কৃষক সমিতির সম্মেলনে সােভিয়েত প্রতিনিধি
বগুড়া: বাংলাদেশের কৃষক সমিতির সম্মেলনের দ্বিতীয় দিবস আজ অতিবাহিত হলাে। আজকের অনুষ্ঠানে ছিল সকালে প্রতিনিধি সম্মেলন ও বিকেলে আলােচনা সভা। প্রতিনিধি সম্মেলনে ভাষণ দান প্রসঙ্গে সােভিয়েত প্রতিনিধি দলের নেতা মি, গুচিকভ আশা প্রকাশ করে বলেছেন, নানাবিধ সমস্যা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের কৃষকরা যে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, তাতে আগামী দিনে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক মুক্তির চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌছবেই। তার দেশের কৃষকদের সামনে যে সমস্যা রয়েছে তা সােভিয়েত ইউনিয়নেও ছিল। সততা, নিষ্ঠা, কঠোর শ্রমের মাধ্যমে আমরা তা কাটিয়ে উঠেছি। বুলগেরিয় প্রতিনিধিদলের নেতা মি. গারডন কুসটপ অনুষ্ঠানে ভাষণ দান করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও বুলগেরিয়ার জনগণের লক্ষ্য অভিন্ন। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি এবং রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন সমাজ গড়া। এ সমাজের মূলে থাকবে সামাজিক ন্যায়বিচার। তিনিও আশা প্রকাশ করেন যে, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশে সােনার বাংলা গড়ে উঠবে। জার্মান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র থেকে আগত প্রতিনিধি দলের নেতা মি. হাবার্ড হুইপ বলেছেন, বাংলাদেশে এবং জিডিআর-এর মৈত্রী, শান্তি ও সামাজিক প্রগতির লক্ষ্যে সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে আমাদের যৌথ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আরাে সুপ্রতিষ্ঠিত হতে হবে। সকালের এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কমরেড মণি সিং। বিকেলে এই আলােচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলােচ্য বিষয় ছিল ‘অধিক খাদ্য ফলাও’ সবুজ বিপ্লব, সমবায় ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ’। আলােচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ কৃষি বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক জনাব মাে. মুজতবা আলী, উপপরিচালক জনাব আবদুল হালীম, কৃষি বিভাগীয় প্রশিক্ষক জনাব ফজলুর রহমান ও বিদেশি প্রতিনিধিবৃন্দ। জনাব মুজতবা আলী তার ভাষণে। বলেন, বক্তৃতা আর স্লোগান দিয়ে সবুজ বিপ্লব বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। কৃষকরা যেখানে বিচ্ছিন্ন সেখানে সবুজ বিপ্লব সহজসাধ্য নয়। এর বাস্তবায়নের জন্য প্রয়ােজন কৃষকদের সংগঠিত করা এবং এদের প্রয়ােজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া।৩৬
রেফারেন্স: ৯ মার্চ, ১৯৭৪, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত