দেশের প্রতি ইঞ্চি আবাদযােগ্য জমিতে শস্য ফলাতে হবে: বঙ্গবন্ধু
ফরিদপুর: প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বন্যার পানি সরে যাবার পর দেশের প্রতি ইঞ্চি চাষযােগ্য জমিতে খাদ্যশস্য উৎপাদনের জন্য সমস্ত জনশক্তিকে কাজে লাগানাের আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ফরিদপুর এবং গােপালগঞ্জে বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিদের সমাবেশে বলেন। যে, খাদ্য সংকট শুধু বাংলাদেশের নয়। সারা বিশ্বের। তিনি বলেন, খাদ্যশস্য উৎপাদনের মাধ্যমে বাংলাদেশ এই সংকট থেকে উত্তরণ করতে পারবে। এছাড়া দ্বিতীয় কোন পথ খােলা নেই। তার ৬ ঘণ্টা ব্যাপী এক ঝটিকা সফরের সময় এ জেলার অধিক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা কোটালিপাড়া, গােপালগঞ্জ ও ফরিদপুর শহরে অবতরণ করেন। তার সাথে খাদ্য ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী জনাব আব্দুল মােমেন বংলাদেশ রেডক্রস প্রধান গাজী গােলাম মােস্তফাও ছিলেন। কোটালীপাড়ার জনসমাবেশে বঙ্গবন্ধু বলেন যে, বন্যার ফলে সৃষ্ট দুর্যোগ নিরসনের জন্য সরকার পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী দেবে এবং আগামী মৌসুমে খাদ্যশস্য উৎপাদনের জন্য কৃষকদের পর্যাপ্ত সাহায্য দেবে। সবস্থানেই বঙ্গবন্ধু এই মর্মে আশ্বাস প্রদান করেন যে বন্যাউপদ্রুত এলাকায় জনগণের খাদ্যের প্রয়ােজন সরকার যে কোনভাবেই হােক মােকাবেলা করবেন। বঙ্গবন্ধু বলেন যে, বন্যার পানি সরে যাবার পর সরকার বীজ শক্তিচালিত পাম্পসহ অন্যান্য সাহায্য যা দরকার তা দেবে। ত্রাণসামগ্রী চুরি সম্পর্কে বলতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন যে, এই সকল আত্মসাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক ইউনিয়নে প্রাপ্ত জিনিসের পরিমাণসহ একটি তালিকা ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেন। যার ফলে সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করা হচ্ছে কিনা তা দেখা সম্ভব হবে। কোটালীপাড়ায় এক জনসমাবেশে বঙ্গবন্ধু বলেন, সরকার জনগণের দুঃখ-দুর্দশা সম্পর্কে সম্পূর্ণ সজাগ। তিনি আরাে বলেন, বন্যাউপদ্রুত মানুষের দুর্দশা মােচনের জন্য যথাসম্ভব ত্রাণসামগ্রী প্রদান করা হবে। তিনি আরাে বলেন, খাদ্যশস্যের ঘাটতি পূরণের জন্য আগামী মৌসুমে আরাে খাদ্যশস্য উৎপাদন করুন।২৬
রেফারেন্স: ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত