১ আশ্বিন ১৩৭৮ শনিবার ১৮ সেপ্টম্বর ১৯৭১
জাতিসংঘ জোটনিরপেক্ষ দেশগুলোর পক্ষথেকে ভারতের আশ্রিত শরণার্থীদের মানবাধিকার সংক্রান্ত খসড়া প্রস্তাবে রাজনৈতিক সমঝোতার প্রস্তাবের বিরোধীটা করে।
-বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য সচিব ডাঃ টি হোসেন পূর্বাঞ্চলের কতিপয় এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্বন্ধে সমীক্ষা সফর শেষে মুজিবনগরে ফিরে আসেন। বিভিন্ন সেক্টরের প্রয়োজনীয় আম্বুলেন্স, ঔষধ সামগ্রীর চাহিদা সহ সরকারের কাছে প্রতিবেদন পেশ করে।
-‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ন্যাশনাল অওয়ামী পার্টি’ শিরোনামে একটি প্রচার পুস্তিকায় উপদেষ্টা পরিষদের সংকল্পের ঘোষণাকে অভিনন্দন জানায়। উল্লেখ্য, ন্যাপ (গোষ্ঠী) পক্ষে আমিন আহমদ এই পুস্তিকা প্রকাশ করেন। হোটেল প্যারাডাইসে, (শিয়ালদহ) অবস্থানরত আওয়ামীলীগের এম এন এ ব্যারিষ্টার সালাউদ্দিন এই প্রচার পত্র বিলি করতে দেখা যায়।
-পাক সামরিক সরকারের বেসামরিক মন্ত্রীপরিষদ সদস্যদের দফতর বন্টন করা হয়।
-বুর্যো অব সোশ্যালিষ্ট ইন্টার ন্যাশনাল লন্ডন থেকে এক বিবৃতিতে পূর্বপাকিস্তানের সামরিক নির্যাতন বন্ধের আবেদন জানান। অবিলম্বে শেখ মুজিবসহ অন্যান্য নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের শর্তহীন মুক্তি দাবী করেন।
-Non-aligned Groin in UN proposed a compromise draft speaking of Rights of Refugees. Morocco blocs reference to political solution. (সংবাদপত্র)
-ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জগজীবন বলেন, “It was in conceivable that Pakistan would grand independence to Bangladesh, but we would have to work towards a situation in which Pakistan will be left with no alternative.”
-দিল্লীতে সর্বোদয় নেতা জয় প্রকাশ নারায়নের উদ্যোগে বাংলাদেশ সম্পর্কে একট আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘ওয়ার্ল্ড মিট অন বাংলাদেশ অনুষ্ঠিত হয়। ১৮-২০ সেপ্টেম্বর এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ২৪টি দেশের ১৫০ প্রতিনিধি সমবেত হন। বাংলাদেশ ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন অধ্যাপক আজিজুর রহমান মল্লিক। অন্যান্যদের মধ্যে সৈয়দ আলী আহসান, মওদুদ আহম্মেদ ও আবিদুর রহমান প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন। (১৫ খণ্ড পৃঃ১৬) উল্লেখ্য, দিল্লীতে নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শ্রী বি পি কৈরালা বাংলাদেশ সংগ্রামে তাঁর দেশের গুর্খাদের সেচ্চাসেবী হিসেবে অংশ গ্রহণ প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধি তাঁর প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখবেন বলে জানা যায়।
-ইয়াহিয়া হান পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র প্রনয়ন সম্বন্ধে এক নীতি নির্ধারণী বিবৃতিতে বলেন, “ I have come to the conclusion that the constitution, which will be prepared by the committee of my official, should be presented to the National Assembly. Once the Assembly meets in its full strength, i, e, when by-elections have been helped, the Assembly will discuss the constitution, and if any member puts forward any constructive amendment or improvement he will have an opportunity to do so…. An amendment may be passed by the House by a simple majority, which must include a consensus of all the federating units. If any amendment is presented to me after having been passed by the National Assemble, and if I give my assent after full consideration, it will then be in corporate in constitution.” (KCA,PP. 24953) “অর্থাৎ জেনারেল ইয়াহিয়া তাঁর ভাষণে, ‘নির্বাচিত প্রতিনিধিদের’ কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত পূণর্বক্ত করে, সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলে জানিয়ে দেন
যে, বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ‘পাকিস্তানের আদর্শের ভিত্তিতে’ তিনি একটি শাসনতন্ত্র রচনার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছেন এবং জাতীয় পরিষদের অধিবেশন তা পেশ করা হবে। জাতীয় পরিষদের অনুমোদন প্রাপ্ত শাসনতন্ত্র সংশোধনী আমর দ্বারা স্বাক্ষরিত হলে প্রতিস্থাপিত হবে।” উল্লেখ্য, শাসনতন্ত্র রচনার এই অগণতান্ত্রিক পন্থা জামাতে ইসলামের নেতা মওলানা মওদুদী অত্যন্ত যুক্তিসংগত হিসেবে আখ্যায়িত করে লাহোরে বলেছিলেনঃ “তিনি সব সময়ই এই মত ব্যক্ত করে এসেছেন যে জাতীয় পরিষদের শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করতে বলার পরিবর্তে প্রেসিডেন্টের উচিৎ খসড়া শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করে তাকে কেবলমাত্র সংশোধনের জন্য জাতীয় পরিষদে পেশ করা।”
Reference:
একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী