পরিবার পরিকল্পনাকে গণআন্দোলনে রূপান্তরিত করতে হবে
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা দফতরের মন্ত্রী জনাব আবদুল মান্নান বলেন যে, দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ভয়াবহ হার রােধ করতে না পারলে কোন উন্নয়ন পরিকল্পনা কাজে আসবে না। সে বিষয়ে সরকার সচেতন রয়েছে এবং এই ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সকল প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে সচেতন হয়ে পরিকল্পনা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শুধু সরকারি কর্মসূচির মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে পরিবার পরিকল্পনাকে একটি গণ আন্দোলনে রূপান্তরিত করা প্রয়ােজন। এ ব্যাপারে জনমত গড়ে তােলার জন্য সংবাদপত্রের সহযােগিতা কামনা করেন। তিনি বুধবার সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তৃতা করছিলেন। জনাব মান্নান বলেন, স্বাধীনতার পর জনসংখ্যার বৃদ্ধি সমস্যাকে নতুন দৃষ্টিতে বিচার করা হচ্ছে এবং প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে সমস্যার ভয়াবহতা অনুধাবনের চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার দৃঢ় আস্থার সাথে সমন্বিত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এক এক জন কর্মী ৪ হাজার লােককে স্বাস্থ্য কার্ড এবং ৭ শত দম্পতিকে দম্পতি কার্ড প্রদান করবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান যে, দেশে সন্তান উৎপাদনে সক্ষম দেড় কোটি দম্পতি আছে। কর্মীরা রেজিস্ট্রেশনের পর দম্পতি ও অন্যান্যদের প্রয়ােজনীয় পরামর্শ দেবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পূর্বে পরিবার পরিকল্পনা খাতে ৮ বছরে মাত্র ২১ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। তাছাড়া স্বাস্থ্যখাতের অর্থও পরিবার পরিকল্পনার কাজে ব্যবহৃত হবে। তিনি জানান যে, লাইগেশন করার জন্য দেশের প্রতিটি হাসপাতালে বেড রিজার্ভ রাখা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপাতত গর্ভপাত বৈধ ঘােষণা করা হবে না। কারণ দেশের জনসংখ্যার শতকরা ৮৫ ভাগ মুসলমানকে অসন্তুষ্ট না করে জনমত গঠনের মাধ্যমে জন্ম নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিকে সফল করা সম্ভব হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। জনাব আবদুল মান্নান বলেন যে, বাংলাদেশেও জনবর্ষ উত্যাপন উপলক্ষে নিজস্ব কর্মসূচি ছাড়াও ত্রৈমাসিক প্রচার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।১৮
রেফারেন্স: ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত