You dont have javascript enabled! Please enable it!

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় বলেন যে, ভারতের সাথে মৈত্রী ও সহযােগিতা অব্যাহত থাকবে এবং যারা এই দুদেশের সম্পর্ককে বিষিয়ে তােলার চেষ্টা করছে তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়া হবে। বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় জাতীয় দিবস পালন উপলক্ষে ঢাকায় অবস্থানকারী ভারতীয় সাংবাদিকদের সাথে এক সাক্ষাৎকারে আরাে বলেন, দুটি সার্বভৌম দেশের জনগণ ও সরকারের মধ্যে উত্তম সম্পর্ক ও বাস্তব সমঝােতা রয়েছে। সুতরাং ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব আরাে বৃদ্ধি পাবে। দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অবনতি দেখা দিয়েছে বলে প্রকাশিত খবর সম্পর্কে মন্তব্য করার অনুরােধ করা হলে বঙ্গবন্ধু বলেন, এটা সত্য বলে আমি মনে করি না। যদি তাই হতাে এবং যদি আমাদের জনগণ ভারত বিরােধী হতাে তাহলে ১৯৭৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে জনগণ ব্যাপকভাবে আমাদের পার্টির পক্ষে ভােট দান করতাে না। আমি তাদের বলছি, ভারত আমাদের সত্যিকারের বন্ধু, আমাদের এই বন্ধুত্ব অব্যাহত থাকবে। তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক প্রশ্নে বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে সকল দেশের সাথে বন্ধুত্ব কামনা করে। কিন্তু তা আমাদের আত্মমর্যাদার বিনিময়ে নয়। বাংলাদেশ চীনের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য বারবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও পিকিং কেন এই ব্যাপারে সাড়া দিচ্ছে না, এই মর্মে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি চীনের মনােভাব নিয়ে কোনাে মন্তব্য করতে চাই না। তবে আমাদের ভূমিকা পরিষ্কার। তিনি ভারত মহাসাগরে বৃহৎ শক্তিগুলির নৌবহর সমাবেশ সম্পর্কে প্রকাশিত খবরের ওপর এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, বাংলাদেশ চায় ভারত মহাসাগর শান্তি এলাকা হিসেবে থাকুক এবং আমরা যে কোনােরূপ পরিস্থিতিতে এই দাবি জানিয়ে যাবাে। বঙ্গবন্ধু বলেন, “যখন আমার প্রত্যেকটি মানুষ পর্যাপ্ত খাবার পাবে এবং তাদের মুখ হাসিতে ভরে উঠবে ঠিক তখনই আমি পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি লাভ করবাে।” দেশের সর্ববৃহৎ সমস্যা কি এই মর্মে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এটা হচ্ছে দারিদ্র্য ও আমরা তার সমাধান করতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু এতে সময়ের প্রয়ােজন।” বঙ্গবন্ধু আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে অপর এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, চলতি মাস শেষে দেশে ৪ হাজার ৩শত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষে সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়ে যাবে। বেলুচিস্তানের গােলযােগ সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেন, “আমরা বিশ্বের নির্যাতিত জনগণের সাথে রয়েছি। আমরা যেখানেই শােষণ দেখবাে, সেখানেই আমাদের কণ্ঠ সােচ্চার হয়ে উঠবে।” তিনি বলেন, বাংলাদেশ আন্তরিকভাবে আরবদের ন্যায্য সংগ্রামের প্রতি সমর্থন করেছে।৪১

রেফারেন্স: ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!