৩ দিনের সফরে সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ঢাকা এসেছেন
সেনেগালের প্রেসিডেন্ট মি. লিওপােল্ড সেনঘর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে ৩ দিনব্যাপী রাষ্ট্রীয় সফরে রবিবার তেজগাঁও বিমান বন্দরে অবতরণ করলে তাকে প্রাণঢালা সম্বর্ধনা জানানাে হয়। একুশবার তােপধ্বনির মাধ্যমে মাননীয় রাষ্ট্রীয় অতিথি মি. লিওপােন্ড সেনঘর ও মাদাম সেনঘরের আগমন বার্তা ঘােষণা করা হয়। ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিশেষ বিমান হতে মাননীয় রাষ্ট্রীয় অতিথি প্রেসিডেন্ট সেনঘর তেজগাঁও বিমানবন্দরে অবতরণ করার সাথে সাথেই রাষ্ট্রপতি জনাব মােহাম্মদ উল্লা এবং প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে পুষ্পমাল্য ভূষিত করেন। তেজগাঁও বিমান বন্দরের চারপাশ থেকে অসংখ্য দর্শক বিপুল করতালির মাধ্যমে মাননীয় রাষ্ট্রপতি অতিথিকে স্বাগত জানান হয়। বিমান বন্দরে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল প্রেসিডেন্ট মি. লিওপােল্ড সেনঘরকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এ সময়ে সেনাবাহিনীর ব্যান্ডে প্রজাতন্ত্রী সেনেগাল এবং বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। গার্ড অব অনার শেষে মাননীয় রাষ্ট্রীয় অতিথি মঞ্চ থেকে নেমে গার্ড অব অনার প্রদানকারী সেনাবাহিনীর জোয়ানদের দেখতে যান। তিনি ঘুরে ঘুরে তাদের দেখেন। এরপর মাননীয় রাষ্ট্রপতি অতিথিকে বিমান বন্দরে উপস্থিত মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ প্রতি মন্ত্রিগণ জাতীয় সংসদ সদস্য ও সদস্যাবৃন্দ কূটনৈতিক মিশনগুলাের প্রতিনিধিবর্গ উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীবৃন্দ এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে করমর্দন করেন। প্রজাতন্ত্রী সেনেগালের প্রেসিডেন্ট মি. লিওপােল্ড সেনঘরকে সংবর্ধনা জ্ঞাপনের জন্য তেজগাঁও বিমানবন্দরে অন্যান্যের মধ্যে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হােসেন, খাদ্যমন্ত্রী শ্রী ফণীভূষণ মজুমদার, শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক ইউসুফ আলীসহ মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ ও প্রতিমন্ত্রীগণ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব এ এইচ এম কামারুজ্জামান, অস্থায়ী সাধারণ সম্পাদক জনাব আবদুর রাজ্জাক সাংস্কৃতিক সম্পাদক জনাব মােস্তফা সারওয়ার, সমাজকল্যাণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান কমরেড মণি সিং প্রমুখ। অন্য যারা এসেছেন সেনেগালের প্রেসিডেন্ট মি. লিওপােল্ড সেনঘরের সাথে তাদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি. আসান স্যাক ও মাদাম স্যাক, রাষ্ট্রদূত মি. আন্দ্রে কোলবারী, চীফ অব প্রটোকল মি. শ্যাকলিয়ী, বহির্বাণিজ্য বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক মি. পিয়ারে কামা, জনসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কারিগরি উপদেষ্টা মি. আবদুল করিম পি ডি বি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় প্রধান মি. ইব্রাহিমাসী। এছাড়া পাঁচজন সাংবাদিকও এসেছেন।
সুসজ্জিত বিমানবন্দর: প্রজাতন্ত্রী সেনেগালের প্রেসিডেন্ট মি. লিওপােন্ড সেনঘরকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে স্বাগত জানানাের জন্য তেজগাঁও বিমানবন্দরটিকে দুই দেশের জাতীয় পতাকাসমূহ দিয়ে আকর্ষণীয় করে সাজানাে হয়। মনে হয়েছিল জাতীয় পতাকাসমূহ দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথাই ঘােষণা করছে। তেজগাঁও বিমান বন্দর থেকে বঙ্গভবন পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তা প্রজাতন্ত্রী সেনেগাল এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাসমূহ দিয়ে সুন্দরভাবে সাজানাে হয়। এছাড়া রাস্তায় কয়েকটি সুদৃশ্য তােরণ নির্মাণ করা হয়েছে। তােরণগুলাের মধ্যে স্বাগতম প্রেসিডেন্ট সেনঘর, প্রেসিডেন্ট সেনঘর জিন্দাবাদ, বঙ্গবন্ধু জিন্দাবাদ, সেনগাল-বাংলাদেশ মৈত্রী জিন্দাবাদ প্রভৃতি স্লোগান লেখা ছিল। সেনেগালের প্রেসিডেন্ট মি. লিওপােল্ড সেনঘরকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করার জন্য বিমান বন্দর থেকে বঙ্গভবন পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে অসংখ্য লােক সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছিলেন। এছাড়া রাস্তার দুই পাশে সেনেগাল এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাসমূহ নিয়ে বিপুল সংখ্যক স্কুল ছাত্র-ছাত্রী প্রেসিডেন্ট সেনঘরকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন।৯২
রেফারেন্স: ২৬ মে, ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত