গয়া শরণার্থী শিবিরের নানা অব্যবস্থা
নিজস্ব সংবাদদাতা
গয়া, ৪ আগস্ট-পঞ্চানপুর শরণার্থী শিবিরে গত ২৯ জুলাই পর্যন্ত মােট ১৪৫৬১ জন শরণার্থী এসেছেন। আসবেন ৫০০০০ জন। ৩১ জুলাই থেকে রােজ একটি করে বিশেষ ট্রেনে প্রায় ১৫০০ জন শরণার্থী আসছেন। ২৯ জুলাই তারিখে ট্রেনটি গয়া স্টেশনে পৌঁছেছে রাত ১২ টায় । ১২ মাইল দূরে শিবিরে শরণার্থীদের নিয়ে যেতে ২টা বেজে যায়। সেখানে তখন ঘাের অন্ধকার । তার ওপর বর্ষায় পচা কাদা। ভয়াবহ পরিবেশ। ঐ অবস্থায় শরণার্থীদের নাম পরিচয় লেখা ও থাকার কটেজ দেখিয়ে দেওয়া প্রায় দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে ওঠে। সামরিক বাহিনীর ভারপ্রাপ্ত অফিসারের মতে ঐভাবে গভীর রাতে শরণার্থীদের শিবিরে না এনে স্টেশনেই কোথাও রাখতে পারলে ভাল হয়।শিবিরে বৈদ্যুতিক আলাের ব্যবস্থা নেই। প্রতি কটেজের মেঝেতে পা ডােবা কাদা! ঐ অবস্থায় মেঝেতে শােওয়ার কথা কল্পনা করা যায় না। তবু ঐ অবস্থায় রাতদিন কাটাতে হচ্ছে সকলকে। একটি ব্যারাকের সকলের রান্নার জায়গা থাকার জায়গা থেকে একটু দূরে লম্বা এক একটি ছাউনির নীচে। ঝড় জলে সেখানে রান্না করা অসম্ভব। তাছাড়া আছে জলকাদা। পায়খানাগুলি আরও দূরে। রাতের অন্ধকারে সেগুলি ব্যবহার করা সম্ভব নয়। ফলে কটেজের আশেপাশে মলমূত্র ত্যাগের ঘটনা ঘটে চলেছে। আবহাওয়ায় এক দুর্গন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছে। টিউবওয়েলের অনেকগুলি অকেজো পড়ে আছে। বহু শরণার্থীর অভিযােগ রেশন কম পাচ্ছেন তারা। অনেকেই দৈনিক মজুরিতে শিবির নির্মাণে রত ঠিকাদারের কাজ করছেন। পারিশ্রমিক দেড় টাকা। তাও অনেকেই মজুরি পাননি।
৫ আগস্ট ‘৭১
Reference: ৫ আগস্ট ১৯৭১, দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা