You dont have javascript enabled! Please enable it! 1974.08.26 | বিভিন্ন দেশের সাথে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক চুক্তির উদ্যোগ | দৈনিক আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

বিভিন্ন দেশের সাথে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক চুক্তির উদ্যোগ

ঢাকা: গম, তৈলবীজ, অপরিশােধিত লৌহ, সিমেন্ট, তুলা ও কয়লা আমদানির উদ্দেশ্যে সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি সম্পাদনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। জাতীয় পরিকল্পনা কমিশন ইতােমধ্যেই প্রাথমিকভাবে আলােচনা শুরু করেছেন। কতিপয় কর্পোরেশনও সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের সাথে আলােচনা চালাচ্ছেন। রাশিয়া, ভেনেজুয়েলা, ভারত অপরিশােধিত লৌহ দীর্ঘমেয়াদীতে অন্যান্য দেশে সরবরাহ করছে। বাংলাদেশ এসব দেশ থেকে দীর্ঘমেয়াদী অপরিশােধিত লৌহ আমদানি করতে পারবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশা প্রকাশ করেন। গম, তুলা ও তৈলবীজ দীর্ঘমেয়াদী আমদানি করার উদ্দেশ্যে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের একটি সমৃদ্ধশালী দেশও এ ব্যাপারে। বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় সহায়তা করছে। তবে খাদ্যশস্য সম্পর্কিত দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য হওয়ার পর পরই সম্পাদিত হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহল উল্লেখ করেন। অবশ্য খাদ্য মন্ত্রণালয় ইতােপূর্বেই দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি সম্পাদনের ওপর গুরুত্ব আরােপ করেছেন। কিন্তু ফণীভূষণ মজুমদার খাদ্য মন্ত্রী থাকাকালে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি সম্পাদন করে খাদ্যশস্য আমদানির বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব আরােপ করে মন্ত্রিসভায় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সরকার বর্তমানে এ প্রস্তাবের বিশেষ প্রয়ােজনীয়তা স্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে। কয়লা, তুলা ও সিমেন্ট আমদানির জন্য দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি সম্পাদন করারও চেষ্টা করছেন। উন্নয়নের কাজ বেড়ে যাওয়ায় আমাদের প্রয়ােজন অনুযায়ী সিমেন্ট সরবরাহ করতে পারেনি। বর্তমানে রাশিয়া জাপান ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নয়া সিমেন্ট কারখানা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে আগামী ১ বছরের মধ্যে বহু দেশ সিমেন্ট সরবরাহ করতে পারবে। তদুপরি বাংলাদেশ জয়পুরহাট ও সিলেটে নতুন সিমেন্ট কারখানা প্রতিষ্ঠা করবে। এ দুটি সিমেন্ট করাখানার জন্য এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া যাবে। তবে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক ও কুয়েত এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখাবে বলে আশা করা হচ্ছে। চলতি সনের খাদ্য ঘাটতি পূরণ ও বন্যার্তদের মধ্যে খাদ্যশস্য সরবারহের উদ্দেশ্যে রাশিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, পশ্চিম জার্মানি ও আমেরিকা থেকে প্রয়ােজনীয় খাদ্যশস্য আমদানি করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখযােগ্য যে, চলতি সনে রাশিয়া, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরােপ, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশের উল্লেখযােগ্য পরিমাণ উদ্ধৃত খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছে।৮৮

রেফারেন্স: ২৬ আগস্ট ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ 
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত