বিশ্ব ব্যাংকের উন্নয়নের জন্য সাহায্য লাভের চেষ্টা করা উচিত
ঢাকা: সােভিয়েত ইউনিয়ন থেকে চলতি সালে জ্বালানি, কৃষি-যন্ত্রপাতি, মেশিন, টুলস, এবং কয়েকটি ভারী শিল্প স্থাপনের জন্য সাহায্য পাওয়া যাবে বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করেন। অবশ্য রাশিয়া এছাড়াও চলতি সনে বাংলাদেশকে দুই লক্ষাধিক টনের বেশি খাদ্যশস্য সরবরাহ করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। খাদ্যের ব্যাপার এখন পর্যন্ত রাশিয়ার নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরােধ জানানাে হয়নি। রাশিয়া এ বছর কয়েক মিলিয়ন টন অতিরিক্ত খাদ্য শস্য উৎপাদন হবে। কাজেই রাশিয়া স্বভাবতই বাংলাদেশকে সাহায্য হিসেবে কয়েক লক্ষ টন খাদ্য সরবরাহ করতে সমর্থ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাশিয়া বাংলদেশকে তুলা ও সিমেন্ট সরবরাহ করতে পারবে না বলে জানা গেছে। এই অবস্থায় সােভিয়েত নেতৃবৃন্দের সাথে মস্কোয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর আলােচনার ফলে সাহায্যের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেলেও বিপুল পরিমাণ পণ্যদ্রব্য লাভের আশা করা ঠিক হবে না। তবে রাশিয়া দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে কৃষি ও শিল্পে ব্যবহারযােগ্য যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে পাঁচসালা পরিকল্পনা যথেষ্ট সাহায্যদান করতে পারে। কিন্তু এই সাহায্য গ্রহণ করার ব্যাপারে এই অসুবিধা দেখা দেবে যে পণ্যদ্রব্য সরবরাহ করা না হলে শিল্প কারখানা স্থাপন করা সম্ভব হবে না। বিদেশ থেকে যন্ত্রপাতি আনার পর দেশে যদি সিমেন্ট, কয়লা, ইস্পাত, দ্রব্য, জ্বালানি ইত্যাদি পাওয়া না যায় তাহলে ফ্যাক্টরী স্থাপন করা সম্ভব হবে না। তাই বাংলাদেশকে শুধু যন্ত্রপাতি পেলেই হবে না, কাঁচামাল এবং পণ্য দ্রব্যাদিও পেতে হবে। কাজেই বাংলাদেশকে সাহায্যের জন্য বিশ্ব ব্যাংক কনসর্টিয়ামকে এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করা প্রয়ােজন। অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে অপছন্দ করলেও দেশে উন্নয়নের স্বার্থে বিশ্ব ব্যাংকে সাহায্য কনসর্টিয়াম গঠনের জন্য আমাদের অর্থমন্ত্রী বিশ্ব ব্যাংকে নাইরােবি এবং আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের রােম সম্মেলনে যােগ দিয়েছেন। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে উন্নয়ন প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের সাহায্য লাভের জন্য জোরদার প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে।২৮
রেফারেন্স: ৯ এপ্রিল, ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত