You dont have javascript enabled! Please enable it!

জাতিসংঘে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি সুনিশ্চিত, সােমবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

ঢাকা: বাংলাদেশের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সদস্যপদ লাভ প্রায় নিশ্চিত বলে জানা গেছে। জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভের পর বাংলাদেশ থেকে যে প্রতিনিধিদল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যােগ দিতে যাবেন খুব সম্ভবত প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার নেতৃত্বদান করবেন। সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের হয়ে তিনিই প্রথম বক্তৃতা করবেন বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য যে, পুরনাে আবেদনপত্রটি বিবেচনার জন্য বাংলাদেশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা পরিষদের শুক্রবারের এক বৈঠকে বাংলাদেশের জাতিসংঘের সদস্যপদের আবেদন পরিষদের অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত কমিটিতে প্রেরণের সিদ্ধান্তে গৃহীত হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদ বাংলাদেশের অন্ত ক্তির প্রশ্নে চূড়ান্ত অনুমােদন দেবেন। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের যে অধিবেশন ব তাতে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৩৬তম সদস্য হিসেবে বরণ করে নেওয়া হবে। বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ না করলেও ইতােমধ্যেই বিশ্ব সংস্থার বিভিন্ন শাখা সংগঠনের সদস্যপদ লাভ করেছে।
বাংলাদেশই হলাে একমাত্র রাষ্ট্র যে দেশ শতাধিক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাওয়া সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করেনি। এখানে উল্লেখ্য যে, পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি লাভের পর নিজের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য সুইজারল্যান্ড জাতিসংঘের সদস্যপদ প্রার্থী হয়নি। জাতিসংঘের সদস্য হবার জন্য প্রতিটি রাষ্ট্রকে তিনটি শর্ত অবশ্যই পূরণ করতে হয়। এই শর্ত তিনটি হলাে সার্বভৌমত্ব, বিশ্বে শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠার কাজে সহায়ক হওয়া এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা। বাংলাদেশ সৃষ্টির প্রথম থেকেই তিনটি শর্ত মেনে আসছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও জাতিসংঘের সদস্যপদের জন্য ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ আবেদন করলেও নিরাপত্তা পরিষদে চীনের ভেটো প্রদানের ফলে আবেদন নাকচ হয়ে যায়। বাংলাদেশ এ বছর আবেদনপত্রটিকে সক্রিয় করে এবং তা পুনরায় বিবেচনার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কর্মসূচিতে গ্রহণ করা হয়। পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে যে এবারে জাতিসংঘে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে চীন আর ভেটো দেবে না। চীনের ভেটো না দেওয়াকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্র নীতির একটি উল্লেখযােগ্য সাফল্য বলে কূটনৈতিক মহল মনে করেন। জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত হলে জনসংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশ হবে অষ্টম বৃহত্তম দেশ। বাংলাদেশ এই নামের জন্য আক্ষরিক ক্রমানুসারে বাংলাদেশের প্রতিনিধি প্রথম সারিতে বসার সুযােগ পাবেন।২৩

রেফারেন্স: ৮ জুন, ১৯৭৪, দৈনিক পূর্বদেশ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!