যুদ্ধ ছাড়া সম্ভব কিনা সেটাই প্রশ্ন
(বিশেষ প্রতিনিধি) ভারতের প্রধান মন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ৩ সপ্তাহব্যাপী বিদেশ সফর শেষে নয়া দিল্লীতে ফিরিয়া গিয়া পালাম বিমান বন্দরে সাংবাদিকের নিকট বলেন যে, যুদ্ধ ছাড়া বাংলাদেশ সমস্যার সমাধান সম্ভব কিনা তিনি ও বিশ্বের নেতৃবৃন্দ এখন সেই চিন্তাই করিতেছেন। তবে, তিনি এইকথা পুনরায় স্পষ্ট করিয়া বলেন যে, যে কোন রাজনৈতিক সমাধানই হউক না কেন, উহা হইতে হইবে বাংলাদেশের নির্বাচিত গণ প্রতিনিধিদের নিকট গ্রহণযােগ্য। এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তিনি কখনও কাহাকেও এই কথা বলেন নাই যে, বাংলাদেশ ভারতে যােগদান করিবে বা ভারতের অংশ হওয়ার জন্য বাংলাদেশকে স্বাগত জানানাের জন্য ভারত প্রস্তুত। শ্রীমতি ইন্ধিরা গান্ধী বেলজিয়াম, অষ্ট্ৰীয়া, বৃটেন, আমেরিকা, ফ্রান্স ও পশ্চিম জার্মানী সফর করেন। একটি ভারতীয় বার্তা প্রতিষ্ঠান জানান, যেসব উপদেষ্টা শ্রীমতি গান্ধীর সহিত বিদেশে গিয়াছিলেন, তাহাদের মােটামুটি ধারণা হইল এই যে, যুদ্ধ বাধিলে যেসব দেশ হয়ত ইসলামাবাদকে সমর্থন করিতেন, ইহার পর তাহারা নিরপেক্ষ থাকিবেন। উল্লেখযােগ্য যে, শ্রীমতি গান্ধীর এই ঐতিহাসিক সফর কালে ফ্রান্স বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছানুসারে সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানাইয়াছে। পশ্চিম জার্মানীর রাষ্ট্র প্রধান মীমাংসার আহ্বান জানাইয়া ইয়াহিয়া খানকে চিঠি লিখিবেন বলিয়া শ্রীমতিকে জানান। যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনের মনােভাব প্রায় এক। তাহাদের সমর্থন পাকিস্তানের জঙ্গীশাহীর দিকেই তবে, শ্রীমতি ইন্দিরার সফর তাহাদেরকে একটু বেকায়দায় ফেলিয়াছে বলিয়া পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা। শ্রীমতি ইন্দিরা বলেন যে, তাহার এই সফরের ফলে বাংলাদেশ প্রশ্নে বিভিন্ন দেশের সহিত ব্যাপক সমঝােতা প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে।
নতুন বাংলা ১: ১৪
১৮ নভেম্বর ১৯৭১