You dont have javascript enabled! Please enable it!

অন্যায়ের জন্য সন্তানদেরও রেহাই দেয়া হবে না- বঙ্গবন্ধু

বৃহস্পতিবার ভৈরবের জনসভায় ভাষণদানকালে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য দেশের কৃষকদের বেশি করে ফসল ফলানাের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন যে, ভিক্ষা করে এনে তিনি জাতিকে একটি ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে পারবেন না। তিনি শােষণহীন সােনার বাংলা গড়তে চান। এজন্য দরকার সােনার ছেলে। এবং তা জনগণকে সৃষ্টি করতে হবে, না হলে শােষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে না। ভৈরব সেতুর উদ্বোধনের প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে। হানাদার বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ এবং তার ফলে জনগণ যে চরম সংকটের সম্মুখীন হয়েছেন তার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে, এই সেতুর ফলে এখন আর বিদেশ থেকে অন্ন খাদ্য সামগ্রী চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকবে না এবং জনগণ সময়মতাে তা পেতে পারবে। জনসভায় শিল্পমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম, যােগাযােগমন্ত্রী জনাব মনসুর আলী, ভারতীয় রেলওয়ে দফতরের উপমন্ত্রী জনাব শফী কোরেশী, ভারতীয় হাইকমিশনার শ্রী সুবিমল দত্ত, বৃটিশ হাইকমিশনার মি. আর্থার গােল্ড, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব জনাব তােফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব আবদুর রাজ্জাক এবং বাংলাদেশ ও ভারতের রেলবিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব জিল্লুর রহমান জনসভায় বক্তৃতা করেন। তার বক্তৃতার পূর্বেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ন্যাপসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে বঙ্গবন্ধুকে বিপুলভাবে মাল্যভূষিত করা হয় এবং বহু উপহার দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু এই সেতু মেরামতে ভারত ও বৃটেনের সহযােগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি অত্যন্ত কৃতজ্ঞতার সাথে দেশের খাদ্য সংকট ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ভারতের সাহায্য সহযােগিতার কথা স্মরণ করেন। তিনি ভৈরবের জনগণকে ভৈরব থেকে কিশােরগঞ্জ পর্যন্ত সড়ক ও নদীর ভাঙন থেকে ভৈরবকে রক্ষা করার আশ্বাস দেন। তিনি জনগণকে সতর্ক দিয়ে বলেন যে, দেশের স্বাধীনতা নস্যাতের জন্য বিদেশের দালালরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তারা এজন্য তার বিরুদ্ধে প্রচারও করছেন। বঙ্গবন্ধু বলেন যে, যে যত চক্রান্তই করুক না কেন বাংলার স্বাধীনতা চিরদিন টিকে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী ভৈরবসহ অন্যান্য জনসভায় দুঃখ করে বলেন, যে সমস্ত ছেলেরা হাইজ্যাক করছে। তাদের শতকরা ৯০ জন ছাত্র। তারা আমাদের সন্তান। তবুও অন্যায়ের জন্য তাদেরও রেহাই দেয়া হবে না। তাঁতিরা যাতে সুতা পেতে পারে তার ব্যবস্থা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আশুগঞ্জে তিনি বলেন যে, বিদেশি সাহায্য পেলে আশুগঞ্জে একটি পেট্রো ক্যামিকেল কারখানা হবে। বঙ্গবন্ধু সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে মেঘনা নদীতে একটি মনােজ্ঞ নৌকাবাইচ হবে। বঙ্গবন্ধু তা উপভােগ করবেন। আশুগঞ্জ পাট শ্রমিক ইউনিয়ন বঙ্গবন্ধুকে দুটি বড় মাছ উপহার দেন।৯৮

রেফারেন্স: ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩, দৈনিক পূর্বদেশ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!