You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাণিজ্যিক সহযােগিতা ও সীমানা চিহ্নিতকরণ সম্পর্কে চুক্তি স্বাক্ষর

নয়াদিল্পি: বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীদ্বয় এই মর্মে আশা প্রকাশ করেন যে, উপমহাদেশে তিনটি দেশ সকল ক্ষেত্রে বিশেষ করে টেলিযােগাযােগ, বেসামরিক বিমান চলাচল, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযােগিতার ক্ষেত্রে উল্লেখযােগ্য স্বাভাবিক অবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এই ধরনের পারস্পরিক কল্যাণকর চুক্তি সম্পাদনের উপায় বের করার জন্য আলােচনা চলবে বলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫দিন ব্যাপী ভারত সফরশেষে গতকাল ঢাকা ও দিল্লি থেকে একযােগে প্রকাশিত এক যুক্ত ইশতেহারে জানা গেছে। দুই প্রধানমন্ত্রী ১৯৭৪ সালে ৯ই এপ্রিল সম্পাদিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তির পর উপমহাদেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার। সম্ভাবনা পর্যালােচনা করেন। তারা এই ব্যাপারে একমত পােষণ করেন যে, তিনটি সরকার এই চুক্তি সম্পাদনে যে পারস্পরিক সমঝােতা ও নিষ্পত্তির মনােভাব ব্যক্ত করেছেন তা করতে দেয়া উচিত নয়, বাস্তব ব্যবস্থার মাধ্যমে উপমহাদেশে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় উত্তম সম্ভাবনাকে আরাে জোরদার করা উচিত। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারত সফরশেষে এক যুক্ত ইশতেহারে স্বাক্ষর দান করেন। এই যুক্ত ইশতেহার একযােগে ঢাকা ও নয়াদিল্লিতে প্রকাশিত হয়েছে। নিম্নে যুক্ত ইশতেহারের পূর্ণ বিবরণ দেয়া হল:
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর আমন্ত্রণক্রমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মহামান্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১২ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত ভারত সফর করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বাণিজ্যমন্ত্রী খােন্দকার মােশতাক আহমদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হােসেন, পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান ড. নুরুল ইসলাম ও বাংলাদেশ সরকারের সিনিয়র কর্মকর্তাগণ ভারত সফর করেন।
১. বঙ্গবন্ধু নয়াদিল্লিতে অবস্থানকালে ভারতীয় রাষ্ট্রপতি শ্রী ভি ভি গিরির সাথে দেখা করেন এবং বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে তার সাথে মতামত বিনিময় করেন।
২. বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মহাত্মা গান্ধী ও পণ্ডিত জহুরলাল নেহরুর স্মৃতি সৌধ পরিদর্শন করেন এবং তাতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
৩. দুই প্রধানমন্ত্রী পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যাপারে বেশ কয়েকবার আলােচনা বৈঠকে মিলিত হন। অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে খােলাখুলিভাবে এবং পারস্পরিক আস্থার পরিবেশে এসব বৈঠক অনুষ্ঠিত এবং এতে দুটি দেশের দুই সরকার এবং জনগণের শক্তিশালী বন্ধুত্ব ও সমঝােতায় ফুটে ওঠে।
৪. বাংলাদেশ বাণিজ্যমন্ত্রী খােন্দকার মােশতাক আহমদ ভারতীয় বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে পৃথক পৃথক আলােচনা বৈঠকে মিলিত হন।
৫. বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হােসেন ও তার ভারতীয় প্রতিপক্ষের সাথে দ্বিপক্ষীয় বিষয়াদি ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলােচনা করেন।৫৫

রেফারেন্স: ১৬ মে, ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!