বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সচিব নিয়োগ |
বাংলাদেশ সরকার, সাধারন প্রশাসন বিভাগ |
১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
সাধারণ প্রশাসন বিভাগ
মুজিবনগর
স্মারকলিপি…………,১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
আদেশ
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন ডেপুটি সেক্রেটারি জনাব আনোয়ারুল হক খানকে যথাযথ উপাধি নির্ধারিত হওয়া পর্যন্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অধীনে সরকারের সেক্রেটারি পদমর্যাদার বিশেষ দায়িত্বে কর্ম সম্পাদনের জন্য নিযুক্ত করা হল। পরবর্তী আদেশদান পর্যন্ত তার সেবা অর্থ বিভাগের নিয়ন্ত্রণে ন্যস্ত করা হলো।
জনসেবার স্বার্থে উক্ত নিয়োগদান করা হলো।
উক্ত আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।
স্বাক্ষর-তাজউদ্দীন আহমেদ
প্রধানমন্ত্রী
১৩.৯.১৯৭১
স্মারকলিপি নং.সাপ্র/…………,১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
অনুলিপি
১. জনাব আনোয়ারুল হক খান।
২. জনাব এম. আলম, পররাষ্ট্র সচিব।
৩. জনাব এ. সামাদ, প্রতিরক্ষা সচিব।
৪. জনাব কে. এ. জামান, অর্থ সচিব।
৫. জনাব এইচ. টি. ইমাম, মন্ত্রীপরিষদ সচিব।
৬. ড. টি. হোসাইন, স্বাস্থ্য সচিব।
৭. জনাব এমদাদ আলী, প্রধান প্রকৌশলী।
৮. জনাব জে. জি. ভৌমিক, ত্রাণ কমিশনার।
৯. জনাব এড. আর. মির্জা, পরিচালক, ইয়ুথ ক্যাম্প (আই-আই/কিউ)।
১০. জনাব শিলাব্রত বড়ুয়া, ও. এস. ডি./আইন ও সংসদ বিষয়ক।
১১. কাজী লুৎফুল হক, ব্যক্তিগত সচিব হতে রাষ্ট্রপতি।
১২. ড. ফারুক হোসাইন, ব্যক্তিগত সচিব হতে প্রধানমন্ত্রী।
১৩. জনাব সাদাৎ হোসাইন, ব্যক্তিগত সচিব হতে অর্থমন্ত্রী।
১৪. জনাব কামাল সিদ্দিক, ব্যক্তিগত সচিব হতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
১৫. জনাব বি. বি. বিশ্বাস,ব্যক্তিগত সচিব হতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
১৬. সাধারণ প্রশাসন বিভাগের স্থাপনা শাখা।
ইহা উক্ত বিভাগের স্মারকলিপি নং. সাপ্র/১২৬৫ তাং ৭.৯.৭১ এর অধীনে পূর্ববর্তী সরকারের আদেশ ইস্যু হতে পরিবর্তিত।
(এইচ.টি.ইমাম)
সচিব (সা. প্র. বিভাগ)
<003.061.130>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
রাজস্ব আদায় সম্পর্কে অর্থ সচিবের একটি মেমো |
বাংলাদেশ সরকার অর্থ মন্ত্রণালয় |
১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
অর্থ, ব্যবসা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
স্মারকলিপি নং……………, তারিখ ১৩.৯.৭১
নিম্নস্বাক্ষরিত ইচ্ছাগুলো যে রাজস্ব আদায় পরিকল্পনা সঠিকভাবে ও তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়িত করতে হবে। উক্ত উদ্দেশ্যে নিম্নলিখিত কর্মকর্তাগণকে তাদের নামের বিপরীতে উল্লেখিত বিভিন্ন জোনে নিয়োজিত করা হলো।
তাদের সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ধার্য রাজস্ব আদায় পরিকল্পনার সাধারণ নির্দেশাবলী এবং খাজনা ও শুল্কের হারের অনুলিপি ইহার সাথে সংযুক্ত করা হলো।
কর্মকর্তাদের নাম। কর্মক্ষেত্র
১. জনাব মো. মতিউর রহমান, কোচবিহার, তুরা এবং দেভকি জোনের অধীনে সমগ্র বিমুক্ত এলাকা।
স্টাফ অফিসার,
অর্থ বিভাগ।
২. জনাব সামসুদ্দিন হায়দার, বারাসাত, কৃষ্ণনগর, এবং বালুরঘাট জোনের অধীনে সমগ্র বিমুক্ত এলাকা।
করারোপণ কর্মকর্তা,
অর্থ বিভাগ।
৩. জনাব মো. ইদ্রিস আলী, সাবরাম,ধর্মনগর, এবং আগরতলা জোনের অধীনে সমগ্র বিমুক্ত এলাকা।
স্টাফ অফিসার,
ব্যবসা-বাণিজ্য।
(কে. এ. জামান
সচিব
অর্থবিভাগ
স্মারকলিপি নং. ব্যব/২/৭১/১৮৩ (৭) তারিখ ১৩.৯.৭১
অনুলিপি প্রাপক: – (১) সচিব, সাধারণ প্রশাসন বিভাগ।
(২) অর্থসচিব হতে অর্থমন্ত্রী।
(৩) জনাব মো. মতিউর রহমান, স্টাফ অফিসার, অর্থ।
(৪) জনাব সামসুদ্দিন হায়দার, করারোপণ কর্মকর্তা, অর্থ।
(৫) জনাব মো. ইদ্রিস আলী, স্টাফ অফিসার, ব্যবসা-বাণিজ্য।
(৬) কোষাগার কর্মকর্তা, অর্থ।
(৭) জোনাল প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
– তথ্য এবং প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া গ্রহণের জন্য।
(কে. এ. জামান)
সচিব
অর্থবিভাগ
<003.062.131>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কতৃক পূর্বাঞ্চল লিবারেশন জোনের প্রধানকে অর্থ বিষয়ক কমিটি গঠনের নির্দেশ |
বাংলাদেশ সরকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় |
১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
স্মারকলিপি নং ৬৩৯ তারিখ ১১.৯.৭১
জনাব জহুর আহমেদ চৌধুরী,এমপিএ,
চেয়ারম্যান,
স্বাধীনতা পরিষদ, পূর্বাঞ্চলীয় জোন
অভ্যর্থনা এবং অধিষ্ঠিত শিবিরের বিষয়াদি এবং আর্থিক ব্যয় তদারক করার জন্য অনুগ্রহ করে ৫ থেকে ৭ সদস্যের পরিষদ নিযুক্ত করুন। পরিচালকগণের আর্থিক বিষয়ে কোনো দায়িত্ব থাকবে না। রদবদল করা পর্যন্ত উক্ত উপ-পরিষদের এখতিয়ার জোন ১,২,৩ পর্যন্ত বাড়ানো হবে। প্রত্যেক জোন থেকে অন্তত একজন সদস্য থাকবে। পরিষদের একজন চেয়ারম্যান থাকবে। এটি অবিলম্বে করা হবে।
স্বাক্ষর- এ. এইচ. এম. কামারুজ্জামান
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
১৩.৯.৭১
<003.063.132>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
অর্থঃসচিব সভার সিদ্ধান্তের অংশবিশেষ | বাংলাদেশ সরকার, কেবিনেট ডিভিশন | ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
তারিখ ১৪/৯/৭১
পি.ইউ.ডি ২৩’শে আগস্ট, ১৯৭১ এ অনুষ্ঠিত সচিবদের মিটিং এর লিখিতি নথি জমা দিয়েছে।
(ক) মিটিং এ গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিটি বিভাগকে তাদের সাপ্তাহিক কাজের প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে শনিবারের মধ্যে জমা দিতে হবে। আগামি শনিবার থেকে সচিবের পরামর্শে নিয়মিত প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
(খ) উল্লেখিত মিটিং প্রতি সোমবার সকাল ৯টায় প্রধানমন্ত্রীর কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।
আন্ডার সেক্রেটারি
<003.064.133>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বাংলাদেশ ডিফেন্স লীগের মুখপত্রবাংলাদেশ নিউজ লেটার প্রকাশনারপ্রাক্কালেপ্রেরিত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীরশুভেচ্ছাবানী |
বাংলাদেশ সরকার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় |
১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
জয় বাংলা
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
মুজিবনগর
সেপ্টেম্বর ১৪, ১৯৭১
বাংলাদেশের জনগন আজ স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং মানবিক মূল্যবোধের জন্য লড়াই করছে। তারা লড়াই করছে নির্দয় শত্রুর সাথে যারা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত, এক সামরিক জান্তার সাথে যাদের কোন অধিকার নেই তাদের ভাগ্য নির্ধারণের এবং একদল শোষকের সাথে যারা কিনা বাংলাদেশে রক্তপাত ঘটিয়েছে। বাংলার মাটিতে যখন এ সংগ্রাম চলছে, বিদেশে থাকা তার সন্তানরা তখন জনমত গঠন করে এবং তহবিল গঠন করার মাধ্যমে স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহন করছে।
আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধের শুরু থেকে, বাংলাদেশ ডিফেন্স লীগ যুক্তরাষ্ট্রে প্রশংসনীয় কাজ করে যাচ্ছে। এর একাংশ, “দ্যা বাংলাদেশ নিউজ লেটার”, বিদেশে থাকা আমাদের বন্ধু এবং স্বদেশবাসীর জন্য তথ্যের এক বিশ্বস্ত উৎস। আমি লীগের সদস্যদের এই বলে আশ্বস্ত করতে চাই যে, মুক্তিযোদ্ধারা আপনাদের কাজের বাপক প্রশংসা করেছেন।
সকল কাজের জন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।
(তাজউদ্দীন আহমদ)
প্রধানমন্ত্রী,
<003.065.134>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
মুক্তিবাহিনীর প্রচার সম্পর্কে প্রতিরক্ষা সচিবের একটি চিঠি |
বাংলাদেশ সরকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় |
১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
প্রতিরক্ষা মন্ত্রানালয়
১৬/৯/৭১
আমি মনে করি যুদ্ধরত মুক্তি বাহিনীর ছবি বা পূর্ব পাকিস্তানের বন্দি সেনাদের ছবি সংবলিত ছোট পুস্তিকা/প্রচারপত্র ইত্যাদি বাংলাদেশে অবস্থিত মানুষের উদ্যম এবং আত্মবিশ্বাস বহুগুণে বৃদ্ধি করবে। প্রেস এবং প্রচার বিভাগকে সবিনিয়ে অনুরোধ করবো এমন উপকরণ তৈরির লক্ষ্যে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। এমন প্রচারপত্র যদি এর মধ্যে তৈরি হয়ে থাকে, তবে তার অনুলিপি যেন আমাদের দেওয়া হয়।
জনাব এ. মান্নান, এম.এন.এ (এ.সামাদ),
২১/এ, বালু হাক্কাক লেন, নিরাপত্তা সচিব
পার্ক সার্কাস, ক্যাল-১৭.
<003.066.135>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
প্রধানমন্ত্রী কতৃক চারটি নতুন প্রশাসনিক জোন প্রতিষ্ঠার নির্দেশ |
বাংলাদেশ সরকার সাধারন প্রশাসন বিভাগ |
১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রধানমন্ত্রীর সচিব
মুজিবনগর
অর্ডার
আঞ্চলিক পরিষদের কাজের সুষম সুবিধার্থে, অর্ডারটি নীত হয়েছে, জি. ও. নং গ/৮১০ (৩৪৫), তাং ২৭.৭.৭১, আংশিক পরিমার্জিত। পশ্চিম অঞ্চল এবং দক্ষিন-পশ্চিম অঞ্চল ভেঙে দিয়ে হেড কোয়ার্টার এবং আইনগত অধিকার সহ আরো দুইটি প্রশাসনিক অঞ্চল স্থাপন করা হবে যেমনটা নিচে উল্লেখিত :-
১. পশ্চিম অঞ্চল – ১ হেড কো. বালুরঘাট (ক) দিনাজপুর
(খ) বগুড়া
২. পশ্চিম অঞ্চল – ২ হেড কো. মাইদ আঃ (ক) রাজশাহী
৩. দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল – ১ হেড কো. কৃষ্ণনগর (ক) পাবনা
(খ) কুষ্টিয়া
৩. দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল – ২ হেড কো. বনগাঁ (ক) যশোর
(খ) ফরিদপুর
এই অর্ডার অনতিবিলম্বে কার্যকরভাবে বলবৎ হতে হবে।
স্বাক্ষর/- তাজউদ্দীন আহমেদ
প্রধানমন্ত্রী
স্মারকলিপি নং. গ/১৩৬৬ (৫০০), তাং ১৮ই সেপ্টেম্বর ১৯৭১
ডিস্ট্রিবিউশন : –
১. এম.এন.এ এবং এম.পি.এ (সকল):
২. বাংলাদেশ মিশন প্রধান, কলকাতা।
৩. সচিব (সকল):
৪. পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল:
৫. ত্রাণ কমিশনার:
৬. বিশেষ দায়িত্ব, আইন এবং সংসদীয় কার্যক্রমের অফিসার:
৭. আঞ্চলিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সকল):
৮. প্রধান প্রকৌশলী:
৯. ব্যক্তিগত সচিব (সকল):
১০. এ.ডি.সি হতে কমন্ডার-ইন-চার্জ
(কে. আহমেদ)
ডেপুটি সচিব
প্রধান প্রশাসনিক বিভাগ
<003.067.136>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
জোন প্রশাসনের অর্থ ব্যবস্থা সম্পর্কে অর্থ মন্ত্রনালয় এর একটি চিঠি |
বাংলাদেশ সরকার অর্থ মন্ত্রনালয় |
১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অর্থ মন্ত্রণালয়
মেমো নং… ……………১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
প্রেরক : এম কে চৌধুরী
উপসচিব
অর্থ মন্ত্রণালয়
প্রাপক: সকল আঞ্চলিক প্রশাসন অফিসার
মেমো নং Fin/2/71/183/(7) তাং:১৩/৯/৭১
এর প্রতি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে।উক্ত মেমোতে উল্লেখিত অফিসার দের ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে নিয়োজিত করা হয়েছে যা নিম্নে তাদের নামের বিপরীতে উল্লিখিত।
অফিসারদের নাম অপারেশন অঞ্চল
১.জনাম মো: মতিউর রহমান অর্থ বিভাগ কুচবিহার এর অন্তর্গত
স্টাফ অফিসার সকল স্বাধীন এলাকা,তুরা এবং ডওকি জোন
২.জনাব সামসুদ্দিন হায়দার,কর অফিসার, অর্থ বিভাগ বারাসাত এর অন্তর্গত
সকল স্বাধীন এলাকা,কৃষ্ণনগর এবং বালুরঘাট জোন।
৩.জনাব মো ইদ্রিস আলী,স্টাফ অফিসার, ব্যবসা এবং বাণিজ্য সাব্রাম অন্তর্গত সকল স্বাধীন এলাকা,
ধর্মনগর এবং আগরতলা জোন।
যেহেতু সাধারণ প্রশাসন বিভাগ স্বাধীন অঞ্চল গুলোর প্রশাসন এর জন্য আদর্শ গঠন চূড়ান্ত করেনি,কর এবং কর সংগ্রহ সম্পর্কিত আনুষ্ঠানিক নিয়মকানুন তাই সরবরাহ করা যাচ্ছেনা।বাংলাদেশ হতে ভারতে রপ্তানিকৃত পাটসহ সকল পণ্যের জন্য কর সংগ্রহ করা হবে।পাট এবং তামাক এর প্রতি মণ এর জন্য রপ্তানি কর ২ রুপি। পাঠের মূল্য এবং তার উপর কর এর অনুপাত বিবেচনায়,মাছের মত পচনশীল পণ্যের জন্য প্রতি মণ মাছ এর উপর কর হবে ৬ রুপি।অন্য সকল পণ্যের জন্য সাবেক পূর্ব পাকিস্তান এর অনুরূপ কর ধার্জ হবে।
আরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে যে,স্বাধীন এলাকাসমূহে বিদ্যমান সায়রাত মহলগুলো যেমন মাছের ঘের,হাট,বাজার ইত্যাদি সম্ভব হলে নিলামের মাধ্যমে লিজ দেয়া হবে অথবা মধ্যস্থতার মাধ্যমে বোঝাপড়া করা হবে,যদি নিলাম সম্ভবপর না হয়।গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ হতে লিজ এর আনুষ্ঠানিক চুক্তির একটি করে কপি অর্থসচিব কে প্রেরণ করা হবে যাতে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রাপ্ত হন এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সক্ষম হন।এ প্রসঙ্গে আরও উল্লেখ্য,গোদাগারী, পশ্চিম অঞ্চলের স্বাধীন এলাকাজুড়ে মৎস্য ঘের যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যা জনিত কারণে ইতিমধ্যে লিজ দেয়া হয়েছে এখানে অবস্থিত কেন্দ্রীয় সদরদপ্তর হতে ।
<003.068.137>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
এটি সুনির্দিষ্টভাবে পশ্চিম অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রশাসন অফিসার এর জ্ঞাতার্থে প্রেরিত। যদি এই অঞ্চলের মৎস্য ঘের হতে নিলামে মৎস্য রপ্তানি করা হয়,তবে উপরে উল্লেখিত হারে যথাবিহিত মাশুল পরিশোধ করতে হবে।
(এম. কে. চৌধুরী)
মেমো নং… ………… সেপ্টেম্বর ১৮,১৯৭১
কপি প্রেরণ করা হয়েছে-
১.সচিব, সাধারণ প্রশাসন বিভাগ,অনুরোধ করা হচ্ছে যে,আমাদের
মেমো নং অর্থ/১৪/৭১/১৭২/১/(৫) তাং-৯/৯/৭১ অনুসারে অতিসত্বর
প্রশাসনিক কাঠামো চূড়ান্তকরণে যেন আন্তরিক পদক্ষেপ নেয়া হয়।
২.সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জ্ঞাতার্থে
৩.সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
৪.আই জি,পুলিশ
৫.পি এস,অর্থ মন্ত্রণালয়
৬.ট্রেজারি অফিসার,অর্থ
<003.068.138>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
জনগনের প্রতি সরকারের নির্দেশাবলী | বাংলাদেশ সরকার, প্রচার বিভাগ | সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের এক বিশেষ পর্যায়ে এসে গেছি আমরা। কার্যতঃ ভারতও আমাদের পরিপূর্ণ স্বীকৃতি দিয়ে ফেলেছে ৪ঠা ডিসেম্বরের এক বেতার প্রচারের মাধ্যমে। আকাশবাণী থেকে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের অত্যাধিক বাড়াবাড়ি পরিপ্রেক্ষিতে ভারত যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে; তবে তার কাজ হবে বাংলাদেশে বাঙালীদের উপর গত ৮ মাস ধরে অকথ্য নির্যাতনকারী নরপশু পাক-বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করানো, তথা বাংলাদেশের সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়া-ভারতের নিজস্ব স্বার্থে লরাই চালিয়ে যাওয়া নয়।
এ এক বিরাট সংবাদ। বুঝতে হবে আমাদের বিজয়ের সর্বশেষ পর্যায় এটাই। আর সেই জন্যেই এতদিনের সংগ্রামী বাঞালীকে এবারে যেতে হবে আরও কঠিন অগ্নিপরীক্ষার মধ্য দিয়ে। বিশ্বমানবতার শত্রু সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা একদিকে এ ক’মাস ধরে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে সাহায্য করে এসেছে বর্বর ইয়াহিয়ার জঙ্গীশাহীকে এবং নেহায়েত দায়ে পড়া ভাবে ভারতে আশ্রিত এক কোটি মানুষের জন্য পাঠিয়েছে নামমাত্র সাহায্যদ্রব্য, কিন্তু একবারও বাংলার মানুষ আজ কেন বিদেশে শরণার্থী হ’ল?- এ বিষয়টি প্রতিয়াক্রে এগিয়ে আসেনি! আর যখন আমরা আমাদের চূড়ান্ত সাফল্য অর্জন করতে চলেছি, আমেরিকা এসেছে শান্তির বুলি নিয়ে। নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব উত্থাপন করেছে অবিলম্বে যেন পাক-ভারত যুদ্ধ বন্ধ হইয়ে যায়। আমাদের প্রশ্ন, এটা কি আদৌ পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধ? এ যুদ্ধ স্বাধীনতাকামী বাঙালীদের বিরুদ্ধে অত্যাচারী উপনিবেশবাদী পাকিস্তানের। কাজেই ভারতের এ থেকে সড়ে দাঁড়ানোর কোনই মানে হয় না। অবশ্য আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন আমেরিকার এ ধৃষ্টতাকে নাকচ করে দিয়েছে জাতিসংঘের দরবারে। মুনাফেক মার্কিনী দস্যু, যার হাত ভিয়েতনামী মা ও শিশুদের তাজা রক্তে ভেজা, সে চায় আজ নিরপত্তা পরিষদের মধ্যাস্থতা।
দেশবাসীগণ, আপনারা এ চক্রান্তের কখনও বিভ্রান্ত হবেন না। বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী চক্রের তাঁবেদার ও পাঞ্জাবী ধনিকদের অস্ত্রধারী-পেয়াদা ইয়াহিয়ার জমজ আইয়ুবের সময়ে পাকিস্তান থেকে আরও একবার হামলা হয়েছিল শান্তিপ্রিয় ভারতের উপর; এবং দেশে জারী হয়েছিলো জরুরী আইন, দেশরক্ষা বিধি প্রভৃতি কালাকানুন- সবই জনসাধারণের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্যে। এবারও ইসলামের নামে সেই পুরানো ধুয়া তোলা হচ্ছে। এসব অপ্রচার থেকে সদা সতর্ক থাকুন। এ ছাড়াও রয়েছে তথাকথিত সমাজবাদী গণ-চীন। যখন গ্রাম বাংলার পথেঘাটে লক্ষ লক্ষ নিরীহ জনতা অসহায় শিকার হয়েছে পাক-দস্যুদের অত্যাচারের, তখন চীন বলেছে এটা নিতান্ত পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। সম্প্রতি সে আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের বিরুদ্ধেও প্রচারণা শুরু করেছে। কিন্তু আমরা ভুলে যাইনি ১৯৬২ সালের চীনই আকস্মিকভাবে আক্রমণ করেছিল ভারতকে; এবং মাত্র গত বছরও সে সোভিয়েত ইউনিয়নের সীমান্তে শুরু করেছিল ধ্বংসাত্মক অভিযান। অতএব চীন সম্পর্কেও সাবধান থাকুন; বস্তুতঃ সে আমেরিকারই দোসর।
জনগণের প্রতি নির্দেশাবলীঃ
১। গুজবের কান দেবেন না; গুজব রটনাকারীকে ধরিয়ে দিন।
২। মুক্তিযুদ্ধের পরিকল্পনার কথা গোপন রাখুন।
৩। পাক-বাহিনীর গতিবিধির খবর মুক্তিবাহিনীকে জানিয়ে দিন।
৪। শত্রুর সরবরাহ সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত করে দিন।
৫। বিমান আক্রমণের সময় নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন।
৬। মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বতোভাবে সাহায্য করুন।
-মনে রাখবেন, শত্রুর প্রতিটি বুলেট আপনার পয়সার কেনা। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধে ব্যয়িত আপনার প্রতিটি পয়সা স্বাধীনতাকে এগয়ে নিয়ে আসছে।
বাংলাদেশ গণসাধারণতন্ত্র সরকারের আঞ্চলিক প্রচার দফতর কর্তক প্রকাশিত ও প্রচারিত
<003.069.139>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের বাজেট সম্পর্কে মন্ত্রী পরিষদের সিদ্ধান্তের অংশ |
বাংলাদেশ সরকার কেবিনেট ডিভিশন |
২০ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
গোপনীয়
২০ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ তারিখে অনুষ্ঠিত মন্ত্রীপরিষদের সভার কার্যবিবরণির উল্লেখযোগ্য অংশ
* * * *
আলোচ্য সূচি নং: ০৬… প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাজেট
* * * *
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাজেট নিয়ে আলোচনার সময়,
আমাদের যুদ্ধরত সশস্ত্র বাহিনী ও যুব শিবিরের শিক্ষানবিসদের শীতবস্ত্রের তীব্র সঙ্কটের ব্যাপারটি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচিত হয়েছে। মন্ত্রীপরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, যুদ্ধরত সশস্ত্র বাহিনী ও যুবশিবিরের শিক্ষানবিসদের প্রয়োজন মোতাবেক কম্বলসহ শীত বস্ত্র সংগ্রহের একটি চাহিদা পত্র তৈরি করবেন প্রতিরক্ষা সচিব।
এসডি/
ভারপ্রা্প্ত প্রেসিডেন্ট
মেমোনং…… তারিখ: ২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
প্রতি, সচিব, প্রতিরক্ষা (এইচ. টি. ইমাম)
মন্ত্রীপরিষদ সচিব
২৭.০৯.১৯৭১
<003.070.140>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোণাম | সূত্র | তারিখ |
স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ বিভাগের সচিবের বিভিন্ন এলাকা সফর শেষে প্রদত্ত রিপোর্ট
|
বাংলাদেশ সরকার স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ বিভাগ
|
২০ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
|
মুজিবনগর
২০.০৯.১৯৭১
৮ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ তারিখে ড. টিহোসাইন, সচিব, স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ বিভাগ-এর সাম্প্রতিক সফরের প্রতিবেদন
৮. ৯. ১৯৭১ : ভোর ৫টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দমদম বিমন বন্দরে অপেক্ষা। শেষ পর্যন্ত ফ্লাইট বাতিল
৯. ৯. ১৯৭১ : আগরতলা পৌঁছানো
সেক্টর ২ সদর দপ্তরে মেলাঘর হাসপাতাল পরিদর্শন
১০. ৯. ১৯৭১ : উদয়পুরের কাছে যুবশিবিরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সঙ্গ দেওয়া।
ত্রিপুরার মুখ্য মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতকার
১১. ৯. ১৯৭১ : সেক্টর ৩ সদর দপ্তর মান তলায় গমণ। সেক্টর ১ সদর দপ্তর হরিয়ানায় গমণ। সেখানেই রাত্রিযাপন।
১২. ৯. ১৯৭১ : বেলোনিয়া ও রিশি মুখে গমণ।রাত১টায়আগরতলঅফিরেআসা।
১৩. ৯. ১৯৭১ : আগরতলায় স্থানীয় কতৃপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাত। আগরতলা হাসপাতাল পরিদর্শন।
১৪. ৯. ১৯৭১ : করিমগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা ও পৌঁছানো
১৫. ৯. ১৯৭১ : বেরাপুঞ্জিতে সদর দপ্তর পরিদর্শনের চেষ্টা করা, কিন্তু পাক বাহিনীর তীব্র গোলাবর্ষনের কারণে পারা যায়নি। মুকিতলসাব-সেক্টরেগমণ। করিমগঞ্জ সদর হাসপাতালে রোগী পরিদর্শন ও মুক্তিবাহিনী হাসপাতাল পরিদর্শন।
১৬. ৯. ১৯৭১ : শিলচর প্রস্তুতকরা যুবশিবির ও মাশিমপুর সামরিক হাসপাতাল সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া। সেক্টর কমাণ্ডার কর্ণেল দত্তের সঙ্গে সমস্যা নিয়ে আলোচনা।
১৭. ৯. ১৯৭১ : শিলং পৌঁছানো। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্থানীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা
১৮. ৯. ১৯৭১ : বালাতে গমণএবং গৌহাটিতে ফেরা
১৯. ৯. ১৯৭১ : সদর দপ্তরে ফেরা
বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবেদন সংযুক্ত আছে।
(ড. টিহোসাইন)
সচিব
স্বাস্থ্যওজনকল্যাণবিভাগ
অনুলিপি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সি-ইন-সি, জেনারেল অ্যাফেয়ার্স, মন্ত্রীপরিষদ ও প্রতিরক্ষাসচিব।
<003.070.141>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
আশু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ
১. চোট পাওয়া রোগীদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা।
নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে অনতিবিলম্বে অ্যাম্বুলেনেসর ব্যবস্থা অবশ্যই করতে হবে:
ক. সেক্টর নং ০১ : হরিয়ানা, শ্রীনগর, রিশিমুখ ও বেলোনিয়ায় একটি করে, মোট : ০৪টি
খ. সেক্টর নং ০২ : রাজগঞ্জ, নিদায়া, সালদানন্দি ও মন্দাভাগে একটি করেল, মোট : ০৪টি
গ. সেক্টর নং ০৩ : সদর দপ্তর-সিমনায় একটি অথবা ছেবরিতে নতুন জায়গায় একটি, মোট : অন্তত ২টি
ঘ. সেক্টর নং ০৪ : কামালপুর, কৈলাশ শহর, ধর্মনগর, বড়পুঞ্জি, মুকতিল, জালালপুর এবং করিমগঞ্জে একটি করে মোট: ০৭টি। (কিছু পরিবহন) মশিমপুরে সেক্টর কমান্ডারদের কাছে হস্তান্তরের জন্য তৈরি। সেসব দ্রুত সারিয়ে ৪ নং সেক্টরের কমান্ডারের কাছে হস্তান্তরের জন্য বলা হলো
ঙ. সেক্টর নং ০৫: শিলং, বালাত, ডাওকি, শিলা ও বাসারায় একটি করে মোট: ০৫টি
চ. সেক্টর নং ০৬ : (আগে পরিদর্শন করা হয়েছে) পাটগ্রাম, তেঁতুলিয়া ও সাহেবগঞ্জে একটি করে মোট: ০৩টি
২. ঔষধ
দুর্ভাগ্যজনক ভাবে, আমার সবশেষ পরিদর্শনর পর সদর দপ্তর থেকে ঔষধ প্রেরণ ছয় সপ্তাহ বিলম্বিত হয়েছে এবং ঔষধের চরম সঙ্কটের কারণে সব জায়গাতেই দুভোর্গ পোহাতে হয়েছে। আমার প্রচেষ্টার ফলেই বিভিন্ন সূত্র থেকে উপহার হিসেবে ঔষধ সংগ্রহ সম্ভব হয়েছে এবং প্রায় ৬০ হাজার রূপী মূল্যের ঔষধ সংগ্রহ করেছি আমি। সেসব এখন বিভিন্ন সেক্টরে পাঠানো হয়েছে। তবে আরও ১ লাখ রূপীর বেশি মূল্যের ঔষধ দ্রুত কিনে তালিকা অনুযায়ী বিভিন্ন সেক্টরে পাঠানো প্রয়োজন। আমি নানা জায়গায় চেষ্টা করেছি কিন্তু বেশির ভাগ দাতারা নানান ছুতোয় ফাঁকি দিয়েছে।
সবচেয়ে বাজে ব্যাপার, বাংলাদেশ রেড ক্রসের মতো আমাদেরই কিছু সংগঠন আমাদের সহযোগিতা করছে না, অথচ মুক্তিবাহিনীর নামে ঠিকই ঔষধ সংগ্রহ করা হচ্ছে।
আমি প্রবলভাবে মনে করি, আমাদের সব এজেন্সর উচিত প্রাপ্য সব উপহার সমবন্টনের জন্য সদর দপ্তরে পাঠানো উচিত।
জরুরী প্রয়োজনীয় ঔষধ স্থানীয় ভাবে কেনার জন্য অনতিবিলম্বে প্রতিটি সেক্টর কমান্ডারকে অন্তত এক হাজার রূপি করে দেওয়া উচিত। আগরতলা, করিমগঞ্জ ও শিলংয়ে আশু প্রয়োজন মেটানোর জন্য ৫ হাজার রূপীর বেশি মূল্যের ঔষধ দান করেছেন জনাব এম. কে, ভিমানি। আমার অনুরোধে এই ঔষধগুলো স্থানীয় ভাবে কেনা হয়েছে। এর আগেও তিনি সদর দপ্তরকে ৭ হাজার রূপী মূল্যের ঔষধ দিয়েছেন। অন্যান্য উপহারের সঙ্গে এই ঔষধগুলোও পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন সেক্টরে।
চিকিৎসা সরঞ্জাম
১. স্কোয়াড্রন লিডার শামসুল হক কাজ করছিলেন ১ নম্বর সেক্টরে। তিনি একজন জ্যেষ্ঠ অফিসার। আগরতলায় সদর দপ্তরে তার কাজের সঙ্গে তাকে আমি সেক্টর নং ১, ২ ও ৩-এর সামগ্রিক দায়িত্ব দিয়েছি। প্রতিটি সাব-সেক্টরের সব চাহিদা পূরণ ও সমন্বয় করবেন তিনি।
<003.070.142>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সমবন্টনের জন্য সদর দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় সব সরবরাহ পর্যালোচনা ও গ্রহণ করার জন্য আমার কাছে একমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হবেন তিনি।
২ বিলোনিয়ায় একটি এ, ডি. এস. স্থাপনের জন্য একজন ডাক্তারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আঞ্চলিক মেডিকেল অফিসার নং ১ –এর সহায়তায় তিনি কাজটি করবেন।
৩. ১, ২ ও ৩ নং সেক্টরে একজন করে দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার আছেন। ৩ নং সেক্টর কমান্ডারের চাওয়া আরও একজন।
৪. একজন ডাক্তারকে ৪ নম্বর সেক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার সদর দপ্তর করিমগঞ্জে মুক্তিবাহিনী হাসপাতাল।
৫. শিলংয়ে জরুরী ভিত্তিতে একজন ডাক্তার প্রয়োজন। আমি দু-একদিনের মধ্যে একজনকে পাঠানোর চেষ্টা করছি।
৬. প্রতিটি সাব-সেক্টরে কজন নিবেদিতপ্রাণ মেডিকেল শিক্ষার্থী কাজ করছে মেডিকেল অফিসার হিসেবে। আমার ইচ্ছা, উপযুক্ত ডাক্তার পাওয়া সাপেক্ষে প্রতিটি সাব সেক্টরে একজন করে এমবিবিএস ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া।
বিশ্রামাগার/যুদ্ধকালীন হাসপাতাল
আমার চাপাচাপিতে ড. ত্রিগুণা সেনের নির্দেশে মি. এম. কে. ভিমানি আগরতলায় একটি যুদ্ধকালীন হাসপাতাল খুলেছেন (শুরু হয়েছে ৪০ শয্যা নিয়ে, ইচ্ছা আছে ১১.৯.১৯৭১ তারিখের মধ্যে ১০০ শয্য পর্যন্ত বাড়ানোর)। তার ইচ্ছা ছিল করিমগঞ্জ বা শিলচলেও একটি চালু করার, কিন্তু জুতসই ঘর বা সাহায্যকারী পাওয়া যায়নি দুই জায়গার একটিতেও। শিলংয়ের বিভাগীয় কমিশনারের স্ত্রী মিসেস এম. দাসের তত্বাবধানে শিলংয়ের যুদ্ধকালীন হাসপাতাল ভালো কাজ করছে।
যুদ্ধকালীন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে ৫ সদস্যের, যাদের তিনজন স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, দুজন বাংলাদেশের প্রতিনিধি।
আমার আগের নোটগুলোতে তুরা ও কুচবিহারের যুদ্ধকালীন হাসপাতালের কথা উল্লেখ করেছিলাম। এধরণের আরও কয়েকটি বিশ্রামাগারের ভাবনা বিবেচিত হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে, সম্ভব হলে কলকতা ও বালুরঘাটে।
এই হাসপাতালগুলো গড়ে তুলতে প্রায় এক লাখ রূপি লাগবে এবং মাসিক খরচের জন্য লাগবে অন্তত ৫০ হাজার রূপি। হরিয়ানা “বাংলাদেশ মুক্তি সহায়ক সমিতির” মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ ও সেগুলো পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন মি. ভিমানি।
অ্যাম্বুলেন্স সমস্যা
দুমাস আগে যখন দিল্লি গিয়েছিলাম, তখন মিস পদ্মজা নাইডুর সঙ্গে দেখা করে “বাংলাদেশ সহায়তা কমিটির” কাছ থেকে ৩৬টি অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছিলাম। তার কাছ থেকে এখনো জবাব পাইনি। আমি তাকে তাগাদা দিয়ে যাচ্ছি। এদিকে, মি. সেন ও মি. ভিমানির কাছ থেকে জানতে পেরেছি যে তারা বোম্বে সরকারের কাছ থেকে দুটি, ভূটানের মহারাজার কাছ থেকে ৩টি ও হরিয়ানার কাছ থেকে ৩ টি অ্যাম্বুলেন্স সংগ্রহ করেছেন আমাদের জন্য।
<003.070.143>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৪ নং সেক্টরে অন্তত ৬টি গাড়ী আছে যেগুলোকে অ্যাম্বুলেন্সে রূপ দেওয়া যাবে।
আমি জানতে পেরেছি, আমাদের কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স বারাকপুরে বসে আছে। জানি না এটা কতটা সত্যি , তবে আমাদের আহত যোদ্ধাদের জীবন বাঁচাতে পরিবহনের ত্বরিত প্রয়োজনটা নিশ্চয়ই আমাকে বাড়িয়ে বলতে হবে না।
করিমগঞ্জ মুক্তিবাহিনী হাসপাতাল
একটি বাড়ীর ব্যবস্থা করেছে জনাব দেওয়ান ফরিদ গাজী এমএনএ। ২০ জন রোগীর জন্য শয্যা ও বিছানাপত্র দিয়েছেন জনৈক মোবাশ্বের আলি। আমরা সেখানে ১২ জন রোগী দেখেছি। একজন ডাক্তার ও ৩ জন নার্স নিয়োগ দিয়েছি আমরা।
এই হাসপাতালের দেখভাল করতে হবে প্রতিরক্ষা বিভাগকে। এই হাসপাতাল চালাতে আনুমানিক ৫ হাজার রূপি লাগবে। কিছু ঔষধ জরুরী ভিত্তিতে পাঠাতে হবে।
বালাত এ. ডি. এস
শিলংয়ে আমাদের রাজনৈতিকরা চারটি তাঁবুসহ একটি এ.ডি.এস-এর ব্যবস্থা করেছে। একজন ডাক্তার সেখানে কাজ করছেন, তার পারিশ্রমিক জোগাচ্ছে বিএসএফ। ঔষধ ও অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম জরুরী ভিত্তিতে পাঠাতে হবে আমাদের। ২০ শয্যার সঙ্গে আরও চারটি তাঁবু গঠন করতে হবে। প্রতিরক্ষা ব্যয় থেকে শুরু করে প্রারম্ভিক ব্যয় ৫ হাজার রূপি ও ঔষধসহ পরিচলনা ব্যয় ৩ হাজার রূপি আমাদের বহন করতে হবে। এসব নিয়ে কিছু একটা আমাদের খুব দ্রুত করা দরকার।
ডাওকি, শিলা ও বাসেরাতেও একইরকম এ.ডি.এস. স্থাপন করতে হবে। সেক্টর মেডিকেল অফিসার নিয়োগ দেওয়ার পর তারই দায়িত্ব হবে সবকিছু গোছানো। মেডিকেল অফিসারের দায়িত্বে একটি গাড়ীর ব্যবস্থা করতে হবে, নইলে কোনো কাজ করাই সম্ভবপর হবে না।
সামগ্রিক ধারণা
সাম্প্রতিক সফর নিয়ে আমার ধারণা মন্ত্রীপরিষদকে জানানোর যে সুযোগ ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি আমাকে দিয়েছেন, সেজন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমার ধারণা, আমাদের উজ্জীবিত দেশপ্রেমের কাছে সার্বিক সব সমস্যাই সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে যাচ্ছে। সমস্যাগুলো অন্তত চার পরতের, সেটাও আবার দুদিকেই। ভারতের দিকে সামরিক বাহিনী, বেসামরিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক। আমাদের দিকেও সেসব আছে।
আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের আর কিছুই হারানোর নেই, রক্ত ছাড়া কিছুব দেওয়ার নেই। আমাদের মরিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করায় ভারতীয় সামরিক কতৃপক্ষকে খুব একটা উৎসাহী মনে হচ্ছে না। অস্ত্র ও গোলাবারুদের ঘাটতিতে অতীতে অলস সময় কাটাতে হওয়ায় তারা বিরক্ত।
দুটি অপারেশন আমি দেখেছি, একটি বড়পুঞ্জিতে, আরেকটি বালাতে।
অভিযোগগুলো একই। আমাদের ছেলেদের কামানের পর্যাপ্ত কাভার দেওয়া হয়নি। ভারতীয় বাহিনীর কামান এখানে পিছিয়ে আছে (পাকিস্তানি কামান যেখানে ৫ মাইল দূরে লক্ষভেদী হতে পারে, ভারতীয় কামান যায় ৩ মাইল পর্যন্ত)। জানিনা এসব কতদূর সত্যি, কিন্তু অভিযোগুলো সব জায়গায় একই। বরপুঞ্জিতে ভারতীয় বাহিনী অপ্রস্তুত ছিল, সেখানে পাকস্তানি বাহিনী ভারতীয় সীমানায় ঢুকে গিয়েছিল এবং ভারতের ৩ মাইল ভেতরে আমাদের ছেলেদের ঘেরাও করেছিল।
<003.070.144>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
পাকিস্তানি বাহিনী কার্যতঃ সীমান্ত এলাকা ঘিরে ফেলেছে। বিশেষত বালাত এবং বাসারা সীমান্তবর্তী কয়েক মাইল সদ্যমুক্ত এলাকা পাক বাহিনী পুনর্দখল করে নিচ্ছে।
তদন্তের স্বার্থে আমি ভরতীয় মিত্রদের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি। তারা জানায় আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা যথেষ্ট তথ্য ও পরিকল্পনা ছাড়াই বাংলাদেশে প্রবেশ করে যার ফলে তারা বিপক্ষশক্তির আক্রমনের জন্য প্রস্তুত ছিল না।
উপরন্তু, মিত্রবাহিনীর উপর আমাদের মুখাপেক্ষী হয়ে পড়ার পূর্বেই এই সমস্যাগুলি স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকরভাবে সমাধা করতে হবে যেন তা উচ্চস্তরের চুক্তির জন্য সংগতিপুর্ণ হয়।
আমার মতে আগামী ৩ মাস এমন অবস্থা চলতে থাকলে কমপক্ষে ৫ মিলিয়ন মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে যাবে এবং প্রায় একই সংখ্যক মানুষ দেশের অভ্যন্তরে মারা যাবে।
অন্যান্য সমস্যা এখানে পুনরূত্থাপন করার প্রয়োজন নেই, তথাপি আমার বিনম্র ব্যক্তিগত মতামত হল, একমাত্র সমাধান আমাদের অস্থাবর মন্ত্রীসভা এবং সকল অঞ্চল ও বিভাগে এর বৈঠকসমূহ। মন্ত্রীসভাকে অকুস্থলেই সকল আঞ্চলিক সমস্যাগুলো সম্মিলিতভাবে সমাধা করতে হবে এবং সক্রিয় কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে যেন সরকারী সিদ্ধান্তগুলি সঠিকভাবে অনুসৃত ও কার্যকর করা হয়।
আমরা কি এমন বিমান পরিবহণের ব্যাবস্থা করতে পারিনা যেমনটি ১২ই এপ্রিল আগরতলা হতে সমগ্র সরকারকে সীমান্ত পেরিয়ে আনার কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল?
আমি এটি প্রস্তাব করছি কারণ, আমার মতে মন্ত্রীসভার প্রত্যেক সদস্যের নৈমিত্তিক সফর প্রায়ই সমস্যা সমাধানের তুলনায় অধিক জটিলতার সৃষ্টি করে।
আমাকে বলতেই হচ্ছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহদয় তাঁর সর্বত্র সফরের মাধ্যমে ভাল সুনাম অর্জন করেছেন, যদিও তাঁর এই সুনাম সরকারের অবস্থা সম্পর্কে পূর্বধারণা কিছুটা হলেও বদলে দিয়েছে।
শুধুমাত্র ভারপ্রাপ্ত রাস্ট্রপতি, পি. এম. & সি-ইন-সি. এর জন্য।
<003.071.145>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরনাম | সূত্র | তারিখ |
আন্তঃবিভাগীয় সচিবদের সভার কার্যবিবরনী |
বাংলাদেশ সরকার কেবিনেট বিভাগ |
২০ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
২০.৯.১৯৭১ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সচিবদের সভার কার্যবিবরণী
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী বক্তব্যের পর সংশ্লিষ্ট সচিবগণ কিছু সমস্যা উত্থাপন করেন যেগুলর অবিলম্বে সমাধান হওয়া প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী নিম্নোক্ত দিকনির্দেশনা প্রদান করেনঃ
(ক) যানবাহনঃ
মন্ত্রীপরিষদ সচিব বাংলাদেশের সকল যানবাহন উন্মুক্ত করার নবউদ্যোগ গ্রহণ করবেন। সকল যানবাহনের তালিকা হালনাগাদ করা হবে। একইসাথে সরকার অধীনস্থ বিভিন্ন এজেন্সির চাহিদাসমূহ পূরণ করতে হবে।
(খ) স্থানসঙ্কলানঃ
সরকারী কার্যক্রমে এই বিষয়টি বড় বিঘ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বিভিন্ন সরকারী অফিসের কার্যক্রম সে সময় শুরু করা দরকার ছিল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় ছাড়া সকল অফিস অনতিবিলম্বে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে। জি. এ. বিভাগ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবে।
(গ) বাজেটঃ
অর্থ বিভাগ সরকারের অর্থনৈতিক সংগতি নিরূপন করবে এবং শুধুমাত্র প্রয়োজনের ভিত্তিতে সম্পদ বরাদ্দ করবে।
(ঘ) সরকারী নীতিমালার দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্ধেশ্যে যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা যথাসম্ভব পরিহার করা হবে।
(ঙ) বিভিন্ন মন্ত্রনালয় এবং সরকারী অনুষদের কার্যকরী বিভাগসমূহের অনুপস্থিতির করণে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছিল। মন্ত্রীসভার সচিব মহদয় বিভিন্ন মন্ত্রনালয় এবং সরকারী অনুষদের কার্যক্রমের স্পষ্ট বর্ণনা সম্বলিত একটি তালিকা তৈরীপূর্বক মন্ত্রীসভায় পেশ করবেন।
(চ) ভারতীয় পত্রিকাসমূহে “স্বাধীনতা সংগ্রাম” শীর্ষক কতগুলো নির্দিষ্ট ঘটনা এবং বিষয়ে আলোকপাত করা হচ্ছিল যার মধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরিকল্পনা সমূহ অন্তর্ভুক্ত ছিল। সংবাদ মাধ্যমসমূহকে যেন এমন সংবাদ প্রচারে নিরুৎসাহিত করা হয় যা আমাদের সেনাবাহিনীর নিরাপত্তার জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, ভারতীয় সরকারের এজেন্সিসমূহের কাছে যথাযথভাবে এ বিষয়টি উত্থাপন করার জন্য প্রতিরক্ষা সচিব মহদয়কে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
(ছ) সরকারী কর্মকর্তাদের বাড়ি ভাড়া এবং পরিবহণ ভাতার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র সচিব মহদয়ের প্রস্তাবনাটি যথাযথভাবে বিবেচনা করা হবে বলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস প্রদান করেন।
মেমো নং…Cab. তারিখঃ ১লা অক্টোবর,১৯৭১
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সচিববর্গের কপি।
(এইচ. টি. ইমাম)
মন্ত্রীসভা সচিব।
১.১০.৭১
<003.072.146>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনামঃ | সূত্রঃ | তারিখঃ |
স্বাস্থ্য বিভাগের জরুরী প্রয়োজনের উপর প্রস্তুতকৃত সরকারী প্রতিবেদন। | বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। | ২১ সেপ্টম্বর ১৯৭১ |
১) প্রয়োজনীয়তাসমুহঃ ১) আহত রোগীদের জন্য পরিবহণঃ নিন্মলিখিত স্থানে অতিস্বত্বর এ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করতে হবে। (A) সেক্টর নাম্বার ১- হারিয়ানা, শ্রীনগর, ঋষিমুখ এবং বেলুনিয়ায় একটি করে মোট ৪টি। (B) সেক্টর নাম্বার ২-রাজগঞ্জ নদিয়া, সালদানাদি মান্দাবাগে একটি করে মোট ৪টি। (C) সেক্টর নাম্বার ৩- সিমনা হেড কোয়ার্টার অথবা নতুন স্থানে ও সিবরিতে একটি করে কমপক্ষে ২টি। (D) সেক্টর নাম্বার ৪- কামালপুর, কৈলাশ শহর, ধর্ম নগর, বড় পুুঞ্জি, মুকিতাল, জালালপুর ও করিমগঞ্জে একটি করে মোট ৭টি। মসিমপুরের সেক্টর কমান্ডারের কাছে কিছু গাড়ি আছে সেগুলি অতিসত্বর মেরামত করে ৪ নাম্বার সেক্টর কমান্ডারকে হস্তান্তর করা। (E) সেক্টর নাম্বার ৫- শিলং, বালাত ডাউকি, শিলা এবং বাসারাতে একটি করে মোট ৫টি। (F) সেক্টর নাম্বার ৬- (পূর্বের সমীক্ষা) পাটগ্রাম, তিনতুলিয়া, সাহেবগঞ্জে একটি করে মোট ৩টি। ২) ওষুধপত্র আমার সর্বশেষ পরিদর্শনের সময় থেকে দুর্ভাগ্যবশত সদর দপ্তর থেকে ওষুধ পাঠাতে ছয় সপ্তাহ দেরি হয়েছে এবং এই ওষুধের স্বল্পতা-অপ্রতুলতা সবজায়গায় অনেক দুর্ভোগ ঘটিয়েছে। আমি বিভিন্ন উৎস থেকে উপহারস্বরূপ ওষুধ সংগ্রহের প্রচেষ্টা চালিয়ে ৬০০০০ রুপির ওষুধ সংগ্রহ করতে পেরেছি যেগুলি ইতোমধ্যে বিভিন্ন সেক্টরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু জরুরিভিত্তিতে আরো এক লক্ষ রুপিরও বেশি মূল্যের ওষুধ ক্রয় করে তালিকা অনুযায়ী বিভিন্ন সেক্টরে পাঠানো উচিত। অসংখ্য কোয়ার্টারে আমি হাত পেতেছি কিন্তু অধিকাংশ দাতার অজুহাত-তালবাহানা আমাকে হতভম্ব করেছে। আরো শোচনীয় বিষয় হলো বাংলাদেশ রেড ক্রসের মত আমাদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের সহযোগিতা করছেনা ফলে মুক্তি বাহিনীর নামে আমাদেরকে ওষুধ সংগ্রহ করতে হচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি যে আমাদের সকল এজেন্সিগুলোকে দ্রুততার সাথে প্রাপ্ত সকল উপহারসামগ্রিগুলো সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দেয়া উচিত যাতে আমরা সুষম বন্টন করতে পারি। জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ওষুধ ক্রয়ের জন্যে অন্তত ১০০০ রুপি প্রত্যেক সেক্টর কমান্ডারের হাতের কাছে রাখতে হবে। জরুরী প্রয়োজন মেটাতে মিঃ এম কে ভিমানি আগরতলার করিমগঞ্জ ও শিলঙয়ের জন্যে ৫০০০ রুপি মুল্যের ওষুধ দান করেছেন। আমার অনুরোধে ঐ ওষুধ কিনা হয়েছিল। ইতোপূর্বে তিনি সদর দপ্তরে ৭০০০ বেশি রুপির ওষুধ প্রদান করেছিলেন। অন্যান্য উপহারসামগ্রীর সাথে ঐ ওষুধও সব সেক্টরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
<003.072.147>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
মেডিকেল স্টাফ (১) স্টাফ লিডার ডা: শামসুল হক কর্মরত ছিলেন ১ং সেক্টরে। তিনি একজন সিনিয়র অফিসার। আমি তাঁকে তাঁর হেডকোয়ার্টার সহ ১,২ও ৩ নং সেক্টরের সার্বিক দায়িত্বে আগরতলা নিয়োগ করেছি। প্রতিটি সাব-সেক্টরের চাহিদা ও সরবরাহের সমন্বয় সাধন করবেন তিনি। সমবন্টনের জন্য হেডকোয়ার্টার থেকে প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়ন ও সরবরাহ গ্রহণের কেবলমাত্র তিনিই আমার নিকট দায়ী থাকবেন। (২) বিলোনিয়ায় A.D.S স্থাপনের জন্য একজন ডাক্তার রয়েছেন। ১নং সেক্টরের আঞ্চলিক মেডিকেল অফিসারের সাহায্যে তিনি সেটা করবেন। (৩) ১,২ও ৩ নং প্রতিটি সেক্টরে একজন করে অফিসার ইনচার্জ রয়েছে। ৩নং সেক্টর কমাণ্ডার আরো একজন ইনচার্জ দাবি করেছেন। (৪) করিমগঞ্জ মুক্তিবাহিনী হাসপাতালে একজন ডাক্তারকে তার হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে ৪নং সেক্টরের অধীনে ন্যস্ত করা হয়েছে। (৫) শিলং এ জরুরিভিত্তিতে একজন ডাক্তার প্রয়োজন। আমি দু’য়েক দিনের মধ্যে একজনকে পাঠানোর চেষ্টা করছি। (৬) কিছু একনিষ্ঠ সিনিয়র মেডিকেল ছাত্র প্রতিটি সাব-সেক্টরে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কাজ করছে। আমার উদ্দেশ্য যত দ্রুত উপযুক্ত ডাক্তার পাওয়া যায় প্রতিটি সাব- সেক্টরে একজন করে এম.বি.বি.এস ডাক্তার নিয়োগ করা। CONVALESCENT HOMES: আমার অনুনয়ে ডা: ত্রিগুনা সেনের পরিচালনায় মি. এম. কে. ভামানী এই সময় আগরতলায় একটি কনভালেসেন্ট হোম(৪০ শয্যাবিশিষ্ট; ১৪.৯.৭১ এর মধ্যে ক্রমান্বয়ে ১০০শয্যা) চালু করেছেন। তার উদ্দেশ্য ছিলো করিমগঞ্জ কিংবা শীলচরে একটা হোম খোলার কিন্তু উপযুক্ত স্থান বা সাহায্যকারীর অভাবে হয়ে উঠেনি। শিলংয়ের বিভাগীয় কমিশনারের স্ত্রী মিসেস এম. দাস এর তত্ত্বাবধানে শিলংয়ের কনভালেসেন্ট হোম খুব ভালোভাবে কাজ করছে। কনভালেসেন্ট হোমগুলোর পরিচালনা কমিটি পঞ্চপুরুষ দ্বারা বিশ্বস্ত হয়েছে যার ৩জন স্থানীয় বিশিষ্ট নাগরিক এবং ২জন বাংলাদেশি প্রতিনিধি। আমার আগের মন্তব্যে আমি তুরা ও কুচবিহারের কনভালেসেন্ট হোমগুলো সম্পর্কে জ্ঞাপন করেছি। পশ্চিমবঙ্গে বিশেষত কলকাতা এবং বালুরঘাটে আরো কিছু কনভালেসেন্ট হোম খোলার কথা চিন্তাধীন রয়েছে। এসব হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে লাখ টাকা খরচ হবে এবং মাসিক খরচ পড়বে প্রায় ৫০০০০/- মি. ভিমানী এগুলো পরিচালনার জন্য হরিয়ানা বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনী সহায়ক সমিতির মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।অ্যাম্বুলেন্স সমস্যা: দুইমাস আগে আমি দিল্লি গিয়েছিলাম, আমি মিস. Padmaja Naido এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁকে বাংলাদেশ অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিটির পক্ষ থেকে ৩৬টি অ্যাম্বুলেন্স প্রদানের অনুরোধ জানাই। এখনো তার কাছ থেকে কোনো সংবাদ পাইনি। আমি তাকে একটি অনুস্মারক পাঠাচ্ছি। এদিকে, ড: সেন এবং মি. ভিমানীর কথা থেকে বুঝতে পারি যে, তারা আমাদের জন্য মুম্বাইয়ের গভর্নরের কাছ থেকে ২টি, ভুটানের মহারাজার কাছ থেকে ৩টি এবং হরিয়ানা থেকে ৩টি অ্যাম্বুলেন্স আহৃত হয়েছেন।
<003.072.148>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
চার নং সেক্টরে কমপক্ষে চারটা গাড়ি ছিলো যা এ্যাম্বুলেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যেতো ।
আমি বুঝেত পেরেছিলাম কিছু এ্যাম্বুলেন্স বারাকপুরে আছে ।
আমি জানিনা এটা কতটা সত্য কিন্তু আহত সৈনিকদের জীবন বাচানোর জন্য আমার জরুরি ভিত্তিতে পরিবহন দরকার ।
করিমগঞ্জ মুক্তি বাহিনী হাসপাতাল
জনাব দেওয়ান ফরিদ গাজী একটা বাড়ীর ব্যবস্থা করেছেন আর জনাব মোসাব্বের আলী বিশজন রোগীর জন্যে বিছানা দান করেন এবং আমরা সেখানে বারজন রোগীকে দেখতে পাই। আমরা একজন ডাক্তার এবং তিনজন নার্স নিয়োগ দিই।
হাসপাতালটি অবশ্যই প্রতিরক্ষা দফতর দ্বারা পরিচালনা করতে হবে। হাসপাতালটি চালানোর জন্যে জরুরী ভিত্তিতে ৫০০০/- টাকা (রুপি) দরকার। জরুরী ভিত্তিতে কিছু ওষুধ পাঠানো প্রয়োজোন।
বালাত এ ডি এস
শিলং এ থাকা আমাদের রাজনিতীবিদরা চারটা তাবুর সাহায্যে বালাটে এ ডি এস (যুদ্ধক্ষেত্রে জরুরী সেবাকেন্দ্র) ব্যবস্থা করেছেন। একজন ডাক্তার সেখানে কাজ করছেন যার বেতন বিএসএফ (ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনী) বহন করছে। ওষুধপত্র এবং সার্জারির জিনিসপত্র সাথেসাথেই আমাদের কাছে পাঠানো হয়, আরো চারটি তাবু এবং বিশটি বেড বসানো হয়। আমাদের সামরিক বাহিনী থেকে অবশ্যই এই খরচ বহন করতে হবে। শুরুতেই ৫,০০০ রুপি (টাকা) এবং প্রতিমাসে ওষুধ সহ ৩,০০০ রুপি (টাকা) খরচ হবে। এই বিষয়ে আমাদের জরুরী ভিত্তিতে কিছু করা দরকার।
ডাউকি, শোলা এবং বেসারাতে একই রকম এ ডি এস (যুদ্ধক্ষেত্রে জরুরী সেবাকেন্দ্র) বসানো হয়েছে। সেক্টর মেডিকেল অফিসার নিয়োগ পাওয়ার সাথে সাথেই উনি এসব পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহন করবেন। মেডিকেল অফিসারের জন্যে আমাদের অবশ্যই পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে , অন্যথায় কোনো কাজ করা সম্ভব না।
<003.073.149>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরনাম | সূত্র | তারিখ |
মুক্ত এলাকায় বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ সম্পর্কে পরিকল্পনা সেলে লিখিত চিত্র ও পরিকল্পনা সেলের উত্তর | বাংলাদেশ সরকার, কেবিনেট ডিভিশন | ২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
গোপনীয়
সরকার গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করে বাংলাদেশীর স্বাধীনতা প্রাপ্ত অঞ্চলগুলোর জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠানোর পরিকল্পনা করছে । পরিকল্পনা কমিশন এই উদ্দেশ্যে একটি পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে সদয় আছেন । যেসব জিনিসপত্র সরবরাহ করা হবে তার অধিকাংশই খাবার জিনিস, যেমন- চাল, লবন, সরিষার ত্তেল ইত্যাদি এবং কিছু ঔষধ এবং কেরোসিন । এ ধরনের পরিকল্পনার জন্য পরিকল্পনা কমিশন তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে ।
ইহাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন এবং অনুরোধ করেছেন পরিকল্পনাটি দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রস্তুত করতে ।
ইউ ও নং ১৬২(৩)/ ক্যাব তারিখঃ ২৩.৯.৭১
জনাব মোজাফফর আহমেদ (এইচ টি ইমাম)
চেয়ারম্যান, মন্ত্রীপরিষদ সচিব
পরিকল্পনা কমিশন, ২৩.৯.৭১
পি এস সোহরাওয়ার্দি এভিনিউ।
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
পরিকল্পনা পরিষদ
নং পিবি / ৬৩ / ৪৪ সেপ্টেম্বর ২৮,১৯৭১
জনাব এইচটি ইমাম
মন্ত্রীপরিষদ সচিব,
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
প্রিয় জনাব ইমাম,
ইহা আপনার চিঠি নং ইউ ও ১৬২ (৩)/ ক্যাব তারিখ ২৩.৯.৭১ হইতে নির্দেশিত ।
আমাদের নিম্নের তথ্যগুলোর প্রয়োজন হবেঃ
(ক) স্বাধীনতা প্রাপ্ত এলাকাগুলোর সাথে যোগাযোগব্যবস্থা কতটা নিরাপদ ? এই সমস্ত এলাকাগুলোর ভৌগলিক অবস্থা সহায়ক হবে । স্বাধীনতাপ্রাপ্ত এলাকাগুলোর আনুমানিক সংখ্যা সম্পর্কে ধারণাও সহায়ক হবে।
(খ) কতজন মানুষ এই প্রতিটি স্বাধীনতা অর্জিত এলাকাগুলর সাথে জড়িত ? প্রত্যেকটি স্বাধীনতা অর্জিত এলাকার মানুসের সংখ্যা কত ? এই সমস্ত এলাকার কতজন মানুষ না খেয়ে থাকতে পারে?
<003.073.150>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(গ) এই সমস্ত এলাকাগুলোতে আমাদের কোনো ঘাঁটি আছে কি ? কিভাবে সেগুলো পরিচালিত হয় ?
(ঘ) এমন কোনো ব্যক্তি আছেন কি যিনি এগুলর দ্বায়িত্ব নেবেন ? এবং যার উপরে আমরা নির্ভর করতে পারি ?
(ঙ) এই জিনিসগুলো কিভাবে বিতরণ করা হবে ? বিনামূল্যে না কি টাকার বিনিময়ে ?
আপনার অনুগত
মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী
চেয়ারম্যান
পরিকল্পনা পরিষদ
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
<003.074.151>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুদ্ধ পরিস্থিতির ওপর মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়কের বক্তৃতা | এশিয়ান রেকর্ডার অক্টোবর ২২-২৮ , ১৯৭১ | ২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
যুদ্ধ পরিস্থিতি বিষয়ে স্বাধীনতার সর্বাধিনায়কঃ
মুক্তিবাহিনীর প্রধান, কর্নেল এমএজি ওসমানী, ২৫শে সেপ্টেম্বর ঘোষনা দেন যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ হলো সততা এবং ন্যায়-বিচার রক্ষার যুদ্ধ এবং যেকোনো মূল্যে দেশকে স্বাধীন করার জন্য জনগনের দৃঢ় সংকল্পের প্রতিধ্বনি ।
স্বাধীনতা সংগ্রামের ছয়মাস পূর্তিতে এক প্রচারণায় তিনি বলেন , বাংলাদেশে চলমান যুদ্ধ একটি জাতীয় যুদ্ধ যেখানে সমগ্র জাতি তাদের রাজনৈতিক বিশ্বাস ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একতাবদ্ধ হয়েছে । শেখ মুজিবুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি , জনগনের নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং পূর্ব বাংলা থেকে পশ্চিম পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রত্যাহার ব্যতিত বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কোনো সমাধানই আসবে না।
জনগনকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন , তোমরা বাংলাদেশের যেখানেই থাকো না কেন , নদী, বিল, মাঠ প্রত্যন্ত গ্রাম, মহাসড়কে, রাস্তায়, গ্রামের বাজারে , শিল্প কেন্দ্রে , শহর ও নগরে , যা পাবে তাই নিয়ে শত্রুকে আক্রমন করো , কঠিনভাবে আঘাত করো , ধ্বংস করো শত্রুকে। তার অস্তিত্বকে সমূলে ধংস করো ।
ইতিমধ্যেই একটি খবর খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিলো যে পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাদের মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার এটাই প্রমান যে এখন ইন্ডিয়ান বর্ডারসহ ২২৯টি ঘাঁটির মাঝে ৫৪টির বেশী ঘাঁটিতে মানুষ নেই । ১৭৫টি ঘাঁটিই তারা পরিত্যাগ করেছিলো ।
তাদের নিয়ন্ত্রনাধীন স্থানগুলতে , এক কোম্পানি কিংবা দুই-এক প্লাটুন করে তারা উপস্থিত ছিলো।
এটি বিভিন্ন অপারেশনে মুক্তিবাহিনীর নিখুঁত পরিকল্পনা এবং নির্ভুলতার ফলাফল । পৃথক পৃথক দলে এলোমেলো আক্রমনের পরিবর্তে মুক্তিবাহিনী এখন স্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে, যেমন : সড়ক, সেতু, রেললাইন এবং পাকিস্তানি সৈন্যদের ঘাঁটি আছে এমন সব স্থানে সুপরিকল্পিত কৌশল অনুযায়ী কাজ করছিলো ।
গেরিলা যুদ্ধের নতুন কৌশলে ছিলো মাইন ও বিস্ফোরক ব্যবহার এবং জাহাজে ঝটিকা আক্রমণ । প্রতিদিন ৩০-৩৫ জন পশ্চিম পাকিস্তানি হতাহত হচ্ছিলো ।
বর্ষা মৌসুম পরবর্তী অপারেশনগুলোর পরিকল্পনা নিয়ে মুক্তিবাহিনী গভীর চিন্তাভাবনা করছিলো । এটা স্বীকৃত যে বৃষ্টির পরিসমাপ্তি পশ্চিম পাকিস্তানিদের কৌশলগত সুবিধা দেবে । তারা আরও তৎপর হয়ে উঠতে পারবে এবং তাদের বৃহৎ কনভয়গুলোকে চলাচল করাতে সক্ষম হবে । বিমানপথের ব্যবহারও তারা বৃদ্ধি করতে পারে ।
মুক্তিবাহিনী , যারা নিজেদের অর্জনকে দৃঢ় করেছে , মূল্যবান স্থানীয় সমর্থনের কারনে প্রাথমিকভাবে অপারেশন চালাতে পারবে। ট্যাংক এবং বিমান হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না থাকাটা তাদের জন্য অসুবিধাজনক হবে
<003.074.152>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
যা দ্রুত সমাবেশ ও ছড়িয়ে পড়া এবং গেরিলা আক্রমনের মাধ্যমে কিছুটা সমাধান করা সম্ভব।
গেরিলা বাহিনী ইতিমধ্যেই তার প্রমান রেখেছে – বন্দর কার্যক্রমে মন্থরতা , জাহাজগুলোতে অতিরিক্ত প্রহরা , অন্ধকারে সৈন্যদের চলাচলে অনাগ্রহ , অফিসগুলোতে কম উপস্থিতি (বড়জোর ২০ শতাংশ), অস্ত্র তৈরী কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং চা ও পাটের ব্যবসায় স্থবিরতা ।
এগুলো এবং চলমান শরণার্থী-প্রস্থান প্রমান করে যে , বেসামরিক শাসনব্যবস্থায় ফেরত যাওয়া পরিস্কার ভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয় । পশ্চিম পাকিস্তানি সৈন্যদলের পাইকারি লুটপাট , হত্যা, ধর্ষন এবং খুন এই বিশ্বাসকে সমর্থন করছে ।
প্রতিদিন গড়ে ৩০০০০ শরনার্থী ভারতে আশ্রয় নিচ্ছে , ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যার মোট সংখ্যা ছিলো ৮৯,৮৯,০০০ । খাদ্য, ঔষধ এবং চিকিৎসা সুবিধার অভাবও শরনার্থী হবার অন্যান্য কারণ ।
ত্রিপুরায় শরণার্থী প্রবেশের উপর এক বিশ্লেষণে দেখা যায় , ৩০০০-৪০০০ শরণার্থী প্রতিদিন আসছে । এক পর্যায়ে তাদের অধিকাংশই ছিলো হিন্দু , কিন্তু এখন তাদের প্রায় ৪৫ শতাংশই মুসলমান । অধিকাংশ শরনার্থীই কুমিল্লা এবং সিলেট থেকে আগত যে স্থানগুলো পশ্চিম পাকিস্তান সৈন্যদের বিশেষ হামলার লক্ষ্য ছিলো ।
______________________
<003.075.153>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
কেবিনেট ডিভিশন কর্তৃক প্রচারিত একটি আন্তঃবিভাগীয় সার্কুলার | বাংলাদেশ সরকার কেবিনেট ডিভিশন | সেপ্টেম্বর ২৭, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
(মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ)
প্রতি,
১. পররাষ্ট্র সচিব
২. প্রতিরক্ষা সচিব
৩. অর্থ সচিব
৪. সংসদ সচিব
৫. স্বরাষ্ট্র সচিব
৬. স্বাথ্য সচিব
৭. কৃষি সচিব
মেমো নং : ………(৭)/ক্যাব. তারিখ : ২৭.৯.৭১
আমি আপনাদের মনোযোগ আকর্ষন করছি মন্ত্রীপরিষদ দপ্তর মেমো নং ৩০ (৮)/ ক্যাব. তারিখ ২১.৮.৭১ অনুযায়ী অনুরোধ করা যাচ্ছে যে, আপনাদের নিজ নিজ ন্ত্রনালয়ের / বিভাগের সাপ্তাহিক কার্যক্রমের বিবরণী প্রধান্মন্ত্রী বরাবর জমা দেওয়ার জন্য । এই তালিকা প্রতি সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সাথে সচিবদের সাপ্তাহিক টিং এর পূর্বেই জমা দিতে হবে।
(এইচ টি ইমাম)
মন্ত্রীপরিষদ সচিব
২৯.৯.৭১
<003.076.154>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোণাম | সূত্র | তারিখ |
আন্ত:বিভাগীয় সচিবদের সভার কার্যবিবরণি | বাংলাদেশ সরকার মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ | ২৭ সেপ্টেম্বর, |
১৯৭১ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সচিবদের ২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
অনুষ্ঠিত সভার কার্যবিবরণির উল্লেখযোগ্য অংশ বিদেশে মিশনগুলোসহ নিজ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের প্রতিবেদন তুলে ধরেছেন পররাষ্ট্র সচিব।
ভারতের সঙ্গে শিল্প ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য সাম্প্রতিক দিল্লি সফর নিয়ে প্রতিবেদন তুলে ধরেছেন অর্থ মন্ত্রী। একটি লিখিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন অর্থ মন্ত্রী।
জোনাল প্রশাসনিক কাউন্সিলের বিভিন্ন সমস্যা, বিশেষ করে সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে জোনাল প্রশাসনকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে । প্রধানমন্ত্রীর চাওয়া, সচিবদের কমিটি ব্যাপারটি আরও গুরুত্ব দিয়ে ভাববে এবং জোনাল প্রশাসনিক কাউন্সিলকে আরও কার্যকরি ও দক্ষ করে তুলতে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী কৃষি সচিবকে পরামর্শ দিয়েছেন কৃষির বিষয়াদি নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনকে সহায়তা করতে। কৃষি সচিবকে বলা হয়েছে, কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির সমস্যাগুলেঅ নিয়ে আন্তরিক ভাবে মনোযোগী হতে। বিশেষ করে দেশের ভবিষ্যত অগ্রগতিতে যেসবের সুনির্দিষ্ট সম্পর্ক থাকবে; যেমন, জমির মালিকানা ও ভোগদখলের পদ্ধতি, সমবায় সমিতিগুলো, আধুনিক কৃষি পদ্ধতি চালু, সেচ ব্যবস্থা ইত্যাদি। সব সচিবকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন নিজ নিজ মন্ত্রণালয়/বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ও আলোচনা সম্পর্কে তাঁকে নিয়মিত অবহিত করতে।
(এইচ.টি.ইমাম)
মন্ত্রী পরিষদ সচিব
১.১০.৭১
_____________________
<003.077.155>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
মুক্তিযুদ্ধে প্রকৌশলীদের ভূমিকা সম্পর্কে প্রেরিত একটি রিপোর্ট | বাংলাদেশ সরকার ত্রাণ ও পুনবার্সন মন্ত্রণালয় | ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
মেমো নং : প্রকৌ ৩৯ (৪) /২, তারিখ: ২৮.০৯.১৯৭১
মুক্তিযুদ্ধ ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় প্রকৌশলীদের সেবার সদ্ব্যবহার
আর. আর ও এইচ. এ মন্ত্রী একটি প্রকৌশলী বিভাগ গঠনের অনুমোদন দিয়েছেন ১৯৭১ সালের জুনে। তবে তিনি আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন এই প্রকল্প চালু না করতে। যাই হোক, প্রকৌশলীদের সেবা কাজে লাগানোর জন্য আরেকটি বিভাগ অনুমোদন পেয়েছিল এবং ১৫.০৯.১৯৭১ তারিখে আর. আর ও এইচ. এ মন্ত্রীর মাধ্যমে অর্থ সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছিল আর্থিক সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখতে এবং মন্ত্রী পরিষদকে আশু অবহিতের জন্য।
স্বাধীনতা আন্দোলন, পরিকল্পনা কেন্দ্র, ত্রাণ ও যুব শিবিরে প্রকৌশলীদের কাজে লাগানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো:
(১) স্বাধীনতা আন্দোলন :
প্রকৌশলীদের মুখ্য কর্মী থেকে শুরু করে অন্যদেরও প্রযুক্তিগত সহায়তা ও পরামর্শ সামরিক অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রতিরক্ষা বিভাগই ব্যাপারটির কথা তুলেছে। চাওয়ামতোই প্রকৌশলী ও কারিগরদের তালিকা করা হয়েছে। এখন তাদের পদায়ন সম্পর্কিত সিন্ধান্তের অপেক্ষা।
(২) পরিকল্পনা কেন্দ্র:
সরকার সম্প্রতি একটি পরিকল্পনা কেন্দ্র গঠন করেছে, যেটির কাজ নিম্নরূপ:
১. লড়াইয়ে উদ্ভূত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা
২. নীতিপত্রের প্রস্তুতি ও সেসব বাস্তবায়নের ছক কাটা
৩. দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা
৪. সংগ্রাম পরবর্তী অবস্থার পরিকল্পনা
৫. প্রস্তাবনা সম্পাদনের ফলো আপ করা
৬. সম্পাদনের সরু প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করা
পরিকল্পনা কেন্দ্রে প্রকৌশলীদের প্রয়োজন নিম্নলিখিত পরিপ্রেক্ষিতে:
পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য:
ক. পানির সরবরাহ ও শৌচাগারসহ বাস্তুচ্যুত মানুষের গৃহায়ন ও আবাসন
খ. স্থলপথ, রেলপথ ও জলপথের মতো যোগাযোগ ব্যবস্থা
গ. বিদ্যুৎ প্রবাহ ও শিল্প বিভা
<003.077.156>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
ঘ. টেলিফোন, টেলিগ্রাফ ও ওয়্যারলেস সিস্টেম
ঙ. কৃষির জন্য সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, যা পরবর্তীতে গ্রহণ করা হবে
পরিকল্পনার প্রস্তুতি ও খতিয়ানের জন্য মাঠ পর্যায়ে জরিপকারী প্রয়োজন। আর্থিক খতিয়ানের প্রস্তুতি ও বিভিন্ন ধাপের উন্নয়ন প্রকল্পের ছক কাটতে প্রকৌশলীদের প্রয়োজন। মাঠ পর্যায়ে কাজ বাস্তবায়ন, পরিকল্পনা প্রস্তুত ও খতিয়ান করবে প্রকৌশলী বিভাগ আর পরিকল্পনা অনুমোদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে পরিকল্পনা কেন্দ্র।
৩. যুব শিবির
সংক্ষিপ্ত আকারে মুক্তি বাহিনীর কারিগরি কৌশল সম্পর্কে ট্রেনিংয়ের ক্ষেত্রে প্রকৌশলীদের কাজে লাগানোকে প্রয়োজনঅয় বলে বিবেচিত হচ্ছে।
৪. ত্রাণ শিবির
বাস্তুচ্যুতদের দুর্ভোগ প্রশমিত করতে ত্রাণ শিবিরে প্রকৌশলীদের প্রয়োজন। ঐক্যবদ্ধ সরকারের পুনর্বাসন বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কর্নেল লুথরা সম্প্রতি এই বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গটি আমরা স্থানীয় সরকারেও নিয়ে যেতে পারি। উপরে উল্লেখিত বাস্তবতাগুলোর বিবেচনায়, আর. আর ও এইচ.এ. মন্ত্রী আমাকে বলেছেন বিষয়টি তাঁর (প্রধানমন্ত্রীর) সামনে উপস্থানের জন্য, যে বিভিন্ন বিভাগের প্রয়োজনের খাতিরে প্রকৌশরী বিভাগ গঠন করা হয়।
বিনয়ের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, প্রকৌশলীদের কাজে লাগানো নিয়ে আলাদা একটি নোট তাঁর সদয় অবগতির জন্য জমা দেওয়া হয়েছে
২০.৭.১৯৭১ তারিখে।
(মো. এমদাদ আলি)
প্রধান প্রকৌশলী
________________
<003.078.157>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বেতারে নীতির্নিধারণী বক্তব্য প্রচারের ওপর বিধিনিষেধ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি | বাংলাদেশ সরকার প্রচার ও জনসংযোগ বিভাগ | ২৯ সেপ্টেম্বর , ১৯৭১ |
প্রতিরক্ষ সচিব ও ভারপ্রাপ্ত সচিব,
তথ্য ও প্রচার,
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটা জানানো যাচ্ছে যে, নিম্ন স্বাক্ষরিত ব্যক্তির আগাম অনুমোদন ছাড়া রেডিও বাংলাদেশে কোনো নীতিনির্ধারণী বক্তব্য সম্প্রচার করা যাবে না।
সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও জানানো যাচ্ছে যে, নিম্ন স্বাক্ষরিতের আগাম নীরিক্ষা ছাড়া রেডিও বাংলাদেশে কোনো পাণ্ডুলিপি সম্প্রচার করা যাবে না।
(এ মান্নান)
ভারপ্রাপ্ত এম.এন.এ
জনসংযোগ, প্রচার,
তথ্য ও সম্প্রচার বিভাগ, বাংলাদেশ সরকার।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
নং: ৪৪, তারিখ: ২৯.৯.১৯৭১
সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সব প্রাণ্ডুলিপি ও বিবৃতি সম্প্রচারের আগে নীরিক্ষা করে দেখবেন ভারপ্রাপ্ত এমএনএ জনাব এ মান্নান।
পাণ্ডুলিপি সংগহ ও নীরিক্ষা করে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অনুষ্ঠান আয়োজক জনাব শামসুল হুদা চৌধুরিকে। সব পাণ্ডুলিপি সময়মতো তাঁর কাছে দেওয়ার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে যেন সম্প্রচার সূচিতে ব্যাঘাত না ঘটে।
(এ সামাদ)
সচিব তথ্য ও প্রচার বিভাগ
মেমো নং: ৪৪, তারিখ: ২৯.০৯.১৯৭১
অনুলিপি পাবে ভারপ্রান্ত এমএনএ জনাব এ মান্নান। ২৯.০৯.১৯৭১ তারিখে তার চিঠিতে এটার সূত্র আছে।
(এ সামাদ)
সচিব
তথ্য ও প্রচার বিভাগ
_________________
<003.079.158>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
যুব ক্যাম্পের ঔষুধ সরবরাহের হিসাব | বাংলাদেশ সরকার, যুব ক্যাম্প প্রধান কার্যালয় | ১ অক্টোবর, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার পরিচালকের কার্যালয়,
প্রধান কার্যালয়, যুব শিবির, মুজিবনগর।
সর্বোচ্চ গোপনীয়
তারিখ: ১.১০.১৯৭১
মেমো নম্বর: ৮৮ (১০)
প্রতি,
জনাব আবু ইউসুফ ৫/১১,
কুঞ্জবন টাউনশিপ, কৃষ্ণনগর, আগরতলা (ত্রিপুরা)।
জনাব ,
১০০০ জনবলের প্রতিটি যুব শিবিরের এক মাসের প্রয়োজনীয় পরিমাণ ঔষুধ ও সরঞ্জামাদির একটি তালিকা আপনার অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এখানে সংযুক্ত করা হলো, যেটির অনুমোদন দিয়েছে স্বাস্থ্য ইউনিট।
ঔষুধের পরিমাণের তালিকার একুট অনুলিপি আপনার অঞ্চলের সহকারি পরিচালককে পাঠানোর অনুরোধও করা হলো।
দয়া করে রশিদের প্রাপ্তিস্বীকার জানাবেন।
আপনার বিশ্বাসযোগ্য
(এস আর মির্জা)
পরিচালক, প্রধান কার্যালয়, যুব শিবির।
১০০০ জনবলের প্রতিটি যুব শিবিরের এক মাসের প্রয়োজনীয় পরিমাণ ঔষুধ ও সরঞ্জামাদির একটি তালিকা, যেটির অনুমোদ দিয়েছে স্বাস্থ্য ইউনিট, পুনবার্সন শাখা সচিবালয় বিভাগ, কলকাতা-১৭।
সিরিয়াল নম্বর নামের তালিকা পরিমাণ
১.সিরিঞ্জ ৫ সিসি ও ২৮ সিসি ৫
২. ব্যান্ডেজ ৩ ইঞ্চি২ ডিওএস ২ডস
৩.ব্যান্ডেজ ২ ইঞ্চি ২ ডিওএস ২ডস
৪. তুলা১ ব্যাগ ৫. গজ প্যাকেট প্রতিটি ১ মিটার ৫ প্যাকেট
৬.ভেষজ আয়োডিন ১ পাউন্ড
৭.ভেজস বেনজাইন ১ পাউন্ড
৮.সেলাই কাটার সূচ: বাঁকা ৬
৯.সেলাই কাটার সূচ: সোজা ৬
<003.079.159>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সুই হোল্ডার ১
আর্টারি ফরকপস ৫
টিস্যু ফরকপস ৪
থার্মোমিটার ২
ট্রে ২
ক্যাপস্যুল টেরাম ইয়ুইনে ১০০
ক্যাপ্সুল অক্সিটেট্রাসাইক্লিন ২০০
ইনজেকশন পেনিসিলিন ৫ লাখ ১০০
X 1000 ইঞ্জ এন্টিবায়োটিক ১/২ মিগ্রা *১০০০ ১০০
ট্যাবলেট S.D.Z ১০০০
সালফাগুনিডিয়ান ২০০০
ট্যাবলেট Entrequinol ১০০০
ট্যাবলেট Mexaforms ৪০০
ট্যাবলেট মাল্টি ভিটামিন ৫০০
ট্যাবলেট ভিটামিন সি 500 মিলিগ্রামX 5000 ট্যাবলেট ৫০০
ভিটামিন বি ‘কমপ্লেক্স’ ৫০০
ক্যাপসুল chloramphenicol ২০০
ক্যাপসুল Enteroquionol ১০০০
Sulphanilamide পাউডার V2 পাউন্ড
ট্যাবলেট Inastopan ১০০০
ক্যাপসুল intespotan forte ২০০
ইনজেকশন অ্যাট্রোপিন Sulph X 500 amp ৩০
ইনজেকশন গ্লুকোজ 25% X 25 সিসি বিষয়বস্তু ৫০
ইনজেকশন নরমাল স্যালাইন 500 সিসি ৫০
ইনজেকশন Largactil 50 মিলিগ্রাম ২০ amp
ট্যাবলেট Largactil 25 মিলিগ্রাম. ৫০ মিলিগ্রাম
ইনজেকশন Pathedine ১০ amp
ইনজেকশন আফিম ১০ amp
Decadrop আই ড্রপ ৫
Varmycotine আই মলম ৫
ইনজেকশন Avil ১০ amp
ট্যাবলেট Avil ৫
ট্যাবলেট Prednisolone ১০০
Corex (COREX) কাশির সিরাপ 40 মিলিলিটার. ১০
ইনজেকশন Solorcortef ১০ amp
ইনজেকশন উ টি এস ১০০ amp
Cotgent (ক্রনিক প্লেইন এক্স 4, 3, 2 নং) ২ প্রতিটি
কাঁচি ১
<003.079.160>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
ট্যাবলেট Crocin ৫০
Teblets Novalgin ১০০
ট্যাবলেট Tetsil ১০০
ট্যাবলেট Solladonal. retarod ১০০
ট্যাবলেট Phenobarbitonc ১০০
ট্যাবলেট Binocopan ৪
ইনজেকশন Baralgin ২০ amp
ট্যাবলেট Spasmindon ১০০
Odomoos (এন্টি মশা ক্রিম) 30 গ্রাম প্রতি 000 ২ টিউব
৫৯ মিশ্রণ লেবু ………… &ব্লিচিং পাউডার ………………. প্রয়োজনীয় হিসাবে
(যদি ব্লিচিং পাউডার পাওয়া না যায়
100% চুন ব্যবহার করা যেতে পারে)
০০০ (হাইজিন অ্যান্ড স্যানিটেশন জন্য).
________________
<003.080.161>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরনাম | সূত্র | তারিখ |
বিভিন্ন যুব শিবিরে অবস্থানকারীদের শীতবস্ত্র সরবরাহ করার জন্য রাষ্ট্রপতির আদেশ | বাংলাদেশ সরকার, রাষ্ট্রপ্রতির কার্যালয় | ১ অক্টোবর, ১৯৭১ |
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়
গোপনীয়
জরুরি
তারিখঃ ১ অক্টোবর, ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ
স্মারক নং- পি.এস.
বরাবর
ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী
ত্রাণ ও পূনর্বাসন মন্ত্রণালয়,
বাংলাদেশ সরকার।
বিযয়ঃ যুদ্ধ শিবিরে অবস্থানরত যুবকদের শীতবস্ত্র প্রদান বিষয়ে।
অল্প কিছুদিনের মধ্যেই শীতকাল শুরু হবে। এখন বিভিন্ন শিবিরে অবস্থানরত যুবকদেরকে শীতবস্ত্র সরবরাহ করা প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে আপনার প্রতি পরামর্শ রইল যে, উপরিল্লিখিত শিবিরসমূহে অবস্থানরত প্রত্যেক যুবককে দুইটি কম্বল (একটি তোষক হিসেবে এবং অন্যটি লেপ হিসেবে ব্যবহারের কন্য) ও একটি করে ফুলহাতা পুলওভার/ জ্যাকেট /চাদর সরবরাহ নিশ্চিত করুন। মেঘালয়, আসাম ও ত্রিপুরার পার্বত্য এলাকায় ১৫, অক্টোবরের মধ্যে এবং পশ্চিমবঙ্গের সমতল এলাকায় ৩০, অক্টোবরের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ সম্পন্ন করার জন্য পুনরায় অনুরোধ করছি।
বিষয়টি অতীব জরুরি।
(সৈয়দ নজরুল ইসলাম)
ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি
স্মারক নং- পি,এস, তারিখঃ ১ অক্টোবর, ১৯৭১ খ্রিঃ
অনুলিপিঃ
১/ প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ সরকারঃ অবগতির জন্য
২/ মন্ত্রী, অর্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকারঃ অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য’
ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি
<003.081.162>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বাংলাদেশ সরকার মন্ত্রী পরিষদের সিদ্ধান্তের অংশবিশেষ | বাংলাদেশ সরকার , কেবিনেট বিভাগ | ১ অক্টোবর, ১৯৭১ |
সবচেয়ে আশু
মন্ত্রী পরিষদ বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের অংশবিশেষ
১ অক্টোবর, ১৯৭১
বিষয়সূচি ৫: বিবিধ
খ. আগামী ৭ অক্টোবর, ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ তারিখের মধ্যে এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা চূড়ান্ত করা হবে মর্মে মন্ত্রীপরিষদে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। যদি উল্লিখিত তারিখের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ উৎস থেকে এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা সম্ভব না হয়, তবে তুরা, শিলঙ ও আগরতলা সেক্টরের জন্য বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব উৎস হতে এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করবে।
———— ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি
স্মারক নং- ১৯৮(২) ক্যাবি. তারিখঃ ৫ অক্টোবর, ১৯৭১
অনুলিপিঃ অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুলিপিঃ প্রেরণ করা হল।
১/ সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়,
২/ সচিব, স্বাস্থ্য ও মানব কল্যাণ মন্ত্রণালয়
(এইচ. টি. ইমাম)
মন্ত্রিপরিষদ সচিব
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
<003.082.163>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
স্বাধীন বাংলা কর্মী কত্রিকআন্তর্জাতিক যগাযযযযগ সম্পরকে প্রতিরক্ষা সচিব কে লিখিতএকটি চিঠি
|
বাংলাদেশ সরকার প্রচার বিভাগ |
২ অক্টোবর ১৯৭১ |
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সম্মেলন
নয়াদিল্লী ১৮,১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
২২ রোজ এভিনিউ ,নয়াদিল্লী – ১ ভারত ,টেলি –২৭৩৩৭৬/২৭১৯৪৬
গ্রাম – সত্যগ্রহ
বরাবর
প্রতিরক্ষা সচিব
বাংলাদেশ সরকার
মুজিবনগর
২অক্টোবর ১৯৭১
একান্ত গোপনীয়
মাননীয় মহাশয়,
আমি যখন নয়াদিল্লিতে গত মাস বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলাম, প্রতিনিধির অন্যতম জনাব রিচার্ড হাউজার, আমার কাছে এক বাংলাদেশী নাগরিককে প্রশিক্ষণের জন্য একটি প্রস্তাব নিয়ে আসে যা মানসিক যুদ্ধবিগ্রহের জন্য দরকারী।
এটি ছিলো, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে তাঁর অবদানের অংশ। ভদ্রলোক ইন্টারন্যাশনাল পিস একাডেমীর প্রেসিডেন্ট জেনারেল রিখায়ের তুলনায় ইন-কমান্ডে দ্বিতীয় ছিলেন অন্যথায় নিউইয়র্ক- লুমুম্বা-শম্বী সঙ্কটের সময় কঙ্গোতে জাতিসংঘবাহিনীর কমান্ডার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ছিলেন হিফ্সী বামেনুহিনের এর সংগতকারী স্বামী, যিনি বিশ্ববিখ্যাত পিয়ানোবাদক ইয়াহু দিমেনুহিনের বোন। আমি এই সম্মেলনের অন্যান্য প্রতিনিধিদের কাছ থেকে তিনি নিজের সম্পর্কে যা বিবরণ দিয়েছিলেন তার সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিলাম এবং আমি সন্তুষ্ট ছিলাম সত্যতা নিয়ে। এখানে তার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব একজন মানুষ, যিনি না-খুব-তরুণ এবং তুলনামুলকভাবে গড় বুদ্ধিমত্তায় হবে অধিষ্ঠিত, হতে হবে সামর্থ্যবান এবং ইন্দ্রিয় সাংগঠনিক ধাত-বাঞ্ছনীয় এবং পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের নজরে পড়েনি, এমন একজনকে লন্ডনে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের বিষয়ে তিন সপ্তাহের প্রশিক্ষণ কোর্সের জন্য মনোনীত করা উচিত। তারমতে, যুদ্ধ বিগ্রহের অংশ হিসাবে অস্ত্রের সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধও গুরুত্বপূর্ণ। তার নিবিড় প্রশিক্ষণের পর মনোনীত ব্যক্তি কে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের একটি পুরো বিভাগের
ভার দেওয়া হতে পারে যে বিভাগে সামরিক অভিযানের এবং মিডিয়া অপপ্রচারের বিশেষত রেডিও সঙ্গে পূর্ণসমন্বয় করে কাজ করতে হবে। তিনি প্রশিক্ষিত ব্যক্তিকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় বা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপরে গুরুত্বারোপ করেছেন যেহেতু পাকিস্তানি গোয়েন্দারা তার পিছু লেগে থাকবে। প্রশিক্ষণের খরচ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই খরচ সম্পূর্ণ রূপে প্রশিক্ষক বহন করবে। তারা ইংল্যান্ডে প্রশিক্ষণার্থীদের রিটার্ন ভাড়ার জন্য ১০০$ পর্যন্ত অবদান করতে ইচ্ছুক। তিনি চাইতেন না যে তার পরিচয় সব মানুষের কাছে প্রকাশ পাক, তাই তিনি আমার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতেন।
.
<003.082.164>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
আমি আপনাকে স্মরণ করিয়ে উচিত যে জনাব হাউজার একজন ইহুদি ধর্মের লোক। উনার প্রস্তাবে ইসরায়েলের মতো একটি দেশের কি স্বার্থ থাকতে পারে তা আমার জানা নেই , আপনি যেমনটি জানেন , ক্রমাগতভাবে তারা বাংলাদেশ নাগরিকদের এখানে এবং বিদেশে ফ্রীলার পাঠানো হয়েছে যাতে তাদের কাছ থেকে সামরিক সাহায্যের জন্য আমরা যেকোন ধরনের সম্পর্কে রাজী হতে পারি। আমাদের সমর্থন করার পিছনে তাদের উদ্দেশ্য সম্ভবত আরব সমর্থনকারী দেশ-পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের কৌশলের একটি অংশ। আমার মতে, প্রশিক্ষণ সূত্র যাই হোক না কেন সেখানে জড়িত শুধুমাত্র এক ব্যক্তিকে প্রকাশে কোন ক্ষতি নেই, নেই কোনো ঝুঁকি। আমরা যদি সত্যিই প্রশিক্ষিত হতে পারি, তাহলে আমাদের যুদ্ধ প্রচেষ্টায় তিনি একটি মহান সম্পদ প্রমাণিত হবেবেন এটা নিশ্চিত। যেহেতু প্রস্তাবে নামমাত্র সীমাবদ্ধতা আছে, তাই আমি আশা করব যে একটি সিদ্ধান্ত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শীঘ্রই আপনার কাছ থেকে শুনতে প্রত্যাশী।
আপনার শুভাকাঙ্খী
(এ কবির) রেডিও বাংলাদেশ.
<003.083.165>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
স্বাস্থ্য বিভাগে একটি নিয়োগ সম্পর্কে স্বাস্থ্য সচিবের বিজ্ঞপ্তি |
বাংলাদেশ সরকার, স্বাস্থ্য ও জনকল্যান বিভাগ |
৪ অক্টোবর, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
জাতীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়
মুজিবনগর
নিয়োগ
তারিখঃ ৪ অক্টোবর, ১৯৭১
নং এইচ.এস/৩৪এস
ড. আহমেদ আলি, যিনি বর্তমানে সহকারী সাধারণ পরিচালক (প্রশাসন), জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে কর্মরত, তাকে সহকারী সম্পাদক, জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ পদে তাৎক্ষণিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তিনি মাসিক ৫০০ রুপি (পাঁচশত রুপি মাত্র) বেতন প্রাপ্ত হবেন।
এই নিয়োগ জনসেবার স্বার্থে প্রধাণমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে দেওয়া হয়েছে।
Sd/- Dr. T. Hossain
সচিব
জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়
স্মারক নং- এইচ.এস/৩৪৫(১৮) তারিখঃ ৪ অক্টোবর, ১৯৭১
অনুলিপিঃ
১। ড. এ. আলি, সহকারী সচিব, জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয় বিভাগ
২। কলকাতা বাংলাদেশ মিশনের প্রধাণ
৩। সচিব, জনপ্রশাসণ বিভাগ
৪। সচিব, অর্থ বিভাগ
৫। সচিব, পররাষ্ট্র বিভাগ
৬। সচিব, প্রতিরক্ষা বিভাগ
৭। সচিব, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ
৮। সচিব, স্বরাষ্ট্র বিভাগ
৯। প্রধাণ প্রকৌশলী
১০। ত্রাণ কমিশনার
১১। পরিচালক, এইচ. কিউ. ইয়ুথ ক্যাম্প
১২। আইন ও সংসদ বিষয়ক বিষেশ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
১৩। রাষ্ট্রপতির একান্ত সচিব
১৪। প্রধাণমন্ত্রীর একান্ত সচিব
১৫। অর্থমন্ত্রীর একান্ত সচিব
১৬। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্ত সচিব
১৭। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্ত সচিব
১৮। এ. ডি. সি. থেকে সি-ইন-সি
(DR. T. HOSSAIN)
সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়
<003.084.166>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
আহত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পুনর্বাসন সম্পর্কিত মন্ত্রী পরিষদের সিদ্ধান্ত |
বাংলাদেশ সরকার কেবিনেট ডিভিশন |
৭ অক্টোবর, ১৯৭১ |
গোপনীয়
৭ই অক্টোবর, ১৯৭১ এ
অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভা বৈঠকের
কার্যবিবরণী এবং সিদ্ধান্তের উদ্ধৃতাংশ।
বি. মুক্তিবাহিনীর আহত সদস্য এবং শহীদদের উপর নির্ভরশীলদের স্বাস্থ্যসেবা এবং কল্যাণের পরিকল্পনা।
মন্ত্রীসভায় এই পরিকল্পনা নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হয়েছে। শুধুমাত্র অপরিহার্য অংশগুলোই বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। উদাহারণস্বরূপ, চিকিৎসাকালীন সময়ে আহতদের সাথে আচরণবিধি এবং তাদের পকেট ভাতার বিধান, প্রতিবন্ধীদের সাথে আচরণবিধি, মৃতদেহ সমাধিস্থ/দাহ করা এবং শহীদদের প্রতি নির্ভরশীলদের জন্য পেনশন। এছাড়া আরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সম্ভাব্য সর্বনিম্ন সংখ্যক ব্যক্তি নিযুক্ত থাকবেন।
এসডি/-
ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি
গোপনীয়।
মেমো নং (৪)/ক্যাব তারিখ ২৫শে অক্টোবর, ১৯৭১
১। সি-ইন-সি।
২। সচিব, প্রতিরক্ষা, together with copies of his shemes
৩। সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
৪। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব
(এইচ.টি.ইমাম)
কেবিনেট সচিব
২৫.১০.৭১.
<003.085.167>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
তথ্য সচিব হিসাবে আনওয়ারুল হক খানের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি | বাংলাদেশ সরকার, কেবিনেট বিভাগ | ৭ অক্টোবর, ১৯৭১ |
গোপন
৭ই অক্টোবর, ১৯৭১ এ
অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভা বৈঠকের
কার্যবিবরণী এবং সিদ্ধান্তের উদ্ধৃতাংশ।
ক)** যেহেতু এটা অনুধাবন করা হয়েছিল যে প্রতিরক্ষা সচিব ইতমধ্যেই নিজের কাজ নিয়েই অনেক ব্যস্ত আছেন, আর তাই নিজের কাজের সাথে তিনি সম্প্রচার মন্ত্রনালয়ের দিকে মননিবেশ করতে পারছেন না। তাই এখনকার জন্য অর্থ ও বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের একজন স্পেশাল ডিউটি কে সম্প্রচার মন্ত্রনালয়ের সেক্রেটারি ইন চার্জ নিযুক্ত করা হবে। অর্থমন্ত্রী এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হলেন এবং মোঃ এ এইচ খান কে এই কাজের জন্য তাৎক্ষনিকভাবে নিয়োগ করতে রাজি হলেন।
Sd/
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি
সচিবালয়.
গোপনীয়।
মেমো নং….(৪) তারিখঃ ৭/১০/১৯৭১
হস্তান্তর করা হল:
১/ সচিব, GA Department.
২/ সচিব, প্রতিরক্ষা বিভাগ
৩/ প্রধানমন্ত্রীর পিএস.
৪/ অর্থমন্ত্রীর পিএস
(এইচটি ইমাম).
মন্ত্রিপরিষদ সচিব
২৫/১০/১৯৭১
<003.086.168>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বিভিন্ন সেক্টরে প্রয়োজনীয় ঔষধের তালিকা প্রেরন সম্পর্কে স্বাস্থ্য সচিবের একটি চিঠি |
বাংলাদেশ সরকার স্বাস্থ ও জনকল্যাণ বিভাগ |
৭ অক্টোবর, ১৯৭১ |
তাৎক্ষনিক
এখন থেকে দ্রব্যাদি প্রস্তুত এবং নিয়মমাফিক স্বাক্ষর করার দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসারের উপর অর্পিত হবে।
সে প্রতিমাসে একটি বিবরণী পেশ করবে তার দ্রব্যাদির সাথে। সেইগুলি আবার সেক্টর কমান্ডার কর্তৃক প্রতিসাক্ষরিত হবে এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত হোস্ট কমান্ডারের এর নিকট পেশ করা হবে।
যদি দ্রব্যাদি এবং অন্যান্য ফরমাশ সমুহ ৫ দিনের মাঝে সরবরাহ না করা হয় তবে সেগুলি “ ঔষধ সরবরাহে অক্ষমতা” কারণ দর্শন পূর্বক নিম্নসাক্ষরিত ব্যক্তিবর্গের নিকট প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য পাঠাতে হবে।
এই মর্মে প্রতিটি সেক্টর কমান্ডারকে আমাদের দ্বারা সৃষ্ট এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী কর্তৃক সরবরাহকৃত এখনো পর্যন্ত সকল বর্তমান থাকা চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা সম্পর্কে একটি বিস্তারিত বিবরন পেশ করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
এই তথ্য গুলি পাওয়ার পরেই ঔষধ এবং অন্যান্য ফরমায়েশ সম্পর্কে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই নির্দেশনায় সি-ইন-সিয়ের অনুমতি আছে। এর একটি কপি প্রতিরক্ষা সচিব, সিওএস আগরতলা, এডিএমএস আগরতলা এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীর সেক্টর কমান্ডারের নিকট পাঠাতে হবে।
Sd/-ড. টি.হোসেন
৭/১০/৭১
সচিব, স্বাস্থ্য ও কল্যানমন্ত্রনালয়
যাদের কাছে কপি টি হস্তান্তর করা হবে :….
- সচিব, প্রতিরক্ষা বিভাগ
- সিওএস, আগরতলা
3.এডিএমএস আগরতলা
তথ্য ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর সেক্টর দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডারদেরও অবগত করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
(ড.এফ এ শেখ)
ঔষধ প্রস্তুত ও সরবরাহের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত
বিশেষ মেডিক্যাল অফিসার
পরিচালক, স্বাস্থ্য ও কল্যান মন্ত্রনালয়
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, মুজিবনগর
<003.087.169>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
প্রতিরক্ষা স্বাস্থ্য বাজেট সম্পর্কিত মন্ত্রী পরিষদের সিদ্ধান্ত | বাংলাদেশ সরকার, কেবিনেট বিভাগ | ৭ অক্টোবর, ১৯৭১ |
গোপন
৭/১০/১৯৭১ তারিখের সচিবালয় মিটিং থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি এবং সিদ্ধান্তসমুহ
গ/ স্বাস্থ্যসচিব কর্তৃক পেশকৃত প্রতিরক্ষা চিকিৎসা বাজেট
“স্বাস্থ্য ও প্রতিরক্ষা খাত” নামক নতুন একটি খাত খোলার প্রস্তাব গৃহীত হয়। এই জন্য ১০ লাখ টাকা স্যাংশন করা হয়। এটাও সিদ্ধান্ত হয় যে, স্যাংশনের তহবিলের ভার (১০ লাখ) প্রধানমন্ত্রীর উপর ন্যাস্ত করা হবে এবং প্রয়োজনবোধে তহবিল থেকে টাকা উঠানোর অধিকারও কেবল তাঁরই থাকবে, যেখানে প্রতিরুপি সংস্থাসমূহের মুক্তিবাহিনির সদস্যদের জন্য চিকিৎসা ছাউনির ব্যবস্থা করার কথা। সচিবালয় সিদ্ধান্ত নেয় যে, এই তহবিলের টাকা কেবলমাত্র অত্যন্ত জরুরি দরকার সমুহে ব্যবহৃত হবে। অর্থ মন্ত্রনালয় প্রধানমন্ত্রীর আদেশক্রমে এই তহবিল উন্মুক্ত করবেন।
Sd/-
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি.
সচিবালয়.
মেমো নং….(৬) তারিখঃ ৭/১০/১৯৭১
হস্তান্তর করা হল:
১/ প্রধানমন্ত্রী,
২/ অর্থমন্ত্রী
৩/ সি-ইন-সি
৪/প্রতিরক্ষা সচিব
৫/ অর্থ সচিব
৬/ স্বাস্থ্য সচিব
(এইচ টি ইমাম)
মন্ত্রিপরিষদ সচিব
<003.088.170>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
জোনাল স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিয়োগ সংক্রান্ত মন্ত্রী পরিষদের সিদ্ধান্ত | বাংলাদেশ সরকার কেবিনেট ডিভিশন | ৭ অক্টোবর, ১৯৭১ |
গোপনীয়
৭ অক্টোবর, ১৯৭১ অনুষ্ঠিত মন্ত্রীপরিষদ মিটিংয়ের সারসংক্ষেপ।
গ। জনস্বাস্থ্য বিষয়ে পরিলক্ষিত হয় যে ১১টি অঞ্চলের জন্য ১১জন আঞ্চলিক স্বাস্থ্যকর্মকর্তা প্রয়োজন। এইসব পদ অতিসত্বর পূরণ করা হবে। এই সংক্রান্ত প্রয়োজন মেটাতে বেসামরিক খাতে স্বাস্থ্যখাত (বেসামরিকস্বাস্থ্যসেবা) নামে নতুন খাত খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এজন্য প্রতিটি অঞ্চলের জন্য ৫০,০০০/- টাকা (রুপি) করে ৫,৫০,০০০/- টাকা (রুপি) প্রধানমন্ত্রীর অনুকূলে বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর চাহিদা অনুযায়ী অর্থমন্ত্রণালয় এই অর্থ ছাড় করবে।
স্বাক্ষর
ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি
গোপনীয় ;
Memo No..(4)/Cab. তারিখঃ২৫/১০/১৯৭১
অনুলিপিঃ ১. মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
২. মাননীয় অর্থমন্ত্রী।
৩. সচিব, অর্থ বিভাগ।
৪. সচিব, স্বাস্থ্য বিভাগ।
(এইচ. টি. ইমাম)
মন্ত্রী পরিষদ সচিব
২৫/১০/৭১
<003.089.171>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
তথ্যসচিবকর্তৃকলিখিতপ্রশাসনিকসমন্বয়সম্পর্কিতএকটিচিঠি | বাংলাদেশ সরকার তথ্য মন্ত্রণালয় | ১৬ অক্টোবর, ১৯৭১ |
জয় বাংলা
তথ্য, প্রচার ও বেতার দফতর
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
মুজিবনগর
প্রেরকঃ জনাব এ. এইচ. খান,
সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে সরকার,
তথ্য প্রচার, ও বেতার দফতর।
সুপ্রিয় সচিব মহোদয়,
এটা সুস্পষ্ট যে বিচ্ছিন্নতার মাঝে কোনো সরকার কাজ করতে পারেনা। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাজের মধ্যে অন্তরঙ্গতার সহিত বন্ধন থাকতে হয়। আমি বারংবার পুনরাবৃত্তি করি এইযে উক্ত মন্ত্রণালয় সরকারের পরিকল্পনায় দৃষ্টিপাত এবং শত্রুর অপপ্রচার মোকাবিলা করতে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে, তাৎক্ষণিক যোগাযোগের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা যেমন রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রীর স্বাধীন এলাকায় ভ্রমণ, এবং মন্ত্রীদের সাথে অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের দেখা-সাক্ষাৎ, গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম এবং আমাদের সাহসী প্রতিরক্ষা বাহিনীর অর্জনের ঘটনাবলী উক্ত মন্ত্রণালয়ের সাথে যথাযত দ্রুততার সহিত সংযুক্ত নেই। এর ফলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি, সঠিকভাবে প্রচার করা যাচ্ছেনা এবং বাংলাদেশের লক্ষাধিক জনগণ যারা দখলকৃত অঞ্চলে অবস্থান করছেন তারা এসব থেকে অজ্ঞাত থেকে যাচ্ছেন। আমরা যদি শত্রুদের অপপ্রচার মোকাবিলা করতে না পারি তাহলে তারা হয়তো শত্রুদের দ্বারা প্রচারকৃত এসব প্রোপাগান্ডার শিকার হবে।
এই অবস্থার সুরাহা করে হলে এটা দরকারি যে প্রতিটা মন্ত্রণালয় তাদের নিজস্ব অনুষ্ঠান এবং কার্যক্রমের আগেই প্রচারণার জন্যে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবে। এতে করে দেশে বিরাজমান যুদ্ধ পরিস্থিতির উপর নজর রেখে এই মন্ত্রণালয় এর নিজস্ব প্রোগ্রামের খসড়া বানাতে পারবে। তাছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৃহীত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এই মন্ত্রণালয়ের জানতে হবে যেন জনগণের কাছে সঠিক তথ্য ও চিত্র প্রকাশের নিশ্চয়তা দিতে পারে। সুতরাং এটা প্রয়োজনীয় যে আপনার মন্ত্রণালয় আমাদের সাথে সকল গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবে।
আমি আশা করি আপনি এই ব্যাপারে ব্যক্তিগতভাবে আগ্রহী হবেন এবং একজন কর্কর্তাকে এহেন কাজের জন্যে নির্ধারিত দায়িত্ব প্রধান করবেন।
বিনীত,
এসডি/- এ. এইচ. খান
১৬.১০.৭১
<003.090.172>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
তথ্য সচিব কতৃক প্রতিরক্ষা সচিবকে লিখিত একটি চিঠি | বাংলাদেশ সরকার, তথ্য মন্ত্রণালয় | ১৮ অক্টোবর, ১৯৭১ |
জয় বাংলা
তথ্য প্রচার ও বেতার দফতর
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
মুজিবনগর
প্রেরক: এ.এইচ. খান,
সচিব,
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
আমার প্রিয় সামাদ,
আমি মাত্রই তোমার ডি.ও. গ্রহণ করলাম, ১৮.১০.৭১ তারিখে।
আমি প্রজ্ঞাপন ও প্রচার সমন্বয়ের সভাতে উপস্থিত থাকতে পারবো না বলে আমি দুঃখিত। আমি আরে দু: খ প্রকাশ করছি যে সংবাদ এবং তথ্য, চলচ্চিত্র, শিল্প ও নকশা এবং রেডিও অধিদপ্তরের আমার সকল কর্মকর্তা ইতিমধ্যে ব্যস্ত রয়েছেন এবং সভায় উপস্থিত হতে সক্ষম হবে না।
আমি প্রচার ও প্রচারণা সমন্বয় সংক্রান্ত কাজগুলোর ব্যাপারে আপনার চিন্তাভাবনার সাধুবাদ জানাচ্ছি। আমরা এই ইঙ্গিতের কদর করছি এবং কোন নির্দিষ্ট এলাকায় আমাদের আপনার সহযোগিতা প্রয়োজন তা সম্পর্কে আপনাকে অবগত করবো।
আমি উক্ত বিষয়ে ইতিমধ্যে আপনাকে আহবান করেছি। এ ব্যাপারে আপনার পরামর্শ গ্রহণ করলে খুশি হব।
ধন্যবাদের সহিত,
এ.এইচ খান
<003.091.173>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনম | সূত্র | তারিখ |
বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কর্মের অগ্রগতি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন | বাংলাদেশ সরকার, কেবিনেট বিভাগ | ২০ অক্টোবর, ১৯৭১ |
সরকারের ক্রিয়াকলাপ
এতদূর পর্যন্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকার নিম্নলিখিত মন্ত্রণালয়/বিভাগ নিয়ে গঠিত হয়েছে।
১. প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
২. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
৩. অর্থ,ব্যবসা এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
৪. মন্ত্রিসভা সচিবালয়।
৫. সাধারণ প্রশাসন।
৬. স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
৭. তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
৮. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
৯. ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ।
১০. সংসদ বিষয়ক বিভাগ।
১১. কৃষি বিভাগ।
১২. প্রকৌশল বিভাগ।
উপরন্তু, সরাসরি সরকারের আাওতার বাইরে কতিপয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা গঠিত হয়েছে। এগুলো হলো:
(i)পরিকল্পনা কমিশন;
(ii) ব্যবসা-বাণিজ্যের বোর্ড;
(iii) নিয়ন্ত্রণ, যুব ও অভ্যর্থনা শিবির বোর্ড;
(iv) ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিটি; এবং
(v) উদ্বাস্তু কল্যাণ বোর্ড।
১. প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়:
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত রিপোর্ট আলাদাভাবে জমা হচ্ছে। প্রতিরক্ষার প্রশাসনের আরো তিনটি কাজ উল্লেখ করা হলো:
(i) মানসিক কল্যাণ সেল-এটি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার মধ্যে কাজ করছে।
(ii) নিয়মিত বাহিনী এবং গণবাহিনীর মেডিকেল কভার ও কল্যাণের জন্য-এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার মধ্যে সম্পন্ন করা হচ্ছে।
(iii) বাহিনীর জন্য বীরত্বসূচক পুরস্কার প্রবর্তন-
২. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়:
(ক) বিদেশে মিশন প্রতিষ্ঠা- কলকাতা, দিল্লী, লন্ডন, ওয়াশিংটন, নিউ ইয়র্ক এবং স্টকহোমে।
<003.091.174>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
খ) বৈদেশিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন/ অভিযানঃ
১) জাতিসংঘে প্রতিনিধি দল
২)আফগানিস্তান, সিরিয়া, লেবানন -এ প্রতিনিধি দল
৩) নেপাল-এ প্রতিনিধি দল; এবং,
৪) সিলন, বার্মা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে প্রতিনিধি দল
উপরিউক্ত কিছু দেশ থেকে আশান্বরুপ সাড়া পাওয়া যায় ।
গ) ইংল্যান্ড, আমেরিকা, ফ্রান্স, সুইডেন, জাপান এবং আরও অন্যান্য কিছু দেশ বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল । বাংলাদেশের জন্য এই দেশগুলো বৈদেশিক অনুদান জোগাড় করে এবং বাংলাদেশের পক্ষে সংবাদ প্রচার করে।
ঘ) ইরাক, ফিলিপাইন, আর্জেন্টিনা, পাকিস্তানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক সরিয়ে নেয়। লন্ডন ,ওয়াশিংটন ,নিউইয়র্ক , কাঠমুন্ডু এবং হংকং এর উচ্চপদস্থ কূটনৈতিকগণ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন (শুধুমাত্র কলকাতা আর দিল্লী ছাড়া)
ঞ) বিদেশী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সরকারী চাকুরী নিয়োগ ( যুক্তরাজ্যে সাতজন এবং যুক্তরাষ্ট্রে ২ জন) সেবা দেয়া হবে।
এছাড়াও বাইরে প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে।
৩) অর্থ ও ব্যবসা-বানিজ্য মন্ত্রনালয়ঃ
অর্থ সচিব তার প্রতিবেদন আলাদাভাবে জমা দেন । এই মন্ত্রনালয় বাংলাদেশের জন্য আর্থিক সাহায্য সংগ্রহ করে । এটা বাজেটও প্রস্তুত করে এবং বিভিন্ন এজেন্সি ও ব্যাক্তিদের দেনা পরিশোধ করে । এটি কিছু কিছু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও চালু করে । দেরীতে হলেও এই মন্ত্রনালয় বাংলাদেশ সরকারের কর্মচারী ও এজেন্সি থেকে কর সংগ্রহ শুরু করে । মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই কর্মকাণ্ড নজরদারি করার জন্য একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয় ।
ব্যবসা এবং বাণিজ্য
ব্যবসা-বাণিজ্য পরিষদ একটি স্বশাসিত কাঠামো হিসেবে সংগঠিত। পরিষদটি ইতিমতিমধ্যে বাংলাদেশি পন্যদ্রব্য রপ্তানি করার বিভিন্ন সম্ভাবনা উদ্ভাবন করেছে যা শুধুমাত্র উপার্জনের উৎস হিসেবেই নয়, এছাড়াও অর্থনৈতিক টেকসইতা নির্ধারণ এ কাজ করে।
ভারতের সাথে বানিজ্য চুক্তির সম্ভাবতা পর্যালোচনায় অর্থ, ব্যবসা ও বাণিজ্য মন্ত্রনালয়, ব্যবসা ও বাণিজ্য পরিষদ যৌথভাবে ভারতীয় প্রশাসন ও ভারতীয় প্রাদেশীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠনের সঙ্গে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত করে। চট্টগ্রাম ও চালনা বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতের সাথে পরিবহন ব্যাবস্থায় উন্নতির প্রসঙ্গেও তারা পর্যালোচনা করে।
এই মুহূর্তে ব্যবসা-বানিজ্য বিভাগ এ কোনো সচিব নেই। অর্থ-মন্ত্রনালয় এটি তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত ।
<003.091.175>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৪. মন্ত্রী পরিষদ সচিবালয়
মন্ত্রী পরিষদ সচিব এবং তার অধীনে থাকা অত্যন্ত অস্থিসহ একজন কর্মচারীকে সাথে নিয়ে মন্ত্রী পরিষদ সচিবালয় আয়োজন করা হয়েছে । মন্ত্রীসভার সাথে যুক্ত গৃহীত সকল সিদ্ধান্ত, প্রচারনা, কোন সিদ্ধান্তের অনুসরন এবং সকল গুরুত্বপূর্ন বিষয়ের ব্যাপারে মন্ত্রী পরিষদ সচিব দায়ী থাকেন; তবে কোন কোন বিশেষ মন্ত্রনালয়ের আওতায় তা কঠোর ভাবে পড়ে না। রাষ্ট্রপতির সচিবালয় মন্ত্রী পরিষদ সচিবই দেখাশোনা করে থাকেন ।
৫. সাধারণ প্রশাসন
সাধারণ প্রশাসন বিভাগের জন্য একজন পুরোদমে দক্ষ সচিবকে প্রথম থেকেই নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো । সে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কাজ করে ।
এই বিভাগটি সরকারের সব প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাপারগুলো, যেমনঃ বাছাই, নিয়োগ, পদ, বদলি, শৃঙ্খলার ইত্যাদির জন্য দায়ী । জনগন নিয়োগের ব্যাপারে সরকারী নীতি নির্বাহের জন্যও এই বিভাগ দায়ী । মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারের অধীনে সকল প্রথম শ্রেণী এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর নিয়োগ দেয় প্রতিষ্ঠার মন্ত্রী নিজে (উনিই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী) । এই বিভাগেরই আওতায় আঞ্চলিক প্রশাসনিক পরিষদের অধীনে প্রথম শ্রেণী এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর পদের জন্য সকল মানুষ জোগাড় করা হয় । অফিসিয়াল কর্মচারীদের রক্ষণাবেক্ষণ করা যারা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এর সরকারের নিকট আনুগত্যের সহিত অঙ্গীকার বদ্ধ । এই তালিকা থেকে বাছাইকৃত কর্মীবৃন্দ এবং বাছাইয়ের জন্য তৈরি হওয়া প্যানেল সব সাধারণ প্রশাসনিক বিভাগই তৈরি করে থাকে ।
আঞ্চলিক প্রশাসনিক পরিষদ
এলাকা ভিত্তিক প্রাতিষ্ঠানিক পরিষদের প্রতিষ্ঠার অংশ, এই যে এলাকা ভিত্তিক প্রাতিষ্ঠানিক কর্মচারীরা এবং অন্যান্য বিভাগ সাধারন প্রাতিষ্ঠানিক বিভাগের অন্তর্ভূক্ত। প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেনীর এলাকা ভিত্তিক আসন পূর্ণ করা এবং অর্থের যোগান করাও ইত্যাদি সাধারন প্রাতিষ্ঠানিক পরিষদের মাধ্যমে হয়ে থাকে। মূল প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি এলাকা তৈরি করা হয়েছিল। মূল প্রকল্পকে বিষেশায়িত করা হয়েছে এবং নতুন আরো ছয়টি এলাকা তৈরি করা হয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং চেয়ারম্যান নিম্নলিখিত এলাকার নির্বাচন করা হয়েছে:
১.দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল ১ প্রফেসর এন.আই.চৌধুরী এমএনএ
২. দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল ২ মিঃ জহুর আহমেদ চৌধুরী এমপিএ
৩. পূর্ব অঞ্চল কর্নেল এম.এ. রব এমএনএ
৪. উত্তর-পূর্ব অঞ্চল ১ দেওয়ান ফরিদ গাজী এমএনএ
৫. উত্তর-পূর্ব অঞ্চল ২ মিঃ সামসুর রহমান খান এমএনএ
৬. উত্তর অঞ্চল মিঃ মতিউর রহমান এমএনএ
৭. পশ্চিম অঞ্চল ১ মিঃ আব্দুর রহিম এমপিএ
৮. দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল ২ মিঃ ফানি ভূষণ মজুমদার এমপিএ
৯. মিঃ আশরাফুল ইসলাম মালদা
১০. মিঃ আব্দুর রউফ কৃষ্ণনগর
<003.091.176>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
আঞ্চলিক কাউন্সিল তাদের বিভিন্ন উপ-কমিটিও নির্বাচন করেছে। প্রায় সবগুলো আঞ্চলিক কাউন্সিলে কিছু সাধারণ এবং অদ্ভুত উদ্ভুত সমস্যার বিশ্লেষণ করেছে। কিছু বিশেষ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, কিন্তু যে বিষয়গুলো সমিতির নীতি সংক্রান্ত সে বিষয়গুলোতে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। যখন প্রত্যেক আঞ্চলিক কাউন্সিলে নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে যাবে তারপর অঞ্চলভিত্তিক বিভিন্ন পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকারের সিদ্ধান্ত/কার্যপ্রণালী সকল আঞ্চলিক কাউন্সিলে পৌঁছে যাবে।
যেসব স্থানে নির্বাচন হয়েছে সেসব অঞ্চলের জন্য কিছু অর্থনৈতিক বিধান এবং বরাদ্দও রয়েছে। তহবিল থেকে অর্থ বের হবার পথে রয়েছে।
আঞ্চলিক প্রশাসনিক কাউন্সিল বিভিন্ন আঞ্চলিক দপ্ত্রে প্রয়োজনীয় কর্মকর্তা এবং কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
৬। স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়
স্বাস্থ্য সচিব তার প্রতিবেদন আলাদাভাবে জমা দিবেন। এই বিভাগের জন্য অতিরিক্ত টীকাগুলো নিম্নে দেয়া হলোঃ
এই বিভাগটি একজন স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের অধীনে গঠন করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে, মহাপরিচালককে সচিব পদমর্যাদা দেয়া হয়েছে।
বিভাগটির স্বাস্থ্য খাত দুইটি ভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে। যথা, (i) সামরিক স্বাস্থ্যসেবা এবং (ii) বেসামরিক স্বাস্থ্যসেবা
(i) প্রতিরক্ষা বিভাগের স্বাস্থ্যসেবা নিম্নোক্ত সুবিধাগুলো পাওয়া যাবে।
ক) শল্যচিকিৎসক এবন সাধারণ চিকিৎসকের উপস্থিতি
খ) আহত/মৃতদেহ পরিবহন ব্যবস্থা
গ) ঔষধ
ঘ) অস্ত্রোপচার সরঞ্জাম
ঙ) বিভিন্ন ফিল্ড মেডিক্যা ইউনিট যেমন উন্নত ড্রেসিং স্টেশন (এডিএস) এবং প্রধান ড্রেসিং স্টেশন (এমডিএস)
চ) আরোগ্য নিরময় কেন্দ্রঃ কল্যাণ ক্ষেত্রে যুদ্ধরত সেনাবাহিনীর জন্য নিম্নোক্ত বিধি চলবে।
- i) শহীদদের নির্ভরশীলদের জন্য গাড়ি
- ii) কর্মক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অক্ষমদের জন্য পেনশন/ জীবিকার ব্যবস্থা করা
iii) আংশিক ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য কাজের ব্যাপারে বিশেষ বিধান করা
উপরোক্ত উদ্দেশ্যগুলো সাধন করতে প্রয়োজনীয় বিধান নেয়া হয়েছে (দশ লাখ রূপি)।
অন্যদিকে বেসামরিক গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে, বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এই উদ্দেশ্যে ৯,৫০,০০০ রূপি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য সচিব বাংলাদেশের ডাক্তারদের বিভিন্ন খাতে চাকরি করবার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। ভারতীয় সরকারের মাধ্যমে এই ডাক্তারেরা শরণার্থী শিবিরে কাজ করতে থাকবেন।
<003.091.177>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
স্বাস্থ্য বিভাগ বিভিন্ন বন্ধুপ্রতিম এজেন্সি থেকে বিভিন্ন ঔষধ এবং অন্যসব উপকরণ দান হিসেবে নিতে দায়িত্বরত, একইসাথে এসব দান বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজন অনুযায়ী পৌঁছাতেও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ!
বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদি, অ্যামবুলেন্স কেনার দায়িত্বও স্বাস্থ্য বিভাগের উপর ন্যস্ত যদি কোন বন্ধুপ্রতিম উৎস থেকে প্রাপ্যতার পর তা অপর্যাপ্ত হয়।
৭। তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রণালয়
বাংলাদেশ বেতার সরকারের অন্যতম প্রাচীনতম সংগঠন। প্রাথমিকভাবে বেতার জনাব আবদুল মান্নান এমএনএ এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে স্থাপিত হয়েছিলো। পূর্বেকার রেডিও পাকিস্তানের কর্মীদের থেকে অনুষ্ঠান এবং সম্প্রচার বিভাগের কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। ক্রমান্বয়ে আরও শিল্পী এবং যন্ত্রবিদ বেতারে যোগ দেন এবং বেতারের উন্নতি সাধন করতে থাকেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০জন মানুষ বাংলাদেশ বেতারে নিয়োগ পেয়েছেন। যেহেতু নানা ধরনের উপাদান আমাদের মাঝে উপস্থিত, সেহেতু কোন একটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড ধরে বাংলাদেশ বেতারের সকল কর্মীবৃন্দকে নিয়মের অধীনে আনা খুবই কঠিন একটি কাজ। যেহেতু বেতার আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকেন্দ্র এবং এই যুদ্ধকালীন প্রয়াসে আমাদের দ্বিতীয় অগ্রাধিকার, সেহেতু সরকার এই খাতে সবসময়ে প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক অনুমোদন দিয়েছে।
অন্য যেসব এজেন্সি তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে সংগঠিত হয়েছে সেগুলো হলো,
(ক) চলচ্চিত্র পরিচালক;
(খ) প্রকাশনা পরিচালক; এবং,
(গ) শিল্প এবং নকশা পরিচালক।
উপরের আলোচনা মোতাবেক, মনস্ত্বাত্ত্বিক যুদ্ধের প্রাণ হিসেবে তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করে যাবে।
সরকারের বহিরাগত প্রচার এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে। এই শাখাটি একটি বড় সংখ্যক পুস্তিকা, প্রচারপত্র এবং ইস্তেহার প্রকাশ করেছে। তারা আমাদের বৈদেশিক প্রচারের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
কিছু বিশিষ্ট বাংলাদেশি বুদ্ধিজীবী বাংলাদেশের যুদ্ধের কারণ এবং আমাদের সংগ্রাম নিয়ে বিভিন্ন বই এবং পুস্তিকা প্রকাশ করেছেন যেখানে আমাদের আন্দোলনের অগ্রসর হবার কারণগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আমাদের প্রচারণা সর্বক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী করবার উদ্দেশ্যে তথ্য এজেন্সির সাথে বন্ধুপ্রতীম সরকারের অধীনে একটানা কিছু সভা করা হয়েছে। সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে এবং এটি আসছে!
মন্ত্রণালয় প্রথম থেকেই প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন মানুষের অভাব বোধ করেছে যাকে সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া যায়। অনেকদিন অপেক্ষার পর সরকার জনাব আনোয়ারুল হক খানকে সম্পূর্ণ অস্থায়ীভাবে এ বিভাগটি তত্ত্বাবধানের জন্য নিয়োগ দিয়েছে। তিনি জনাব আ. মান্নান এমএনএ-এর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করবেন।
<003.091.178>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৮. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ঃ
একজন অভিজ্ঞ সচিবের অধীনে এটা গঠন করা হয়েছে। একজন পর্যন্ত পুলিশের মহাপরিদর্শক এ দপ্তরের প্রধান কার্য সম্পাদন করতেন । তথ্য সংগ্রহ এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার তথ্য সরবরাহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের একটি গুরুত্বপুর্ন কাজ।
দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আঞ্চলিক প্রশাসনিক বা দপ্তরের কাজের জন্যও দায়ী । তার মন্ত্রনালয় অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে নিম্নোক্ত কার্যক্রম সমুহও সম্পাদন করে ।
- স্বাধীন এলাকাসমুহের প্রশাসনিক বন্যাস
- ভ্রমণ নথিপত্র ইস্যু করা এবং
- তদন্ত
৯. ত্রান ও পুনর্বাসন দফতরঃ
একজন ত্রান কমিশনার, যিনি সরাসরি ত্রান ও পুনর্বাসন মন্ত্রীর অধীনে কাজ করেন তার অধীনে এটা গঠন করা হয়েছে। প্রিন্সেপ সড়কে এ দফতরের অফিস পরিচালিত হয়। এটি বিশেষ ক্ষেত্রে বাংলাদেশী নাগরিকদের ত্রান ও সাহায্যের জন্য প্রাপ্ত আবেদনসমূহ নিরীক্ষন করে। এছাড়াও আঞ্চলিক প্রশাসনিক কাউন্সিল কাঠামোর মধ্যে আঞ্চলিক ত্রান অফিসগুলোকে ও সংগঠিত করে ।
এ মন্ত্রনালয় বাংলাদেশ শিক্ষকদের ত্রান সংগঠন করে । বাংলাদেশী শিক্ষকদের সেবাসমূহ কাজে লাগিয়ে স্থানান্তরিত
* নাগরিকদের সন্তানদের সুবিধার্থে ক্যামা স্কুল নামক একটি পদক্ষেপ গ্রহন করেছে এবং বাংলাদেশ শিক্ষক সংগঠন, যার নির্বাহী সভাপতি জনাব কামরুজ্জামান (এম এন এ), সহযোগিতায় দল এটি বাস্তবায়ন করবে
১০. সংসদ বিষয়ক বিভাগঃ
পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী নিজে এর দেখাশুনা করবেন। এই মুহুর্তে এটি বাংলাদেশী নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমস্যা সমূহ দেখাশোনা করবেন । এই মুহুর্তে এটি বাংলাদেশী নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমস্যাসমূহ দেখাশোনা করবে ।
১১. কৃষি দফতরঃ
এটা এখনো গঠিত হয়নি। শুধুমাত্র একজন সচিব নিয়োগ দেয়া হয়েছে যিনি এখন স্বাধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়নের নীল নকশা তৈরি করছেন।
১২. প্রকৌশল দফতরঃ
একজন প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। সেক্টর কমান্ডারদের প্র্যোজনীয় চাহিদা পূরনের জন্য তার অধীনস্ত আঞ্চলিক প্রকৌশলীদেরও পদায়ন করা হয়েছে।
(i) পরিকল্পনা কমিশনঃ
সরকার সম্প্রতি পুর্ববর্তী পরিকল্পনা কেন্দ্রকে পূর্নতা পরিকল্পনা কমিশনের রূপ দিয়েছে। ড. মোজাফফর আহমেদ চৌধুরিকে চেয়ারমুয়ান ও নিন্মোক্তদের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দান করা হয়েছেঃ
- ড. সারওয়ার মোর্শেদ
- ড. মোশাররফ হোসেইন
<003.091.179>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
- ড. এস.আর বোস এবং
- ড. আনিসুজ্জামান
কমিশন এখন বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবি ও প্রকৌশলী যারা সরকারের তালিকাভুক্ত তাদের মধ্যে থেকে কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে।
কমিশনকে নিন্মোক্ত কার্যক্রম সম্পাদনের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে ।
(a) আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইসতেহার এবং গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও আওয়ামীলীদের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের প্রতিষ্ঠিত লক্ষ্যসমূহের উপর ভিত্তি করে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ।
(b) দেশ এবং দেশীয় অর্থনীতি পুনর্গঠনের জন্য একটি মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনা তৈরি করা । এ পরিকল্পনা অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার সাথে সঙ্গতিপূর্ন হবে ।
(C) একটি স্বল্পমেয়াদী পুনর্গঠন পরিকল্পনা তৈরি যা নিকট ভবিষ্যতে প্রয়োজন হবে ।
যেহেতু পুনর্গথন সমস্যা বিমালাকার হবে এবং সরকারের হাতে এসব সমস্যা মোকাবেলার কোন সুযোগ থাকবেনা সে জন্য আমাদের সমস্ত পরিকল্পনা ও কর্মসুচি নিয়ে তৈরি হতে হবে। সেজন্য পরিকল্পনা অতীব জরুরী বিষয় হিসাবে বিবেচ্য ।
দেশকে তাৎক্ষণিক পুনর্গঠনের জন্য নিন্মোক্ত সমস্যা সমুহের প্রতি প্রদান করতে হবে ।
- উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন সমস্যা
- স্থানান্তরিত ব্যক্তিদের বাসস্থান সমস্যা
- খাদ্য সরবারাহ
- যোগাযোগ ব্যাবস্থা পুনঃস্থাপন
- স্বাভাবিক সুবিধাসমুহ যেমনঃ স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, পানি, হাস পালন পুনরায় চালু করন
- ধ্বংস্প্রাপ্ত বন্দর, কলকারখানা শিল্পপ্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন
- আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার
- শিক্ষা সুবিধা সমূহ পুনরায় চালুকরন
- যতদুর সম্ভব সামরিক বাহিনীকে সাময়িক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দান এবং যুবকদের অস্থ্রে পরিবর্তে শিক্ষার ব্যবস্থাকরন ।
- বিঘোষিত নীতি অনু্যায়ী জাতীয়করনের জন্য ব্যাংক, বীমা এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহ চালুকরন ।
- ব্যবসা বানিজ্য চালুকরন এবং
- ভবিষ্যৎ দেশীয় বাণিজ্য এবং ইত্যাকার।
পরিকল্পনা কমিশন সময়ে সংশ্লিষ্ট বিষুয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত সরকারের নিকট দাখিল করবে
<003.091.180>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
পরিকল্পনা বিষয়ে বন্ধুভাবাপন্ন প্রতষ্ঠান সমূহের সাথে সহযোগিতা
জনাব ডি. পি ধর এর সাথে ক্রম আলোচনা হয়েছে। সম্প্রতি ভারতীয় পরিকল্পনা কমিশনের ড. এস. চক্রবর্তী এখানে এসেছিলেন এবং ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পরিকল্পনা কমিশনের সাথে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করেছেন। সহযোগিতা বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট পারষ্পারিক সহযোগিতার বিষয় সম্পর্কিত আলোচনা হয়েছে। সেবা ও সুবিধা সমূহের প্রস্তাব ও করা হয়েছে।
(ii) ব্যবসা বানিজ্য বিষয়ক বোর্ডঃ
এটা ইতিমধ্যেই বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে গঠন করা হয়েছে।
(iii) যুব ও অভর্থনা শিবির নিয়ন্ত্রন বোর্ডঃ
অধ্যাপক ইউসুপ আলী (এম.এন.এ) কে প্রধান করে এ বোর্ড গঠন করা হয়েছে । পুনর্গঠিত কাঠামো অনুযায়ী যুব শিবির অধিদপ্তরও বানিজ্য মন্ত্রনালয়ধীন । প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে যুব শিবির ঘর রক্ষনাবেক্ষন কার্যক্রম কর্পন করেছেন যিনি যুদ ও অভ্যররথনা শিবির নিয়ন্ত্রন বোর্ড এর সাহায্য ও সহযোগিতায় এ দায়িত্ব পালন করবেন।
এখন প্রায় ২৪টির মত যুব শিবির এবং ১১২ টি অভ্যর্থনা শিবির ( তালিকা সংযুক্তি চালু রয়েছে অনুমোদিত বাজেট এর উপর ভিত্তি করে যুব ও অভ্যর্থনা শিবির এর প্রয়োজন পূরন করবে বোর্ড । যুব শিবির ইউনিট এর প্রশিক্ষন সরঞ্জাম ব্যাপক আকারে ব্যাবস্থা করা হয়েছে। যুব শিবির থেকে ছেলেদের গেরিলা বাহিনীতে অভিষিক্তকরণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যুবকদের প্রয়োজনীয় উপাদান
* যেমনঃ বিছানাপত্র, উলের কাপড়চোপড় ইত্যাদি বিভিন্ন বন্দুভাবাপন্ন সংস্থা এবং আমাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠানিক আয়োজনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে।
(iv) ত্রান ও পুনর্বাসন কমিটিঃ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত এবং এর দায়িত্ব বাংলাদেশ থেকে স্থানান্তরিত লোকজনের তত্ত্বাবধান করা।
(v) স্থানান্তরিত ব্যাক্তিদের কল্যান বোর্ডঃ
এটা এখনো গঠিত হয়নি। সুধুমাত্র একজন চেয়ারম্যান নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
সরকারী চৌহদ্দির বাইরের বাংলাদেশী নাগরিক জন্য নিন্মোক্ত ৩ টি সংগঠন ও গঠন করেছেনঃ
- বাংলাদেশ রেডক্রস সমিতি (ডঃ আসাদুল হক এমপি)
- বাংলাদেশ শিক্ষক সংগঠন (মিঃ কামরুজ্জামান এমএনএ)
- বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবী কর্পস (মিঃ আমিনুল ইসলাম এম এন এ)
(এইচ . টি ইমাম)
মন্ত্রিপরিষদ সচিব
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
<003.092.181>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
উপজাতীয় কর্মচারীদের নিয়োগ সম্পর্কে প্রতিরক্ষা সচিবকে লিখিত কেবিনেট সচিবের চিঠি |
বাংলাদেশ সরকার কেবিনেট ডিভিশন
|
২৩শে অক্টোবর, ১৯৭১
|
গোপনীয়।
২৩শে অক্টোবর, ১৯৭১।
১৯৭১ সালের এপ্রিল/মে মাসে আমার কিছু সংখ্যক উপজাতীয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী আমার সাথে সীমান্ত পাড়ি দেয়। তখন থেকেই শুধুমাত্র তাদের অল্প কয়েকজনকে কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছি। এখনো এদের মধ্যে অল্প কয়েকজন আছে যাদের দক্ষতা আমাদের যুদ্ধের প্রচেষ্টায় খুব ভালভাবে কাজে লাগানো যাবে।
চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলের উপজাতীয়দের সাহায্য এবং সহযোগীতা ছাড়া যে চট্টগ্রামের দিকে কোন পদক্ষেপ সম্ভব নেওয়া সম্ভব হবে না তা সব সময়ই আমি মেনে চলেছি। তাই যতটা সম্ভব পাহাড়ী জনগণের সাথে বন্ধুত্বতা গড়ে তোলা এবং যারা শত্রুভাবাপন্ন আছে তাদেরকে প্রতিরোধ করা থেকে বিরত রাখতে বিশেষ প্রচেষ্টা চালানো উচিত। এই প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে, আমি দৃঢ়ভাবেই বিশ্বাস করি যে উপজাতীদের মধ্যেও আমাদের সরাসরি প্রচারণা চালানো উচিত।
বিগত দিনে আমি জানতে পারি যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় চাকমা ভাষায় ভাষণ বা প্রচারপত্র লিখতে জানে এমন লোক খুঁজছে। উপরোক্ত বিষয়ে আমার সুপারিশের কারণে কার্যোদ্ধারের প্রক্রিয়া কি না তা আমি জানি না। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই অনেক উপজাতীয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী আমার অধীনে কাজ করেছে যাদেরকে এই ধরণের কাজে লাগানো যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা সচিব যদি তাদের কাজে লাগাতে চায়, তবে তাদেরকে কাজে লাগানো যেতে পারে।
(এইচ. টি. ইমাম)
ক্যাবিনেট সচিব
২৩.১০.৭১
এম. ও. নং…
প্রতিরক্ষা সচিব।
<003.093.182>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত কয়েকজন কর্মকর্তার তালিকা |
বাংলাদেশ সরকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় |
২৬শে অক্টোবর, ১৯৭১ |
বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
নং.- এ-০০২/১০৮ (৩) তারিখ- ২৬শে অক্টোবর, ১৯৭১।
প্রতিঃউপ সচিব,
সাধারণ প্রশাসনিক বিভাগ
বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার
এতদ্বসাথে সংযুক্ত সেইসব কর্মকর্তাদের তালিকা যারা এই মন্ত্রণালয় হতে প্রতিরক্ষা সচিব দ্বারা নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছে তা দেখার জন্য বিনীত অনুরোধ জানানো হলো।
এটা আপনার মেমো নং.- গ/১৫৭৩ (১৬) তারিখ- ০৭.১০.৭১ এর প্রত্যুত্তরঃ
ক্রমিক নং.কর্মকর্তাদের নাম ও পদবিতথ্যসূত্র
১.জনাব বি. হোসেন, উপদেষ্টা এ-০০২/৫(১২)
২.জনাব নজরুল ইসলাম, স্টাফ অফিসার -অনুরূপ-
৩.জনাব আল-মুজাহিদি, -অনুরূপ- -অনুরূপ-তারিখ ০২.০৯.৭১
৪.জনাব জাহিদ হোসেন, -অনুরূপ- এ-০০২/৪৮(৫)-তারিখ ০২.১০.৭১
৫.জনাব আল-মাহমুদ, -অনুরূপ- এ-০০২/৫২(৫)-তারিখ ০২.১০.৭১
৬.জনাব এস. আর. এ. হারুন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এ-০০২/১০০(৬)-তারিখ ০২.১০.৭১
সচিব,
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
নং.- ইউ. ও. নং.- ১১৬, তারিখ- ২৮শে অক্টোবর, ১৯৭১।
প্রতিঃউপ সচিব,
সাধারণ প্রশাসনিক বিভাগ।
বিষয়ঃ মুজিবনগর বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিবরণসমূহ।
তথ্যসূত্রঃ- আপনার দেয়া মেমো নং.- গ/১৭০০ (১৬), তারিখ- ২৩.১০.৭১
এতদ্বসাথে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিবরণসমূহের কাঙ্খিত তালিকা সংযুক্ত করা হলো।
সংযুক্তিঃ- ২ (দ্বিতীয়)
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে
<003.094.183>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম। | সুত্র | তারিখ |
প্রতিরক্ষা মেডিকেল কর্মসূচির অধিনে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার রিপোর্ট। | বাংলাদেশ সরকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। | ২৭ অক্টোবর, ১৯৭১ |
স্বাগতিক প্রতিরক্ষা স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক প্রনীত অতিরিক্ত ব্যবস্থা
আমি ফোর্ট উইলিয়ামে জেনারেল প্রকাশ ডি.ডি. এম.এস. ইস্টার্ন কমান্ড এর সাক্ষাত করেছি, উপরোল্লেখিত বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করার জন্য। . এটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে আমাদের স্বাগতিকরা আমাদের জন্য নিম্নলিখিত হাসপাতাল তৈরির দায়িত্ব গ্রহণ করবে. . ১। শান্তির বাজার (বিলোনিয়া কাছাকাছি) ১নং সেক্টর অধীনস্থ ১০০ শয্যা বিশিষ্ট একটা এডিএস। আমরা এক মাস আগে এই এডিএস এর পরিকল্পনা করি। সিওএস এবং এডিএমস, আগাটিয়ালা, ১নং সেক্টর কম্যান্ডার সহ এদের উপর দায়িত্ব অর্পিত হয় কাজ এগিয়ে নেয়ার। . ২। একই ব্যবস্থা ৩নং কমান্ডার এর উপর ন্যাস্ত হয়, ১০০শয্যা বিশিষ্ট একটি এডিএস এর জন্য উপযুক্ত একটি জায়গা খুঁজে বের করতে। . ৩। ২নং সেক্টর সংযুক্ত মেলাঘর এবং বিশ্রামগাঁ মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত হাসপাতালটি কে, একটি ৪০০ শয্যা বিশিষ্টতে রূপান্তরিত করতে এবং যার ব্যয়ের জন্য টাকা দেয়া হবে। .
জেনারেল প্রকাশ আমাকে জানিয়ে আশ্বস্ত করে মহানুভবতা দেখান যে, অন্তত, আরো ১২০০ শয্যার অধিক যোগ করা হয়েছে তাদের সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত সব সামরিক হাসপাতালে। অতএব, আমাদের আর কোথাও বড় এডিএস নির্মাণের দরকার হবে না, শুধুমাত্র RAD গুলোতে দক্ষ ডাকতারের সংযুক্তি সাধন করা এবং অস্থায়ী তাঁবু হাসপাতাল গুলো এগিয়ে আমাদের জিতে নেয়া মুক্তাঞ্চলে সরাতে হবে।
আমি বিশ্বাস করি যে এই সকল প্রস্তাবনা খুবই ভালো এবং সহায়তা মূলক এবং আমাদের সরকারের নজরে আনা উচিত। .
নথি নং এইচএস/২৮২/ ১ (৭) তাং: ২৭.১০.৭১
(ডাঃ আর. টি হোসেন)
সচিব,
এইচ এন্ড ডব্লিউ