সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য হচ্ছে
জাতিসংঘ: আগামী ১০ জুন বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সদস্য হিসেবে গ্রহণ করার জন্য সুপারিশ করার ব্যাপারে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যগণ গতরাতে একমত হয়েছেন। জনৈক প্রতিষ্ঠিত কূটনীতিকের কাছ থেকে এ খবর জানা গেছে। উল্লেখ্য চীন ১৯৭২ সালের আগস্টে জাতিসংঘ সদস্যপদ লাভের জন্য বাংলাদেশ পক্ষেই ভােট দিতে পারে। কারণ ভারত, পাকিস্তানি সকল যুদ্ধবন্দিকে ছেড়ে দিয়েছে। কূটনৈতিক সূত্র থেকে জানা গেছে যে, আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরু হলে সাধারণ পরিষদ নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশ মােতাবেক বাংলাদেশকে জাতিসংঘের ১৩৬তম সদস্য করে নেবে, এটা প্রায় সুনিশ্চিত। উক্ত কূটনীতিক জানান যে, বাংলাদেশ গত ২৩ মে স্বীয় আবেদনের প্রশ্ন নিয়ে আলােচনা করার জন্য নিরাপত্তা পরিষদকে একটি বৈঠকের অনুরােধ জানিয়েছিল। উক্ত অনুরােধের পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা পরিষদ অপরাহে সাইপ্রাস প্রশ্ন নিয়ে আলােচনার পরপরই বাংলাদেশের বিষয়টি নিয়ে আলাপ আলােচনা করেন এবং নিম্নলিখিত কর্মসূচিতে একমত হন।
(ক) নিরাপত্তা পরিষদ আগামী ৭ জুন বৈঠকে মিলিত হবেন এবং বাংলাদেশের আবেদনপত্রটি নতুন সদস্য গ্রহণ সংক্রান্ত কমিটির কাছে পাঠিয়ে দিবেন।
(খ) উক্ত কমিটি তৎক্ষণাৎ আবেদনপত্রটি গ্রহণ করবে এবং সদস্যপদ দেয়ার উদ্দেশ্যে নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক সুপারিশ করার জন্য প্রস্তাব উত্থাপন করবে।
(গ) নিরাপত্তা পরিষদ আগামী ১০ জুন আবার বৈঠকে মিলিত হবেন এবং প্রস্তাবটি গ্রহণ করবেন।
উক্ত কূটনীতিক জানান, চীন প্রস্তাবের প্রতি ভােট দেবে, না অনুপস্থিত থাকবে, না ভেটো দেবে তা এখনাে সুস্পষ্টভাবে কিছু জানা যায়নি। কারণ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে আলােচনাকালে চীন এই মর্মে অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, কমিটির উচিত একটি সর্বসম্মত প্রস্তাব আনা। আবার একথাও বলেছে যে, নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবটি এলে চীন বিরােধিতা করবে না। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী পর্যবেক্ষক জনাব এস এ করিম, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. কামাল হােসেনের সঙ্গে দীর্ঘ আলােচনার পর গত মঙ্গলবার জাতিসংঘ থেকে ফিরে এসে বাংলাদেশের আবেদনপত্রের উপর নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের জন্য অনুরােধ জানিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট কেনিয়ার মি. চার্লস মেইন আজ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডেকেছেন বলে জানা গেছে।১০৬
রেফারেন্স: ৩০ মে, ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত