You dont have javascript enabled! Please enable it!

ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ হাসপাতাল 

মুক্তিযুদ্ধে ‘বাংলাদেশ হাসপাতাল’ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসার প্রয়োজনে এই হাসপাতাল ২ নং সেক্টরে গড়ে তোলা হয়। ১০মে ৭১ ভারতের আগরতলার সোনামুড়া বন বিভাগের বিশ্রামাগারে ক্যাপ্টেন আখতার আহমেদের তত্ত্বাবধানে প্রাথমিকভাবে এই হাসপাতাল স্থাপন করা হয়। এর নাম দেয়া হয় ‘বাংলাদেশ ফোর্সেস হাসপাতাল’। ভারতীয় বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শ্রী নরেশ ভট্টাচার্য এই হাসপাতাল গঠনে প্রচুর সাহায্য করেন। প্রথম পর্যায়ে মে মাস নাগাদ সীমান্ত সংলগ্ন কুমিল্লার নয়াবাজারস্থ পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে হাসপাতালের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসার যন্ত্রপাতি কৌশলে সংগ্রহ করা হয়। এই সময়ে ক্যাপ্টেন আখতারের স্ত্রী খুকু আহমেদ, সাঈদা কামাল, সুলতানা কামাল, মেডিকেল কলেজের ছাত্রী ডালিয়া, শামসুদ্দিন ও এ.কিউ.এম মাহমুদ এই হাসপাতালে যোগদান করেন।

হাসপাতালের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ২৭ জুলাই ৭১ এই হাসপাতালটিকে সীমান্ত থেকে অপেক্ষাকৃত দূরবর্তী এলাকা আগরতলার দারোগা বাগিচায় স্থানান্তরিত হয় বাংলাদেশ সরকার এই হাসপাতালটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট হন এবং প্রাথমিকভাবে পঞ্চাশ হাজার টাকা মঞ্জুরীসহ ৪ জন প্রকৌশলীকে এই হাসপাতাল পুনর্গঠনে প্রেরণ করেন। সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে ২৬ আগস্ট ৭১ আগরতলার সন্নিকটে শ্রী হাবুল ব্যানার্জীর বাগানে এই হাসপাতালে পুনরায় স্থানান্তরিত করা হয় এবং বাঁশ ও চাটাই দিয়ে এর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়। হাসপাতালে দুইশ’ শয্যার স্থান সংকুলান করা হয়েছিল। এই সময় এই হাসপাতালে লন্ডনে প্রশিক্ষণরত ডাক্তার জাফরউল্লাহ চৌধুরী, ডাক্তার মবিন ও চিকিৎসাশাস্ত্রে অধ্যয়নরত বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী যোগদান করে হাসপাতালের কর্ম ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম হন। তখন থেকেই এই হাসপাতালটি ‘বাংলাদেশ হাসপাতাল’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে।

‘বাংলাদেশ হাসপাতাল’-এর পরিকল্পনা, পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য দপ্ত ও ভারতীয় রেডক্রস এবং বেগম সাজেদা চৌধুরী ও বেগম রাফিয়া আক্তার ডলির প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত নার্সিং শিবিরে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১৬ জন সেবিকা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। এছাড়াও এই হাসপাতালের জন্য স্থায়ী সমাজসেবী শ্রী হাবুল ব্যানার্জী, আগরতলা জি.বি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রায় চৌধুরী, শিক্ষা বিভাগের পরিচালক ডা. চ্যাটার্জী ও ঐ বিভাগের উপ-পরিচালক শ্রী কে.পি দত্তের সাহায্য ও সহযোগিতা বিশেষভাবে উল্লেখের দাবি রাখে।

শরণার্থীদের কল্যাণে বাংলাদশে হাসপাতাল, আগরতলা, ভারত

নাম পদবী নিযুক্তি
খালেদ মোশাররফ লেফটেন্যান্ট কর্নেল অধিনায়ক সেক্টর-২
আবুল হাসেম
নূরুল হুদা প্রকৌশলী তত্ত্বাবধায়ক
মাহবুবুল আলম প্রকৌশলী তত্ত্বাবধায়ক
তাজুল ইসলাম প্রকৌশলী তত্ত্বাবধায়ক
শাহাবুদ্দিন ভুঁইয়া প্রকৌশলী তত্ত্বাবধায়ক
হাফিজুল আলম প্রকৌশলী প্রশাসনিক অফিসার
সাদেকুর রহমান ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মকর্তা
শওকত আলী সুবেদার মেজর কর্মকর্তা
আব্দুল মান্নান সুবেদার কর্মকর্তা
আখতার আহমেদ ক্যাপ্টেন সংগঠক/চিকিৎসক
নাজিম উদ্দিন আহমেদ চিকিৎসক সংগঠক/চিকিৎসক
জাফর উল্লাহ চৌধুরী চিকিৎসক সংগঠক/চিকিৎসক
এম.এ. মবিন চিকিৎসক সংগঠক/চিকিৎসক
সেতারা বেগম ক্যাপ্টেন চিকিৎসক
এ.কে.এম শামসুদ্দিন মেডিক্যাল ছাত্র চিকিৎসক
এ.কিউ.এম মাহমুদ মেডিকেল ছাত্র চিকিৎসক
মোরশেদ চৌধুরী মেডিকেল ছাত্র সহকারী চিকিৎসক
কিরণ চন্দ্র দেবনাথ মেডিকেল ছাত্র সহকারী চিকিৎসক
লুৎফর রহমান মেডিকেল ছাত্র সহকারী চিকিৎসক
জুবায়ের মেডিকেল ছাত্র সহকারী চিকিৎসক
আবুল কাশেম মেডিকেল ছাত্র সহকারী চিকিৎসক
ডালিয়া সালাউদ্দিন মেডিকেল ছাত্র সহকারী চিকিৎসক
জাকিয়া খাতুন শিক্ষিকা সহকারী (প্রশাসনিক)
খুকু আহমেদ গৃহিনী সহকারী
সাঈদা কামাল (টুলু) ছাত্রী সহকারী
সুলতানা কামাল (লুলু) ছাত্রী সহকারী
আসমা আলম ছাত্রী সহকারী
রেশমা আলম ছাত্রী সহকারী
অনুপমা দেবনাথ ছাত্রী সহকারী
মিনু বিল্লাহ্ ছাত্রী সহকারী
গীতা মজুমদার (চক্রবর্তী) ছাত্রী সহকারী
ইরা কর ছাত্রী সহকারী
গীতা কর ছাত্রী সহকারী
নীলিমা (বৈদ্য) ছাত্রী সহকারী
পদ্মা রহমান ছাত্রী সহকারী
বাসনা ছাত্রী সহকারী
শেফালী ছাত্রী সহকারী
শোভা ছাত্রী সহকারী
লক্ষ্মী ছাত্রী সহকারী
অনিলা ছাত্রী সহকারী
যুথিকা ছাত্রী সহকারী
আলো রাণী ছাত্রী সহকারী
আরতী ছাত্রী সহকারী
কল্পনা রানী দেব ছাত্রী সহকারী
শ্যামা ছাত্রী সহকারী
অঞ্জলি ছাত্রী সহকারী
মুধমিতা ছাত্রী সহকারী

০০

 

Reference: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও শরনার্থী শিবির আসাদুজ্জামান আসাদ

[pdf-embedder url=”https://songramernotebook.com/wp-content/uploads/securepdfs/2021/05/bangladesh-hospital-staff-list.pdf” title=”bangladesh hospital staff list”]

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!