুর।
এই মন্ত্রনালয়ের প্রধান হবেন সরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তার সহযোগী হবেন একজন সহকারি মন্ত্রী।
সচিবালয়ঃ
সচিবালয় গঠিত হবে-
সচিবঃ ১ জন
যুগ্মসচিবঃ ২ জন
উপসচিবঃ ৪ জন
সচিব অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তাঃ ৮ জন
বিভাগীয় কর্মকর্তাঃ ১৬ জন
অন্যান্য কর্মকর্তাঃ ১০জন
এই সচিবালয়টি উল্লেখিত বিভাগগুলোতে বিভক্ত থাকবেঃ নিস্পত্তি বিভাগ, সম্পত্তি বিভাগ, পূনর্বাসন ও গৃহায়ন বিভাগ, সাধারন বিভাগ এবং প্রশাসনিক বিভাগসমূহ।
<003.176.516>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
অধীনস্ত কার্যালয়সমূহঃ
১) প্রধান নিস্পত্তি কমিশনারের কার্যালয় ।
২) উদবাস্তু সম্পদ তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয় ।
৩) স্বত্বাধিকার সংস্থা
রাষ্ট্রীয় ইশতেহারঃ
১) উদ্বাস্তু পুনর্বাসন কর্পোরেশন।
(১৭) শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং জনকল্যান মন্ত্রণালয়
কার্যক্রম ও গঠনঃ
মন্ত্রনালয় নিম্নলিখিত দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেঃ
১) শ্রমকল্যান ও বাণিজ্য সমিতি।
২) শিল্প ও শ্রম সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব নিস্পত্তি।
৩) কারখানা শ্রম।
৪) বেকার ভাতা ও স্বাস্থ্য ভাতা।
৫) রেলপথ, প্রধান প্রধান বন্দরসমুহ, খনি ও গ্যাসক্ষেত্রে নিযুক্ত শ্রমশক্তি ।
৬) পঙ্গু সৈনিক ও ছাটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বাসন।
৭) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলন ও তৎসম্পর্কীয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহন।
মন্ত্রনালয়ের প্রধান হচ্ছেন একজন কেবিনেট মন্ত্রী এবং দুজন ডেপুটি মন্ত্রী।
সচিবালয়ঃ
সচিবালয় গঠনে থাকবেনঃ
সচিবঃ ১জন
যুগ্ম সচিবঃ ২জন
উপ সচিবঃ ৫জন
শ্রম সংযুক্তিঃ ২জন
সচিব অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তা ৯জন
বিভাগীয় কর্মকর্তাঃ ২৫জন
মন্ত্রনালয়টি পাঁচটি বিভাগে বিভক্ত যার প্রতিটির প্রধান হচ্ছেন একজন ডিপুটি (সহকারি) সচিব।
১) বিভাগ কঃ কার্যাবলীঃ
ক) সংস্থা এবং কর্মপদ্ধতিসমূহ
খ) সতর্কতা অবলম্বন
গ) বিভাগীয় তদন্ত
ঘ) প্রশাসন ও বাজেট
ঙ) পাঠাগার
চ) মেলা ও প্রদর্শনী
ছ) যুদ্ধ নথি
জ) শ্রম বিষয়ক দপ্তর
<003.176.517>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
২) বিভাগ খঃ এর প্রধান কার্যাবলীঃ
ক) গৃহায়ন ও গণপুর্ত মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত বিষয়াবলীর সমন্বয়
খ) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমকল্যান সংস্থা
গ) সাধারন শ্রমকল্যান
ঘ) শ্রমকল্যান ব্যুরো
ঙ) উপযুক্ত বেতন
চ) সর্বনিম্ন বেতন
ছ) কৃষিশ্রম
জ) গ্রামীন জীবনযাত্রার খরচ-সূচক পরিকল্পনা
৩) বিভাগ গঃ এর প্রধান কার্যাবলীঃ
ক) কর্মচারীদের সরকারি বীমা পরিকল্পনা
খ) যুদ্ধাহতদের কল্যান পরিকল্পনা
গ) মতবিরুদ্ধক্ষেত্রে স্থায়ীকরন ।
ঘ) কয়লাখনি শ্রমিক কল্যান সংস্থা
ঙ) শ্রমিক ক্ষতিপূরন আইন
চ) কারখানা আইন এবং কলকারখানাসমূহের প্রধান উপদেষ্টা সংস্থা
ছ) বেতন প্রদান আইন
জ) খনি আইন
ঝ) মাতৃত্বকালীন সুবিধা
ঞ) শিশুশ্রম বিষয়ক আইন
ট) উৎপাদনশীলতা এবং টি, ডাব্লিউ, এল কেন্দ্রসসমূহ
ঠ) আবাদী শ্রমিক
ড) জোড়পূর্বক শ্রম
ঢ) প্রবাসী শ্রম
৪) বিভাগ ঘঃ এর প্রধান কার্যাবলীঃ
ক) শিল্প সম্পর্ক
খ) শ্রমিককল্যান সমিতি
গ) প্রধান শ্রমিক কমিশনার এর সংস্থা
ঘ) শিল্প, শ্রমিক আপিল বিভাগ
ঙ) লভ্যাংশ বন্টন ও বোনাস
চ) কর্মী ছাটাই ও ব্যয় সংকোচন
ছ) যৌক্তিকতা নির্ধারন
জ) প্রভিডেন্ট ফান্ড
ঝ) কর্মরত সাংবাদিকদের ব্যবস্থাপনা (কাজের শর্তসমূহ) এবং বিবিধ বিধান আইন।
<003.176.518>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৫. বিভাগ ঙঃ এর প্রধান কার্যাবলীঃ
(ক) নিয়োগ
(খ) জনশক্তি পরিকল্পনা
(গ) আলোচনা সভা
(ঘ) শ্রমিক শিক্ষা
(ঙ) ব্যবস্থাপনায় শ্রমিকের অংশগ্রহণ
(চ) উৎপাদন
ক্ষমতাসংযুক্ত কার্যালয়সমূহঃ
(১) পূনর্বাসন ও কর্মসংস্থান অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক এর কার্যালয়, নিয়োগ এক্সচেঞ্জ।
(২) প্রধান শ্রম কমিশনারের কার্যালয়।
(৩) পরিচারক এর কার্যালয়, শ্রম ব্যুরো।
(৪) প্রধান উপদেষ্টা এর কার্যালয়, কলকারখানা।
অধিনস্ত কার্যালয়সমূহঃ
(১) সরকারি শিল্প ট্রাইব্যুনালের কার্যালয়।
(২) শ্রম আপীল কার্যালয়
(৩) মহা পরিচালক, কর্মচারীদের সরকারি বীমা কর্পোরেশন কার্যালয়।
(৪) প্রভিডেন্ট ফান্ড কমিশনারের কার্যালয়।
(৫) বিদেশী শ্রমিক নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়
(১৮) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়
কার্যাবলী ও গঠনঃ
(১) প্রকাশনা ও বিজ্ঞাপনসহ সরকারি প্রচার।
(২) সম্প্রচার।
(৩) প্রদর্শনীর জন্য চলচ্চিত্র অনুমোদন ও চলচ্চিত্র-নির্মান
(৪) প্রামাণ্যচিত্র ও তথ্যবিবরনী তৈরী ও বিলিবন্দেজ এবং
(৫) সংবাদপত্র নিবন্ধন ও পরিসংখ্যান।
রাষ্ট্রের একজন মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের প্রধান হবেন, যিনি সংসদীয় সচিব দ্বারা সহায়তা পাবেন।
সচিবালয়ঃ
সচিবালয় কর্মী গঠনে থাকবেনঃ
সম্পাদকঃ ১জন
উপদেষ্টা (পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রচার)ঃ ১জন
উপসচিবঃ ৪জন
সচিব অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তাঃ ৮জন
বিভাগীয় কর্মকর্তাঃ ২০জন
<003.176.519>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
মন্ত্রণালয়ের সচিবালয়গুলো নিম্নলিখিত বিভাগে বিন্যস্ত থাকবেঃ
(১) সম্প্রচার
(২) প্রকাশনা, বিজ্ঞাপন, দৃশ্যমান প্রচারনা এবং পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রচার।
(৩) সংবাদমাধ্যম ও চলচিত্র।
(৪) প্রশাসন।
সংযুক্ত কার্যালয়সমূহঃ
১। মহাপরিচালক, বাংলাদেশ বেতার, ঢাকা।
(ক) রেডিও স্টেশন।
(খ) সংবাদ সেবা বিভাগ।
(গ) বহির্মুখী সেবা বিভাগ।
(ঘ) সেবা বিভাগের পর্যবেক্ষণ, ঢাকা।
(ঙ) গবেষণা প্রকৌশলীর কার্যালয়, ঢাকা।
(চ) দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর কার্যালয়, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সমিটার, ঢাকা।
(ছ) কর্মচারী প্রশিক্ষন স্কুল, ঢাকা।
২। প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো।
৩। বিজ্ঞাপন ও দৃশ্যমান প্রচার অধিদপ্তর।
৪। প্রকাশনা বিভাগ।
অধিনস্ত কার্যালয়সমূহঃ
(১) চলচিত্র ডিভিশন, চট্টগ্রাম-
(ক) উৎপাদন বিভাগ।
(খ) বিতরণ।
(গ) প্রচার, এবং
(ঘ) প্রশাসন।
(২) ফিল্ম সেন্সর বোর্ড
(৩) গবেষণা ও সূত্র, সন্ধান বিভাগ।
(৪) বাংলাদেশের সংবাদপত্রের রেজিস্টার বিভাগ।
(৫) পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার প্রচার।
(১৯) শ্রম, গৃহায়ণ ও সরবরাহ মন্ত্রনালয়ঃ
মন্ত্রণালয় নিম্নলিখিত কার্যাবলীর জন্য দায়ী থাকবেঃ
১) গণপূর্ত।
২) গৃহায়ন।
৩) আবাসন।
৪) ক্রয় এবং সরকারি দোকান সমূহের নিষ্পত্তিকরণ।
৫) মূদ্রণ এবং কাগজপত্র ও অন্যান্য।
৬) বয়লার বিস্ফোরক।
<003.176.520>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
মন্ত্রণালয় এর অধীন থাকবেন একজন মন্ত্রীপরিষদের মন্ত্রী, যাকে একজন ডেপুটি উপমন্ত্রী সহায়তা করবেন।
সচিবালয়ঃ
সচিবালয়ের কর্মচারীগণ যাদের দ্বারা গঠিত হবেঃ
সচিব : ১
যুগ্ম সচিব : ২
উপ-সচিব : ৬
সচিবদের অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তা: ১২
বিভাগীয় কর্মকর্তা : ২৪
হাউজিং কমিশনার : ১
হাউজিং উপদেষ্টা : ১
উপ-হাউজিং উপদেষ্টা : ১
প্রধান কারিগরি প্রশিক্ষক : ১
কারিগরি প্রশিক্ষক : ১
কারিগরি উপদেষ্টা : ১
সচিবালয় নিম্নলিখিত বিভাগগুলোতে বিন্যস্ত থাকবেঃ
১) পূর্ত বিভাগ ।
২) গৃহায়ণ বিভাগ।
৩) সরবরাহ বিভাগ।
৪) মুদ্রণ ও ষ্টেশনারী বিভাগ।
সংযুক্ত অফিসসমূহঃ
১) প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর, গণপূর্ত বিভাগ।
২) এস্টেট অফিস।
৩) অধিদপ্তর জেনারেল, সরবরাহ ও সমাপ্তিকরণ।
ক) সরবরাহ শাখা।
খ) পরিদর্শন শাখা।
গ) অগ্রগতি শাখী।
ঘ) সমাপ্তিকরণ শাখা।
ঙ) প্রশাসন শাখা।
চ) সমন্বয় ও পরিসংখ্যান শাখা।
(৪) সরকারি ষ্টেট হাউজ।
(৫) প্রধান মুদ্রণ ও ষ্টেশনারী নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়।
ক) মুদ্রণ।
খ) ষ্টেশনারী।
গ) লক্ষমাত্রা।
ঘ) প্রকাশনা।
<003.176.521>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
অধস্তন অফিসসমুহঃ
১। বিস্ফোরক অধিদপ্তর
২। বেতন ও হিসাব অফিস
৩। বাংলাদেশ অধিদপ্তর, লন্ডন
মন্ত্রীপরিষদ সচিবালয়
মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়, সচিবালয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত সকল কাজের দায়িত্বে থাকবে, যেমন মন্ত্রীপরিষদের সাথে বৈঠক, মন্ত্রীপরিষদের ও তার কমিটিসমুহের আলোচনা ও সিদ্ধান্ত সমুহের রেকর্ড রাখা এবং এর বিভিন্ন কমিটি, যেমন মন্ত্রীপরিষদের প্রতিরক্ষা কমিটি, মন্ত্রীপরিষদের সম্মিলিত পরিকল্পনা কমিটি, মন্ত্রীপরিষদের অর্থনৈতিক কমিটি, মন্ত্রীপরিষদের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটি, মন্ত্রীপরিষদের নিয়োগ বিষয়ক উপকমিটি প্রভৃতি।
সংগঠন ও ব্যাবস্থাপনা বিভাগকে মন্ত্রীপরিষদ সচিবালয়ের সাথে যুক্ত করা উচিৎ। সংগঠন ও ব্যাবস্থাপনা বিভাগ প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ সরকারের সকল শাখায় প্রশাসনিক দক্ষতা অর্জন ও তা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করার জন্য দায়ীত্বশীল । শ্রম ও জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের অধীন সিভিল সার্ভিস বিভাগের সাথে এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা উচিৎ।
মন্ত্রীপরিষদ কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান সংস্থা সম্পর্কিত কাজগুলো নিয়েও আলোচনা করবে।
মন্ত্রীপরিষদ সচিবালয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন এবং একটি সচিবালয় ও কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান সংস্থা নামের একটি সংযুক্ত অফিস নিয়ে গঠিত ।
সচিবালয়ঃ
সচিবঃ ১
যুগ্ম-সচিবঃ ১
উপ-সচিবঃ ১
সচিব অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তাঃ ৪
বিভাগীয় কর্মকর্তাঃ ৮
সচিবালয়ের গঠনঃ
১। মুখ্য সচিবালয়
২। সংগঠন ও ব্যাবস্থাপনা বিভাগ
৩। সামরিক শাখা
৪। অর্থনৈতিক শাখা
মুখ্য সচিবালয়ঃ
মুখ্য সচিবালয়, যা কিনা মন্ত্রীপরিষদের সমন্বয়, প্রশাসন ও সাধারণ শাখার মত শাখার সমন্বয়ে গঠিত, মন্ত্রীপরিষদের ও তার উপ-বিভাগের সভার সাথে সম্পর্কিত সচিবালয়ের কাজগুলো করবে।
সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগঃ
“সংগঠন” ও “ব্যবস্থাপনা” শব্দগুলোর অর্থ করলে দাঁড়ায়, শুধুমাত্র কি করা হবে তাই না, বরং কিভাবে করা হবে এবং কেমন সময়, শ্রম ও অর্থ খরচ হবে সেইদিকে পরিস্কার ও সমালোচনামূলক দৃষ্টিপাত করা, যন্ত্রপাতির নকশা কেমন হবে, তাদের কলাকৌশল কি হবে এবং ফলাফল কি হতে পারে সেইদিকেও দৃষ্টিপাত করতে হবে।
<003.176.522>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
এটা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চলবে। বাংলাদেশ সরকারের মত, একটা সুবিশাল ও বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এমন একটা ব্যাবস্থা গ্রহন করা প্রয়োজন যা যথাসম্ভব ব্যাপক এলাকা জুড়ে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অনবরত চেষ্টা চালিয়ে যাবে। এটাও স্পষ্ট যে এই ধরনের দক্ষতা অর্জিত হবে না বা বজায় রাখা যাবে না যদি না নিজেরভেতর থেকে পূর্ণ প্রচেষ্টা না আসে এবং প্রত্যেক মন্ত্রনালয়/বিভাগ কিংবা অপারেটিং এজেন্সি নিজের সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের জন্য নিজস্ব আগ্রহ ও যোগ্যতা গড়ে না তোলে। এই বিভাগের প্রধান লক্ষ্যগুলো হলঃ
১। নেতৃত্ব সরবরাহ এবং চালনা
২। একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা, অভিজ্ঞতা এবং প্রতিযোগীতায় মাধ্যমে সংগঠন ও ব্যবস্থাপনার কাজে একটা সমন্বিত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলা।
সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের একজন পরিচালক থাকবে [বাংলাদেশ সরকার সাধারণ প্রশাশন মন্ত্রণালয় এর অতিরিক্ত সচিব] যাকে সাহায্য করবেন একজন উপ পরিচালক,পরিচালক সহকারী, সহকারী পরিচালক এবং সম্পূরক সচিবালয় স্টাফ। একজন ডেপুটি সেক্রেটারী অভ্যন্তরীণ ও এবং এম এ প্রধান হিসেবে কাজ করবে এবং ও এবং এম প্রত্যেক দপ্তরই কার্যকর থাকবে। ও এবং এম এর পরিচালক যুগ্ম সভার আয়োজন চিন্তা ও অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করবেন বিভিন্ন দপ্তরের এম এবং ও অফিসারদের সাথে। দপ্তর গুলোতে ও এবং এম এর অগ্রগতি আলোচনার জন্য প্রায়ই সভা বসানো হবে ।
সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর বিভিন্ন সময় আনুষ্ঠানিক পরিদর্শন করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলো পরিদর্শন করবেন [সংযুক্ত এবং অধীনস্ত কার্যালয়গুলো সহ] এবং খেয়াল রাখবেন সব কাজ আদেশনুযায়ী হচ্ছে কিনা। সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভিন্ন সমস্যা সম্বন্ধে তিনি পরামর্শ দেবেন।
সামরিক উইংঃ–
সামরিক উইং প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর কমিটি, স্টাফ কমিটির প্রধান, প্রধান পারসোনাল অফিসার কমিটি, যুগ্ম পরিচালনা কমিটি, যুগ্ম ইন্টেলিজেন্স কমিটি এবং যুগ্ম বাণিজ্য কমিটির মিটিং সংক্রান্ত সকল সচিবালয়ের কাজকর্মের জন্য দায়ী।
অর্থনৈতিক উইংঃ
অর্থন্যতিক উইং মন্ত্রীপরিষদের এর উৎপাদন ও বিবরন কমিটি, অর্থন্যতিক সচিবদের কমিটি এর সাপ্লাই কমিটির সকল কাজ এর জন্য দায়ী।
সংযুক্ত অফিসঃ
কেন্দ্রিয় পরিসংখ্যান সংগঠন
এই সংগঠনের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছেঃ-
<003.176.523>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
[১] বার্ষিক পরিসংখ্যানগত সারাংশ, মাসিক সারাংশ, সাপ্তাহিক পরিসংখ্যান বুলেটিণ তৈরি এবং প্রকাশ এবং বর্তমান সরকারি পরিসংখ্যান সহায়িকা নির্দেশনা দেওয়া ।
[২] জাতিসংঘের পরিসংখ্যান সংগঠনের সংক্রান্ত কাজ পর্যবেক্ষণ, অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশন উপস্থাপন এবং পর্যাবৃত্ত প্রকাশনার জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য প্রণয়ন।
[৩] দৈনিক পরিসংখ্যানগত বিভিন্ন কাজে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত কাজ ও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কাজের দায়িত্ব নেয়া।
[৪] উন্নয়নশীল অর্থনৈতিক অবস্থাকে উপস্থাপনের জন্য বর্তমান পরিসংখ্যানের গ্রাফিকাল উপস্থাপনা।
[৫] মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংস্থাগুলোকে পরিসংখ্যানগত ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া এবং পরিসংখ্যানগত সমস্যার উপর আন্তদাপ্তরিক আলোচনা করা।
[৬] মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য সরকারী সংস্থার পরিসংখ্যান কাজ সমন্বয় করা।
[৭] অন্যান্য দেশের জাতীয় পরিসংখ্যানগত সংগঠনের সাথে যোগাযোগ রাখা, বিশেষত প্রক্রিয়াগত ও সাংগঠনিক বিষয়ে সাম্প্রতিক উন্নয়ন এর ব্যাপারে ।
[৮] জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তুলানামুলক আলোচনা বৃদ্ধির জন্য সংজ্ঞা ও একক নির্ধারণ এবং সরকার কৃত্যক প্রদত্ত তথ্যের মান উন্নয়ন।
সংগঠনটি মন্ত্রীপরিষদ এর পরিসংখ্যান উপদেষ্টা এর নির্দেশে পরিচালিত হবে, একজন পরিসংখ্যানবিদ নেতৃত্বে থাকবেন যাকে বিভিন্ন কারিগরি এবং সাচিবিক কর্মকর্তা সাহায্য করবেন।
পরিকল্পনা কমিশন
পরিকল্পনা কমিশন অতিরিক্ত গুরুত্ব আরোপ করা যাবে না। প্রায় সব অনুন্নত দেশ এবং সব উন্নত দেশেরই নিজস্ব পরিকল্পনা কমিশন আছে। পরিকল্পনা কমিশন এর গঠন এটা প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকার স্বাধীনতা পরবর্তী জটিল বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে পরিকল্পনা করছে। এতে করে দেশ শিল্প ও কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠবে এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা ও কর্মসূচী প্রনয়ন করা যাবে।
কার্যাবলী এবং সংগঠনসমূহ
পরিকল্পনা কমিশনের প্রধান কর্যাবালী
[১] দেশীয় কাঁচামাল, মানব সম্পদ, মূলধন, কারিগরি শ্রমিক এর পূর্ণ মূল্যায়ন সম্পন্ন করা এবং তদন্ত করে বের করা জাতীয় চাহিদার তুলনায় সম্পদের ঘাটতির পরিমান কেমন।
[২] দেশীয় সম্পদ এর সবচেয়ে কার্যকর এবং সুষম ব্যাবহার এর জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন।
<003.176.524>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
[৩] পরিকল্পনা কয়টি ধাপে সম্পন্ন হবে তা নির্ধারণ এবং প্রত্যেক ধাপের সমাপ্তির জন্য সম্পদের বরাদ্দকরন।
[৪] ঐ বিষয় চিহ্নিত করা যা অর্থনৈতিক উন্নতিকে ধির করে দেবে এবং এখন বর্তমান সামাজিক এবং রাজনৈতিক অবস্থা তৈরি করা যাতে পরিকল্পনা সুষ্ঠভাবে বাস্তবায়ন করা যায়।
[৫] পরিকল্পনার প্রত্যেক ধাপে দরকার পড়বে এমন যন্ত্রপাতি, এদের প্রকৃতি এবং এদের প্রয়গ নির্ধারণ
[৬] অল্প সময় পর পর আগ্রগতি মূল্যায়ন এবং বিভিন্ন ধাপে নীতি এবং কার্যাবলীর দরকার মত পরিবর্তন যদি প্রয়োজন হয়।
[৭] অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং উন্নতি সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা সমাধান ও চিহ্নিতকরনে অভ্যন্তরীণ এবং আনুশঙ্গিক বিভিন্ন সমাধান প্রদান, সেই সরকারের জন্য জাদের উপর সমস্যাগুলো সমাধান এর দায়িত্ব বর্তায়।
(৮) পঞ্চ বার্ষিক কাঠামোর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন প্রস্তুতির জন্য পরিকল্পনা ।
পরিকল্পনা কমিশন প্রাথমিকভাবে একটি কর্মী সংস্থা যা বাংলাদেশ সরকারকে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ভিত্তিক কাজে সহায়তা করবে । এছাড়াও মাঝে মাঝেই এই সংস্থা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জনসাধারণ এর সহায়তা , সমবায় প্রকল্পের সাধারণ নির্দেশনা ও দেখভাল এসব দিকে খেয়াল রাখবে ।
পরিকল্পনা কমিশন এর গঠনঃ
এটি ৮ সদস্য নিয়ে গঠিত হবে । এরা হলেন চেয়ারম্যান ( প্রধানমন্ত্রী ) , চারজন পূর্ণকালীন সদস্য ( ডেপুটি চেয়ারম্যানসহ ) ব্যবসা ও শিল্প মন্ত্রী , প্রতিরক্ষা ও অর্থমন্ত্রী ।
কমিশন সদস্যদের পোর্টফোলিও নিম্নে দেওয়া হলঃ
(১) সাধারন পরিকল্পনা ও সমাজসেবা
(২) অর্থ
(৩) শিল্প ও কৃষি
(৪) শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
(৫) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও উন্নয়ন
(৬) সেচ ও বিদ্যুৎ
কমিশনের প্রত্যেক সদস্য এর মধ্যে এক বা একাধিক বিষয়ের দায়িত্বে থাকবেন এবং ডেপুটি চেয়ারম্যান সমন্বয় এবং সমগ্র প্রশাসনের দায়িত্বে থাকবেন ।এছাড়াও সংগঠন কর্মসূচি মূল্যায়ন নামে একটি সংস্থা কমিশনের সংগে কাজ করবে ।
প্রতিটি মন্ত্রনালয়ের পরিকল্পনা করার জন্য একটি পরিকল্পনা সেল থাকবে ।এমন ব্যবস্থা বিভাগীয় বোর্ডগুলোতেও থাকবে । ইউনিয়ন বোর্ড ও পৌরসভায়ও থাকবে ।
<003.176.525>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
একইভাবে প্রতিটি পরিকল্পনার প্রতিটি ধাপে অগ্রগতি পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি থাকবে । এই বাস্তবায়ন কমিটি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পরিচালিত হবে । এতে এতে ৭ অথবা ৮ জন সদস্য থাকবে । এর প্রধান দায়িত্ব হবে (ক) পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং (খ) সমস্যা চিহ্নিত করে প্রতিকার সুপারিশ করা । বাঙ্গলাদেশের চারটি বিভাগেই অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন উন্নয়ন বোর্ড থাকবে যা এই চার বিভাগের পরিকল্পনা ও উন্নয়নের জন্য কাজ করবে ।এরা সরাসরি পরিকল্পনা কমিশন এর কাছে রিপোর্ট করবেন ।
সচিবালয়
সচিবালয় গঠনে থাকবেনঃ
সম্পাদকঃ ১
যুগ্ম সচিবঃ ৪
উপ সচিবঃ ৮
সচিব অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তাঃ ১২
বিভাগীয় কর্মকর্তাঃ ২৪
কমিশনকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে ।
(১) কর্মসূচী উপদেষ্টা
(২) সাধারণ সচিবালয়
(৩) কারিগরী বিভাগ
(১) কর্মসূচী উপদেষ্টাঃ
বিভিন্ন প্রস্তাব ও প্রকল্পে কমিশন এর মেম্বারদের সাহায্য করার জন্য তিনজন জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তা (কর্মসূচী প্রশাসন ) থাকবেন উপদেষ্ঠা হিসেবে । তাদের পদ হবে অতিরিক্ত সচিবের সমান । তারা কমিশনকে এই প্রস্তাব ও প্রকল্প বাস্তবায়নে সাহায্য করবে । তারা উপরোল্লিখিত কমিটির সাথে ঘনিষ্ঠ সহযোগীতায় কাজ করবে । পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অর্থনৈতিক , জনসহযোগীতা ও প্রশাসন সংক্রান্ত সমস্যাও তারা সমাধান করবে ।
(২) সচিবালয়
সচিবালয়ে নিম্নলিখিত শাখা থাকবে
(ক) প্রশাসনিক শাখা – সাধারণ শাখা , প্রশাসনিক শাখা , ও এবং এম অনুচ্ছেদ এবং হিসাব শাখা ।
(খ) পরিকল্পনা – কো অরডিনেশন শাখা
(গ) সাধারন কো অরডিনেশন শাখা
(ঘ) তথ্য ও প্রচার শাখা
(৩) কারিগরি বিভাগঃ
কারিগরি বিভাগ এর দায়িত্বঃ
(ক) পরিকল্পনা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তাব ও পরিকল্পনা যাচাই বাছাই ও বিশ্লেষন করা ।
<003.176.526>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(খ)গৃহীত কর্মসূচী ও কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কিত গবেষনা এবং কারিগরি শিক্ষা পরিচালনা ।
(গ)শিক্ষা উপকরন তৈরী এবং পরিকল্পনা সমূহের খসড়া প্রনয়ন করা ।কারিগরি বিভাগসমূহেরপ্রধানরাই হচ্ছেন প্রধান পরিচালক এবং উনারা হচ্ছেন বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ ।উনাদের কাজে সহযোগীতা করেন ডেপুটিগন,সহকারী প্রধানগন এবং পর্যাপ্ত গবেষনা কর্মচারীরা ।
কারিগরি বিভাগসমুহের বর্ননা নিচে দেয়া হল-
১/অর্থনৈতিক বিভাগ -এ বিভাগের কাজসমূহকে দুটো ভাগে ভাগ করা হয়েছে ।
ক)সামগ্রিক পরিকল্পনা
(খ)সম্পদের যাচাইকরন ।
সামগ্রিক পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে পরিকল্পনার আকার,লক্ষ্য,অগ্রাধিকার সমূহ এবং এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্যসমূহ বাস্তবায়নের জন্য বৃহত্তর অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ।সম্পদের যাচাইকরন বিভাগের মূল কাজ হচ্ছে -দেশীয় এবং বিদেশী সম্পদসমূহকে কাজে লাগানো ।এ বিভাগ আরো নির্দিষ্ট সময়ে অর্থনৈতিক অর্জনকে মূল্যায়ন করে ,বিভিন্ন মন্ত্রনালয় এবং গভনিং বডি এবং ব্যাক্তিপর্যায় থেকে তথ্য প্রমান সংগ্রহ করে।
২।শিক্ষা বিভাগের কাজের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা-সাধারন শিক্ষা ,নারীশিক্ষা,কারিগরি ও বিজ্ঞান শিক্ষা,প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা,সামাজিক শিক্ষা,দৈহিক শিক্ষা,প্রাপ্তবয়স্কদের শিক্ষা ।অধিকন্তু এ বিভাগের সাথে আছে-
ক)বৃত্তি ।
খ)পাঠাগার উন্নয়ন।
গ)বিদ্যালয়ের খাদ্য ও শিক্ষা পরিকল্পনা ।
ঘ)বাংলা ভাষার উন্নয়ন ।
ঙ)সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড,জাদুঘর,জাতীয় নাট্যশালা প্রত্নতত্ত্ববিদ্যা ইত্যাদি ।
চ)জাতীয় ক্যাডেট কোর,সহযোগী ক্যাডেট কোর,সামাজিক সেবা ,ছাত্র ও যুব উন্নয়ন সেবা ইত্যাদি
।ছ)শিক্ষা উন্নয়নে সহযোগীতা ।
৩।খাদ্য ও কৃষি বিভাগ:
এ বিভাগ দৈহিক এবং সামগ্রিক কৃষি উন্নয়ন পরিকল্পনার সাথে জড়িত ।নির্দিষ্টভাবেকৃষিজাত পন্য উতপাদন পরিকল্পনা,আরো বেশী উতপাদন,কৃষি বিপনন ,কৃষি উন্নয়নে সহযোগীতা ,প্রানীসম্পদ উন্নয়ন ,মত্স ,দুগ্ধজাত পন্য উতপাদন ,বন ও মৃত্তিকা সংরক্ষন ,কৃষি শ্রম ,সামাজিক উন্নয়ন ,শ্রমিকদর উন্নয়ন এবং জাতীয় উন্নয়ন এবং তার বর্ধিতকরন । এ বিভাগ আরো -বিভিন্ন সময়ে কৃষি উন্নয়নে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন শিক্ষা গবেষনার সাথে জড়িত ।
<003.176.527>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(৪) স্বাস্থ্য বিভাগ-
এ বিভাগ দেশের সকল স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যা সমূহেরসাথে জড়িত ।আরো বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শের সাথে জড়িত ।এছাড়া এ বিভাগ নিম্নোক্ত কাজসমূহের সাথে জড়িত -ক।স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত উপাত্ত সংগ্রহ ।খ।জনশক্তি ও কর্মসংস্থান সম্পর্কিত শিক্ষা ।
ক) বিদ্যমান স্বাথ্য সেবা সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ
খ) মানব সম্পদ এবং নিয়োগ সম্পর্কিত গবেষণা
গ) এই বিষয়সমূহে গবেষণা
১)চিকিতসালয়
২)জনসংখ্যার উপাত্ত
৩)জনসংখ্যার পরিসংখ্যান
৪)স্বাস্থ্যপরিসংখ্যান,মৃত্যুহার এবং অসুস্থতাহার
৫)অন্যান্য বিষয়সমৃহ
৫।শিল্প ও খনিজ বিভাগ-
এ বিভাগ কাজ করে বিভিন্ন পরিকল্পনার ত্রুটি নিয়ে:বিভিন্ন কলকারখানা এবং খনিজ সম্পদের কারখানা নিয়ে এবং ক্ষুদ্র পরিসরের কারখানার সমন্বয়ক হিসেবেও কাজ করে ।এরা বানিজ্য ,শিল্প ,খনিজ,প্রাকৃতিক সম্পদ ,অন্যান্য কারিগরি খাতের সাথে সম্পর্কিত ।এরা অন্যান্য উদ্যোগের মাধ্যমে শিল্পখাতে উন্নয়নের চেষ্টা করে ।
৬।শ্রম ও নিয়োগ বিভাগ-
শ্রম ও নিয়োগের প্রতিটি খাত এ বিভাগের অন্তর্গত । প্রতিটি ক্ষেত্রেই এ বিভাগের সাথে শ্রম ,নিয়োগ এবং সামাজিক কল্যাণ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত ।
৭। ভূমি পুনর্গঠন বিভাগ-
ক)এ বিভাগ কাজ করে মালিকানা ,পরিচালনা ,কৃষিকাজ ,বিপনন সম্পর্কিত সমস্যা নিয়ে।
খ)ভূমি মালিক থেকে কৃষক পর্যন্ত ভূমি পুনর্বন্টনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা ।
গ)সরকারকে ভুমি পুনর্গঠনে যথাযথ সহযোগীতা করা।
এ বিভাগ খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রনালয়ের সাথে সম্পর্কিত ।
৮ । প্রাকৃতিক সম্পদ বিভাগ-এ বিভাগ নিম্নোক্ত বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত :সেচ ,বন্যা নিয়ন্ত্রন ,পয়োঃনিষ্কাশন ইত্যাদি ।এ বিভাগের বিশেষ শাখা আছে –
<003.176.528>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
যারা বন্যা উদ্ভূত সমস্যা নিয়ন্ত্রনে জড়িত ।এ বিভাগকে সেচ ও শক্তি প্রকল্পের বিভিন্ন সভায় ডাকা হয় ।এ বিভাগ বৃহত্তরসেচ প্রকল্পসমূহেরকর্তৃপক্ষের সাথে কারিগরি পর্যায়ে যোগাযোগ বজায় রাখে ।এ বিভাগ বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং বিশেষায়িত সংস্থাসমূহেরসাথে সমন্বয় সাধন করে ।
৯)পরিবহন ও যোগাযোগ বিভাগ-এ বিভাগ রেলওয়ে ,রাস্তাঘাট ,মহাসড়ক ,জলপথসমূহের সাথে সম্পর্কিত সামগ্রিক সমস্যাসমূহের গভীরতম পর্যবেক্ষন এবং রক্ষনাবেক্ষন করে থাকে ।যোগাযোগ সম্পর্কিত বিশেষ পরিকল্পনা এ বিভাগ করে থাকে ।
১০)গ্রামীন ও ক্ষুদ্রশিল্প বিভাগ-এ বিভাগ নিম্নোক্ত বিষয় সমূহের সাথে জড়িত ।
ক। কুটির শিল্প
খ। হস্তচালিত তাঁত এবং মেশিনচালিত তাঁত
গ। গ্রাম্য কারখানা
ঘ। ক্ষুদ্র শিল্প
ঙ। হস্তশিল্প
চ। রেশম শিল্প ও গুটিপোকা চাষ
ছ। নারিকেলের ছোবড়া শিল্প
১১। পরিকল্পনা প্রশাসন এবং জনপ্রশাসন-
এ বিভাগ সমগ্র পাবলিক সেক্টরের পরিকল্পনাগুলো একই সাথে সমন্বিত করে এবং পরিকল্পনার অগ্রসরতার উপর পর্যায়ক্রমিক প্রতিবেদন তৈরীতে সহযোগীতা করে ।
১২।পরিসংখ্যান এবং অনুসন্ধান বিভাগ-এ বিভাগের মূল কাজসমূহ নিম্নরূপ-
ক) পরিসংখ্যান বুরো ও সংস্থার উন্নয়ন সম্পর্কিত ডাটা সংগ্রহ ,যাচাইবাছাই ও মূল্যায়ন করা ।
খ) পরিকল্পনা পর্ষদের মাধ্যমে উন্নয়নের প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যান বজায় রাখা ।
গ) নির্দিষ্ট সময়ের উন্নয়নের খসড়া প্রনয়ন করা ।
১৩।স্থানীয় উন্নয়নমূলক কাজের শাখা –
এ বিভাগ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাজের সাথে জড়িত । থানা পরিষদ এবং গ্রাম্য পঞ্চায়েত । এক্ষেত্রে মূলনীতি পরিকল্পনা পর্ষদের উদ্যোগে গৃহীত হয় ।
১৪। গৃহায়ন বিভাগ-
এ বিভাগ কাজ করে গৃহায়ন এর পরিকল্পনা ,শহর ও দেশ পরিকল্পনা ,আঞ্চলিক পরিকল্পনা নিয়ে । এ বিভাগ গৃহায়ন ,শ্রম ,নিয়োগ ,সামাজিক উন্নয়ন ,রেলওয়ে কর্মচারীদের উন্নয়ন ,স্থানীয় স্বায়ত্ত্বশাসিত সরকার ও গ্রামীণ গৃহায়ন এবং স্বরাষ্ট্র ইত্যাদি মন্ত্রনাল্যের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখবে ।
<003.176.529>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
১৫।বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষনা বিভাগ:
এ বিভাগ জাতীয় উন্নয়নের প্রেক্ষিতে বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষনা পরিচালনা করে ।এ বিভাগ বৈজ্ঞানিক গবেষনার তথ্যসমূহ নিয়মিতভাবে পরিকল্পনা পরিষদকে প্রেরন নিশ্চিত করে । এটি বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন কাজ দেখভাল করে । পরিকল্পনা বিভাগের অধীনে, এ বিভাগ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় এবং গ্রামীণ বৈজ্ঞানিক কেন্দ্রসমূহের কর্মকান্ডের দায়ীত্বে থাকে ।
১৬)সামাজিক উন্নয়ন বিভাগ:
এরা কাজ করে সামাজিক উন্নয়ন এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে নিয়ে ।এরা কাজ করে থাকে প্রাসঙ্গিক মন্ত্রনালয়,বিভাগ এবং সংস্থার অফিসিয়াল এবং নন অফিসিয়াল উভয় ক্ষেত্রে ।
১৭)জনব্যাবস্থাপনা ও গবেষনা বিভাগ :
বিভিন্ন সংস্থার সমস্যা ,প্রসাশনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনগনের উদ্যোগ এবং রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এ বিভাগ কাজ করে । এ বিভাগ নিজেদেরকে বিভিন্ন গবেষনা কাজের সাথে সংযুক্ত রাখে যেগুলো বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে ,বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং অন্যান্য দেশের গবেষনায় পরিচালিত হয় এবং এই বিভাগ এর সাথে জড়িত থাকে ।
১৮)প্রত্যাশিত পরিকল্পনা বিভাগ:
এরা কাজ করে সাধারন নীতিতে উদ্ভূত প্রশ্নসমূহকে নিয়ে যেগুলো দ্রুত শিল্প উন্নয়নের প্রেক্ষিতে দীর্ঘ পরিকল্পনাসমূহ এবং মৌলিক শিল্প উন্নয়নের ব্যাঘাত ঘটায় । উৎপাদন বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে যেসব সমস্যা উদ্ভূত হয় সেগুলো নিয়ে এ বিভাগ কাজ করে -শক্তির দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন সম্ভাবনা ,যান চলাচল সেবা ,কৃষি উন্নয়নের নমুনা এবং নিয়োগ ইত্যাদি নিয়ে ।
১৯)বিজ্ঞান ও কারিগরি জনশক্তি বিভাগ:
এ বিভাগ কাজ করে জনশক্তির মূল্যায়ন ,প্রশিক্ষন ,শিক্ষানবিস ,প্রকৌশল ও কারিগরি নিয়োগ এবং প্রকৌশলী নিয়োগের শর্তসমূহ ইত্যাদি নিয়ে ।
২০)নিষেধাজ্ঞা বিভাগ:
এ বিভাগের কাজ হল বিভিন্ন এলাকায় ঘটিত নিষেধাজ্ঞা বিষয়ক কর্মকান্ডের সমন্বয় সাধন করা । অঞ্চল এবং জনসংখ্যা সম্পর্কিত তথ্য ,উন্নয়ন পদ্ধতি ,নিষেধাজ্ঞা আরোপনের উদ্ভূত সমস্যাবলী ,আইনের পরিবর্তন এবং এ সম্পর্কিত অন্যান্য সমস্যা সংগ্রহ ,বিশ্লেষণ এবং প্রক্রিয়াকরন করা হয় । এ বিভাগ অন্ঞল ,জনগন ,অর্থনৈতিক প্রভাব এবং অপরাধ সংঘটনের পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করে । এ বিভাগ সুসংগঠিত প্রচারণা ক্যাম্পের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা আরোপনের প্রাথমিক পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করে এবং এক্ষেত্রে তারা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে ।
২১)আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং উন্নয়ন বিভাগ:
এ বিভাগের প্রধান কাজ হচ্ছে বাংলাদেশ এবং অন্যান্য অনুন্নত অঞ্চলগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ভূমিকা অনুসন্ধান করা এবং বাংলাদেশের উন্নয়নেএর প্রভাব মূল্যায়ন করার জন্যই এটি গঠিত হয় । এটি নির্দিষ্ট সময় পর পর দেশের আমদানী রপ্তানী বাণিজ্য পর্যালোচনা করে এবং বিদেশের সাথে দেশীয় বাণিজ্যের বর্তমান অবস্থা এর বিভিন্ন দিক পর্যবেক্ষন করে ।
<003.176.530> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
কার্যক্রম মূল্যায়ন সংস্থা
এই সংস্থার মূল লক্ষ্য হলো একটি নিয়মানুগ এবং পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের মাধ্যমে গোষ্ঠী উন্নয়ন কর্মসূচীর পদ্ধতি এবং ফলাফল নিরূপণ করা। যদিও কার্যক্রম মূল্যায়ন সংস্থা সাংগঠনিকভাবে পরিকল্পনা কমিশনের সাথে যুক্ত, কার্যকর ফলাফল অর্জনের জন্য এটি একটি স্বাধীন সংস্থা এবং কার্যক্রম মূল্যায়ন বোর্ড এটিকে টেকনিক্যাল দিক হতে সাহায্য করে। কার্যক্রম মূল্যায়ন সংস্থার মূল কার্যাবলী গুলো হলোঃ-
১। প্রোগ্রামের উদ্দেশ্যসমূহের সম্পাদনকল্পে এর চলমান উন্নয়নসমূহ সম্পর্কে সচেতন ও অবগত থাকার মাধ্যমে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের পদ্ধতি ও ফলাফলসমূহের পদ্ধতিগত ও ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা।
২। কার্যকর এবং অকার্যকর সংযোজিত পদ্ধতিগুলা শনাক্তকরণ।
৩। বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং সংস্কৃতির ওপর গোষ্ঠী উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রভাবের ওপর একটি যথাযথ দৃষ্টিপাত করা।
উপদেষ্টা পরিষদ-
পরিকল্পনা কমিশনের জড়িত উপদেষ্টা পরিষদগুলো হলো-
১। জাতীয় উন্নয়ন পরিষদ,
২। পরিকল্পনা প্রকল্পের কমিটি,
৩। সেচ এবং বিদ্যুৎ প্রকল্পের উপদেষ্টা কমিটি,
৪। জনগণের সহযোগিতার জন্য সমন্বয়ক কমিটি।
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনঃ
কমিশন গঠন প্রণালী-
চেয়ারম্যান সহ এই কমিশনে চারজন সদস্য থাকবে। চেয়ারম্যান এবং অন্যান্য সদস্যগণ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। কমিশনের অর্ধেক সদস্যদের অবশ্যই সরকারের অধীনে ১০ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
কমিশনের একজন সদস্য পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন অথবা তার বয়স ৬৫ বছর পর্যন্ত এই অফিসে কর্মে নিযুক্ত থাকবেন। সেক্ষেত্রে তিনি রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে স্বহস্তে তার পদত্যাগ পত্র দাখিল করবেন।
চেয়ারম্যান অথবা কমিশনের যেকোনো সদস্য নিম্নোক্ত কারণে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অপসারিত হবেনঃ
১। সর্বোচ্চ আদালতের সাথে দুর্ব্যবহারের কারণে,
রাষ্ট্রপতির সরাসরি রেফারেন্সে সংবিধান সম্মত উপায়ে , চেয়ারম্যান কিংবা অন্য কোনো সদস্যের কাছে প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে, উপযুক্ত কারণে অপসারণ করা (অথবা সুপ্রিম কোর্টে যদি তদন্ত বিচারাধীন থাকে তাহলে সুপ্রিম কোর্টের রিপোর্টের ভিত্তিতে কমিশনের চেয়ারম্যান অথবা সদস্যকে রাষ্ট্রপতি অপসারণ করতে পারেন)
<003.176.531> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
২। যদি তিনি দেউলিয়া বলে প্রমাণিত হন; অথবা
৩। যদি তিনি উক্ত চাকরি ছাড়া অন্য কোথাও অর্থের বিনিময়ে চাকরি নেন; অথবা
৪। রাষ্ট্রপতি যদি তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে অযোগ্য মনে করেন;
পদ কর্মসংস্থান –
ক। কমিশনের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ব্যতিত বাংলাদেশ সরকারের অধীনে অন্য যেকোনো সরকারী কর্মে হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারবেন।
খ, কমিশনের সদস্যগণ বাংলাদেশ সরকারের অধীনে পরবর্তীতে ভিন্ন পদে যোগদান করতে পারবেন।
কার্যাবলী এবং সংগঠনঃ
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের কার্যাবলী সংবিধানে উল্লেখ করা থাকবে। এখানে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো থাকবে-
১। কমিশন যোগ্যতার সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে কাজ করবে। কমিশনের মূল দায়িত্ব হবে সরকারি চাকরিপ্রার্থীদের পরীক্ষা নেয়া।
২। কমিশন নিম্নোক্ত বিষয়ে পরামর্শ দিবে-
ক। বেসামরিক সেবা এবং পোস্টের নিয়োগের পদ্ধতির সাথে সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়;
খ। বেসামরিক সেবা এবং পোস্টে নিয়োগের নীতিমালা, পদোন্নতি, এক সার্ভিস থেকে অন্য সার্ভিসে স্থানান্তর, পদোন্নতি এবং স্থানান্তরের জন্য উক্ত প্রার্থীর যোগ্যতা সংক্রান্ত পদ্ধতি;
গ। বাংলাদেশ সরকারের অধীনে চাকরিরত ব্যক্তির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিষয় যেমন স্মরণিক অথবা তার আবেদনের বিষয়গুলো;
ঘ। বাংলাদেশ সরকারে অধীনে কাজ করছেন কিংবা পূর্বে করেছেন এমন ব্যক্তির কিংবা তার সম্পর্কে কোনো দাবীর ক্ষেত্রে, তার দায়িত্বপালন কিংবা দায়িত্বপালনের অংশ হিশেবে কৃতকার্যের জন্য তার বিরূদ্ধে কোন আইনী অভিযোগের জন্য তার আত্নপক্ষ সমর্থের আইনী প্রক্রিয়ায় ব্যয়িত অর্থ বাংলাদেশ সরকারে তহবিল থেকে প্রদত্ত হবে- এবং
ঙ। বাংলাদেশ সরকারের অধীনে দায়ীত্বপালনরত কোনো ব্যক্তির দ্বারা ঘটিত আহতাবস্থার জন্য কোনো পেনশনের দাবী বা এই সংক্রান্ত কোনো বাদীর পরিমানের ক্ষেত্রে- এবং কমিশনের দায়িত্ব হবে তাদের কাছে প্রেরিত এই ধরনের ব্যাপার ও রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তাদের কাছে প্রেরিত অন্যান্য ব্যাপারে পরামর্শ প্রদান করা।
রাষ্ট্রপতি সংবিধান সম্মত উপায়ে বাংলাদেশ প্রশাসনিক সার্ভিস এবং বাংলাদেশ সরকারের অধীনস্থ অন্যান্য সার্ভিসের নিয়মনীতি নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে কমিশনের পরামর্শ নেওয়া জরুরী নয়।
<003.176.532> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সংবিধানে নিম্নোক্ত বিষয়াবলী অন্তর্ভুক্ত থাকবেঃ
ক। অনগ্রসর শ্রেণী অথবা নাগরিকরা যারা কিনা সরকারী কর্মক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত কম নিয়োজিত, সরকার যদি তাদের সুবিধার জন্য কোনো বিধান প্রণয়ন করে, তাহলে ক, খ, গ, ঘ, এবং ঙ এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়াবলীর জন্য কমিশনের পরামর্শ নেয়া জরুরী নয়।
খ।রাষ্ট্রপতির আদেশে এবং কমিশনের বিনা পরামর্শে যদি কোনো নীতিমালা প্রণয়ন করা হয় তাহলে সেগুলো প্রণয়নের পরে ১৪ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করতে হবে যাতে করে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা যায় অথবা ঐ অধিবেশনেই সংশোধনীর দ্বারা বাতিল করা যায়।
কমিশনের সুপারিশ বাধ্যতামূলক নয়। সাধারণত প্রচলিত নিয়মানুযায়ী সরকার কমিশনের সুপারিশ গ্রহণ করে নেয়। কিন্তু কমিশনের যেসব সুপারিশ গ্রহণ করা হয় নাই সেগুলো একটি রিপোর্টে উল্লেখপূর্বক রাষ্ট্রপতির নিকট সংবিধানের নিয়মানুযায়ী বছরে একবার উপস্থাপন করা হয়। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের নিয়মানুযায়ী রিপোর্টের এক কপি জাতীয় সংসদের নিকট উপস্থাপন করবেন, যেখানে কিনা কমিশনের সুপারিশ গ্রহণ না করার পেছনে উপযুক্ত কারণগুলো ব্যাখ্যা থাকবে।
নিম্নে কমিশনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলী সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলোঃ
১। পরীক্ষাসমূহঃ
কমিশন নিম্নোক্ত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা গ্রহণ করবে-
ক। নিম্নোক্ত স্তর অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রশাসনিক সার্ভিসে নিয়োগ করা হবেঃ
সচিব পর্যায়, খন্ডকালীন কর্মকর্তা, কেরানি পর্যায়।
খ। বৈজ্ঞানিক, প্রকৌশল, চিকিৎসা, এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সেবাঃ
বৈজ্ঞানিক সেবা, প্রকৌশল সেবা, চিকিৎসা সেবা, অন্যান্য কারিগরি সেবা
গ।প্রতিরক্ষা সার্ভিসের পরীক্ষাঃ
১) ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি.
