বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বাংলাদেশ সরকার ও মন্ত্রী পরিষহদের ব্যবহারের জন্য যানবাহন সংগ্রহঃ প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য প্রদত্ত কেবিনেট সচিবের একটি প্রতিবেদন |
বাংলাদেশ সরকার কেবিনেট ডিভিশন |
৮ নভেম্বর, ১৯৭১ |
নভেম্বর ৮. ১৯৭১.
বিষয়ঃ যানবাহন
সুত্রঃ আমার পুর্বের U.o. No. 286/Cab dt. 29.10.71
প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী আমি আমাদের প্রয়োজনীয় যানবাহনের উপর একটি কার্যপত্র তৈরি করেছি। জনাব এ. কে. রয় এবং জনাব ডি. কে. ভট্টাচার্য (ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির আবাসিক কার্যালয়ে ড. এস. চক্রবর্তীর সহ) এর সাথে বৈঠকের আলোচনা অনুসারে আমি এই কার্যপত্রের দুটি প্রতিলিপি আজ সকালে জনাব এ. কে. রয় এর কাছে হস্তান্তর করেছি। উনি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
যোগাযোগ কর্মকর্তা পূর্বে আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে উনি বাংলাদেশে ত্রিপুরা থেকে আইএএফের সৌজন্যে গাড়ির ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন। সে অনুসারে আমি উনাকে নয়টি গাড়ির একটি তালিকা দিয়েছিলাম যেগুলো বিমান মাধ্যমে মুজিবনগরে আসবে। কার্যপত্রের প্রতিলিপি এবং যোগাযোগ কর্মকর্তাকে দেওয়া গাড়ির তালিকা প্রধানমন্ত্রীর তথ্যের আনুকুল্যে পাঠানো হয়েছে।
(এইচ. টি. ইমাম)
মন্ত্রীসভা সম্পাদক
৮/৯/৭১
U.O. No……../Cab. তারিখ ৮.১১.৭১
প্রধানমন্ত্রী
——————–
বাংলাদেশী পরিবহনের ওপর কার্যপত্র
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সাথে আলোচনা সাপেক্ষে বেসামরিক কাজের জন্য অতি জরুরী যানবাহনের একটি বিস্তারিত তালিকা তৈরী করা হয়েছে। তালিকা অনুসারে আমাদের এখন নিম্নলিখিত যানবাহন প্রয়োজন :
গাড়ি – ২৯ টি
জীপ – ২০ টি
বাস – ২ টি
————————————–
মোট – ৫১ টি
যে যানবাহনগুলো জরুরি প্রয়োজন সেগুলো নিম্নে সূচিত করা হয়েছে। অন্যান্য সংস্থাগুলোর প্রয়োজন প্রাপ্যতা অনুসারে ধীরে ধীরে সূচিত করা হবেঃ
<003.104.198>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
১. ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি – ১টি গাড়ি
২. প্রধাণমন্ত্রী এবং কার্যালয়. – ২টি গাড়ি
৩. স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী – ১টি গাড়ি
৪. সাধারন প্রশাসন বিভাগ – ২টি বাস
৫. তথ্য ও প্রচার মন্ত্রণালয় – ১টি গাড়ি
৬. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় – ১টি জীপ
৭. প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় – ১টি জীপ
৮. পরিকল্পনা কমিশন – ১টি গাড়ি
৯. স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী – ১টি গাড়ি
১২ট
অনুগ্রহপূর্বক যত দ্রুত সম্ভব এ যানবাহনগুলো হস্তান্তর করার ব্যবস্থা করুন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহন আলাদা ভাবে দেখানো হয়েছে।
বিভিন্ন এলাকায় যানবাহনের প্রাপ্যতার একটি তালিকাও আমরা তৈরি করেছি। এই তালিকাটি একেবারেই বিস্তৃত নয়। আমরা শুধুমাত্র সেসব এলাকারই তালিকা করতে পেরেছি যেখানে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করেছে।
<003.104.199>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীসভা ও সিভিল এজেন্সীর জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় যানবাহনসমূহ
ক্রমিক নং | কার্যালয় | চাহিদা | যানবাহনের ধরন | বর্তমানে সুলভ | ন্যূনতম চাহিদা | |
১ | বর্তমান রাষ্ট্রপতি ও কার্যালয় | ২ টি | কার | ১ | ১টি কার | ডেল্টা সেকশন থেকে একটি আনা হচ্ছে। |
২ | প্রধানমন্ত্রী ও কার্যালয় | ২ টি | কার | নেই | ২টি কার | – |
৩ | অর্থ মন্ত্রী | ১ টি | কার | ১ | – | – |
৪ | পররাষ্ট্র মন্ত্রী | ১ টি | কার | ১ | – | – |
৫ | স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী | ১ টি | কার | নেই | ১টি কার | – |
৬ | মন্ত্রীসভা সচিব | ২ টি | কার | ১টি জিপ | ১টি কার | – |
৭ | জিএ ডিপার্টমেন্ট পুল | ৪ টি | ২টিবাস / পিক আপ ভ্যান | ১টি জিপ | ৩ (২টি বাস , ১টি কার) | – |
৮ | তথ্য ও প্রচার মন্ত্রনালয় | ২ টি | ১টি কার , ১টি জিপ | – | ২(১টি কার, ১টি জিপ) | – |
৯ | অর্থ মন্ত্রনালয় | ২ টি | ২টি কার | ১টি জিপ | ১টি কার | – |
১০ | স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রনালয় | ২ টি | ১ টি কার , ১ টি জিপ | – | ২ টি (১ টি কার , ১ টি জিপ) | – |
১১ | প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় | ১ টি | ১ টি জিপ | – | ১ টি জিপ | – |
১২ | পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রনালয় | ২ টি | ২টি কার | – | ২ টি কার | – |
১৩ | ব্যবসা ও বাণিজ্য পর্ষদ | ১ টি | ১ টি কার | – | ১ টি কার | – |
১৪ | পরিকল্পনা কমিশন | ১ টি | ১ টি কার | – | ১ টি কার | – |
১৫ | পরিচালনা পর্ষদ, ওয়াইসি | ২ টি | জিপ | ১ টি | ১ টি জিপ | – |
১৬ | স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় | ১ টি | কার | – | ১ টি কার | – |
১৭ | ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেকটরেট | ১ টি | কার | – | ১ টি কার | – |
১৮ | কৃষি বিভাগ | ১ টি | কার | – | ১ টি কার | – |
১৯ | সংসদীয় বিষয়ক | ১ টি | কার | – | ১ টি কার | – |
২০ | ত্রান ও পূনর্বাসন | ১ টি | কার | – | ১ টি কার | – |
২১ | যুব ক্যাম্প পরিচালকবৃন্দ | ৫ টি | জিপ | নেই | ৫ টি জিপ | – |
২২ | আঞ্চলিক পরিষদসমূহ | ১১ টি | কার / জিপ | – | ১১ টি কার | – |
২৩ | আঞ্চলিক প্রশাসনিক কর্মকর্তাগন | ১১ টি | কার / জিপ | ৮ টি | ৮ টি জিপ | |
মোটঃ | ৬১ টি | ৫১ টি |
<003.104.200>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
অতি জরূরী
গোপনীয়
নভেম্বর১, ১৯৭১
মন্ত্রীসভা ও সরকারি কার্যক্রমস্মূহের জন্য , নিম্নবর্ণিত যানবাহনসমূহ ত্রিপুরা থেকে এখানে নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
গাড়ির বিবরণ
নং | গাড়ি প্রস্তুতকারক | পুরাতন রেজিঃ নং | নতুন রেজিঃ নং | কোথায় পাওয়া যাবে |
১ | ভক্সওয়াগন কার | ঢাকা গ – ৩৩৩৯ | অজানা |
আশ্রমবাড়ি ক্যাম্প , ত্রিপুরা (সেক্টর নং ৩) |
২ | করটিনা কার | ঢাকা-ক-৯২০৫ | ঐ | সেক্টর নং ৩ , মনতলা ক্যাম্প, ত্রিপুরা |
৩ | মরিস অক্সফোর্ড কার | সিল- ক- ৫১৪ | ঐ | ঐ |
৪ | প্রিঞ্জ কার | সিল-ক-১৪৪৯ | ঐ | ঐ |
৫ | ভক্সওয়াগন কার | ১৩৮৬ | ঐ | সেক্টর নং ৩ , শ্রমবাড়ি ক্যাম্প, ত্রিপুরা |
৬ | ভক্সওয়াগন কার | সিল-ক-১১৭৫ | ঐ | ঐ |
৭ | ভকশল কার | ইনজিন নং ১৪১৯৪০৭ | ঐ | ঐ |
৮ | ভকশল কার | চট্ট-খ-৯৭২ | ঐ | ঐ |
৯ | ভক্সওয়াগন কার | সিল-ক-১৬৯৫ | ঐ | ঐ |
মেমো নং ৩০০/ক্যাব. তাং ১.১১.৭১
ডি.ও.
