বস্ত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পাঁচসালায় ১০৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে
যশোর: শিল্পমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, বস্ত্রশিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য সরকার প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ১শ ৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ের ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। শিল্পমন্ত্রী যশাের থেকে ৯৮ মাইল দূরে রাজ টেক্সটাইল মিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণ দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ ইতােমধ্যেই প্রকল্পটি অনুমােদন করেছে। সরকার উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনাব রওশন আলী এমপি। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন টেক্সটাইল মিলস কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান জনাব সি এম মুর্শেদ, কাজী মােজাম্মেল হক এমপি, শাহ হামিদুজ্জমান এমপি ও রাজ টেক্সটাইল মিলের ম্যানেজার। শিল্পমন্ত্রী বলেন, রাজ টেক্সটাইল মিলসহ দেশে ৫টি নতুন টেক্সটাইল মিলের মধ্যে ৪টি নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। উক্ত মিলগুলাে উৎপাদন শুরু করেছে। তিনি বলেন, ঢাকার সাভার ও ফরিদপুরের গােয়ালন্দে অপর দুটি মিলের নির্মাণ কাজ চলতি বছরের শেষের দিকে সমাপ্ত হবে। এই নিয়ে দেশে সর্বমােট স্পিন্ডনের সংখ্যা দাঁড়ায় ৯১ হাজার। সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, সরকার চলতি বছরে দেশে সুতা ও কাপড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা যথাক্রমে ১ কোটি ৫০ লক্ষ পাউন্ড ও ৯ কোটি ৫০ লক্ষ গজ নির্ধারণ করেছে। পক্ষান্তরে ১৯৭৩-৭৫ অর্থবছরে সুতা ৭ কোটি ৯৩ লাখ গজ কাপড় উৎপাদিত হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, মাথাপিছু বছরে ৯ গজ কাপড় ব্যবহৃত হলে দেশের সাড়ে সাত কোটি লােকের জন্য বছরে ৮৮ কোটি গজ কাপড়ের প্রয়ােজন রয়েছে। উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার দেশের ৩১ হাজার ৫শত বেকারের। চাকুরীর ব্যবস্থা করছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, বস্ত্র শিল্পের জন্য উন্নয়ন বাজেটে সরকার ৮ কোটি ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে। শিল্পমন্ত্রী পূর্বাপর অবস্থার উল্লেখ করে বলেন, স্বাধীনতার আগ থেকে দেশে মােট ৪৩টি টেক্সটাইল মিল রয়েছে। উক্ত টেক্সটাইল মিলের মধ্যে অধিকাংশই উৎপাদনহীন অবস্থায় ছিল বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বাধীনতার আগে তার পণ্য বাজার হিসেবে ব্যবহার করত। ফলে বাংলাদেশে বস্ত্র শিল্প উন্নয়নে পাকিস্তানের কোন ব্যাপক পরিকল্পনা ছিল না বলে তিনি উল্লেখ করেন। শিল্পমন্ত্রী শ্রমিক প্রশাসন ব্যবস্থাকে দেশে শিল্প উন্নয়নের স্বার্থে শ্রমিক কর্মচারী সদ্ভাব বজায় রাখার আহ্বান জানান। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, দেশের জনগণ ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে প্রশাসন ব্যবস্থা ও শ্রমিক উভয়েই নিজেদের মধ্যে সদ্ভাব বজায় রেখে যথাযথ কর্তব্য পালন করবে।৪০
রেফারেন্স: ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত