You dont have javascript enabled! Please enable it! 1974.03.29 | স্বাধীনতাবিরােধী অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরােধ গড়ে তুলুন- শেখ ফজলুল হক মণি | বাংলার বাণী - সংগ্রামের নোটবুক

স্বাধীনতাবিরােধী অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরােধ গড়ে তুলুন

ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী যুব লীগ প্রেসিডিয়ামের চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদসহ বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াশীল চক্র স্বাধীনতার বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। স্বাধীনতাবিরােধী অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরােধ গড়ে তােলার জন্য তিনি যুবলীগ কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। স্থানীয় হেমায়েত উদ্দিন মাঠে তিনি বরিশাল জেলা যুবলীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ভাষণ দিচ্ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পানি ও বিদ্যুৎ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রী জনাব আবদুর রব সেরনিয়াবাত দ্রব্যমূল্যের পরিপ্রেক্ষিতে ‘এনটি হােরডিং পলিসি’ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সরকার শুধু অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নয় বহির্বিশ্বের রাজনীতিতেও ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আলজিয়ার্স জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে যােগদান এবং পাকিস্তানের স্বীকৃতিতে বাংলাদেশের বিজয় সূচিত হয়েছে। সরকারের মধ্যে একটি অংশের দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে শেখ মণি বলেন, সরকারের নাম করে যারা দুর্নীতি করছে যুবলীগ তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যাবে। তিনি বলেন জাতীয় সমস্যাকে মােকাবেলা করতে দেশের যুবসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। যুবলীগ প্রধান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দেশের ভেতরে যে নতুন শােষকের সৃষ্টি হচ্ছে, তাদেরকে যে কোনাে মূল্যে রুখতে হবে। এদের উৎখাত করতে যুবলীগের নেতৃত্বে দেশের যুব শক্তিকে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। জাসদ এর ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা করে শেখ মণি বলেন, স্বাধীনতার অর্থ স্বেচ্ছাচারিতা নয়। জাসদকে তিনি নব্য ফ্যাসিবাদী বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যারা কথা বলবে, তাদের কাউকেই ক্ষমা করা হবে না। অস্ত্রের ভাষা পরিহার করে গণতান্ত্রিক দায়িত্বশীলতার সাথে কথা বলার জন্য তিনি জাসদ নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান। এক শ্রেণির টাউট ব্যবসায়ীদের কথা উল্লেখ করে যুবলীগ প্রধান বলেন, যুবলীগ এদের নির্মূল করবে। পরিকল্পনা কমিশনের সমালােচনা করে শেখ মণি বলেন, কমিশনের কর্তাব্যক্তিদের অনেকেই দেশের মূল সমস্যা সম্পর্কে অবহিত নন। তিনি বলেন, এই অস্বাভাবিক অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যেও দেশের কৃষক শ্রমিকরা উৎপাদন বৃদ্ধির কাজে নিয়ােজিত রয়েছে। তারা সরকারকে সাহায্য করছে। কমনওয়েলথ রিপাের্টের উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের উৎপাদন শতকরা ৩০ ভাগ বেড়েছে।
সেরনিয়াবাত: বন্যা পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়নমন্ত্রী জনাব সেরনিয়াবাত সভায় প্রধান অতিথির ভাষণদান প্রসঙ্গে আরও বলেন যে, দেশের এক শ্রেণির লােকের মধ্যে রাতারাতি ধনী হবার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এদের রুখে দাঁড়াবার জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি একটি রাজনৈতিক গােষ্ঠীর আইন ভঙ্গের কঠোর সমালােচনা করেন।
সৈয়দ আহমদ: যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব সৈয়দ আহমদ বলেন, যারা উৎপাদন ব্যবস্থা ব্যাহত করতে চায়, রাজনীতির নামে অস্ত্রের হুমকি দিয়ে যারা অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতা দখল করতে চায় যুবলীগ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরােধ গড়ে তুলবে। তিনি বলেন, যুবলীগ দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দরিদ্রতা, মজুতদার ও মুনাফাখােরদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে।১১৩

রেফারেন্স: ২৯ মার্চ, ১৯৭৪, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত