অধিবেশনের চতুর্থ দিবসে বিরােধী সদস্যদের দুটো প্রস্তাবই কণ্ঠভােটে বাতিল
সংসদ ভবন: জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের চতুর্থ দিনে বৃহস্পতিবার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সদস্যদের উত্থাপিত দুটি প্রস্তাব কণ্ঠভােটে বাতিল হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার ছিল সরকারি সদস্যদের দিন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের পক্ষে প্রস্তাব দুটি উত্থাপন করেন জাসদের জনাব মইনুদ্দিন আহমদ (মানিক) এবং জনাব আবদুস সাত্তার। এসময় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার জনাব বায়তুল্লাহ সংসদ পরিচালনা করেন। প্রথম প্রস্তাবে জাসদের জনাব মইনুদ্দিন আহমদ মানিক রাজশাহী নওহাটা নদীটি খনন করে জলপথে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা করার দাবী জানান। উপরােক্ত প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানিসম্পদ মন্ত্রী জনাব আবদুর রব সেরনিয়াবাত প্রস্তাবটিকে তার মন্ত্রণালয়ের এক্তিয়ারের বাইরে বলে উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জনাব মইনুদ্দিন মানিককে তার সাথে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আলাপ আলােচনার আহ্বান জানান। পরে ডেপুটি স্পীকার প্রস্তাবটি পরিষদের মতামত যাচায়ের জন্য প্লেস করলে এটি কণ্ঠভােটে বাতিল হয়ে যায়। দ্বিপক্ষীয় প্রস্তাবটি তােলেন জাসদের নির্বাচিত সংসদ সদস্য জনাব আবদুস সাত্তার। তিনি প্রস্তাব করেন যে, বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্য সমবায়ের। ভিত্তিতে কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করা হােক। জনাব সাত্তার এর এই প্রস্তাবের জবাব দেন প্রতিমন্ত্রী জনাব ফরিদ গাজী। জনাব ফরিদ গাজী বলেন, সরকার দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার ব্যাপারে ইতােপূর্বেই সমবায়ের উপর গুরুত্ব আরােপ করেছেন। সুতরাং এ ব্যাপারে নতুন করে প্রস্তাব উত্থাপনের কোনাে প্রশ্নই ওঠে না। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের প্রসঙ্গে জনাব ফরিদ গাজী বলেন, বাংলাদেশে শ্রম অত্যন্ত সস্তা এবং বহুলােক বেকার রয়েছে। এ কারণে সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে নতুন করে বেকার সমস্যা বৃদ্ধি না করে জনশক্তির সুষ্ঠু ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরােপ করেন। ডেপুটি স্পীকার জনাব বায়তুল্লাহ সংসদের মতামত যাচাইয়ের জন্য প্রস্তাবটি হাউসে উত্থাপন করেন। এ প্রস্তাবটি কণ্ঠভােটে বাতিল হয়ে যায়। এদিকে ওয়াকআউটের পর জাতীয় সংসদের বেসরকারি সদস্যরা বৃহস্পতিবার অধিবেশনে যােগদান করেন। রাষ্ট্রপতির অনুপস্থিতিতে স্পীকারের সংসদের কাজ পরিচালনার বৈধতা নিয়ে জনাব কামরুল ইসলাম মাে. সালাউদ্দিনের পয়েন্ট অব অর্ডারের পর তারা ওয়াকআউট করেছিলেন১৭
রেফারেন্স: ৬ জুন, ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত