You dont have javascript enabled! Please enable it! 1974.07.19 | সংসদে বিশেষ ক্ষমতা আইন বিল পেশ | দৈনিক আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

সংসদে বিশেষ ক্ষমতা আইন বিল পেশ

সংসদ ভবন: সরকার শুক্রবার জাতীয় সংসদে সমাজ বিরােধীদের কঠোর হস্তে দমনের উদ্দেশ্যে ফায়ারিং স্কোয়াডের বিধান বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ বিলটি উত্থাপন করেছেন। বিলে প্রস্তাবিত আইনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ, নােট জাল করা, চোরাচালান, মজুতদারী, কালােবাজারী এবং খাদ্যে ভেজাল দমনের জন্য দেশে প্রচলিত আইনে সংশােধন আবশ্যক হয়ে পড়েছে। তাছাড়া দেশ ও জাতিকে এ জাতীয় ঘৃণ্য সমাজবিরােধীদের হাত থেকে উদ্ধার করা প্রয়ােজন হয়ে পড়েছে বলে এতে সুস্পষ্ট ঘােষণা করা হয়। প্রস্তাবিত বিলে উপরােল্লেখিত অপরাধের জন্য বিশেষ সামারী ট্রায়ালের ব্যবস্থা গ্রহণ করে মৃত্যুদন্ড বা প্রয়ােজন বােধে ফায়ারিং স্কোয়াডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেসব অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেয়া যাবে:
ক, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ: পাটের গুদাম, পাটজাত দ্রব্য, পাটকল কিংবা পাট রেলিং, প্রেসে কোন ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ হলে তাকে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদন্ড কিংবা জরিমানাসহ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হবে।
খ. মজুতদারী ও কালােবাজারী: কেউ যদি মজুতদারী, কালােবাজারী প্রভৃতি কার্যকলাপে অপরাধী সাব্যস্ত হয়, তাকে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও জরিমানাসহ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া যাবে। কোন ব্যক্তি যদি অর্থনৈতিক স্বার্থ ব্যতীত মালামাল মজুত রাখে এবং তা প্রমাণিত হয় তাহলে তাকে জরিমানাসহ তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া যাবে।
গ. নােট স্ট্যাম্প জাল করা: কোনাে ব্যক্তি যদি নােট, স্ট্যাম্প জাল করে অথবা এগুলাে বিক্রি করতে সহায়তা করে কিংবা কারাে কাছে যদি এসব জাল করার যন্ত্রপাতি পাওয়া যায় অথবা তৈরিতে সহায়তা করে তাকে মৃত্যুদণ্ড কিংবা জরিমানাসহ যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া যাবে।
. ঘ. চোরাচালানের শাস্তি: (১) কেউ যদি বাংলাদেশ থেকে পাট, স্বর্ণ, রৌপ্য ও অলংকার, টাকা ও খাদ্যদ্রব্য, ঔষধ, আমদানিকৃত মালামাল কিংবা অন্য কোন জিনিস বেআইনীভাবে সীমান্তের বাইরে নিয়ে যায়। (২) কিংবা বাইরে থেকে বাংলাদেশের অভ্যান্তরে নিয়ে আসে তাহলে তাদের চোরাচালানের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, জরিমানা সহ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা যাবে।
ঙ. খাদ্যে ভেজাল: খাদ্য, খাবার পানি ও কিংবা ঔষুধে যদি কোন ব্যক্তি ভেজাল মিশ্রিত করে এবং অপরাধী সাব্যস্ত হয়, তাহলে তাকেও প্রস্তাবিত আইন অনুসারে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, জরিমানাসহ ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া যাবে। এছাড়া নারিকেল তেল, সাবান কিংবা অন্যান্য টয়লেট সামগ্রিতে ভেজাল মিশ্রিত করে তা যদি মানুষের ব্যবহারে ক্ষতিকারক হয়, তাহলে এসব দ্রব্যের প্রস্তুতকারক, বিক্রেতাকে ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং জরিমানা করা যাবে।৬৯

রেফারেন্স: ১৯ জুলাই ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত