পাঁচসালা পরিকল্পনার বাইরে বন্যা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা হবে
ঢাকা: বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানি সম্পদ ও বিদ্যুত্মন্ত্রী জনাব আবদুর রব সেরনিয়াবাত বলেছেন, সম্পদের সংস্থান হলে পাঁচসালা পরিকল্পনার বাইরেই বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মন্ত্রী বৃহস্পতিবার নােয়াখালী ও কুমিল্লার বন্যা উপদ্রুত এলাকায় এক ঝটিকা সফর শেষে ঢাকায় ফিরে এসে বলেছেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ না হলে জাতির অর্থনীতি সুদৃঢ় হবে না। জনাব সেরনিয়াবাত বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার প্রথম পাঁচসালা পরিকল্পনাকালে একটি ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। তবে এজন্য প্রচুর অর্থ এবং দীর্ঘ সময়ের প্রয়ােজন।
বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রী বলেন, কার্যকরভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলাের সহযােগিতা খুবই দরকার। এসব দেশেই আমাদের প্রধান প্রধান নদীগুলাের উৎস। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কার্যকরভাবে বন্যা সমস্যার সমাধানের জন্যই যৌথ নদী কমিশন গঠন করা হয়েছে। মন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন যে, জাতি পূর্বের মতই সাহস ও ধৈর্যের সাথে এই জাতীয় সংকটের মােকাবিলা করবে। জনাব সেরনিয়াবাত বলেন, দীর্ঘদিনের ঔপনিবেশিক শােষণ এবং নদীগুলাে খননের ব্যাপারে উপেক্ষাই এই বন্যার জন্য দায়ী। বন্যাকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে তিনি উল্লেখ করে বলেন, এ ব্যাপারে সমাধান খুঁজে বের করার জন্য প্রত্যেকেরই এগিয়ে আসা উচিত। বন্যা নিয়ন্ত্রণমন্ত্রী জানান, বন্যায় এ পর্যন্ত নােয়াখালী জেলার ২৩ লাখ একর জমির ধান বিনষ্ট হয়ে গেছে। কুমিল্লা জেলার ১০ লাখ পঞ্চাশ হাজার একর জমির ধান বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এর মধ্যে তিন লাখ ৮২ হাজার একর জমির ধান একেবারে বিনষ্ট হয়েছে। মন্ত্রী জানান, ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচ কার্যে নােয়াখালী ও কুমিল্লা জেলার জন্য ইতােমধ্যেই যথাক্রমে তিন কোটি ৩০ লাখ এবং ৩ কোটি ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রীর সঙ্গে জাতীয় সংসদের স্পীকার জনাব আবদুল মালেক উকিল, ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রতিমন্ত্রী শ্রী ক্ষিতিশ চন্দ্র মণ্ডল এবং লীগ অব রেডক্রসের প্রতিনিধি মি. পল এডামস বন্যা উপদ্রুত এলাকা সফর করেন।২
রেফারেন্স: ১ আগস্ট ১৯৭৪, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত