বিশ্ব শান্তি পরিষদের নিকট বঙ্গবন্ধুর বাণী
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘সুখী ও সমৃদ্ধিশালী শিল্প গড়ে তােলা তখনই সহজতর হবে যখন বৃহৎ শক্তিবর্গের অর্থ প্রতিযােগিতার জন্য ব্যয়িত সম্পদরাজি নির্যাতিত মানবতার জন্য ব্যয় করা হবে। বঙ্গবন্ধু প্যারিসে অনুষ্ঠানরত বিশ্ব শান্তি পরিষদের প্রেসিডেন্সিয়াল কমিটির বিশেষ অধিবেশন উপলক্ষে পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল মি. রমেশ চন্দের সাথে প্রেরিত এক বাণীতে এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু তার বাণীতে আশ্বাস দিয়ে বলেন যে, বাংলাদেশ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সকল প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে। বঙ্গবন্ধু বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের মুক্তির সংগ্রামের প্রতি সব সময় সমর্থন জানিয়ে এসেছে। বঙ্গবন্ধু বিশ্ব শান্তি পরিষদের ২৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে প্যারিসের প্রেসিডেন্সিয়াল কমিটির বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, বিশ্ব শান্তি পরিষদ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মানব জাতির নিরাপত্তা বৃদ্ধি সমৃদ্ধি এবং বিশ্ব শান্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামের সময় এবং মুক্তির সংগ্রামের পর জাতীয় পুনর্গঠনের সময় বিশ্ব শান্তি পরিষদ যে একাত্মতা সমর্থন ও সাহায্য দিয়েছে সেজন্য বঙ্গবন্ধু কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, বিশ্ব শান্তি আন্দোলনের শুরু থেকে আমি শুধু নিজেই শরিক থাকিনি, স্বাধীনতার পর থেকে আমার দেশও বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সকল প্রচেষ্টার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে এসেছেন। বিশ্বে নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের মুক্তি সংগ্রামের প্রতিও আমার দেশ সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। বঙ্গবন্ধু বলেন, বাংলাদেশ যে বিশ্বে বিশেষ করে উপমহাদেশে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি আন্তরিকভাবে কামনা করে তার প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত হলাে সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তি। বঙ্গবন্ধু বিশ্ব শান্তির দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং বিশ্ব শান্তি পরিষদের বর্তমান অধিবেশন বিশ্বে নিরাপত্তা, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য নতুন অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।৮৭
রেফারেন্স: ২৫ মে, ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত