চীনা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরােধ গড়ে তুলুন
বাংলাদেশ আওয়ামী যুব লীগের প্রেসিডিয়ামের চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি উপমহাদেশের ৩টি দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে প্রতিষ্ঠিত দিল্লি চুক্তিকে নস্যাৎ ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে চীনা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরােধ গড়ে তােলার জন্য নবগঠিত ত্রিপক্ষীয় ঐক্যজোটের নেতৃবৃন্দকে অবিলম্বে কার্যকর কর্মসূচি গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। শেখ মণি সকালে কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত শহর শাখা আওয়ামী যুব লীগের কার্যকরি কমিটির সভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আওয়ামী যুব লীগের সভাপতি জনাব মােস্তফা মােহসীন মন্টু। তিনি বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরাজয় বরণ ও সৈন্য প্রত্যাহারের পর চীন সমগ্র এশিয়াতে তাদের মাতব্বরী খাটানাের জন্য প্রভাব বাড়াতে চাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, চীন এই অবস্থার সুযােগ নিয়ে এশিয়া তথা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলাের মধ্যে উত্তেজনা জিইয়ে রাখতে চাচ্ছে। জাতিসংঘে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির কথা উল্লেখ করে শেখ মণি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম হিসাবে ১১০টি দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে এবং সব রকম বিরােধিতা সত্ত্বেও জাতিসংঘে যােগ্য আসন লাভ করতে সক্ষম হবে। তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করার জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির জন্য দুরভিসন্ধিমূলক খেলায়। মেতে উঠেছে। এ ব্যাপারে তাদের স্থানীয় এজেন্টরা বাংলাদেশকে সমস্যাসঙ্কুল করে তােলার জন্য চীনে যাচ্ছে এবং সেখান থেকে টাকা পয়সা আর চীনা নেতাদের নির্দেশ নিয়ে ফিরে আসছে। আজ দেশে যে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা চীনা প্রভুদের নির্দেশেই দেশের অভ্যন্তরীণ এজেন্টরা করছে। ওইসব চীনা চরেরা তথাকথিত বামপন্থী দলের নাম ধারণ করে বাংলাদেশ বিরােধী কার্যকলাপে লিপ্ত। সভায় বাংলাদেশ বিরােধীদের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরােধ গড়ে তােলার প্রয়ােজনীয়তার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। শেখ মণি ত্রিদলীয় ঐক্যজোটভুক্ত দলগুলােকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, বিরােধীদের বিরুদ্ধে পাল্টা শক্তি হিসাবে বড় রকমের কর্মসূচি গ্রহণ করার আহ্বান জানান। তিনি জনগণকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশ। বিরােধী শক্তি ও তাদের কার্যকলাপ ধ্বংস করে দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন।২০
রেফারেন্স: ৬ অক্টোবর ১৯৭৩, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