You dont have javascript enabled! Please enable it!

জাতীয় রক্ষীবাহিনীর প্রতি বঙ্গবন্ধুর আহ্বান

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুর্নীতিবাজ এবং সমাজবিরােধীদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ প্রতিরােধ গড়ে তােলার জন্য জনগণের প্রতি উদ্বাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রবিবার সকালে ঢাকার অদূরে সাভারে জাতীয় রক্ষীবাহিনীর ৪র্থ শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করছিলেন। এই উপলক্ষে ভাষণ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু বলেন, জনজীবনে সংকট সৃষ্টিকারী সমাজবিরােধীদের সমাজদেহ থেকে নিশ্চিহ্ন করা হবে। তিনি জাতীয় রক্ষীবাহিনীকে সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য বাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুখী ও সমৃদ্ধিশীল সমাজ গঠনে আত্মনিয়ােগের আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় রক্ষীবাহিনীকে প্রয়ােজন বােধে রক্ত দিয়ে হলেও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধু বলেন, কিছু বিদেশি চর তাদের বিদেশি প্রভুদের ইঙ্গিতে দেশের অভ্যন্তরে গুপ্তহত্যা ও লুটতরাজ চালাচ্ছে। এদের অনেককে মাফ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু আর মাফ নয়। এ জাতীয় রাষ্ট্রবিরােধীদের কঠোরভাবে মােকাবিলা করার আহ্বান জানান। রক্ষীবাহিনীকে সতর্ক করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তােমরা আইনানুগ নাগরিকদের অযথা হয়রানি করাে না। নিরীহ নিরপরাধ লােকদের রক্ষা কর এবং দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করাই হবে তােমাদের কর্তব্য। বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে রক্ষীবাহিনীর বিভিন্ন কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিশেষ করে বন্যাদুর্গত মানুষের ত্রাণকার্যে সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলেমিশে রক্ষীবাহিনী যে নিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছেন, রক্ষীবাহিনী গঠন করার পর তার অল্প কিছুদিনের মধ্যে তারা যে শৃঙ্খলা এবং কর্তব্যনিষ্ঠার পরিচয় দেন বঙ্গবন্ধু তার প্রশংসা করেন। এর আগে বঙ্গবন্ধু রক্ষীবাহিনী প্রধান কর্নেল নুরুজ্জামানকে কাছে রেখে খােলা জীপে জোয়ানদের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। কুচকাওয়াজ পরিচালনা করেন লিডার মােজাফ্ফর হােসেন। নতুন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জোয়ানরা জলপাই রঙের মনােজ্ঞ কুচকাওয়াজ দ্বারা সমাগত অভ্যাগতদের সকলকে মােহিত করেন। অনুষ্ঠানে স্পীকার জনাব আবদুল মালেক উকিল মন্ত্রিসভার সদস্যগণ, বিচারপতি জনাব আবু সাঈদ চৌধুরী, বিদেশি কূটনৈতিক ও বহু উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা উপস্থিত থেকে রক্ষীবাহিনীর মনােজ্ঞ কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন।১

রেফারেন্স: ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!