ভাসানীর জবাবে মেনন
ঢাকা: ভাসানী-ন্যাপ প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর বিবৃতির জবাবে দলের প্রাক্তন প্রচার সম্পাদক জনাব রাশেদ খান মেনন বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন যে, আমরা কারাে কাঁধে সওয়ার হয়ে রাজনীতি করি না। একটি রাজনৈতিক আদর্শ ও মূলনীতিকে সামনে রেখে সুস্পষ্ট কর্মসূচির ভিত্তিতে রাজনীতি করার নীতিতে আমরা বিশ্বাসী। তিনি বলেন, ন্যাপ তার মূল আদর্শ থেকে বিচ্যুত হচ্ছে। তাই ন্যাপের হাজার হাজার কর্মী ও কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। মওলানা সাহেবের প্রতি আমাদের ব্যক্তিগত শ্রদ্ধা অটুট রেখেই বলতে চাই যে,তিনি যত বড় ব্যক্তিই হােক না কেন, তিনি পার্টির ঘােষণাপত্র ও গণতন্ত্রের পরিধির উর্ধ্বে নন এবং পার্টির সর্বোচ্চ সংস্থা কাউন্সিল অধিবেশন এড়িয়ে তিনি ব্যক্তিগত ইচ্ছাই আমাদের পার্টি ত্যাগ করা কিংবা অন্য পার্টি গঠন করতে বলতে পারেন না। তিনি আরও বলেন যে, আমরা মওলানা সাহেবের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে রাজনীতি করি না। আমাদের কিংবা মওলানা সাহেব সম্পর্কে কাউন্সিল চূড়ান্ত রায় প্রদান করবে। কাউন্সিল অধিবেশন না হওয়া পর্যন্ত এ সম্পর্কে কোন মন্তব্য থেকে বিরত থাকার জন্য তিনি মওলানা ভাসানীর প্রতি আবেদন জানান। দুইটি রাজনৈতিক দলের সদস্য সম্পর্কে জনাব রাশেদ খান মওলানা ভাসানীর প্রতি প্রশ্ন করেন যে, তিনি কেন ইতােপূর্বে আমরা ন্যাপের মূল কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় কিছু বলেননি এবং কিভাবে অতিসম্প্রতি তথাকথিত এডহক কমিটিতেও আমাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করলেন ?’ তিনি বলেন, ন্যাপের মূল আদর্শ ও সংগ্রামী চরিত্র রক্ষার জন্য আমরা সংগ্রাম করছি, এর বিরুদ্ধে মওলানা সাহেবের বিবৃতি আমাদের জনসাধারণের নিকট অত্যন্ত দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক প্রতিবাদ হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মওলানা সাহেব আমার সাংবাদিক সম্মেলনের প্রেক্ষিতে ৩০ বছর যাবত তথাকথিত বিপ্লবী নামধারী কমিউনিস্টদের তার ঘাড়ে সওয়ার হওয়ার অভিযােগ উত্থাপন করেছেন। কিন্তু সেই অভিযােগের লক্ষ্য বস্তু কারা সে সম্পর্কে তিনি কিছু উল্লেখ করেননি। বিপ্লবী নামধারী কমিউনিস্টরা তার কাঁধে না, তিনি তাদের কাঁধে সওয়ার হয়ে রাজনীতি করেন, সেটি একটি বিতর্কিত বিষয়। জনাব রাশেদ খান বলেন, আমার সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য কিংবা রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সমস্যা মীমাংসা করার জন্য কাউন্সিল অধিবেশন আহ্বান দাবী করা সম্পর্কে তিনি সম্পূর্ণ নীরবতা পালন করেছেন বরং দুর্ভাগ্যজনকভাবে মূল প্রশ্নসমূহ এড়িয়ে গিয়ে যে সমস্ত অবান্তর প্রসঙ্গ তুলেছেন তাতে রিকুইজিশন নােটিশে ও সাংবাদিক সম্মেলনে উত্থাপিত বক্তব্যকে জোরদার করে।৮১
রেফারেন্স: ২৩ মে, ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত