You dont have javascript enabled! Please enable it! 1974.07.18 | অর্থমন্ত্রীর বিশদ তথ্য, ৭২ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের লাভ-লােকসানের খতিয়ান | দৈনিক আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

অর্থমন্ত্রীর বিশদ তথ্য, ৭২ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের লাভ-লােকসানের খতিয়ান

সংসদ ভবন: ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ টি বাণজ্যিক ব্যাংকে জমার পরিমাণ প্রায় ২৮০ কোটি ১৩ লাখ টাকা বৃদ্ধি পায়। এ সময়ে ব্যাংকসমূহ বিভিন্ন পাটকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য সরকারি ও আধা-সরকারি সংস্থাসমূহকে প্রায় ১৭৪ কোটি টাকা আগাম ঋণদান করে। ঐ সময়ে ৭২ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংক দেশে ও বিদেশে ৩৪টি নতুন শাখার উদ্বোধন করে। অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রায়ত্ত ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ১৯৭২ সালের হিসাব নিকাশ ও লাভ-লােকসানের খতিয়ান উত্থাপনকালে উপরােক্ত তথ্য জানান। নিচে প্রত্যেকটি ব্যাংকের খতিয়ান আলাদা আলাদাভাবে দেয়া হলাে-
সােনালী ব্যাংক: ১৯৭২ সালের ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সােনালী ব্যাংকে জমাকৃত মােট টাকার পরিমাণ ছিল ১৭৩ কোটি টাকা। এই পরিমাণ তার আগের বছরের চাইতে ৭২ কোটি টাকা বেশি ছিল বলে বিবৃতিতে জানানাে হয়। বৃদ্ধির হার দেখানাে হয় ৭১.২৯ ভাগ। উক্ত সময়ে ব্যাংকের লাভের পরিমাণ ছিল মােট ৫২ কোটি টাকা। সােনালী ব্যাংক এই সময়ে মােট ৪৭ কোটি টাকা বিনিয়ােগ করে ১৯৭২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সােনালী ব্যাংক মােট ৭৪ কোটি টাকা অগ্রিম ঋণদান করে। এর মধ্যে ১৭টি পাটকল এবং পাট বাণিজ্যের জন্যই দেয়া হয় ৪৭ কোটি টাকা। ১৯৭২ সালে সােনালী ব্যাংক ৪টি থানায় নতুন শাখা উদ্বোধন করে।
জনতা ব্যাংক: ১৯৭২ সালে জনতা ব্যাংকের মজুতের পরিমাণ শতকরা ৮০ভাগ বৃদ্ধি পায়। এ বছর মার্চ মাসে জনতা ব্যাংকের মােট জমার পরিমাণ যেখানে ছিল ৮৭ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা, সেখানে ঐ বছরের ৩১ ডিসেম্বর তারিখে জমার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। এই সময় জনতা ব্যাংক গভর্ণমেন্ট সিকিউরিটি এবং ডিভেনচারের মাধ্যমে বিনিয়ােগের পরিমাণ হচ্ছে যথাক্রমে ১৫ কোটি এবং সাড়ে ১২ কোটি টাকা। এ সময় লন্ডন ও বার্মিংহামসহ মােট ১৪টি নতুন শাখা খােলা হয়। ৭৩ সালে ব্যাংকের শাখা খােলার সংখ্যা হচ্ছে ৪০টি। জনতা ব্যাংক ঐ বছরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৩৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ঋণদান করে।
অগ্রণী ব্যাংক: ১৯৭২ সালে অগ্রণী ব্যাংকের জমার পরিমাণ শতকার ৬৫.৫ ভাগ বেড়েছে। অর্থাৎ পূর্ববর্তী বছরে জমার পরিমাণ ছিল ৫৮ কোটি টাকা। ১৯৭২ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর তা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৯০ কোটি টাকা। আসল ঋণ দানের পরিমাণ ১ কোটি টাকা বেড়ে যায়। নতুন শাখা খােলা হয় ৩টি।
উত্তরা ব্যাংক: ১৯৭২ সালের শেষ নাগাদ উত্তরা ব্যাংকের মােট জমার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৬৯ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা। এর এক বছর আগে এর জমার পরিমাণ ছিল মাত্র ২ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা। মােট বৃদ্ধির পরিমাণ ৪ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা। উত্তরা ব্যাংক সিলেটে ৩টি ও লন্ডনে একটি শাখা অফিস উদ্বোধন করেন।
রূপালী ব্যাংক: ১৯৭২ সালে রূপালী ব্যাংকের জমার পরিমাণ বৃদ্ধি পায় মােট ২ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা। পূর্বে জমার পরিমাণ যেখানে ছিল ৩৮ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা সেখানে ঐ বছরের ৩০ ডিসেম্বর তা দাঁড়ায় ৬২ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা। রূপালী ব্যাংক এ সময় বিভিন্ন কলকারখানায় ও প্রতিষ্ঠানকে ১০ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা ঋণ দান করে। উক্ত ব্যাংক এই সময় কোনাে নতুন ব্রাঞ্চ উদ্বোধন করেননি।
পূবালী ব্যাংক: ১৯৭২ সালে পুবালী ব্যাংকে জমার পরিমাণ মােট ৩৪ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন কলকারখানাকে ঋণ হিসেবে মােট ১১ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা দেয়া হয়। এ সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং বিদেশে মােট ৬টি নতুন শাখা খােলা হয়।৬৪

রেফারেন্স: ১৮ জুলাই ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত