You dont have javascript enabled! Please enable it! 1974.08.18 | কামারুজ্জামান আবার মন্ত্রিসভায় যাচ্ছেন | বাংলার বাণী - সংগ্রামের নোটবুক

কামারুজ্জামান আবার মন্ত্রিসভায় যাচ্ছেন

ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব এ এইচ এম কামারুজ্জামান পুনরায় মন্ত্রিসভায় ফিরে যাচ্ছেন। মুজিবনগরের অস্থায়ী বিপ্লবী সরকারের সদস্য হিসেবে তিনি প্রথম মন্ত্রিসভায় যােগদান করেন এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হবার পূর্ব পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র রিলিফ ও বাণিজ্য দফতরসহ বিভিন্ন বিভাগীয় দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। গত জুলাই মাসের ৭ তারিখে সাতজন মন্ত্রীর পদত্যাগ করার পর তার পুনরায় মন্ত্রিসভায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব আনা হয়। তিনি তখন সে প্রস্তাবে সম্মত হননি। আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা যায় তিনি এখন আবার উক্ত প্রস্তাবটি বিবেচনা করছেন এবং মন্ত্রিসভায় ফিরে যাবার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
জনাব জামান দলীয় কাজ করে তেমন আনন্দ পাচ্ছেন না বলে ঘনিষ্ঠ মহল থেকে জানান হয়। এ মহল বলেন, পার্টি চালাবার ঝক্কি তাকে ব্রিত করে তুলেছে। এখন তিনি মন্ত্রিসভায় ফিরে যেতে পারলেই খুশি হবেন। তাঁর মন্ত্রিসভায় পুনরায় ফিরে যাওয়ার পথে প্রধান বাধা হচ্ছে আওয়ামী লীগের পরবর্তী সভাপতি কে হবেন সে প্রশ্নটি স্থির করা এবং সে প্রশ্নটি স্থির হলে প্রস্তাবিত নতুন সভাপতি কিভাবে নবপদে অভিষিক্ত হবেন সেই জটিল গঠনতান্ত্রিক সমস্যার মীমাংসা করা। দলীয় সংবিধান অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সভাপতি কাউন্সিলে নির্বাচিত হন। এবং এই পদটি শূন্য হলে সিনিয়র সহ সভাপতি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হন। দলীয় হাই কমান্ড মনে করেন পার্টির দায়িত্ব পালনের জন্য একজন সার্বক্ষণিক সভাপতি আবশ্যক। এবং কাউন্সিল সভা ছাড়া সার্বক্ষণিক স্থায়ী সভাপতি কেউ নির্বাচিত করতে পারেন না। দ্বিতীয় প্রশ্নটি হচ্ছে মন্ত্রিসভার দফতর নিয়ে। পার্টির সভাপতি নির্বাচিত হবার পূর্বে জনাব কামারুজ্জামান বাণিজ্য ও বৈদেশিক বাণিজ্য দফতরের দায়িত্বে ছিলেন। এখন সিনিয়র মন্ত্রী খােন্দকার মােশতাক উক্ত বিভাগের দায়িত্বে। শিল্পমন্ত্রী জনাব নজরুল ইসলাম, অর্থ দফতরে জনাব মনুসর আলী রয়েছেন। তাই মন্ত্রিসভায় যােগদানের পূর্বে তাকে কোনাে বিভাগীয় দায়িত্বে পুনর্বহাল করা হবে জনাব জামান তা। বিচার করে দেখতে চান। তৃতীয় সমস্যাটি হলাে বন্যা সমস্যা। বন্যার এই ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মুখে বঙ্গবন্ধু নতুন মন্ত্রী গ্রহণ করবেন কিনা সেটি এখন বিচার্য বিষয়। তবে জনাব জামান মন্ত্রিসভায় যােগদানের আগ্রহ প্রকাশ করলে বঙ্গবন্ধু আপত্তি নাও করতে পারেন। কারণ ন’জন মন্ত্রী চলে যাওয়ার ফলে কতকগুলাে বিভাগে এখন কোন মন্ত্রী নেই এবং সরকারের সিনিয়র মন্ত্রীদের ওপর একাধিক বিভাগের চাপ রয়েছে।৬২

রেফারেন্স: ১৮ আগস্ট ১৯৭৪, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত