You dont have javascript enabled! Please enable it!

রাজনৈতিক স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার জন্য স্বনির্ভর অর্থনীতি গড়তে হবে- তাজউদ্দীন আহমদ

অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বলেন যে, দেশের আপামর জনসাধারণের কল্যাণে রাজনৈতিক স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার জন্য স্বনির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে এবং এই উদ্দেশ্যে আমাদের সকল প্রচেষ্টা নিয়ােগ করতে হবে। মন্ত্রী ইন্সটিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স-এর বার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধনী ভাষণে আরও বলেন যে, শিল্প ও অন্যান্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কঠোর পরিশ্রম প্রয়ােজন। তিনি বলেন, রাতারাতি কোনাে সমস্যার সমাধান হয় না। বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের প্রতিফল হিসাবে দেশ আজ বহু সমস্যার সম্মুখীন। সরকার এই সমস্যা সমাধানের জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছেন। ডিপ্লোমাধারী ইঞ্জিনিয়ারদের দাবির উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন যে, নতুন বেতনের হার ও স্তর নির্ণয়ের ব্যাপারে সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন দাবি বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। জনাব তাজউদ্দীন আহমদ ডিপ্লোমাধারী ইঞ্জিনিয়ারদের দাবিসমূহ বিবেচনা করে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন। তিনি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের অন্যান্য জাতীয় স্বার্থের প্রতি দৃষ্টি রেখে তাদের দাবি বিবেচনার জন্য আহ্বান জানান। সম্মেলনের উদ্বোধনী দিবসে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জনাব মাে. জাফরুল হাসান অভিযােগ করেন বেতন কমিশনের সুপারিশ একমাত্র ২২০৮ টি স্কেল ভেঙ্গে ১০ টি স্কেলে পরিণত করা ছাড়া আর যা রয়েছে, তা সব বস্তাপচা পরস্পর বিরােধী অর্থবােধক শব্দ সমষ্টি ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি প্রশ্ন করেন, কী করে জাতীয় জীবনে এত বড় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপকে তাড়াহুড়া করে গােজামিল দিয়ে ‘গণ বিরােধী চরিত্রের একটি বেতন কমিশন সুপারিশ বাস্তবায়িত করা হল? জনাব হাসান বলেন, জাতীয় বেতন কমিশনের সুপারিশ ১০ গ্রেড হতে ৬ষ্ঠ গ্রেড পর্যন্ত একটি অভিজাত শ্রেণি ও ৫ম হতে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত একটি জন্মগত কৃত্রিম অভিজাত শ্রেণি তৈরির অপচেষ্টা রয়েছে। তিনি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ৬ দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান। অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ আলােচনার জবাবে ১০ ঘণ্টা ১২ মিনিটকাল যাবৎ পে স্কেলের সমর্থনে বিভিন্ন বক্তব্য পেশ করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন যে, কমিশনের সুপারিশ ‘গণবিরােধী কিনা তা বিচার সাপেক্ষ, তবে তাড়াহুড়া করে সকলের গ্রহণযােগ্য স্কেল করা কঠিন। কাজ। স্কেল তৈরির ব্যাপারে আরও সময় গ্রহণ করা উচিত ছিল বলে তিনি মন্তব্য করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন যে, ১০ম গ্রেড পর্যন্ত পে-স্কেল বাস্তবায়নের জন্য ৪০ কোটি টাকা দরকার। তিনি বলেন যে, দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল না হলে বেতন বৃদ্ধিতে কাজ হবে না। দ্রব্যমূল্যের ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা আনতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। ২২০৮টি স্কেলকে ১০টিতে আনার প্রশ্নে জনাব তাজউদ্দীন বলেন, বিপদজনক ফাটল ধরা দেয়ালে চুনকাম করলে চলে না। তা ভেঙে ফেলে নতুন দালান নির্মাণ করা ভালাে। ক্রাশ প্রােগ্রাম গ্রহণের পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেন।৬৮

রেফারেন্স: ২৫ ডিসেম্বর ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!