২) মিলিটারি কলেজ.
৩) বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কলেজ
৪) বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কমিশন্ড পদ।
<003.176.533> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
ঘ) আর্মি মেডিকেল কোরের পরীক্ষাঃ
ঙ) বিভাগীয় এবং সংযুক্ত অফিসের টাইপ রাইটিং পরীক্ষাঃ
১) সাক্ষাৎকার দ্বারা সরাসরি নিয়োগ
২) পদোন্নতি
৩) অস্থায়ী এবং পুনরায়–চাকরি
৪) শৃঙ্খলার সংক্রান্ত সমস্যা
৫) Quasi-Permanency Cases
৬) আইনগত খরচের পরিশোধ
৭) অস্বাভাবিক আঘাতের জন্য পেনশন.
সচিবালয়ঃ
কমিশনের সচিবালয়ে নিম্নোক্ত ব্যক্তিবর্গ থাকবেনঃ
সচিবঃ ১
সহকারী সচিবঃ ৪
সচিব অধীনস্ত বিশেষ কর্মকর্তাঃ ১২
বিভাগীয় কর্মকর্তাঃ ৩৬
গৃহস্থালী কর্মের সাথে নিয়োজিত শাখা সমূহ, কমিশনারে কার্যালয় নিম্নোক্ত শাখায় বিভক্ত থাকবেঃ
১।পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত শাখা,
২।নিয়োগ সংক্রান্ত শাখা,
৩।সার্ভিস সংক্রান্ত শাখা,
৪।চাকরির জন্য সাক্ষাতের শাখা,
৫।গোপনীয় শাখা।
বি.দ্র. চলমান পদ্ধতির অতিরিক্ত হিশেবে, যেমন উন্মুক্ত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, বাংলাদেশ সরকারকে প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার সম্ভাব্যতা যাচাই করার জন্য যথাযথ উপদেশ দেয়া হবে যা মেথড–টু বলে পরিচিত , যুক্তরাজ্যে প্রচলিত । এটিতে থাকবেঃ (ক) সংক্ষিপ্ত লিখিত পরীক্ষা; (খ) দীর্ঘ মানসিক পরীক্ষা; এবং (গ) জনসেবা কমিশন কর্তৃক সাক্ষাৎকার।
<003.176.534>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
তৃতীয় অধ্যায়
জেলা প্রশাসন
১। জেলা প্রশাসন কি?
জেলা বাংলাদেশ প্রশাসনের প্রাথমিক একক। এটির উৎপত্তি দীর্ঘদিন পূর্বে। উপমহাদেশে হিন্দু, মুসলিম এবং ব্রিটিশ শাসনামলে প্রশাসনের প্রাথমিক একক ছিলো জেলা। এটি তখন থেকে এখনো পর্যন্ত চলছে। জেলা প্রশাসন বাংলাদেশ প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পিলার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষণাবেক্ষণ অথবা উন্নয়নের পরিকল্পনা স্কিম বাস্তবায়নের জন্য জেলা একটি গুরুত্বপূর্ণ একক। যদিও মন্ত্রীপরিষদের হাতে নির্বাহী ক্ষমতা রাজধানীতে স্থাপিত সচিবালয়ের সমর্থন দ্বারা নিহিত থাকে, যাদের দ্বারা প্রশাসন কর্মক্ষম থাকে তারা জেলায় বসবাস করে। এইখানকার লোকজন সরকারের নীতিমালা দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত হয় যা কিনা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিস্তৃত। এইখানেই জনগণের ক্ষোভ সরাসরি অনুভূত হয়। জেলার জনগনের উপর প্রশাসনের প্রভাবের গুরুত্ব রয়েছে যদিও তারাই আইনসভায় সর্বোচ্চ প্রতিনিধির দ্বারা আইনসভা গঠন করে থাকে। সরকারের নীতিমালা এবং উন্নয়ন বাস্তবায়নের প্রধান ক্ষেত্র হিসেবে জেলা কাজ করে থাকে। পলিসি নির্ধারণে নিযুক্ত ব্যক্তিবর্গ নিয়োগে জেলার একটি বড় ভুমিকা রয়েছে।
সরকারের প্রশাসনিক সুবিধার জন্য সরকার জেলা তৈরি করে থাকে। সেজন্য জেলার কোনো স্বাধীন অস্তিত্ব নেই। তাদের সীমানাগুলো কৃত্রিম এবং সেজন্য, মাঝেমধ্যেই পরিবর্তন আনা হয়। জেলা প্রশাসন সরকারের নির্দিষ্ট করে দেয়া একটি জেলার মধ্যে কাজ করে। জেলা প্রশাসনের মূল উদ্দেশ্য হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা, সুবিচার নিশ্চিত করা, রাজস্ব সংগ্রহ এবং জনগণের ইতিবাচক কল্যাণে নিযুক্ত থাকা। বর্তমানে উন্নয়ন কার্যাবলীর পেছনে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের এইসব উদ্দেশ্য পূরণের জন্য জেলা পর্যায়ে সরকারের অনেক ব্যক্তিবর্গ এবং সংস্থা নিযুক্ত থাকে, যেমন সহকারী কমিশনার এবং অধনস্ত রাজস্ব ও ম্যজিস্টেরিয়াল কর্মকর্তা, জেলা পুলিশ, জেলা জজ এবং অধস্তন বিচারকগণ, বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং অন্যান্য বিভাগের সাথে জড়িত মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ, সম্প্রদায় উন্নয়নের কর্মীবৃন্দ, পৌরসভা, ইউনিয়ন বোর্ড, গ্রাম্য পঞ্চায়েত এবং অন্যান্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এই সংস্থাগুলো বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করে কিন্তু জনগণের জন্য সরকার কর্তৃক যথাযথ উন্নয়নের জন্য তারা পারষ্পরিক সহায়তার সম্পর্ক-ও বজায় রাখে । এই সহযোগিতার সম্পর্ক মূলত সহকারী কমিশনার, জেলায় নিযুক্ত সরকারের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা, এর মাধ্যমে সমন্বিত হয়, যিনি ব্যাপক ক্ষমতাবান এবং সরকারের উদ্দেশ্য অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের সাথে জড়িত সকল সংস্থা পরিচালনা করার দায়িত্বে থাকেন।
জেলার নম্বর, ধরন এবং আয়তন
বর্তমানে বাংলাদেশে ১৮টি জেলা রয়েছে এবং সেগুলো হল (১৯৬১ এর আদমশুমারি অনুযায়ী):
নাম | আয়তন (বর্গমিটারে) |
জনসংখ্যা ‘০০০ |
জনসংখ্যার ঘনত্ব (১৯৬১ এর আদমশুমারি) |
১. ঢাকা | ২৮৮২ | ৫০৯৩ | ১৯০৯ |
২. ময়মনসিংহ | ৬৩৬১ | ৫৬১৯ | ১১৪১ |
৩. টাংগাইল | ১৪০০ | ||
৪. ফরিদপুর | ২৬৯৪ | ৩১৭৯ | ১৩১১ |
৫. চট্টগ্রাম | ২৭০৫ | ২৯৮৩ | ১১৩১ |
৬. পার্বত্য চট্টগ্রাম | ৫০৯৩ | ৩৮৫ | ৭৫ |
৭. নোয়াখালি | ১৮৫৫ | ২৩৮৩ | ১৪৬৮ |
৮. কুমিল্লা | ২৫৯৪ | ৪৩৮৯ | ১৭৯৪ |
৯. সিলেট | ৪৭৮৫ | ৩৪৯০ | ৭৩৭ |
১০. রাজশাহী | ৩৬৫৪ | ২৮১১ | ৭৮৮ |
১১. দিনাজপুর | ২৬১০ | ১৭১০ | ৬৫৯ |
১২. রংপুর | ৩৭০৪ | ৩৭৯৬ | ১১৩০ |
১৩. বগুড়া | ১৫০২ | ১৫৭৪ | ১০৭৫ |
১৪. পাবনা | ১৮৭৭ | ১৯৫৯ | ১১৫৭ |
১৫. খুলনা | ৪৬৫২ | ২৮৪৯ | ৬০০ |
১৬. বরিশাল | ৪২৪০ | ৪২৬২ | ১১৮৭ |
১৭. কুষ্টিয়া | ১৩৭১ | ১১৬৬ | ৮৮২ |
১৮. যশোর | ২৫৪৭ | ২১৯০ | ৮৭৭ |
৫৫১২৬ | ৯২২ |
জেলাসমূহকে কিছু বিশেষ ধরনে বিভক্ত করা যেতে পারে। প্রথমত, এগুলোর সবচেয়ে বড় অংশটি এমন একটি অংশের মধ্যে পড়বে, যাকে বলা যায় গ্রামাঞ্চল। এতে অবাক হবার কিছু নেই যখন ধারণা করা হয় যে মোট জনসংখ্যার ৯৪.৮% (১৯৬১ এর আদমশুমারি অনুযারী) গ্রামে বসবাস করে। দ্বিতীয়ত, নগরভিত্তিক জেলাগুলোতে জেলা প্রশাসন মূলত নাগরিক সমস্যাগুলো নিয়ে কাজ করে। ঢাকা জেলা, চট্টগ্রাম জেলা বড় অংশ এবং খুলনা জেলার কিছু অংশ এই ধরণের জেলার উদাহরণ। তৃতীয়ত, কিছু জেলা আছে, যাদেরকে বলা যায় শিল্পোন্নত জেলা, যাদের অধিকাংশ অঞ্চল শিল্পে উন্নত। যেমন ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং খুলনা। সময়ের সাথে এধরনের জেলার সংখ্যা স্বাভাবিক নিয়মেই বাড়ার কথা। চতুর্থত, কিছু আছে নির্ধারিত জেলা, যেমন পার্বত্য চট্টগ্রাম।
এসকল জেলায় সর্বমোট ৫৯টি মহকুমা, ৪১১টি থানা বা পুলিশ স্টেশন, ৬৪৫২৩টি গ্রাম, ৪০৪৬টি ইউনিয়ন পরিষদ, ১৯১টি ইউনিয়ন কমিটি ও ২৮টি নগর কমিটি রয়েছে।
<003.176.536> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৩
জেলা প্রশাসনের উদ্দেশ্য ও মূলনীতি
জেলা প্রশাসনের উদ্দেশ্য এবং প্রধান মূলনীতিসমূহ মূলত গ্রামপ্রধান জেলাগুলোর জন্য প্রযোজ্য যেগুলো তাদের কাজের জন্য প্রয়োগ করা হয়।
আইন শৃঙ্খলাঃ
প্রথম উদ্দেশ্য হল জেলার আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করা। এটি একটি মৌলিক উদ্দেশ্য এবং একেবারে অপরিহার্য। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা এর উপর নির্ভর করে। এইক্ষেত্রে সরকারের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত। পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশের জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়া গণহত্যার যুদ্ধ আইন শৃঙ্খলাকে মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন করেছে এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংগঠনকে মারাত্মকভাবে স্থানচ্যুত করেছে। এই উদ্দেশ্যের মধ্যে সাতটি মৌলিক মূলনীতি অন্তর্নিহিত আছে। প্রথম, পরম অগ্রাধিকারের মূলনীতিঃ সাধরনভাবে যার মানে হল আইনশৃঙ্খলা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে। আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত অন্য সকল মূলনীতি, এবং সেই সাথে জেলা প্রশাসনের অন্য সকল উদ্দেশ্য চুড়ান্ত বিশ্লেষণে পরম অগ্রাধিকারের এই মূলনীতির পরে গুরুত্ব পাবে। দ্বিতীয়, সর্বসাধারনের নিরাপত্তা। বাংলাদেশের সকল নাগরিক জন্মগতভাবে নিরাপত্তার অধিকারী এবং এটা কোনভাবেই বন্ধ করা যাবে না, এক্ষেত্রে একমাত্র সীমাবদ্ধতা হল নাগরিকের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতুলতা। তৃতীয়, নিয়ম ও আইনের মূলনীতি। সরকারের সেকোন ব্যক্তি বা সংগঠন, যারা যেকোন কর্তৃত্ব চর্চা করে, তা অবশ্যই প্রদর্শিতভাবে বাংলাদেশের আইনলব্ধ হতে হবে। আইনের শাসনের রক্ষনাবেক্ষনই কর্তৃত্বের অপপয়োগ বা এর প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রত্যেক নাগরিকের প্রধান রক্ষাকবচ। চতুর্থ, ক্ষমতার প্রয়োগের নীতিমালা রয়েছে। ক্ষমতার প্রয়োগ অবশ্যই আইন শৃঙ্খলা রক্ষণাবেক্ষণ এর জন্য হবে, যদিও ভাল জেলা প্রশাসনের ক্ষমতা খুব কমই হলে এমন ব্যবহার করা হয়।
পঞ্চম বেসামরিক কর্তৃত্বের প্রাধান্য দেওয়ার নীতি রয়েছে। ক্ষমতার ওপর বেসামরিক আধিপত্যই মূল স্তম্ভ, যার উপর গণতান্ত্রিক প্রশাসন ভিত্তি করে । বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সংবিধান অবশ্যই এই স্বীকৃতি দেবে যে জনগনের কর্তৃত্বই সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর । ষষ্ঠ, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাওই হবে নীতি, ভয় নয় কিন্তু কর্তৃপক্ষের আরোপিত আইনের জন্য সম্মতিসূচক সম্মান । একটি জেলায় যখন কর্তৃপক্ষের জন্য এই শ্রদ্ধা/সুমান থাকবে না বা কমে আসবে তখন সেখানে আইন ও শৃংখলা বজায় ব্যবস্থাপনা রাখা শুধু কঠিনই হবে না, তা ভেঙে পড়ার উপক্রম হবে। সপ্তম, সহ্য ক্ষমতার সীমারেখার একটি নীতি সুস্পস্ট ভাবে প্রতিষ্টিত আছে যা জেলা জুড়ে পরিচিত থাকবে। যেখানে মানুষ জানে তারা কতদূর যেতে পারে, তারা যে বিন্দু যান এবং বন্ধ থাকে; যদি তারা জানে না, তারা আরও তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা একটি সীমায় পৌঁছানোর পর থামিয়ে দেওয়া হবে। সহনশীলতা সীমা যতটা সম্ভব পরিষ্কারভাবে প্রতিষ্ঠা করার প্রয়োজন, এবং সীমা অতিক্রমের প্রচেস্টা, জেলার আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য দায়ী নির্বাহী কর্তৃত্বের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসাবে গ্রহণ করা আবশ্যক । সেখানে নমনীয়তা ও রণকৌশল এর জন্য কোন সীমারেখা নেই, যেমন রাজনীতি, আইন এবং শৃঙ্খলা কোনো দর কষাকষির বিষয় নয়।
ন্যায় বিভাগের প্রধানত সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিশেবে জেলা প্রশাসক, পুলিশ ও বিচার বিভাগ। কারা প্রশাসনও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে যা পৃথক বিভাগের অধীনে, কিন্তু সাধারণভাবে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে।
<003.176.537> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
ভূমিরাজস্ব ও অন্যান্য কর এর মূল্যায়ন ও সংগ্রহ
(২) জেলা প্রশাসন এর দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হচ্ছে ভূমিরাজস্ব ও অন্যান্য করের মূল্যায়ন ও পরবর্তীতে কর সংগ্রহ করা। জনপ্রশাসন এর মূলনীতি হচ্ছে রাজস্ব সম্পূর্ণরুপে যতটুকু সংগ্রহ করা প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই করা। একবার এই নীতি সম্পূর্ণরূপে চালু করা গেলে আর কোন বাধা আসার সম্ভাবনা থাকবে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজস্ব ও কর সংগ্রহ করা যায় না বা উচিত নয় যেমন আগুন, বন্যা কিংবা খরার সময়ে। বর্তমান যুদ্ধের কারণে যে অসম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাও মাথায় রাখা জরুরী। এসবক্ষেত্রে, রাজস্বের একটা বড় অংশ গ্রামের গরীব কৃষকদের মাঝে ত্রাণ হিসেবে বিতরণ করা যেতে পারে যার কারণে তারা নতুন শস্য ফলানোর জন্য যা যা উপাদান কিনতে পারবে এবং নিশ্চিন্তে শস্য উৎপাদন করতে পারে। আরেকটি নীতি হচ্ছে সঠিক মূল্যায়ন। সেটি ভূমিরাজস্ব, সেচ বকেয়া, কৃষি আয়কর কিংবা অন্য যে কোন ট্যাক্স হতে পারে যা আইনের আওতাবদ্ধ। এই সব কর সংগ্রহের ক্ষেত্রে প্রাথমিক মূল্যায়ণ এবং পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন জরুরী। সাধারণ জনগণের এই মূল্যায়ন এর পদ্ধতি, মূল্যায়নের পরিমাণ, বকেয়া রাজস্ব পরিশোধের তারিখ ও সময় সম্পর্কে জানা জরুরী।
ভূমি রাজস্ব থেকে অব্যাহতি
আওয়ামী লীগ উক্ত নীতিতে বিশ্বাসী যে, “ভূমি রাজস্বের বোঝা কিন্তু আমাদে রজনগণের উপরই পড়ে। তাই জরুরী চাপ নিরসনের জন্য
সমগ্র পাকিস্তান (বর্তমানে সমগ্র বাংলাদেশ) এ ন্যুনতম ২৫ বিঘা (৮ একর) জমির মালিক ভূমিরাজস্ব প্রদানের যোগ্য হবে। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছেবর্তমান রাজস্ব নীতির বাতিল করা। ভূমি রেকর্ড সিস্টেম আগের থেকে সহজ এবং উন্নত করা হবে”।
ভূমিপ্রশাসন
(৩) জেলা প্রশাসন এর তৃতীয় ভূমিকা হচ্ছে ভূমি প্রশাসন নিশ্চিত করা।
১৯৫১ সালে ইস্ট বেঙ্গল স্টেট একুইজিশন এন্ড টেন্যাসি এক্ট এর অধীনে জমিদারী বা ভূমিমালিকনীতি বাতিল করা হয়। সকল সুদ নিগৃহীত জমি সরকার কর্তৃক গৃহীত হয়। জমিদার এবং সুদ্গ্রাহী ভূমিমালিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয় এবংতার পরিমাণ ছিলো ৩৬.৩৪ কোটি রূপি। এই পরিমাণ অর্থ সকল ভূমি মালিক, যাদের জমি উক্ত এক্ট এর অধীনে রাষ্ট্রায়ত্ত করা হয়েছে তাদের মাঝে ক্ষতিপূরণ হিসেবে বিতরণ করা হয়। ১৯৬৯ সালের ৩১ মে পর্যন্ত ২২,৮০,৯০,৭৯৬ রূপী নগদ এবং ৮২,০৪,৬০০ রূপী বন্ড হিসেবে প্রদানকরাহয় । ১৯৬৮-৬৯অর্থ বছরে ক্ষতিপূরণ এর নগদ অর্থ কেবলমাত্র পাকিস্তানি নাগরিকদের প্রদান করা হয় । তবে কেবল মাত্র সিলেটে তার পরের অর্থ বছরঅর্থাৎ ১৯৬৯-৭০ এ বাকি অর্থ পরিশোধ করা হয়।
আওয়ামী লীগ এরই শর্ত হারে ভূমি নীতি (ভূমি অনুসারে) বিবৃত করা হয়েছে যে ভাবে :-
(ক) প্রকৃত ভূমি চাষীদের জন্য কথা মাথায় রেখে ভূমি ব্যবস্থাপনার পূনর্বিন্যাস করা ।
(খ) ভূমি মালিকানার একটি নির্দিষ্ট সীমা তৈরী করা এবং এর বাইরের অতিরিক্ত জমি ভূমিহীন কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা । এই সীমাস্থানীয় মানুষের অবস্থা ও প্রয়োজন ভেদে ঠিক করা যায় ।
(গ) ভূমিহীন কৃষকদের জন্য সরকারি জমির বন্দোবস্ত।
<003.176.538> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
ক্ষতিপূরণ সহকারে জমিদারী প্রথা বাতিলের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশেষ কোন উল্লেখ যোগ্য প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি, জমি ভোগদখলের ব্যবস্থাপনায় মৌলিক পরিবর্তন আনার জন্য এটি যথেষ্ট ছিলো না । আওয়ামী লীগ এর এই ভূমিনীতি ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালের সার্বিক পরিস্থিতির বিচারে পরিলিখিত হয়েছে। ২৫ মার্চ ১৯৭১ হতে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আসে । মূল প্রশ্ন থেকেই যায়, যে এই সার্বিক পরিস্থিতির বিচারে যুগান্তকারী পদক্ষেপের সাথে মিলিয়ে চলতে সরকারের কি নীতি পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা উচিত ? পশ্চিম পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে আমাদের উপনিবেশবিরোধী স্বাধীনতা যুদ্ধজনিত কারণে শিল্প ও আমলাতান্ত্রিক শাসক চক্রের কালো থাবা থেকে বেরিয়ে এসে সামাজিক পরিবর্তন ও নতুন সামাজিক ব্যবস্থা প্রচলন এর অংশ বিধায় এই কারণেই যুদ্ধপরবর্তী বাংলাদেশ সামগ্রিকভাবেই ২৫ মার্চ, ১৯৭১ সাল এর বাংলাদেশ থেকে গুনগত ও মৌলিকভাবে ভিন্ন। সরকার কি এই সমাজ ব্যবস্থা অনুসারে নিজেদের নীতি অভিন্ন রাখতে পারবে?
যদি আমরা দেশের কৃষি খামারগুলোর পরিসংখ্যান দেখি তাহলে এটি সম্পর্কে আরো পরিষ্কার ধারণা পাওয়া সম্ভব–
খামারের পরিমাণ | খামারের সংখ্যা | চাষযোগ্য এলাকা | চাষযোগ্য এলাকায় কাজ করা পরিবার এর সদস্যসংখ্যা | শস্য ফল এলাকা |
০.৫ একর এর কম | ১৩ | ১ | ১১.৮ | ১৬৫ |
০.৫ থেকে ১.০ | ১১ | ২ | ৩.৭ | ১৭০ |
১.০ থেকে ২.৫ | ২৭ | ১৩ | ১.৬ | ১৬৫ |
২.৫ থেকে ৫.০ | ২৬ | ২৭ | ০.৯ | ১৫৬ |
৫.০ থেকে ৭.৫ | ৭ | ২০ | ০.৬ | ১৪৮ |
৭.৫ থেকে ১২.৫ | ৭ | ১৯ | ০.৫ | ১৪১ |
১২.৫ থেকে ২৫.০ | ৩ | ১৪ | ০.৩ | ১৩৪ |
২৫.০ থেকে ৪০.০ | ৫ এরকম | ৩ | ০.২ | ১২৮ |
৪০.০ থেকেঅধিক | ১ | ০.১ | ১১৫ |
পাকিস্তান (তৎকালীন) কৃষি সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশে মোট খামারের সংখ্যা ৬১,৩৯,৪৮০ এবং মোট চাষযোগ্য জমি ১,৯১,৩৮,১০৯ একর। উপরোক্ত পরিস্থিতি এবং তথ্যের ভিত্তিতে সরকারের তাদের ভূমি নীতি ঠিক করতে হবে। ভূমি নীতি নিম্নোক্ত বিষয়ের উপর ভিত্তি করে হতে পারেঃ
১. কৃষকের হাতে ভূমি হস্তান্তর করা উচিত।
২. মূলধন এর ভিত্তিতে কৃষকের হাতে ভূমি বিতরণ করা উচিত। এটি অবশ্যই সমবায়ের শর্তের মাধ্যমে করা উচিত।
এটি ভূমি অধিকারের সীমা সমস্যাটির সমাধান করতে পারে। তবে এই ভূমি বিতরণে অবশ্যই ভূমিহীন কৃষকদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
_____________________________________________________
(১) পাকিস্তান কৃষিজ শুমারী, পাকিস্তা সরকার (প্রাক্তন) ভলিউম ১, ১৯৬২ পৃ ২৯, ৩৫৮, ২০ এবং ১২০
<003.176.539> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৩. জমিদারী প্রথার বিলুপ্তির পরে কৃষকরা সরাসরি সরকারের সাথে সম্পর্কিত হয়ে পড়ে। এর মাঝে কোন অন্য তৃতীয় মাধ্যম নেই।
বাধ্যতামূলক সমবায়ের মাধ্যমে মূলধন ভিত্তি হিসেবে প্রকৃত কৃষকদের মাঝে ভূমি বিতরণ আসলে ভূমি পদ্ধতিতে কিছু নতুন পরিবর্তন আসবে। কৃষকদের কৃষি উৎপাদনে উৎসাহিত করা জরুরী এবং উৎসাহিত কৃষকেরা আমাদের কৃষিজ উৎপাদনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে, যা আমাদের অর্থনীতির মূল প্ল্যাটফর্ম। এটা অনুমান করা যায় যে ‘সিলস’ ২৫০০০০ একর জমি অধিগ্রহন করে রেখেছে । প্রকৃত সহযোগিদের জমি সম্ভবত জব্দ হয়েছে ।
অন্যান্য ক্ষেত্রে, সরকার ভূমি মালিককে সুবিধাজনক উপায়ে ক্ষতিপূরণ দিতে পারে। ১৯৭১ এর পরবর্তী ইউ. এস. এস. আর. এ একই কাজ করা হয়েছে।
৪. কার্যনির্বাহক ক্রিয়াকলাপ :
জেলা প্রশাসন এর কাজ হলো সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কার্যনির্বাহী কর্মকান্ড দেখাশোনা করা। যেমন, দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, উদ্বাস্তু সম্পত্তির প্রশাসন, উদ্বাস্তুদের সম্পত্তি হস্তগতকরণ এবং পুনর্বিতরণ, জাতীয় এবং স্থানীয় নির্বাচনের আয়োজন, আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক, জ্বালানী এবং চলচ্চিত্রের লাইসেন্স করণ, স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকারক ঔষধ এবং মদ জাতীয় পানীয় নিষিদ্ধকরণ (কেবলমাত্র চিকিৎসার উদ্দেশ্য ছাড়া), ঐতিহাসিক স্থাপনার সংরক্ষণ ইত্যাদি। ভালো গণ যোগাযোগ, বাস্তবায়নের নিশ্চিন্তকরণ এবং সরকারের প্রতি আনুগত্য এই তিনটি নীতি বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং এর সাথে গণ প্রশাসন অন্তর্ভুক্ত।
(৫) ত্রাণ:
জেলা প্রশাসনের দায়িত্ব হচ্ছে দূর্যোগ ও বিপর্যয় যেমন বন্যা, খরা, দূর্ভিক্ষ এই সব পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া। এই ক্ষেত্রে বিপর্যয় শেষ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম কারণ বাংলাদেশের মানুষ এখন যুদ্ধ বিদ্ধস্ত এবং বিপর্যস্ত। ভালো খাবার, ওষুধ, গৃহ নির্মাণ সামগ্রী, কেরোসিন, ভোজ্যতেল, লবণ, কাপড় ইত্যাদির পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরী। জেলা প্রশাসনের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আইন ব্যবস্থার বাধা সেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করছে। জেলা প্রশাসনকে এই ধরণের পরিস্থিতি মোকাবেলা করার ক্ষমতা থাকতে হয়। এর জন্য বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্য প্রয়োজন। সবসময় হয়তো সেনাবাহিনীকে নেয়া সম্ভব হবে না, সেই ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবক টিম তৈরী করা জেলা প্রশাসনের কাজ।
(৬) উন্নয়ন:
জেলা প্রশাসনের কাজ হচ্ছে জেলার জন উন্নয়ন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। জেলার জনগণের সমস্যা গুলো নিয়ে প্রশাসনের উদাসীন হলে চলবে না। তা কেবল মাত্র প্রশাসনের উপর জনগণের আস্থা হারাবে/ রাজনৈতিক নেতাদের এই ব্যাপারটি বোঝা উচিত। রাজনৈতিক নেতাদের কর্মকর্তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করা উচিত না। তাদের মূল কাজ হচ্ছে কর্মকর্তারা সরকারের নির্দেশ ঠিকমত মেনে চলছে কি না তা লক্ষ্য রাখা।
উন্নয়ন কাজ জেলা প্রশাসনের একটু গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আজকাল প্রশাসন জনগণের কল্যাণ প্রশারে অধিকতর মনোযোগী।
<003.176.540> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
<003.176.541> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
<003.176.542> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
জেলা পর্যায়ের পল্লী উন্নয়ন প্রশাসন বিষয়ে সমসাময়িক মূলনীতি সমূহ অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রাপ্ত যা নীচে বর্নিত হলঃ
১) সমন্বিত প্রশাসনিক ভূমিকা পল্লীবাসীদের জীবনযাত্রার সর্বক্ষেত্রে ভূমিকা রাখলে তা স্থায়ী ছাপ রাখতে সক্ষম হবে।
২) যে সব প্রকল্পে পল্লীবাসীদের সহযোগিতা থাকে সেসব প্রকল্পের সফলতার হার, তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া প্রকল্পের সফলতার চেয়ে বেশী হবার সম্ভবনা রয়েছে।
৩) যেসব ক্ষেত্রে পল্লীবাসির নিজেদেরই অবস্থার উন্নয়নের মূল ভূমিকা নিতে হয় সে সব ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সফলতা পাওয়া যায়।
৪) ব্যাপকভাবে উন্নয়ন কার্যক্রমে সক্রিয় হলে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়।
৫) কার্যকরি ব্যাবহারিক সহায়তা ছাড়া শুধুমাত্র পরামর্শ এবং নীতিমালা কোন কাজে আসে না; যেমন বীজ/সার সরবরাহ, তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধানে আর্থিক ও কারিগরি নির্দেশনা ও সেচ ।
৬) পল্লীবাসিদের জন্য সহায়তা দেওয়া হবে তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা ও সমস্যা ভিত্তিতে এবং বিশদ প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশ এড়িয়ে যাওয়া ভালো যতদিন না পর্যন্ত তারা সেগুলোর জন্য প্রস্তুত হয় ।
জেলা প্রশাসনের ছয়টি প্রধান ভূমিকা নির্দেশ এবং বর্ননা করা হয়েছে তাদের কার্যক্রমের ভিত্তি গড়ে ওঠা নীতিমালার আলোকে । স্পষ্টতই এগুলো এতই ব্যাপক এবং বহুমূখী যে কোন একক সংস্থার পক্ষে সবগুলি কার্যক্রম সম্পাদন করা সম্ভব নয়। সে কারনে জেলা প্রশাসন বিভিন্ন সংস্থা এবং কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত হবে যার কাঠামো নীচের অংশে বর্ননা করা হল ।
(৪)
গঠনতন্ত্র
প্রতিটি জেলায় নিম্নলিখিত প্রশাসনিক বিভাগ থাকবেঃ
১। উপ-বিভাগ
২। পুলিশ ফাঁড়ি বা থানা।
৩। গ্রাম।
৪। জেলা পরিষদ।
৫। পৌরসভা।
৬। এলাকা ভিত্তিক উন্নয়ন ব্লক।
৭। ইউনিয়ন কাউন্সিল (এবং গ্রাম পঞ্চায়েত)।
উপ-বিভাগ
জেলাসমূহ দুই বা ততোধিক উপবিভাগে বিভক্ত হবে, প্রতি বিভাগ একজন কর্মকর্তার অধীনে ন্যাস্ত হবে যাকে বলা হবে উপ-বিভাগীয় কর্মকর্তা । জেলা এবং গ্রাম সমূহের ভূমিকর প্রশাসনে মূল ভূমিকা রাখবে উপ-বিভাগ । বাংলাদেশে ৫৯টি উপ-বিভাগ আছে।
উপবিভাগের নীচে , সমগ্র বাংলাদেশ থানা বা পুলিশ ফাঁড়িতে বিভক্ত, বাংলাদেশে ৪১১টি পুলিশ ফাঁড়ি আছে। প্রতিটি পুলিশ ফাঁড়ির আওতায় ১৫৮ থেকে ১৬০ট গ্রাম আছে। বাংলাদেশে মোট ৬৪,৫২৩টি গ্রাম আছে।
গ্রাম পর্যায়ে জেলা পরিষদ, থানা পরিষদ, এবং ইউনিয়ন পরিষদ আছে। জেলা সমূহের পল্লী এলাকাসমূহকে পল্লী উন্নয়ন প্রশাসনের স্বার্থে এলাকাভিত্তিক উন্নয়ন ব্লকে বিভক্ত করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, যার এলাকা এক একটি থানা ভিত্তিক হবে। প্রতিটি এলাকা একজন ব্লক উন্নয়ন কর্মকর্তার আওতাধীন থাকবে। প্রতিটি ব্লকের আওতায় ১০ থেকে ১২টি ইউনিয়ন বোর্ড থাকবে; যার প্রতিটিতে ১০ থেকে ১২টি গ্রাম থাকবে। প্রতিটি ইউনিয়ন বোর্ড পল্লীভিত্তিক কর্মীর দায়িত্বে থাকবে। প্রতিটি গ্রামে গ্রাম পঞ্চায়েত থাকবে, যার দায়িত্বে গ্রামের একজন নির্বাচিত গনপ্রতিনিধি থাকবেন।
এই গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন মূল অংশগুলো তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করবে। আইন শৃংখলা, এবং রাজস্ব বিভাগ মূলতঃ জেলা-উপবিভাগ-থানা-তহশীল ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। এলাকা উন্নয়ন এবং ইউনিয়ন বোর্ডের উপাদান সমূহ জেলা-ব্লক-ইউনিয়ন পরিষদ-পঞ্চায়েতের ভিত্তিতে গঠিত হবে।
(৫)
আইন শৃংখলা, ভূমি–রাজস্ব এবং সাধারন প্রশাসন আইন
(ক) (বিচারিক প্রশাসন)
বিচারিক প্রশাসনের সার্বিক দায়িত্বে থাকবে হাই-কোর্ট।
মূল আইনের আওতায় জেলা পর্যায়ে সিভিল আদালত থাকবে। একজন জেলা জজ প্রতিটা জেলা আদালতের তত্ত্বাবধান করবেন । রাষ্ট্রপ্রধান হাইকোর্টের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে তাকে নিয়োগ দেবেন। উপোরন্তু, তার অধীনে উপ-বিভাগ এবং থানা পর্যায়েও বিচারকরা কাজ করবেন। সিভিল আদালত সমূহে শুনানি হবে এবং প্রাথমিভাবে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বা ট্রাইবুনালের দ্বারা সাধারন নাগরিক অধিকার সম্পর্কিত মামলাগুলোতে প্রাথমিক আপিল কর্তৃপক্ষ হিশেবে কাজ করবে । অধীনস্ত জজ আদালত সমূহের আপীল জেলা জজ এর অধীনস্ত হবে, যদিও এক্ষেত্রে মামলার অর্থমান একটি নির্দিস্ট অংকের চেয়ে বেশী হবে ; আপীলসমূহ হাই-কোর্টের অধীনস্ত হবে, যেমন আপীলসমূহ জেলাজজ থেকে হয়
সরকারের লক্ষনীয় হবে, জেলা পর্যায়ের কিংবা উপ-বিভাগ পর্যায়ের সিভিল আদালত সেসব এলাকা মুক্ত হবার সাথে সাথেই কার্যক্রম শুরু করতে পারছে কিনা তা নিশ্চিত করা। সরকারের কাছে গ্রহনযোগ্য বিবেচিত বিদ্যমান বিচারকগনকে তাৎক্ষনিকভাবে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে বলা উচিত। কোন থানা মুক্ত হলে, থানায় মুন্সেফ আদালত থাকলে, তার কার্যক্রম তাৎক্ষনিক ভাবে করা উচিত। এই মুহুর্তে যারা বিদ্যমান এবং গ্রহনযোগ্য হবেন এমন জজদের সংখ্যা জানা আছে ।
অপরাধ সংক্রান্ত বিচারের নীতিমালা মূলতঃ ফৌজদারী কার্যবিধির আইন এবং বাংলাদেশ পেনাল কোডের আলোকে নির্ধারিত হবে। হাই-কোর্ট হবে চুড়ান্ত কর্তৃপক্ষ। হাই-কোর্ট মুলত সেশন জজদের সিদ্ধান্তের আপীলসমূহের শুনানি করবে। সেশন জজের আওতা সাধারনভাবে (সর্বক্ষেত্রে নয়) জেলা আদালতের সাথে সমন্বিত হবে এবং প্রযোজ্যক্ষেত্রে সাধারন আদালতের জেলা জজ তার জেলার অপরাধ মামলার জন্য সেশন জজের ভূমিকাও পালন করতে পারেন। বিচার ম্যাজিষ্ট্রেট বা অন্য অফিসাররা তার কাছে প্রাথমিক তদন্তের পর তারা বিবেচনার জন্য পেশ করলে, তিনি তার জেলায় সঙ্ঘটিত গুরুতর অপরাধ সমূহের বিবেচনা করতে পারেন। তিনি পেনাল কোড নির্ধারিত যে কোন সাজা দেবার অধিকার রাখেন, যদিও মৃত্যুদন্ড দেবার জন্য হাই-কোর্টের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। তিনি ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপীলের শুনানিও করেন ।
তূলনামূলভাবে কম গুরুতর অপরাধ তিন গ্রেডের ম্যাজিষ্ট্রেট বিচার করতে পারেন। প্রথম শ্রেনীর ম্যাজিষ্ট্রেট দুই বছর কারাদন্ড এবং ২০০০ রূপী জরিমানা দন্ড দিতে পারেন, দ্বিতীয় শ্রেনীর ম্যাজিষ্ট্রেট ছয় মাসের কারাদন্ড এবং ৫০০ রূপী জরিমানা দন্ড দিতে পারেন, তৃতীয় শ্রেনীর ম্যাজিষ্ট্রেট এক মাসের কারাদন্ড এবং ১০০ রূপী জরিমানা দন্ড দিতে পারেন। জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট প্রথম শ্রেনীর ম্যাজিষ্ট্রেটের ক্ষমতা পাবেন, উপ-বিভাগীয় অফিসারগনও প্রথম শ্রেনীর ম্যাজিষ্ট্রেটের সমান ক্ষমতা পাবেন। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেনীর ম্যাজিষ্ট্রেটগন বিভিন্ন পর্যায়ে আছেন। তাদের কাছে পুলিশী গ্রেফতার এবং ব্যক্তিগত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা আসবে। তারা অপরাধ নিয়ন্ত্রনেও আইনী ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন; যেমন, কোন নির্বাচন বা উৎসবের সময় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে তারা স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে ব্যাবস্থা নিতে পারেন। অনেক এলাকায় সম্মানসূচক ম্যাজিষ্ট্রেট আছেন, তারা ফৌজদারি আইনের নির্ধারিত সাজা প্রদান করেন না, কিন্তু তারা দলিল সত্যায়িতকরন, মৃত্যুশয্যায় দেওয়া স্বীকারোক্তিসমূহ সত্যায়ন করেন। একমাত্র জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটই বিভিন্ন ম্যাজিষ্ট্রেটের দায়িত্ব ভাগ করে দিতে পারেন। প্রায় সব বিচারিক মামলায় হাই-কোর্ট ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত সমূহ নিয়ন্ত্রনের ক্ষমতা রাখে।
প্রসাশন থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরনঃ
আওয়ামী লীগ প্রশাসন থেকে বিচারবিভাগ পৃথককরন নীতিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ । “প্রশাসন থেকে বিচার বিভাগ এর সম্পূর্ন পৃথকীকরন সংবিধান এর মাধ্যমে নিশ্চিতকরন করা হবে”। এটা অবশ্যই তাৎক্ষনিকভাবে সম্ভব নাও হতে পারে। যথাযথ সময়ে একটি কমিটি এই লক্ষ্যে কাজ শুরু করবে।
নীচের তালিকা বিচারিক প্রশাসনের কাঠামো সম্পর্কে ধারনা দেবেঃ
হাই–কোর্ট
জেলা জজ
সিভিল আদালত উপ-বিভাগ সেশন জজ(অপরাধ মামলা)
অধীনস্ত বিচারক
থানা
মুন্সেফ
<003.176.543>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
স্বাধীন এলাকাসমূহে অবিলম্বে এই সকল আদালতের যেকোন পর্যায়ে সক্রিয় হওয়া উচিত।
লঘু প্রকৃতির অপরাধগুলোতে ব্যবস্থা নিতে তিন শ্রেনীর বিচারপতি রয়েছে। জেলা বিচারপতি বিভিন্ন বিচারপতিদের মধ্যে কর্তব্য বণ্টন করার আদেশ জারি করতে পারেন।
শৃঙ্খলা
বাংলাদেশের কূটনৈতিক বিভাগ বর্তমানে স্বরাষ্ট্র বিভাগের অধীনে একটি অধিদপ্তর। পুলিশের মহা-পরিদর্শক দ্বারা এটি পরিচালিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর অধীনে থাকবে। প্রধান পুলিস বাহিনী, বিশেষ বিভাগ ব্যতীত, জেলাওয়ারি ভিত্তিতে সংগঠিত আছে। জেলা প্রশাসক এর নির্দেশ সাপেক্ষে, প্রতিটি জেলায় একজন পুলিশ সুপার আছেন যিনি জেলার সর্বত্র পুলিশ সম্পর্কিত যেকোনো বিষয়ে দায়বদ্ধ। তার প্রাথমিক দায়িত্ব শৃঙ্খলা রক্ষা,অপরাধ সনাক্তকরণ ও প্রতিরোধ, রাজনৈতিক তথ্য সংগ্রহ এবং দুর্নীতিবিরোধী কাজ। জেলা পুলিশ সুপারকে এক বা একাধিক উপ-সুপার, কিছু সংখ্যক পরিদর্শক ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ সহায়তা করে থাকেন। বাংলাদেশে ৪১১ টি পুলিশ স্টেশন রয়েছে। প্রতিটি থানা বা পুলিশ স্টেশন কিছু সংখ্যক কনস্টবল এর সহায়তায় একজন ভার-প্রাপ্ত কর্মকর্তা দ্বারা পরিচালিত হয়। ইউনিয়ন কাউন্সিল (ভবিষ্যতে এদের নামকরণ করা হবে ইউনিয়ন পরিষদ) পর্যায়ে ১০ থেকে ১২ জন গ্রাম দফাদার রয়েছে। পুলিশ ও দফাদার একসঙ্গে ৮০,০০০ এর একটি বিরাট বাহিনী গঠন করে।
এদের ছাড়াও,রয়েছে আনসার বাহিনী,তাদের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা এই মুহূর্তে সহজে নিরূপণযোগ্য নয়। নিম্নোক্ত তালিকায় জেলা থেকে থানা পর্যায়ের পুলিশ বাহিনী সংস্থার একটি ধারণা পাওয়া যায়ঃ
পুলিশ সুপার |
উপ পুলিশ সুপার |
উপ-বিভাগীয় পুলিশ কর্মকর্তা |
থানার ভার-প্রাপ্ত কর্মকর্তা |
ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম্যপ্রহরী |
স্বাধীনতার পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সরকারের জন্য একটি কঠিন পরীক্ষা হয়ে দাঁড়াবে। যে কোন মূল্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। এটা ছাড়া জনজীবন, স্বাধীনতা এবং সম্পত্তি নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে। নৈরাজ্য এবং বিশৃঙ্খল রাষ্ট্রে কোন উন্নয়ন মূলক কার্যক্রম চলতে পারেনা। সার্বিক সমস্যাবলির উপর সরকারের দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। ২৫শে মার্চ,১৯৭১ থেকে আইন শৃঙ্খলার সকল ব্যবস্থা বিকল হয়ে গিয়েছে। কিছুক্ষেত্রে থানা পুলিশসদস্যরা পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করেছে। মুক্তি বাহিনীকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী অনেক পুলিশ সদস্যের উপর আক্রমণ করে এবং তাদেরকে হত্যা করে; কিন্তু এর সঠিক সংখ্যা সুনির্দিষ্ট করা অত্যন্ত কঠিন। বিশালসংখ্যক পুলিশ মুক্তি বাহিনীতে যোগ দিয়েছে এবং পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে।
এটি কিছু সংখ্যক সমস্যার সৃষ্টি করে। প্রথমত, স্বাধীনতার পর পুলিশ সদস্যের সংখ্যা নিরূপণ করা। দ্বিতীয়ত, ২৫শে মার্চ, ১৯৭১ এর পূর্বের সংখ্যা এবং স্বাধীনতা ও স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে উপলব্ধ সংখ্যার মধ্যে ব্যবধানের পরিমাণ কতটুকু। তৃতীয়ত, ব্যবধান নিরূপণের পর, শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য আশুপদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরী। চতুর্থত, শূন্যস্থান পূরণের পর, সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে স্বাধীনতার পর আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আরো পুলিশ সদস্য প্রয়োজন হবে কিনা। যেমন ইতিমধ্যে উপরে বর্ণিত হয়েছে যে, এটি অনেক দূরহ সমস্যা হবে। পঞ্চমত, এখন প্রতীয়মান হচ্ছে যে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যের প্রয়োজন হবে। প্রশ্ন হলঃ কোথা থেকে এবং কিভাবে তাদের নিয়োগ করা হবে?
<003.176.544>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
পুলিশ সদস্য
(১) এই মুহূর্তে এবং স্বাধীনতা ও স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই পুলিশ বাহিনীর কতজন সদস্য হবে তা কোন যথার্থ এবং নির্ভুল মাত্রায় নিরূপণ করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হবে। যদি আমরা অনুমান করি ৫০ শতাংশ,অর্থাৎ ৪০,০০০ পুলিশ সদস্যের মধ্যে ২০,০০০ জনকে এই মুহূর্তে এবং স্বাধীনতার পরে পাওয়া যাবে, সমস্যা হবে বাকিদের অর্থাৎ ২০,০০০ জনকে সংগ্রহ করা। এই ২০,০০০ জন মুক্তি বাহিনীর সদস্যদের মধ্য থেকে নিয়োগ করা যেতে পারে। সরকারকে নির্ধারণ করতে হবে মুক্তি বাহিনীর সদস্যদের মধ্য থেকে এবং যদি তাই হয় তাহলে,তাদের মধ্যে কতজন নিয়মিত পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করতে ইচ্ছুক। যদি এই উৎস থেকে ২০,০০০ পুলিশ সদস্য পাওয়া যায়,তাহলে তা ঠিক আছে। যদি না হয়,তাহলে সরকারকে যুবশিবিরে অপেক্ষারত যুবকদের মধ্য হতে অবশিষ্ট সংখ্যককে নিয়োগ দিতে হবে।
আনসার
(২) আনসারদের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা অজানা। এটাও বলা সম্ভব নয় যে,আনসারদের মধ্যে কতজনকে স্বাধীনতা ও স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পাওয়া যাবে। যদি প্রয়োজনীয় সংখ্যক আনসার পাওয়া না যায়, তাহলে যুবশিবির বা অন্য কোন উৎস হতে নিয়োগের মাধ্যমে শূন্য কোটা পূরন করতে হবে ।
পুলিশ কর্মকর্তা
(৩) থানা পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তাঃ ৪১১ মতান্তরে ৪১৩ টি থানা বা পুলিশ স্টেশনে ৪১১ জন মতান্তরে ৪১৩ জন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং তাদের সহকর্মী থাকবে । এই মুহূর্তে এবং স্বাধীনতার পর এদের মধ্যে কতজনকে একসঙ্গে পাওয়া যাবে তা নির্ধারণ করা আবশ্যক । এটা হতে পারে যে সম্পূর্ণ পরিপূরক নাও পাওয়া যেতে পারে এবং সেক্ষেত্রে, প্রাপ্ত যোগ্যতাসম্পন্ন সদস্যদের মধ্য হতে পদন্নোতি অথবা মুক্তিবাহিনীর গ্র্যাজুয়েট সদস্যদের মধ্য হতে ( তাদের মতামত নিশ্চিতের পর ) নিয়োগের মাধ্যমে শুণ্যপদ পূরন করতে হবে ।
<003.176.545> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৪। উপ–বিভাগ।
পুলিশের সহকারী সুপারিনটেন্ডেন্ট। ৫৯ টি উপ-বিভাগ আছে, প্রতিটির প্রধান হিসেবে আছেন পুলিশের একজন সহকারী অধ্যক্ষ সুপারিনটেন্ডেন্টএবং তার সহকারীবৃন্দ। যদি সবগুলো কোটা পুরণ করা না যায় তাহলে উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মাঝ থেকে পদোন্নতি দিয়ে তাদের মাধ্যমে এই পদ পূরণ করা যেতে পারে।
৫। জেলা।
১৮ বা ১৯ টি জেলা আছে, প্রতিটি জেলার প্রধান হিসেবে আছেন পুলিশের একজন সুপারিনটেন্ডেন্ট, এবং তার সহকারী হিসেবে অতিরিক্ত অথবা সহকারী সুপারিনটেন্ডেন্টগণ। সঠিক সংখ্যাটি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। যদি কোন পদ শূন্য হয় তাহলে তা উপযুক্ত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতাসম্পন্ন্য অতিরিক্ত বা সহকারী অধ্যক্ষদের মাঝ থেকে পদোন্নতি দেয়ার মাধ্যমে পূরণ করা যেতে পারে। তবে তখনই পদোন্নতি দেয়া যেতে পারে যদি সেই ব্যক্তি এর যোগ্য হয়।
৬। ইউনিয়ন পরিষদ
এই পর্যায়ে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ১০ থেকে ১৫ জন গ্রাম পাহারাদার আছে। ৪,০৪৬ টি ইউনিয়ন পরিষদে প্রায় ৪০,৪৬০ জন এমন পাহারাদার আছে। তারা যথাযথভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়, যার কারণে তাদের সামনে স্বাধীনতাপরবর্তী যে আইনগত সমস্যা দেখা দিতে পারে তা মোকাবেলায় তারা যথেষ্ট নাও হতে পারে। এই ব্যাপারগুলোর সমাধানে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
৭। সকল রকমের আইনানুগ সমস্যা এবং এগুলোর যথাযথ সমাধানমূলক পদক্ষেপগুলোকে ইউনিয়ন পরিষদ, পুলিশ স্টেশন, উপ-বিভাগ এবং জেলা পর্যায়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে পরিচালনা করতে হবে। এ সমস্ত পর্যায়ে যে পদক্ষেপ নেয়া হবে তা অবশ্যই শক্তিশালী এবং মজবুত হতে হবে। এই ব্যাপারগুলোকে একটি সামগ্রিক উপায়ে ও পুরো দেশের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার সময় উপস্থিত হয়েছে।
ক। ইউনিয়ন পরিষদ। সমাজের একেবারে মূল ভিত্তি, অর্থাৎ গ্রাম পর্যায় থেকে শুরু করাই এখানে যৌক্তিক বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এই পর্যায়ে, গ্রাম পাহারাদারদের শক্তি অবশ্যই বৃদ্ধি করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায় থেকে প্রতিটি গ্রামে অবশ্যই গ্রাম পাহারাদার বাহিনী বা দল থাকতে হবে। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম পাহারাদার এবং সেচ্ছাসেবক (প্রতি গ্রাম থেকে ১০ জন) বাহিনীর সদস্যসংখ্যা হবে ১০০ থেকে ১২০ জন, যাদের অবশ্যই নতুন ভাবে সাজাতে হবে। প্রতিটি গ্রামে একটি সেচ্ছাসেবক গ্রাম পাহারাদার দল থাকবে, যেখানে সদস্য থাকবে ১০ জন শক্তসমর্থ যুবক, এবং যাদের নেতাকে ওই গ্রাম থেকেই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নির্বাচন করা হবে। তবে যদি সেই নির্বাচিত সদস্যকে কোন কারণে পাওয়া না যায় বা যোগ্য বলে বিবেচিত না হয়, তাহলে ওই গ্রামের কোন সম্মানিত ব্যক্তিকে সেচ্ছাসেবক গ্রাম পাহারাদার দলের নেতা হিসেবে নির্বাচিত করা হবে। ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ে তাদের এবং গ্রাম পাহারাদারদের নেতৃত্ব দেবেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান; এবং তিনি না থাকলে বা যোগ্য বলে বিবেচিত না হলে সেখানকার সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান
অথবা
একজন সম্মানিত ব্যক্তি
গ্রাম থেকে নির্বাচিত সদস্য অথবা একজন সম্মানিত ব্যক্তিদলের সদস্যসংখ্যাঃ ১০ |
পাহারাদার দলের সদস্য সংখ্যাঃ ১১০ থেকে ১৩০ |
<003.176.546> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
এসব সম্পূর্ণ সেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে সম্পাদন করা হবে। আমাদের জনগণ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এবং উপযুক্ত রাজনৈতিক নেতৃত্ব থাকলে এটা খুব একটা কঠিন কিছু হবে না। গ্রামবাসীদের অবশ্যই এটা বোঝাতে হবে হবে যে তাদের জীবন এবং সম্পদ বাঁচানোর জন্য এটা অত্যন্ত জরুরী। রাষ্ট্র তাদের কাছে এটা আশা করে।
খ। থানা পর্যায় অথবা পুলিশ স্টেশন। থানা পর্যায়ের আইন এবং শাসন ব্যবস্থা অবশ্যই যথেষ্ট পরিমাণে বলবৎ থাকতে হবে। যে সব থানা ইতোমধ্যে স্বাধীন হয়ে গেছে অথবা শীঘ্র হবে সেখানে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ব্যবস্থা চালু করতে হবে। স্বাভাবিক সংখ্যার পুলিশ সদস্য বাদেও থানা পর্যায়ে অবশ্যই সেচ্ছাসেবক প্রতিরক্ষা দল থাকতে হবে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ কর্মকর্তা এবং কর্মচারী এখন সহজলভ্য নাও হতে পারে। তবে তারা ইউনিয়ন পরিষদ এবং গ্রাম পর্যায়ে তাদের অনুরূপ দলগুলোর সাথে সর্বোচ্চ সহযোগিতার সঙ্গে কাজ করবে। প্রতিটি থানায় একটি প্রতিরক্ষা কমিটি থাকবে, যার প্রধান হবেন সেই জায়গার এমএনএ (মেম্বার অফ ন্যাশনাল এসেম্বলি) অথবা এম পি এ (মেমবার অফ প্রভিশনাল এসেম্বলি)। এই কমিটির সদস্য হবেন ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ের প্রতিরক্ষা দলের চেয়ারম্যান এবং অন্যান্য যথাযথ রাজনৈতিক দলের কর্মীগণ। এই কমিটি থানা পর্যায়ের পুলিশ বাহিনীর সাথে সরাসরি সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করবে। এই ব্যবস্থা তত দিন বলবৎ থাকবে যত দিন দেশে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসে, এবং যথেষ্ট পরিমাণ পুলিশ সদস্য নিয়োগ দেয়া না হয়।
গ। উপ-বিভাগসমূহ। ৫৯ টি উপ-বিভাগের প্রতিটিতে আইন এবং বিচার ব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ প্রয়োগ ঘটাতে হবে। এই ব্যবস্থায় প্রধান থাকবেন উপ-বিভাগীয় পুলিশ কর্মকর্তা, যিনি তার নিয়মিত পুলিশ বাহিনীর কাছ থেকে সহযোগিতা পাবেন। এ ছাড়াও এ পর্যায়ে সেচ্ছাসেবক প্রতিরক্ষা দল থাকতে হবে, যার প্রধান হবেন একজন এমএনএ অথবা এমপিএ। প্রতিটি থানার সেচ্ছাসেবক প্রতিরক্ষা দল থেকে ৫ জন এই দলে সদস্য হবেন, তার সাথে আরও ১০ জন সম্মানিত ব্যক্তি। তারা সবাই উপ-বিভাগীয় আইন ও বিচার ব্যবস্থার পূর্ণ সহযোগী হিসেবে কাজ করবেন।
ঘ। জেলা। জেলা পর্যায়ের আইন ও শৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে অবশ্যই নতুন করে সাজাতে হবে এবং শক্তিশালী করে তুলতে হবে। আইন ও শৃঙ্খলা ব্যবস্থার প্রধান হবেন পুলিশের সুপারিন্টেনডেন্ট, যাকে সহযোগিতার জন্য থাকবে যথেষ্ট সংখ্যক নিয়মিত পুলিশ কর্মকর্তা ও অন্যান্য সদস্যরা। কতজন পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট বর্তমাণে উপস্থিত এবং গ্রহণযোগ্য তার একটি সংখ্যা জানা গেছে। সেই সব উপস্থিত এবং গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের উপর জেলার আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থার ভার ন্যস্ত থাকবে। এই পর্যায়েও একটি সেচ্ছাসেবক প্রতিরক্ষা দল থাকা উচিত। এর প্রধান হিসেবে একজন এম এন এ অথবা এম পি এ কে রাখা যায়। এই দলের সদস্য হিসেবে থাকবে পুরো জেলা থেকে নেয়া ১০ জন এম এন এ অথবা এম পি এ, সম্মানিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ (১০ থেকে ১৫ জন), সম্মানিত স্থানীয় আইনজীবীগণ (১০ থেকে ১৫ জন) অথবা অন্যান্য পেশার ২৫ জন মানুষ। এই দলটি পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট এবং জেলা প্রশাসকের সাথে নিবিড় পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করবে। তাদের পক্ষে অন্তত ৭০ থেকে ৮০ জন সেচ্ছাসেবককে কাজে লাগানো সম্ভব।
ঙ। ঢাকা শহর। এই শহরের আইন এবং শৃঙ্খলাকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে। শহরে অবশ্যই পুলিশের একটি পূর্ণাঙ্গ বাহিনী থাকবে। এই বাহিনীর নেতৃত্বে থাকবেন পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক অথবা একই পদমর্যাদার অন্য কোন পুলিশ কর্মকর্তা। প্রতিটি মহল্লা বা ওয়ার্ডে একটি সেচ্ছাসেবক প্রতিরক্ষা দল থাকবে, যার প্রধান হবেন ওই ওয়ার্ডের সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি। এই দলের সদস্য হবে ওয়ার্ডের সর্ব স্তর থেকে নেয়া ২৫ জন ব্যক্তি। ওয়ার্ডের আইন এবং শৃঙ্খলার দায়িত্ব থাকবে তাদের উপর। ওই ওয়ার্ড যে থানার অন্তর্গত সেই থানার পুলিশবাহিনীর সাথে প্রতিরক্ষা দলের প্রত্যক্ষ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক থাকবে। একটি শহর প্রতিরক্ষা (সেচ্ছাসেবক) দল থাকতে হবে, যার সদস্য হবে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে একজন প্রতিনিধি, এবং নেতৃত্বে থাকবেন একজন সর্বক্ষেত্রে সম্মানিত রাজনৈতিক নেতা। এটি শহরের নিয়মিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সহযোগিতা বজায় রেখে কাজ করবে।
<003.176.547> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
চ। চট্টগ্রাম এবং খুলনা। এগুলোও বাণিজ্যিক এলাকা। এসব এলাকার প্রতিটিতে শান্তি বজায় রাখতে হবে। এই পর্যায়গুলোতেও একই ধরণের সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। সম্মানিত বাণিজ্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ এবং প্রধান প্রধান শ্রমিকদের সেচ্ছাসেবক প্রতিরক্ষা দলের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অবস্থান এবং পরিবেশের উপর নির্ভর করে প্রতিটি বাণিজ্যিক স্থাপনাতে অথবা কয়েকটা স্থাপনায় একসাথে এমন একটি করে দল গড়ে তোলা যৌক্তিক হবে।
ছ। অন্যান্য শহর, যেমন রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ইত্যাদি জায়গাতেও এমন সংগঠন গড়ে তুলতে হবে।
জ। এই পুরো পরিকল্পনাটি যে পরিষ্কার ধারণার উপর নির্ভরশীল তা হচ্ছে, সর্বস্তরের এবং সব এলাকার জনগণকে আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষার সাথে যুক্ত করা একটি অবশ্য কর্তব্য। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই পুলিশ কর্মচারীদের সম্পুর্ণ অংশকে কাজে লাগানো সম্ভব নয়। কিন্তু আইন এবং শৃঙ্খলা কারও অপেক্ষায় থাকবে না এবং তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। তাই জনগণের উপর নির্ভর করা ছাড়া সরকারের আর কোন উপায় নেই। সঠিক, সাহসী এবং দূরদর্শী রাজনৈতিক নেতৃত্ব পেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আমাদের দেশপ্রেমিক জনগণ তাদের ‘ফরজ’ বা অবশ্যকর্তব্য পালন করবেই। পুলিশ বাহিনী এবং তাদের প্রধানদেরকে নিজেদের ব্যবহার, আচরণ এবং কাজকর্ম দ্বারা প্রমাণ করতে হবে যে তারা জনগণের জীবন, অধিকার, স্বাধীনতা এবং সম্পদের রক্ষক। তাদের প্রমাণ করতে হবে যে তারা জনগণের বন্ধু। জনগণকে তাদের নিজেদের প্রতিরক্ষা সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে পারলে তা আইন এবং শৃঙ্খলার উপর যে কোন আক্রমণ প্রতিরোধে অনেক বড় বাঁধা হিসেবে কাজ করবে। সমগ্র জনগণের সচেতনতা, আইন এবং শৃঙ্খলা ব্যবস্থার সাথে তাদের নিবিড় যোগাযোগ; সাহসী, শক্তিশালী এবং দূরদর্শী রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সেই সাথে জনগণের প্রতি পুলিশ বাহিনীর বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব-এই সবই দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করবে বলে আমার ধারণা। স্বাধীনতা পরবর্তী আইন শৃঙ্খলার যে অবনতি তাকে মোকাবেলা করতে হলে আইনরক্ষাকারী বাহিনীকে কোনমতেই নিজেদের সঠিক দায়িত্ব এবং কর্তব্যের পথ থেকে সরে গেলে চলবে না, তাতে তাদের উপর উপর যত বড় চাপই আসুক না কেন। সরকার যথেষ্ট পরিমাণ পুলিশ কর্মচারীকে নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দিতে সক্ষম হবার পরে এই সেচ্ছাসেবক প্রতিরক্ষা দলগুলোকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে।
ভূসম্পদের কর আদায় প্রশাসন
জেলা পর্যায়ে ভূসম্পদের কর এবং অন্যান্য সরকারী শুল্ক, ফি এবং বকেয়া আদায়ের দায়িত্ব থাকবে সহকারী কমিশনারের উপর। তাকে সহায়তা করার জন্য জেলা পর্যায়ে একজন অতিরিক্ত সহকারী কমিশনার অথবা যুগ্ন সহকারী কমিশনার এবং অন্যান্য কর্মচারিরা থাকবে। উপ-বিভাগীয় পর্যায়ে উপ-বিভাগীয় কর্মকর্তা (এস ডি ও) একই দায়িত্ব পালন করবেন, এবং এই পর্যায়ে তাকে সহায়তা করবেন একজন উপ-বিভাগীয় ম্যানেজার। থানা পর্যায়ে থাকবেন রাজস্ব কর্মকর্তা (রেভিনিউ সার্কেল কর্মকর্তা)। ১২৫ টি রাজস্ব এলাকা (রেভিনিউ সার্কেল) আছে, প্রতিটি এলাকা একটি বড় অথবা দুই বা ততোধিক ছোট থানা নিয়ে গঠিত। প্রতিটি এলাকার দায়িত্বে থাকবেন রাজস্ব কর্মকর্তা। দুইটির মত ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে একটি তহশিল গঠিত হবে, এবং তহশিল পর্যায়ে দায়িত্বে থাকবেন তহশিলদার।
সবার উপরে থাকবে রাজস্ব বোর্ড, যা কিনা রাজস্ব অধিদপ্তরের অধীনে রাজস্ব প্রশাসনের কার্যনির্বাহী প্রধান। রাজস্ব বোর্ড শুধুমাত্র নীতিমালা প্রনয়ন নিয়ে কাজ করবে। ভবিষ্যতের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় রাজস্ব বোর্ডকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটা অধিদপ্তর হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। (এটি আগেই আলোচনা করা হয়েছে)। রাজস্ব বোর্ডের অধীনে থাকবে বিভাগীয় কমিশনার এবং তার সহায়তায় একজন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার। নিচের ছক থেকে পুরো ব্যাপারটি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
<003.176.548> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
রাজস্ব বোর্ড |
বাংলাদেশ |
বিভাগীয় কমিশনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার |
বিভাগ
|
উপ-বিভাগ |
তহশিলদার দুইটি ইউনিয়ন পরিষদ = একটি তহশিল |
২০২৩ তহশিল |
১২৫টি রেভিনিউ সার্কেল |
সহকারী কমিশনার অতিরিক্তি অথবা যুগ্ন জেলা প্রশাসক এবং অন্যান্য কর্মকর্তা |
থানা পর্যায়ের রাজস্ব কর্মকর্তা |
এই হচ্ছে ভূমি রাজস্ব এবং অন্যান্য শুল্ক ও কর আদায়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থা। জেলা পর্যায়ে সম্পূর্ণ জেলার মাঝে সহকারী কমিশনার সর্বপ্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং বাকি সবার কাজ নিয়ন্ত্রণ ও তদারক করবেন।
এই ব্যবস্থাকে তহশিল, থানা, উপ-বিভাগ এবং জেলা পর্যায়েও কাজে লাগানো যায়, বিশেষ করে যেসব এলাকা ইতোমধ্যে স্বাধীন হয়ে গেছে।
উপ-বিভাগ। উপ-বিভাগীয় কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে থাকা উপ-বিভাগগুলোর সাথে জেলা পর্যায়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থার কম বেশী মিল রয়েছে। উপ-বিভাগীয় কর্মকর্তার দায়িত্ব এবং সহকারী কমিশনারের দায়িত্ব সাধারণভাবে একই।
প্রতিটি ক্ষেত্রেই সরকারের উচিত হবে বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করে ফেলা এবং তাদের মধ্যে কারা গ্রহণযোগ্য তা পরীক্ষা করা। শূন্য পদগুলোকে চুক্তিভিত্তিক উপায়ে সরকার ব্যবস্থার বাইরের বিভিন্ন পেশার মানুষদের নিয়োগ দেয়ার মাধ্যমে পূর্ণ করতে হবে। এতে করে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় প্রাণ এবং নতুনত্ব ফিরে আসবে।
প্রযুক্তি এবং অন্যান্য অধিদপ্তরসমূহঃ
সরকারের প্রযুক্তি এবং অন্যান্য অধিদপ্তরসমূহকে সারা বাংলাদেশ জুড়ে মাঠপর্যায়ে কার্যালয় পরিচালনা করতে হবে। এই ধরণের ব্যাপারগুলো সাধারণত জেলাভিত্তিক সীমানার মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকে, তবে কিছু ব্যতিক্রমও ঘটতে পারে। এখানে এমন জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের একটি তালিকা দেয়া হলো।
<003.176.549> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
১। প্রধান মেডিকেল এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তা
এর মাঝে অন্তর্গত আছেন সিভিল সার্জন, অন্যান্য মেডিকেল কর্মকর্তা, হাসপাতালের কর্মকর্তা এবং অন্যান্য কর্মচারীবৃন্দ।
২। কার্যনির্বাহী প্রকৌশলী (ভবন ও সড়ক)
-তার সম্পূর্ণ কার্যালয়।
৩। কার্যনির্বাহী প্রকৌশলী (সেচ)
-তার সম্পূর্ণ কর্মচারীবৃন্দ।
৪। ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা
-তার সম্পূর্ণ কর্মচারীবৃন্দ।
৫। জেলা শিল্প কর্মকর্তা
-তার কর্মচারীবৃন্দ।
৬। জেলা কৃষি কর্মকর্তা
-তার করমচারীবৃন্দ।
৭। জেলা পশুপালন কর্মকর্তা
৮। সহকারী রেজিস্ট্রার, সমবায় সমিতিসমূহ
৯। শিক্ষা কর্মকর্তা-জেলা স্কুল পরিদর্শক এবং তার কর্মচারীবৃন্দ।
১০। শ্রম কর্মকর্তা (শিল্পকারখানা আছে যে সব জেলায়)
১১। সামাজিক উন্নয়ন কর্মকর্তা
১২। জনসংযোগ কর্মকর্তা
১৩। জেলা কর্মসংস্থান কর্মকর্তা
১৪। জেলা পরিসংখ্যানবিদ
১৫। জেলা সামাজিক শিক্ষা কর্মকর্তা
১৬। আনসার অ্যাডজুট্যান্ট
১৭। ডাক ও টেলিযোগাযোগ কর্মকর্তা
উপবিভাগীয় পর্যায়ে এই কর্মকর্তাদের অনুরূপ পদ থাকবে। থানা পর্যায়েও অনুরূপ পদ থাকবে। যেখানে যেখানে সম্ভব, থানা, উপ-বিভাগীয় এবং জেলা পর্যায়ের মাঝে যোগাযোগ বজায় রাখতে হবে।
কর্মকর্তাদের যোগ্যতা
প্রতিটি পর্যায়ে এবং প্রতিটি পদের ক্ষেত্রে সরকারের উচিত হবে কোন সময় নষ্ট না করে কর্মকর্তাদের মাঝে উপস্থিত এবং গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করা। নিঃসন্দেহে কর্মকর্তাদের একটি বড় অংশ যারা স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় কর্মক্ষেত্রে যোগদান করেছে, তারা পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর দোসর ছিল না। সেচ্ছায় দেশদ্রোহী হয়েছে যারা তাদের সংখ্যা খুব বেশী হবে না, কর্মকর্তাদের সম্পূর্ণ অংশের ৫ থেকে ৮ শতাংশের মধ্যে থাকবে বলে আশা করা যায়। প্রকৃত দেশদ্রোহী ছাড়া বাকি সবাইকে শত্রুমুক্ত এলাকায় নিজেদের কর্মক্ষেত্রে ফিরে যেতে অনুমতি দেয়া হবে। প্রকৃত দেশদ্রোহীদের আইনানুগভাবে বিচার করা হবে। উচ্চ পর্যায়ের কিছু দেশদ্রোহীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া যেতে পারে।
<003.176.550> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সহকারি (ডেপুটি) কমিশনার
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যদি কোন সংগঠনের সদস্যদের কাছে অস্ত্র থাকে, তাদের গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা দেওয়া হয় এবং মানুষের স্বাধীনতাকে হস্তক্ষেপ করে তবে তাকে পরিপূর্ন স্বাধীনতা বলে না। কারন বাহ্যিক বেসামরিক কর্তৃপক্ষ তাদের দেখভাল করে। পুলিশের যে ক্ষমতা আছে তার অপব্যবহার ও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে রোধকল্পে এমন নিয়ন্ত্রন রক্ষাকবচ হিশেবে কাজ করে। সঠিক পন্থা হল এই ধরনের বেসামরিক কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হবে শান্তি রক্ষা করা এবং প্রশান্তি বজায় রাখা। এবং এজেন্সীর মাধ্যমে তাদের পোশাক নির্ধারিত থাকবে এবং উদ্দেশাবলী নির্ধারিত থাকবে।
যদি পুলিশের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ যদি উপর ডেপুটি কমিশনার এর উপরি ন্যস্ত থাকে তাহলে তা যুক্তিসঙ্গত মনে হয়। এই নিয়ন্ত্রন স্বাভাবিক হবে যদি কোনো জরূরী অবস্থার সৃষ্টি না হয়ে থাকে, পুলিশ এর সাংগঠনিক কাজে ডেপুটি কমিশনার এর কোনো রকম সরাসরি নির্দেশনা থাকবে না। অন্যকথায়, প্রাত্যহিক কাজের মধ্যে বদলি এবং পোস্টিং এর কাজ তার এক্তিয়ারে হবে, পুলিশের ডিস্ট্রিক্ট সুপারিনটেনডেন্ট এর পুর্ণ নিয়ন্ত্রন থাকবে এবং তার সকল ধরনের ক্ষমতা থাকবে। শুধুমাত্র যে সকল অফিসের আইন – শৃঙ্খলার দায়িত্বে নয় তাদের , সেগুলো তাদের আওতার বাইরে থাকবে। ডেপুটি কমিশনার সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য হস্তক্ষেপ করতে পারে, যেমন বদলির ক্ষেত্রে। কর্মকর্তার কাছ থেকে রিভিউ এর সময়কার কর্মকান্ডের উপর স্বলিখিত মন্তব্য পাওয়ার পরে ডেপুটি কমিশনার বাৎসরিক ভিত্তিতে পুলিশের সুপারিনটেনডেন্ট এর কর্মকান্ডের উপর তার মতামতের রেকর্ড রাখবেন ।
প্রোটোকল দায়িত্ব:
ডিস্ট্রিক্ট অফিসারের দায়িত্ব যথেষ্ট কঠিন ও শ্রমসাপেক্ষ, তা হল প্রোটোকল এর দায়িত্ব পালন করা এবং উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা জেলা পরিদর্শন সময়কালে তাদেরকে প্রোটোকল দেওয়া। এটাই পরামর্শ দেওয়া যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হয় যে কালেক্টর ও অন্যান্য ডিস্ট্রিক্ট অফিসারেরা উচ্চপদস্থ ব্যক্তির পরিদর্শনের জন্য অপেক্ষা করবে না, যদি না তাদের উপস্থিতি একান্তই প্রয়োজনীয় হয়।
জেলা প্রশাসনের পুনর্গঠনঃ
এদেশের জেলাসমূহ আয়তন ও জনসংখ্যায় অনেক ভিন্ন হয়। ময়মনসিংহ জেলায় ৫০৬০ বর্গমাইল এলাকায় ৫৫,৩২,৩১৮ জন মানুষ বসবাস করে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ৫০৯৩ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১,৩৫,১৩৪ জন বসবাস করে। উপবিভাগের ক্ষেত্রের জনসংখ্যার দিক দিয়ে বেশি ভিন্নতা পাওয়া যায়। মেহেরপুর সাবডিভিশনের জনসংখ্যা ১ লক্ষ ৯১ হাজার ২০০, জামালপুর সাবডিভিশনের জনসংখ্যা ৯৪ লক্ষ ৪৮ হাজার ৫৪০, নোয়াখালী সদর সাবডিভিশনের জনসংখ্যা ১৭ লক্ষ ৯২ হাজার ৮০৪, অধিকাংশ সাবডিভিশনের জনসংখ্যার মদ্ধ্যে পার্থক্য ৬ লাখ থেকে ১০ লাখ।
দক্ষ ও সুচারু প্রশাসনের জন্য জেলাসমূহের বাড়তি জনসংখ্যা অনেক বেশিই।
যদিও বড় জেলাগুলোতে অতিরিক্ত কাজের মাত্রানুযায়ী অধিক প্রশাসনিক কর্মচারি নিয়োগ দেওয়া হয়, তবউও আশংকা রয়ে যায় যে জেলার অবশ্যই একটা ন্যূনতম আঁকার রয়েছে যার বেশী হলে প্রশাসনের সমন্বয় শিথিল অদক্ষ ও অকার্যকর হয়ে পড়বে । এটা উন্নয়ন ও কল্যাণ এর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বিদ্যমান জেলাসমূহ বিগত কয়েক দশক ধরে প্রশাসনিক কাজের জন্য মূল একক হিশেবে রয়েছে।
<003.176.551> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
দক্ষ প্রশাসনের জন্য জনসংখ্যা ও কর্মকর্তার অনুপাত খুবই কম। একটা কার্যক্ষম প্রশাসন পরিচালনার জন্য জেলাপর্যায়ের অফিসারদের উপর দায়িত্তের বোঝা প্রচণ্ড বেশী। এটা সবসময়ই বলা হয় যে বাংলাদেশ প্রশাসনিক দূর্বলতায় ভুগছে। অর্থ পরিষদের থেকে ১৯৪৩ সালের প্রতিবেদনে বলা হয় যে বাংলাদেশ দূর্বল প্রশাসনে পরিচালিত হয় ।
সবগুলো সাবডিভিশনকে জেলাতে রুপান্তর করা উচিত বলে যোউক্তিক মনে হচ্ছে। কিছুকিছু ক্ষেত্রে দু-একটা সাবডিভিশনকে হয়তো দুইটা জেলায় ভাগ করতে হতে পারে। প্রতিটি জেলায় জনসংখ্যা হওয়া উচিত ৬৫,০০০ থেকে ১০,০০,০০০ এর মধ্যে। এটা করা হলে বাংলাদেশে প্রায় ৬০ থেকে ৬১ টি জেলা হবে। দেশটিতে এখন ৪১১ টি পুলিশস্টেশন আছে। এই এলাকা গুলো এমন ভাবে ২৫০ টি সাবডিভিশনে ভাগ করা উচিত যাতে প্রতিটি সাবডিভিশনে গড়ে জনসংখ্যা ৩০০০০০ হয়। ঢাকা শহরকে মেট্রোপলিটন জেলাতে রুপান্তর করা যেতে পারে। সরকারের সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রস্থল হওয়ায় ঢাকায় অনেকগুলো সমস্যা আছে যা আশেপাশের অন্য এলাকায় নেই।
এটা করা হলে এখনকার চাইতে বিভিন্ন বিভাগে অনেক বেশি অফিসারের প্রয়োজন যা বর্তমানে নেই। সঙ্গতকারনেই এর সাথে অনেক বেশি অর্থেরও প্রয়োজন হবে। সম্পূর্ণ কাজটাকে ধাপেধাপে ভাগ করে করা যেতে পারে। আর সেই সময়ের মধ্যে সরকারের উচিত এই সমস্যা মোকাবেলার জন্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটা কমিটি গঠন করা।
স্থানীয় স্বায়ত্বশাসিত পরিচালনা পরিষদ
একটি গনতান্ত্রিক পরিষদের জন্য একটি ভাল সরকারের ভিত্তির কোন বিকল্প হতে পারেনা। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো জনগনকে স্থানীয় প্রশাসনে অংশগ্রহনের সুযোগ দেয় যা গনতন্ত্রের একটি খুবই গুরুত্বপুর্ন দিক । । স্থানীয় সরকার গঠনে যে সব সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে তা হলঃ
(১)এলাকার সমস্যা
জেলাগুলো জনসংখ্যা এবং এলাকার দিক থেকে অনেক বড়। ইতিমদ্ধেই সাবডিভিশন গুলোকে সমন্নয় করে জেলাতে রুপান্তর করার প্রস্তাব গ্রহন করা হয়েছে। এতে করে জেলা গুলো ছোট হয়ে আসবে এবং জনসংখ্যাও নিয়ন্ত্রণযোগ্য সংখ্যায় নেমে আসবে ।
(২)জেলা বোর্ড
(ক)বিদ্যমান ডিসট্রিক্ট কাউন্সিলের নাম পরিবরতন করে ডিসট্রিক্ট বোর্ড করতে হবে। প্রাপ্ত বয়স্কদের মতামতের ভিত্তিতে বোর্ডের সদস্যরা নির্বাচিত হবে। ২৫-৩০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে এই ডিসট্রিক্ট বোর্ড।
ডিসট্রিক্ট বোর্ডের চেয়ারমান কে উপমন্ত্রীর পদ-মর্যাদা দিতে হবে।
(খ)জেলা পরিষদ কে দুই ভাগে ভাগ করতে হবে। যার একভাগ এর কাজ হবে আইন প্রয়োগ, রাজস্ব, মাজেস্ট্রিয়াল কার্যাবলী এবং এই সম্পর্কিত অন্যান্য কর্মকান্ড সম্পাদন করা। আরেক ভাগের কাজ হবে কৃষি, পানি সেচ, পশু পালনে সহায়তা, জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্প-কারখানা, কারুশিল্প এবং অন্যান্য। প্রথম ভাগে উল্লেখিত অংশের প্রধান হবেন ডেপুটি কমিশনার এবং পরের ভাগের দায়িত্ব হবে ডিসট্রিক্ট বোর্ড এর।
<003.176.552> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(গ) জেলা বোর্ডের ডেপুটি কমিশনার ও চেয়ারম্যান একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য সাক্ষাৎ করবেন যেটা কে বলা হয় নিয়ন্ত্রক ও উন্নয়ন প্রশাসনের সমন্বয়। এই পদ্ধতিকে স্থানীয় সরকার সম্পর্কিত সংবিধানে কার্যকরী স্বীকৃতি দেওয়া হবে ।
(৩) ঊন্নয়ন বোর্ড
ক) সদস্য পদঃ প্রতিটা ইঊনিয়ন বোর্ড (বর্তমান ইউনিয়ন কাউন্সিল আগের ইউনিয়ন বোর্ড দ্বারা পরিবর্তিত হবে) এ ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য থাকবে। প্রত্যেকে সার্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচিত হবেন। সদস্যগন তাদের নিজেদের মধ্যে থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন।
খ) কার্যাবলীঃ স্থানীয় প্রশাসনের কার্যাবলী ও দায়িত্বকে ৩ টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে;
১) পৌর সেবা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
২) সমাজকল্যাণ কার্যক্রম এবং
৩) উন্নয়নমূলক কাজ
(৪)উন্নয়ন ব্লক
প্রতিটা উন্নয়ন ব্লককে একটি থানার আওতাধীন এলাকা নিয়ে গঠন করা হবে। কমিউনিটির উন্নয়নের জন্য কার্যাবলী, দায়দায়িত্ব এবং স্টাফদের প্রয়োজনসমূহ একটি বিশদ রিপোর্টের মাধ্যমে সরকারকে জানানো হবে।
(৫)আর্থিক সংস্থানঃ
(ক)করারোপ এবং অন্য কোন পাওনা
(খ)সরকারি অনুদান
(গ)উন্নয়ন
(৬)কাজের পদ্ধতিঃ সুগঠিত কমিটি সিস্টেম
একটি বিশদ দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা স্থানীয় প্রশাসনের উন্নয়নের জন্য উপযুক্ত সময়ের মাঝে জমা দেওয়া হবে।
এই মুহূর্তে এটা বলা কঠিন যে কতজন স্থানীয় ব্যক্তি তাদের কার্যক্রমের জন্য স্বস্থানে রয়েছেন। এটা স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তাৎক্ষণিকভাবে নির্ধারণ করা হবে। অনেকক্ষেত্রে এডহক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজনীয় হতে পারে।
মোজাফফার আহমেদ চৌধুরী
চেয়ারম্যান
পরিকল্পনা সেল
<003.176.553>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
দ্বিতীয় অধ্যায়
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ
পুর্বাঞ্চলীয় জোন
<003.176.554>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
<003.177.555>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
আঞ্চলিক উপদেষ্টা কমিটির একটি নিয়োগপত্রঃ সৈনিকদের আশ্রয়ের ব্যবস্থার জন্য একটা চিঠি।
|
আঞ্চলিক উপদেষ্টা কমিটির একটি নিয়োগপত্রঃ সৈনিকদের আশ্রয়ের ব্যবস্থার জন্য একটা চিঠি।
|
৫ মে, ১৯৭১
|
জোনাল উপদেষ্টা কমিটির অফিস, যুব শিবির
দক্ষিণ পূর্ব জোন ২
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
নিয়োগপত্র
সৈয়দ মতিউল আলম, পিতাঃ সুজত আলী, গ্রামঃ _________, ডাকঘরঃ কুমিল্লা, থানাঃ কোতোয়ালী, জেলাঃ কুমিল্লা ১০ই মে, ১৯৭১ থেকে রাজনৈতিক প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হলেন। পদ্মনগর, বক্সিনগর এ যুব অভ্যর্থনা/ট্রানজিট ক্যাম্পে যোগদানের জন্য বলা হল।
আহমেদ আলী
চেয়ারম্যান
জোনাল উপদেষ্টা কমিটি
যুব অভ্যর্থনা ক্যাম্প
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
—————
প্রেরকঃ ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান
সাব-সেক্টর হেডকোয়ার্টার
নির্ভয়পুর
ডিসি নম্বরঃ ১
৫ মে, ১৯৭১
প্রাপকঃ প্রফেসর আবুল কালাম মজুমদার
প্রধান , জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক সংঘ
কুমিল্লা।
বিষয়ঃ লাকসাম এলাকায় অবস্থানরত MF-দের খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য স্থানীয় প্রশাসন।
যেহেতু আপনি কুমিল্লা জেলার আওয়ামী লীগ বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন আছেন এবং আপনি লাকসামের স্থানীয়, আপনাকে অনুরোধ করা হচ্ছে যে আপনি আপনার বসবাসরত এলাকা এমনভাবে সংগঠিত করুন যেন সেখানে কার্যরত সেনারা খাবার আর আশ্রয় পায়। আপনাকে আরো অনুরোধ করা হচ্ছে আপনার সেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে আমাদের দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য । আপনার এই ব্যসবথাপনা আমাদের দেশের জন্য যুদ্ধ করার থেকে কোন অংশে কম বলে গৃহিত হবে না।
আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ থাকব যদি আপনি এ ব্যাপারে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন যার ফলে ঐ এলাকায় আমরা সহজে যাতায়াত ও কার্যক্রম চালাতে সক্ষম হবো ।
<003.178.556>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
লিবারেশন কাউনসিল , পূর্বাঞ্চলীয় জোনের আওতাধীন যুব শিবিরের কর্মীদের তালিকা ও আনুষংগিক তথ্য
|
বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কাউনসিল পূর্বাঞ্চলীয় জোন
|
২৫ মে, ১৯৭১
|
নামঃ গুকুলাঙ্গার যুব ক্যাম্প (…)
শুরুর তারিখঃ
বর্তমান ক্ষমতাঃ
কর্মকর্তাগণঃ
(১) ক্যাম্প চিফ- মোঃ শামসুল হক মিয়া, এম.এ এ্যাডভোকেট।
(২) উপ-ক্যাম্প প্রধানঃ মোঃ হারুনর রশিদ।
(৩) ক্যাম্প পরিদর্শকঃ ওয়াইজুদ্দিন আহমেদ, এ্যাডভোকেট।
(৪) রাজনৈতিক নির্দেশকঃ
ক) আনোয়ার হোসেন, বি,এ
খ) সিরাজউদ্দিন আহমেদ, এ্যাডভোকেট
গ) শ্রী সঞ্জিত কুমার সাহা
(৫) শারীরিক প্রশিক্ষকঃ
ক) মাহাতাবুদ্দিন আহমেদ (ই.পি.আর)
খ) আবদুল মান্নান
গ) ইয়ার মুহাম্মদ
(৬) ছাত্র প্রতিনিধিঃ বশিরুদ্দিন আহমেদ।
(৭) ………………………………. স্বাস্থ্য কর্মকর্তা –
স্বাক্ষরঃ মোঃ শামসুল হক
(এম.পি.এ)
এ্যাডভোকেট
২৫.০৫.৭১
নামঃ রাজনগর ইয়্যুথ ক্যাম্প।
শুরুর তারিখঃ
বর্তমান ক্ষমতাঃ
কর্মকর্তাগণঃ
(১) ক্যাম্প চিফঃ মোঃ হানিফ (এম.এন.এ)
(২) উপ-ক্যাম্প প্রধানঃ বিসমিল্লাহ এম.পি
(৩) ক্যাম্প পরিদর্শকঃ
(৪) রাজনৈতিক নির্দেশকঃ
ক) ————–
খ) ————– ফজলুর রহমান এফ.এ (ইকো)
গ) ————–
ঘ) ————–
<003.178.557>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(৫) শারীরিক প্রশিক্ষক/ –
(১)
(২)
(৩)
(৪)
(৬) ছাত্র-ছাত্রী প্রতিনিধি– মোহাম্মদ শাহজাহান
(৭) শ্রমিক প্রতিনিধি– রুহুল আমিন ভূইয়া
(8) …………স্বাস্থ্য কর্মকর্তা/হেলথ অফিসার
এসডি/- মোঃ নুরুল হক
৩০/০৫/৭১
নামঃ হাতিমারা ইয়ুথ ক্লাব
শুরুর তারিখঃ ১০-০৭-১৯৭১
বর্তমান ক্ষমতাঃ ৭৫০
কর্মকর্তাগণ
(১) ক্যাম্প প্রধান/ক্যাম্প চিফ – এম.এ রশিদ, এম.পি.এ
(২) ডেপুটি – আবুল বাশার
(৩) রাজনৈতিক প্রশিক্ষক – (ক) আসগর আলি (প্রধানশিক্ষক)
(খ)
(গ)
(ঘ)
(8) শারীরিক প্রশিক্ষক/ –
(ক)
(খ)
(গ)
(ঘ)
(৫) ছাত্র-ছাত্রী প্রতিনিধি – মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
(৬) শ্রমিক প্রতিনিধি –
(৭) স্বাস্থ্য কর্মকর্তা – (ক) লুৎফুল কবির এম.বি.বি.এস
(খ)
স্বাক্ষরিত
<003.178.558>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
যুব শিবিরের তালিকা
(যুব শিবিরের প্রধানগণ)
জেলাঃ
ইয়ুথ ক্যাম্প
(ক্যাম্পের প্রস্তাবিত স্থান)
এম. এ. হান্নান
(ক) চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম – (১) হরিনা
(২) শ্রীনগর অথবা
হরিশমুখ খায়রুদ্দিন আহমেদ, এম.পি.এ
(৩) উদয়পুর ক্যাপ্টেন এস আলি, এম.পি.এ
(খ) নোয়াখালী (১) ছোটখোলা খাজা আহমেদ, এমএমএ
(২) রাধানগর এ. হানিফ, এমপিএ (রাজনগর)
(গ) কুমিল্লা (১) কাঠালিয়া আবুল আওয়াল, এমএনএ
(বারামুড়া)
(২) হাতিমারা এম. এ. রশিদ এমপিএ
(কমলনগর)
(৩) বক্সনগর প্রফেসর এ রউফ এমপিএ
(ঘাইয়ামারা)
(৪) মতিনগর ক্যাপ. আলম
(ঘ) কুমিল্লা ও ঢাকা (১) কোনাবন আমীরুল ইসলাম, এমপিএ
(২) আশ্রমবাড়ি মুস্তফা শহিদ, এমপিএ
(মানিক চৌধুরি)
(৪) পাথরকান্দি এ রহিম, এমএনএ
(করিমগঞ্জ)
ঢাকা ও কুমিল্লার জন্য আগাইতলা ট্রান্সিট ক্যাম্পসমূহঃ
(১) জয়নগর আফজাল হোসেন, এমপিএ
(২) চারিপুরা শামসুল হক, এমপিএ
(৩) কংগ্রেস ভবন ফজলুর রহমান, এমএনএ (শুধু ট্রানজিট)
(৪) নরসিংগড় দেওয়ান আব্দুল আব্বাস, এমএনএ
(৫) বাত্তালি (মোহনপুর)
নিম্নলিখিতি কর্মকর্তাগণকে নিয়ে প্রতিটি যুব শিবির জন্য একটি করে ‘প্রশাসনিক ও নিয়োগ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে-
(১) শিবির প্রধান
(২) সহকারী শিবির প্রধান
(৩) প্রশাসনিক কর্মকর্তা
(৪) রাজনৈতিক প্রশিক্ষক
(৫) ছাত্র ব্যবস্থাপক
(৬) শারীরিক প্রশিক্ষন কর্মকর্তা
(৭) চিকিৎসক কর্মকর্তা
স্বাক্ষরিত/-
<003.179.559>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্রঃ তৃতীয় পত্র
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
মুক্তিফৌজে অন্তর্ভূক্তিকরণ সম্পর্কে সেনাবাহিনীর সাথে যুবশিবিরের যোগাযোগ |
বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কাউন্সিল পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
৪ জুন, ১৯৭১ |
দি চিফ অফ স্টাফস
বাংলাদেশ বাহিনী
বিষয়ঃ মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষন শিবিরের জন্য নিয়োগ ।
আপনার পত্র নম্বর ৩০৩২/বিডিএফ/জি তারিখ ১৮/০৬/৭১ এর প্রতিউত্তরে, আপনার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, মুক্তিফৌজে যোগদানের লক্ষ্যে নিয়োগ বোর্ডের মুখোমুখি হবার পূর্বেই ১৫ দিনের জন্য নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য সাব্রুম কাচিমগঞ্জ হতে শুরু করে পুরো সীমান্ত এলাকা জুড়ে যুব শিবির স্থাপনের জন্য জোর প্রস্তুতি চলছে।
যুব শিবির এর জন্য বর্তমান ও প্রস্তাবিদ পদসমূহের তালিকা নিম্নে দেওয়া হলোঃ
(১) শিবির প্রধান
(২) সহকারী শিবির প্রধান
(৩) প্রশাসনিক কর্মকর্তা
(৪) রাজনৈতিক প্রশিক্ষক
(৫) ছাত্র ব্যবস্থাপক
(৬) শারীরিক প্রশিক্ষন কর্মকর্তা
(৭) চিকিৎসক কর্মকর্তা
অনুগ্রহপূর্বক, অন্যান্য উৎস থেকে যুব শিবিরে নিয়োগ বন্ধ করার ব্যাপারে নিশ্চিত করার জন্য সবিনয় নিবেদন থাকলো।
এসডি/- এম আলম
সাধারণ সচিব/সেক্রেটারি জেনারেল
……………………………………………
<003.180.560> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্রঃ তৃতীয় পত্র
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব ত্রাণ শিবির সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন |
বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কাউন্সিল পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
৬ জুন, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
তাং – ৬/৬/৭১
শিবির প্রধান / দায়িত্বপ্রাপ্ত শিবির প্রধান,
যেহেতু সরকার আপনার গবেষণার আবেদন মঞ্জুর করেছেন, সেহেতু এই ইউথ রিলিফ ক্যাম্প প্রজেক্টের কিছু তথ্য উপাত্ত আমি সংযুক্ত করছি।
এই প্রজেক্টকে আরো তরান্বিত ও অভিন্নভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আলোচনার জন্য কৃষ্ণনগর অফিসে আগামী রবিবার দুপুর ৩ঘটিকায় একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হবে।
উক্ত মিটিং এ আপনার সদয় উপস্থিতির জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
সংযুক্ত প্রজেক্টের ৫নং প্যারা অনুসারে, এই সময়ের মধ্যে ক্যাম্প অফিসারদের এপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করার জন্যেও আপনাকে অনুরোধ করা হলো।
নিবন্ধন ও হিশেব (Return) সম্পর্কিত রীতিনীতির একটি তালিকা সংযুক্ত আছে । সংযুক্ত উপধারা অনুসারে, অনুগ্রহপূর্বক নিম্নে উল্লেখিত কাগজসমূহ নিয়ে আসবার জন্য জানানো হচ্ছে।
(১) কর্মকর্তাদের তালিকা
(২) দৈনিক হিশেব (Return) (আগমন ও বহির্গমন)
(৩) সাপ্তাহিক উন্নয়ন সমীক্ষা
আপনার বিশ্বাস্ত
(এম আলম)
৬/৬/৭১
যুব ত্রাণ শিবির
(পরিচিতি)
১) উদ্দেশ্যসমূহ
(ক) সারা বাংলাদেশ থেকে আগত তরুণদের একত্রিত করে সংঘবদ্ধভাবে ও উদ্দেশ্যমুলক কর্মকান্ডের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া
(খ) আমাদের সামরিক বাহিনীর জন্য অবস্থা শিবির হিসেবে পরিচালনা করা যেখান থেকে প্রশিক্ষিতদের নিয়মিত ও গেরিলা হিসেবে নিয়োগ করা হবে
(গ) অন্যদেরকে ভিত্তি-কর্মী হিসেবে প্রশিক্ষিত করা, প্রয়োজনে যারা আমাদের সামরিক বাহিনীর নির্দেশে শিক্ষানবিশ গেরিলা হিসেবেও কাজ করবে
<003.180.561>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(২) সূচী
(ক) আগামী ৬মাসব্যাপী যাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে
(১) ৫০,০০০ ভিত্তি কর্মী
(২) ১৮,০০০ সামরিক নিয়োগ
(খ) গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ১২,০০০
(গ) প্রশিক্ষণ হবে দুই ভাগে, ১৫দিন করে, এক মাসের জন্য
(১) প্রথম অংশে সকল নতুন আগতদের উদ্বুদ্ধকরণ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, এরপর সামরিক বাহিণীতে নিয়োগ দেওয়া হবে
(২) যাদেরকে সামরিক বাহিনীতে নিয়োগ করা হবে না, দ্বিতীয় অংশে তাদেরকে বেজ ওয়ার্ক এর জন্য প্রস্তুত করা হবে
*সংযুক্ত এপেন্ডিক্স-এ (সামারি এট ফ্ল্যাগ-এক্স) অংশে সূচীর রুপরেখা তুলে ধরা হয়েছে।
৩) ক্যাম্পের গঠন
ক্যাম্প হবে দুই ধরনের
(ক) অভ্যর্থনা/রিসিপশন ক্যাম্পঃ সীমান্তে প্রবেশমুখ মূলপথে ৫মাইল দূরবর্তী ত্রিপুরাতে এমন ১৫টি ক্যাম্প করা হবে
(১) প্রাথমিক বিশ্রাম ও পরিচিতি
(২) রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দ্বারা নিরাপত্তামূলক নিরীক্ষন
(৩) যদি সম্ভবপর হয়, নিয়মিত ক্যাম্পে ভর্তির অপেক্ষায় থাকাদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ
(খ) প্রশিক্ষণ/ট্রেনিং ক্যাম্পঃ আগরতলা এর ৩০ মাইলের মধ্যবর্তী ৩টি এলাকায় ত্রিপুরাতে এমন ১০টি ক্যাম্প হবে যার প্রতিটিকে থাকবে প্রায় ১০০জন
*এপেন্ডিক্স-বি তে ক্যাম্পসমূহের লিস্ট সংযুক্ত করা হলো
(৪) ক্যাম্প ম্যানেজমেন্ট
(ক) অভ্যর্থনা ক্যাম্পসমূহ নিম্নলিখিত ব্যক্তিবর্গের দ্বারা গঠিত কমিটি কর্তৃক পরিচালিত হবেঃ
১ জন ক্যাম্প ইন চার্জ
১ জন ডেপুটি ক্যাম্প ইন চার্জ
১ জন ক্যাম্প সুপারভাইজার
১ জন স্টুডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ
১ জন হেলথ অফিসার
(খ) প্রশিক্ষণ ক্যাম্পসমূহ নিমলিখিত ব্যক্তিবর্গের দ্বারা গঠিত কমিটি কর্তৃক পরিচালিত হবেঃ
১ জন ক্যাম্প ইন চার্জ
১ জন ডেপুটি ক্যাম্প ইন চার্জ
১জন রাজনৈতিক প্রশিক্ষক প্রতি ২৫০জন প্রশিক্ষনার্থীর জন্য
<003.180.562> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
( ২) প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে প্রশিক্ষণ সমন্বয়কারী ( ডক্টর আবু ইউসুফ) এর নির্দেশনায় পরিচালিত হবে।
( ৩) ক্যাম্পের সুযোগ-সুবিধা এবং নিরাপত্তা ভারত সরকার দ্বারা নিয়োজিত ক্যাম্প প্রশাসনের দায়িত্বে থাকবে ।
(৫) নিয়োগঃ
(ক) ক্যাম্প প্রধান/ ভারপ্রাপ্ত প্রধান এবং তাঁদের সহকারীবৃন্দ মনোনীত হবেন পূর্বাঞ্চলের জনপ্রতিনিধিবৃন্দ দিয়ে গঠিত রাজনৈতিক সমিতি দ্বারা।
(খ) ক্যাম্পপ্রধান/ ভারপ্রাপ্ত প্রধান নিন্মোক্তভাবে দপ্তরবাহকদের নিয়োগ দিবেন-
(১) পরিচালক, যুব মুক্তি ক্যাম্প প্রশাসনের ( অধ্যাপক এনআই চৌধুরী এমএনএ) সাথে আলোচনা সাপেক্ষে ক্যাম্প কর্মকর্তা নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন সরকারী কর্মচারী এবং পেশাজীবীদের মধ্য থেকে।
(২) রাজনৈতিক নির্দেশনা আসবে অধ্যাপক এবং শিক্ষকদের সাথে প্রশিক্ষক সমন্বয়কের ( ডক্টর আবু ইউসুফ) আলোচনা সাপেক্ষে।
(৩) সেক্টর কমান্ডারদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে কর্মচারী/ প্রাক্তন কর্মচারীদের মাঝ থেকে শারীরিক প্রশিক্ষক নিয়োগ করা হবে।
(৪) ছাত্র প্রতিনিধি নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন বাংলাদেশ ছাত্র কার্যকরী সমিতি ( জনাব একিউ মাখন) দ্বারা।
(৫) মেডিক্যাল সমন্বয়কের ( ডাক্তার আখতারুজ্জামান) সাথে পরামর্শ সাপেক্ষে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
(৬) সকল নিয়োগপ্রাপ্তগণ তাদের ক্যাম্পেই অবস্থান করবেন।
৬। আর্থিক এবং হিসাব ব্যবস্থাপনাঃ
ক্যাম্প কর্মকর্তা/ ক্যাম্প পরিচালক হবেন লেখ্য এবং ব্যয়িক কর্মকর্তা।
তারা সাপ্তাহিক খরচের হিসাব পরিচালকের কাছে জমা দিবেন। ইতোমধ্যে ব্যয়িত অর্থের সাথে নতুন প্রাপ্ত অর্থ এবং এর ব্যবস্থাপনা হালনাগাদ করা হবে।
৭। সদরদপ্তর সমূহঃ
পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সমিতি সার্বিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পরিচালকমণ্ডলীর নিন্মোক্ত সদরদপ্তরসমূহ স্থাপনা করেছে :
জনাব মাহবুব আলম, পরিচালক (প্রকল্প সমন্বয়ক )
ডক্টর আবু ইউসুফ, পরিচালক ( অনুশীলন সমন্বয়ক)
অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, এমএনএ, পরিচালক ( প্রশাসন)
জনাব মুজাফফর আহমেদ, এমপিএ ,পরিচালক ( চালনা এবং আতিথ্য)।
জনাব খালেদ মাহমুদ,এমএনএ, পরিচালক ( অনুপ্রেরণা)
<003.180.563>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(ভবিষ্যৎ নিয়োগ) সহকারী পরিচালক (প্রশাসন)
(ভবিষ্যৎ নিয়োগ) সহকারী পরিচালক ( সরবরাহ)
জনাব বজলুর রহমান সহকারী পরিচালক ( হিসাব)
জনাব মোশাররফ হোসাইন সহকারী সমন্বয়ক (রাজনৈতিক)
অধ্যাপক দেবব্রত দত্ত গুপ্ত সহকারী সমন্বয়ক ( শারিরীক)
নামঃ শুরুর তারিখঃ
বর্তমান সামর্থ্যঃ
যুব ত্রাণ শিবির
(ভ্রাম্যমাণ, নিয়মিত কর্মকর্তাগণ)
১। ক্যাম্প প্রধানঃ ……………………………………………………………………………
২। সহকারী ক্যাম্প প্রধানঃ ……………………………………………………………………………
৩। ক্যাম্প কর্মকর্তাঃ ……………………………………………………………………………
৪। রাজনৈতিক নির্দেশকঃ ……………………………………………………………………………
ক) ……………………………………………………………………………
খ) ……………………………………………………………………………
৫। শারিরীক প্রশিক্ষকঃ ……………………………………………………………………………
ক) ……………………………………………………………………………
খ) ……………………………………………………………………………
৬। ছাত্র প্রতিনিধিঃ ……………………………………………………………………………
৭। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাঃ ……………………………………………………………………………
স্বাক্ষরঃ
(ক্যাম্প প্রধান)
তারিখঃ
<003.180.564>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সাপ্তাহিক উন্নতি
নামঃ তারিখঃ
যুব ত্রাণ শিবির
(নিরীক্ষণ-তালিকা)
আজকের অবস্থাঃ
১। দপ্তর বাহকগণঃ
ক) অফিস বাহকদের তালিকা কি সম্পন্ন হয়েছে ?
খ) না হলে শূন্যস্থান কোনগুলি ?
গ) শূন্যস্থানগুলি পূরণ করতে কী করতে হবে ?
ঘ) দপ্তরবাহকগণ কি ক্যাম্পেই অবস্থান করছেন ?
২। অবস্থান/স্থানঃ
ক) বর্তমানেঃ
খ) গমন স্থানঃ
গ) নিকটস্থ সীমান্ত স্থানঃ
৩। নির্মাণঃ
ক) তাবুঃ আকারঃ
সংখ্যাঃ
খ) চালাঘর/ কুটিরঃ
১।আকারঃ
সংখ্যাঃ
২।সম্পন্ন হওয়া সংখ্যাঃ
৩।নির্মাণাধীনঃ
৪।কাজ এখনো শুরু হয় নিঃ
নির্মাণকার্য সম্পন্ন হওয়ার অনুমিত তারিখঃ
৫।সকল নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার তারিখঃ
৩।পানি সরবরাহঃ
সুপেয় পানির উৎস কী ?
ক) এটি কি যথেষ্ট ?
খ) যথেষ্ট না হলে কী করা হচ্ছে/ করণীয় কি ?
গোসল/স্নানের পানির উৎস কী?
ক)এটি কি যথেষ্ট ?
খ)………………।
———————————–
<003.180.565> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
যুব যোগদান কেন্দ্র
কেন্দ্রের নাম______
তারিখ______
১.যুবকের ক্রমিক নং–
ক.যোগদান
আগেরদিনে–
নতুন যোগদান–
মোটসংখ্যা–
খ.প্রস্থান
স্বাভাবিক শিবিরে____
উদ্বাস্তু শিবিরে____
গ.বাদ দিয়ে (ক-খ)
ব্যয়সমূহ
২.স্বাভাবিক শিবিরের পরিবহন খরচ Rs____
অন্যান্য ব্যয়সমূহ Rs_____
ব্যালেন্স শিট
আগেরদিনের হিশেব____
নতুনদিনের হিশেব____
মোট____
আজকের দিনের খরচের হিশেব:
___________________
কেন্দ্রের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (নিযুক্ত কর্মকর্তা)
কেন্দ্রেরর ভারপ্রাপ্ত(যোগদানকৃত কর্মকর্তা অথবা তার মনোনীত ব্যক্তি)
<003.181.566> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
১৩.০৬৭১ সালে বিকাল ৫.০০ ঘটিকায় রেস্ট হাউজে হাই পাওয়ার কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জহুর আহম্মেদ চৌধুরির নেতৃত্বে ৪ সদস্য নিয়ে কমিটি গঠিত হয়।
সদস্যরা হলেন-
১. মো.জে.এ চৌধুরি
২. এহ. হক
৩. শামসুজ্জোহা
৪. আবদুল কুদ্দুস মখন
পার্টির জেনালের মেক্রেটারি মো. মিজানুর রহমান চৌধুরি ইউথ ক্যাম্পাস প্রদর্শন করে। ত্রেন সংস্থা এ সভায় অংশগ্রহন করে এবং গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করে।
মো.তাহেরউদ্দিন ঠাকুর সভায় অংশগ্রহন করতে না পারায় হাই পাওয়ার্ড কমিটি বড় সমস্যার সম্মুখীন হয়। তার পরিবর্তে এম এন এ এস , এম পি এস সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলনেতার প্রতিনিধিত্ব করে “হাই পাওয়ার্ড কমিটি” এবংশেষ পর্যন্ত্র কমিটিতে মো। তালুকদার ঠাকুরের পরিবর্তে মো। জহুরুল কাইয়ুমকে প্রতিস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেয় । তালিকদার ঠাকুরের অন্নন্নুপস্থিতিতে পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি মো। এম।আর চৌধুরি (কুমিল্লা জেলা) অতিসত্ত্বর প্রতিস্থাপনের পুরুত্ব অনুধাবন করেন
মো. জহুরুল কাইয়ুম যিনি মো. তালুকদার ঠাকুনের পরিবর্তে প্রতিনিধিত্ব করেন এবং সমস্ত সদস্য সর্বসম্মতি জানান।
সভায় ঠি করা হয় মো. তাকিকদার ঠাকুরকের বদলি হবেন মো.জহুর কাইয়ুম এবং কমিটির অবদান থেকে মন্তব্য প্রদর্শন করবেন।
ঠিক করা হয় সব ইয়ুথ ক্যম্প ও বাংলাদেশের সকল লিবারেশান কাউন্সিলের অফিসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি প্রদর্শন করা হবে । এবং সেগুল প্রদান করবেন ত্রান ও পুনর্বাসন সংস্থার সদস্য শামসুজ্জোহার দ্বারা ।
<003.181.567> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
হাই পাওয়ার্ড কমটিকে বেঙ্গল লিবারেশান কাউন্সিল হিসাবে পুনঃনামকরন করা হয়। ইস্টার্ন জোনকে সুপারিশ করা কয় পার্তীর জেনারেল সেক্রেটারি মো. মিজানুর রহমান চৌধুরি দ্বারা। ৪.০৬.৭১ সালে সভাটিকে মুলতবী করা হয় বিকাল ৫.০০ পর্যন্ত এবং সেখানে শুধুমাত্র তিনজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন মোঃ জহুর আহম্মেদ চৌধুরি, আব্দুল কুদ্দুস এবং জহুরুল কাইয়ুম সেখানে ট্রাঞ্জিট রিলিফ ক্যাম্প এবং ইউথ ক্যাম্পাস্বে নিয়ন্ত্রক সহ আরো অনেক সমস্যা সম্পর্কিত আলোচনা করা হয়। ১৩.০৬.৭১ সালে জেনারেল সেক্রেটারি ও এই ব্যাপারে প্রতিবেদন জানান। সভাটি পুনরায় বিকাল ৫.০০ পর্যন্ত মুলতবী রাখা হয় ১৫.০৬৭১ সালে।
১৫.০৬৭১ সালে সভায় ৫ জন সদস্য উপস্থিত থাকেন । তারা হলেন – মোঃ জহুর আহম্মেদ চৌধুরি, মোঃ এন হক, মোঃ শামসুজ্জোহা , মোঃ মাখন এবং পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি মোঃ মিজানুর রহমান চৌধুরি । এবং সভাটি আরো সৌষটব মইন্ডিত হয়। সর্বসম্মতিক্রমে সভায় ইয়ুথ ক্যাম্প এবং ট্রানজিট রিলিফ ক্যামপের প্রয়োজনীয় শর্তগুলো আলোচনা করা হয় এবং পুনঃসমাধান করা হয়। একটি স্বাস্থ্য সংস্থা স্থাপন করা হয় বিশিষ্ট ডাক্তারদের দ্বারা স্বাস্থ বিভাগের সদস্যরাই হবে বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং এক্স অফিসিও সদস্য হিসাবে ।
ড. আবউ ইউসুফ ট্রেনিং কো অর্ডিনেশনের পরিচালক পুর্বলিখিত শর্ত গুলোর সাথে এগুলোর সংযোগ স্থাপন করেন।
ডাক্তাররা হলেন –
১. ডা. মোশারফ হোসেন এম.ব.বি.এস
২. ডা. এম এ মাক্ষন – ইয়ুথ ক্যাম্পের পরিচালক
৩. ডা. কাজী সিরাজ সৈন্যবাহিনীর স্বাস্থ সামরিক কর্মকর্তা।
মো. ফুজুল হক মনি এবং মো. এ.ব মৃধা ( ডেপুটি ডিরেকটর) একটি বিজ্ঞাপন পরিদপ্তর স্থাপন করেন। পুনরায় সমাধান করা হয়ে যে, সদস্য , প্রচার, প্রেস ই হবে বোর্ডের চেয়ারম্যান এক্স অফিসিও সদশ্য হিসাবে।
সভার সদস্য রা পূর্ব লিখিত শর্ত গুলো এবং মূলসুত্র দিয়ে একটি পত্র বের করেন সেটা প্রদান করা হয় মো। ইমরান ; জোনাল এডমিনিস্ট্রেশন; ইস্টার্ন জোন দ্বারা। ৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন প্রদান করা হয়।
এবং ৫০০০০ টাকা অনুমোদন করা হয় ত্রান ও পুনর্বাসন বিভাগের জন্য এবং ৫০০০ টাকা অনুমোদন করা হয় ঔষধ ও জরুরি বিভাগের জন্য
<003.181.568> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
নিম্নলিখিত ক্যাম্পগুলার জন্য যোগাযোগ কর্মকর্তা কে.আলম এম.এন.এ এর মাধ্যমে পরিবহনের স্থায়ী সমাধান করতে হবেঃ
১। কাঁঠালিয়া ২। বক্সনগর ৩। হাতিমারা ৪। মালাগার
জনাব জহুরুল কায়ূমকে সংবাদ, প্রকাশনা এবং যুবকদের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা হিসাবে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দিতে হবে।
করিমগঞ্জ এবং শিলচর সেক্টরের জন্য মেজিস্ট্রেট কর্তৃক একজন প্রথম শ্রেণী মর্যাদার প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে।
জনাব এইচ.টি ইমামকে এই জন্য একটি নাম প্রস্তাব করতে হবে স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিষদের কাছে।
স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিষদ এর একটি প্রতিলিপি যোগাযোগ কর্মকর্তা জনাব ফরিদ গাজী, এম.এন.এ কে দেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছে।
তুরা এবং গারুহিল সেক্টরের যোগাযোগ কর্মকর্তা জনাব রফিকুদ্দিন ভূইয়ার কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পরে তুরা(ময়মনসিংহ বর্ডার) এর জন্য একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে।
যুবকদের থাকার জন্য নিম্নলিখিত জিনিষগুলার ভর্তুকি দিতে হবেঃ
১। মাথা প্রতি ০.২৫ পয়সা করে খাবার জন্য দিতে হবে।
২। জনপ্রতি একটা লুঙ্গি দিতে হবে।
৩। প্রয়োজন অনুযায়ী বিছানা,বালিশ এবং চাদর দিতে হবে।
জনাব এম.এ.ওয়াহাব এম.পি.এ এর আবেদন অনুযায়ী জনাব শামসুজ্জুহাকে, সদস্য ত্রাণ এবং পুনর্বাসন উচ্চ রাজনৈতিক কমিটি দ্বারা পরিচালিত করতে হবে।
সেইসাথে যারা ত্রানের জন্য আবেদন করেছে যেমনঃ আওয়ামীলীগ কর্মী, ছাত্র, যুবক এবং ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা সকলের জন্য বিশ্রাম এবং অন্য ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য সব ধরণের সাহায্য নিশ্চিত করতে হবে।
দলের সাধারণ সম্পাদক জনাব মিজানুর রহমান চৌধুরী যিনি বিরতিহীন ভাবে দেশের স্বাধীনতার জন্য পূর্ব-পশ্চিমের বিভিন্ন সেক্টরে দিনের পর দিন পরিশ্রম করে গেছেন তাকে ধন্যবাদের মাধ্যমে সভা সমাপ্তি করা হয়।
(জনাব জহুর আহমেদ চৌধুরী)
আহ্বায়ক
উচ্চ ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক কমিটি সভা
স্মারকলিপি নং…… তারিখ….
অনুলিপি পাঠানো হলঃ
১।, প্রশাসক, পূর্বাঞ্চল, বাংলাদেশ সরকার।
২। সদস্য, সংবাদ,প্রকাশনা এবং যুবকদের প্রশিক্ষক।
৩। সদস্য, ত্রাণ এবং পূনর্বাসন
(জহুর আহমেদ চৌধুরী)
<003.181.569> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
গোপনীয়
১০ জুন, ১৯৭১, পূর্ববাংলার শক্তিশালী রাজনৈতিক কমিটির সভা এন.পি.সি.রেস্ট হাউজ কুঞ্জবন, আগতলাতে অনুষ্ঠিত হয়।এই সভাতে নিম্নোক্ত সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।জনাব জহুর আহমেদ চৌধুরী,এমপিএ, উপস্থিতিতে ব্যবসায়িক লেনদেন বিষয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
উপস্থিত সদস্যবৃন্দ
১.জনাব জহুর আহমেদ চৌধুরী,এমপিএ
২.জনাব নুরুল হক,এম.এন.এ
৩.জনাব এ.এস.এম শামসুজ্জোহা,এম.এন.এ
৪.জনাব তাহের উদ্দিন ঠাকুর,এম.এন.এ
৫.জনাব মো.ইলিয়াস(আমন্ত্রিত)
৬.জনাব আব্দুল কাদের মোক্তার,(নিরীক্ষক)
অনুবন্ধে জনাব তাহের উদ্দিন ঠাকুর এই শক্তিশালী রাজনৈতিক কমিটির আহ্বায়ক হিশেবে জনাব জহুর আহমেদকে উদ্দেশ্যে একটি প্রস্তাবনা রাখেন।জনাব নুরুলমহক সেই প্রস্তাবনাটি সর্বসম্মতভাবে প্রকাশ করেন,
ব্যবসায়িক আদানপ্রদান :-
১.জনাব ফজলুল হক মনি অনুমোদিত পূর্ববাংলার এই কমিটিতে সিলেট,কুমিল্লা, নোয়াখালী,চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং ঢাকা জেলার নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে আলোচনা করে তাদের সুপারিশকৃত প্রতিনিধিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
২.জনাব নুরুল হক,এম.এন.এ এবং তাহের উদ্দিন,এম.এন.এ ঘোষণা করেন অতিসত্বর মন্ত্রীসভার সাথে যোগাযোগ করে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই কমিটির অনুমোদন নিশ্চিত করা।তাদের অনুরোধে অর্জিত অনুমোদনে পরিচালিত মন্ত্রীসভা এবং জরুরি অনুমোদিত ব্যয় প্রায় দশ লক্ষ রুপি।এম.পি.এ এবং এম.এন. এ -তাঁদের যৌথ আলোচনায় মন্ত্রীসভায় এটা অনুমোদিত হয়েছিল এবং পূর্ববাংলার কার্যনির্বাহীদের আনুপাতিক প্রক্রিয়া এরসাথে সংযুক্ত হয়েছিল।
৩.ঘোষিত ১০,০০,০০০ রুপি, প্রতিটা যুব ত্রাণ কেন্দ্রের জন্য ১,০০,০০০ বরাদ্দকৃত।কমিটির সেক্রেটারি কমিটির অনুমতিক্রমে বাজেট তৈরির নির্দেশ দিবে।
৪.ডাইরেক্টর,জনাব এম আলম যুব ত্রাণ কেন্দ্রেগুলোকে কোঅরডিনেট করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।ডাইরেক্টররা তাঁদের উদ্দেশ্য নিম্নোক্ত ভদ্রমহোদয়দের সঙ্গে মিলে তৈরি করবেন।তাঁরা হলেন-
১.ডা.আবু ইউসুফ-ডাইরেক্টর,সমন্বয়ক,প্ল্যানিং এন্ড প্রোগ্রামিং
২.প্রফেসর নুরুল ইসলাম,এম.এন. এ, ডাইরেক্টর, প্রশাসন
<003.181.570>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৩ মি. মুজাফফাই আহমেদ এম.পি.এ -পরিচালক , আন্দোলন ও আতিথেয়তা
৪ মি. খালেদ মোহাম্মদ আলী এম.এন.এ -পরিচালক ,প্রেরণা
৫ যুবকদের নিম্নোক্ত উপায়ে সাজানো হবেঃ
বিভাগ | যুব ক্যম্প | যুব ক্যম্প প্রস্তাবিত জায়গা |
(ক) চিটাগং ও চিটাগং হিল ট্র্যাক | হরিনা |
১. শ্রীপুর অথবা ২. ঋষিমুখ |
(খ) নোয়াখালি | ছোটাখোলা | |
(গ) কুমিল্লা |
১. কাঠালিয়া ২.হাতিমারা ৩.বক্সনগর ৪. মতিনগর |
|
(ঘ) কুমিল্লা ও ঢাকা | কোনাবার | |
(ঙ ) সিলেট |
১. আশ্রমবাড়ি ২. কালিশহর খোয়াই |
খোয়াই |
কুমিল্লা ও ঢাকার জন্য আগরতলা ট্রানজিট ক্যম্প |
(ক) জয়নগর (খ) ছাড়িপাড়া (গ) কংগ্রেস ভবন (ঘ) নারসিংহার |
৬. ইয়ুথ ক্যম্পের জন্য সকল প্রশাসনিক কমিটি নিম্নোক্ত অফিসার দিয়ে গঠিত হবে ।
(১) ক্যম্প এর চিফ
(২) ক্যম্প এর ডেপুটি চিফ
(৩) প্রশাসনিক কর্মকর্তা
(৪) রাজনৈতিক প্রশিক্ষক
(৫) ছাত্র পরামর্শক
(৬) শারীরিক প্রশিক্ষন কর্মকর্তা
(৭) চিকিৎসা কর্মকর্তা
প্রয়োজন এর সময় প্রশাসনিক কমিটি নিয়োগ কমিটি হিসেবেও কাজ করবে । ইয়ুথ ক্যম্পের ডিরেক্টর কমিটির লোকেদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য নির্ধারণ করে দেবেন ।কমিটির লোকেদের কমিটিই নিয়োগ দেবে । কমিটির মেম্বাররা ক্যম্পে থাকবে এবং সকল সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অধিকার ভোগ করবে ।
৭. রাজনৈতিক কমিটির প্রতিটি মেম্বার এর জন্য নির্দিষ্ট কাজ করা বরাদ্দ করা হবে । এগুলো নিচে দেওয়া হলঃ
<003.181.571>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বিভাগ | সদস্যদের নাম |
১. ত্রাণ, পুনর্বাসন ও স্বাস্থ্য সেবা | মি. এ.কে.এম শামসুজ্জোহা, এম.এন.এ |
২. তথ্য , প্রকাশনা ও বিতরন |
মি. টি.ইউ ঠাকুর এম. এন.এ মি. ডি .এফ গাজি এম.এন.এ |
৩. প্রশাসনিক | টি.ইউ ঠাকুর এম. এন.এ |
৪. প্রশিক্ষন ও প্রোগ্রামিং (ইয়ুথ ক্যম্প) | মি. এম .আর সিদ্দিকি এম.এন.এ |
৫. অর্থায়ন | মি. নুরুল হক এম.এন.এ |
৬. যুদ্ব প্রচেষ্টা | |
৭. ছাত্র বিষয়ক | মি. জহুর আহমেদ চৌধুরী .এম.পি.এ |
৮. রাজনীতি সমস্যা |
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
পূর্বাঞ্চলীয় জোনের আওতাধীন বেলোনিয়ায় রাজনৈতিক উচ্চপরিষদ গঠন সংক্রান্ত চিঠি | বাংলাদেশ সরকার , লিবারেসন কাউন্সিল, পূর্বাঞ্চলীয় জোন | ১৮ জুন , ১৯৭১ |
বরাবর
জনাব জহুর আহমেদ চৌধুরী, এমপি
আহবায়ক, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাজনৈতিক কমিটি,
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ দরকার।
বিষয়ঃ বেলোনিয়ার জন্য রাজনৈতিক উপকমিটি গঠন প্রসঙ্গে।
জনাব,
বিগত ০৩/০৬/৭১ খ্রিঃ তারিখের স্মারক নং- শুন্য মোতাবেক, আপনাকে আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, আপনার নির্দেশনা অনুযায়ী বেলোনিয়ায় বসবাসকারী এমপিএ, এএমএনএ, আওয়ামীলীগ নেতা ও ছাত্র প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে ১০/০৬/৭১ খ্রিঃ তারিখে অনুষ্ঠিত এক সভায় বেলনিয়া উপবিভাগের জন্য রাজনৈতিক উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। সভায় নিম্নোক্ত ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন-
১। জনাব খাজা আহমেদ, এমএনএ, সভাপতি
২। জনাব শহীদ উদ্দিন ইস্কান্দর, এমপিএ -সম্পাদক
৩। জনাব এ, বি, এম, তালেব আলি, এমপিএ– সদস্য
৪। জনাব মোঃ হানিফ, এমএনএ —- সদস্য
৫। জনাব মোঃ এ, এফ, কে, সফদার, এমপিএ — সদস্য
৬। জনাব মোঃ সিরাজুল ইসলাম, এমপিএ—- সদস্য
৭। জনাব মোঃ ইউনুস ——– সদস্য
৮। জনাব মোঃ আব্দুল মালেক ——– সদস্য
৯। জনাব মোঃ আমিনুল করিম (খোকা) —- সদস্য
১০। জনাব মোঃ আজিজুল হক —— সদস্য
১১। জনাব মোঃ আবু বকর —— ছাত্র প্রতিনিধি
১২। জনাব মোঃ মোস্তফা হোসেন —- শ্রমিক প্রতিনিধি
আপনার সদয় অবগতির জন্য জানানো হলো।
ধন্যবাদান্তে
আপনার একান্ত অনুগত
খাজা আহমেদ
এমএনএ
১৮/০৬/৭১ খ্রিঃ
——————-
<003.183.573>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব ত্রাণ শিবির সম্পর্কে আরেকটি প্রতিবেদন |
বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কাউন্সিল পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
২৪ জুন , ১৯৭১ |
যুব ত্রাণ শিবির
সাধারণ শরণার্থী ত্রাণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই অঞ্চলে সীমান্তের প্রায় পাঁচ মাইল অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রবেশ স্থানে (তালিকা সংযুক্ত) ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কয়েকটি যুব ত্রাণ শিবির চালু করেছে। যুবা উদ্বাস্তুদের জন্য আলাদা শিবির বলতে বুঝাবে যেঃ
(ক) অন্যদের থেকে যুবক শরণার্থীদের আলাদা রাখা।
(খ) বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে যুবকদের উৎসাহ প্রদানের জন্য পর্যাপ্ত অভ্যর্থনা ও বিশ্রামের ব্যবস্থা করা।
(গ) যুব প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের জন্য শিবির হিসেবে ব্যবহার করা।
(ঘ) প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের পূর্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক শুদ্ধতা যাচাইকরণ।
একটি আলাদা যুব প্রশিক্ষণ যাচাইকরণ ভারত সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। কারণ ভারতীয় ভূখন্ডের বেশ অভ্যন্তরে দশটি যুব শিবির নির্মাণ করা হবে। এ শিবির নির্মাণ করা হবে এই উদ্দেশ্যেঃ
(ক) বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীতে নিয়োগের পূর্বে প্রাথমিক অস্ত্র অনুশীলন।
(খ) বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীতে যাদের নিয়োগ দেওয়া হবে না, তাদের জন্য ভিত্তিমূলক কাজের প্রশিক্ষণ।
এ পর্যন্ত ১৪৫০ জন প্রশিক্ষণার্থীর বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আরো ১০,০০০ তরুণ থাকার জন্য শিবির নির্মাণ করা হচ্ছে।
আমরা এখন অনুধাবন করছি যে, যুব ত্রাণ শিবিরগুলি তরুণ দ্বারা পরিপূর্ণ। এখন তাদের থাকার জন্য বৃহত্তর যুব ত্রাণ শিবির নির্মাণাধীন রয়েছে।
যেসব কারণে সরকার আলাদা যুব শিবির সরকার নির্মাণ করেছে, স্বাধীনতা সংগ্রমের দৃষ্টিকোণ থেকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের বেলায়ও তা সমানভাবে কার্যকর। আমরা, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের মুক্তি বাহিনীর তরফ থেকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে বর্তমান যুব শিবিরগুলি চালু রাখার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।
স্বাক্ষরিত/-
———–
————-
<003.183.574>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
যুব শিবির তারিখঃ ২২/০৬/৭১ খ্রিঃ
(শিবির প্রধান সহ)
জেলার অভ্যর্থনা শিবির | শিবিরের স্থান (প্রস্তাবিত স্থান) | শিবির প্রধান |
(ক) চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম |
(১) হরিণা (২) বরিষামুখের শ্রীনগর (৩) উদয়পুর (পল্টন) |
এম. এ. হান্নান খাইরুদ্দিন আহমেদ, এমপিএ; (ওবায়দুল্লাহ মজুমদার, এমএনএ); ক্যাপ্টেন এস. আলি, এমপিএ। |
(খ) নোয়াখালী |
(১) ছোটাখোলা (২) রাজনগর |
খাজা আহমেদ, এমএনএ এ হানিফ, এমএনএ। |
(গ) কুমিল্লা |
(১) কালিহালিয়া (বড়মুড়া) (২) হাতিমারা(কমলনগর) (৩) বুনাগড়(চায়মারা) (৪) মেলাগড় |
জালাল আহমেদ, এমপিএ; এম. এ. রশীদ, এমপিএ; অধ্যাপক এ. রউফ ক্যাপটেন শওকত। |
(ঘ) সিলেট |
(১) আশ্রমবাড়ি (খোওয়াই) (২) কৈলাশহর (৩) ধর্মনগর (৪) রাথারকান্দি (করিমগঞ্জ) |
মুস্তফা শহীদ, এমপিএ আজিজুর রহমান, এমপিএ মানিক চৌধুরী, এমএনএ তৈমুজ আলী, এমপিএ জনাব আব্দুল মালেক |
(ঙ) ঢাকা ও কুমিল্লার জন্য আগরতলায় ট্রানজিট শিবির |
(১) কংগ্রেস ভবন (ট্রানজিট) (২) নরসিংহর (৩) বাল্লালি (৪) মোহনপুর (৫) কমলপুর |
ফজলুর রহমান, এমএনএ; দেওয়ান এ. আব্বাস, এমএনএ; গাজী ফজলুর রহমান, এমপিএ; শফিরউদ্দিন, এমপিএ; জনাব আলতাফুর রহমান, এমপিএ। |
বাংলাদেশ মুক্তি কাউন্সিল, পূর্বাঞ্চল– কর্তৃক অনুমোদিত
১) উদয়পুর, (১১) জনাব আবদুল্লাহ হারুন, এমপিএ
২) শিলচর (পার্বত্য চট্টগ্রাম), জনাব সাইদুর রহমান
<003.183.575> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
খ)নিয়মিত ট্রেনিং শিবির
অঞ্চল | প্রস্তাবিত ক্যাম্পের সংখ্যা | বিদ্যমান ক্যাম্পের সংখ্যা | ক্যাম্পের প্রধান / উপপ্রধান |
১. গোকুলনগর (বর্তমানে সার্বিক তত্বাবধানে আছেন জনাব শামসুল হক, এমপিএ) |
৪ | ২ |
ক. শামসুল হক এমপিএ / ওয়াইসুদ্দিন
|
পদ্মানগর | ৩/৬ | শুন্য |
খ. দেওয়ান আব্দুল আব্বাস, এমএনএ হামিদুর রহমান
|
প্রতিটি শিবিরের শিবির ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠিত হবে:
১. শিবির প্রধান নিয়োগ পাবেন স্বাধীনতা কাউন্সিল কর্তৃক
২. সহকারী শিবির প্রধান নিয়োগ পাবেন স্বাধীনতা কাউন্সিল কর্তৃক
৩. পরিচালক, প্রশাসনের মনোনয়নে শিবির পরিদর্শক নিয়োগ পাবেন শিবির প্রধান কর্তৃক
৪. রাজনৈতিক প্রশিক্ষক নিয়োগ পাবেন পরিচালক, প্রশিক্ষণ সমন্বয় কর্তৃক
৫. শারীরিক প্রশিক্ষক নিয়োগ পাবেন প্রশিক্ষণ সমন্বয় কর্তৃক
৬. মেডিকেল কর্মকর্তা নিয়োগ পাবেন সহকারী পরিচালক (স্বাস্থ্য) কর্তৃক
৭. শিবির প্রশাসক (যেখানো নিযোগ দেওয়া হবে) স্থানীয় সরকার কর্তৃক
৮. অস্ত্র প্রশিক্ষক (যেখানে নিয়োগ হবে) স্থানীয় সরকার কতৃক
স্বাক্ষরিত/-………………..
………………………………
<003.184.576> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
পূর্বাঞ্চলীয় জোনের আওতাধীণ যুব শিবির পরিচালনা সংক্রান্ত সভার বিবরণী
|
বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কাউন্সিল, পূর্বাঞ্চলীয় জোন
|
২৭ জুন, ১৯৭১
|
২৭ জুন, ১৯৭১ পূ্র্বাঞ্চলীয় জোন যুব শিবিরের সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের নিম্নলিখিত উল্লেখযোগ্য অংশ আপনার অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠানো হলো:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রবর্তিত আমাদের অর্থনৈতিক-সংগ্রাম এর মৌলিক যুদ্ধকৌশল সংক্রান্ত মূল প্রশিক্ষন পরিকল্পনার পরিস্কার ব্যখ্যা দিয়েছেন স্টুডেন্ট অ্যাকশন কমিটির জনাব এ.রব । তার প্রস্তাবের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে যে আমাদের সার্বিক যুদ্ধ কৌশলের প্রশ্নগুলো আরও উচ্চ পর্যায়ে তুলে ধরতে এগিয়ে আসবে লিবারেশন কাউন্সিল, পূর্বাঞ্চলীয় জোন। আমাদের যুদ্ধ পরিকল্পনা প্রশ্নে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব থাকবে নিম্নলিখিত দিকগুলোতে:
(ক) আমাদের নিজস্ব নেতৃত্বে, নিজেদের যুদ্ধ কৌশল থাকা উচিত এবং অন্য কোনো জাতির নেতৃত্বে নয়, তারা আমাদের সাহায্য করুক বা না করুক।
(খ) আমাদের সার্বিক যুদ্ধ কৌশলের জন্য যে কোনো প্রকার সাহায্য ও সহযোগিতা পূর্ণ কৃতজ্ঞচিত্তে নেওয়া উচিত আমাদের তবে সাহায্যকারীর নিয়ন্ত্রণে নয় ।
(গ) সার্বিক যুদ্ধ কৌশলের একটি বড় অংশ হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতাপ্রেমী সকল মানুষকে নিয়মিত তথ্য জানানো, যাতে স্ব স্ব ক্ষেত্রে তাদের পূর্ণ অংশগ্রহণ থাকে। সার্বিক কৌশলের জনপ্রিয় অংশগুলো জনগনের জানার জন্য প্রকাশ করতে হবে।
(ঘ) আমাদের যুদ্ধ কৌশণের একটি অপরিহার্য ব্যপার অবশ্য হওয়া উচিত আমাদের সামরিক বাহিনীর ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রন বাংলাদেশ সরকারের অধীনে নিশ্চিত করা । তাই আমাদের সামরিক বাহিনীর জন্য যে কোনো ধরণের সহায়তা, যেমন সেক্টর কমান্ডারদের সহায়তা হবে বাংলাদেশ বাহিনীর নেতৃত্বের মাধ্যমে করতে হবে। অন্যথায় সহায়তা সেক্টর কমান্ডারদের সরাসরি দেওয়া হলে নিজস্ব বাহিনী ও সেনাপতি গড়ে ওঠার ধারা সৃষ্টি হবে।
(ঙ) আমাদের সেনাবাহিনীর ট্রেনিংয়ের ক্ষেত্রেও একই ধরণের ঐক্যবদ্ধ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে হবে। সেটা শুধু ওপরে উল্লেখিত কারণেই নয়, আমাদের সামরিক বাহিনীকে ক্ষতিগস্থ করতে পারে, এমন অনাকাঙ্ক্ষিত অনুপ্রবেশ ঠেকাতেও।
(মো শফি কাদেরি)
অগ্রগতি কর্মকর্তা
যুব শিবির
…………………………………………..
<003.185.577> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
পূর্বাঞ্চলীয় লিবারেশন জোনে জোন প্রশাসন বাস্তবায়ন স্কীম (বাজেট) সম্পর্কে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে লিখিত জোন কর্মকর্তার চিঠি |
মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ পূর্বাঞ্চলীয় জোন
|
০৪ জুন, ১৯৭১
|
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
মেমো নং: : III-এ, ৫/৭১, সি/২২ তারিখ: ০৪.০৭.১৯৭১
প্রতি: জনাব কে আর জারনান
সচিব,
অর্থ মন্ত্রণালয়,
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
বিষয়: পূর্বাঞ্চলীয় বাজেটে আঞ্চলিক প্রশাসনিক প্রকল্পের বাস্তবায়ন ।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মেমো নং জিএ/১৪৩(৪), তারিখ ২৮.৫.১৯৭১ অনুযায়ী আঞ্চলিক প্রশাসকের একটি কার্যালয় তৈরি করা হয়েছে। এই কার্যালয় কাজ শুরু করেছে গুটিকয় কর্মচারী নিয়ে, যেটার অনুমোদন দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। অর্থ মন্ত্রী বিভিন্ন জনেরর দায়িত্বে ২,০৮,৪৭৫/- রূপি ব্যয় সম্বলিত একটি সম্ভাব্য বাজেটের অনুমোদনও দিয়েছেন। বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারী চাকুরিজীবিদের পারিশ্রমিকের ব্যপারে মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্তের ফলে বাজেটের উর্ধ্বমুখী সংশোধন প্রয়োজন রয়েছে । কার্যালয়ের জন্য একটি সংশোধিত বাজেট তৈরি করা হয়েছে যেখানে ব্যয় দেখানো হচ্ছে ২,৪২,১২১/-। ডি.ও. নং এলএস/১৩৪, তারিখ ২০.৬.১৯৭১ এর অধীনে এই সংধেশাধিত বাজেটগুলো অর্থ সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে ।
২) এদিকে, পূর্বাঞ্চলীয় স্বাধীনতা কাউন্সিলের সদস্য, অর্থ, জনাব এম আর সিদ্দিকি অনেকগুলো নতুন নিয়োগ দিয়েছেন। এই স্টাফদের এখন আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে দেখাতে হবে এবং পারিশ্রমিক দিতে হবে। একইভাবে, আমাদের কাগজপত্র ও পরিকল্পনার গোপনীয়তা বজায় রাখতে একটি গোপনীয় শাখা থাকা এখন আবশ্য জরুরী হয়ে পড়েছে। এখনকার কার্যালয় পুরোপুরি জনসাধারণের সামনে উন্মোচিত থাকায় এটি একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়েছে। গোপনীয় শাখায় দুজন লিপিকার(Stenographer) প্রয়োজন হবে, যারা কাগজপত্র রক্ষণাবেক্ষন করবেন এবং সহকারী হিসেবে কাজ চালাবেন।
৩) যুব শিবির এলাকায় বেশ কিছু নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, আরও অনেক প্রস্তাব করা হয়েছে। এই স্টাফদের আঞ্চলিক প্রশাসকের মাধ্যমে নেওয়া হবে নাকি যুব শিবিরের অধিকারে, সেটি এখনও ঠিক করা হয়নি। যৌক্তিকভাবে তারা যুব শিবির পরিচালনার অংশ হওয়া উচিত, এখান থেকেই স্টাফদের অনুমোদন ও বাজেট বরাদ্দ হওয়া উচিত। আপাতত আঞ্চলিক প্রশাসনের শক্তি হিসেবে দেখানো হচ্ছে তাদের। যুব শিবিরের বিপরীতে স্বাধীনতা কাউন্সিল স্টাফ নিয়োগ দিচ্ছে, এটির বিস্তারিত এখনও পাওয়া যাচ্ছে না। যুবশিবিরের
<003.185.578>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
পরিচালক (প্রশাসন) কর্মিগণের একটি তালিকা হেডকোয়ার্টারে পাঠিয়েছেন। নির্ধারিত পদে অধিষ্ঠ হওয়ার আগে প্রথমত: অনুমোদনের প্রয়োজন। দরকারে হেডকোয়ার্টার যুবশিবিরের জন্য পৃথক বাজেট প্রণয়ন করতে পারে। বর্তমান প্রয়োজন মেটানোর লক্ষ্যে আঞ্চলিক প্রশাসনের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করা যেতে পারে।
৪) অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য সর্বনিম্ন খরচে একটি নকশা এর মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। নকশাটি এখানে পাঠানো হলো। এখানে বাৎসরিক এক লাখ রুপি খরচের পরিকল্পনা করা হয়েছে (কর্মিগণের জন্য ৯৬,০০০ রুপি, আকস্মিক প্রয়োজনের জন্য ৪,০০০ রুপি)
৫) স্বাস্থ্যবিষয়ক তিনজন উপ-পরিচালক নিয়োগ দিয়েছেন পূর্বাঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধ সংসদ। তাঁদের একজনকে যুবশিবিরে পাঠানো হয়েছে, একজন চিফ অফ স্টাফের সঙ্গে কাজ করছেন এবং আঞ্চলিক প্রশাসন, স্থানীয় স্বাস্থ্যঅধিদপ্তর ও চিফ অফ স্টাফের সমন্বয়কারকের দায়িত্ব পালন করছে। তৃতীয়জন হাসপাতালের রোগী দের দেখাশোনার পাশাপাশি নানাবিধ কাজ সামলাচ্ছেন। এই তিনটি পদকে অনুমোদন দিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় বাজেট ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৬) উপ-অঞ্চল নির্মাণ ও সেসব অঞ্চলে কর্মকর্তা নিয়োগের মাধ্যমে সরকারি পরিকল্পনার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৪ (চার) উপ-অঞ্চল কর্মকর্তাকে এর মধ্যে খোয়াই , কাইলাশহর, সোনামুড়া এবং বেলোনিয়ায় প্রেরণ করা হয়েছে। খোয়াই এবং কাইলাশহরের কর্মকর্তাগণ এরই মধ্যে প্রবল বিক্রমে কাজ শুরু করেছেন, এবং অপর দু’জন মাত্রই পৌঁছেছেন। এই উপ-আঞ্চলিক কর্মকর্তাগণকে তাদের নিজস্ব মালপত্র, থাকার জায়গা ইত্যাদি সরবরাহ করতে হবে। এই খরচগুলো অবশ্যই ন্যুনতম হতে হবে। উপ-আঞ্চলিক কর্মকর্তাগণকে স্থানীয়ভাবে কর্মকর্তার আবাসন, আসবাব, টাইপ মেশিন ইত্যাদি বিনামূল্যে সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। উপ-আঞ্চলিক কর্মকর্তাগণের বাজেট যা না হলেই নয় ধরা হবে।
৭) বর্তমানে আমরা পরিবহণ মাধ্যমগুলোকে উদ্ধার করে তাদের একটি সর্বজনীন স্থানে নিয়ে আসতে চাইছি। এর বাস্তবায়নের জন্য আমাদের একটি পরিবহণ অধিদপ্তরের প্রয়োজন পড়বে, সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দ। সেভাবে বিভিন্ন প্রস্তাবনা প্রণয়ন হয়েছে।
৮) এখন পর্যন্ত কর্মকর্তা এবং কর্মিগণের টি.এ. এবং ডি.এ.র জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এজন্য নির্দিস্ট অর্থসংস্থানের প্রয়োজন।
৯) জাতীয় এবং প্রাদেশিক সংসদের সদস্যগণ বর্তমানে এপ্রিল’১৯৭১ হতে মাসিক ১৫০ রুপি ভাতা পাচ্ছেন। এই ভাতাব্যবস্থা পূর্বাঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধ সংসদের সিদ্ধান্ত। আমাকে বলা হয়েছে এই ব্যাপারে মন্ত্রীসভা একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে । এ লক্ষ্যে পরিবর্তিত বাজেট প্রস্তাবনায় ৩ লাখ রুপি সরবরাহ করা হয়েছে।
(এইচ.টি.ইমাম)
আঞ্চলিক প্রশাসক
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পূর্ব অঞ্চল।
———————
<003.185.579>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
মেমো নং তারিখ:
জনাব এম নুরুল কাদের, সেক্রেটারি, জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট-এর কাছে প্রতিলিপি পাঠানো হলো
(এইচ.টি.ইমাম)
আঞ্চলিক প্রশাসক
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পূর্ব অঞ্চল।
পূর্ব অঞ্চলের জন্য বাজেটের সারাংশঃ
আনুমানিক ব্যয় বরাদ্দ
|
||
মৌলিক: | ||
১. | পূর্ব অঞ্চলের আঞ্চলিক দপ্তরের জন্য নির্ধারণকৃত বাজেট, অর্থমন্ত্রি কর্তৃক নির্ধারিত (সংযোজনী-১) | ২,০৮,৪৭৫/০০ রুপি |
২. | খরচের ক্রমোন্নত বিভাগগুলোর জন্য আনুষঙ্গিক বাজেট, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত এবং অর্থমন্ত্রির নির্দেশ মোতাবেক (সংযোজনী-১)) | ৩৩,৬৪৬/০০ রুপি |
মোট সংশোধিত বরাদ্দ | ২,৪২,১২১/০০ রুপি | |
আনুষঙ্গিক: | ||
৩. | আঞ্চলিক দপ্তরের অতিরিক্ত পদসমূহের জন্য আনুষঙ্গিক বাজেট (সংযোজনী-২) | ৫১,০০০/০০ রুপি |
৪. | উপ-আঞ্চলিক দপ্তরের অতিরিক্ত পদসমূহের জন্য আনুষঙ্গিক বাজেট (সংযোজনী-৩) |
২,৪০,০০০/০০ রুপি
|
কর্মচারি বৃন্দের টি.এ-ডি.এ.’র জন্য আনুষঙ্গিক বাজেট (সংযোজনী-৪) | ১৭,০০০/০০ রুপি | |
৩,০৮,০০০/০০ রুপি | ||
৬. | এমএনএ এবং এমপিএ বরাদ্দের জন্য আনুষঙ্গিক বাজেট(সংযোজনী-৫) | ৩,০০,০০০/০০ রুপি |
৭. | আঞ্চলিক মুক্তিযুদ্ধ সংসদের আনুষঙ্গিক বাজেট (সংযোজনী-৬) | ৪০,২০০/০০ রুপি |
৮. | যুবশিবির অধিদপ্তরে আনুষঙ্গিক বাজেট (সংযোজনী-৭) | ৬৫,২০০/০০ রুপি |
৯. | সরকারি চাকুরিজীবিদের জীবিকার জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট (সংযোজনী-৮) | ৫০,০০,০০০/০০ রুপি |
<003.185.580>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
১০. |
পরিচালক দপ্তর এবং পরিবহণের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট (সংযোজনী ৯)
|
১, ৪৪, ৪০০/০০ রুপি |
মোট অতিরিক্ত অনুদান | ৫৫,৪৯,১২১/০০ রুপি | |
২,৪২,১২১/০০ রুপি | ||
১. | অর্থমন্ত্রীরর অনুমোদন অনুযায়ী সংশোধিত বরাদ্দ বাজেট- |
……………….. রুপি
|
২. | সম্পূরক বাজেট |
৩,৮০,০০০/০০ ……………… রুপি |
৩. | অতিরিক্ত অনুদান | ৫৫,৪৯, ৮০০/০০ |
৪. | অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জনিত কর্মপরিকল্পনার জন্য সম্পূরক বাজেট |
১, ০০,০০০/০০
|
মোট প্রাক্কলিত ব্যয় | ৬১,৯৯,৯২১/০০ |
সংযোজনী–১
বাংলাদেশের আঞ্চলিক অফিস পূর্বাঞ্চলের (সদর দপ্তর) জন্য ১৯৭১-১৯৭২ সালের সংশোধিত বরাদ্দ বাজেট।
(মে ‘৭১ থেকে এইপ্রিল ‘৭২)
ক্রমিক নাম্বার | মূল ব্যয় | সম্ভাব্য বরাদ্দকৃত পরিমাণ |
১ | ২ | ৩ |
সাধারণ | ||
১ | (ক) অফিসার এবং কর্মচারীদের বেতন | ৯৭,২৪৬/০০ রুপি |
(খ) অফিস বিল্ডিংয়ের ভাড়া # ৪০০.০০ রুপি প্রতি মাসে। |
৪,৮০০/০০ রুপি | |
(গ) অফিস বিল্ডিংয়ের বিদ্যুৎ বিল #৭৫.০০ রুপি প্রতি মাসে |
৯০০/০০ রুপি | |
(ঘ) টেলিফোন বিল বাবদ #১২৫.০০ রুপি প্রতি মাসে |
১৫০০/০০ রুপি | |
(ঙ) অফিসের ফার্নিচার বাবদ ব্যয় | ১০,০০০/০০ রুপি | |
(চ) স্টেনসিল কাগজ এবং প্রতিলিপিকরণ কাগজ সহ অফিসের অন্যান্য সম্ভাব্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী | ১০,০০০/০০ রুপি | |
২. | পরিবহণ | |
(ক) সাতটি যানবাহনের জন্য পেট্রোল এবং মেশিন অয়েল ক্রয় বাবদ #১৭৫.০০রুপি প্রতি দিন। |
৬৩,৮৭৫/০০ রুপি | |
(খ) রক্ষণাবেক্ষণ এবং সার্ভিসিং বাবদ #৫০০ রুপি প্রতি মাসে। |
৬,০০০/০০ রুপি |
<003.185.581> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(গ) গ্যারেজ / ওয়ার্কশপ ভাড়া …১৮০০/০০ রুপি
@ ১৫০/০০ রুপি প্রতিমাসে
(ঘ) সরকারী যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ও বীমা … ৩৬০০/০০ রুপি
@ প্রতিটি যান ৩০.০০ রুপি প্রতিমাসে (১০০ টি যান). ১০৭৬৭৫/০০ রুপি
২ বিবিধ
(ক) সরকারি সম্পদ ও সরঞ্জামাদির চলাচল … ১০০০০/০০ রুপি
১০.০০ রুপির ব্লক প্রভিশন … ১০,০০০/০০ রুপি
সর্বমোট :……২,৪২,১২১ রুপি
(দুই লক্ষ বেয়াল্লিশ হাজার একশো একুশ রুপি মাত্র)
পরিশিষ্ট-II
আঞ্চলিক দপ্তর সমুহে অতিরিক্ত পদের জন্য পরিপুরক বাজেট
পদের নাম অনুমিত খরচ
১)সহকারী অর্থ সচিব,@ ৫০০ রুপি (একটি পোস্ট) ৬.০০/০০ রুপি
২) তিনজন সহকারী সাস্থ্য সচিব. @ ৫০০ রুপি ১৮.০০/০০
৩)ত্রান অফিসার,৩ পদ @ ৩০০ রুপি প্রতিমাসে ১০.৮০০/০০
৪) রিসেপশন-কাম-সিকিউরিটি অফিসার @ ৩০০ রুপি প্রতিমাসে ৩.৬০০/০০
৫) স্টেনোগ্রাফার ৩ পদ কনফিডেনশিয়াল সেক্টরের জন্য@৩০০/০০ রউপি প্রতিমাসে ১০.৮০০/০০
৬) পিওন, ১ পদ @ ১৫০/০০ রুপি প্রতিমাসে ১.৮০০/০০
মোট: ৫১.০০/০০
পরিশিষ্ট–III
উপ আঞ্চলিক দপ্তরসমুহের জন্য পরিপুরক বাজেট
অফিসের মাথাপিছু কর্মীর বেতন
(উপ আঞ্চলিক অফিসের নোট দ্রষ্টব্য). ১.৭০০/০০
দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ৩০০/০০
যোগাযোগ ৩০০/০০
Rs. 200/00
Rs. 2.500/00 p.m.x 12=
Rs. 30.000/00 per
annum for each office
Estimated Annual cost for 8 sub-Zonal offices Rs . 2.40.3000/00
<003.185.582> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সংযোজনি–৪
টি এ এবং ডি এ এর জন্য বাড়তি বাজেট
T.A. জন্য বরাদ্দ Block ডি, কর্মকর্তা @ বেতনের 10% জন্য উ T.A., D.A জন্য অনুমোদিত হতে পারে … …17,000 টাকা / 00
মোট বেতন-97,246য00 টাকা. অনুমোদন অনুসারে বাজেট + 51,000 / 00. (অনুমান) + 20,400 / 00. টাকা সাব জোনাল অফিসের জন্য =1,70,000 / 00 প্রায়
সংযোজনী–৫
M.N. ও এমপিদের আনুমানিক বরাদ্দকৃত বাজেট
125 MNAs এবং M.P.As @ টাকা. 200/00 বিকাল xl25 রুপি. 250000=
25,000×12 300000/00
সংযোজনি–০৬
জোনাল লিবারেশন কাউন্সিল সম্পূরক বাজেট বার্ষিক আনুমানিক
- বাড়ি ভাড়া বিদ্যুৎ ইত্যাদি @ টাকা. 400/00 বিকাল 4,800/00
- স্টেনোগ্রাফার 300/00 বিকাল @ টাকা 3,600/00
- চাপরাসি -1 @ টাকা. 150/00 বিকাল 1,800/00
২০x125=2500/x 12 30,000/00
………………..
মোটঃ 40,200/00
সংযোজনী–সাত
ইয়ুথ ক্যাম্পে অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় সম্পূরক বাজেট
সেকশনের নাম | প্রধান মন্ত্রির আনুমানিক খরচ | বার্ষিক খরচ |
প্রশাসনিক সেকশন 1,000/00 টাকা 12,000/00 টাকা
এডমিনিস্ট্রেশন সেকশন 1,400/00 টাকা 14,8000/00টাকা
মেডিকেল সেকশন 900/00 টাকা 10,800/00টাকা
অ্যাকাউন্টসসেকশন 600/00 টাকা 7,200/00 টাকা
মুভমেন্ট সেকশন 1,000/00 টাকা 12,000/00টাকা
কর্নেলচৌমোহনি অফিস. 1,600/00 টাকা 19,2000/00টাকা
<003.185.583> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
আনুষ্ঠানিকঅনুমোদনব্যতিরেকেডেপুটিডিরেক্টরেরনিয়োগকৃতপদগুলোরবর্ণনা
নাম | পদবী | বরাদ্দ/ বেতন |
প্রশিক্ষণশাখা | ||
প্রফেসরদেবব্রতদত্তগুপ্ত | সহকারী সমন্বয়কারী | ৳ ৩০০/০০ |
প্রফেসরশাফিকাদরি | (রাজনৈতিক) | ৳ ২০০/০০ |
স্টেনোগ্রাফার (দাপ্তরিকনাম) |
প্রগ্রেস অফিসার | অফিস স্ট্যান্ডার্ড |
নথি, কেরানি (দাপ্তরিকনাম) | স্ট্যান্ডার্ড | |
আর্দালি (দাপ্তরিকনাম) | স্ট্যান্ডার্ড | |
প্রশাসন শাখা | ||
গাজী গোফরান | সাপ্লাই অফিসার | ৳ ২০০/০০ |
পরিমল বোস | সহকারী সাপ্লাই অফিসার | ৳ ১৭৫/০০ |
নিলাই | সাপ্লাই অ্যাসিস্ট্যান্ট | ৳ ১৭৫/০০ |
দুলাই | সাপ্লাই অ্যাসিস্ট্যান্ট | ৳ ১৭৫/০০ |
কাজল | স্টোরস্ অ্যাসিস্ট্যান্ট | স্ট্যান্ডার্ড |
স্টেনো টাইপিস্ট (দাপ্তরিক নাম) | অ্যাডমিন অ্যাসিস্ট্যান্ট | |
চিকিৎসা শাখা | ||
সেকান্দার | হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট | ৳ ১৭৫/০০ |
হিসাব শাখা | ||
ডি.ডি.এ/সি (এম.এইচ. চৌধুরী) | ৳ ২৫০/০০ | |
এ/সি অফিসার | ৳ ২০০/০০ | |
এ/সি অ্যাসিস্ট্যান্ট | স্ট্যান্ডার্ড | |
মুভমেন্ট শাখা | ||
ডিডি’স অ্যালাওয়েন্স | মুভমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট | ৳ ২০০/০০ |
শহীদ | -ঐ- | স্ট্যান্ডার্ড |
মাহবুব | -ঐ- | স্ট্যান্ডার্ড |
হাবীব | -ঐ- | স্ট্যান্ডার্ড |
শিরাজ | -ঐ- | স্ট্যান্ডার্ড |
কোল. চৌমুহনী অফিস | ||
লতিফ | লিয়াজোঁ অফিসার | ৳ ২৫০ |
জহিরুল হক | অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট | স্ট্যান্ডার্ড |
সালাউদ্দিন আফসার | -ঐ- | স্ট্যান্ডার্ড |
আবু তাহের | -ঐ- | স্ট্যান্ডার্ড |
ফখরুদ্দিন | -ঐ- | স্ট্যান্ডার্ড |
আর্দালি (দাপ্তরিক নাম) | -ঐ- | স্ট্যান্ডার্ড |
টাইপিস্ট (দাপ্তরিক নাম) | -ঐ- | স্ট্যান্ডার্ড |
<003.185.584> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সংযোজনী–৮
সরকারি চাকুরিজীবিগণের বেতন–ভাতার আনুষঙ্গিক বাজেট
আনুমানিক সরকারি ও আধা–সরকারি কর্মচারির সংখ্যা
প্রথম শ্রেণি ১৫০ |
দ্বিতীয় শ্রেণি ৪০০ |
তৃতীয় শ্রেণি ১৮০০ |
১,৮০০/০০ |
কর্মকর্তার শ্রেণি | আনুমানিক মাসিক খরচ | আনুমানিক বাৎসরিক খরচ | |
প্রথম শ্রেণির অফিসারে নির্ধারিত ভাতা | @ ৳২৫০ ১৫০ | = ৳৩,৭৫,০০০/০০ | |
দ্বিতীয় শ্রেণির অফিসারে নির্ধারিত ভাতা | @ ৳২০০ ৪০০ | = ৳৮০,০০০/০০ | |
তৃতীয় শ্রেণির অফিসারে নির্ধারিত ভাতা | @ ৳১০০ ১৮০০ | = ২,৭০,০০০/০০ | |
মোট টাকা |
৩,৮৯,৩০০/০০ পি.এম ৳ ৩,৮৯,৩০০/০০ ১২ = ৪৬,৭১,৬০০/০০ |
||
আকস্মিক প্রয়োজনের জন্য সংরক্ষিত অর্থ এখনও তালিকায় তোলা হয়নি | ৩,২৮,৪০০/০০ | ||
মোট | ৫০,০০,০০০/০০ |
সংযোজনী–৯
প্রস্তাবিত পরিবহণ অধিদপ্তরের জন্য আনুষঙ্গিক বাজেট
কর্মচারিগণের বেতন | আনুমানিক বাৎসরিক ব্যয় | |
১. তিনজন কর্মকর্তা (১জন ব্যবস্থাপক, ২জন উপ-ব্যবস্থাপক) | @ ৫০০/০০ পি.এম. | ৳ ১৮,০০০/০০ |
২. গ্যারেজ ভাড়া | @ ৫০০/- | ৳ ৬,০০০/- |
৩. মিনিস্টেরিয়াল স্টাফ-২ | @ ২৫০/- | ৳ ৬,০০০/- |
৪. মেকানিকস-৩ | @ ৩০০/- | ৳ ১০,৮০০/- |
৫. ২০০টি গাড়ি মেরামতের জন্য এককালিন বরাদ্দ |
@ ৫০০/- প্রতি ১০০ গাড়ির জন্য ৳৫০০ ২০০ |
৳ ১,০০,০০০/- |
৬. দু’জন নৈশপ্রহরি | @ ১৫০/- পি.এম. | |
সর্বমোট | ১,৪৪,৪০০/০০ |
<003.185.585> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
দশম সংযোজনী
অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা প্রকল্প
১. ২৮ জন এলাকাভিত্তিক অনুমোদিত প্রতিনিধি | @ মাসিক ২০০/টাকা | = ৫,৬০০/টাকা |
২. স্থায়ী কারিগরী সহকারী/ ভ্রমণ ভাতা @ মাসিক ৫০/ | টাকা জনপ্রতি = ১,৪০০/ | টাকা |
৩. ২ জন কার্যনির্বাহক @ মাসিক ৫০০/ | টাকা = ১,০০০/ | টাকা |
= ৮,০০০/ | টাকা | |
৮,০০০/ | টাকা X ১২ = ৯৬,০০০/ | টাকাবাৎসরিক |
অনিশ্চিত পরিকল্পনা = ৪,০০০/ | টাকা | |
সর্বমোটঃ১,০০,০০০/ | টাকা |
<003.186.586> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
ভিত্তিফৌজ প্রতিষ্ঠা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন | বাংলাদেশ সরকার, মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ পূর্বাঞ্চলীয় জোন | ৫ জুলাই, ১৯৭১ |
যুব প্রশিক্ষন. স্মারকলিপি-১
ভিত্তি ফৌজ মোতায়েন
ভিত্তি–কর্মী
অনুগ্রহ করে যুব প্রশিক্ষন বিজ্ঞপ্তি নং. ৩ এর সংযুক্তিতে সন্ধান করুন
১. ভিত্তি ফৌজ তিনটি প্রাথমিক/মুখ্য উদ্দেশ্যে দায়িত্ব পালন করেঃ
(ক) আমাদের সামাজিক ভিত্তি শক্তিশালী এবং প্রতিপক্ষের ছেড়ে দেয়া ধ্বংসাত্মক বাহিনী হতে রক্ষা করা,
(খ) আমাদের গেরিলাবাহিনীর জন্য নিরাপদ ঘাঁটি তৈরি করা,
(গ) আমাদের জনগনের নিয়ন্ত্রনাধীন উৎপাদনশীলগ্রামগুলোকেশত্রুনিয়ন্ত্রনাধীনঅনুৎপাদীশহরসমূহহতেবিচ্ছিন্নকরেঅর্থনৈতিকসংগ্রামতীব্রকরেতোলা।
২. ভিত্তি ফৌজের কাজের অসুবিধা অনুসারে বাংলাদেশের গ্রামসমূহকে তিনটি শ্রেনী-পরিষদে বিভক্ত করা যেতে পারেঃ
(ক) শত্রু অধিকৃত – অত্যন্ত সঙ্কটপূর্ণ
(খ) যোগাযোগের প্রধান মাধ্যমসমূহে শত্রু টহল
(গ) টহলমুক্ত – সামান্যতম দুরূহ
৩. ভিত্তি ফৌজের সম্প্রসারণ আরম্ভ করা উচিত (ক) শ্রেনীবিভক্ত গ্রামসমূহে, প্রথমত সেখানে আমাদের অবস্থান দৃঢ় করা (খ) অতঃপর ভিত্তি ফৌজের এলাকা বিস্তার এবং পরিশেষে (গ) প্রয়োজন অনুযায়ী মুক্তি বাহিনীর প্রাথমিক/প্রারম্ভিক সাহায্যে শ্রেনীবিভক্ত গ্রামসমূহে কাজ করার মাধ্যমে ।
৪. প্রছন্ন থাকার উদ্দেশ্যে ভিত্তি ফৌজ কর্মীদের নীতি ছিল, উপরিপর্যায়ে মোতায়েনের জন্য তাদেরকে নিজস্ব গ্রামে অথবা স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ নিকটবর্তী এলাকায় কাজ করতে হবে (৩ নং প্যারা)। সাধারন প্রশিক্ষন কর্মসূচিতে স্থানীয় নেতাবৃন্দ কর্তৃক চূড়ান্ত নির্দেশে এধরণের নিয়োগ নিশ্চিত করা হবে । (যুব প্রশিক্ষন বিজ্ঞপ্তি নং. ৩) ।
৫. ভিত্তি ফৌজের অধিকাংশ কাজ কর্মীদের সমস্যা দ্রুত সমাধানে মৌলিক একত্বতার দ্বারাই স্বতন্ত্রভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব । সমন্বিত নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ অবশ্য যুদ্ধকালীন কার্যক্রমের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে এবং মুক্তিফৌজের সহায়তায় এধরণের গোয়েন্দা তথ্যের পূর্ণ সদ্ব্যবহারে অপরিহার্য । সাধারণ প্রশিক্ষন কর্মসূচির ষষ্ঠ স্তরে নির্বাচিত গ্রুপলিডারগণ প্রয়োজনীয় কিছু অতিরিক্ত প্রশিক্ষনের মাধ্যমে ভিত্তি ফৌজের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের প্রধান কর্তা হবেন ।
পরিচালক
সমন্বয় পরিকল্পনাএবং কার্যক্রম,
যুবশিবির
<003.186.587> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
যুব প্রশিক্ষণ শিবির
প্রশিক্ষণের সাধারণ কর্মসূচি এবং
ভিত্তি শ্রমিকদের উন্নয়ন
সকল জড়িত সদস্যদের অনুরোধ করা হচ্ছে যেন প্রতি গ্রুপ শিক্ষানবিসদের জন্য নিম্নোক্ত কর্মসূচি পালনের সার্বিক প্রচেষ্টা চালানো হয়ঃ-
ধাপ-১ | ১ম-৩য় দিন | : |
শিক্ষানবিসদের যুব প্রশিক্ষণ শিবিরে আগমন ( অভ্যর্থনা শিবির এবং অন্য জায়গা হতে) শিবির কার্যক্রমের জন্যে – নিবন্ধন, উপ-দল গঠন
|
২। | ৪র্থ -১৭তম (২ সপ্তাহ) | : | ভিত্তি-কাজ(base work)। প্রেরণাদায়ী প্রশিক্ষণ |
৩। | ১৮তম-১৯তম | : | সৈন্যবাহিনীর নিয়োগ এবং পাঠানো স্থগিতকরণ |
২০তম | : | ভিত্তি-শ্রমিক (ভিত্তি ফৌজ) শপথ। (বন্ধ(enclosed )শপথ-ফর্ম দ্রষ্টব্য) | |
৪। | ২১তম-৩৪তম (২ সপ্তাহ) | : | ভিত্তি-শ্রমিকদের সুশৃঙ্খল প্রশিক্ষণ* |
৫। | ৩৫তম-৩৭তম | : |
স্থানীয় নেতা কর্তৃক ব্রিফিং* ( আওয়ামী লীগ এবং ছাত্র কর্ম(action) কমিটি স্বত্বনিয়োগ। দলনেতা নির্বাচন। |
৬। | ৩৮তম-৩৯তম | : | ভিত্তি ফৌজ স্বত্বনিয়োগ নিবন্ধন এবং প্রশংসাপত্র (বন্ধ (enclosed) দ্রষ্টব্য) |
৪০ তম | : | ছাড়পত্র (passport) |
* কোর্স চলাকালীন যেকোন সময়ে , এক থেকে দুই সপ্তাহের হালকা সশস্ত্র প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
** শিবির প্রশাসক কর্তৃক নেতাদের তারিখ এবং স্থান অবহিত হবে।
পরিচালক
সমন্বয়সাধক, পরিকল্পনা এবং কর্মসূচি,
যুব শিবির।
৫-০৭-৭১
<003.186.588> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিক্ষাফরম – ১
বাংলাদেশ ভিত্তিফৌজ বাহিনীর
শপথপত্র (২ কপি)
আমি ……………………………………………… বয়স ………………………………………
পিতা ……………………………………………… গ্রাম …………………………………………………
থানা …………………………………………… জিলা …………………………… সর্বশক্তিমানের নামে শপথ গ্রহণ করতেছি যে, স্বাধীন বাংলাদেশে জনকল্যাণের মুক্তিমন্ত্রে দীক্ষিত হইয়া আমি স্বেচ্ছায় এবং সজ্ঞানে বাংলাদেশ ভিত্তিফৌজ বাহিনীর কর্মশৃঙ্খলায় আবদ্ধ হইলাম।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের অনুপ্রেরনায় এই মন্ত্র সাধনের সকল কাজ সগর্বে এবং নির্ভয়ে প্রাণদানের জন্য আমি সদা প্রস্তুত থাকিব।
শপথগ্রহণকারী ………………………… স্বাক্ষর ……………
তারিখ ……….
(শিক্ষা শিবির কর্তৃপক্ষ পূরণ করিবেন)
শিক্ষা শিবিরের নাম ……………………………………… শিক্ষন কাল …………………………………
শিক্ষা শিবিরের ক্রমিক সংখ্যা ………………………………………
রেজিস্ট্রেশন খাতা নং ………………………………………
ভিত্তিফৌজ কর্মী হিসেবে গৃহীত না হইলে, না হইবার কারন …………………………………
ভিত্তিফৌজ কর্মী হিসেবে গৃহীত হইলেঃ
ভিত্তিফৌজ বাহিনীর ক্রমিক সংখ্যা ……………………………….. কর্মসংস্থান ………………………
১। গ্রাম ……………………… থানা …………………………… জিলা …………………………
২। ,, ,, ,,
৩। ,, ,, ,,
কর্মীর স্বাক্ষর ……………………………………
তারিখ ……………………………………
২ কপি ভিত্তিফৌজ সদর দফতরের জন্য।
<003.187.589> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
২৮ – ০৭ – ৭১
Ref: YT/29 (Adm)/1.
প্রফেঃ দেবব্রত দত্ত গুপ্ত ডেপুটি সমন্বয়কারী হিসেবে নিযুক্ত হলেন, ১৫-৭-৭১ থেকে যুব প্রশিক্ষণ সম্পাদন করবেন। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত তিনি প্রতি মাসে ৩৫০/- টাকার একটি বিশেষ ভাতা গ্রহণ করবেন।
( আবু ইউসুফ)
পরিচালক,
প্রশিক্ষণ সমন্বয়কারী,
যুব শিবির।
<003.188.590> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
গণ প্রজাতন্ত্রীবাংলাদেশ সরকার.
২৮.৭.৭১
সুত্র: YT / ৩০(প্রসাশন) / ১
অধ্যাপক শফি কাদরীকে জেলা সমন্বয়কারী (এম) এর শূন্যপদের বিপরীতে রাজনৈতিক প্রশিক্ষক(সিনিয়র) হিসেবে নিযুক্ত করা হল যা ১৫.৫.৭১ থেকে কার্যকর হবে এবং মুক্তিযুদ্ধ পরিষদ
দ্বারা অনুমোদিত। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তিনি মাসিক ২০০/ – (টাকা) সাময়িক ভাতা পাবেন।
আবু ইউসুফ
পরিচালক
প্রশিক্ষণ সমন্বয়কারী
.
<003.189.591> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বক্সনগরে যুব শিবিরে প্রবেশকারীদের দৈনিক হিসাব | লিবারেশন কাউন্সিল পূর্বাঞ্চলীয় জোন | ২আগস্ট, ১৯৭১ |
যুব শিবির.
যুব ক্যাম্প সমূহ
ক্যাম্প এর নামঃবক্সনগর | দৈনিক রিটার্ন-২-৭-৭১ | সপ্তাহ শেষ ৮-৮-৭১ | ||||||
যুব দের সংখ্যা | ||||||||
১। প্রবেশ
|
সোমবার | মঙ্গলবার | বুধবার | বৃহস্পতিবার | শুক্রবার |
শনিবার
|
রোববার | |
পূর্ববর্তী দিন হতে অপেক্ষমান | ৬১৭ | ৬১৭ | ৬২৮ | ৬৩২ | ৬৩৩ | ৬৩৭ | ৬৩৮ | |
নতুন | শূন্য | ১১ | ৪ | ৪ | ৪ | ২ | ১১ | |
মোট | ৬১৭ | ৬২৮ | ৬৩২ | ৬৩৬ | ৬৩৭ | ৬৩৯ | ৬৪৯ | |
২। প্রস্থান | ||||||||
যুব প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে/ সামরিক প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে |
শূন্য | শূন্য | শূন্য | ৩ | শূন্য | ১ | শূন্য | |
মোট অবস্থানরত | ৬১৭ | ৬২৮ | ৬৩২ | ৬৩৩ | ৬৩৭ | ৬৩৮ | ৬৪৯ | |
(প্রফেসর ড. এমএ রউফ)
ক্যাম্প চিফ
<003.190.592> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
শিবির ত্যাগকারী সম্পর্কে একটি বিজ্ঞপ্তি লিবারেশন কাউন্সিল | পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
১২ আগস্ট ১৯৭১
|
বরাবর, শিবির পরিচালক, বক্সনগর যুবশিবির মো: আব্দুর রহমান গ্রাম মান্নারা, চৌদ্দগ্রাম তিনি পলাতকদের একজন। তার মুখের বামপাশে একটা আচিল আছে যার মাধ্যমে তাকে খুজে বের করা যাবে।যদি সে আপনার নিকটবর্তী হয় তবে তাকে ধরুন এবং যুব শিবিরের পরিচালকের নিকট সংবাদ দিন।
sd/-
যুব প্রশিক্ষণ শিবির
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
বক্সনগর যুব শিবির
<003.191.593> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
শিবির তালিকা |
বাংলাদেশ সরকার , লিবারেশন কাউন্সিল পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
১৯ আগস্ট, ১৯৭১ |
শিরোনাম সূত্র তারিখ শিবির তালিকা বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কাউন্সিল পূর্বাঞ্চলীয় জোন ১৯ আগস্ট ১৯৭১
শিবির এবং সম্মানিত শিবির পরিচালকদের ফাইলের তালিকা ৭ আগস্ট ১৯৭১ পর্যন্ত
ক্রমিকনং | শিবিরেরনাম | এলাকা | ফাইলনং | শিবির পরিচালক |
১। | গোমতি ২ যুবশিবির | দূর্গাচৌপাড়া | Y/C-1 | মো: আনোয়ার হোসেন এমপিএ |
২। | শিলাচারা “” | ? | “-2 | মো: সায়েদুর রহমান |
৩। | এমএ আজিজ “” | হারিনা | “-3 | মো: এম এ হান্নান |
৪। | বিজনা “” | দূর্গাচৌ:পাড়া | “-4 | মো: সায়েদ ইমদাদুল বারী এমপিএ |
৫। | পালাতানা প্রশিক্ষণ শিবির | উদায়পুর/পালাতানা | Y/T-5 | ক্যাপ্টেম এসএম, এমপিএ |
৬। | চোতাখোলা “” | চোতরখেলা | Y/C-6 | মো: খাঁজা আহমেদ এমএনএ |
৭। | রাজনগর “” | রাজনগর | Y/C-7 | প্রফেসর এ হানিফ এমএনএ |
৮। | বারামুরা “” | খাথালিয়া | “-8 | মো: জালাল আহমেদ, এমপিএ |
৯। | হাতিমারা “” | কমলনগর | “-9 | মো: আবু ই বাশার |
১০। | বক্সনগর “” | বক্সনগর | “-10 | প্রফেসর এ রউফ |
১১। | চারিলাম “” | চারিলাম | Y/T-11 | মো: সাখাওয়াত উল্লাহ, এমপিএ |
১২। | ব্রহ্মপুত্র “” | হাপানিয়া | Y/C-12 | মো: আফতাবউদ্দীন ভূঁইয়া এমএনএ |
১৩। | তিতা “” | হাপানিয়া | Y/C-13 | মো: কাজী আকবার উদ্দীন |
১৪। | গুমাতি ১ “” | হাপানিয়া | “-14 | আলি আজম এমএনএ |
১৫। | পাথরকান্দি “” | করিমগন্জ | “-15 | এম এ মালেক |
১৬। | গঙ্গা “” | চারিলাম | Y/T-J6 | মো: ওয়ালিউল্লাহ নওযোয়ান |
১৭। | নরসিনগর “” | নরসিনগর | Y/C-17 | মো: দেওয়ান আবুল আব্বাস |
১৮। | এসআইহক “” | শ্রীনগর | “-18 | মো: খাইরুদ্দীন আগমেদ, এমপিএ |
১৯। | যমুনা “” | হাপানিয়া | “-19 | মো: শাফিরুদ্দীন, এমপিএ |
২০। | ইছামতি “” | দূর্গাচি:পাড়া | “-20 | মো: জামালদ্দীন আহমেদ, এমপিএ |
২১। | পদ্মা ট্রেনিং ক্যাম্প | গোকুলনগর | Y/T-21 | মো: সামছুল হক এড, এমপিএ |
২২। | মোঘনা “” | গোকুলনগর | “-22 | মো: হামিদুর রহমান এডভোকেট |
২৩। | কয়লা শহর “” | কয়লাশহর | Y/C-23 | মো: তোভ্বাবর রহমান, এমপিএ |
২৪। | আশ্রমপারি “” | খোয়াই | “-24 | মো: মোস্তফা শহিদ, এমপিএ |
২৫। | ধর্মনগর”” | ধর্মনগর” | “-25 | মো: তাইমুজ আলী, এমপিএ |
পরিচালকসম্বন্বয়,
পরিকল্পনা এবং কর্মসূচি
যুব শিবির
১৯ আগস্ট ১৯৭১
<003.192.594> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
<003.192.595> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
<003.192.596> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
<003.193.597> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
নামসহ সাধারণ প্রশিক্ষকদের নিয়োগ তালিকা
১ | পদ্মা যু/প্র | গোকুল নগর |
১) জনাব সুকিয়াল সাহা ২) “নিরুজ্জামান ৩) “মোজাম্মেল হক ৪) “মফিজুদ্দিন আহমেদ। |
২ | মেঘনা যু/প্র | গোকুল নগর |
১) জনাব শাহজাহান ঠাকুর ২) “হেদায়েতুল ইসলাম ৩) “এ.এফ.এম. ফজলুল হক ৪) “…….. |
৩ | ব্রহ্মপুত্র যু/শি | হাপানিয়া |
১) জনাব সূর্য কান্তি দাশ ২) ৩) “…………. ৪) “……….. |
৪ | তিতাস যু/শি | হাপানিয়া |
১) জনাব ফয়জুল্লাহ খান ২)”……… ৩)”……… ৪) |
৫ | যমুনা যু/শি | হাপানিয়া |
১) জনাব সিদ্দিকুর রহমান ২) “জনাব চান্দি চরণ মজুমদার ৩) “………… ৪) “…………. |
৬ | গোমতী-I যু/শি | হাপানিয়া |
১) জনাব হারুন-উর-রশিদ ২) আশরাফ হোসাইন ৩) সেরাজুদ্দিন ৪) ইয়াকুব আলী |
৭ | হাতিমারা যু/শি | কামা! নগর |
১) জনাব আসগর হোসাইন ২)”…………. ৩)”………….. ৪)”………….. |
৮ | গোমতী-II যুব/শি | ডি.সি.পাড়া |
১) জনাব……….. ২)”…………… ৩)”………….. ৪)”………….. |
৯ | ইছামতী যু/শি | ডি.সি. পাড়া |
১) জনাব মোহাম্মদ আলী ২)”মনোরঞ্জন সরকার ৩)”………………….. ৪)”………………….. |
১০ | বিজনা যু/শি | ডি.সি.পাড়া |
১) জনাব দেওয়ান খান খাদেনী ২) “সারোয়ার জাহান ৩) “এইচ শামসুল ইসলাম ভুঁইয়া ৪) “…………………… |
১১ | নরসিংঘর যু/শি | নরসিংঘর |
১) জনাব এসকে. আবু আহমেদ ২)”…………………. ৩)”………………….. ৪)”…………………… |
১২ | রাজনগর যু/শি | রাজনগর |
১) জনাব প্রিয় লাল দাশ ২) “ফকরুল ইসলাম ৩) “………………………. ৪) “…………………….. |
১৩ | পালাটানা যু/শি | উদয়পুর |
১) জনাব গোপাল চন্দ্র চক্রবর্তী ২) “………………….. ৩) “………………… ৪) “………………… |
১৪ | হরিয়ানা যু/শি | হরিয়ানা |
১) জনাব………………. ২) “………………….. ৩) “………………….. ৪) “……………… |
১৫ | বাক্সনগর যু/শি | বাক্সনগর |
১) জনাব……………… ৪) “…………………. ৫) “…………………. ২) “………………….. |
১৬ | চোটাখোলা যু/শি | চোটাখোলা |
৩) জনাব………… ৬) “…………….. ৭) “……………… “………………….. |
১৭ | বড়মুরা যু/শি | খাতালিয়া |
১) জনাব আশরাফুদ্দিন আহমেদ ২) “এম.এ.হামিদ ৩) “বেলায়েত হোসেন ৪) “………………….. |
১৮ | শুনা খিরা যু/শি | পাথরকান্দি |
১) জনাব…………… ২) “…………………….. ৩) “…………………….. ৪) “………………………. |
১৯ | যমুনা যু/প্র | চৌরিলাম-I |
১) জনাব এ.এইচ.এম জিয়াউল ইসলাম ২) “সাইফ কাদেরী ৩) “…………………. ৪) “……………….. |
২০ | গঙ্গা Y/T | চৌরিরাম-১১ |
১) জনাব আবুল ফারাহ ২) মাবুল আহমেদ ৩) সাফরুদ্দিন সিকান্দার ৪) সেরাজুল ইসলাম খান |
২১ | এস, জে হক Y/C | শ্রীনগর |
১) জনাব ………… ২) জনাব ………… ৩) জনাব ………… ৪) জনাব ………… |
২২ | শিলাছড়া Y/C | শিলাছড়া |
১) জনাব ………… ২) জনাব ………… ৩) জনাব ………… ৪) জনাব ………… |
২৩ | আশ্রমবাড়ি Y/C | আশ্রমবাড়ি |
১) জনাব ………… ২) জনাব ………… ৩) জনাব ………… ৪) জনাব ………… |
২৪ | কৈলাস সড় Y/C | ভগবাননগর |
১) জনাব ফয়জুর রহমান ২) জনাব ………… ৩) জনাব ………… ৪) জনাব ………… |
২৫ | ধর্মনগর Y/C | ধর্মনগর |
১) জনাব ………… ২) জনাব ………… ৩) জনাব ………… ৪) জনাব ………… |
২৬ | মুহুরি Y/T | খাতালিয়া ছড়া রোড |
১) জনাব ………… ২) জনাব ………… ৩) জনাব ………… ৪) জনাব ………… |
২৭ | একিনপুর Y/C | একিনপুর |
১) জনাব ………… ২) জনাব ………… ৩) জনাব ………… ৪) জনাব ………… |
পরিচালক
সমন্বয় পরিকল্পনাকারী
ও প্রোগ্রামিং
যুব ক্যাম্প
১৯,৮.৭১
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব ত্রাণ শিবিরের মটিভেটর নিয়োগ সম্পর্কিত চিঠি | বাংলাদেশ সরকার লিবারেশন কাউন্সিল পূর্বাঞ্চলীয় জোন | ২৩ আগস্ট, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
তারিখঃ ২৩/০৮/৭১
নম্বরঃ ৪সি/১১৮/(৪)
আদেশ
জনাব নিরোদ বরণ সাহাজী; বি,এ; একজন রাজনৈতিক মটিভেটরকে হাপানিয়া বঙ্গবন্ধু যুব অভ্যর্থনা শিবিরে নিযুক্ত করা হল, যা সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে কার্যকর হবে ১৫ আগস্ট, ১৯৭১ থেকে। এতদ্বারা জনাবের বেতন আপাতত ১৫০ ভারতীয় রুপি নির্ধারন করা হল।
এই নিয়োগ সম্পূর্ণ জনস্বার্থে করা হয়েছে।
(অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী) |
এম,এন,এ |
ডিরেক্টর-১ |
যুব ক্যাম্প, পূর্বাঞ্চল |
বাংলাদেশ সরকার |
তারিখঃ ২৩/০৮/১৯৭১ |
নম্বরঃ ৪সি/১১৮/(৪)
তথ্য ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য অনুলিপিঃ
১) প্রধান হিসাবরক্ষক, যুব ক্যাম্প, পূর্বাঞ্চল
২) ক্যাম্প প্রধান, হাপানিয়া বঙ্গবন্ধু যুব শিবির
৩) যুব ক্যাম্প নিয়ন্ত্রন বোর্ড, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, মুজিবনগর
৪) জনাব নিরোদ বরণ সাহাজী; বি,এ
(অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী) |
এম,এন,এ |
ডিরেক্টর-১ |
যুব ক্যাম্প, পূর্বাঞ্চল |
বাংলাদেশ সরকার
|
<003.194.598> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
অর্থনৈতিক উপ-পরিষদ গঠন সম্পর্কিত নির্দেশ | বাংলাদেশ সরকার লিবারেশন কাউন্সিল, পূর্বাঞ্চলিয় জোন | ১৪ই সেপ্টেম্বার, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
তারিখ ১৪ই সেপ্টেম্বর, ৭১
গণপ্রজাতন্ত্রীবাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকতৃক আমাকে সম্বোধিত মেমো নং ৬৩৯ তাং ১১-৯-৭১ এবং ৫-৯-৭১ এ নির্বাচিত প্রতিনিধি সভায় গৃহীতরেজল্যুশন অনুযায়ী, রিসেপশন ট্রানজিট ও তরুণ-তরুণীরা জন্য হোল্ডিং শিবির এরসাধারণ বিষয়াদি ও আর্থিক ব্যয় দেখাশোনা করার জন্যআমি এতদ্দ্বারা নিম্নক্ত সদস্যদের দ্বারাএকটি বডি গঠন করার জন্য মনোনীত করছি।
- জনাব আহমেদ আলী, চেয়ারম্যান,
- জনাব গাজী গোলাম মোস্তফা,
- জনাব মোহা. ইলিয়াস.
- জনাব খালেদ মোহাম্মদ আলী.
- জনাব আবদুল্লাহ হারুন.
- পরিচালক-১, যুব শিবির.
- পরিচালক -২, যুব শিবির.
স্বাঃ / -জহুরআহমেদ চৌধুরী.
চেয়ারম্যান, মুক্তিযুদ্ধের পর্ষদ.
গণপ্রজাতন্ত্রীবাংলাদেশ সরকার, পূর্ব জোনের.
মেমো নং YC / ২০৬তাং ১৪.০৯.৭১
অনুলিপি
1) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার,
2) চেয়ারম্যান, বোর্ড অব কন্ট্রোল, যুব শিবির প্রয়োজনেসংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে কপি করার অনুরোধ করা হলো
3) প্রশাসক জোন-১
4) প্রশাসক. জোন -২,
5) প্রশাসক জোন-৩
6) প্রশাসক জোন-৪
জহুর আহমেদ চৌধুরী.
চেয়ারম্যান,
মুক্তিযুদ্ধের পর্ষদ.
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার,
পূর্ব জোনের.
<003.195.599> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব শিবির পরিচালক জনাব খালেদ মাহমূদ আলীর রিক্রটমেন্ট প্রধান হিসেবে নতুন দ্বায়িত্বপ্রাপ্তি সম্পর্কে একটি বিংপ্তি | বাংলাদেশ সরকার, মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ পূর্বাঞ্চলিয় জোন | ১৭ই সেপ্টেম্বার, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
নং YCT/২০৯ তারিখ ১৭.০৯.১৯৭১
ডেপুটি ডাইরেক্টর
ইয়ুথ রিলিফ ক্যাম্প
জনাব,
এতদ্বারা আপনাকে জানানোযাচ্ছে যে, জনাব খালেদ মাহমূদ আলী, এম এন এ (ডাইরেক্টর,ইয়ুথ রিলিফ ক্যাম্প ) এখন থেকে রিক্রটমেন্ট এবং মুভমেন্ট কো অর্ডিনেটর হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে কাজ করবেন এবং আপনাকে সরাসরি তার সাথে কাজ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
ধন্যবাদ।
নিবেদক
(ডঃ আবু ইউসুফ)
ট্রেইনিং কো অর্ডিনেটর
অনুলিপি
১)চেয়ারম্যান, লিবারেশন কাউন্সিল, পূর্বাঞ্চলিয় জোন১৬.৯.৭১ এর মিটিং এ গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে
২) চেয়ারম্যান, ইয়ুথ রিস্পিশন ক্যাম্প , পূর্বাঞ্চলিয় জোন
৩) জনাব খালেদ মাহমূদ আলী, এম এন এ , ডাইরেক্টর,মোটিভেশন
৪) বি এম ডি
৫) সি ও এস
৬) সেক্টর কমান্ডার
নোটঃ জনাব খালেদ মাহমূদ আলীর সাথে বাংলাদেশ অফিস, কৃষ্ণনগরে যোগাযোগ করা যাবে।
<003.196.600> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
ত্রাণ শিবির থেকে মুক্তি ফৌজে ভর্তিকরণ সম্পর্কিত একটি চিঠি |
ডেপুটি ডাইরেক্টর অফিস , ইয়ুথ রিলিফ ক্যাম্প,
ত্রিপুরা
নং যুঅশি/B/ ৭১-৭২/১ আগরতলা, ২০ সেপ্টেম্বার, ১৯৭১
বরাবর
প্রশিক্ষন সমন্বয়ক,
যুব ত্রাণ শিবির,
বাংলাদেশ অফিস,
আগরতলা।
সেনাবাহিনীর ট্রেনিং এর জন্য নিয়োগকৃতদের বিধি
১। অত্র অফিস ২৪ সেপ্টেম্বর – ৪ অক্টবরের সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণ কর্মসূচী পেয়েছে। প্রশিক্ষন সমন্বয়ক এর সাথে টেলিফোনে যোগাযোগের সকল চেষ্টাই ব্যার্থ হয়েছে। যেহেতু নিয়োগ ২৪ সেপ্টেম্বরের আগেই শুরু করতে হবে তাই আপনাকে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হলো,
ক) জনাব মান্নান অথবা তার প্রতিনিধির সুপারিশ ক্রমে ২০০০ জনকে , অর্থাৎ ঢাকা থেকে আগত ১৮০০ কারখানা শ্রমিক এবং চাঁদপুর থেকে আগত ২০০ কারখানা শ্রমিকে সরাসরি রিসিপ্সন ক্যাম্প থেকে নিম্নলিখিত তারিখে পাঠানোর অনুরোধ করা হলো।
৫৫০ জন, ২৪ সেপ্টেম্বর, পালাটানা
২৫০ জন, ২৬ সেপ্টেম্বর পালাটানা
৩০০ জন, ২৮ সেপ্টেম্বর পালাটানা
৫৫০ জন, ৪ অক্টোবর পালাটানা
৩৫০ জন, ৪ অক্টোবর পালাটানা
খ) ১০০০ জন, জনাব মান্নান এর অর্থায়নে ৫০০ জন এবং ক্যাপটেন ইয়ালিম চৌধুরীর অর্থায়নে ৫০০ জন- অভ্যর্থনা শিবির থেকে নিম্ন লিখিত তারিখে সরাসরি পাঠানো যেতে পারে –
১০০০ জন লায়লাপুরে প্রেরণ (ডি-সেক্টর কর্তৃক তারিখ দেওয়া হবে )
২। রাজনৈতিক ছাড়পত্র এবং বিশদ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আপনি দায়িত্বপালন করবেন । এই পত্রটি লিখিত আদেশের কাজ করবে । প্রয়োজনীয় স্থান, তারিখ ও পরিবহনের জন্য ডি সেক্টরের সাথে যোগাযোগ করুন ।
<003.196.601>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৩. নিয়োগ কার্যক্রমের বাকি বিষয়গুলোর জন্য অবিলম্বে কার্যালয়ে যোগাযোগ করুন। অনুগ্রহ করে আপনার কর্তৃপক্ষে অবহিত করুন that in case you are detailed 011 other jobs other than প্রশিক্ষণ সমন্বয়কারী যে এটি একটি পূর্ণকালীন চাকুরী এবং এমন নিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রতিদিন অন্তত একবার যোগাযোগের জন্য কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে হবে। উক্ত উদ্দেশ্যে আপনার জন্য একটি পরিবহনের ব্যবস্থা করা হবে।
স্ব/আর.ভি.সুবারমানিয়াম
মেজর
অনুলিপি প্রেরিত হবে:
ডি সেক্টর সদর
উপরের কাজটি দরকার ছিল যেহেতু নিয়োগের জন্য সময় খুব স্বল্প এবং আমার নিকট প্রশিক্ষণ সমন্বয়কারী সহজলভ্য নয়।
<003.197.602> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
মুক্তিফৌজ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা সম্পর্কিত একটি চিঠি |
বাংলাদেশ সরকার লিবারেশন কাউন্সিল পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
২১ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
গোপনীয়
মেজর আর.ভি.সুবারমানিয়াম
YRC/B/71-72
আগরতলা, ২১ সেপ্ট. ৭১
আমার প্রিয় ড. ইউসুফ,
গতরাতে বাংলাদেশের শ্রমিক নেতা, জনাব মান্নান আমার নিকট এসেছিলেন এবং আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন কখন আমি সেনা প্রশিক্ষণের জন্য ২০০০ মানুষ নিতে পারবো এবং কোন শিবিরে তাদের রাখবো। আমি চিন্তা করেছিলাম, আমি তাদেরকে তিস্তা এবং মহুরিতে রাখবো যেহেতু এই শিবিরগুলো পূর্ণ ছিল না,এবং তাকে তদানুসারে মেনে চলতে বলেছিলাম। কিন্তু আজকে আমি বুঝতে পেরেছি যে শিবিরগুলোর তিন চতুর্থাংশ পূর্ণ এবং ২০০০ মানুষ গ্রহণ করতে পারবে না। আমি তার ও আপনার সাথে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু আপনাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি। এখন টেলিফোনটিও বিকল হয়ে গিয়েছে।
অনুগ্রহ করে জনাব মান্নানকে বলবেন, তার রিক্রুটগন যেন আমার নির্দেশনা অনুযায়ী এবং আপনাকে দেওয়া আমার ২০ সেপ্ট.,৭১তারিখের চিঠিতে উল্লিখিত তারিখমত উপযুক্ত আনুষ্ঠানিকতার পর পালাটানা শিবিরে যোগ দেয়। এটি পূর্বের সব পরিকল্পনার বিপরীতে শেষ মুহুর্তের তাড়াহুড়োর কারণে হয়েছে।
আন্তরিকতার সাথে,
আপনার অত্যন্ত আন্তরিক
স্বা/আর.ভি.সুবারমানিয়াম
মেজ.
