You dont have javascript enabled! Please enable it!

বিশ্ব শােষক ও শােষিতের দুভাগে বিভক্ত- বঙ্গবন্ধু

আলজিয়ার্স। জোট নিরপেক্ষ দেশের কতিপয় নেতা গৌরবের সাথে তৃতীয় বিশ্বের যে মতবাদ প্রচার করে আসছেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহসিকতার সাথে তা অস্বীকার করে হতবাক ডেলিগেটদের বলেন যে, বিশ্ব অত্যাচারী ও অত্যাচারিতদের মধ্যে বিভক্ত হয়ে গেছে। বক্তৃতার অংশবিশেষ গত রবিবারের পূর্বদেশে প্রকাশিত হয়েছে। শীর্ষ সম্মেলনের সকালের অধিবেশনে তার সংক্ষিপ্ত ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় বিশ্ব সম্পর্কিত ধারণা বাতিল করে দেন। এবং তার দেশকে ওয়াদাবদ্ধ করেন। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি বন্দর নায়েক সকালের অধিবেশনে সভাপতিত্ব করে বিশ্বের প্রগতিশীল শক্তির সংহতি কামনা করেন। বঙ্গবন্ধু জোট নিরপেক্ষ দেশগুলােকে নিজেদের সম্পদ, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার মধ্যে সমন্বয় সাধন করে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, ব্যাধি ও বেকার সমস্যা সমাধানে তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন যে, জোটনিরপেক্ষ জাতিগুলাের সাধারণ সমস্যার মােকাবেলার জন্য এই সম্মলনে ব্যাপক কৌশল উদ্ভাবন করা উচিত। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মােকাবিলার জন্য তিনি আত্মনির্ভরশীলতার ভিত্তিতে জোট নিরপেক্ষ দেশগুলাের মধ্যে সুষ্ঠু অর্থনৈতিক সহযােগিতার আহ্বান জানান।
আরবদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ঘােষণা : বিপিআই খবরে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে আরব জনগণের ন্যায্য অধিকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেন যে, এখনাে ইসরাইল আরব ভূখণ্ড বেআইনীভাবে দখল করে আছে। প্যালেস্টাইন প্রশ্নের সম্মানিত সমাধান খুঁজে বের করার জন্য তিনি শান্তিকামী দেশগুলাের প্রতি আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধু অ্যাঙ্গোলা, মুজাম্বিক, নামিবিয়া, গিনি বিসাউ ও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের জনগণের ন্যায্য সংগ্রামের প্রতি সমর্থন জানান। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, ভিয়েতনাম, কম্বােডিয়া ও লাওসের জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা এখনাে বাস্তবায়িত হয়নি। তিনি বলেন যে, বাংলাদেশ বিশ্বে প্রগতিশীল ও মজলুম জনগণের সংহতিতে বিশ্বাসী। বঙ্গবন্ধু বলেন যে, যারা এই ধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছেন, আমরা তাদের পাশে আছি। বঙ্গবন্ধু ভারত মহাসাগরকে শান্তি এলাকা ঘােষণা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া নিরপেক্ষকরণের পরিকল্পনা কার্যকর করার মতাে প্রয়ােজনীয় পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানান।
মানবিক সমস্যা : উপমহাদেশের কথা সংক্ষেপে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু বলেন, আমরা মানবিক সমস্যার একটি সমাধান খুঁজে পেয়েছি। এটাকে আমরা উপমহাদেশে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি সক্রিয় কর্মপন্থা বলে মনে করি। আর তাই আমরা স্বেচ্ছায় যথেষ্ট সুযােগ-সুবিধা দিয়েছি। শুধু কথায় নয়, সমস্যা সমাধানে সক্রিয় ও যৌথ কর্মপন্থার ব্যাপক কৌশল উদ্ভাবনের জন্য বঙ্গবন্ধু শীর্ষ সম্মেলনের প্রতি আহ্বান জানান।৩৫

রেফারেন্স: ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩, দৈনিক পূর্বদেশ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!