You dont have javascript enabled! Please enable it! 1974.06.19 | নয়া আর্থিক বছরে রেলখাতে ছত্রিশ কোটি ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দ | দৈনিক পূর্বদেশ - সংগ্রামের নোটবুক

নয়া আর্থিক বছরে রেলখাতে ছত্রিশ কোটি ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দ

অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ বুধবার জাতীয় সংসদে ১৯৭৪-৭৫ সালের নয়া বাজেট পেশ করেন। এই বাজেটের মধ্যে ১৯৭৪-৭৫ সালের জন্য রেলখাতে ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৩৬ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা। ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে সংশােধিত রেল বাজেটের পরিমাণ ছিল ৩৩ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা। জনাব তাজউদ্দীন আহমদ বাজেট পেশ করতে গিয়ে বলেন যে, ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে রেল থেকে আয় হয়েছিল ৩০ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা। তবে তার থেকে ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে ব্যয়ের পরিমাণ বেশি হওয়ায় রেল টিকিট ও ভাড়া যুক্তিসঙ্গতভাবে বৃদ্ধির মাধ্যমে তা মােকাবিলা করতে হবে। তিনি বলেন, শতকরা ১৮.৪৮ ভাগ পরিবহন ও অন্যান্য যানবাহন বাড়ানাের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি আরাে বলেন, রেলপথ উন্নয়নে ১৮ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হবে নির্মাণাধীন প্রকল্পসমূহে। অবশিষ্ট বরাদ্দ নতুন প্রকল্প ও বদলীকরণের জন্য ব্যয় করা হবে। জনাব তাজউদ্দীন বলেন, আগামী বছর ফরিদপুর-বরিশাল রেলপথ স্থাপন প্রকল্পের নির্মাণকাজে যথাসাধ্য গুরুত্ব দেয়া হবে। একই সময় ১০টি নতুন প্লাটফর্ম শেড ও ৩০টি প্লাটফর্ম শেড ও ৩০টি প্লাটফর্ম উন্নয়নের কাজ সম্পূর্ণ করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বাজেটে ভাড়া বৃদ্ধি বাবদ আয় ছাড়া আয় দেখানাে হয়েছে ৩২ কোটি ৪০ লক্ষ ৫ হাজার টাকা। তাতে দেখা যায় ভাড়া বৃদ্ধি করে মােট ৩ কোটি ৭২ লক্ষ ৯শত ৯৫ টাকা আদায় করা হবে। বাজেটে আরাে দেখা যায়, রেলওয়ের উন্নয়নখাতে মােট ১১ কোটি ২৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা ব্যয় হবে। এই অর্থ বৈদেশিক ঋণ, রেলওয়ের রাজস্ব ও সরকার কর্তৃক নগদ বিনিয়ােগ থেকে মিটানাে যাবে। উন্নয়ন প্রকল্প পুরাতনগুলাে ছাড়া যে নতুন প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়েছে তা হলাে: (১) রােলিং স্টক, (২) প্লান্ট ও সাজসরঞ্জাম (৩) রেলপথ নতুন করণ, (৪) প্রকৌশল ও অন্যান্য গঠনমূলক কাজ, (৫) যাত্রীদের সুবিধাদি, (৬) বৈদেশিক প্রশিক্ষণ, কনসালটেন্সি ও সম্ভাব্যতা নিরীক্ষণ (৭) প্যাসেঞ্জার ফেরী সার্ভিসের জন্য সামুদ্রিক জলযান, (৮) অফিসের ও স্টাফের জন্য শিক্ষা কলেজ, (৯) আধুনিক ডি লােকেমােটিভ কারখানা স্থাপন ও (১০) পুলের পুনঃস্থাপন ও মজবুতীকরণ। জনাব তাজউদ্দীন বলেন, ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে চলতি বছরে পরিবহন ও যােগাযােগ ক্ষেত্রে সংশােধিত বরাদ্দ ছিল ১০৯ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা। আগামী বছর এই ক্ষেত্রে ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই বরাদ্দের মধ্যে ৮০ কোটি টাকা পরিবহন ও ১৭ কোটি টাকা যােগাযােগ সম্প্রসারণে প্রয়ােগ করা হবে। তিনি বলেন, রেলপথ, জলপথ, নৌপথ ও বিমান পথের সমন্বিত ও অনুপূরক উন্নয়নের ভিত্তিতে এই ক্ষেত্রে প্রকল্পসমূহের পরিবহন ব্যবস্থা থেকে সর্বাধিক উপযােগ লাভের চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন দীর্ঘমেয়াদী ঋণের ভিত্তিতে ৬টি জাহাজ সংগ্রহ করতে পারবেন বলে আশা করা যায়। তিনি বলেন, পােল্যান্ড থেকে দান হিসেবে ৩টি উপকূলীয় জাহাজ আগামী অর্থ বছরের শুরুতে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থায় যােগ দেবে। এছাড়া এই সংস্থা ১০ টি টাগ, ২টি ট্যাঙ্কার ও ৩৮টি বার্জ সংগ্রহ করবেন। জনাব তাজউদ্দীন আরাে বলেন যে, ৫টি ড্রেজার ও দুটি টাগ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষের কার্যক্ষমতা প্রত্যাশিতভাবে বাড়বে বলে আশা করা যায়। তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকায় আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নির্মাণ কাজ আগামী অর্থবছরে বহুলাংশে সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।৬৬

রেফারেন্স: ১৯ জুন, ১৯৭৪, দৈনিক পূর্বদেশ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত