You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.28 | আনন্দময়ী কালীমূর্তি চূর্ণ-বিচূর্ণ: মসজিদসহ বহু সরকারি ইমারত ঘায়েল | ত্রিপুরা - সংগ্রামের নোটবুক

পাকিস্তান নহে, বর্বরস্থান: কালভৈরবের মুণ্ডচ্ছেদ
আনন্দময়ী কালীমূর্তি চূর্ণ-বিচূর্ণ: মসজিদসহ বহু সরকারি ইমারত ঘায়েল

আগরতলা, ২৮ এপ্রিল: ‘কায়েদী আজম বড় সাধ করিয়া তাঁহার ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের নাম রাখিয়াছিলেন পাকিস্তান”—যাহার বাংলা অর্থ হইল পবিত্রস্থান। সেই পাকিস্তান আজ কার্যত বর্বরস্থানে পরিণত হইয়াছে। পবিত্র ইসলাম ধর্মাবলম্বী পূর্ববঙ্গের জনৈক জজ (উচ্চ আদালতের বিচারক) বলিতেছেন ঐ রাষ্ট্রকে আর পাকিস্তান বলিয়া অভিহিত করিবেন না, ইহাতে ইসলাম ধর্মের ও ঐ ধর্মীয় ভাষার প্রতি অন্যায় ও অবিচার করা হয়। বলুন বরস্থান। যে যে ধর্ম আচরণ করে তাহাকে সেই ধর্মীয় নামেই অভিহিত করিতে হয়। তথা নির্বিশেষে, নির্বিচারে নারী, শিশু, বৃদ্ধ প্রভৃতি সকল বয়সের মানুষ মাত্রকেই হত্যা করা হইতেছে। হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ প্রভৃতি সকল ধর্মীয় মন্দির, মসজিদ, গীর্জা, মঠ সবকিছুই ধ্বংস করা হইতেছে। শুধু কি তাই! সরকার জঙ্গিরূপ পরিগ্রহ করিয়া তাহার নিজস্ব বহু মূল্যবান (কোটি কোটি টাকা খরচ করিয়া নির্মিত) সম্পদ সম্পত্তিও ভাঙ্গিয়া-চুরিয়া মিশাইয়া দিতেছে। কয়েকটি দৃষ্টান্ত দেওয়া হইতেছে- মেড্ডায় বিরাটকায় কালভৈরব মূর্তির মস্তকচ্ছেদ করিয়া মর্টারের সাহায্যে মূর্তির উদর বিদীর্ণ করিয়াছে। আনন্দময়ী কালী মূর্তিটাকে টুকরাে টুকরাে করিয়া পথের ধুলায় মিশাইয়াছে। চট্টগ্রামে কয়েকটি বৌদ্ধ ধর্ম মঠের চিহ্ন মাত্র রাখে নাই। ঢাকায় রমনা কালীবাড়ী এবং কয়েকটি মসজিদসহ বহু সরকারি প্রাসাদ ট্যাঙ্কের দ্বারা ধরাশায়ী করিয়াছে। শতকোটি টাকা খরচ করিয়া আয়ুব খান আশুগঞ্জে একটি বিশ্বগুদাম প্রস্তুত করিয়াছিলেন। যে মেঘনা গর্ভ হইতে ইহার উৎপত্তি ঘটানাে হইয়াছিল সেই মেঘনা গর্ভেই উহাকে বিলীন করিয়াছে ইয়াহিয়া খান।

সূত্র: ত্রিপুরা
২৮ এপ্রিল, ১৯৭১
১৪ বৈশাখ, ১৩৭৮