১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর প্রতি অনুকম্পা
নয়াদিল্লি: পাকিস্তান তার সশস্ত্র বাহিনীর অপরাধ ক্ষমা করার জন্য যে আবেদন জানিয়েছিল, বাংলাদেশ সরকার তা গ্রহণ করে ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর প্রতি ক্ষমা ঘােষণা করেছেন। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, বাংলাদেশ সরকার গণহত্যা এবং অন্যান্য অপরাধের জন্য ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দিকে বিচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পাকিস্তানও গত বছর ২৮ আগস্ট স্বাক্ষরিত দিল্লি চুক্তি মােতাবেক ৩ শ্রেণির অনির্দিষ্ট সংখ্যক পাকিস্তানি নাগরিককে ফিরিয়ে নিতে রাজী হয়েছেন। এবং বাংলাদেশের সাথে পারস্পরিক আলােচনার মাধ্যমে অন্যান্য অবাঙালিকেও পাকিস্তান নিতে পারে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জনাব ভুট্টো অতীতের ভুলভ্রান্তিকে ক্ষমা করে দেয়ার ও ভুলে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আজীজ আহমদ ও বাংলাদেশে পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর অপরাধের নিন্দা করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘােষণার কথাও কৃতজ্ঞতা সহকারে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়। এতে তিনি অতীতকে ভুলে গিয়ে নতুন করে যাত্রা শুরু করার জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, বাঙালিরা ক্ষমা করতে জানেন। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক যুদ্ধাপরাধের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শনের এই মহানুভবতা গত ৯ এপ্রিল ঐতিহাসিক দিল্লি চুক্তিতে ব্যক্ত করা হয়েছে। ভারত পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের ৫ দিন ব্যাপী আলােচনা শেষে এই ত্রিপক্ষীয় চুক্তিটি সম্পাদন করা। হয়। বিকালে ঢাকা নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ থেকে এই চুক্তির পূর্ণ বিবরণ প্রকাশ করা হয়।৩৩
রেফারেন্স: ১০ এপ্রিল, ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত