You dont have javascript enabled! Please enable it!

অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দিনের বাজেট উত্তর সাংবাদিক সম্মেলন

ঢাকা: অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমেদ আগামী অর্থ বছরে উন্নয়ন খাতে ব্যয়ের জন্য বৈদেশিক ঋণ ও মঞ্জুরী হিসেবে ৩৯৪ কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করে বলেছেন এ ব্যাপারে বেশ কিছু পরিমাণ অর্থ সম্পর্কে আশ্বাস পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার হােটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সাংবাদিকদের সাথে আলােচনাকালে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী একথা জানান। তিনি বিশ্ব ব্যাংক থেকে উল্লেখযােগ্য পরিমাণ সাহায্য পাওয়া যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। জনাব আহমদ জানান যে, সাহায্য দানকারী দেশের সংস্থা কর্মকর্তাদের সাথে আলােচনার প্রেক্ষিতেই তিনি এ আশা প্রকাশ করেছেন। কোন শর্তযুক্ত ঋণ নেয়া হবে না বলে পুনরায় ঘােষণা করে তিনি আরাে বলেন, যারা আমাদের স্বাধীনতার পরিপন্থী তাদের সাহায্য যত লােভনীয় হােক না কেন আমরা নেব না। তিনি আরাে বলেন, বৈদেশিক সাহায্য যত কম হবে ততই দেশ আত্মনির্ভরশীল হবে। বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বাড়ছে বলে সরকার ও তিনি নিজেও উদ্বিগ্ন বলে। জানান। বৈদেশিক সাহায্য প্রসঙ্গে তিনি আরাে জানান যে, সমাজতান্ত্রিক শিবির থেকে গ্রান্ট হিসেবে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত কোন অর্থ পায়নি এবং ভবিষ্যতে পাবার কোন আশ্বাস পাওয়া যায়নি। সুতরাং বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তির প্রশ্নটি সম্পূর্ণ নতুন পরিপ্রেক্ষিতে বিবেচনা করতে হবে বলে তিনি মতাে প্রকাশ করেছেন। বাজেটে নতুন কর প্রস্তাবের ভিত্তি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উন্নয়ন খাতে ঘাটতি অর্থসংস্থানের জন্যই ৮৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা কর প্রস্তাব করা হয়েছে। তিনি বলেন, খাদ্য সরবরাহের জন্য ক্ষতিপূরণ করতে না হলে বাজেট রাজস্ব খাতে ৭০ কোটির উপরে উদ্বৃত্ত দেখানাে সম্ভব হতাে এবং তাতে নতুন করের পরিমাণ কমানাে যেতাে। প্রস্তাবিত বাজেটে পরােক্ষ করের বােঝা কাঁধে বহন করতে হবে এ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, কর প্রস্তাব কালে এ সব দায়ের বােঝা হতে যে নিম্ন আয় বা আয়হীন লােকের। উপর না পড়ে তা চেষ্টা করা হয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের সম্পর্কে তিনি ভিন্ন মতাে পােষণ করে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি রােধের নিশ্চয়তা সম্পর্কে তিনি এজন্য ক্রেতাদের প্রতি প্রতিরােধ গড়ে তােলার প্রয়ােজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। জনাব আহমদ ঘাটতি অর্থসংস্থানের হার কমাবার প্রচেষ্টা চালাবার পক্ষে মতাে প্রকাশ করে বলেছেন যে, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও উন্নয়ন ক্ষেত্রে নৈপুণ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে সর্বনিম্ন পর্যায়ে কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। কালাে টাকাকে কাজে লাগানাে প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, কালাে টাকার উৎসকে বন্ধ করাই প্রধান কর্তব্য হবে, কাজে নয়। এজন্য সরকারকে সহায়তা করার জন্য তিনি আহ্বান জানান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে, পাঁচসালা পরিকল্পনার আকার বজায় রাখার চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেন, এজন্য অর্থসংস্থানের জন্য অসুবিধা হচ্ছে। তবে এখনাে চার বছর সময় রয়েছে।৭২

রেফারেন্স: ২০ জুন, ১৯৭৪, দৈনিক পূর্বদেশ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!