জাতীয় সংসদে প্রতিমন্ত্রী তাহের উদ্দিন ঠাকুরের তথ্য প্রকাশ
জাতীয় সংসদ: জাতীয় সংসদের অধিবেশনে কোন রকম সংশােধন ছাড়াই তিনটি বিল কণ্ঠভােটে গৃহীত হয়েছে। বিল তিনটি হলাে দুর্নীতি দমন (সংশােধনী) বিল ১৯৭৪, স্পেশাল পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট (বাতিল) বিল ১৯৭৪ এবং পাইলটেজ (সংশােধনী) বিল ১৯৭৪। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদের অস্থায়ী স্পীকার জনাব মােহাম্মদ বায়তুল্লা। উল্লেখযােগ্য যে, স্বতন্ত্র সদস্য শ্রী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা কর্তৃক দুর্নীতি দমন (সংশােধনী) বিলের ওপর জনমত যাচাইয়ের একটি জনমত প্রস্তাব সংসদে কণ্ঠভােটে বাতিল হয়ে যায়। দুর্নীতি দমন (সংশােধনী)। বিল ১৯৭৪ এর উপর ভাষণ দানকালে বিলের উত্থাপক ও বেতার দফতরের প্রতিমন্ত্রী জনাব তাহের উদ্দিন ঠাকুর সংসদে জানান, দুর্নীতি দমন বিভাগে ১০ হাজার ২শত ৯টি দুর্নীতির মামলা রয়েছে। তিনি বলেন, এর মধ্যে ২ হাজার ৪শ ৬৯ টি মামলা আদালতে বিচারাধীন ও চার্জশীট দেয়া হয়েছে এবং ১ হাজার ৭শত ৭০ টি মামলা সরাসরি তদন্তের জন্য হাতে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যকে সামনে রেখেই বিলটির প্রয়ােজনীয় সংশােধনী আনা হয়েছে। তিনি আরাে বলেন, বিলটিতে যে সংশােধনী আনা হয়েছে, তা বড় রকমের নয়— সামান্য সংশােধনী যা দরকার ছিল। জনাব ঠাকুর বলেন, দুর্নীতি দমন বিভাগকে দুর্নীতির উর্ধ্বে রাখার জন্য দেশের প্রত্যেকটি সৎ দেশপ্রেমিক নাগরিকদের মনের দাবী এবং তা পূরণের জন্যই বিলটিতে সংশােধনী আনার প্রয়ােজন দেখা দিয়েছিল। তিনি বলেন, সরকার দেশের মােটামুটিভাবে দুর্নীতি দমন করতে পেরেছে। তবে গােটা সমাজব্যবস্থা ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্নীতি দমনের কাজে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, সরকার এককভাবে দুর্নীতি দমন করতে পারবেন বলে বিশ্বাস করে না। এ প্রসঙ্গে জনাব ঠাকুর দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ তীব্র ঘৃণা ও বিদ্বেষ প্রচার করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি সমাজকে দুর্নীতি মুক্ত করার জন্য প্রত্যেককে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরােপ করেন।৫৭
রেফারেন্স: ১৬ জানুয়ারি ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত