You dont have javascript enabled! Please enable it!

ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে একটি পদক্ষেপ

নয়াদিল্লি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হােসেন ও ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার শরণ সিং এই মর্মে আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী ৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য ত্রিপক্ষীয় বৈঠক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ উপমহাদেশ তথা এই অঞ্চলের দীর্ঘ স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে একটি পদক্ষেপ। ড. কামাল হােসেন ভারতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক-পূর্ব পরামর্শের উদেশ্যে আজ নয়াদিল্লি পৌছে বিমান বন্দরে সাংবাদিকদের কাছে উক্ত আশা প্রকাশ করেন। ড. কামাল হােসেন বলেন, যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিচারের জন্য তালিকাভুক্ত ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের উদেশ্যে দিল্লি চুক্তি মােতাবেক যে আলােচনা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তা অতীব গুরুত্বপূর্ণ এবং এই আলােচনায় উপমহাদেশে শান্তির নব-দিগন্ত সূচনা করবে বলে আশা করা যায়। আলােচনার ক্ষেত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হলে ড. কামাল হােসেন বলেন, এতদঞ্চলের শান্তির ও সম্পর্কের উন্নতি বিধান করে যে কোন বিষয় নিয়ে আলােচনা করা যেতে পারে। আলােচনা কিরূপ হবে এই মর্মে এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, এই সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছুই বলা যায় না তবে উপমহাদেশের শান্তির জন্য এই আলােচনা একটি সক্রিয় পদক্ষেপ। আলােচনায় ১৯৫ জন যুদ্ধবন্দি সম্পর্কে সন্তোষজনক সমাধান হবে কিনা এই মর্মে অপর এক প্রশ্নের উত্তরে ড. কামাল হােসেন বলেন, দেখা যাক আলােচনা কেমন ভাবে এগােয়।
চীনের ভূমিকা: আলােচনায় দায় ও সম্পদের প্রশ্ন তােলা হলে চীন জাতিসংঘে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিতে বাধা দেবে এই সংবাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ড. কামাল হােসেন বলেন, আমরা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলােচনা করবাে। তবে বাংলাদেশ জাতিসংঘে তার ন্যায্য আসন অধিকার করতে সক্ষম হবে বলেই আমরা আশা করি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার শরণ সিং বলেন, আগামী ৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে সেসব বিষয়ে আলােচ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেসব বিষয় নিয়ে তিনি ড. কামাল হােসেনের সাথে আলােচনা করেন। সর্দার শরণ সিং ড. কামাল হােসেনকে আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত জোটনিরপেক্ষ দেশের ব্যুরাে বৈঠক সম্পর্কে অবহিত করবেন।
ঢাকা বিমান বন্দরে: ইতােপূর্বে নয়াদিল্লির উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগের প্রাক্কালে ড. কামাল। হােসেন সাংবাদিকদের বলেন যে, ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের কোনাে সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। কাজেই যতক্ষণ প্রয়ােজন ততক্ষণই বৈঠক চলতে পারে। প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধীর সময় হলে তার সাথেও সাক্ষাৎ করবেন বলে ড. কামাল হােসেন জানান।৬

রেফারেন্স: ২ এপ্রিল, ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!