You dont have javascript enabled! Please enable it!

নতুন কর প্রস্তাবের তীব্র বিরােধিতা

সংসদ ভবন: সােমবার জাতীয় সংসদে ৮৯ কোটি ১৪ লক্ষ টাকার নতুন করারােপের প্রস্তাব সম্বলিত ১৯৭৪ এর অর্থ বিল (ফাইন্যান্স বিল (বাজেট) বিরােধী ও স্বতন্ত্র সদস্যদের তীব্র সমালােচনার সম্মুখীন হয়। সংসদের বিরােধী ও স্বতন্ত্র সদস্য মি, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা, জনাব মহিউদ্দিন আজাদ, জনাব আবদুল্লাহ সরকার ও জনাব আবদুস সাত্তার আলােচনায় অংশগ্রহণ করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সদস্য মি. মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা বিয়ষটির ব্যাপারে জনমত যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে জনসাধানের মধ্যে তা বিলি করার দাবীতে একটি সংশােধনী উত্থাপন করে বলেন যে, এই বিষয়টি ইতােমধ্যে বিপর্যস্ত জনসাধারণের উপর মারাত্মক বােঝা হিসেবে নেমে আসবে। মি লারমা চাউলসহ অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যসামগ্রীর উচ্চ মূল্যের কথা উল্লেখ করেন। চোরাচালান, মুনাফাখখার, মজুতদারী, কালােবাজারীদের দমনে সরকারের ব্যর্থতার জন্য মি. লারমা দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, জনগণের দুর্দশার জন্য তারাই দায়ী। সরকার এই সকলসমাজ বিরােধী লােককে দমন করতে না পারে নিরীহ জনগণের উপর করের বােঝা বাড়িয়ে যাচ্ছেন বলে মি. লারমা উল্লেখ করেন। মি. লারমা তার বক্তৃতায় বলেন, ১৯৭৪ এর ফাইন্যান্স বিল তথা বাজেট সংবিধানের মূলগত চেতনা এবং সংবিধানিক সমাজতান্ত্রিক আদর্শের পরিপন্থী। তিনি উল্লেখ করেন যে, সরকার রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে সংবিধানের কিছু দিক দর্শন উল্লেখ করেছিলেন কিন্তু এই বিলেই তা লঙ্ঘিত হয়েছে। মি. লারমা আরও বলেন, সরকার জনগণের নিকট থেকে কর আদায় করেছেন কিন্তু বিনিময়ে সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করতে পারবেন না।
আবদুল্লাহ সরকার: জনমত যাচাই করার উদ্দেশ্যে ৩০ জুনের মধ্যে ফাইন্যান্স বিলটি জনমতের সামনে পেশ করার দাবী সম্বলিত অপর একটি সংশােধনীর পক্ষে বক্তব্য পেশকালে জাতীয় সংসদে স্বতন্ত্র সদস্য জনাব আবদুল্লাহ সরকার অভিযােগ করেন যে, এই বিলে মধ্যবিত্ত ও সীমিত আয় শ্রেণির অস্তিত্ব বিলােপ করার উদ্দেশ্য লক্ষ্য করা যায়। তিনি বলেন, তা গরীবকে আরও গরীব করবে। জনাব সরকার বলেন, মধ্যবিত্ত শ্রেণির উপর চাপানাে করের বােঝা তাদের সাধ্যের বাইরে। অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতার উদ্বিত দিয়ে জনাব আবদুল্লাহ সরকার বলেন, অর্থমন্ত্রী আমাদের অর্থনৈতিক জীবনের সকল খাতের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। আগামী বছরের বাজেট ৮৯ কোটি ১৪ লক্ষ টাকার নতুন কর সাধারণ মানুষকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাবে। সরকারের দুর্বলতা এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে জনগণ এমনিতেই দুরবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।৮২

রেফারেন্স: ২৪ জুন, ১৯৭৪, দৈনিক ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!