You dont have javascript enabled! Please enable it! 1974.04.08 | চলতি সালেই ৩৬০ কোটি টাকার খাদ্যশস্য আমদানি করতে হবে- তাজউদ্দীন আহমদ | দৈনিক আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

চলতি সালেই ৩৬০ কোটি টাকার খাদ্যশস্য আমদানি করতে হবে

গােসাইরহাট, ফরিদপুর: অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ আজ এখানে বলেছেন যে, শুধু চলতি সালের খাদ্য ঘাটতি পূরণের জন্য সরকারকে খাদ্যশস্য আমদানির জন্য ৩৬০ কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে। অর্থমন্ত্রী এখানে কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের শাখা উদ্বোধনকালে বলেন, মূল বাজেটে খাদ্যশস্য আমদানি বিলে যে পরিমাণ অর্থ মঞ্জুর করা হয়েছিল তার চাইতে তিনগুণ বেশি অর্থে খাদ্যশস্য আমদানি করতে হবে। ১৯৭৩-৭৪ আর্থিক বছরে খাদ্যশস্য আমদানির জন্য মূল বাজেটের মাত্র ১২০ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছিল। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন যে, সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য ৫৫০ কোটি টাকার ব্যয়ের চেয়ে যে প্রস্তাব রয়েছে সে ব্যয়ের দুই তৃতীয়াংশেরও অধিক অর্থ খাদ্যশস্য আমদানিতে ব্যয় হয়ে যাবে। তাছাড়া রেশন ও ভর্তুকি হারে খাদ্যশস্য বিতরণ করায় ১৯৭২ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি সালে ৩০ জুন পর্যন্ত সরকারকে প্রায় ১৭০ কোটি টাকার ক্ষতি মেনে নিতে হচ্ছে। একই সময়ের মধ্যে কৃষকদের মধ্যে ভর্তুকি হারে। রাসায়নিক সার বিতরণ করার ফলে সরকারকে ৫০ কোটি টাকা লােকসান দিতে হয়েছে। জনাব তাজউদ্দীন আহমদ বলেন সারা বিশ্ব জুড়ে খাদ্যশস্যের মূল্য ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে বলেই মঞ্জুরীকৃত অর্থের দ্বিগুণ বেশি অর্থে খাদ্যশস্য আমদানি করতে হচ্ছে। খাদ্যশস্যের মূল্য বৃদ্ধির দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় ৮৪০ টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ১ টন চাল ক্রয় করা যেত, বর্তমানে ১ টন চালের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২শত টাকায়। অনুরূপভাবে ১৯৭২ সালে ১ টন গমের মূল্য ছিল ৭২০ টাকা। আর এখন তা হয়েছে ২ হাজার টাকা। অর্থমন্ত্রী বলেন, এ যাবৎ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এই অতিরিক্ত খরচ মিটানাে হয়েছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার ফলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছিল। আর এই কারণেই চলতি সালের জন্য দেশের সবগুলাে উন্নয়ন প্রকল্পে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কঠোর পরিশ্রম ও ব্যাপক উৎপাদনই এই সমস্যা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ বলে অর্থমন্ত্রী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, দুষ্কৃতিকারীদের কাছ থেকে বেআইনী অস্ত্র উদ্ধারের জন্য অবিলম্বে অভিযান চালানাে উচিত এবং আইন প্রয়ােগকারী সংস্থা ছাড়া আর কোন সংস্থার কাছে যেন অস্ত্র থাকতে না পারে সে ব্যাপারে সরকারের কঠোরতম ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
আবদুর রাজ্জাক: আওয়ামী লীগের অস্থায়ী সাধারণ সম্পাদক জনাব আবদুর রাজ্জাক অনুষ্ঠানে ভাষণ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হত্যাকান্ডের ব্যাপারে নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবী করেন।
তােফায়েল আহমদ: প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব জনাব তােফায়েল আহমদ উক্ত অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে অবিলম্বে গুপ্তহত্যা ও সন্ত্রাস বন্ধ করার আহ্বান জানান।২৫

রেফারেন্স: ৮ এপ্রিল, ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত