You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
আসাদুজ্জামানের মৃত্যুতে ছাত্রদের শোকসভা ও মিছিল দৈনিক পাকিস্তান ২১ জানুয়ারী ১৯৬৯

আসাদুজ্জামানের মৃত্যুতে ছাত্রদের শোকসভা ও মিছিল

(ষ্টাফ রিপোর্টার)

গতকাল সোমবার ছাত্র বিক্ষোভকালে জনৈক পুলিশ ইন্সপেক্টরের রিভলভারের গুলিতে জনাব আসাদুজ্জামান নিহত হয়েছেন। পুরনো কলাভবন ও বর্তমানে পোষ্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন ইন্সটিটিউট সম্মুখবর্তী রাস্তায় ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বেলা ২টায় পুলিশের একটাই চলন্ত জীপ থেকে জনৈক পুলিশ ইন্সপেক্টর রিভলবার বের করে গুলিবর্ষন করলে আসাদুজ্জামানের বুক গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়া আরো তিনজন ছাত্র গুলিতে আহত হন। গুলিবর্ষনকালে উক্ত পুলিশ ইন্সপেক্টর ছাত্রদের ইট নিক্ষেপের ফলে নিজেও আহত হয়েছিলো তার গন্ড বেয়ে রক্ত পড়ছিলো।

    ছাত্র আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় কর্মী আসাদুজ্জামানের নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে অন্যান্য ছাত্ররা প্রচন্ড বিক্ষোভে ফেটে পড়ে । তাকে দ্রুত মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে পৌছার আগেই তার মৃত্যু ঘটে।

    আসাদুজ্জামানের লাশ ময়না তদন্তের জন্য নেয়া হলে বিপুলসংখ্যক ছাত্র লাশ পাহারা দিয়ে পোষ্ট-মর্টেম কক্ষ পর্যন্ত গমন করে এবং তথায় অপেক্ষা করতে থাকে। পরে গতকাল সন্ধ্যার দিকে লাশ নিয়ে ছাত্ররা মিছিলে বের হওয়ার উপক্রম করলে ডিসি ও আইজির নেতৃত্বে ইপিআর ও সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী মেডিক্যাল কলেজে দ্রুত প্রবেশ করে। ইত্যবসরে ছাত্ররা ট্রাক হতে লাশ হাসপাতালের অভ্যান্তরে সরিয়ে ফেলেন। ফলে পুলিশ লাশের অপেক্ষায় মেডিক্যাল কলেজের চতুর্দিকে গভীর রাত পর্যন্ত ঘিরে থাকে। পুলিশের আই জি জানান যে, নিহত ছাত্রের ভাই ছাত্রদের হাত থেকে লাশ উদ্ধারের জন্য পুলিশের সাহায্য চেয়েছেন। প্রকাশ, অপর দিকে লাশ নিয়ে ছাত্ররা মিছিল করার প্রস্তুতি নিলে ‘ডাক’- এর কয়েকজন নেতাও সেখানে উপস্থিত হন। লাশের নিরাপত্তা ও আত্মীয়দের কাছে প্রত্যর্পনের নিশ্চয়তা দাবী করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘ডাক’ নেতাদের কাছে হতে মুচলেকা দাবী করলে সংগ্রামী ছাত্র নেতারা ‘ডাক’ নেতাদের প্রতি তাদের বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করেন। এই পর্যায়ে নিহত ছাত্রের বড় ভাই পুলিশের আইজির হস্তক্ষেপ কামনা করে টেলিফোন করেছিলেন বলে জানা গেছে।

শোকসভা

    জনাব আসাদুজ্জামানের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর গতকাল বিকেল পৌনে তিনটায় ঢাকা শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা মেডিক্যাল কলেজের সামনে জমায়েত হয়ে শোক সভায় মিলিত হন। শোক সভায় ডাকসু সহ-সভাপতি জনাব তোফায়েল আহমদ ও ছাত্রনেতা জনাব শামসুদ্দোহা সংক্ষিপ্ত ভাষন দেন। সভায় মরহুমের আত্মার সম্মানার্থে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভায় কালো পতাকাও উত্তোলন করা হয়। বেলা তিনটায় ছাত্র-ছাত্রীরা কালো পতাকা বহন করে একটি দীর্ঘ নীরব শোক মিছিল বের করেন।

    মহসীন হলের ছাত্র ও প্রভোস্ট সহ হাউস টিউটরবৃন্দ আসাদুজ্জামানের মৃত্যুতে হলের শহীদ মিনার দেবীতে শোক সভায় মিলিত হয়ে মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

অধ্যাপকদের নেতৃত্বে মিছিল 

    সভা শেষে হলের প্রভোষ্ট ডঃ ইন্নাস আলী, হাউস টিউটর ডঃ আবদুল লতীফ (ভূ-বিদ্যা বিভাগ), অধ্যাপক কামরুদ্দিন হোসেন (দর্শন বিভাগ), অধ্যাপক এ টী এম জহুরুল হক (অর্থনীতি), অধ্যাপক আবদুল মান্নান (আরবী), অধ্যাপক এ এস এম আব্দুল্লাহ (সংখ্যাতত্ত্ব), অধ্যাপক ডঃ আবুল খায়ের (ইতিহাস) এবং ছাত্ররা নগ্ন পদে কালো ব্যাজ পরিধান করে একটি শোক মিছিল বের করেন।

    মহসীন হল সংসদের সহ-সভাপতি জনাব মোশাররফ হোসেন ও সাধারন সম্পাদক জনাব ইব্রাহিম খলিল এক যুগ্ন বিবৃতিতে ইপিআর বাহিনীর নগ্ন হামলার শিকার ১৯৬৯ সালের বীর শহীদ আসাদুজ্জামানের উপর ই পি আর বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা করেন। তারা মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোক সন্তপ পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তারা ছাত্র হত্যার প্রতিবাদের সংগ্রামী ছাত্র সমাজ কর্তৃক আহুত আজকের হরতালের পূর্ন সমর্থন জানান।

ইকবাল হলে শোকসভা

    ইকবাল হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি জনাব খালেদ হাশিমের সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার রাত্রে ইকবাল হলে অনুষ্ঠিত এক শোক সভায় জনাব আসাদুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়। সভায় ছাত্রদের দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার শপথ করা হয়।

শিরোনাম সূত্র তারিখ
প্রদেশের সর্বত্র ছাত্র ধর্মঘট ও মিছিল দৈনিক পাকিস্তান ২১ জানুয়ারী ১৯৬৯

প্রদেশের সর্বত্র ছাত্র ধর্মঘট ও মিছিল

      চট্টগ্রামস্থ আমাদের প্রতিনিধি এক তারবার্তায় জানান যে , আজ চট্টগ্রাম পুলিশ বিক্ষোভকারী ছাত্রদের উপর লাঠিচার্জ করে । বিক্ষোভকারী ছাত্রদের মিছিলটি স্থানীয় জিন্নাহ পার্কের নিকটে আসিলে পুলিশ এক কড়া ব্যূহ রচনা করিয়া ছাত্রদের অগ্রসরের পথে বাধা দান করে। বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা পুলিশের কর্ডন ভেদ করিয়া সম্মুখে অগ্রসর হইতে চেষ্টা করিলে পুলিশ তাহাদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে ও লাঠিচার্জ করে।

      আজ সকাল হইতে চট্টগ্রামের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের ধর্মঘট পালন করে। ধর্মঘটী ছাত্র-ছাত্রীরা গত শনিবার ঢাকায় ছাত্রদের উপর পুলিশী নির্যাতনের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ সভায় মিলিত হয়। সভায় গৃহীত প্রস্তাবে পুলিশী নির্যাতনের তীব্র নিন্দা প্রকাশ করা হয় ও আটক ছাত্র-ছাত্রীসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি দাবী করা হয়।

রাজশাহী 

      পিটিআই পরিবেশিত এক খবরে বলা হয় , গত শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপর পুলিশী জুলুমের প্রতিবাদে আজ সকালে রাজশাহী শহরের হাজার হাজার ছাত্র (পৃঃ ৮)

      প্রদেশব্যাপী ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়। চট্টগ্রামে পুলিশ ধর্মঘটী মিছিলের উপর লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। অন্যান্য জেলায় পুলিশ অথবা ইপিআর বাহিনী ছাত্রদের সাথে কোন সংঘর্ষে লিপ্ত হয় নাই।

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১১ দফার ভিত্তিতে ছাত্র গণ-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার শপথ সংগ্রামী ছাত্র সমাজের প্রচার পত্র ফেব্রুয়ারী, ১৯৬৯

গন-সংগ্রাম ক্ষান্ত হইবে না

সংগ্রামী ছাত্রসমাজের রক্ত শপথ

    পূর্ব বাংলার জনগনের গনতান্ত্রিক অভ্যুত্থান ঘটিতে শুরু করিয়াছে। স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী নির্মম গুলিবর্ষনের মাধ্যমে ব্যাপক ছাত্র ও জনসাধারণকে হত্যা করিয়া এবং সর্বোপরি ‘কারফিউ’ জারী করিয়াও এই গণঅভ্যুত্থানকে স্তব্ধ করিতে পারিতেছে না। শাসক গোষ্ঠীর শত গুলিবর্ষনও এই অভ্যুত্থানকে ধ্বংস করিতে পারিবে না। জালেম শাহীকে অবিলম্বে উচ্ছেদ করিয়া গনতান্ত্রিক রাজত্ব কায়েম ও পূর্ব-বাংলার পূর্ন স্বায়ত্বশাসন , সাম্রাজ্যবাদ , সামন্তবাদ  ও একচেটিয়া পুঁজিবাদকে ধ্বংস করিতে না পারিলে এবং ছাত্র, শ্রমিক , কৃষক , চাকুরীজীবি , মধ্যবিত্ত , ব্যাবসায়ী , ছোট-মাঝারি শিল্পপতিদের বিভিন্ন মুখী সমস্যার সমাধান তথা ছাত্র সমাজের ১১-দফা দাবী আদায়ের সুনিশ্চিত ব্যাবস্থা না হওয়া পর্যন্ত গনঅভ্যুত্থান ক্ষান্ত হইবে না। যে সংগ্রাম আজ শুরু হইয়াছে তাহা শেষ না করিয়া তাহার বিরাম নাই। ছাত্র সমাজের পক্ষ হইতে আমরা দ্ব্যার্থহীন কন্ঠে ঘোষনা করিতেছি যে, এই সংগ্রামের শেষ না করিয়া আমরা থামিবো না এবং অতি শীঘ্র আমরা সংগ্রামের পরবর্তী বৃহত্তর কর্মসূচী দেশবাসীর নিকট উপস্থাপিত করিব। তাই ছাত্রসমাজ ও দেশবাসীর নিকট সেই বৃহত্তর সংগ্রামের প্রস্তুতির জন্য নিন্মলিখিত কর্মসূচীগুলি বাস্তবায়িত করার জন্য আহবান জানাইতেছি :

১।  প্রদেশের সকল জেলায় , মহকুমায় , থানায় , প্রতিটি গ্রামে , প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে , মহল্লায় , এবং                শ্রমিক অঞ্চলে সর্বদলীয় ছাত্র সমাজের উদ্যাগে সংগ্রাম কমিটি গড়িয়া তুলুন। এই সকল কমিটি হইতে আন্দোলনকে সুশৃঙ্খল ও সংগঠিতভাবে পরিচালনা করুন। স্থানীয় কমিটিগুলি উপরের কমিটির সহিত যোগাযোগ করুন।

২। আন্দোলনের কর্মপন্থা ঘোষনার জন্য এই সকল কমিটি হইতে প্রচারপত্র, প্রাচীরপত্র , পথসভা , মাইক ইত্যাদির মাধ্যমে জনগনের মধ্যে ব্যাপক প্রচার করুন।

৩। সকল জনগনকে সংগঠিত করুন।

৪। গ্রাম অঞ্চলে অভ্যুত্থানকে ছড়াইয়া দিন।

৫। সর্বত্র হাজার হাজার সুশৃঙ্খল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করুন।

৬। সংগ্রামকে সফল করার জন্য শ্রমিক স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে আগাইয়া আসুন।

৭। সকল সময় শৃঙ্খলা বজায় রাখুন। সকল প্রকার সরকারি উস্কানীর প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখুন।

৮। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখিয়া ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়িয়া তুলিতে সাহায্য করুন।

৯। সকল কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নির্দেশাবলী বিনা প্রশ্নে মানিয়া চলুন।

দেশবাসীর নিকট আমাদের আহবান

১। গুলিবর্ষন , বেয়নেট চার্জ ও লাঠির আঘাতে আহতদের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে রক্ত দান করুন। সান্ধ্য আইনের বিরতির মাঝে সম্ভব মত রক্ত দান করুন।

  সাম্প্রতিক আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবার পরিজনকে সাহায্যার্থে এগিয়ে আসুন। এবং নিন্মরুপ ঠিকানায় সম্ভবমত অর্থ প্রেরন করুন । তোফায়েল আহমেদ , ৩১৩ ইকবাল হল, ঢাকা।

২। রিক্সাচালক, ক্ষুদে মজুর এবং দারিদ্র জনসাধারণকে বেশি করিয়া ভাড়া ও মজুরী দিন ও যথাসাধ্য সাহায্য করুন। রিক্সা মালিকদের নিকট আমাদের আবেদন তারা যেনো পুরোদিনের ভাড়া গ্রহন না করেন।

৩। দোকানদার ও ব্যাবসায়ী ভাইয়েরা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অতিরিক্ত মূল্য গ্রহন না করিয়া ন্যায্য মূল্য গ্রহন করুন।

৪। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে অগ্রসর করুন। যে কোন প্রকার সরকারী উস্কানির প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখুন এবং শৃঙ্খলা রক্ষা করুন।

১। আবদুর রউফ, সভাপতি , পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ।

২। সাইফুদ্দিন আহমেদ, সভাপতি, ছাত্র ইউনিয়ন।

৩। মোস্তফা জামাল হায়দার, সভাপতি, ছাত্র ইউনিয়ন।

৪। খালেদ মোহাম্মদ আলী, সাধারন, পূর্ব পাক ছাত্রলীগ।

৫। মাহবুবুল হক দোলন, জাতীয় ছাত্র ফেডারেশন।

৬। ইব্রাহিম খলিল, জাতীয় ছাত্র ফেডারেশন।

৭। সামসুদ্দোহা, সাধারন সম্পাদক, ছাত্র ইউনিয়ন।

৮। মাহবুব উল্লাহ, সাধারন সম্পাদক, ছাত্র ইউনিয়ন।

৯। তোফায়েল আহমদ, সহ-সভাপতি, ডাকসু।

১০। নাজিম কামরুন চৌধুরী, সাধারন সম্পাদক, ডাকসু।

শিরনাম সুত্র তারিখ
ঢাকায় কৃষ্ণ দিবস  দৈনিক পাকিস্থান ৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯

  দোকানপাট যানবাহনে কালো পতাকা: ঢাকায় কৃষ্ণ দিবস

                       ছাত্রদের ক্লাস বর্জনঃ সভা ও মিছিল

                                ( স্টাফ রিপোর্টার)

সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম আহবান কমিটির গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় ছাত্র ও বিভিন্ন শ্রেণীর নাগরিকরা কৃষ্ণ দিবস পালন করেন। এ দিন সব ধরনের যানবাহন, দোকানপাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। শহরের প্রতিটি বাস ও ট্রাকের গায়ে “ আইয়ুব ফিরে যাও” পোস্টার দেখা যায়। এ ছাড়া শহরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীগণ          ধর্মঘট করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নতুন কলাভবনে এক ছাত্র সভা অনুষ্ঠিত হয়, ও পরে এক বিরাট সোভা যাত্রা শহর পরিক্রমণ করে।

সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম কমিটির পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীগণ ক্লাস বর্জন করে খণ্ড খণ্ড শোভাযাত্রা সহকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনে এসে সমেবেত হতে থাকেন। বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবন প্রাঙ্গণে ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষুব্ধ সমাবেশে পূর্ণ হয়ে যায়।

এই বিপুলসংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশের উদ্দেশ্যে বক্তিতা দানের জন্য ছাত্র নেতৃবৃন্দ গাড়ি বারান্দার ছাদকে মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করেন।

গাড়ি বারান্দার ছাদ থেকে সমবেত ছাত্র-ছাত্রীর উদ্দেশ্যে বক্তিতাকালে ডাকসুর সহ-সভহাপতি   জনাব তোফায়েল আহমেদ বলেন পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর গুলিতে নিহত ছাত্র, কৃষক ও শ্রমিকের বুকের রক্তে বাংলার মাটি রঞ্জিত হয়েছে, আর ১১-দফা দাবি শহীদের রক্তে রঞ্জিত হয়ে ছাত্র, কৃষক ও শ্রমিকের শপথে পরিণত হয়েছে। এই রক্ত অক্ষরে লিখিত শপথ আদায়ের জন্যই ছাত্র সমাজ আন্দলন করে, এবং ১১-দফা দাবী পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ছাত্র, কৃষক ও শ্রমিক জনতার আন্দলন খান্ত হবে না। গোল টেবিল বৈঠক প্রত্যাখ্যান করে জনাব তোফায়েল আহমেদ বলেন যে, কয়েকজন নেতার সাথে গোল টেবিল বৈঠক করলে পূর্ব বাংলার ছাত্র জনতা টা মানবে না, গোল টেবিল বৈঠকে পূর্বশর্ত হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান, ওয়ালী খান, অধ্যাপক মুজাফফর আহমদ, ভুট্টুসহ সকল রাজনৈতিক নেতা ও ছাত্র বন্দীদের মুক্তিদান, জরুরী আইন প্রত্যাহার, ইত্তেফাক পুনঃপ্রচারের ব্যাবস্থা, জনাব মোহাম্মদ তোয়াহা, জনাব আব্দুল হক ও জনাব মোহাম্মদ ফরহাদসহ সকল নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে জারীকৃত হুলিয়া ও গ্রেফতারী পরোয়ানা প্রত্যাহার করতে হবে।

তিনি বলেন আগামী রোববার পল্টন ময়দানে সর্বদলীয়, ছাত্র সংগ্রাম কমিটি এক জনসভা অনুষ্ঠান করবে

এবং উক্ত জনসভায় কমিটি ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে আগামী দিনের আন্দলনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।

সভায় গৃহীত এক প্রস্তাবে টাঙ্গাইলে গত বুধবার ছাত্র- জনতার শোভাযাত্রার ইপর ই পি আরের গুলিবর্ষণের তীব্র নিন্দা করা হয় এবং নিহত ছাত্রদের পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।

সভাশেষে এক বিরাট মিছিল বের করা হয়। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীগণ কালো ব্যাজ ধারণ করেন। এছাড়া শোভাযাত্রী কালো পতাকা ও তাঁদের বিভিন্ন দাবী দাওয়া সম্মিলিত পোস্তার ফেস্টুন বহন করেন।

দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের সময় বিশ্ববিদ্যালয় নতুন কলা ভবন থেকে শোভাযাত্রা বের হয়ে নীলক্ষেত রোড, নিউমার্কেট, আজিমপুর, লালবাগ, উর্দু রোড, চকবাজার, ইসলামপুর। সদরঘাট, নবাবপুর, জিন্নাহ এভিনু, তোপখানা রোড প্রদক্ষিণ করে বিকাল সাড়ে তিনটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হয় এই দীর্ঘ পথ অতিক্রমকালে শোভাযাত্রার কলেবর বৃদ্ধি পায় এবং বিভিন্ন এলাকার নাগরিকগণ করতালি য় পুষ্প বর্ষণের মাধ্যমে শোভাযাত্রীদের অভিনন্দন জানায়।

                                     বুধবারের ছাত্র ধর্মঘট

 

সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রামের কমিটির আহবানে গত বুধবার ছাত্র য় গণহত্যা সহকারী নির্যাতন ও ব্যাপক হারে গ্রেফতারের প্রতিবাদে প্রদেশব্যাপী ছাত্র ধর্মঘট ও শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

এই দিন ঢাকা শহরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীগণ ধর্মঘট করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনে এক বিরাট ছাত্র সভায় মিলিত হয়। ডাকসুর সহ-সভহাপতি জনাব তোফায়েল আহমদের সভাপতিত্বে  অনুষ্ঠিত সভায় ছাত্র জনতার দাবী মেনে নিয়ে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান হয়।

সভায় গৃহীত এক প্রস্তাবে বলা হয় যে, ছাত্র- জনতার দাবী মেনে নেয়া না হলে ক্ষমতাসীনদের সাথে কোন বৈঠক জনসাধারণ য় ছাত্রসমাজের নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না।

সভায় ছাত্র, শ্রমিক ও কৃষক নেতাসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তিদান, আগারতলা ষড়যন্ত্র মামলাসহ সকল রাজনৈতিক মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা ও হুলিয়া প্রত্যাহার, জরুরী আইন, দেশরক্ষা আইন ও নিরাপত্তা আইন বাতিল, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রদান, ইত্তেফাক ও অন্যান্য সংবাদ পত্রের উপর থেকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার, বাকস্বাধীনতা ব্যাক্তিস্বাধীনতা প্রদান সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার, ছাত্র, কৃষক ও শ্রমিকের দাবী পূরণ পুলিশের গুলিতে নিহতদের পারিবারবর্গকে ক্ষতিপূরণ দানের দাবী জানান হয়।

সভায় গৃহীত অপর দুটি প্রস্তাবের প্রাদেশিক গভর্নর জনাব আবদুল মোমেন খানের অপশরণ এবং ছাত্র, শ্রমিক য় কৃষকের নির্যাতনের জন্য সরকারী কর্মচারীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবী করা হয়।

   সভাশেষে এক বিরাট শোভাযাত্রা শহরের বিভিন্ন রাজপথে প্রদক্ষিণ করে।

শিরনাম সূত্র তারিখ
২৫ জানুয়ারী থেকে ৪ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ঘটনাবলীর সংক্ষিপ্তসার দৈনিক পাকিস্থান ৭ ফেব্রুয়ার‍্য,১৯৬৯

                                      ঘটনাবলীর সংকিপ্তসার

                           ২৫শে জানুয়ারী থেকে ৪ঠা ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত

 

সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবানে গতকাল শুক্রবার ঢাকাসহ পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র হরতাল পালিত হয়। সর্বত্র সভা ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয় এবং বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার সাথে পুলিশ ও ইপিআর বাহিনীর সংঘর্ষ হয়।

গত রাতে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের এক প্রেস নোটে বলা হয়, বেসামরিক কর্তৃপক্ষের সাহায্যের জন্য সামরিক বাহিনীকে তলব করা হয়েছে। শুক্রুবার রাত ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টাব্যাপী সন্ধ্যা আইন জারি করা হয়। প্রেসনোটে বলা হয় শুক্রুবার পুলিশের গুলিতে ঢাকায় ৩ জন, ময়মনসিংহে ২ জন এবং চট্টগ্রামে একজনের প্রাণহানি ঘটে। ে ছাড়া পুলিশের গুলিতে ঢাকায় ১০ জন,ময়মনসিংহে ২০ জন ও চট্টগ্রামে কয়েকজন আহত হয়। প্রেস নোটের অপর এক স্থানে বলা হয়, শুক্রুবার ঢাকায় দশ হাজার লোকের এক জনতা মর্নিং নিউজ দৈনিক পাকিস্তান অপর দিকে পুলিশ য় পূর্ব পাকিস্থান রাইফেল বাহিনী তাদের বাধা দিল প্রবলভাবে।তারপর নিক্ষিপ্ত হল কাঁদুনে বোমা। তারপর ৬ রাউন্ড গুলি বর্ষিত হল। ঘটনাস্থলেই মারা গেল ৪ জন। বিক্ষোভকারীরা ২ জনের লাশ নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল।

সাংবাদিকরা তথায় ঝুঁকি নিয়ে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেল আর একটি লাশ শায়িত রয়েছে সেক্রেটারিয়েট গেটের অভ্যন্তরে একটি কামরার সম্মুখে।

গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার পর তাকে পা ধরে টেনে আনা হয়েছিল সেখানে।সাংবাদিকেরা তথায় উপস্থিত হওয়ামাত্র তাদের তাড়িয়ে দেয়া হল ঊর্ধ্বতন অফিসারদের কড়া নির্দেশে। তারপর লাশটি টেনে নেয়া হয়েছিল কামড়ায়।

এখানে গুলিবর্ষণের পরই শহরের রূপ পালটে গেল। এতক্ষনের শান্তিপূর্ণ মিছিল ফেটে পড়ল উত্তেজনায়। জনতা সেখানে ভিড় করে এগিয়ে এল। আগুন ধরাতে চেষ্টা করলো সেক্রেটারিয়েট গেটে। তোপখানা রোডের গেটেও তখন ক্ষিপ্ত জনতা ভিড় করলো। সেখানে কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষিপ্ত হল। এরপর বেপরোয়া হয়ে বিক্ষুব্দ জনতা পুরানা পল্টন মোড়ের পেট্রোল পাম্প ভেঙ্গে ফেলে।

 

 

নারায়ণগঞ্জ

 

সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কমিটির আহবানে আসাদুজ্জামানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ উপলক্ষ গতকাল শুক্রুবারনারায়ণগঞ্জে পূর্ণ হরতাল পালিত হয়।

২৬শে জানুয়ারী

 

গতকাল শনিবার ঢাকায় সন্ধ্যা আইন জারী থাকাকালে পুলিশের গুলিবর্ষণে ২ জন নিহত হয়। শহরে সন্ধ্যা আইনের মেয়াদ আরও ২৪ ঘণ্টা বর্ধিত করা হয়।

 নারায়ণগঞ্জ শহর, তৎপার্শ্ববর্তী শিল্পাঞ্চল, ডেমরা, সিদ্ধিগঞ্জ এবং ফতুল্লা থানা এলাকায় গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৫টা থেকে ২৪ ঘণ্টাব্যাপী সন্ধ্যা আইন জারি করা হয়।

নারায়ণগঞ্জে ৪ জন অধ্যাপকসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। সৎ শুক্রুবার ১টা থেকে ২১ ঘণ্টার জন্য খুলনায় সন্ধ্যা আইন জারি করা হয়। একটি ছাত্র মিছিলকে কেন্দ্র করে দু‘দলের মধ্যে সংঘর্ষে ২৩ জন আহত হওয়ার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপেক্ষিতে এই বাবস্থা গৃহীত হয়।

ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে পুলিশের গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে পশ্চিম পাকিস্থানের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

২৪শে জানুয়ারি প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে গতকাল শনিবার সিলেট শহরে পূর্ণ হরতাল পালিত হয়। ধর্মঘটী ছাত্র-ছাত্রীরা বিরাট মিছিল দের করে।

২৭শে জানুয়ারি

 

গতকাল রোববার ধাকা,নারায়ণগঞ্জ, আদমজী, ডেমরা প্রভৃতি শিল্পাঞ্চলে সন্ধ্যা আইন জারী থাকা অবস্থায় সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণে ৩ ব্যাক্তি নিহত ০ ১০ জন আহত হয়।

সকাল ১১টা হইতে ২টা পর্যন্ত এসব এলাকায় সন্ধ্যা আইন শিথিল করা হয়। ঢাকার সন্ধ্যা আইনের মেয়াদ ৩৬ ঘণ্টা, নারায়ণগঞ্জের শিল্পাঞ্চলে ৩৯ ঘণ্টা বৃদ্ধি করা হয়। ময়মনসিংহে জন্তা-পুলিশ সংঘর্ষে ৮৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা জনাব ফিদা হাসান পূর্ব পাকিস্তান সফরের উদ্দেশ্যে ঢাকায় আসছেন।

গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদের পূর্ব পাকিস্থান সমন্বয় কমিটি ঢাকা শহর য় প্রদেশের অন্যান্য স্থান থেকে অবিলম্বে সান্ধ্য আইন, ইপিআর য় সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের দাবী জানায়।

২৯শে জানুয়ারি

 

পূর্ব পাকিস্থান ন্যাপের সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহম্মদ গ্রেফতার। ঢাকা হাইকোর্ট বার সমিতির জরুরী সভায় গুলিবর্ষণ য় সান্ধ্য আইন জারির তীব্র নিন্দা।

৩০শে জানুয়ারি

 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকগণ কর্তৃক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লঙ্ঘনের নিন্দা, প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল য় সভা। গুলিবর্ষণের নিন্দা য় অবিলম্বে সান্ধ্য আইন প্রত্যাহারের দাবী।

৩১শে জানুয়ারি

 

সান্ধ্য আইন সম্পর্কিত জনাব ফরিদ আহমদের রীট নাকচ। বার ঘণ্টাব্যাপী সান্ধ্য আইন শিথিল থাকাকালে ঢাকায় কোন শান্তি ভঙ্গ হয়নি।

সরকারি প্রেসনোটে প্রকাশ, মাদারীপুরের জাজিরা থানায় ১ ব্যাক্তি নিহত য় ৩ জন আহত।

গত ২৭শে জানুয়ারি পিপলস পার্টির হায়দরাবাদ শাখা করাচী, ঢাকায় পুলিশের গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে এক বিরাট মিছিল বের করে।

১লা ফেব্রুয়ারি

 

দেশ রক্ষা আইনে এনডিএফ নেতা জনাব ওলি আহমদ গ্রেফতার। ফরিদপুর জেলার মাদারীপুর মহকুমার ভেদরগঞ্জে বিক্ষভকারী ছাত্রদের উপর পুলিশের গুলিবর্ষণে একজন ছাত্র আহত। বগুড়ায় পূর্ণ হরতাল পালিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে সায়ত্ত্বশাসনের দাবীতে ২৭ জন মুসলিম লিগ নেতার বিবৃতি।

ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার জলিরপাড়ে বিক্ষুব্ধ জনতার উপর পুলিশের এক ব্যাক্তি

নিহত। বাগেরহাটে ছাত্র মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণে ২ ব্যাক্তি আহত।

২রা ফেব্রুয়ারি

 

গ্রেফতার য় নির্যাতনের প্রতিবাদে রংপুরে মহিলাদের সভা য় মিছিল।

বিরোধী দলের সমালচনার মুখে জাতীয় পরিষদে পৌর প্রশাসন বিল গ্রহীত।

৪ঠা ফেব্রুয়ারি

 

সরকারী মুখপাত্র কর্তৃক প্রাদেশিক গভর্নর পদে রদবদল সংক্রান্ত খবরের সত্যতা অস্বীকার। সংবাদপত্র য় পেশাদার সাংবাদিকের উপর পুলিশের বর্বরোচিত হামলা এবং প্রশাসন কর্তৃপক্ষের নিপীড়নমূলক নীতির প্রতিবাদে প্রদেশের সর্বত্র চব্বিশ ঘণ্টাব্যাপী ধর্মঘট পালন।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!