উপপরিচালক
ড. আবু ইউসুফ,
প্রশিক্ষণ সমন্বয়কারী,
বাংলাদেশ(পূর্বাঞ্চলীয় জোন)।
<003.198.603> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুবপ্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহের প্রয়োজনীয় খরচাদির মঞ্জুরী সংক্রান্ত যুব শিবির পরিচালকের একটি বিজ্ঞপ্তি |
মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
১ অক্টোবর, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
নং. যুপ্রশি/২৩৬, তারিখ ১.১০.১৯৭১
ভারপ্রাপ্ত শিবির,
যুব শিবির(প্রশিক্ষণ)
আয়োজক কর্তৃপক্ষ অনুগ্রহ করে শিবিরগুলোর অধিকাংশ খরচ অনুমোদন করেছেন। আশা করা যায় যে সকল খরচের অনুমোদন খুব শীঘ্রই পাওয়া যাবে। যা হোক না কেন, পূর্বের মত সরবরাহ ও অন্যান্য বিলম্ব কাটিয়ে উঠার জন্য কিছু জরুরী/তাৎক্ষনিক খরচগুলো মেটাতে কার্যালয় থেকে পরিশোধ করার ভিত্তিতে এটি দরকার হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে আপনার অতীতের অগ্রীমের একাউন্ট গ্রহণ, সেইসাথে সংশ্লিষ্ট আয়োজক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সুপারিশকৃত/অনুমোদিত কার্যালয়ে আপনার ভবিষ্যৎ ফরমাশ উপস্থাপন করার পূর্বে গ্রহণের জন্য আপনাকে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
এটি উপপরিচালক, যুব রিলিফ শিবির এর সম্মতিক্রমে প্রকাশ করা হল।
(আবু ইউসুফ)
পরিচালক, প্রশিক্ষণ।
তথ্যের জন্য অনুলিপি:
চেয়ারম্যান, পূর্বাঞ্চলীয় জোন কাউন্সিল, চেয়ারম্যান,
যুব অভ্যর্থনা শিবির কমিটি, পূর্বাঞ্চলীয় জোন,
চেয়ারম্যান, যুব শিবির, বাংলাদেশ সরকার
অনুলিপি প্রেরণ:
১. উপপরিচালক, যুব রিলিফ শিবির, অনুগ্রহের সাথে যাতে তিনি অনুগ্রহ করে শিবির প্রশাসকদের তদানুসারে অবহিত করবেন।
<003.199.604> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও সমস্যাদি পর্যালোচনার জন্য আহূত একটি সভার বিজ্ঞপ্তি | মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ পূর্বাঞ্চলীয় জোন | ১ অক্টোবর, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
যুপ্রশি/২৩৯ তারিখ. ১লা অক্ট. ‘৭১
প্রিয় O/C,
যুব(প্রশিক্ষণ) শিবির-ভারপ্রাপ্ত এবং Dy. ভারপ্রাপ্ত এর সভায় রবিবার বিকেল ৩ টায় যুব প্রশিক্ষণের পাঠ্যক্রম সম্পাদনার উন্নতি ও সমস্যাগুলোর আলোচনার জন্য উপস্থিত থাকতে আমি আপনাকে অনুরোধ করছি।
যদি আপনি উপস্থিতি প্রশস্ত করতে পারেন, আমি অনেক বাধিত হব।
বিনম্র আন্তরিকতার সাথে,
স্ব/………………
<003.200.605> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
মুক্তিফৌজ রিক্রুটমেন্টের ব্যাপারে নিয়ম রক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত যুবশিবির মটিভেটর প্রধানের চিঠি |
বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কাউন্সিল পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
২ অক্টোবর, ১৯৭১ |
রিক্রুটমেন্ট কো-অর্ডিনেটরের কার্যালয়
পূর্বাঞ্চলীয় জোন
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
নং. যুশি/২৪১ তাং. অক্টো. ‘৭১
এটি লক্ষ্য করা হয়েছে যে, নিয়োগদান পরিচালকবৃন্দ থেকে পূর্বের কর্তৃপক্ষে সম্পন্ন করা হয়েছে, যুব অভ্যর্থনা শিবির ও যুব প্রশিক্ষণ শিবির থেকে যুবক নিয়োগদান সংক্রান্ত কার্যালয় অনুশাসন নং. যুপ্রশি/১২৩, তাং, ২৫.৮.৭১ এর উল্ললঙ্ঘন, এটি উপরন্তু স্মরণ করা হয়েছে যে ভবিষ্যতে নিয়োগ সমন্বয়কারী কর্তৃক অনুমোদিত নিয়োগ টিম ব্যতীত কোন নিয়োগ সম্পন্ন করা না হয়।
এটি উপরন্তু স্পষ্ট করা হয়েছে যে ভবিষ্যতে সকল নিয়োগদান, viz. বাংলাদেশের নিয়মিত বাহিনীসমূহ, গেরিলা বাহিনী প্রভৃতি শুধুমাত্র যুব প্রশিক্ষণ শিবির থেকেই সম্পন্ন করা হবে এবং প্রশিক্ষণ পরিচালককে উপরোল্লিখিত অনুমোদিত ব্যতীত এমন নিয়োগদানের অনুমতি না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
যুব ত্রাণ শিবিরগুলোর সহ. পরিচালকগণ দয়া করে তথ্যের জন্য সাক্ষাৎ করবেন।
খালেদ মো. আলী, MNA
(পরিচালক, প্রণোদনা, যুব শিবির)
নিয়োগ সমন্বয়কারী, পূ. জোন
তাং. ২রা অক্ট. ৭১।
নং. যুশি/২৪১
তথ্যের জন্য অনুলিপি করুণ:
১………… বাংলাদেশ বাহিনী।
২. চেয়ারম্যান, স্বাধীনতা পরিষদ, পূর্বাঞ্চলীয় জোন।
৩. চেয়ারম্যান, নিয়ন্ত্রণ বোর্ড ; যুব শিবির, মুজিবনগর।
৪. সকল শিবির প্রধান,পূর্বাঞ্চলীয় জোন।
৫. সকল সেক্টর কমান্ডার, পূর্বাঞ্চলীয় জোন।
৬. সকল পরিচালক, পূর্বাঞ্চলীয় জোন।
৭. সকল রাজনৈতিক মৈত্রী কর্মকর্তা। খালেদ মো. আলী, MNA (পরিচালক, প্রণোদনা, যুব শিবির) নিয়োগ সমন্বয়কারী, পূর্বাঞ্চলীয় জোন। বাংলাদেশ সরকার।
<003.201.606> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব প্রশিক্ষণ অগ্রগতি উপদেষ্টা কমিটি গঠিতঃ যুব শিবির পরিচালকের একটি বিজ্ঞপ্তি | মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ পূর্বাঞ্চলীয় জোন | ৪ অক্টোবর, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
নং.ঃ ওয়াই.টি.সি/২৪৪ তারিখঃ ৪ অক্টোবর, ৭১
জনাব শাখাওয়াত উল্লাহ্ খানের প্রস্তাবিত “যুব প্রশিক্ষণ অগ্রগতি উপদেষ্টা কমিটি “ গঠিত হয়েছে নিম্নস্বাক্ষর কারীদের সাহায্য করতে অনুমোদিত প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রম প্রয়োগকে ত্বরান্বিত করার জন্য।
এই কমিটিতে থাকবে যুব (প্রশিক্ষণ) শিবিরের ভারপ্রাপ্ত পদ ধারী সদস্যরা এবং সময়ে সময়ে নিম্নস্বাক্ষরকারীরা।
ডঃ আবু ইউসুফ
পরিচালক
প্রশিক্ষণ সমন্বয়
সংশ্লিষ্ট সকল দায়িত্বের
<003.202.607> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
শিবির কর্মকর্তাদের বেতন সম্পর্কিত একটি বিজ্ঞপ্তি | লিবারেশন কাউন্সিল পূর্বাঞ্চলীয় জোন | ৪ অক্টোবর, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
নং যুপ্রশি/২৪৬ তারিখ: ৪ঠা অক্টোবর, ৭১
গত ২রা অক্টোবর অনুষ্ঠিত যুব ‘অভ্যর্থনা’ শিবির কমিটি পূর্ব অঞ্চলের বৈঠকের প্রস্তাবনা অনুসারে প্রতি মাসে ৫০০ রুপি মাত্র বরাদ্দ অনুমোদিত সকল ডেপুটি ডিরেক্টর পদের জন্য ধার্য করা হয়েছে। এর মধ্যেই অত্র অঞ্চলের যে কয়জন ডেপুটি ডিরেক্টর এই বরাদ্দ নিয়েছেন, তাও এর অন্তর্ভুক্ত।
প্রফেসর দেবব্রত দত্ত গুপ্ত, যিনি প্রশিক্ষণ সমন্বয়ে ডেপুটি ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত, ০৬.০৬.৭১-এ অনুষ্ঠিত লিবারেশন কাউন্সিলের (তখন একে হাই-পাওয়ারড কমিটি বলা হতো) আনুষ্ঠানিক মিটিংয়ে ৫০০ রুপি তাঁর মাসিক বরাদ্দ হিসেবে বুঝে পেয়েছিলেন।
তাঁকে অনুগ্রহপূর্বক একই পরিমাণ গ্রহণ করে তাঁর তোলা আগাম অর্থের সমন্বয় করার অনুমতি দেওয়া হোক।
(ড. আবু ইউসুফ)
সভাপতি পরিচালক
যুব (অভ্যর্থনা) শিবির প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক
পূর্ব অঞ্চল
<003.203.608> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব শিবিরে নতুন যুবক ভর্তি সংক্রান্ত চিঠি |
লিবারেশন কাউন্সিল পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
৬ অক্টোবর, ১৯৭১ |
টপ সিক্রেট
বিষয়: পূর্ব অঞ্চলের যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের রিক্রুটমেন্টে অচলাবস্থা প্রসঙ্গে।
সহকারি পরিচালক, যুপ্রশি,
বিনীত নিবেদনের সাথে গতকাল যুব (প্রশিক্ষণ) কেন্দ্র বিষয়ক আমাদের আলোচনার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করছি। লক্ষ্য করা গেছে যে, গত ১৬ই সেপ্টেম্বর থেকে বিডিএফ-এ (BDF) রিক্রূটমেন্টের কারণে খালি হওয়া পদগুলোর জন্য কোনো লিখিত ফরমাশ জারি করা হয়নি।
আশা করি অনুগ্রহপূর্বক এই শুন্যপদগুলোর জন্য অনতিবিলম্বে লিখিত ফরমাশ জারি করবেন।
বিনীত নিবেদক
সাক্ষর: আবু ইউসুফ
০৬.১০.৭১
(প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক)
যেহেতু ১ এর জি (G of 1) এখনও
নতুন রেশন ইত্যাদি পাঠায়নি,
লিখিত ফরমাশ জারির এক সপ্তাহ বিলম্ব ঘটবে।
সাক্ষর: আর. ভি. শুবরোমোনিয়ান,
মেজর,
৬.১০.৭১
(সহকারি পরিচালক, ওয়াই.আর.সি)
এখন পর্যন্ত ওয়াই.আর.সি-র সহকারি পরিচালক কোনো লিখিত ফরমাশ জারি করেননি পক্ষান্তরে, রিসেপশন ক্যাম্পে তরুণদল উপচে পড়ছেন। কারণ, আরেকদফা তীব্র নিপীড়ন শুরু হয়েছে, বিশেষ করে চট্টগ্রাম, নোয়াখালি, ঢাকা এবং দক্ষিণ কুমিল্লা বিভাগে। রিসেপশন ক্যাম্পের সমস্যাগুলো বাস্তবিকভাবেই পরিচালনার অযোগ্য হয়ে উঠেছে আর একই সাথে যুব প্রশিক্ষণ শিবিরগুলো অশেষ অচলাবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যেহেতু একদিকে মিত্র কর্তৃপক্ষ এবং অপরদিকে বাংলাদেশ সরকার পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিতে পারছেন না। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আসা ভর্তুকি পুরোপুরি থেমে গেছে, অন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের আগেই। ফলাফলস্বরূপ এই স্রোত থামিয়ে রাখার আরও এক বাঁধা সৃষ্টি করতে বেস-ওয়ার্কার (base-worker)দের অভিষেক পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। (অনুগ্রহ করে আমার সর্বশেষ আবেদন, তারিখ ৬-১০-৭১, লক্ষ্য করবেন, সংযোজিত)।
তথ্যপ্রদান ও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে পত্রটি পাঠানো হলো।
(আবু ইউসুফ)
প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক
প্রধানমন্ত্রির পিএস, বাংলাদেশ।
অর্থমন্ত্রির পিএস, বাংলাদেশ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রির পিএস, বাংলাদেশ।
পরিচালক, যুব শিবির।
<003.204.609> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
শিবিরের ব্যয় সংক্রান্ত প্রকল্প সংযোগকারীর একটি চিঠি |
লিবারেশন কাউন্সিল পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
৬ অক্টোবর, ১৯৭১ |
সিক্রেট
নং ওয়াই.টি.সি/২৪৮ তারিখ ৬-১০-৭১
প্রিয় প্রফেসর ইউসুফ আলী,
অনুগ্রহপূর্বক ৮ এবং ২২ সেপ্টেম্বরে পাঠানো যুব (প্রশিক্ষণ) কেন্দ্রের আর্থিক বিষয়াদি সম্পর্কিত আমার টেলিগ্রাম ও চিঠিটির প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করছি, দুঃখজনকভাবে যে দুটোর কোনোটারই প্রতিউত্তর করা হয়নি।
বর্তমানে যুব (প্রশিক্ষণ) কেন্দ্র তীব্র সঙ্কটের মুখে, নিম্নোক্ত তথ্যাদি অনুযায়ী-
(ক) যুব (প্রশিক্ষণ) নকশা অনুসারে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রির অনুমোদনকৃত বরাদ্দকৃত ১৭.৫ লাখ টাকার প্রায় ১৫ লাখ অনিয়মিতভাবে খরচ হয়েছে অন্যান্য উপাদানে (রিসেপশন ক্যাম্প। আর্মি হোল্ডিং ক্যাম্প, বিডিএফ অপারেশনাল ক্যাম্প ইত্যাদি) এবং
(খ) বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি সকল প্রকার ব্যয় থামিয়ে দিতে অনুরোধ করেছেন, যতোক্ষণ পর্যন্ত না বিকল্প কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
আপনাকে এর মধ্যেই জানানো হয়েছে এই উপাদানগুলোর ব্যয়গুলো বাংলাদেশ সরকারই উল্লিখিত সময়ে বহন করেছেন। বর্তমান প্রয়োজনগুলোর বিবেচনায় নিম্নোক্ত ব্যয়তালিকা মিত্র কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমোদিত হয়েছে।
ক্যাম্প প্রতি (মাসিক)
১. এযাবতকাল মিত্র কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত অর্থসাহায্যের ওপর ভর্তুকি দেওয়া ৪০০/-
২. মিত্র কর্তৃপক্ষের বিলম্বে জরুরী ব্যয়ের জন্য (যেমন: বিছানাপত্র, পরিধেয়, বেতার) ১,০০০/-
৩. সাধারণ সরবরাহের কমতি এড়িয়ে জরুরী চিকিৎসাখাতে ২৫০/-
৪. প্রত্যেক সদস্যের হাতখরচ হিসেবে ৯/- (বাংলাদেশ সরকার একে দশ টাকায় পরিণত করতে ১/- অনুমোদন দিয়েছেন) ৯,০০০/-
৫. পরিবহন: জিপ এবং ট্রাকের অনুপস্থিতিতে যে কোনো যাতায়াতে ভাড়া করা ট্রাক ব্যবহার করবেন প্রশিক্ষণার্থিগণ। ১০০০ জন প্রশিক্ষণার্থিকে প্রতি ১৫ দিন পর পর অভ্যর্থনা শিবির থেকে যুব প্রশিক্ষণ শিবিরে নেওয়াটা একটা বড় সমস্যা। ক্যাম্প মার্কেটিং, প্রশাসনিক এবং চিকিৎসার জরুরী প্রয়োজনে অন্যান্য পরিবহন দরকার। ভাড়া করা ট্রাকের খরচ যেনো মাথাপিছু ৫/- এর বেশি না হয়। ১০,০০০/-
<003.204.610> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৬. বেজ-ওয়ার্কারদের পরিচয়পর্ব
প্রতি ক্যাম্পে ৪০০ করে ১৫ দিনের জন্য ৩,২০০/-
(ক) সেমসাইডসহ অন্যান্য নিরাপত্তার জন্য পরিচয় পত্র প্রদান, মাথাপিছু ৪/- ৪,০০০/-
(খ) যুব (প্রশিক্ষণ) শিবির থেকে লঞ্চিং পয়েন্টে পরিবহন খরচ, মাথাপিছু ৫/-
(গ) বেজ-ওয়ার্কারগণ সেক্টর কমান্ডারদের নিকট বাংলাদেশে তাদের নিরাপদ কার্যক্রম চালানোর জন্য ৫ দিনের রেশন
(ঘ) অভিষেক বরাদ্দ হিসেবে পাক অর্থ মূল্যে প্রতি প্রশিক্ষণগ্রহীতার জন্য ৫০/- ৪০,০০০/-
অভিষেকে সর্বমোট খরচ ৪৭,২০০/-
প্রতি ক্যাম্পের মাসিক মোট খরচ ৬৭,৮৫০/-
অঞ্চলের মোট ১০ ক্যাম্পের জন্য ৬,৭৮,৫০০/-
৭. অধিদপ্তর (প্রশিক্ষণ):
বরাদ্দ, অফিস ভাড়া, পরিবহণ, ভ্রমণ, আরও কিছু contitmencies (?) ৭,৫০০/-
যুব (প্রশিক্ষণ) শিবিরের সর্বমোট খরচ ৬,৮৫,০০০/-
পূর্ব অঞ্চলের মাসিক খরচ
স্থানীয় অর্থমূল্যে ২,৮৫,০০০ যার ৪,০০,০০০ পাকিস্তানি অর্থে।
এমতাবস্থায় আপনাকে জরুরী ভিত্তিতে অনুরোধ জানাচ্ছি যে-
ক. এসব ব্যয় সম্পর্কে মিত্র কর্তৃপক্ষকে জানাবেন
খ. এর মধ্যে অনুগ্রহ করে অর্থমন্ত্রি অনুমোদিত যুব (প্রশিক্ষণ) শিবিরের জন্য ৬-৬-৭১তারিখে ১৭.৫ লাখ রুপির বরাদ্দের ব্যাপারটি আবারও উত্তোলন করবেন এবং বেচে যাওয়া পরিমাণটি যুব (প্রশিক্ষণ) শিবিরের জন্য ছেড়ে দেবেন।
(অর্থমন্ত্রি একই ধরণের অনুমোদন অন্যান্য অঞ্চলের আরও ২০টি যুব (প্রশিক্ষণ) শিবিরের জন্য দিতে পারেন)
গ. যে কোনো ভাবেই হোক, নিম্নোলিখিত অভিষেক যোগানের ব্যবস্থা করুন, যার অভাবে ১৫০০ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বেজ-ওয়ার্কার এখনও অভিষেকের অভাবে আটকে আছেন। (ফলাফলস্বরূপ শিবিরগুলো বর্তমানে অচলাবস্থায় আছে, পুরো রিক্রুটমেন্ট, ট্রেনিং প্রোগ্রামই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যেখানে প্রতি মুহূর্তেই তাদের মানসিক শক্তি দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে, এমনকি এই রিপোর্ট লিখার সময়েও)
<003.204.611> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
১.প্রশিক্ষণ শিবির থেকে যেখান থেকে শুরু হবে সেখান পর্যন্ত ১৫০০ জনের পরিচয়পত্র ও পরিবহন বাবদ স্থানীয় মুদ্রামানে মাথাপিছু ১০টাকা বরাদ্দ ১৫,০০০/টাকা
২.ভারতীয় মুদ্রামানে / সর্বনিম্ন মুদ্রামানে (pale currency) গড়ে প্রত্যেকের জন্য গ্রহণ ব্যয় ৫০টাকা বরাদ্দ ৭৫,০০০টাকা
বিশেষ আগ্রহের সহিত আপনার দ্রুত পদক্ষেপের অপেক্ষায় রইলাম যদি অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতের দ্বিধাকে পরিহার করতে চান আমি আশা করি আপনি দেখবেন যে এই ফান্ডটি/ভান্ডারটি প্রশিক্ষণ দপ্তরের সম্পাদকীয় কার্যালয়ের অধীনে কাজ করবে ।
সদাসয় বিবেচনার সাথে,
আবু ইউসুফ
পরিচালক
প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক
ট্রেইনিং কো-অর্ডিনেটর
যুব শিবির,পূর্বাঞ্চল
নং.ওয়াই টি সি/২৪৮ ৬অক্টোবর,১৯৭১
চেয়ারম্যান ইস্টার্নজোন কাউন্সিল এবং চেয়ারম্যান ইয়ুথ ক্যাম্পস, ইস্টার্নজোন- অনুগ্রহপূর্বক দেখবেন পত্রে উল্লেখিত ১-৫ নং আইটেমের জন্য তাৎক্ষণিক ব্যয় মোকাবেলার জন্য এবং গোকুলনগর মেঘনা ক্যাম্প থেকে আগত ৫০০জন বেইজ ওয়ার্কার/সর্বনিম্নবেতনের কর্মীদের জন্য তাৎক্ষণিক গ্রহণ ব্যয় এবং যাদের খালাসের নিমিত্তে ৫০০০/-টাকা পরিচালকের দপ্তরে অনিস্পন্ন আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শিবিরের ফান্ডের /ভান্ডারের পরিশোধ // বন্টনের ভিত্তিতে প্রদান করা হয়েছে।
আবু ইউসুফ
পরিচালক
প্রশিক্ষণ সমন্বয়
যুব শিবির, পূর্বাঞ্চল
<003.205.612> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব শিবিরে অনিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ভর্তি না করার জন্য শিবির পরিচালকের একটি বিজ্ঞপ্তি |
মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
৭ অক্টোবর, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
নংঃ ওয়াই টি সি/২৫০ ৭ অক্টোবর, ১৯৭১।
নিয়োগ সমন্বয়ক,
বিষয়ঃ অনিয়মিত নিয়োগ সম্পর্কিত প্রতিবেদন
জনাব,
সম্প্রতি স্থানীয় প্রশাসন জনাব হান্নানের করা ফেনী ক্যাম্পে কিছু সাম্প্রতিক নিয়োগপ্রাপ্তদের (৩-১০-১৯৭১) সম্পর্কে নিম্নলিখিত বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেঃ
ক) স্বাস্থ্য পরীক্ষা।
খ) অধিক বয়স (৪০-৪২ বছর)
গ) অল্প বয়স (৯-১৫ বছর)
ঘ) অস্ত্রচালনা শিক্ষার মিথ্যা আশ্বাস যেখানে নিয়োগ নেয়া হয়েছিল যুব প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের জন্য।
জনাব হান্নান কে এ বিষয়ে ভবিষ্যতে আরো সতর্ক থাকতে উপদেশ দিতে আপনাকে অনুরোধ করা হল।
আপনাকে জানাই সশ্রদ্ধ ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা।
পরিচালক
সমন্বয়, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন,
যুব ক্যাম্প।
অনুলিপিঃ
১) সহকারি পরিচালক, ওয়াইআরসি।
২) জনাব আ হান্নান, হরিনা ক্যাম্প প্রধান,
প্রশাসক, ফেনী ক্যাম্প।
<003.206.613> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব শিবির প্রেরিত বিভিন্ন সামগ্রীর হিসাব | বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কাউন্সিল, পূর্বাঞ্চলীয় জোন | ৮ অক্টোবর, ১৯৭১ |
সরবরাহ বিভাগের কার্যালয়
সরবরাহ কার্যালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
পূর্বাঞ্চল
নং…..২৫২/ তারিখ: ৮/১০/১৯৭১
প্রতি,
সভাপতি মহোদয়
অর্থ কমিটি, ইয়থ ক্যাম্পস
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
পূর্বাঞ্চল।
মহোদয়,
বিনীত নিবেদন এই যে,আপনার প্রদত্ত ০৪-১০-৭১ ইং তারিখের মেমো নম্বর-৭৬৬ অনুসারে জানাইতেছি যে,উক্ত (আগরতলা জাদুঘর) ভান্ডারের কেবলমাত্র ১৩০টি (একশত ত্রিশ) ভিন্ন ভিন্ন দ্রব্যের মোড়ক দ্বারা পরিচালনা করা যাইতেছে, যাহা কলকাতা হইতে বাংলাদেশ সরকার দ্বারা প্রেরিত,তন্মধ্যে ৭৪টি (চুয়াত্তর) মোড়ক বিতরণ গ্রহণ করেন মেজর সুব্রমনিয়াম।ভারতীয় সরকারের ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রধানের অনুসারে উহা প্রশিক্ষণ শিবিরে বিতরণ করা হইয়াছে ।জাদুঘরে গ্রহণকৃত অবশিষ্ট ৫৬টি (ছাপ্পান্ন)মোড়কের মধ্যে ৩২(বত্রিশ)টিরও বেশি মোড়ক অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরীর(এমএনএ,ব্যবস্থাপনা পরিচালক,প্রশাসন) তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী এবং যুব রিসিপশন/হোল্ডিং( দখলকৃত) শিবিরে বিতরণ করা হইয়াছে।যুব শিবিরে শ্রী কে পি ডানা (সেক্রেটারি,সেন্ট্রাল কাউন্সিল)র সাথে বাংলাদেশের সংগ্রামের বিষয়ে আলোচনারত।
১.মোড়কগুলোর বিস্তারিত তথ্যঃ
১.মোজা – ৩টি মোড়ক – ২০০০ জোড়া
২.পিটি জুতা -১০ ওয়াগন বাক্স – ১০০০জোড়া
৩.লুঙ্গি – ৫ বোঁচকা- ২০০০ পিস
৪.বিছানাচাদর – ৭ বোঁচকা – ২০০০ পিস
৫.সসপ্যান- ১২বোঁচকা – ৮২ পিস
৬.পানির ড্রাম – ৫ বোঁচকা – ২৫পিস
৭.এয়ার বালিশ – ১৪ ওয়াগন বাক্স ৫৬ মোড়ক – ২০০০পিস
২.উপরিউক্ত বয়ান অনুযায়ী বিতরণের বিবরণ প্রবন্ধের সাথে প্রেরিত হইলো।
প্রয়োজন অনুযায়ী অতিরিক্ত তথ্যাদি সরবরাহ করা যাইতে পারে পরবর্তী লিখিত বিবৃতিতে।
বিনীত
গাজি গোফরান
ডেপুটি ডিরেক্টর (সরবরাহ)
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
পূর্বাঞ্চল।
<003.206.614> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
নং | শিবির এর নাম | মোজা | জুতা | লুঙ্গি | বিছানার চাদর | সরবরাহ | পানির ড্রাম | বালিশ | মন্তব্য |
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ |
২ | বকশি নগর ৮০০ | ৩০টি | ২৫টি | ২৫টি | |||||
৩ | হাতিমারা ৭০০ | ২৫টি | ২৫টি | ১নং | ২৫টি | ||||
৪ | গোমতী (ডি,সি, পাড়া)৮০০ | ৩০টি | ২৫টি | ১নং | ২৫টি | ||||
৫ | হিজনা (“)৮০০ | ৩০টি | ২৫টি | ২নং | ২৫টি | ||||
৬ | ইসামতি (“) ৮০০ | ৩০টি | ২৫টি | ২নং | ২৫টি | ||||
৭ | ছাত্র সংগঠন | ১৫০টি | ৫নং | ৫০টি | |||||
৮ | শ্রীনগর ৯০০ | ২৫টি | ৩৫টি | ২নং | ১টি | ৩০টি | |||
৯ | তিতাস (হাপানিয়া) ৬৫০ | ৩৫টি | ২০টি | ২নং | ২০টি | ||||
১০ | ব্রম্ভপুত্র (হাপানিয়া)৬৫০ | ২৫টি | ২০টি | ১নং | ২০টি | ||||
১১ | যমুনা(“)৬৫০ | ২৫টি | ২০টি | ২নং | ২০টি | ||||
১২ | গোমতি(“)৬৫০ | ২৫টি | ২০টি | ১নং | ২০টি | ||||
১৩ | বঙ্গবন্ধু(মারাটিলা)৬৫০ | ||||||||
১৪ | বাংলা শার্দুল(“)৬৫০ | ২৫টি | ২০টি | ২নং | ২০টি | ||||
১৫ | জয় বাংলা(“)৬৫০ | ২৫টি | ২০টি | ৩নং | ২০টি | ||||
১৬ | সোনার বাংলা(“)৬৫০ | ২৫টি | ২০টি | ২নং | ২০টি | ||||
১৭ | যুব প্রশিক্ষন শিবির-১(ডিসি পাড়া)৫০০ | ৫৫জোড়া | ৪৭জোড়া | ৫০টি | |||||
১৮ | — শিবির-২(“)৫০০ | ৫০জোড়া | ৪৫জোড়া | ৪২টি | ৬২টি | ৩নং | ১টি | ৬০টি | |
১৯ | — শিবির৩(“)৫০০ | ৪০ “ | ৪০ “ | ১০০টি | ৬০টি৫ | ৩নং | ১টি | ৬০টি | |
২০ | —- | ৫০০ | ৩০টি | ২০টি | ২নং | ১টি | ২০টি | ||
২১ | বারামুরা | ৮০০ | ৩০টি | ২৫টি | ১নং | ১টি | ২৫টি | ||
২২ | হরিনা | ১১০০ | |||||||
২৩ | রাজনগর | ১১০০ | ৫৫টি | ৩৫টি | ১নং | ১টি | ৩৫টি | ||
২৪ | খিনপুর | ২০০ | ২০টি | ১৫টি | ১নং | ১টি | ১৫টি | ||
২৫ | করিমগঞ্জ | ৬০০ | ৫০টি | ৩০টি | ৩০টি | ||||
২৬ | ধর্মনগর | ২০০ | |||||||
২৭ | উদয়পুর | ৬০০ | ৩৫টি | ৩০টি | ২নং | ১টি | ৩০টি | ||
২৮ | বিলইয়া | ২০০ | ২০টি | ১৫টি | ২নং | ১৫টি | |||
২৯ | ছোট্টখোলা | ৫০০ | |||||||
৩০ | কইলাশাহার | ৫০০ | ৩০টি | ৪০টি | ২০টি | ||||
৩১ | মতিনগর | ১০০০ | ৬০টি | ৪০টি | ৩নং | ১টি | ৩০টি | ||
৩২ | নাসিমা(বারামুরার নিকটে) | ২৫০ | ২৫টি | ২০টি | ২নং | ২০টি | |||
৩৩ | কাঁঠালিয়া | ২৫০ | ১০টি | ১০টি | ১নং | ৫টি |
গাজী গোফরান
০৭.১০.১৭
উপ-পরিচালক(সরবরাহ)
বাংলাদেশ সরকার
<003.207.615> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুবশিবিরে বসবাসকারীদের প্রতি কতিপয় নির্দেশ |
বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কউন্সিল, পূর্বাঞ্চল জোন |
৭ অক্টোবর, ১৯৭১ |
গোপনীয়
অতীব জরুরি
নং, যু প্র কে(YTC)/২৪৯ তাংঃ ৭-১০-৭১
আঞ্চলিক কতৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিম্নোক্ত পদক্ষেপ সমুহ অবিলম্বে কার্যকর হবেঃ
১। প্রকৃত evacuee cards এর জন্য, যুব অভ্যর্থনা শিবিরেরর সকল আবাসিকগণ (কর্মচারি এবংযুবা)কে নথিভুক্ত হতে হবে ।এজন্য ক্যাম্প প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকবেন তিনি নিকটস্থ থানায় অনুরোধ করবেন যেন এই উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে (প্রতিদিন বা প্রয়োজন অনুযায়ী) ক্যাম্পে পাঠান হয় ।
২। যুব(প্রশিক্ষন)শিবিরে ভর্তির জন্য এই কার্ড করা হবে যা পরবর্তিতে স্থানীয় কতৃপক্ষের নিকট জমা থাকবে। প্রেরনকারী ক্যাম্পপ্রধান নিশ্চিত করবেন যে এই কার্ড ব্যাতীত কোন যুবক কে যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্রে নিয়োগের জন্য প্রেরন করা হবেনা ।এটা তার দায়িত্ব ।যুবকেন্দ্রে নিয়োগ ফর্ম সেই অনুযায়ী সংশোধিত হবে।
৩। কোন সন্দেহজনক ব্যক্তি ক্যাম্পে আসলে তা স্থানীয় থানাকে অবহিত করাও ক্যাম্প প্রধানের দ্বায়িত্ব । থানা কতৃপক্ষ সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে প্রমানাদি সহ তাদের জিম্মায় নিবেন ।
(আবু ইউসুফ)
পরিচালক
প্রশিক্ষন সমন্বয়ন
যুব ক্যাম্প ,পুর্বাঞ্চল ।
অনুলিপি
১। চেয়ারম্যান ,পুর্বাঞ্চল কাউন্সিল
২। চেয়ারম্যান,যুব অভ্যর্থনা শিবির কমিটি ,তাৎক্ষণিক ভাবে সকল ক্যাম্প প্রধান কে প্রেরণের অনুরোধ সহ।
সকল যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ।
<003.208.616> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব শিবিরে পর্যালোচনা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত |
বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কউন্সিল, পূর্বাঞ্চল জোন |
১২ অক্টবর,১৯৭১ |
যুব শিবির সমুহ
গ্রুপ ক্যাপ্টেন খন্দকার এর সঙ্গে পর্যালোচনা কমিটির মিটিং এ সিদ্ধান্ত সমুহঃ-
ডি সি ও এস ৬-৯-৭১
১।বেসের কাজটি আউটলাইন হিসাবে আমাদের যুব প্রশিক্ষনের পুরা উদ্যোগের গুরুত্বপুর্ন অংশ।
২। বুদ্ধিমান ,অনুপ্রানিত তরুন যে যুবাদের বেসে কাজের জন্য নির্বাচিত করা হবে তাদের বেজের কাজে সম্ভাব্য উৎকৃষ্ট কর্মী হিসাবে চিহ্নিত করে উৎসাহিত করা হবে ।
৩। যারা স্বশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দিবেনা ,তাদেরকেও বসিয়ে না রেখে এই কাজে লাগান উচিৎ ,তাদের পক্ষে যতট সম্ভব কাজ করার জন্য ।যতক্ষন কেও ইচ্ছাকৃতভাবে স্বশস্ত্র যুদ্ধে যেতে না চায় ততোদিন তাকে বেস কর্মী হিসবে রাখাতে কোন ক্ষতি নাই।
৪।সকল বেজ কর্মী অস্ত্রহীন থাকবে ।
৫। তারা সেক্টর কমান্ডারের অধীনে এবং নির্দেশে বাইরে কাজ করতে যাবে ।
৬। যখন একজন বেজ কর্মী তার বিচারে একটি নিরাপদ বেস নির্মান করবে সে জন প্রতিনিধির মাধ্যমে অথবা আ,লীগ কর্মীর মাধ্যমে সেক্টরে জানাবে।
৭। সকল বেজ কর্মীকে ধারাবাহিক কর্মপন্থা সম্পর্কে চুড়ান্ত নির্দেশনা দেওয়া উচিৎ।এইব্যাপারে D.C.O.S পরামর্শ কমিটি কতৃক কৃতজ্ঞতার সংগে গৃহীত হয়েছে ।
(এ ,ইউসুফ)
D.C.O.S সদয় অবগতির জন্য চেয়ারম্যান ,পর্যালোচনা কমিটি
নং যু,প্র,শি ২৫১ ৮,১০,৭১
<003.209.617> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব শিবিরে সুষ্ঠু পরিচালনা সম্পর্কে কর্মকর্তাদের কয়েকটি পরামর্শ | বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কাউন্সিল, পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
১২ অক্টোবর, ১৯৭১ |
যুবপ্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনাঃ
এই ক্যাম্প বাংলাদেশের যুবাদের গঠনমূলক আর্থ-সামাজিক কার্যক্রমের প্রশিক্ষণের জন্য, যাতে তারা টেকসই স্বয়ংসম্পূর্ণ ভিত্তি গড়তে পারে গ্রামের জন্য, যা তাদের জাতির স্বাধীনতা এবং উন্নয়নের একটি মৌলিক ভিত্তি। এই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তাদের ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা অবশ্যই কোন অপ্রয়োজনীয় সুবিধা দিয়ে কোমল করা হবে না বরং তাদের অভাব এবং প্রত্যুতপন্নমতিত্ব এর জন্য কঠোর করা হবে যা আজকের গ্রাম-বাংলার সত্যিকারের স্বয়ং নির্ভরতার জন্য দরকারী।
ঐ কাঠামোর মাঝে ক্যাম্প প্রধানের প্রাথমিক দায়িত্ব, বাংলাদেশের অতি সম্মানিত একজন জন প্রতিনিধি হিসাবে, যুব প্রশিক্ষণের মান এবং দক্ষতা বজায় রাখা।
ক্যাম্প প্রশাসকের প্রাথমিক দায়িত্ব হল ক্যাম্পের সুযোগ-সুবিধা এবং ক্যাম্পের নিরাপত্তার শৃঙ্খলার ব্যবস্থাপনা করা।
কিন্তু যেহেতু উদ্দীপনা ছাড়া যোগ্যতা অর্থহীন এবং শৃঙ্খলা ছাড়া প্রশিক্ষণ অসম্ভব, তাই তাদের দায়িত্ব পারস্পরিক অধিক্রমণীয় এবং যা একজনের জন্য প্রাথমিক দায়িত্ব , তা অন্যজন্যের জন্য মাধ্যমিক দায়িত্ব। এবং পরিকল্পনার সাফল্যের জন্য তাদের নিয়মিত পারস্পরিক বোঝাপরার সাথে পারস্পরিক সহযোগিতা আবশ্যক।
এবং যেহেতু তাঁরা দুইটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করছেন, সমমর্যাদা এবং পারস্পরিক সম্মান তাদের পারস্পরিক কাজের ভিত্তি হবে। নিন্মের মূলনীতিগুলি তাই প্রস্তাব করা হল-
১। ক্যাম্প প্রাঙ্গণেই এই দুই কর্মকর্তা যতটা সম্ভব কাছাকাছি, সমান মর্যাদা নিয়ে থাকবেন এবং সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবেন পরস্পরের সাথে।
২। ক্যাম্প ত্যাগের সময় তাঁরা পরস্পরকে অবহিত রাখবেন এবং নথিভুক্ত জরুরী অবস্থা ছাড়া একই সময়ে ক্যাম্প থেকে অনুপস্থিত থাকবেন না।
৩। সকল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ( নিত্যদিনের কাজ, কর্মীদের অধিবেশন, বিশেষ কার্যাবলী, গুরুতর শৃঙ্খলা বিষয়ক সিদ্ধান্ত ইত্যাদি) তাদের পারস্পরিক পরামর্শ অনুযায়ী হবে, তাদের প্রাথমিক দায়িত্বসমূহ মাথায় রেখে।
৪। ছোট সিদ্ধান্তগুলিও তাঁরা পারস্পরিক পরামর্শ নিয়ে করবেন যদি তাঁরা নিকটে থাকেন। অন্যথা নিকটতম সুযোগেই তাঁরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করবেন।
<003.209.618> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৫। শৃঙ্খলা বিষয়ক সকল সিদ্ধান্ত যা সমন্বিত ভাবে নেয়া কিংবা আলাদাভাবে নেয়া, একসাথেই নথিপত্রে নথিভুক্ত হবে।
৬। কর্মীদের বিরুদ্ধে নেয়া সকল শৃঙ্খলা বিষয়ক সিদ্ধান্ত ক্যাম্পের ইন-চার্জ এর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে নেয়া হবে এবং চরম ঘটনাবলীর ক্ষেত্রে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালকের দপ্তরে ( প্রশিক্ষণ) অবহিত করা হবে।
—/- আবু ইউসুফ
প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক
- / আর ভি সুব্রামোনিয়াম
- মেজর।
সহকারী পরিচালক
ত্রাণ এবং পুনর্বাসন
১২.১০.৭১
<003.210.619> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
ক্যাম্পের সাংকেতিক নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে লেখা চিঠি | বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কাউন্সিল, পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
১৩ অক্টোবর ১৯৭১ |
চরম গোপনীয়
নাম্বার- যুপ্রকে/ক্যাম্পস/৭১-৭২ আগরতলা। ১৩ অক্টবর, ১৯৭১।
প্রতি,
প্রশাসক,
পদ্মা/মেঘনা/গঙ্গা/যমুনা/মোহারি/তিস্তা/ফেনী/ কল্যাণপুর
বিষয়ঃ সংকেতলিপির পরিবর্তন।
১। নিন্মের সংকেত লিপিগুলি পত্রবিনিময়ে আশু প্রয়োগের জন্য ব্যবহৃত হবে-
পুরাতন ১। পদ্মা ২। মেঘনা ৩।গঙ্গা ৪।যমুনা ৫।মোহারি ৬।তিস্তা ৭।ফেনী ৮।কল্যাণপুর
|
নতুন ক্রিকেট গলফ টেনিস হকি ফুটবল পোলো কাবাডি সাঁতার
|
স্বাক্ষরে-
আর ভি সুব্রামোনিয়াম
সহকারী পরিচালক
প্রতিলিপি-
১। আরসিআরও
২। টিআরজি। সমন্বয়ক, বাংলাদেশ আগরতলা।
<003.211.620> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
<003.211.621> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব শিবির, এলাকা ও শিবির প্রধানের একটি তালিকা | বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কাউন্সিল, পূর্বাঞ্চলীয় জোন | ১৮ অক্টোবর, ১৯৭১ |
বাংলাদেশ মুক্তিসংগ্রাম পরিষদ (পূর্বাঞ্চল) কর্তৃক অনুমোদিত, পরিচালিত ফাইলসমূহের তালিকা
ক্রমিক নং – ফাইল নং – স্থান – জেলা/অঞ্চল। – শিবির প্রধান। |
(ক) ১. উতলাইপুর আবদুল্লাহ হারুণ
(খ) ২. সাইলাক হারত চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চল সাবেদুর রহমান
(গ) ৩. হরিনা চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চল এম এ হান্নান
(ঘ) ৪. শ্রীনগর/বরিশমুখ ” খাইরুদ্দিন আহমেদ,এমপিএ ও
ওবায়দুল্লাহ মজুমদার, এমপিএ
(ঙ) ৫. উদয় পুর-১/পালাটোনা নোয়াখালী ক্যাপ্টেন এস. আলী, এমপিএ
(চ) ৬. চাতাখোলা ” খাজা আহমেদ,এম এন এ।
(ছ) ৭. রাজানগর ” এ হানিফ এম এন এ
(জ) ৮. কাঁঠালিয়া /বারমুরা কুমিল্লা জালাল আহমেদ
(ঝ) ৯. হাতিমারা / কামাইনগর ” এম এ রশিদ এম পি এ
(ঞ) ১০. বুনগর/ চায়মারা ” প্রফেসর এ রউফ
(ট) ১১. মালাগড়। ” ক্যাপ্টেন শওকত
(ঠ) ১২. আশ্রমবাড়ি/ খোয়ায়। সিলেট মোস্তাফা শহীদ এম পি এ
(ড) ১৩. কৈলাশর ” আজিজুর রহমান এমপিএ এবং মানিক চৌধুরী
(ঢ) ১৪. ধর্মনগর। “
(ণ) ১৫. পাথরকান্দি /করিমগঞ্জ ” তৈমুর এম পি এ, আবদুল মালেক
(ত) ১৬. কংগ্রেস ভবন (ঢাকা ও কুমিল্লার জন্য আগরতলা ট্রানজিট) ফজলুর রহমান, এমএনএ
(থ) ১৭. নরসিংগড় সিলেট দেওয়ান আব্দুল আব্বাস এম পি এ
(দ) ১৮. বলতালি ” গাজী ফজলুর রহমান এম পি এ
(ধ) ১৯. মোহনপুর-১। ” শরীফুদ্দিন এম পি এ
(ন) ২০. কমলপুর ” আলতাফুর রহমান এম পি এ
নিয়মিত প্রশিক্ষণ শিবির
প্রস্তাবিত শিবিরের সংখ্যা
(প) ২১. গোকুলনগর। ৪ শামসুল হক এম পি এ।
(ফ) ২২. পদ্মনগর। ৩/৬ দেওয়ায়ান আবুল আব্বাস এম এন এ
হামিদুর রহমান
স্বাক্ষর………………..
পরিচালক সমন্বয়সাধক
প্ল্যানিং এবং প্রোগ্রামিং যুব শিবির
১৮.১০.৭১
<003.212.622> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
রিক্রুটমেন্টের ক্ষমতাপ্রাপ্ত জনাব খালেদ মাহমুদ আলীর দলকে সহযোগীতাদানের জন্য যুবশিবির পরিচালকের একটি বিজ্ঞপ্তি |
বাংলাদেশ সরকার, মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ, পূর্বাঞ্চলীয় জোন
|
১৯ অক্টোবর, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
নং-যুপ্রশি/ ২৮২। ১৯.১০.১৯৭১
সহকারী পরিচারক/ ওয়াই আর সি
১৪.১০.১৯৭১ ইং এর আলোচনার পর আমার আরো নিশ্চিত করা দরকার যে COS ও BDF অনুযায়ী ১২.১০.১৯৭১ উল্লেখিত টারিখের চিঠি নং 200I/BDF/A (কপি সংযুক্ত করা হয়েছে) তে জনাব খালেদ মাহমুদ আলীর এর নিন্মোক্ত সত্যায়িত স্বাক্ষর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বাংলাদেশের বাহিনীর রিক্রুটমেন্ট সংগঠিত করার জন্য বিবেচিত হবে।
যেকোনো রিক্রুটিং দল যুব প্রশিক্ষণ থেকে যেন প্রদত্ত সকল সুযোগ সুবিধা নিয়ে তার দ্বারা অনুমোদিত হতে পারে।
সত্যায়িত …… স্বাক্ষর
প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক
অনুলিপিঃ
কমাণ্ডার ডেল্টা সেক্টর।
সি ও এস
জনাব খালিদ মো. আলী
<003.213.623> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব শিবির পরিচালক, প্রশিক্ষণ সমন্বয় কর্মকর্তার কাছে প্রেরিত যুব শিবির রিক্রুটমেন্ট প্রধানের একটি চিঠি |
বাংলাদেশ সরকার, মুক্তিসংগ্রাম পরিষদ পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
১৯ অক্টোবর, ১৯৭১ |
প্রেরক: খালেদ মোহা: আলী
পরিচালক, প্রণোদনা।
নতুন সদস্য সমন্বয়ক এবং
সৈন্য চালনা সমন্বয়ক।
নং:MRC/283 তারিখ: ১৯ জুন ১৯৭১
প্রতি:
ড. আবু ইউসুফ
প্রশিক্ষক সমন্বয়ক
বিষয়: নতুন সৈনিক ভর্তি
শ্রদ্ধেয় জনাব,
আমাদের পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমি স্বাক্ষরিত অনুমতি সহ রিক্রুটিং টিম পাঠিয়েছিলাম, যুব শিবির গুলো থেকে প্রশিক্ষণার্থী সংগ্রহের জন্য কিন্তু সংশ্লিষ্ট পরিচালকদের উদ্বিগ্নতা তাদের অখুশি করেছিল। পরে আমি চারিলাম যুব শিবিরে গিয়েছিলাম নতুন প্রশিক্ষণার্থী সংগ্রহের জন্য, কিন্তু সেই একই অচলবস্থার অভিজ্ঞতা হলো যার কারণ সংশ্লিষ্ট শিবির পরিচালকেরাই ভালো জানবেন।
পরে আমি অভ্যর্থনা শিবির হতে নতুন সদস্য ভর্তি করতে ভাধ্য হলাম যাতে করে থানা ভিত্তিক কোটা পুরন করে প্রশিক্ষণ ত্বরান্বিত করা যায়। আমি আরো মনে করছি যদি এই সমস্যা অচিরেই সমাধান করা না যায় তবে আমাদের প্রশিক্ষণ ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
এটা আপনার সদ্য অবগতির জন্য।
আপনাকে ধন্যবাদ আপনার সংশ্লিষ্টতার জন্য।
আপনার অনুগত
কে.এম.আলী
<003.214.624> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব শিবিরে নবাগতদের ভর্তির ব্যাপারে শিবির পরিচালকদের কয়েকটি জরুরী নির্দেশ |
বাংলাদেশ সরকার, মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ, পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
৪ নভেম্বর, ১৯৭১ |
গোপনীয়
খুব গুরুত্বপূর্ণ
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আকাংখিত নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো অতিদ্রুত বাস্তবায়ন করবে আশা করছি:-
১. নবীন বরন ক্যাম্পের সকল বাসিন্দা(কর্মচারী ও যুব) সকলে বহিঃগমন কার্ডের জন্য যথাযথভাবে নিবন্ধন করাবে। (ক্যাম্প প্রধানদের দ্বায়িত্ব কাছের থানার মাধ্যমে এ কাজ সম্পূর্ণ করা, যাদের প্রতিদিন বা প্রয়োজন অনুসারে ভাতা প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে)
২. নবীন (প্রশিক্ষণ) ক্যাম্পে অন্তর্ভুক্তকরন এই কার্ডের সাথে সম্পৃক্ত, যেটা কিনা পরবর্তীতে স্থানীয় কতৃপক্ষের কাছে জমা থাকবে। (নবীন(প্রশিক্ষণ) ক্যাম্পে যাতে কার্ডধারি বাদে অন্য কেউ অন্তর্ভুক্ত না হতে পারে সেটা ক্যাম্প প্রধানদের দ্বায়িত্ব। উপযুক্ত অন্তর্ভুক্তি ফর্ম নির্দেশানুসারে তৈরি হবে)
৩. কোন সন্দেহভাজন ব্যাক্তি তাদের ক্যাম্পে প্রবেশ করলে ক্যাম্প প্রধান তা স্থানীয় থানায় অবহিত করবে। থানা কর্তৃপক্ষ সন্দেহের আলামতসহ সন্দেহভাজন কে হাজতে রাখতে পারবে।
এসডি/-
পরিচালক
সমন্বয়, পরিকল্পনা এবং কার্যসূচি
নবীন ক্যাম্প
০৪.১১.৭১
চেয়ারম্যান, পূর্বাঞ্চল কাউন্সিল
চেয়ারম্যান, নবীন বরন কমিটি
সকল ক্যাম্প প্রধানদের কাছে অতিদ্রুত পাঠানোর জন্য আবেদন করা হচ্ছে
সকল নবীন (প্রশিক্ষণ) ক্যাম্পের ইন-চার্জ
<003.215.625> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
পূর্বাঞ্চলীয় শিবিরের তালিকা |
বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কাউন্সিল পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
১৮ অক্টোবর, ১৯৭১ |
সহকারে
(ক্যাম্প প্রধানগণ)
ক্যাম্পের অবস্থান (প্রস্তাবিত ক্যাম্প অবস্থান) |
ক্যাম্প প্রধান | |
ক) চট্টগ্রাম এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম
খ) নোয়াখালী
গ) কুমিল্লা
ঘ) সিলেট
ঢাকা ও কুমিল্লার জন্য আগরতলায় ট্রানজিট ক্যাম্পসমুহ
|
১.হারিয়ানা ২. শ্রীনগর অথবা খাইরুদ্দিন আহমেদ। হাড়িশামুক(ওবায়দুল মজুমদার. MNA) ৩.উদয়পুর(প্লাটানা)
১.ছোটাখোলা ২.রাজনগর
১. কাঁঠালিয়া(বারামুরা) ২.হাতিমারা(কামালনগর) ৩.বুনাগড়(ছায়মারা) ৪.মালাগাঁর
১.আসরামবাড়ি(খোয়াই) ২.খাইলাশহর
৩ . ধর্মনগর ৪.পাথরকান্দি(করিমগন্জ)
১.কংগ্রেস ভবন ২.নারসিংগড় ৩.বেলতলী ৪.মোহনপুর ৫.কামালপুর
|
এম. এ. মান্নান. এএন.
ক্যাপ্টেন. এস. আলি. MNA
খাজা আহমেদ. MNA এ. হানিফ. MNA
জালাল আহমেদ. MPA এম. এ. রশিদ. MPA প্রোফেসর এ. রউফ ক্যাপ্টেন সৌকত
মোস্তফা শহিদ. MPA আজিজুর রহমান. MPA মানিক চৌধুরী. MNA তানজুর আলী. MPA জনাব আব্দুল মালিক
ফজলুর রহমান. MNA দেওয়ান আব্দুল আব্বাস. MNA কাজি ফজলুর রহমান. MPA জনাব আলতাফুর রহমান. MPA
|
ক। বিভিন্ন জেলার নবীন বরন ক্যাম্প
বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ, পূর্বাঞ্চল কর্তৃক অনুমোদিত
১. উদয়পুর (II)- জনাব আব্দুল্লাহ হারুন, এমপিএ
২. শৈলাছড়া(পার্বত্য চট্টগ্রাম) – জনাব সাইদুর রহমান
<003.215.626> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
২. নিয়মিত প্রশিক্ষণ ক্যাম্প সমূহঃ
এলাকাঃ | প্রস্তাবিত শিবিরের সংখ্যাঃ | বিদ্যমান শিবিরের সংখ্যাঃ |
ক্যাম্প প্রধান ডেপুটি ক্যাম্প প্রধান |
(ক) গোকূলনগর (এখন সার্বিক দায়িত্বে আছেন জনাব শামসুল হক এমপিএ)
|
৪ | ২ |
ক) স্যামুয়েল হক এম.পি.এ ওয়াইজুদ্দিন (★ ক্যাম্প নং) খ) দেওয়ান আবুল কাশেম এম.এন.এ |
(খ) প্যাড ম্যানেজার | ৩/৬ | শূন্য | হামিদুর রহমান |
প্রতিটি ক্যাম্পের ব্যাবস্থাপনা কমিটি যে সকল বিষয়ে
(১) ‘ক্যাম্প চিফ’ মুক্তি পরিষদ কর্তৃক নিযুক্ত হইবে।
(২) ‘dy ক্যাম্প চিফ’ মুক্তি পরিষদ কর্তৃক নিযুক্ত হইবে।
(৩) ‘ক্যাম্প সুপারভাইজার’ ডিরেক্টর এ্যাডমিরাল দ্বারা মনোনীত হয়ে ‘ক্যাম্প চিফ’ কর্তৃক নিযুক্ত হবে।
(৪) ‘রাজনৈতিক প্রশিক্ষক’ প্রশিক্ষণ এবং সমন্বয় পরিচালক দ্বারা মনোনীত হয়ে ‘ক্যাম্প চিফ’ কর্তৃক নিযুক্ত হবে।
(৫) ‘শারীরিক প্রশিক্ষক’ ‘ক্যাম্প চিফ’ কর্তৃক নিযুক্ত হবে।
(৬) ‘মেডিকেল অফিসার’ (স্বাস্থ্য) উপ-পরিচালক দ্বারা মনোনীত হয়ে ‘ক্যাম্প চিফ’ কর্তৃক নিযুক্ত হবে।
(৭) ‘ক্যাম্প প্রশাসক’ (যেখানে নিযুক্ত) স্থানীয় সরকার দ্বারা।
(৮) ‘অস্ত্র প্রশিক্ষক’ (যেখানে নিযুক্ত) স্থানীয় সরকার দ্বারা।
স্বাক্ষরঃ —————
পরিচালক
সমন্বয়, পরিকল্পনা এবং প্রোগ্রামিং
যুব শিবির
১৮.১১.৭১
<003.216.627> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব শিবির পরিচালনা ও তার কার্যক্রম সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন |
বাংলাদেশ সরকার, লিবারেশন কাউন্সিল, পূর্বাঞ্চলীয় জোন |
……… ১৯৭১ |
পূর্ব অঞ্চলের যুব শিবিরের অপারেশন ও ব্যাবস্থাপনা
যুব শিবিরের মূল লক্ষ্য ছিল সবার কর্মপন্থা একমুখী করন এবং সাথে সাথে পশ্চিম পাকিস্তানীদের অমানুষিক নির্মমতা ও গণহত্যার সময় বাংলাদেশ থেকে আসা যুব সম্প্রদায় কে প্রশিক্ষন দেয়া। প্রকৃতপক্ষে এই যুব শিবির গুলোর অবস্থান ছিল বিভিন্ন সীমান্তের প্রবেশ-পরিবহন পথে এবং এগুলোর কিছু কিছু এখনো আছে যেগুলো প্রবেশ-পরিবহন ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার না করে যুব শিবির হিসেবে ব্যবহার করা হয় যাতে সেই সব যুবকদের কিছু প্রাথমিক প্রশিক্ষন দেয়া যাবে যারা এলোমেলো ভাবে সাজানো যুব শিবির গুলো খুজে না পেয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে।
যুব শিবির গুলো স্থাপন করতে গিয়ে অনিয়মিত ভাবে দেরি হয়ে যায়। আমাদের ছেলেরা হতাশ এবং মাতৃভূমি স্বাধীন করার জন্যতাদের মনে যে উদ্যম ছিল তাতে ভাটা পড়তে শুরু করে। বাসস্থানের অপ্রতুলতা আর প্রশিক্ষনের দুরাবস্থা দেখে শ’য়ে শ’য়ে ছেলেরা তাদের মানসিক উদ্যম হারিয়ে ফিরে যাচ্ছে। গতানুগতিক ভাবে যুব শিবির ব্যাবস্থাপনা চলতে থাকলে পুরো পরিকল্পনায় ব্যর্থ হয়ে যাবে কারন বাংলাদেশি যুবকরা কোন পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়ায় এখানে চলে আসে। এই যুব শিবির গুলো পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু কিছু পরিস্থিতির জন্য যুবকদের আসা এক সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই কারনেই প্রবেশ-পরিবহন পথে এই যুব শিবির গুলো প্রয়োজন। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে যুব শিবির গুলোকে যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্রে রুপান্তর করা এবং ক্রমান্বয়ে আরও যুব শিবির স্থাপন করার প্রস্তাব বিবেচনা করার জন্য বলা হয়। বর্তমানে তিন রকম যুব শিবির আছে, যথাঃ প্রথমত যেসব শিবির সীমান্তের যুবকদের থাকার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দ্বারা স্থাপিত।
যেহেতু এখনো তিনটি ব্লকে ১০০০০ যুবকদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি, এই শিবির গুলোকে যুবকদের চাহিদা মোতাবেক প্রাথমিক প্রশিক্ষন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। শিবির গুলো হলঃ
(১) ১০০০ জনের ক্ষমতা নিয়ে হরিনা। এই সংখ্যা নির্ভর করে একদিনে কতজন যুবক আসে তার উপর। এই শিবিরে আমাদের পরিকল্পনা মোতাবেক যাবতীয় প্রশিক্ষন দেয়ার ব্যবস্থা আছে। এটা সীমান্তের কাছে নয়। আমাদের সেক্টর কমান্ডার (হরিনা সেক্টর যুব শিবিরের চূড়ার ঠিক বিপরীত দিকেই) যুবকদের প্রশিক্ষনের দায়িত্ত নিতে পারে।
আমি ইতিমধ্যেই মেজর মেহতা, ডেপুটি ডিরেক্টর, যুব শিবির অপারেশন কে অনুরোধ করেছিলাম তার একজন অফিসার কে যুব শিবিরে নিয়োগ দেয়ার জন্য কিন্তু প্রকৃত প্রশিক্ষন (অস্ত্র) শুরু করা যাবে শুধুমাত্র স্থানীয় মিলিটারি কর্তৃপক্ষের সম্মতিক্রমে। জনাব এম. এ. হান্নান, সচিব, চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগ হচ্ছেন ক্যাম্প প্রধান।
<003.216.628> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
ক্যাপ্টেন চ্যটার্জি এখন মেজর মেহতার (ছুটিতে) পরিবর্তে কাজ করছেন এবং আশ্বাস দিয়েছেন যে ক্যাম্পে একজন অফিসার নিয়োগ দিবেন।
(২) ছেতাকখোলাঃ (আকিনপুরের কাছে) এই ক্যাম্প টি ৪০০ জোয়ান রাখার মত ক্ষমতা রাখে। যেহেতু এটা সীমান্তের কাছে, তাই এটাকে ভেতরে স্থানান্তর করতে হবে কিন্তু এখন পর্যন্ত এরকম কোন পরিকল্পনা করা হয়নি। জনাব খাজা আহমেদ এমএনএ হচ্ছেন এই ক্যাম্পের প্রধান।
এখানে জোয়ানরা মুক্তিবাহিনীর সাহায্যে প্রশিক্ষন নিচ্ছে।
(৩) রাজনগরঃ এখন এই ক্যাম্পে ৪০০ জন জোয়ান থাকতে পারে কিন্তু এটাকে বাড়িয়ে ১০০০ জন করার সুযোগ আছে। মেজর মেহতার একজন অফিসার ক্যাপ্টেন আর.পি. সিং (জানা গেছে তিনি এখন অন্য ক্যাম্পে স্থানান্তর হয়েছেন) কে এই ক্যাম্পের কর্মকাণ্ড পরিচালনার দায়িত্ত দেয়া হয়েছে। আমাদের বারংবার অনুরোধ সত্তেও ক্যাম্পগুলো বানানো হয়েছে শামুকের গতিতে আর এইদিকে বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন আসা জওয়ানদের আশ্রয় দিতে গিয়ে আমরা অনেক চাপে আছি। প্রফেসর এ. হানিফ এমএনএ হচ্ছেন ক্যাম্প প্রধান।
(৪) সোনামুড়াঃ এই এলাকায় ৪ টি ক্যাম্প আছে। সেগুলো হলঃ
(ক)কাঁঠালিয়াঃ ১০০০ জনের ক্ষমতা সম্পন্ন এই ক্যাম্পে সর্বচ্চ ৮০০ জন থাকতে পারে। প্রতিদিন শয়ে শয়ে আশ্রয় নিতে আসা যুবকদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে যার কারন হচ্ছে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে।
(খ)হাতিমারাঃ ৮০০ জনের ক্ষমতা সম্পন্ন (যেটা সহজেই ১০০০ জন করা যায়) এই ক্যাম্পে জনাব মেহতা ক্যাপ্টেন শর্মা(এখন তিনি এখানে নেই) কে এই ক্যাম্পের দায়িত্ত দিয়েছেন কিন্তু পরিবহন সমস্যা, নির্মাণ দ্রব্য এবং ক্যাম্পের জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অপ্রতুলতার কারনে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোন উন্নতি হয়নি। জওয়ানদের জন্য দরকারি প্রশিক্ষন দেবার মত ব্যবস্থা এই ক্যাম্পে আছে। এমনকি জোয়ানরা কিছু প্রাথমিক প্রশিক্ষন নিয়ে বাংলাদেশে কিছু অপারেশনাল কর্মকাণ্ডও চালিয়েছে। জনাব এম. এ. রশিদ এমপিএ এই ক্যাম্পের প্রধান।
(গ)বুক্ষানগরঃ এই ক্যাম্পের ক্ষমতা ৮০০ জন জোয়ানের কিন্তু সবসময় এই ক্ষমতা বাড়িয়ে কমপক্ষে ১০০০ করার একটা চাপ থাকতো, কারন ক্যাম্প কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশ থেকে আসা জোয়ানদের ফিরিয়ে দিতে হয়। অনেক বেশি জোয়ান আগমনের কারনে মাঝে মাঝে অস্থায়ী ভাবে ১০০০ জনকে এখানে আশ্রয় দেয়া হয় যাদের পরবর্তীতে সম্ভব হলে অন্য কোথাও সরিয়ে নেয়া হয় অথবা লারচে রেখে দেয়া হয়। জনাব মেহতা, ক্যাপ্টেন দাস কে এই ক্যাম্পের দায়িত্ব দেন কিন্তু তিনি তেমন কোন উন্নতি দেখাতে পারেননি কারন অন্যান্য ক্যাম্পের অফিসারদের মত তাকেও অনেক প্রতিকূলতার মোকাবেলা করতে হয়। প্রফেসর এ. রউফ এই ক্যাম্পের প্রধান। এখানে জোয়ানরা প্রশিক্ষন নেয়ার পাশাপাশি কিছু অপারেশনেও অংশ গ্রহন করছে।
(ঘ)মেলাঘরঃ এই ক্যাম্প কে আলাদা ভাবে বিবেচনা করতে হবে। সেক্টর ২ এর মুক্তিবাহিনী ক্যাম্পের সাথে এটি সংযুক্ত। এই ক্যাম্পে ১০০০ জোয়ান আছে।
(৫) উদয়পুরঃ এই ক্যাম্পটি সম্প্রতি শুরু হলেও স্থানীয় অফিসার, বিশেষ করে এএডিএম জনাব ব্যানার্জির সহযোগিতার জন্য এর অগ্রগতি চমৎকার। এই ক্যাম্পের ক্ষমতা বর্তমানে ১২০০ এবং এটি ১৫০০ করার প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।
<003.216.629> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
ক্যাপ্টেন এস আলি এম এন এ ক্যাম্পের প্রধান। ছেলেগুলো প্রাথমিক প্রশিক্ষন নিতে শুরু করেছে। ক্যাম্পটি উদায়পুর থেকে ৫কিমি দূরে পালাতানা নামক একটি আর্দশ স্থানে গঠিত হয়েছে। যেহেতু ক্যাম্পটি জনাব আলি এম এন এর মত একজন সক্ষম এবং অবসরপ্রাপ্ত আর্মি ক্যাপ্টেন দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে তাই ইয়থ ক্যাম্প অপারেশন থেকে আলাদা কোনো ডেপুটি ডিরেক্টর প্রেরন করা হয়নি।এই ক্যাম্পটিকে আলাদা ভাবে ইয়থ ক্যাম্প হিসেবে চেনা যায় কারন এটা মূল পরিকল্পনা অনুযায়ী এভাবেই বিবেচিত বা গঠিত।
(৬) মোহনপুরঃ এই ক্যাম্পের বর্তমান জনক্ষমতাবল ৪৫০। জনাব শরীফুদ্দিন আহমেদ, এমপি এ এই ক্যাম্পের প্রধান। ক্যাম্পটি যথেষ্ট পরিমান বড় করার সুযোগ থাকা সত্যেও নির্মান জটিলতার কারনে তা সম্ভব হচ্ছে না। ক্যাপ্টেন চ্যাটার্জি এই ইয়থ ক্যাম্পের বর্তমান ডেপুটি ডাইরেক্টর হিসেবে বিষয়টিতে দৃষ্টিপাত করছেন।
(৭)সিলেটঃ বর্তমানে সিলেটে তিনটি ইয়থ ট্রানজিট রয়েছে,সেগুলো:
(ক)পথেরকান্দিঃ এখানে প্রায় ৫০০জন সক্ষম যুবক রয়েছ। জনাব আব্দুল মোমেন,সিলেট বিভাগের আওয়ামীলীগের কার্যনির্মাতা এই ক্যাম্পের প্রধান।
(খ)খোয়াইঃ এই ক্যাম্পটি সম্পূর্নভাবে সুগঠিত নয়। এর সক্ষমতা সংখ্যা ২০০জনের। কিন্তু প্রায় ১০০ বা তারও অধিক যুবক বাসস্থানের অভাবে বিভিন্ন বাড়িতে বা স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এই ক্যাম্পের প্রাধান হলেন জনাব মোস্তফা শহিদ এমপি এ।
ইন্ডিয়ান সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী একজন অফিসার ক্যাপ্টেন ধর কে পাঠানো হয়েছে,এই ক্যাম্পটিকে সুগঠিত করার জন্যে।(যদিও রিপোর্টি প্রত্যাহার করা হয়েছে)। যদি এই জায়গার নির্মান কাজ দ্রুত ও সহজসাধ্য ভাবে করা যায় তাহলে এখানে প্রায় ১০০০ জন যুবার সংস্থান করা যাবে। এই একই সমস্যা যেমন নির্মানকাজ,পরিবহন,রেশন এবং প্রয়োজনীয় জিনিষের সরবরাহজনিত সমস্যা অন্যান্য ক্যাম্পগুলোর মতো এখানেও লেগে আছে।
(গ)কালিয়াশহরঃ গঠনগত সমস্যার কারনে এই ক্যাম্পটি এতটা সুসংগঠিত না। বর্তমানে বলা হচ্ছে যে এই ক্যাম্পটিতে প্রায় ৩০০ নতুন সক্ষম যুবক একত্রিত হয়েছে। জনাব মানিক চৌধুরী এম এন এ এই ক্যাম্পের প্রধান।
এই যাবতীয় ইয়থ ক্যাম্পের কার্যাবলীগুলো মূলত পূর্বে অনুমোদিত পরিকল্পনা অনুসারে পরিকল্পিত যা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। বাংলাদেশ থেকে ক্রমাগত বিপুল সংখ্যক ১৬-২৫ বছর বয়সীদের আগমন করছে,এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্যে তাদের জন্যে ট্রানজিট ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা দরকার। ইয়থ ক্যাম্পের দ্বিতীয় বিভাগের কাজ হলো অভ্যর্থনা-পাশাপাশি-ট্রানজিট ক্যাম্প হিসেবে কাজ পুনঃপরিচালনা করা।
ক্যাম্পগুলো হলোঃ
(১)ধর্মনগরঃ এটা ত্রিপুরার মূখ্যমন্ত্রী দ্বারা অনুমোদিত এবং এটা বর্তমানে এটা ২০০ সক্ষম যুবা ধারনে সক্ষম যা সঠিক বাসস্থান ব্যবস্থা দ্বারা ১০০০ এ রূপান্তরিত করা যাবে। জনাব তাইমুজ আলি এম পি এই ক্যাম্পের প্রধান।
(২)নার্সিংতারঃ এই ক্যাম্পটি মূলত প্রায় ৬০০জন যুবক নিয়ে গঠিত যাদের গোকূলনগর ক্যাম্পে সরিয়ে নেয়া হবে কিন্তু কুমিল্লা,ঢাকা,ফরিদপুর থেকে বিপুল পরিমান যুবক আসার জন্যে আমরা এই ক্যাম্পটি বন্ধ করবো না এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ক্যাম্প বন্ধ করার চাপ থাকা সত্ত্বেও এখানে ক্রমাগত প্রশিক্ষন পরিচালনা চলবে। জনাব দেওয়ান আব্দুল এম এন এ এই ক্যাম্পের প্রধান।
<003.216.630> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(৩)বেলতলিঃ এই ক্যাম্পটি ৪০০জন যুবকের ক্ষমতা নিয়ে গঠিত(সক্ষমতা আর বৃদ্ধি সম্ভব নয়)।জনাব আনিসুর রাহমান এই ক্যাম্পটি মূলত তত্ত্বাবধান করতেন,কিন্তু বর্তমানে জনাব গাজী ফজলুল রহমান এই ক্যাম্পের প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
(৪)কংগ্রেস ভবন(আগরতলা)ঃ এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে আমাদের যুবকদের এখানে অস্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি দিতে হয়েছে। এই অস্বাভাবিক রকম স্বল্প ও অযোগ্য স্থানে পরিবর্তিতভাবে প্রায় ৩০০-৪০০জন যুবককে প্রায় বস্তাবন্দি অবস্থায় থাকতে হবে। যেহেতু এখানে রান্নার ব্যবস্থা নেই এবং আশেপাশে রান্নার ব্যবস্থাও করা সম্ভব না,যুবকদের তাদের খাদ্যের জন্যে ৩ মাইল দূরে বেলতলিতে যেতে হয়। এটা একপ্রকার অসহনীয় ব্যাপার যা আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেও লাঘব করতে পারি না।
প্রস্তাবিত ট্রানজিট ক্যাম্প স্থাপনঃ
উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি যাকে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ,পূর্ব জোন নামকরন করা হয়েছে সেখান থেকে আগরতলাকে নিম্নলিখিত ট্রানজিট স্থাপনের জন্যে ও সেই অনুসারে কাজের সুপারিশ করা হচ্ছে।
(ক)কামালপুরঃ জনাব আলতাফুর রহমান এম এন এ কে ক্যাম্পটি্কে সুসংগঠিত করার জন্যের ক্যাম্পের প্রধান হিসেবে পাঠানো হলো।
(খ)হারিশামুখঃ (শ্রীনগর থেকে আম্রিঘাট)
জনাব ওবায়দুল মজুমদার এম এন এ এবং জনাব খায়রুদ্দিন এমপিএ কে ক্যাম্পটিকে সুসংগঠিত করার জন্যে অনুরোধ করা হলো।
(গ)শীলচরঃ আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম পাহাড়ী জোনের প্রধানের সুপারিশে চট্টগ্রাম পাহাড়ী জোন থেকে আগত যুবকদের জন্যে একটি ট্রানজিট ক্যাম্প সমন্বিত করা হলো।
(ঘ)উদয়পুরঃ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত যুবকদের কেন্দ্রিভূত করে ইয়থ ক্যাম্পে অথবা শরনার্থী শিবিরে পাঠানো হলো যা বাস্তব সমস্যা পর্যবেক্ষন করতে পারে। আল-হারুন এমপি কে প্রধান করে একটি ট্রানজিট ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্থাবনা দেয়া হলো।
(ঞ)একিনপুরঃ উদয়পুরের মত একই পরিস্থিতির জন্যে এখানেও একটি ট্রানজিট ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্থাবনা দেওয়া হলো। প্রস্তাবিত ট্রানজিটটি স্থাপন করতে হবে যাতে বিশেষভাবে বিবেচিত যুবকদের ক্যাম্পে আগমন সহজ হয় এবং অপেক্ষমান থাকতে না হয়।
একই রকম ট্রানজিট চাহিদা ও পরিস্থিতির উপর বিবেচনা করে ভবিষ্যতে স্থাপন করা যেতে পারে।
ইয়থ ক্যাম্প পরিচালনা করতে যেয়ে বহুল সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে,যেহেতু পর্যাপ্ত বাসস্থান,সঠিক রেশন(সম্প্রতি মাথাপিছু ৪০০ গ্রাম চাল কোটা ৩০০ গ্রামে সংকুচিত করা হয়েছে কিছু সংখ্যক ক্যাম্পে,যার মাথাপিছু হার ১.১০পয়সা করে)শয্যাস্থান,পরিধেয় কাপড় সঠিক ভাবে সরবরাহ করা যাচ্ছে না।এছাড়াও বিভিন্ন ন্যূনতম জীবনযাপনমূলক প্রয়োজনীয় বস্তু যেমন পানি সুবিধা,স্যানিটেশন সুবিধা পরিকল্পিত অনুমোদন অনুসারে এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায় নি। এখন পর্যন্ত যুব শিবির পরিকল্পনা অনুযায়ী অনুমোদিত কোন কিছুই আমরা ঠিকমতো পাই নি।
<003.216.631> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
আমাদেরকে প্রয়োজনীয় জিনিষের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং পাশাপাশি অসমৃদ্ধ তহবিল থেকে সবাইকে সম্পূরক খাদ্যের ব্যবস্থা যেমন সবার জন্যে .২৫ পয়সা নাস্তা বাবদ বরাদ্দ করতে হবে কারন যুবকরা শারীরিক কসরত আর তুলনায় পর্যাপ্ত খাবার পায় না। যদি অবস্থা এমনি চলতে থাকে তাহলে ক্যাম্প বন্ধ করে দিতে হবে কারন পরিস্থিতি সামলানোর মত আর খুবই সীমিত অয়োজন রয়েছে।
গোকূলনগরঃ ক্যাম্পটিকে বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করে স্থাপন করা হয়েছে,যেহেতু ইয়থ ক্যাম্প একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় পরিচালিত হয় তাই পরিকল্পনা অনুযায়ী এটা কে ৩ টি ব্লকে সাজানো হবে, নিরাপত্তার সুবিধার্থে বর্ডারের গেইটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং এইসব সুবিধার দ্বারা ১ মাসের মধ্যেই যুবকদের প্রশিক্ষিত করতে হবে। এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র একটি ক্যাম্প স্থাপিত হয়েছে, সেটা গোকূ্লনগরে এবং যেখানে যুবকের সংখ্যা ১৪০০ থেকে ২০০০ এ উন্নীত করা হয়েছে, যদিও মূল পরিকল্পনায় ৪০০ জন যুবককে এই স্থানের একই ব্লকে গোকূলনগরে সম্বনয় করার কথা ছিল। মেজর মেহেতা তার দুই ক্যাপ্টেন- ক্যাপ্টেন মানসিং ও ক্যাপ্টেন রাওয়াতকে ক্যাম্পটি সুসংগঠিত করতে ও ক্যাম্প প্রধান জনাব সামসুল হক এমপিএ কে সহয়তা করার জন্যে পাঠিয়েছেন।ইয়থ ক্যাম্পের পরিকল্পনা অনুসারে এখনো পর্যাপ্ত জিনিশপত্র ও রেশন প্রেরন করা হয় নি। ৬০০০ জন ধারণ ক্ষমতার অন্য দুটি ক্যাম্প (প্রতিটিতে ৩০০০ করে) বারমুড়া ও পদ্মনগরে স্থাপনের প্রস্তাবনা করা হয়েছে যা এখনো স্থাপিত হয় নি, প্রকল্পগুলো পরিত্যক্ত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে,যদিও এখন পর্যন্ত ক্যাম্প ব্লক স্থাপনের ক্ষীন প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ইয়থ ক্যাম্পের প্রশাসনিক ও ব্যবহারিক পরিস্থিতির অসুবিধাগুলো বিবেচনা করে ক্যাম্পগুলোকে পুনরায় সাজাতে হবে।সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে যথা সম্ভব দ্রুত পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে অন্যথা ইয়থ ক্যাম্পের পরিকল্পনায় ভরাডুবি হবে।
এসডি/-
পরিচালক ও সমন্বয়কারী
পরিকল্পনা ও প্রোগ্রামিং
ইয়থ ক্যাম্প