স্বাক্ষর
এইচটি ইমাম
মন্ত্রীসভা সচিব
ব্যবহৃত শুকনো পন্যবাহী কার্গো কোস্টার
বিশদ বিবরণীঃ
১। দৈর্ঘ্য অনূর্ধ ২০০ ফুট
২। খালি অবস্থায় ওজন ১০০০ টন
৩। ড্রাফট [নিমজ্জন] অনূর্ধ ১৩ ফুট
৪। বিএইচএফ সিঙ্গেল স্ক্রু
৫। ইঞ্জিন ৪ স্ট্রোক ডিজেল
<003.104.201>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
মেরিন ডিজেল ফুয়েলে প্রতিবর্তনযোগ্য সংকুচিত বাতাসে চালুকৃত, সরাসরি চালানো ফিক্সড পিচ প্রপেলার ।
৬। গতি ১০-১২ নট
৭। শ্রেণীবিভাগ লয়েডস- ১০০ এআই কিংবা সমগোত্রীয়
ব্যবহৃত যানবাহন-কাম-যাত্রীবাহী ফেরি
বিশদ বিবরণীঃ
১। দৈর্ঘ্য ১২৫ ফুট
২। বীম ৩৫ ফুট
৩। ড্রাফট ৪’৬’’
৪। গতি ১০ নট
৫। ধারনক্ষমতা প্রতিটি ৭ টন ওজনবাহী ৬ টি লোডেড ট্রাক
অথবা ২৪ টি কার এবং ১০০ জন যাত্রী
৬। পরিচালনা সংকুচিত বাতাস চালুকৃত এবং উচ্চগতির ডিজেল
তেলে ব্যবহৃত ৪ স্ট্রোক ডিজেল ইঞ্জিন ।
মোট অশ্বশক্তি-৬৫০ অশ্বশক্তি ক্ষমতা । গিয়ারড
ড্রাইভ টুইন স্ক্রু এবং টুইন রাডার । ফিক্স পিচ
প্রপেলার। দুই’টি হালকা ইঞ্জিন ১১০ ভিএসি ।
………………
ব্যবহৃত শ্যালো ড্রাফট শুকনো পন্যবাহী জলযান
(ল্যান্ডিং ক্রাফট টাইপ)
বিশদ বিবরণীঃ
১। পন্য বহনের ক্ষমতাঃ ৫০০ টন
২। ড্রাফটঃ ফরওয়ার্ড ০’০০’’
আফটার ৬’০’’
৩। ইঞ্জিনঃ সিঙ্গেল স্ক্রু, ডিজেল
৪। গতিঃ ১০ নটস
……………
ব্যবহৃত ওয়েল ট্যাংকার
১। দৈর্ঘ্যঃ আনুমানিক ২০০ ফুট
২। ড্রাফটঃ ওজনবাহী অবস্থায় ১২ ফুট
…………………
<003.104.202>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৩। শ্রেণীঃ পূর্ব পাকিস্তানের উপকূলীয় কার্যক্রমের জন্য
জাহাজীকরণের লয়েড রেজিস্টারসহ এআই
৪। গতিঃ পূর্ণ ভারবাহী অবস্থায় ১০ নট।
৫। পরিচালনাঃ যেকোনো সুনামধন্য প্রস্তুতকারকের তৈরী ৪
স্ট্রোক বিশিষ্ট সাধারণ দহন[aspirated]
ধীরগতি ডিজেল ইঞ্জিন , অনধিক ৯৬০ অশ্বশক্তি ।
৬। সহায়িকাঃ [Auxiliaries] ৪৪০ এ.সি. [স্থানসংকুলানের জন্য ২২০ ভোল্ট]
৩টি ডিজেল জেনারেটর । অগ্নিপ্রজ্জ্বলন, সাধারণ
ক্রিয়া ও স্থিরতার জন্য তড়িৎচালিত পাম্প।
৭। কার্গো ধারনক্ষমতাঃ সর্বমোট ১০০০ টন ধারন ক্ষমতার ৬ টি কার্গো ট্যাঙ্ক। ডিজেল
জেনারেটর অথবা এসি মোটর চালিত, প্রতিটি ঘন্টায় ২০০ টন
পাম্পিং ক্ষমতার ২টি কার্গো পাম্প ।
<003.104.203>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
শীতবস্ত্র সংগ্রহ ও বিতরণ সম্পর্কে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দু’টি পত্র | বাংলাদেশ সরকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় |
১০ নভেম্বর , ১৯৭১ |
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
নং. এ – ০০১/১৩৯ (২) তারিখ ১০.১১.৭১
প্রতি
জনাব এম. হোসেন আলী
বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
৯, সার্কাস এভিনিউ
কলকাতা – ১৭।
বিষয়ঃ সৈন্যদের উলের কম্বল, পুল-ওভার ক্রয়ের জন্য অর্থসংকুলান ।
আমাদের বরাদ্দ অনুযায়ী সৈন্যদের শীতবস্ত্র ক্রয়ের নিমিত্তে আমি ১,৫০,০০০ রূপী , মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেক নং ২৫৬৭৩ এবং ২৫৬৭৬ এর মাধ্যমে প্রেরন করছি । এ বিষয়ের বরাদ্দ আপনার কাছে যথসময়ে প্রেরণ করা হবে । জনাব মতিউর রহমান, সহকারী এর নিকট চেকগুলো পাঠানো হয়েছে ।
চেকপ্রাপ্তির বিষয়ে জানানোর জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে ।
প্রতিরক্ষা সচিব
……………………………
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
নং. এ-০০১/১৪০ (৩)
নভেম্বর ১০ , ১৯৭১
জনাব মনিরুজ্জামান,
অভ্যর্থনা ক্যাম্প,
সৈন্যদের উলের কাপড় ও অন্যান্য জিনিস পরিবহনের জন্য জনাব তাজুল ইসলাম, এল.ও. শিক্ষার্থী, বুড়িমারী ট্রাকের ব্যবস্থা করতে আপনার নিকট যাচ্ছেন । এই বিষয়ে তাকে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে ।
প্রতিরক্ষা সচিব
……………………
<003.105.204>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বাংলাদেশ সরকারে প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি |
বাংলাদেশ সরকার সাধারণ প্রসাশন বিভাগ |
১০ নভেম্বর , ১৯৭১ |
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
সাধারণ প্রসাশন বিভাগ
মুজিবনগর
মেমো নং। নভেম্বর ১০, ১৯৭১
আদেশ
পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত, জনাব এম এ গফুরকে বাংলাদেশ সরকারের অধীনস্ত পরিকল্পনা সেলের প্রকৌশল বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো ।
জনসাধারণ পরিসেবার অংশ হিশেবে এই নিয়োগ প্রদান করা হলো।
সেপ্টেম্বর ২১, ১৯৭১ হইতে এই নিয়োগ কার্যকর হবে ।
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের
আদেশ অনুযায়ী
এসডি/-
(এম. নুরুল কাদের)
সচিব
সাধারণ প্রসাশন বিভাগ
<003.106.205>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বিদেশে প্রস্থানকারদের ছাড়পত্র সম্পর্কে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের চিঠি | বাংলাদেশ সরকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় |
নভেম্বর ১১, ১৯৭১ |
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
মেমো নং. এ-০০৬/১৪৫ (২) তারিখঃ নভেম্বর ১১, ১৯৭১
প্রতি,
সহকারী সচিব,
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সূত্রঃ নং হড/৪১/২৭৪/১ , তারিখ ৫.১১.৭১
উপরের সূত্রে উল্লিখিত মেমোতে লিখিত আপনার ডিজাইন করা কোনো ফর্ম চিঠির সাথে সংযুক্ত নেই ।
ফর্মগুলো প্রেরনের জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
পক্ষে অনুস্বাক্ষর সচিব,প্রতিরক্ষা
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়
মেমো নং. এইচডি / ৪১/২৭৪/১ তারিখ নভেম্বর ৫ , ১৯৭১
প্রেরকঃ
এম কে চৌধুরী
সহকারী সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
প্রতিঃ
জনাব এ সামাদ
সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ।
নিম্ন স্বাক্ষরকারী আপনাকে অবহিত করছেন যে, যুবকদের দেশ ত্যাগে নিরুৎসাহিত করাই সরকারের নীতি । এজন্য , আগ্রহী যুবক আবেদনকারীদের যথাযথ নিরীক্ষণের ব্যাপারে একমত হওয়া হয়েছে ।
এই ব্যাপারে এখানে সংযোজিত আমাদের তৈরি ফর্মটি দেখতে বলা হচ্ছে । যে সকল ক্ষেত্রে কোনো সুপারিশ প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র হিসেবে আমরা এই ফর্মটি আপনার নিকট প্রেরণ করবো । আবেদনকারীকে ভ্রমন সংক্রান্ত কাগজপত্র দেওয়ার জন্য, পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভারত সরকারকে সংশ্লিষ্ট আবেদনকারির বিষয়ে সুপারিশ করা যায় কি না বা উচিত কি না সেই বিষয়ে এটি হবে আমাদের নিজস্ব সম্মতি।
আপনাদের সম্ভব্য কাজের চাপের আলোকে , আমাদের পাঠানো বিষয়গুলোর বিপরীতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের পক্ষে ছাড়পত্র লেখার জন্য আপনারা যদি একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব প্রদান করেন তা হলে আমরা খুবই উপকৃত হবো । কর্মকর্তার নাম আমাদের জানানোর জন্য বলা হচ্ছে ।
(এম. কে. চৌধুরী)
<003.107.206>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সুত্র | তারিখ। |
বাংলাদেশের মুক্তাঞ্চল সমুহের বে-সামরিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে মন্ত্রীপরিষদ সভার কার্যবিবরণী ও সিদ্ধান্ত। |
বাংলাদেশ সরকার কেবিনেট ডিভিশন |
১১ নভেম্বর, ১৯৭১ |
সোমবার মন্ত্রীসভার অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত এবং কার্যবিবরণী সমুহ,
তারিখ নভেম্বর ১১, ১৯৭১ . .
স্বাধীন বাংলাদেশে বিবিধ জনপ্রশাসন স্থাপন।
অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির পরিচালিত। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদের সকল সদস্যবৃন্দ এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব উপস্থিত ছিলেন। নিম্নের ব্যক্তিগণ বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেনঃ
১. সি-ইন-সি,
২. জনাব ফাতাহ,
৩. প্রতিরক্ষা সচিব।
মুক্তাঞ্চলে জনপ্রশাসন স্থাপনের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
নিম্নলিখিত পয়েন্ট তৈরি করা হয়েছে:
ক) ধাপে ধাপে সমস্যার সমাধান এক্ষেত্রে কোন ভাবে কার্যকর হবে না। এই সমস্যার মোকাবেলার চেষ্টা করার সময় আমাদের সমগ্র বেসামরিক প্রশাসনকে এক সুরে বেধে নিতে হবে।
খ) আইন-শৃঙ্খলা, পুনর্বাসন, খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ, আবাসন ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় সেবা যেমন: চিকিৎসা সুবিধা ইত্যাদি অপরিহার্য সেবাগুলি ধারণাতীত মাত্রার সমস্যা তৈরি করবে। . গ) পরিকল্পনা তৈরির আগে ন্যূনতম তথ্যের উপলব্ধ আমাদের থাকা উচিত।
ঘ) মন্ত্রিপরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনার ভিত্তিতে একটি কারিগরি কার্যপ্রণালী সচিব দ্বারা প্রস্তুত করতে হবে, বেসামরিক প্রশাসনে যাদের কাজ করার সম্যকজ্ঞান ও অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের দ্বারা প্রস্তুত করা যেতে পারে। .
ঙ) আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দালালদের বাছাই করার প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠবে। এক্ষেত্রে কিছু ব্যক্তির প্রস্তাবনা এই যে, ভয় দেখিয়ে দালালদের বেশীর ভাগকে নিজ-অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শত্রুসহযোগী হতে বাধ্য করা হয়েছে। বেশ কিছু সুত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার তথ্যমতে জানা যায় যে, সরকারি কর্মকর্তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই অন্তর হতে বাংলাদেশের পক্ষে এবং লোকচক্ষুর আড়ালে এই সংগ্রামে তারা সাহায্য করেন বলেও প্রমাণিত।
চ) বেশ ব্যাপক আকারে সরকারি কর্মচারিদের ছাটাই একটি প্রশাসনিক কর্মী শুন্য অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে যা পূরণ করা কঠিন হতে পারে। এতে রাজনৈতিক সমস্যাও তৈরি হতে পারে।
ছ) এই সমস্ত সমস্যাগুলো শর্তেও যে ক্ষেত্রে প্রশাসনিক কর্মী শুন্য অবস্থা অনিবার্য হবে সে ক্ষেত্রগুলোতে কিছু ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। রাজনৈতিক কর্মীদেরও এক্ষেত্রে কাজে লাগানো যেতে পারে।
<003.107.207>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
জ) যতো সমস্যা-সংকুলতাই আসুক না কেন, দেশ গড়তে বিপ্লবী কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিতে হবে।
সিদ্ধান্ত
সচিবদের দ্বারা গঠিত একটি উপকার্যনির্বাহী-পরিষদ, যারা হয় প্রত্যক্ষভাবে সমস্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অথবা তাদের প্রশাসনিক দক্ষতা আছে এদের দিয়ে সমস্যাবলী সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি পরীক্ষানিরীক্ষা করিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জনপ্রশাসন গঠন করতে হবে, যা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরিহার্য সরবরাহ ব্যবস্থা ও সেবা, খাদ্য ও সাময়িকভাবে গৃহহীন ব্যক্তিদের জন্য আবাসন, বাস্তুচ্যুতদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন ব্যবস্থা, স্বাভাবিক অবস্থার পুনরূদ্ধার করা এবং একটি সুখ-সমৃদ্ধ অঞ্চল গড়ে তোলা যা শুধু দেশের দ্রুত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারই নয় বরং ভবিষ্যত উন্নয়নের জন্যেও, যা সরকার কতৃক গৃহীত নীতির অংশ। উপকার্যনির্বাহী-পরিষদ তাদের গৃহীত সুপারিশ এবং তথ্যাবলী সমৃদ্ধ একটি ব্যাপক প্রতিবেদন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পেশ করবে। এই উপকার্যনির্বাহী-পরিষদে জনাব এ.ফাতাহ নিম্নলিখিত সদস্যবৃন্দের সঙ্গে সভাপতি হিসেবে কাজ করবেন:
১. প্রতিরক্ষা সচিব,
২. স্বরাষ্ট্র সচিব,
৩. মন্ত্রিপরিষদ সচিব,
৪. অর্থ সচিব,
৫. জি.এ. সচিব।
প্রয়োজনে আরো সদস্য সংযুক্ত করা হবে। এছাড়াও সি-ইন-সি, পরিকল্পনা সেল এবং সরকারের অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তাদের এই উপকার্যনির্বাহী-পরিষদ এর কাজের সঙ্গে যুক্ত করা হবে।
স্বাক্ষর / ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি .
<003.108.208>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সুত্র | তারিখ |
প্রতিরক্ষা সচিব কর্তৃক তথ্য সচিবকে প্রদত্ত রাজাকারদের প্রতি সরকারী নীতি ব্যাখ্যা। |
বাংলাদেশ সরকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় |
নভেম্বর ১৯৭১ |
এম.এ.সামাদ
সচিব প্রতিরক্ষা
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
নভেম্বর , ১৯৭১
প্রিয় আনোয়ার উল হক,
রাজাকারদের প্রতি এপর্যন্ত আমাদের অনুসৃত নীতিগুলো নিম্নে যথাযথ বর্ণিত হলো:
ক) বিভিন্ন বেতার প্রোগ্রাম মারফত আত্মসমর্পেনের আবেদন ও পরামর্শ বাইরে প্রচারিত হবে।
খ) রাজাকারদের হতাহত সংক্রান্ত সংবাদগুলি পরিকল্পনায় থাকবে। শুধুমাত্র সে সবই প্রচারিত হবে, যে সব রাজাকারেরা সক্রিয়ভাবে অগ্নিসংযোগ করেছে অথবা পাক-আর্মীকে সহযোগীতা করেছে, ইত্যাদি.. অপরাধ সমুহ সাজাপ্রাপ্ত হইবে।
গ) এমনকি আত্মসমর্পনকৃত রাজাকারদের জন্য “গ্রেফতার” শব্দটি সংবাদ দেবার সময় ব্যবহার করা হবে। এই জন্য প্রযোজ্য যে, আত্মসমর্পণকারি রাজাকারদের পরিবারকে যেন পাক-আর্মীর প্রতিশোধের শিকার হতে না হয়। সেচ্ছায় আত্মসমর্পণকারি রাজাকাদের পরিবারকে সম্ভাব্য যে কোন উপায়ে সুরক্ষা দিতেই “গ্রেফতার” শব্দটি প্রচারে ব্যবহৃত হবে।
২। উপরোক্ত নির্দেশিকা দয়াকরে অনুসরণ করা হোক। . .
সম্মানের সহিত,
আপনারই,
<003.109.209>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সুত্র | তারিখ |
ভারত সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে মুক্তিফৌজের জন্য ত্রাণ ও চিকিৎসা সাহায্য সংক্রান্ত আলোচনা রিপোর্ট। |
বাংলাদেশ সরকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। |
১৩ নভেম্বর, ১৯৭১ . . |
কর্নেল. লুথরার সঙ্গে চিকিৎসা ও ত্রাণ সামগ্রী পুনরায় সরবরাহ সংক্রান্ত আলোচনা
আজ সকালে কর্নেল লুথরার সঙ্গে আমার সাক্ষাত হয় এবং নিম্নলিখিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন:
১। মুক্তিবাহিনীর নিকট অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ।
২। মুক্তিবাহিনী ও মুক্ত এলাকায় ঔষধাদি সরবরাহ।
৩। আরোগ্যালয়ের জন্য আবাসন।
৪। মন্ত্রিপরিষদ অর্পিত গোপন কার্যক্রম।
১। মুক্তিবাহিনীর নিকট অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ:
উনিশটি অ্যাম্বুলেন্স এপর্যন্ত আহৃত হয়েছে এবং বিভিন্ন সেক্টরে উন্মুক্ত করা হয়েছে। এইসব অ্যাম্বুলেন্সের আগমন এবং বহির্গমন সঠিক ও নির্দিষ্ট অবস্থান আর তার মেরামতকারী ও ব্যাবহার কারিদের তথ্য যা আগামীকাল আমরা জানবো। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে কর্নেল লুথরার সাথে আগেই স্বাগতিক এবং আমাদের সেক্টর কমান্ডারগন মিলিত হয়েছিলেন তুরা ও শিলংয়ে। আলোচনায় উভয় সেক্টর কমান্ডারগণ একমত হন যে যদি ২টি করে অ্যাম্বুলেন্স প্রতিটি স্থানে দেয়া হয়, তাহলে তারা জরুরী অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সক্ষম হবে. এই ৪টি অ্যাম্বুলেন্স ইতিমধ্যে ২টি তুরা ও ২টি শিলংয়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছেছে– কর্নেল লুথরা এবং সেক্টর কমান্ডারদের নির্দেশনা অনুযায়ী। সেগুলো আসলে আমাদের হেড কোয়ার্টার থেকে প্রেরিত হয়, আমাদের সেক্টর কমান্ডারদের কাছে ওষুধ বহনের জন্য।
শিলং থেকে ইতিমধ্যে একটি প্রাপ্তি রসিদ নিয়ে এক ব্যক্তি ফিরে এসেছে এবং অন্য ব্যক্তি এইমাত্র শিলিগুড়ি থেকে ফিরে এসেছে আমাদের ৬নং সেক্টর কমান্ডার ওষুধ পৌঁছে দিয়ে, আমি অ্যাম্বুলেন্সের সংবাদ জানা মাত্রই যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব কর্তৃপক্ষকে সে সম্পর্কে অবহিত করবো।
২। ঔষধ:
কর্নেল লুথরা কর্তৃক শিলিগুড়ি, গৌহাটি, শিলং এবং আগরতলায় অবস্থিত তাদের আঞ্চলিক স্টোর থেকে ঔষধাদী সরবরাহ ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে, যা আমাদের সেক্টর কমাডারগণ তাদের সেক্টর মেডিকেল অফিসারের চাহিদানুযায়ী মাসিক ভিত্তিতে পাবেন। যদি কোনো অসুবিধা হয়, তিনি এই বিষয়টি আমার কাছে রিপোর্ট করে সরবরাহ সুনিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিবেন।
যেমন রৌমারী হাসপাতালের ডিসপেনসারিটি-তে একটি অতীব-জরুরী সরবরাহ ব্যবস্থা দিয়ে শুরু করা হয়েছিলো, এই ঔষধাদি এক সপ্তাহের মধ্যে উপলব্ধ করা হয়েছে, যা সেখানকার স্থানীয় এম.এন.এ. জনাব সাদাকাত হোসেন এর উপস্থিতিতে সম্পন্ন করা হয়।
অন্যান্য মুক্তাঞ্চলের ক্ষেত্রে, আমাদের রিপোর্ট অনুযায়ী আমাদের সব মুক্তাঞ্চল গুলোতে একটি ডিসপেনসারি ২৫,০০০ জনগোষ্ঠীকে ঔষধ সরবরাহের জন্য ভিত্তিকরে তৈরী করা হয়েছে। এসব ঔষধাদি আমাদের নিয়োজিত ডাক্তারদের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে সরবরাহ করা হবে।
৩। আরোগ্যালয়ের জন্য আবাসন:
আমি কর্নেল লুথরাকে অনুরোধ করেছি যে পশ্চিমবঙ্গের যেকোন কোথাও মুক্তিবাহিনীর আহত রোগীদের আরোগ্যলাভের জন্য উপযুক্ত আবাসনের ব্যবস্থা করার জন্য, এক স্থানে হউক বা বিভিন্ন স্থানে, যেখানে ৩০০ রোগী ধারন করতে পারে। এর সম্পূর্ণ খরচ হরিয়ানা-বাংলাদেশ দ্বারা বহন করা হবে
<003.109.210>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
জনাব গুলজারী লাই নন্দ সভাপতিত্বে গঠিত মুক্তি সহায়ক সমিতির কোষাধ্যক্ষ এম.কে. ভিমানীর মাধ্যমে।
৪। মন্ত্রিপরিষদের অর্পিত গোপন কার্যক্রম:
আমি কর্নেল লুথরার সাহায্যে কাজ করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে থেকে গোপন নির্দেশ পেয়েছি। তিনি আমাকে নির্দেশ দেন সামাজিকর্মীদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থদের একটি স্থানে সংগ্রহ করে নিয়ে আসতে। আমি তাকে অনুরোধ করেছি এ জন্য তহবিল ও পরিবহন আমার অধিনে দিতে যাতে বিভিন্ন ক্যাম্পে সামাজিককর্মীদের পাঠানো যায়। তিনি মেডিকেল রিলিফ এর জন্য তার পরিচালক কে নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা এ ব্যাপারটির পিছনে লেগে থাকবো। আমি চিকিৎসাদির জন্য স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা করেছি।
অবশেষে কর্নেল লুথরা ৫নভেম্বর থেকে ইস্টার্ন সেক্টরের সীমান্তে যাচ্ছেন। আমি প্রস্তাব করেছি যে আমাকে তাদের উপহারকৃত ঔষধাদির উৎসের প্রকৃত সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য তার সঙ্গে যেতে হবে।
(ডাঃ টি. হোসেন)
সচিব,
জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বিভাগ
নথি নং এইচএস /৩৪৮(১২), তাং. ১৩.১১.৭১. . .
প্রতিলিপি প্রেরণ:
১। পি এস ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির নিকট,
২। পি এস প্রধানমন্ত্রীর নিকট,
৩। পি এস পররাষ্ট্র মন্ত্রীর নিকট,
৪। পি এস অর্থমন্ত্রীর নিকট,
৫। পি এস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিকট,
৬। সি-ইন-সি,
৭। কর্নেল লুথরা,
৮। মন্ত্রিপরিষদ সচিব,
৯। পররাষ্ট্র সচিব,
১০। প্রতিরক্ষা সচিব,
১১। সাধারণ প্রশাসন সচিব,
১২। অর্থসচিব।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বিভাগ
<003.110.211>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বাংলাদেশ সরকারের অক্টবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ব্যয় বরাদ্দের হিসাব সংক্রান্ত চিঠি বাংলাদেশ সরকার কেবিনেট ডিভিশন ১৪ নভেম্বর ১৯৭১
গোপনীয় সবচেয়ে জরুরী
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
(মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ)
মেমো নং…../ক্যাব তারিখ, ১৪ নভেম্বর, ১৯৭১।
বরাবর
জনাব ক. আ. জামান,
সচিব,
অর্থ মন্ত্রণালয়।
বিষয়ঃ অক্টোবর, ১৯৭১ থেকে নভেম্বর, ১৯৭১ সময়কালের বাজেট।
রেফঃ আপনার মেমো নং FIN/39/71/430 তারিখ ১৩.১১.৭১
সোমবার(১৫ নভেম্বর, ১৯৭১) অনুষ্ঠেয় মন্ত্রীসভার মিটিংয়ের আলোচ্যসূচিতে বাজেটকে অন্তর্ভুক্তির সময়, প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন যে, ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির কাছে বাজেটের কাগজপত্র পেশ করার আগে, প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীবর্গ, আমাদের নিশ্চিত করা উচিত যে সরকারের সব মন্ত্রনালয়, বিভাগ ও সংস্থার দাবি বাজেটে প্রতিফলিত হয়। বাজেটের সারাংস বিবেচনা করলে দেখা যায় যে মন্ত্রনালয়, সংস্থাগুলোর বিভিন্ন দাবির প্রেক্ষিতে মন্ত্রীসভা ও প্রধানমন্ত্রীর করা আগের কিছু বরাদ্দ ও অনুমোদন বাজেটে উল্লেখ করা হয়নি। আমার মনে হয় অক্টোবর ১ থেকে শুরু হওয়া সময়সীমার মধ্যে আগের অপরিকল্পিত অনুমোদন গুলোও বাজেটে তুলে ধরা উচিত। আমি নিম্নক্ত ঘটনা গুলো উল্লেখ করতে পারিঃ
(ক) ৭ অক্টোবর, ১৯৭১ অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভার বৈঠকে তারা ডিফেন্স মেডিকেল সার্ভিসের(স্বাস্থ্য) জন্য ১০০০০০/০০(দশ লাখ) টাকার বরাদ্দ অনুমোদন দেন (সারাংস অফিস মেমো নং 246(6)/ Cab. তাং অক্টোবর ২৫, ১৯৭১ এর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে)।
(খ) একই বৈঠকে মন্ত্রীসভা সিভিল মেডিকেল সার্ভিস স্বাস্থ্য এর জন্য ৫,৫০,০০০/০০টাকার আর একটি বরাদ্দের অনুমোদন দেন।(সারাংস অফিস মেমো নং 247(4) Cab. তাং ২৫.১০.১৯৭১ এর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে)।
(গ) মন্ত্রীসভা ৩০শে অক্টোবর ১৯৭১ এ অনুষ্ঠিত মিটিংয়ে শহিদদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি ও পঙ্গু সৈনিক ইত্যাদির জন্য ৫০,০০০ টাকার অনুমোদন দেন। সারাংস অফিস মেমো নং 294(3)/Cab. তাং ১.১১.১৯৭১ এর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে।
(ঘ) মুক্তিবাহিনীর শীত বস্ত্রের জন্য মন্ত্রীসভা ৩০শে অক্টোবর, ১৯৭১ অনুষ্ঠিত বৈঠকে ৭,০০,০০০ (সাত লাখ) টাকা সমমুল্যের একটি অনুমোদন দিয়েছিল। (সারাংস অফিস মেমো নং 294(5)/Cab. তাং ১.১১.১৯৭১ এর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে)।
(ঙ) ৩০শে অক্টোবর অনুষ্ঠিত একই বৈঠকে মন্ত্রীসভা যুব ও রিসেপশন ক্যাম্পের ছেলেদের জন্য শীত বস্ত্র সংগ্রহের ব্যবস্থা করেন। (সারাংস অফিস মেমো নং 294(5)/Cab. তাং ১.১১.১৯৭১ এর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে)।
<003.110.212>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(চ) ৩০শে অক্টোবর, ১৯৭১ মন্ত্রীসভার এক সিদ্ধান্তে জেসিও এবং অন্যান্য পদের ভাতা বাড়ানো হয় যা ১লা নভেম্বর ১৯৭১ থেকে কার্যকর। (সারাংস অফিস মেমো নং 297(5)/Cab. তাং ১.১১.১৯৭১ এর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে)।
(ছ) ১লা নভেম্বর, ১৯৭১ এ অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভার বৈঠকে শীতবস্ত্রের জন্য অগ্রীম অর্থ অনুমোদন এবং ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের জন্য বিনামুল্যে উলের সয়েটার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।(সারাংস অফিস মেমো নং 316(2)/Cab. & 313 (2)/Cab. তাং ৩.১১.১৯৭১ এর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে)।
(জ) ৭ নভেম্বর ১৯৭১ এ প্রধানমন্ত্রী সাংগঠনিক সেট-আপের অনুমতি দেন এবং পরিকল্পনা বিভাগের মাধ্যমে তিন মাসের জন্য ১,০০,০০০(এক লাখ) টাকার বাজেট পেশ করা হয়।এটা বুধবার(১০.১১.৭১) সেক্রেটারি কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হয় এবং সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
আমার মনে হয় উপরে উল্লেখিত (ক), (গ), (ঘ) এবং (চ) অনুচ্ছেদের বিষয় গুলো প্রতিরক্ষা অধিদপ্তরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এই বিষয়গুলো হয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপ-শিরোনামে দেখাতে হবে অথবা প্রতিরক্ষা অধিদপ্তর নামে একটি আলাদা বিষয় হিসেবে দেখাতে হবে। অবশ্যই, প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের নিজেদের আবর্তনশীল ব্যয়ের জন্য ৩৩,০০০/০০ টাকার দাবি খুব বেশি কিছু যোগ করবে না।
উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে এবং প্রধানমন্ত্রীর পর্যবেক্ষনের আলোকে মন্ত্রনালয় ও সংস্থার সেই সকল চাহিদা বাজেটে উল্লেখ করতে হবে। আমি আপনাকে অনুরোধ করব বাজেট পুনর্গঠন করতে এবং সেটি আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভার বৈঠকে অর্থাৎ সোমবার, ২২শে নভেম্বর, ১৯৭১এ পেশ করুন।
(এইচ. টি. ইমাম)
মন্ত্রীসভা সচিব
১৪.১১.৭১
মেমো নং ……. (3)/Cab. তারিখ ১৪ই নভেম্বর, ১৯৭১
কপি পাঠানো হয়েছেঃ ১. মৌখিক নির্দেশাবলীর প্রেক্ষিতে তথ্যাবলীর সমর্থনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
২. অর্থমন্ত্রনালয়।
৩. প্রতিরক্ষা সচিব।