ভারত-সােভিয়েত যুক্ত ঘােষণায় বাংলাদেশকে অবিলম্বে জাতিসংঘভুক্ত করে নেয়ার আহ্বান
নয়াদিল্লি। আজ এখানে প্রকাশিত ভারত-সােভিয়েত যুক্ত ঘােষণা বাইরের কোনােরূপ হস্তক্ষেপ ছাড়া উপমহাদেশের সংশ্লিষ্ট দেশগুলাের মধ্যে (ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ) আলােচনার মাধ্যমে অমীমাংসিত বিরােধসমূহের নিষ্পত্তির আহ্বান জানানাে হয়। সােভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টি প্রধান লিউনেদ ব্রেজনেভের ৫ দিনব্যাপী এক সরকারি সফর শেষে এখানে এই যুক্ত ঘােষণা প্রকাশিত হয়। মিসেস গান্ধী ও মি. ব্রেজনেভের এই ঘােষণায় অবিলম্বে বাংলাদেশকে জাতিসংঘভুক্তির আহ্বান জানান এবং এই মর্মে আশা প্রকাশ করেন যে, পাকিস্তান অদূর ভবিষ্যতে নয়া জাতিকে স্বীকৃতি দান করবে। এই যৌথ ঘােষণায় মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি স্থাপনের কল্যাণে অধিকৃত এলাকা থেকে ইসরাইলী সৈন্য প্রত্যাহার এবং ভিয়েতনাম থেকে যথাযথ বাস্তবায়নেরও আহ্বান জানানাে হয়। যৌথ ঘােষণায় বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ও জনাকীর্ণ অংশ এশিয়া মহাদেশে সকল রাষ্ট্রের সাধারণ প্রচেষ্টার মাধ্যমে শান্তি স্থিতিশীলতা জোরদার এবং পারস্পরিক কল্যাণকর সহযােগিতাকে আরাে জোরদার করার জন্য সুপারিশ করা হয়। যৌথ ঘােষণায় আরাে বলা হয় যে, যাতে এই এলাকার জনগণ শান্তি ও সৎ প্রতিবেশীসুলভ পরিবেশে বসবাস করতে পারে এবং তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে পারে তজ্জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করা উচিত। তবে এই যুক্ত ঘােষণায় যৌথ এশিয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে কোনাে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। উভয় নেতা ভারত ও সােভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আরাে গভীর ও শক্তিশালী করে তােলার জন্য সিদ্ধান্ত নেন এবং এই উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি সম্পাদন করেন। দিনব্যাপী এই সফরকালে নয় ঘণ্টা যাবৎ শীর্ষ বৈঠকের অন্যতম ফল হচ্ছে ভারত ও সােভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে ১৫ বছর মেয়াদী আরাে একটি অর্থনৈতিক সহযােগিতা চুক্তি। ভারি শিল্পক্ষেত্রে ভারত-সােভিয়েত অর্থনৈতিক সহযােগিতা জোরদার ও বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য অপর একটি প্রটোকল চুক্তি মূল চুক্তির সাথে যুক্ত করা হয় বলে যৌথ ঘােষণায় উল্লেখ করা হয়। এছাড়া আরাে দুটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে।৮৬
রেফারেন্স: ৩০ নভেম্বর ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